#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ৩৩
আইরাত সেই কখন থেকে মুখ ফুলিয়ে বসে আছে তো আছেই। ওইযে আব্রাহামের ওপর রাগ করে আর কি। আব্রাহাম বেশ কয়েকবার রাশেদ কে দিয়ে আইরাতকে ডেকে পাঠিয়েছে কিন্তু আইরাতের কেবিনে আসার নাম নেই। সে নাকি বাইরে অন্য কাজ করছে। আব্রাহাম ভেবে পায় না যে তার আর আইরাতের কেবিন তো এক রুমেই তাহলে বাইরে সে কি কাজ করে। আব্রাহাম এও বেশ ভালো করেই জানে যে আইরাত রাগ করেছে তার সাথে। আব্রাহাম আর থাকতে না পেরে আইরাত কে মেসেজ পাঠালো…
“” আমার রাগ আর মার্ডার করার জন্য তুমি আমার সাথে রাগ করেছো,, তোমার এই রাগ ভাঙাতে গিয়ে কিন্তু এখন আমার নিজেরই বেশ রাগ উঠছে। ভালোই ভালোই কেবিনে আসো, নয়তো সবার সামনে দিয়ে কিন্তু টেনে নিয়ে আসবো। “”
আইরাত বাইরে রিসেপশনের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলো তখনই তার ফোনে মেসেজ আসে, আইরাত তা পড়ে। কিন্তু আবার রেখে দেয়।
আইরাতকে এখনো আসতে না দেখে আব্রাহাম রেগে উঠে পরে। এখন টেনেই আনবে কিন্তু তখনই দরজায় নক, দেখে একটা ছেলে এসেছে। হাতে একটা বক্স। কুরিয়ার আসলে। আব্রাহাম তাকে ভেতরে আসতে বলে, কুরিয়ার টা নিয়ে তার ওপর একটা সাইন করে দেয় তারপর ছেলে টি চলে যায়। এবার আব্রাহাম উল্টা-পাল্টা একটা মেসেজ টাইপ করে…
“” আইরাত আমার ব্যাপারে জানো তুমি, হয়তো এখন তুমি কেবিনে আসবে নয়তো আমি সব ভাংচুর শুরু করে দেবো। আর তারপর কাচ দিয়ে কি করবো আমি নিজেও জানি না “”।
আইরাতের ফোনে টুং করে একটা মেসেজ আসে। আর মেসেজ টা পরে আইরাতের চোখ বড়ো বড়ো হয়ে যায়। আসলেই আব্রাহামের কোন ঠিক-ঠিকানা নেই। কখন কি করে বসে। আইরাত দ্রুত পা ফেলে আব্রাহামের কেবিনে চলে যায়। পারমিশনের ঘোড়ার ডিম, হুড়মুড় করেই আইরাত চলে যায়। গিয়েই দেখে আব্রাহাম কেবিনে নেই। আর সব ঠিক ঠাক আছে। তার মানে আব্রাহাম তাকে মিথ্যা বলেছে। আইরাত রাগে চোখ গুলো ছোট ছোট করে এসে পরতে নেয়। তবে আইরাত পেছন ঘুরতেই আব্রাহাম হুট তার তার সামনে এসে পরে। আইরাত আবার চলে আসতে নিলে আব্রাহাম আইরাতের হাত ধরে টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। এক হাত আইরাতের কোমড়ে জড়িয়ে ধরে আরেক হাত দিয়ে আইরাতের কপালের চুল গুলো সরাতে সরাতে বলে ওঠে….
আব্রাহাম;; ইউ হ্যাভ নো আইডিয়া বেবিগার্ল রাগ করলে তোমাকে কি পরিমান কিউট লাগে। নাকের ডগা লাল হয়ে থাকে। মন তো চায় এখানেই কিছু একটা করে ফেলি।
আইরাত;; চুপ করুন। এতো অসভ্য কেন আপনি?
