প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
#সিজন_২
#পর্ব_১৬
#Writer_Afnan_Lara
🌸
আহানা কারের সামনে এসে চাবি নিয়ে চেয়ে আছে ড্যাবড্যাব করে
তারপর অনেকক্ষণ ভেবে কারের কাছে এসে ফুটো খুঁজতে লাগলো যেটাতে চাবি ঢুকিয়ে সে কারের দরজাটা খুলবে
অনেকক্ষণ দেখাদেখির পর বুঝতে পারলো কোনো ফুটো নেই,তারপর ভাবলো এটা আবার কেমন গাড়ী,আমি এখন কেমনে খুলবো এটা?
.
এই আহানা!
.
আহানা পিছন ফিরে দেখলো তিয়া এগিয়ে আসতেছে এসেই বললো “এখানে কি করিস তুই?”
তিয়া হলো আহানার ক্লাসমেট
.
ওর প্রশ্নের উত্তরে আহানা কিছু বলতে যাবে তার আগেই সে বললো”গাড়ীটা পছন্দ হয়েছে বুঝি?হুম বেশ দেখতে,কালো গাড়ী এমনিতেই জোস আর গরজিয়াস হয়,এভাবে গুরগুর করে দেখিস না মানুষ তো তোকে চোর ভাববে
.
আহানা মুখটা ছোট করে বললো”আমি তো এটা ”
.
বুঝছি তো তোর পছন্দ হয়েছে,তাই বলে পাবলিক প্লেসে এমন করে দেখবি?মানুষ কি বলবে?আমি তো দেখে চোরনি ভাবসিলাম
.
এক্সকিউজ মি!
.
তিয়া পাশে তাকিয়ে দেখলো শান্ত আসতেছে,”এক্সকিউজ মি” ঠিক কাকে বললো তা বুঝলো না তিয়া
শান্ত আসতে আসতে তার হাতে থাকা ছোট্ট একটা রিমোটের বাটনে ক্লিক করে কার অানলক করে দরজা খুলে বললো”ঢুকে বসো,আমি ইচ্ছে করেই তোমাকে ভুল চাবি দিয়েছি নাহলে তুমি যে দুষ্টু পরে আমার কার চালিয়ে রোডে নেমে যেতা”
শান্ত তিয়ার দিকে তাকাচ্ছেও না, পাত্তাও দিচ্ছে না,তিয়া থ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে,আহানা বোকার মত শান্তর কথা শুনতেছে
শান্ত ওর হাত ধরে টেনে কারের ভিতরে বসিয়ে দিয়ে নিজেও গিয়ে বসলো তারপর জানালা দিয়ে মাথা বের করে বললো”আপু সরুন এখান থেকে,পার্কিং প্লেসে এমন করে দাঁড়িয়ে থাকবেন না,আমি তো পাগল ভেবেছিলাম”
.
তিয়া চোখ বড় করে সরে দাঁড়ালো সেখান থেকে
শান্ত গাড়ী স্টার্ট দিয়ে চুপ করে কার চালাচ্ছে,আহানা তিয়ার কথাগুলো মনে করে কাঁদতেছে
চুপিচুপি চোখ মুছতেছে সে,জানালার দিকে ফিরে বসেছে শান্ত যাতে ওকে কাঁদতে দেখে না ফেলে
শান্ত নিশ্চুপ হয়ে ফাঁকা রোড দিয়ে গাড়ী চালিয়ে যাচ্ছে
আহানার হাতের চুড়ির ঝুনঝুন শব্দ হচ্ছে যতবার সে চোখ মুছে ঠিক ততবারই
শান্ত গাড়ী থামিয়ে ফেললো,২মিনিট চুপ করে থাকলো তারপর আহানার মাথায় হাত দিয়ে টান দিয়ে বুকে নিয়ে আসলো ওকে
কেন এনেছে সে জানে না তবে তার দায়িত্ব
কিসের দায়িত্ব সে জানে না তবে এটা তার করতেই হতো
কেন হতো সে জানে না,কিন্তু আহানার চোখের পানি তার তার গায়ে কাঁটার মত লাগছিল
আহানা খুব জোরে কেঁদে দিলো,শান্তর বুকে সে তার সেদিকে খেয়াল নেই,কাঁদার জন্য একটু জায়গা পেয়েই কেঁদে দিয়েছে সে
.
