প্রেমের পাঁচফোড়ন💖 #পর্ব_৩১

0
1830

প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
#পর্ব_৩১
#Writer_Afnan_Lara
🌸
নাও হয়ে গেলো ঠিক,এবার আমার পাওনা আমারে ফেরত দাও
.
মানে😒আমার কাছে এক টাকাও নাই,কি দিব আপনাকে?
.
শান্ত আহানার দিকে এগিয়ে গেলো
আহানা পিছিয়ে গিয়ে টেবিলের সাথে লেগে আছে ভয়ে
.
আমি যা চাই তা একদিন নিয়ে ছাড়বো
.
আহানা ঢোক গিলে পাশ দিয়ে চলে যেতে নিতেই শান্ত ওর হাত ধরে ফেললো
.
আআআআপপপপনার মাথা তো ঠিক আছে?
.
শান্ত হেসে দিয়ে এক টান দিলো আহানার হাত ধরে
.
আহানা জানে শান্ত কিছু করবে না তাও এমন বিহেভ কেন করছে সেটাই বুঝতেসে না
.
বুয়া এখনও সিক,আমার ৫টা শার্ট ধুয়ে দিবে?আমি ধুতে পারি না
.
হুহহহ মগেরমুলুক নাকি
.
তাহলে দাঁড়াও আবার ভাইরাস ফেরত আনতেসি
.
আরে না না,ঠিক আছে,কাল মিষ্টিকে পড়াতে এসে ধুয়ে দিবো
.
গুড গার্ল
.
আহানা পানি খেয়ে চেয়ার টেনে বসলো,এই ছেলেটা মাঝে মাঝে এমন ভাবে হাত ধরে আমি তো ভয় পেয়ে যাই
.
সবাই আবার কাজে লেগে গেছে,আহানা কাজ করতে করতে টেবিলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে,ববি শান্তর টাই নিয়ে টানাটানি করতেসে আর কথা বলতেসে,আহানার দিকে তাকিয়ে দুষ্টুমি করে হাত দিয়ে ওকে জাগাতে যেতেই শান্ত ওর হাত ধরে ফেললো
.
জাগাইও না,ঘুমাক
.
কাজ করতে এসেছে নাকি ঘুমাতে?
.
ও সব ফাইল কমপ্লিট করে ফেলেছে আই থিংক
.
ওহহ,ফাইন
.
কাজ শেষে সবাই চলে যাচ্ছে,শান্ত সানগ্লাস পরতে পরতে চলে যাচ্ছিলো হঠাৎ থেমে গিয়ে পিছন ফিরে তাকালো,আহানা তার ব্যাগ গুছাচ্ছে
ব্যাগ নিয়ে বের হতে যেতেই দেখলো শান্ত লিফটের পাশে দাঁড়িয়ে আছে
.
আপনি এখনও যান নি?
.
একা একটা মেয়েকে এই টাইমে রেখে যেতে আমার মা শিখায় নি,আর তুমি তো আমার পাতানো বউ
.
এই একদম এই নামে ডাকবেন না আপনি
আহানা লিফটের ভিতর চলে গেলো,শান্ত ও ঢুকে পড়লো
নিচ তলায় এসে বাইকে বসতেই সে দেখলো আহানা চলে যাচ্ছে
তখন ৭টা ৩৬বাজে
আহানা রোডে দাঁড়িয়ে তো ওর চোখ কপালে,এত অন্ধকার,এত রাত হয়ে গেছে! আমি হেঁটে বাসায় ফিরবো কি করে,টাকাও তো নেই
.
বাইকে উঠো
.
না
.
তাহলে যাও একা একা,ছেলেরা কোলে করে আদর করবে তোমাকে
.
আহানার ভয় করতেসে এমন অন্ধকার দেখে এখন একা হাঁটা শুরু করলে নির্ঘাত গুন্ডারা ধরবে
ভয়ে শান্তর বাইকে উঠলো শেষমেষ
জীবনে বাইকে উঠেনি সে,তাই বসার সাথে সাথে পড়ে যাওয়া ধরলো সাথে সাথে শান্তর শার্ট খাঁমছে ধরে নিজেকে বাঁচালো
শান্ত পিছনে ফিরে হেসে দিয়ে বললো কি আমাকে কাছে টানার এত শখ?