আব্রাহাম;; হ্যাঁ কিছু না করেও যদি আমাকে অসভ্যের খেতাব পেতে হয় তাহলে অসভ্যই। আর অসভ্যতামি তো অন্য কারো সাথে করি না।
আইরাত;; তো ধরে রেখেছে কে যান না করুন অসভ্যতামি অন্য মেয়ের সাথে।
আব্রাহাম;; আমার জন্য একজনই এনাফ। (আইরাত কে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে তার মাথার সাথে নিজের গাল ঠেকিয়ে)
আইরাত;; হয়েছে ছাড়ুন। কি জন্য ডেকেছেন বলুন?
আব্রাহাম আইরাত কে ছেড়ে দিয়ে একটা বড়ো সড়ো বক্স এনে আইরাতের সামনে রাখে। আইরাত কিছু না বুঝে আব্রাহামের দিকে তাকায়। আব্রাহাম তাকে এটা নেবার জন্য ইশারা দেয়। আইরাত বক্স টা নিয়ে টেবিলের ওপর রাখে। তারপর সেটা খুলে। বক্সের ভেতরে এত্তো গুলো লাল টকটকে বড়ো বড়ো লাল গোলাপ। তা থেকে তীব্র সুগন্ধি ছড়াচ্ছে। আইরাত ভেবেছিলো হাসবে না এভাবে রাগ করেই থাকবে। কিন্তু এখন না চাইতেও আইরাতের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। আইরাত ফুল গুলো তুলে হাতে নিয়ে নেয়। আব্রাহাম এসে আইরাতের সামনে দুই হাত ভাজ করে দাঁড়ায়। আইরাত তার আলতো হাতে ফুল গুলো ছুইয়ে দিচ্ছে, তখন চোখ তুলে আব্রাহামের দিকে তাকায়। আব্রাহাম আইরাতের দিকে তাকিয়ে নিজের ভ্রু গুলো খানিক নাচায়। এবার আইরাত আর না পেরে ফিক করে হেসেই দেয়। ফুল গুলো নিজের গালের সাথে লাগিয়ে নেয়।
আইরাত;; থাংকু!
আব্রাহাম;; ইট”স থ্যাংক ইউ এই থাংকু টা আবার কি হ্যাঁ?!
আইরাত;; এটা আমার থাংকু আপনি বুঝবেন না।
আব্রাহাম;; হুম হুম বক্সের ভেতরে দেখো আর আছে তো!
আইরাত;; কি?
আইরাত ভেতরে তাকিয়ে দেখে স্কাই ব্লু কালারের একটা স্মাইলি টেডি। বেশ বড়ো & সফট্। আর চকোলেট তো অবশ্যই আছে। আইরাত তার দাত সবগুলো বের করে দিয়ে আব্রাহামের দিকে তাকায়।
আইরাত;; ইইইইইইইইইইইইইইইই,, অনেক অনেক থাংকু।
আব্রাহাম;; রাগ কমেছে?
আইরাত;; কিসের রাগ, কাকে বলে এটা কি খায় না মাথায় দেয়?
আব্রাহাম;; ওরে বাবা তাই নাকি!
আইরাত;; হ্যাঁ।
আব্রাহাম;; ওহহ গড বেবিগার্ল!
আইরাত;; কি হলো?
আব্রাহাম;; শিট,, আমি তো ভুলেই গেছি।
আইরাত;; আরে কি ভুলেছেন, হয়েছে কি?
আব্রাহাম;; এত্তো এত্তো ইম্পর্ট্যান্ট কথা টা আমি কি করে ভুললাম।
আইরাত;; আরে কোন ইম্পর্ট্যান্ট কথা?
আব্রাহাম;; আল্লাহ এখন কি হবে। অনেক অনেক অনেক বেশি, সবার থেকে বেশি ইম্পর্ট্যান্ট কথা এটা।
আইরাত;; আচ্ছা বুঝলাম কিন্তু তা কি বলবেন তো!!