আমি শুনেছি মেয়েটা কি বলেছে তোমাকে,কিছু মানুষ থাকে মনে আঘাত করে কথা বলার,জাস্ট ইগনর দেম,নাহলে কখনও উপরে উঠতে পারবা না
.
আহানা অনেকক্ষণ কাঁদার পর তার মনে হলো সে কোথায়,এক ঝটকায় সরে গেলো সে
শান্ত ঠিক হয়ে বসে আবারও গাড়ী স্টার্ট করলো
.
আহানা জানালার দিকে ফিরে ওড়না দিয়ে মুখ মুছে নিলো ভালো করে
খারাপ লাগতেছে এই ভেবে যে সে এতক্ষণ শান্তর বুকে ছিলো,কি লজ্জাকর!
.
শান্ত গলার টাই হালকা টেনে ঢিল করে চুপচাপ কার চালাচ্ছে,টু শব্দ ও নেই দুজনের মুখে
আহানা এতক্ষন ধরে নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলো তারপর হুট করেই মাথা তুলে শান্তর দিকে তাকালো সে
কাঁপা কাঁপা গলায় বললো”আমাকে আর কখনও ছুঁবেন না আপনি”
.
শান্ত ঠাণ্ডা স্বরে বললো”তাহলে আর কখনও আমার সামনে কাঁদবা না”
.
কান্না পেলে কাঁদতে হয়
.
না হয় না,নিজেকে শক্ত করতে শেখো
.
বাইরের মানুষের কথা বাদ দেন,আপনি নিজেই তো কাঁদান আমাকে
.
আমি সব পারবো,আমি বাদে অন্য কেউ পারবে না তোমাকে কাঁদাতে
বরং আমি কাঁদাবো,সারাদিন সারাক্ষণ, সারাজীবন ধরে!!স্টুপিড !!!!
.
আহানা শান্তর চিৎকারে কেঁপে উঠলো,চোখ নামিয়ে আরেকদিকে মুখ নিয়ে গেলো সে,কি বলতে নিয়েছিলো সেটাই ভুলে গেছে সে
হাত কাঁপতেছে তার,কখনও এমন করে কেউ কথা বলেনি ওর সাথে তাই হয়ত এমন লাগছে
শান্ত অফিসের সামনে এসে কার থেকে নেমে হনহনিয়ে চলে গেলো
আহানা কার থেকে নেমে আস্তে আস্তে অফিসে আসতেছে
শান্ত ততক্ষণে নিজের অফিস রুমে চলেও গেছে
ঊষা আহানাকে ওর কেবিন দেখিয়ে দিলো,একদম শান্তর অফিস রুমের পাশেই,হালকা ঝাপসা কাঁচের দেয়াল মাঝখানে
ওপারে কি চলে তা দেখা যায় না তবে মানুষটা দাঁড়িয়ে আছে নাকি বসে আছে তা বুঝা যায়,আহানা একটিবারের জন্য ও তাকালো না সেদিকে
চুপ করে তার সামনে থাকা টেবিলের দিকে চেয়ে আছে সে
♣
স্যার এই ফাইলগুলো তো সুহানাকে দিব তাই না?
.
হুম,ও কি করছে এখন?
.
কেবিন দেখিয়ে দিয়েছি,গিয়ে বসেছে সে
.
ওকে
.
আহানা গাল ফুলিয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে,ওর পাশে আরও ১৩/১৪টা কেবিন,সবাই সবার কাজে গভীর মনোযোগ দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে
মাঝে মাঝে একটা লোক ট্রেতে করে কফি এনে দিয়ে যায়
তারা সেটা হাতে নিয়ে খায় আর কাজ করে,এত কাজ?বেতন কত এদের!
.
ঊষা হেসে বললো”তোমার বেতনই তো ৩০হাজারের উপরে হবে
.
কিহহহ!
.
হুম,তবে তোমার পোস্টের বেতন ২০হাজার কিন্তু স্যার চেকে ৩০হাজার সাইন করেছে
.
কেন?আমি তো বারতি টাকা নিব না
.
সুহানা,এসব কেমন কথা?স্যার তোমাকে নিজ থেকেই টাকা দিতে চায় আর তুমি নিতে চাচ্ছো নাহ?
.