.
শুনুন আমার এত শখ নাই,পড়ে যাচ্ছিলাম তাই ধরছি আর কিছু না
.
ভালো করছো ধরছো,এখন ভালো করে ধরো নাহলে বাইক স্টার্ট করলেই পড়ে যাবে
.
ইহ শখ কত,আমি আপনাকে কেন ধরবো,আমি বাইক ধরবো
.
আপনার ইচ্ছা আহানা ম্যাডাম
.
শান্ত হেলমেট পড়ে বাইক এক টান দিতেই আহানা পড়ে যেতে নিলো তখনই শান্তর পেটের সামনে দিয়ে হাত এনে ওকে ধরে ফেললো
শান্ত হাসতে হাসতে বাইক চালাচ্ছে
কি আহানা ম্যাডাম আমাকে না ধরবেন না আপনি,এখন ধরলেন তো ধরলেন একেবারে জোঁকের মত
.
আহানা শান্তর পেট থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে ওর কাঁধের উপর রাখলো
.
তো মিস আহানা চা খাবেন?
.
কেন
.
আমি খাবো,আপনি খাবেন কিনা জিজ্ঞেস করলাম
.
খাবো,কিন্তু ছোটখাটো দোকানের,রেস্টুরেন্টে যাব না
.
ঠিক আছে
.
একটা ছোট্ট টং এর সামনে এসে শান্ত বাইক থামালো
.
আহানা নেমে গিয়ে দোকানের এক কোণায় দাঁড়িয়ে আছে,শান্ত চা নিয়ে এসে ওর হাতে দিয়ে নিজেরটা খেতে খেতে সিগারেট একটা ধরালো
.
আহানা একটু দূরে গিয়ে দাঁড়িয়েছে,সিগারেটের গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসে তার
শান্ত সিগারেটটা ফেলে বাইকে বসে আহানাকে ডাক দিতেই আহানা আবার এসে শান্তর কাঁধ ধরে উঠে বসলো
.
বাইকের আয়নায় আহানাকে দেখা যাচ্ছে,সে মুগ্ধ চোখে রাতের ঢাকা দেখছে
কি ভালো লাগছে অনুভূতিটা,শান্ত আমার জীবনে আসার পর থেকে দারুন দারুন অনুভূতির সাথে পরিচয় করায় আমাকে
যার সাথে আমি পরিচিত হইনি কখনও
.
এভাবে হাসার মানে টা কি?কলিগ কাউকে ভালো লেগেছে নাকি?
.
সবাইকে নিজের মতন ভাবেন কেন?আমার তো আর আপনার মত ববি টবি নাই,আমি একাই ভালো,আপনার তো একবার এলিনা একবার ববি না বেবি,আরও কত আসবে কে জানে
.
শান্ত বাইক থামিয়ে ফেললো
নামো!!!
.
কিহহ?আমি নামবো?এই মাঝপথে??
.
হ্যাঁ নামো,কথা বলার সময় হুস থাকে না তোমার,ভালই ভালই হেল্প করি ডেইলি আর কথা শুনানোর সময় পিছ পা হও না তুমি
.
আহানা রাগী লুক নিয়ে বাইক থেকে নেমে গেলো,নির্জন একটা এরিয়াতে এসে শান্ত ওকে নামিয়ে দিছে
.
কি হলো যান না কেন?
.
আমি বাইক থামিয়েছি এর মানে কি আমি তোমাকে একা রেখে চলে যাবো?
আমি চলে গেলে তোমার সাথে এখন কি হবে ধারনা আছে তোমার?
.
কি আর হবে😒
.
রেপ,তারপর কেরোসিন দিয়ে জ্বালিয়ে দিবে তোমাকে
.
কিহ!
.
জিহহ,চলেন
.
আবার কই?
.
তোমাকে দারুন একটা মূহুর্ত উপহার দিব সাথে ঝগড়া,বেশ ভালো হবে তাই না
.