আব্রাহাম আইরাতের হাত ধরে নিজের কাছে টেনে আনে। আইরাত মাথা তুলে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে আছে আর আব্রাহামও তার দিকে।
আব্রাহাম;; অনেক বেশি ইম্পর্ট্যান্ট কথা।
আইরাত;; আহা বলবেন তো নাকি!!
আব্রাহাম;; আই লাভ ইউ।
আইরাত;; কিহহ??
আব্রাহাম;; হ্যাঁ আমি তোমাকে ভালোবাসি।
আইরাত;; এটা ইম্পর্ট্যান্ট কথা?
আব্রাহাম;; অবশ্যই সবথেকে বেশি। এছাড়া আমার কাছে আর কিছুই গুরুত্বপূর্ণ না।
আইরাত;; আপনি আসলেই পাগল।
আব্রাহাম;; সমস্যা নেই। আমি Psycho আর তুমি Psychiatrist…
আইরাত হেসে দেয়।
।
।
ওন্যদিকে আইরাতের চাচি কলি এই বুঝতে পারছে না যে এই আগান্তক ব্যাক্তি টি কে।
কলি;; জ্বি আপনি কে আর কাকে চাই?
রায়হান;; আমি কে তা পরেও জানতে পারবেন। আপনি আইরাতের চাচি রাইট?
কলি;; জ্বি কিন্তু আপনি জানেন কি করে?
রায়হান;; রায়হান আহমেদ আমার নাম।
কলি;; আপনি কি রায়হান গ্রুপের যে মালিক সেই?
রায়হান;; জ্বি
কলি;; ওহহ আচ্ছা আচ্ছা। তো বাইরে দাঁড়িয়ে কেন ভেতরে আসুন।
রায়হান চলে যায় ভেতরে। কলির সাথে বেশ কুশল বিনিময় হয়।
কলি;; তো বলুন এখানে কি মনে করে?
রায়হান;; আমি কথা ঘুড়াই পেচাই না। তো সোজা মেইন টপিকে আসি। আপনার ঘরের মেয়ে কে নিজের ঘরে নিয়ে যেতে চাই।
কলি;; জ্বি মানে আসলে….
রায়হান;; আমি এখানে আইরাতের সাথে আমার বিয়ের সম্পর্ক নিয়ে এসেছি। বিয়ে করতে চাই আমি ওকে।
কলি;; কিন্তু বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে অবশ্যই বাড়ির বড়োরা আসে। আপনার সাথে কেউ নেই!
রায়হান;; বাড়িতে আমার মা আছে, বাবা নেই। আর মা কিছুটা অসুস্থ তাই আসতে পারে নি।
কলি;; আসলে দেখুন আমার হাসবেন্ড আছে। উনি বর্তমানে বাসায় নেই। বিয়ে তো মুখের কথা না উনি আসুক আমি উনার সাথে কথা বলে দেখবো। কিছুটা সময় দরকার।
রায়হান;; চিন্তা করবেন না আইরাত আমার বাড়িতে কোন কিছুর অভাবে থাকবে না। রাজরানি বানিয়ে রাখবো ওকে আমি।
কলি;; আসলে কি মেয়েটাকে আমি কখনো নিজের ভাবি নি। সবসময় কথা শুনাই। এটা আমি নিজেও বুঝি। ভালো না হয় কিন্তু ওর জন্য কখনো খারাপ আমি চাইবো না। আমি সিওর না তবে কিছুটা আশ্বাস দিতে পারি আপনাকে। পরিবার ভালো হলে আমি রাজি আছি। এখন আইরাতের চাচার সাথে কথা বলতে হবে তাহলেই হলো।
রায়হান;; বিয়ে তো হবেই অবশ্যই হবে (এক শয়তানি হাসি দিয়ে)
কলি;; হুমমম।
রায়হান;; আজ তাহলে আসি। এর পরেরবার আসলে আইরাত কে নিজের সাথে করে নিয়ে তারপরই যাবো।
কলি আর কিছু বলে না, রায়হান চলে যায়। ব্যাস এর পর থেকেই কলির মাথায় যেন একটা জিনিসই বারবার ঘুড়পাক খাচ্ছে।
।
।
আইরাত কেবিনে একাই বসে বসে ফাইল সব রিচেক করছে। তখনই ভেতরে আব্রাহাম ফোনে কথা বলতে বলতে আসে। আইরাতের দিকে এক নজর তাকিয়ে ফোন রেখে দেয়।
আব্রাহাম;; বেবিগার্ল!!
