প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
#সিজন_২
#পর্ব_১৩
#Writer_Afnan_Lara
🌸
আহানার রাগ বেড়ে যাচ্ছে দ্রুত গতিতে
হাতের কাছে যা পাবে তাই ছুঁড়ে মারবে আর এক লেভেল পার হয়ে গেলেই
কথা হলো শান্তকে মেরে নিজের মার খাওয়ার শখ নেই বলেই আহানা ঠাণ্ডা হয়ে বললো “কিসের জন্য ডেকেছেন সেটা বলেন”
.
আসো না আমার পাশে বসো
.
আহানা তো মনে হয় আকাশ থেকে দুম করে মাটিতে এসে পড়েছে
কান কি ঠিক আছে ওর??ভুল শুনলো?নাকি স্বপ্ন দেখছে সে
সয়ং শান্ত কিনা ওকে পাশে বসতে বলছে
আঙ্গুল দিয়ে কান গুতিয়ে তারপর চোখ ডলে আবারও তাকালো সে
.
শান্ত ব্রু কুঁচকে আহানার কাণ্ডকারখানা দেখে যাচ্ছে,শেষে হালকা করে নিশ্বাস ফেলে বললো”সত্যি সত্যি বসতে বললাম,এত ঢং করার কিছু নাই”
.
আহানার কেন জানি সন্দেহ সন্দেহ হচ্ছে,যার কারণে সে শান্ত থেকে সব চেয়ে দূরে যে সোফার সিট আছে,সেখানে গিয়ে বসে পড়েছে
.
শান্ত ওর দিকে ফিরে বললো”কাল বাদে পরশুদিন আমার সব চাইতে প্রিয় বন্ধু রিয়াজের আংটিবদল
তো আমি সেখানে যেতে চাই
.
তো যান,আমি কি ধরে রাখছি নাকি
.
পুরো কথা তো শুনবা!
সেখানে রিয়াজের যার সাথে বিয়ে হবে আই মিন নওমি সেই নওমির একটা বেস্টফ্রেন্ড আছে নাম হলো কণা,কণা আমাকে অনেক ডিস্টার্ব করে
.
আচ্ছা তাহলে সে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলে
.
শান্তর মাথা চরগ গাছ,উঠে এসে দুহাত দিয়ে আহানার গলা টিপে ধরে ওকে সোফার সাথে লাগিয়ে ধরতে মন চাচ্ছে কিন্তু না,নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো
শান্ত দুহাতের আঙ্গুল ঘুরাতে ঘুরাতে বললো”তোমার থেকে আমার একটা হেল্প লাগবে”
.
কি?
.
তুমি আমার সাথে পরশুদিন যাবে অনুষ্ঠানে
.
কি জন্যে?আমার আর কাজ নেই?পরশুদিন আমার ভার্সিটিতে যেতে হবে,পারবো না আমি হুহ!তার উপর বিকাল থেকে টিউশনি
.
হইছে?আর কিছু আছে?
.
আবার ৬-৭টা নিতুকে পড়ানোর পর আর কোনো কাজ নেই
.
বেরি গুড,আংটিবদল সন্ধাতেই হবে,তুমি তাহলে যাচ্ছো আমার সাথে
.
না যাবো না আমি,কেন যাবো?
আপনার মতো ঝগড়ুটে একটা লোকের সাথে আমি কেন যাবো?
.
কেন যাবে?আচ্ছা ভাবতে দাও,হুম ভাবলাম,তোমার আর আমার তোলা ছবিটা মনে হয় এবার প্রয়োগ করার সময় এসে গেছে
.
আহানা ঢোক গিলে উঠে দাঁড়িয়ে চুপচাপ শান্তর মায়ের রুমের দিকে ছুটলো,রুমের মাঝখানে এসে বকবকবক করে শান্তর নামে এক গাদা নালিশ করলো সে
তারপরেও শান্তর মায়ের কোনো সাড়া না পেয়ে এগিয়ে এসে দেখলো শান্তর মা হুইলচেয়ারে বসা অবস্থায় বই পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে গেছেন
আহানা কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে পিছন ফিরতেই দেখলো শান্ত ক্যামেরাটা হাতে নিয়ে ঘুরাচ্ছে
.