আজব তো,আমি বাসায় ফিরবো,খিধা লেগেছে বাসায় গিয়ে রান্না করবো তারপর খাবো
.
আরে রাখো তোমার রান্না,চলো তো!
শান্ত আহানার হাত ধরে হাঁটা ধরলো
.
আরে আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন,হাত ছাড়ুন
.
শান্ত আহানাকে নিয়ে একটা লেকের পাশে নিয়ে আসলো,ল্যাম্পপোস্টের আলোয় জায়গাটটা অপরুপ সুন্দর লাগছে,লেকের কোণায় কোণায় বাতি জ্বালানো
শান্ত আহানাকে ধরে নিচে বসিয়ে নিজেও বসে পড়লো
.
পা ভিজাও
.
কিহ?
.
কি?পা পানিতে ঢুকাও
.
নাহ,ভয় করে
.
আরে আনো তোমার পা,এখানে সাপ নেই,বেশ লাগবে দেখিও
.
শান্ত আহানার পা ধরে পানিতে ঢুকিয়ে দিলো,আহানা চোখ বন্ধ করে হেসে দিয়েছে,বেশ লাগলো ফিলিংসটা,এমনকি এখন ও বেশ লাগতেসে
.
হ্যাঁ তো কি বলছিলে?আমার লাইফে একটার পর একটা মেয়ে আসে??
কথাটা বলে শান্ত আহানার চুল টেনে ধরলো
.
আহহ!এমন করেন কেন এটা আপনার দারুন অনুভূতি?
.
শান্ত হেসে দিয়ে চুলে আরও জোরে টান দিয়ে আহানাকে কাছে নিয়ে আসলো
একটা কথা বলি?
.
কি?😒
.
একটার পর একটা মেয়ে এসে গেলেও আহানা থেকে যাবে
.
হুহ আমি আপনার লাইফে নেই ওকে?চুল ছাড়ুন
.
শান্ত খিঁচে আরেক টান দিলো আহানা ব্যাথা পেয়ে চোখ বন্ধ করে আছে
তার হাত দুটো খালি,এটা বুঝতে পেরে শয়তানি করে শান্তর হাত নিয়ে কামড় বসিয়ে দিলো
.
আউচচচ,বেয়াদব মাইয়া,আমার হাত!!
শান্ত আহানাকে ছেড়ে দিয়ে নিজের হাত দেখায় ব্যস্ত হয়ে পড়লো
.
আমার চুল ধরলে কামড় ফ্রি পাবেন
.
আহানা দাঁত কেলিয়ে চুলে খোঁপা করতে লাগলো
শান্ত আহানার চুলের মাঝখান দিয়ে ধরে এক টান দিলো
আহানা চোখ বড় করে শান্তর হাতে আবারও কামড় বসাতে যেতেই শান্ত আহানার হাতদুটো তার এক হাত দিয়ে আটকে ফেললো
.
এবার কামড়াও দেখি
.
আপনি একটা বদ লোক,বেয়াদব লোক,অসভ্য একটা আপনি
.
আর?
.
আর চরিত্রহীন!
.
হাহাহা
শান্ত হাত ছেড়ে দিয়ে পানিতে পা ঢুলাতে ঢুলাতে বললো সেটা তুমি পরে বুঝবে,যাই করি না কেন কিস তো আগে তোমাকেই করেছি😉
.
বলসে আপনাকে?ওটা কিস ছিল না!
.
শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে হবে না আর,তুমি বসো আমি আসতেছি
.
আরে কই যান
.
বসো
.
আহানা চুপ করে শান্তর চলে যাওয়া দেখছে,এই সুযোগে সে পানি নিয়ে খেলতে লাগলো,এত ভালো লাগতেছে বলে বুঝানো যাবে না
ভাবতে ভাবতে চুলে খোঁপা করার জন্য চুলে হাত দিতেই দূর থেকে শান্ত আসতে আসতে বললো খবরদার চুল বাঁধবা না,এবার একদম টেনে ছিঁড়েই ফেলবো আমি
.