আহানা উঠে দাঁড়িয়ে হনহনিয়ে শান্তর রুমের দিকে ছুটলো
ঊষা দৌড়ে এসে ওকে থামালো সাথে সাথে
.
আরে আরে এমন করিও না স্যার রেগে যাবে,তোমার না ৩টা বাচ্চা আছে?টাকা পেলে তো তাদেরই ভালো হবে তাই না?
.
আমি যেটা পাওয়ার কথা সেটাই নিব এর বেশি আমি নিব না!
আহানা শান্তর রুমের দরজার সামনে এসে নক করলো কয়েকবার
ঊষা আহানার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে,শান্ত এসে দরজা খুলতেই দেখলো আহানা ঊষাকে বলতেছে ওর শান্তর সাথে কথা আছে
.
ঊষা!ওকে আসতে দাও
.
শান্তর কথা শুনে ঊষা আহানার হাত ছেড়ে দিয়ে বললো”ঠিক আছে”
.
শান্ত আবার ভিতরে চলে গেলো,আহানাও আসলো কিছুক্ষণ পর
.
কি বলবে তাড়াতাড়ি বলো আমার কাজ আছে
.
আমার বেতন ২০হাজার থাকার কথা আপনি ৩০হাজার ঠিক করলেন কেন??
আমি এমনি এমনি টাকা নিব না
.
শান্তর কিছুক্ষণ আগে একটা পার্টনারের সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছে
মন মেজাজ এমনিতেও বিঘড়ে আছে এর ভিতরে আহানা নিউ টপিক নিয়ে ঝগড়া শুরু করে দিয়েছে
.
শান্ত উঠে দাঁড়িয়ে আহানার হাত ধরে এক ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের করে দিলো
আহানা গিয়ে ফ্লোরে পড়ে গেছে ওর ধাক্কায়
শান্ত রুম থেকে বেরিয়ে পকেটে হাত ঢুকিয়ে বললো”আমি আন্টির ঔষধ আর ভালো থাকা খাওয়ার জন্য ১০হাজার বাড়িয়ে লিখেছি আর হয়ত তোমার মতো মেয়ের এইটুকুও যোগ্যতা নাই যে ৩০হাজার তো দূরে থাক ২০হাজারেরও চাকরি পাবে!
আমার রিলেটিভ বলেই তুমি চাকরিটা পেলে!নাহলে আইএ পাস তাও এ গ্রেটের কেউ এরকম পোস্টের জব পায় না বুঝেছো??
আবার বড় বড় কথা বলতেছো!টাকা কত দিব কারে দিব দ্যাটস নন অফ ইউর বিজন্যাস!জাস্ট গেট আউট ফ্রম হিয়ার,নাও!!
.
আহানা মুখটা ছোট করে তাকিয়ে আছে শান্তর দিকে
তারপর ফ্লোর থেকে উঠে করিডোর দিয়ে চলে যেতে নিতেই শান্ত নিজের ভুল বুঝতে পেরে মাথায় হাত দিয়ে দেয়ালে একটা ঘুষি মেরে দিলো তারপর আহানার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো সে
আহানা চোখ মুছতে মুছতে বললো”আমি এই চাকরি করবো না!পথ ছাড়ুন,আমি চলে যাবো এখন”
.
আই এম সরি!মেজাজটা গরম ছিল আর তুমি সবসময় এক কথায় অটল থাকো যে এমনি এমনি তুমি টাকা নিবে না
.
আপনার সাথে কোনো কথা বলতে চাই না,অনেক বলেছেন
.
আহানা পাশ কেটে চলে যাচ্ছে শান্ত ওর হাত মুঠো করে ধরে আটকালো ওকে
.
হাত ছাড়ুন নাহলে চেঁচাবো!
.
শান্ত এখনও ধরে রেখেছে আহানার হাত
আরেক হাত দিয়ে নিজের মাথাটা একটু টিপে নিজেকে ঠিক করলো সে,তারপর আহানাকে টেনে নিজের রুমে নিয়ে আসলো
.
আপনি অতিরিক্ত করতেছেন!! একবার বের করে দিয়ে এখন আবার এখানে আনলেন,কি চান কি আপনি?
.
বসো এখানে
.
আমার এতো সময় নেই,আমি গিয়ে আরেকটা চাকরি খুঁজবো তাও আপনার কাছে চাকরি করবো না আমি
.