দেখুন আপনাকে আমি ভয় পাই না,এই ছবি দেখে মা চিনে যাবে এটা আপনি
.
ওকে তাহলে চলো,সামনা সামনি আন্টিকে দেখাই ছবিটা তারপর দেখি উনি কি বলেন
.
আহানা নিতুর রুম থেকে ব্যাগটা নিয়ে চলে যেতে যেতে বললো”আমার বয়ে গেছে আপনার হেল্প করার!”
.
বাসা থেকে বেরিয়ে আহানা রিকসা নিলো না
হেঁটেই চললো,ভাড়া যেটা আছে সেটা দিয়ে কাল ভার্সিটিতে যাবে,কোনোমতে বাসায় পৌঁছে গেলো সে তখন ৭টা ২৩বাজে,হাঁপাতে হাঁপাতে এক গ্লাস পানি খেয়ে হাতের ব্যাগটা বিছানায় রেখে বসলো সে
মা মুড়ি আর বিসকিট আনতে আনতে বললেন”তোর কি কোনো ছেলেকে পছন্দ?”
.
আহানা ভূত দেখার মত মুখ করে মায়ের দিকে চেয়ে আছে,তারপর থতমত খেয়ে বললো”কই না তো”
.
তাহলে শান্ত যে বললো তোকে নাকি কোন ছেলের সাথে রেস্টুরেন্টে দেখেছে,ছবি নিয়েও কি সব বলছিলো
.
(শান্ত হারামি,তোরে আমি কেটে টুকরো টুকরো করে পাটায় বেটে কিমা বানাবো)ওহ,উনি তো আন্দাজেও কথা বলেন
.
শুন আহানা এসব নিয়ে তোকে বলি একটা কথা এতদিন আমি ভাবতাম হয়ত শান্ত আর তা মাকে কখনও খুঁজে পাবো না
তাই আশা করতাম তোর জন্য যেন একটা ভালো ছেলে পাই কিন্তু যখন শান্তকে পেয়েই গেছি তো আমি নিশ্চিন্ত
বিয়ে হলে তোর শান্তর সাথেই হবে তাই অন্য কারোর সাথে প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ হইস না কেমন?
.
এসব কি বলো তুমি?আমি?তাও বিয়ে করবো ঐ ঝগড়ুটে টারে?
দরকার হলে বিয়ের দিন পালাবো তাও ওরে বিয়ে করে জীবন নষ্ট করবো না,সারাদিন খালি ঝগড়াই করে
.
আহানা মুড়ির বাটি নিয়ে আরেকদিকে ফিরে বসলো
মা কাছে এসে আহানার সামনে বসে বললেন”শান্ত কিসের ছবির কথা বলতেছিলো রে?তুই কি সত্যি সত্যি প্রেম টেম করতেছিস?
এটা কিন্তু ঠিক না আহানা,আমরা দুই পরিবার মিলে ঠিক করেছিলাম তোদের বিয়ে দিব আর তুই কিনা বাড়া ভাতে ছাই দিতে চাচ্ছিস!
.
মা শুনো আমি ঐ শান্তকে বিয়ে করবো না ব্যস,শুনে রাখো কথাটা,এখন ভাত দাও ভাত খাবো,মুড়িতে পেট ভরে নাই আমার
.
মা রান্নাঘর থেকে আলুর ভর্তা আর খালি ভাত এনে দিলো
আহানা মুখ বাঁকিয়ে বললো”আর কিছু নাই?”
.
আর কি পোলাও থাকবে?মাসের কয় তারিখ খবর আছে তোর??এই আলু টাও আমি পাশের বাড়ি থেকে ধার করে এনেছি
বলেছিলিস না চাকরি খুঁজবি,টিউশনির টাকাতে তো চলে না আর
.
ক্যান তোমার শান্ত না বললো তোমার সব ফেরত দিয়ে দিব
.
সেটা যেদিন ফেরত দিবে সেদিন,বললেই তো আনা যায় না
কত বড় ব্যাপার,তুই বরং চাকরি খোঁজা শুরু কর
.
শুনো মা,আইএ পাসের সার্টিফিকেট দিয়া এই জামানায় কোনো চাকরি পাওয়া যায় না,তাও আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি
.