খোঁপা বাঁধলে কি সমস্যা আপনার?
.
বুঝলে খোঁপা বাঁধার বৃথা চেষ্টা করতে না,নাও ধরো
.
বড় ফুচকা?
.
এটাকে ভেলপুরি বলে,নওশাদ আমার মাথা খাইসে এই বলে যে এটা নাকি অনেক মজা,তো ভাবলাম আমি আর তুমি খেয়ে দেখি
.
আহানা মুখে দিয়ে চোখ বড় করে বললো এটা তো অনেক মজা
.
সত্যি?
.
হ্যাঁ অনেক মজা,খেয়ে দেখেন
.
শান্ত হেসে দিয়ে ভেলপুরি নিয়ে মুখে দিতে যেতেই আহানা আটকালো ওকে
.
দাঁড়ান!!
.
আহানা ব্রু কুঁচকে ল্যাম্পপোস্টের আলোয় ভালো করে দেখে একটা বড় মরিচের টুকরা ভেলপুরি থেকে নিয়ে ফেলে দিলো
নেন খান এবার ঠিক আছে,এত বড় মরিচের টুকরা খেলে আপনার অবস্থা এখন খারাপ হয়ে যেতো
.
শান্ত মুখে দিয়ে হেসে বললো বেশি টক,টক খাইলে দাঁত শিনশিন করে আমার
.
ঠিক হয়ে যাবে
.
আহানা ভেলপুরি খাচ্ছে আর বার বার হাত দিয়ে মুখের সামনে থেকে চুল সরাচ্ছে
.
শান্ত হাত নিয়ে চুলগুলো মুঠো করে ধরে আহানার বামপাশের সাইডে দিয়ে দিলো
আহানার মনে হলো ওর পুরো শরীর কেঁপে উঠেছে,বড় একটা নিশ্বাস ফেলে শান্তর দিকে তাকিয়ে বললো আমাকে আর কখনও এভাবে টাচ করবেন না
.
কই টাচ করলাম?চুল সরিয়ে দিলাম তোমার প্রব্লেম হচ্ছে বলে
.
হলে হোক,আপনার কি?
.
শান্ত রেগে আহানার চুল টেনে ধরলো আবার
কি বললে?আমার কি?তোমাকে বলসি না এটা আমাকে বলবে না একদম
পানিতে ফেলে দিব তোমাকে,চিনো তুমি আমাকে?
.
হুম চিনি,,মিঃ শাহরিয়ার অশান্ত
.
আহানা!👿
শান্ত আহানার চুল এলোমেলো করে টেনেটুনে দিলো
আহানা হেসে যাচ্ছে, একটা সময় শান্ত ও হেসে দিলো
.
চলো ৯টা বেজে গেছে এবার বাসায় ফিরতে হবে
আহানা বাইকে উঠে শান্তর কাঁধে হাত রাখলো,দুজনেই হাসতেসে,শান্ত নওশাদকে নিয়ে কি যেন বললো সেটা শুনে হাসতে হাসতে আহানার চোখের পানি বের হয়ে গেছে
.
বাইক থেকে নেমে আহানা শান্তর দিকে তাকিয়ে বাই বলে চলে যাওয়ার সময় শান্ত বাইক স্টার্ট দিতে দিতে বললো এত ফ্রেন্ডলি হওয়ার কিছু নেই,তুমি আমার পাতানো বউ থাকবে আজীবন আর হ্যাঁ তোমাকে আমি টাচ করেছি সবার আগে মনে রাখবা এটা!
.
আহানা রেগে গিয়ে হনহনিয়ে বাসার ভিতর চলে গেলো
শান্ত হেসে দিয়ে চলে গেলো তার বাসার দিকে
.
বাসায় ঢুকে ব্যাগ আর ওড়না রেখে আহানা রান্নাঘরের দিকে গেলো,ভাত রাঁধলো আর আলু ভেজে নিলো,সেটা খেয়ে শান্তর নোট কমপ্লিট করলো তারপর ঘুম!
.