আইরাত;; হুমমম (ফাইল দেখতে দেখতেই)
আব্রাহাম;; চলো।
আইরাত;; কোথায়?
আব্রাহাম;; বাড়িতে।
আইরাত;; কিন্তু আমার কাজ তো শেষ হয় নি।
আব্রাহাম;; আরে রাখো তো চলো চলো চলো।
আব্রাহাম ফাইল গুলো আইরাতের হাত থেকে নিয়ে রেখে দেয়। তারপর তাকে নিয়ে বের হয়ে পরে। গাড়িতে ওঠে সোজা আব্রাহামের নিজের বাসায়।
আইরাত;; এখানে এলাম কেন আমরা?
আব্রাহাম;; দাদি তোমাকে নিয়ে আসতে বলেছিলো।
আইরাত;; দাদি? আপিনি আমাকে বললেন না কেন আগে?
আব্রাহাম;; এখানেই তো আনার ছিলো বলে আর কি করতাম তাই সোজা এখানেই নিয়ে এসে পরলাম।
আইরাত;; হুমম।
আব্রাহাম আইরাত কে নিয়ে বাড়ির ভেতরে চলে যায়। ভেতরে যেতেই আব্রাহামের দাদি আইরাতের দিকে আসে।
ইলা;; এসেছিস তোরা? আয় আয় সেই কখন থেকে বসে আছি তোদের জন্য।
আব্রাহাম;; হ্যাঁ আমি জানি তো।
ইলা;; তোর জন্য না, আমার আইরাতের জন্য।
আব্রাহাম;; 😒😒
আইরাত;; 😅😅
ইলা আইরাতের হাত ধরে নিয়ে সোফাতে বসিয়ে দেয়। আব্রাহাম বসতে যাবে তখনই তার ফোনে ফোন আসে। আব্রাহাম কথা বলতে বলতে কিছুটা দূরে সরে আসে। এদিকে ইলা আর আইরাত দুইজন দুইজন কে পেয়ে যেন আর কিছুর খেয়ালই নেই। অনেক গল্প করছে। আইরাত এবার খেয়াল করে যে আশে পাশে কিছু ছোট ছোট টেবিল রয়েছে আর তার ওপর আব্রাহামের, তার দাদি অনেক গুলো ছবি। কিছুতে আব্রাহাম একা আবার কিছুতে তার দাদি আর সে একসাথে। হঠাৎ করে আইরাত বলে ওঠে…
আইরাত;; আচ্ছা দাদি!
ইলা;; হ্যাঁ বল
আইরাত;; আচ্ছা আব্রাহাম এতো রাগি কেন বলো তো। মানে এত্তো রাগ ওর।
ইলা;; ও সবার সাথেই রাগ দেখা পারে, রাগ করে থাকতেও পারে একমাত্র তুই আর আমি ছাড়া।
আইরাত;; ও কি আগে থেকেই এমন?
ইলা;; ছিলো না হয়ে গেছে। আসলে ওর বাবা ওকে আর ওর মা কে রেখে আরেকটা বিয়ে করে। নানা সমস্যা হয়। এটা ওর জীবনকে যেন এলোমেলোই করে দিয়েছিলো। ওর সৎ মায়ের একটা ছেলে হয় রায়হান। তখন থেকে যেন আরো বেশি এলোমেলো হয়ে গেছে।
আইরাত;; দাড়াও দাড়াও কি রায়হান??