ও তাই নাকি?তুমি অন্য কোথায় চাকরি পাবে?ঠিক আছে যাও তাহলে,কাল সকালেই তুমি ফিরে আসবে,আমি চ্যালেঞ্জ করতেছি তোমায়!
.
আহানা চোখ মুছে মাথা উঁচু করে চলে গেলো আর কিছু বললো না
শান্ত মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে,বেশি রুঢ হয়ে গেছে সে
আহানা তো সবসময় এরকমই ঝগড়া করে আজ বেশি বকলাম নাকি!
যাই হোক কাল আবার ফেরত আসবে আমি সিউর!কোথাও চাকরি না পেয়ে ঠিকই ফেরত আসবে
.
আহানা গাল ফুলিয়ে চলে গেলো তখন দুপুর ২টো বাজে
সে হেঁটে হেঁটে যতদূর পারছে যত কোম্পানি পেয়েছে খোঁজ নিয়েছে তাও কোনো চাকরি পেলো না সে
বিকাল ৫টার দিকে মন খারাপ করে বাড়ি ফিরলো আহানা
মা জিজ্ঞেস করলো প্রথমদিনের অফিস কেমন লাগলো
আহানা কিছু বললো না উত্তরে
শান্তর দেওয়া শাড়ীটা হাতে নিয়ে চুপচাপ সেটা পরায় মন দিলো সে
শাড়ীটা ক্রিম কালারের আর লাল পাড়ের, মুক্তোর কাজ করা,আহানা পরার পর মা হা করে বললেন”রাণী রাণী লাগতেছে তোকে”
.
আহানার সেদিকে খবর নেই,চাকরির কথা ভেবে যাচ্ছে সে
গলায় নেকলেসটা পরে কানে দুল পরতে পরতে বেরিয়ে গেলো সে
শূন্য রোডে দাঁড়িয়ে আছে আহানা,মাথার উপরে ফ্লাইওভার, শো শো করে তার উপর দিয়ে গাড়ী যাচ্ছে,আহানা চোখ বন্ধ করে রইলো কিছুক্ষণ
তারপর একটু পিছিয়ে দূরে দাঁড়িয়ে ফ্লাইওভার থেকে চোখ সরিয়ে আকাশের দিকে তাকালো সে
এ শহরে চাকরি পাওয়া মুখের কথা নয়!আর যদি হই মেয়ে তো চাকরি পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার!
.
আহানা!
.
নামটা শুনে আহানার ভয়ে কলিজা কেঁপে উঠেছে,পাশে তাকাতেই দেখলো রতন দাঁড়িয়ে আছে,পরনে সেই ফ্রিন্টের থার্ড ক্লাস লুঙ্গি আর হাফ হাতার শার্ট,সে আহানাকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত এমন ভাবে দেখছ যেন গিলে খাবে এখনই
আহানা সরে দাঁড়ালো
.
এতো সেজেগুজে কই যাও তুমি?তাও এসময়ে??কিছুক্ষন পর সাঁঝ হবে এখন কই যাও??শুনলাম তুমি নাকি চাকরি পাইছো?সেখানে যাচ্ছো নাকি?বড়লোক দেখে নতুন পটাইছো মনে হয়?
.
আহানা শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে রতনের তিক্ত করা শুনতেছে
.
কিরে?কথা বলস না কেন?এতদিন তোরে তুমি কইয়া সম্বোধন করতাম এখন মনে হয় তুই সেটার যোগ্য না!!তোরেও বড় লোক ছেলেদের হাওয়া ধরছে নাহলে এত সেজেগুজে এ সময়ে কই যাস তুই?তোর মা তো বাড়িতে!!
ইজ্জত রাখমু না তোর মনে রাখিস!আমাকে যদি ধোকা দেস সব শেষ করি দিমু তোর!
.
আহানা হাত মুঠো করে চড় দেওয়ার আগেই কারের আওয়াজ পেয়ে থেমে গেলো,পিছন ফিরে দেখলো শান্তর কার
আহানা দেরি না করে সেদিকে ছুটলো,শান্ত বের হওয়ার আগেই ও দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে বসে পড়লো
রতন দাঁড়িয়ে সব দেখতেছে
আহানা শান্তকে শুধু বললো “চলুন!দেরি হয়ে যাচ্ছে”
.