পরেরদিন আবার ভোরে উঠে নামাজ পড়ে বেরিয়ে পড়লো মিষ্টিকে পড়াতে
৭টার দিকে মিষ্টিকে পড়িয়ে বাসা থেকে বের হতেই দেখলো শান্ত দরজা খুলে দাঁড়িয়ে আছে
আহানা কিছু না বলে চলে যেতে নিতেই শান্ত বললো আহানা ভুলে গেলা?
.
কি?
.
তুমি আজ আমার শার্ট ৫টা ধুয়ে দিবা
.
পারবো না,শখ কত!!
.
কাল আমি তোমার কম্পিউটার ঠিক করে দিসিলাম,শার্ট না ধুইলে আবার ভাইরাস ঢুকিয়ে দিব কম্পিউটারে
.
আহানা বিরক্ত হয়ে চুপচাপ শান্তর বাসায় গেলো,হাতের ব্যাগটা বিছানায় রেখে বাথরুমে গেলো শার্ট ধোয়ার জন্য
.
শান্ত বিছানায় শুয়ে শুয়ে টিভি দেখছে,আহানা শার্ট সব ধুয়ে বের হয়ে বললো নিন ধরেন
.
ওমা এগুলা শুকাতে দিবে না?
.
কিহ??শুকাতেও দিতে হবে?
.
হ্যাঁ!!
.
আহানা শান্তকে বকতে বকতে ছাদে যাওয়ার জন্য লিফটে ঢুকলো,শান্ত ও এসে পাশে দাঁড়িয়ে পড়লো
.
এই কাজ আপনিও তো করতে পারতেন আমাকে দেওয়ার মানে কি?
.
আমি সুন্দর করে মেলতে পারি না,তাই তোমাকে করতে দিলাম
শুনো কাল আমি এটাও বলতে পারতাম তুমি ভাইরাস এনেছো তুমি ঠিক করো,কিন্তু আমি সেটা একবারও বলেছি?
আহানা কিছু না বলে ছাদে পা রাখতেই থেমে গেলো,শান্ত হেলে দুলে এসে সেও থেমে গেলো
আহানা শান্তর দিকে ফিরে চোখে হাত দিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে
.
শান্ত হালকা কাশ দিয়ে বললো রাফসান??
.
রাফসান পাশের বাসার একটা মেয়েকে ছাদে এনে কিস করতেসিলো,এ সময়ে কেউ ছাদে আসতে পারে তা জানার ছিল না,হয়ত তার জিএফ হবে মেয়েটা,সকাল ৭টায় কেউ ছাদে তেমন আসে না এই ভেবেই জায়গাটা সে সেফ ভেবেছিল
রাফসান শান্তর কথা শুনে ভয়ে দূরে সরে গেলো সাথে মেয়েটাও
.
সরি শান্ত ভাইয়া!
.
ইটস ওকে,এভাবে খোলামেলায় করা ঠিক না,বুঝেছো?
.
ওকে ভাইয়া
.
আহানা নিচের দিকে তাকিয়ে এগিয়ে এসে শার্টগুলো মেলতেছে
.
শান্ত আহানার দিকে তাকিয়ে হেসে দিয়ে বললো তবে টাংকির পিছনের জায়গাটায় গিয়ে করতে পারো,কেউ দেখবে না
রাফসান মাথা চুলকাতে চুলকাতে চলে গেলো
আহানা ব্রু কুঁচকে বললো এসব শিখান?
.
আরে ছোটরাই তো বড়দের থেকে শেখে,তোমার উচিত ছিল ছোটবেলায় যখন আমি তোমাকে কিস করেছিলাম তখন আমাকে কিস ফেরত দেওয়া
.
আপনি জানেন আপনি একটা অসভ্য লোক,আমার ৩বছর থাকতে আমি কিস ফেরত দিতাম??কিভাবে আসা করেন আপনি,তখন তো আমি জানতাম ও না ওটা কি ছিল
.
শান্ত পকেটে হাত ঢুকিয়ে আহানার দিকে এগিয়ে গিয়ে বললো তো এখন তো জানো!!
.
আহানা চোখ বড় করে পিছিয়ো গেলো
তো?এখন করবো নাকি,আমারে পাগলে কামড়ায় নাই
.