ইলা;; হ্যাঁ আব্রাহামের সৎ ভাই ও।
আইরাত;; রায়হান আহমেদ,, রায়হান গ্রুপের ওনার তাই না?
ইলা;; হ্যাঁ
আইরাত;; কি বলো এইসব? রায়হান আব্রাহামের সৎ ভাই হয়?? (বেশ অবাক হয়ে)
ইলা;; হ্যাঁ। কেন?
আইরাত;; না না এমনি। মানে আব্রাহাম কখনো আমায় বলি নি তো তাই আর কি।
ইলা;; আরে না ও তো……
আব্রাহাম;; হে গার্লস কি করছো?
ইলা;; কিছু না এইতো বসে আছি। এই তোরা বস আমি আসছি।
আব্রাহাম;; আচ্ছা।
আব্রাহাম বসে ছিলো। কিন্তু সামনে তাকিয়ে দেখে আইরাত আবার রাগে নাক মুখ ফুলিয়ে বসে আছে। আব্রাহাম কিছু বুঝতে না পেরে বলে ওঠে…
আব্রাহাম;; এখন আবার কি করলাম?
আইরাত;; আর কি কি আছে যা আমি জানি না?
আব্রাহাম;; মানে?
আইরাত;; রায়হান?
আব্রাহাম;; ওর নাম কেন নিচ্ছো?
আইরাত;; ও আপনার ভাই লাগে?
আব্রাহাম;; সৎ।
আইরাত;; যাই হোক ভাই তো।
আব্রাহাম;; না।
আইরাত;; আপনি আমায় বলেন নি কেন?
আব্রাহাম;; বলার প্রয়োজনবোধ করি নি তাই বলিনি।
আইরাত;; একটা বার বলা উচিত ছিলো। তাই তো বলি যে এতো টা এতো টা ঘৃণা কেন করেন আপনি ওকে।
আব্রাহাম;; হুম এখন বুঝতে পেরেছো তো তাই চুপ করো এখন।
আইরাত;; হুম।
আব্রাহামের দাদি আসে হাতে ক্ষীর নিয়ে। আইরাত আর আব্রাহামের সামনে রাখে। খেতে খেতে ইলা বলে ওঠে…
ইলা;; সব ঠিকই আছে এখন শুধু জলদি তোরা বিয়ে করে এখানে এসে পর।
আইরাত ক্ষীর মুখে দিয়ে একবার ইলার দিকে আরেকবার আব্রাহামের দিকে তাকায়। তখন আব্রাহাম ফাজলামি করে বলে ওঠে…
আব্রাহাম;; হ্যাঁ সেই কবে থেকেই তো বলছি দাদি কে যে আমি রেডি আছি চলো বিয়ে করে ফেলি। দাদি বিয়ে করবে?
ইলা;; চুপ কর শয়তান ছেলে। নির্লজ্জ কোথাকার।
আইরাত;; 😆😆😆😆।
আইরাত & আব্রাহাম আর তার দাদি সেইদিন অনেক আড্ডা দেয়। সন্ধ্যার দিকে আব্রাহাম আর আইরাত বাড়ি থেকে বের হয়ে পরে। আব্রাহাম আইরাতকে তার বাড়ির সামনে ড্রপ করে দিয়ে এসে পরে। আইরাত তো ‘তাই রে নাই রে নাই’ করে বাড়িতে ঢুকছিলো এসেই দেখে আইরাতের চাচি চা বানাচ্ছে। চা বানাতে বানাতে কলি বলে ওঠে…
কলি;; এসেছিস?