শান্ত রতনকে দেখেছে,সেদিকে তাকাতে তাকাতেই সে গাড়ী স্টার্ট করলো
কিছুদূর গিয়েই সে বললো”ছেলেটা কে”?
.
আপনার বিষয় না এটা
.
ডিস্টার্ব করে?
.
আমার দায়িত্ব আমার নিজেরই, কারোর এতো ভাবতে হবে না
.
শান্ত আহানাকে আর কিছু না বলে গাড়ীর ডেস্ক ওপেন করলো এক হাত দিয়ে
আরেক হাত দিয়ে গাড়ী চালাচ্ছে
ডেস্কের ভেতরে ছিলো এক মুঠো লাল চুড়ি আর একটা ঘড়ি
শান্ত চুড়ি গুলো নিয়ে আহানার দিকে বাড়িয়ে ধরে বললো”চুড়ি দিতে ভুলে গিয়েছিলাম,নাও ধরো পরে নাও”
.
আহানা চুড়ি হাতে নিয়ে পরতে পরতে থেমে গেলো হঠাৎ,শান্তর দিকে ফিরে বললো”দিতে ভুলে গেসিলাম মানে?এগুলো তো আমাকে আন্টি দিয়েছিল,তার মানে আপনি!!!”
.
শান্ত তার ঘড়িটা পরতে পরতে বললো”মা তোমার জন্য চুড়ি কিনতে ভুলে গেসিলো বলে আমাকে কিনতে হলো,আমার আর কাজ নেই তোমার জন্য শপিং করবো”
.
আহানা চুড়িগুলো পরে জানালার দিকে মুখ করে বসলো
.
শান্ত তার ঘড়িটা ভালোমতন পরে এরপর নওশাদকে ফোন দিলো
নওশাদ জানালো সে আর সূর্য রিয়াজদের বাসায় পৌঁছে গেছে অলরেডি
কণা ও এসে গেছে,সে নাকি পাগলের মত শান্তকে খুঁজতেছে
শান্ত লাইন কেটে পানির বোতল নিয়ে ঢকঢক করে সবটা পানি খেলো
এই কণা মেয়েটার থেকে কি করে বাঁচবো!
.
আহানার সেদিকে খবর নেই,সে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে
একটা সেতু পেরিয়ে যাচ্ছে তারা
সম্ভবত কাঁচপুর ব্রিজ এটা,দূর পর্যন্ত নদী দেখা যায় শেষ সূ্র্যের আলোয় চিকচিক করছে পানি,আহানা মুগ্ধ হয়ে সেদিকে তাকিয়ে আছে,পানি এমন ভাবে চিকচিক করতেছে মনে হয় নদীর পানি সোনার
ব্রিজ থেকে নামতেই তারা পড়লো জ্যামে,ইয়া বড় জ্যাম
আহানা গালে হাত দিয়ে বাইরের একটা যাত্রীবাহী বাসের দিকে তাকিয়ে আছে
.
আপা আমড়া খাবেন??শশা খাবেন?
.
আহানা মুচকি হেসে আবারও মুখটা ফ্যাকাসে করে বললো”না খাবো না”
.
শান্ত ছেলেটাকে ইশারা করে বললো ২টো দিতে,পকেট থেকে টাকা বের করে ছেলেটাকে টাকা দিয়ে সে শশা একটা আর আমড়া একটা হাতে নিলো ছেলেটার থেকে
তারপর একটু আহানার কাছের দিকে এসে বসে আরামসে সাউন্ড করে সে শশা খাচ্ছে
আহানা পাশে তাকাতেই দেখলো শান্ত লবণ মরিচ ডলে ডলে ওকে দেখিয়ে দেখিয়ে খাচ্ছে আর বলতেছে”কেউ চাইলে নিতে পারে,আমি আবার একা একা খাই না”
.
আহানা শান্তর দিকে খেয়াল করলো এবার,,শান্ত আজ ক্রিম কালারের সিল্কি কাপড়ের একটা পাঞ্জাবি পরেছে তারউপর দিয়ে লাল কোটি পরেছে
মনে হয় যেন আহানার সাথে মিলিয়েই পরেছে সে
আহানা শান্তর হাত থেকে থাবা দিয়ে আমড়া নিয়ে নিলো
বেয়াদবের মত এমন ভাবে দেখিয়ে খাইতে পারে যেন মানুষকে পাগল করে দিয়ে ছাড়বে
চলবে♥