শান্ত আরেকটু এগিয়ে গিয়ে বললো পাগলে কামড়ায় নাই তবে কাল ভালো ভদ্র ঘরের ছেলেকে কামড়িয়েছো
.
আহানা দাঁতে দাঁত চেপে ভিজা শার্ট একটা নিয়ে ঠাস করে শান্তর মুখের সামনে ঝাড়লো
শান্ত চোখ বন্ধ করে ফেলেছে ততক্ষণে
আহানা দাঁত কেলিয়ে শার্টটা মেলতে লাগলো দড়িতে
শান্ত আহানার ওড়না ধরে টান দিয়ে সেটা দিয়ে মুখ মুছতেসে
.
এই আমার ওড়না ছাড়ুন
.
আমাকে ভিজানোর আগে ভাবা উচিত ছিল তোমার
.
ছাড়ুন,এটা কি হ্যাঁ?বাসায় তোয়ালে নেই আপনার?
.
আপাতত এটা আমার তোয়ালে,তুমি আমাকে ভিজালে তো আমি আজ তোমাকে সত্যি সত্যি ছাদ থেকে ফেলে দিব
.
না,খবরদার!!
আহানা এক দৌড় দিলো,শান্ত আহানার ওড়না চেপে ধরতেই আহানা সেটা রেখেই দৌড় দিলো,পুরো ছাদে শান্ত আহানাকে দৌড়ানি দিচ্ছে
একটা সময় দুজনে হাঁপিয়ে থেমে গেলো,নিচে বসে গেলো একসাথে
শান্ত আহানার ওড়না দিয়ে মাথার ঘাম মুছতেছে
.
আহানা অবাক চোখে ওর দিকে চেয়ে আছে,শান্তর অন্যরুপ দেখছে সে আজ,মুচকি হেসে শান্তর দিকে কোনো কারণ বাদেই তাকিয়ে আছে সে
শান্ত দুষ্টু হাসি দিয়ে ওড়নাটা আহানার মুখে মেরে দিলো
.
উহহহ,আপনি অসহ্যকর একটা লোক!
.
আহানা ওড়না পরে উঠে দাঁড়ালো তারপর শান্তকে ভেঁংচি কেটে চলে গেলো
দুজনেই লিফটে চুপ করে আছে,লিফট ৭তলায় আসতেই শান্ত আহানার গাল ধরে টেনে দিলো
নাও ছাদ থেকে ফেলতে পারিনি,গাল টেনে শোধ নিলাম
.
আহানা রেগে শান্তর চুল টেনে দিলো,শান্ত এবার রেগে গেলো,সেও আহানার চুল নিয়ে টানা শুরু করে দিলো,একজন আরেকজনের চুল টানাটানি করতেসে
শুরু হয়ে গেলো মারামারি হানাহানি✊👊
.
মিষ্টি রেডি হয়েছে স্কুলে যাওয়ার জন্য,বুয়া তার সাথে,তাকে লিফট থেকে নামিয়ে স্কুলের বাসে উঠিয়ে দিবে
লিফট খুলতেই দুজনে দেখলো লিফটের ভেতর আহানা আর শান্ত একজন আরেকজনের চুল টেনে ছিঁড়ে ফেলতেসে প্রায়ই
.
ওহ মাই গড Santuuuu!
আহানা মিস?তোমরা এরকম মাইরপিট করতেসো কেন,কি হয়েছে?হুমমম?
মিষ্টি কোমড়ে হাত দিয়ে লিফটের ভিতরে ঢুকে গেলো তারপর একবার শান্তর দিকে তাকালো আবার আহানার দিকে
ব্রু কুঁচকিয়ে বললো আগে কে কার চকলেট চুরি করেছো বলো বলো!
.
আহানা আর শান্ত একসাথে বলে উঠলো চকলেট?
.
হুম চকলেট,আমাদের ক্লাসে একজন আরেকজনের চুল টানে ঠিক তখন যখন একজন আরেকজনের চকলেট চুরি করে
চলবে♥

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here