আইরাত;; হ্যাঁ।
কলি;; এই চা টা তোর চাচ্চু কে দে ধর।
আইরাত;; দাও।
আইরাত গিয়ে তার চাচ্চু কে চা দিয়ে আসে। তার চাচ্চু এক গাল হেসে আইরাতের দিকে তাকায়। আইরাতও হেসে সেখান থেকে এসে পরে। কলির সাথে সাথে ইকবালও আইরাতের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। ইকবাল কলির দিকে তাকালে কলি তাকে চুপ করে থাকতে বলে।
।
।
পরেরদিন সকালে~~
আইরাতের ঘুম ভাংগে আব্রাহমের ফোনের শব্দে।
আব্রাহাম;; গুড মর্নিং মাই লাভ।
আইরাত;; গুড মর্নিং (ঘুম ঘুম ভাব)
আব্রাহাম;; ঘুম ভাংলো তবে?
আইরাত;; হুমম।
আব্রাহাম;; নাও লিসেন, গাড়ি তোমার বাড়ির নিচেই দাঁড়িয়ে আছে জলদি নিচে নেমে এসে পর। আমার ড্রাইভার সে।
আইরাত এবার উঠে বসে।
আইরাত;; কোথায় যাবো? আপনার বাসা থেকে না কালই আসলাম আবার আজ কেন?
আব্রাহাম;; আসতে বলছি আসবা। নয়তো সেইদিন রাতের মতো করে তোমাকে তুলে আনলে অবশ্যই তা ভালো হবে না।
আইরাত;; এই না না আমি আসছি। আর আজ আপনি অফিসে যান নি?
আব্রাহাম;; না, নিজেও যাই নি আর তোমাকেও যেতে দিবো না। এখন মিস বকবক জলদি রেডি হয়ে আসো।
আইরাত;; হায়রে আচ্ছা রাখুন আসছি।
আইরাত উঠে রেডি হয়ে চলে গেলো। কিন্তু বাড়ির কাউকে বলে নি যে আব্রাহামের বাড়ি যাচ্ছে। সবাই জানে আইরাত অন্যান্য দিনের মতো অফিস যাচ্ছে।
আইরাত আব্রাহামের বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়। আব্রাহাম তখন একটা টি-শার্ট পরে ওপরে করিডরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কফি খাচ্ছিলো। নিচে তাকিয়ে দেখে আইরাত আসছে। আব্রাহাম শয়তানি করে সেই ওপর থেকেই ডাক দেয়….
আব্রাহাম;; ওই যে বউ আসছেএএএএএএএ!
আইরাত;; এই পাগল।
আব্রাহাম দ্রুত নিচে যায় তারপর আইরাত কে আনে।
আব্রাহাম;; আসেন ম্যাডাম, আপনারই ফিউচার বাড়ি এটা।
আইরাত;; দাদিশাশুড়ীর বাড়ি।
আইরাত নিজে বলে নিজেই বোকা বনে গেলো। এই মাত্রই সে কি বলে দিলো নিজের অজান্তেই।
আব্রাহাম এক ভ্রু উঁচু করে তাকায় তার দিকে।
আব্রাহাম;; ওরে বাবা তাই নাকি। রায়হান কে বিয়ে করার এতো শখ??
আইরাত;; 😳😱
আব্রাহাম;; হুমম??
আইরাত;; ভাগ্যিস আপনি ওর দিকে গিয়েছেন।
আব্রাহাম;; জাস্ট কিডিং। খুন করে ফেলবো তোমাকেও আর ওকেও। তুমি আমার। আমি তো ভেবছি যে তোমার হাতে আমার নামের একটা ট্যাটু করে দিবো।
আইরাত বুঝলো যে আব্রাহাম রাগ পাচ্ছে খুব তাই কথা ঘুড়িয়ে ফেলে।
আইরাত;; আরো কিছু।
আব্রাহাম;; না আপাতত আর কিছুই না। এবার ভেতরে চলো।
আইরাত ভেতরে চলে যায়। সেদিন কার মতো কেউই অফিসে যায় না। আব্রাহামের বাসায়ই থাকে। কিন্তু ওইদিকে আইরাতের বাসায় তো অন্যকিছুর প্ল্যানিং চলছে।
।
।
।
।
চলবে~
[কালকের পর্বে বিশাল কিছু একটা হতে চলেছে 🌚]