হুম,সামান্য বেতনের হলেও হবে
.
আহানা আলুর ভর্তা দিয়ে কোনো রকম ভাত খেয়ে শুয়ে পড়লো
পরেরদিন ভোর হতেই আম পাতা হাতে করে সে হাঁটা ধরেছে
মা পাতিল সব নিয়ে পুকুর ঘাটের দিকে যাচ্ছেন,এগুলো মেজে তারপর ভাত বসাবে,এতদিন শান্তদের বাসায় থাকায় এগুলো মাজা হয়নি
আহানা ভাত খেয়ে তারপর ভার্সিটিতে যাবে
আহানা এখন হেলেদুলে হেঁটে যাচ্ছে হঠাৎ ওর মনে হলো সে শান্তকে দেখেছে
শান্ত পকেটে হাত ঢুকিয়ে গলির ভিতরের দিকে যাচ্ছে,নিশ্চয় আমাদের বাসায় যাচ্ছে?কিন্তু কেন?
আহানা তড়িগড়ি করে হাতের আমপাতা ফেলে দৌড় দিয়ে শান্তর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো
.
শান্ত পকেট থেকে হাত উঠিয়ে সেটা গুটিয়ে নিয়ে বললো”লাস্ট টাইম বলতেসি আমার সাথে কাল রিয়াজের আংটিবদলে যেতে রাজি হও নাহলে এখন পিকটা আমি আন্টিকে দেখাতে যাচ্ছি
.
হুম দেখান,আমার মা আপনাকে ঠিকই চিনে ফেলবে
.
শান্ত আহানার কথাটা তাচ্ছিল্য করে হেঁটে চললো
আহানা ঢোক গিলে কপালের ঘাম মুছতে মুছতে সেও আসতেছে
আহানার মা পাতিল সব মেজে হাতে নিয়ে বাড়িতে ঢুকতেছিলেন তখনই শান্তকে দেখে থেমে গেলেন তিনি
তারপর মুচকি হেসে বললেন”কখন এলে বাবা”?
.
শান্ত গম্ভীর গলায় বললো”আন্টি আপনাকে আমি বলেছিলাম না আহানাকে দেখে শুনে রাখবেন,এখন দেখেন আহানা একটা ছেলের সাথে রেস্টুরেন্টে গেছে ছবিও তুলেছে
.
মা চোখ বড় করে এগিয়ে এসে ছবিটা দেখতে চাইলেন
শান্ত ক্যামেরা থেকে ছবি তার ফোনে নিয়ে এসেছিল,ছবিটা বের করে দেখালো সে আহানার মাকে
.
মা বিশ্বাস করো এটা উনি,আমাকে ফাঁসাচ্ছে
.
কি বলিস এসব,এটা তো দেখি অন্য ছেলে
.
আহানা মনে হয় শক খেয়েছে এরকম অবস্থা
এগিয়ে এসে বললো”না মা এটা উনি,ভালো করে দেখো”
.
শান্ত না এটা,দেখ গায়ে অন্য জামা,এরকম তো শান্তকে কখনও বের হতে দেখিনি,ও তো সবসময় জ্যাকেট পরে বের হয়
.
শান্ত দাঁত কেলিয়ে চেয়ে আছে আহানার দিকে
মা আহানার দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে চেয়ে থেকে শান্তকে বললেন”ভিতরে আসো বাবা,আর তুই ও আয়,বেয়াদব!
.
আহানা মাকে বুঝাতে এক কদম ফেলতেই শান্ত ওকে আটকে ফেললো
.
আর কি চান আপনি?
.
তুমি রাজি হয়ে যাও তাহলে বলবো ছবির ছেলেটা আমি
.
আহানা কিছুক্ষন চুপ হয়ে থেকে ভেবেচিন্তে বললো”ঠিক আছে”
.
তাহলে কাল অনুষ্ঠান শেষ হলেই আমি আন্টিকে বলবো ছেলেটা আমি
.
আপনাকে বিশ্বাস করি না আমি,এখন বলতে হবে,নাহলে অনুষ্ঠান শেষ হলে বলবেন ছেলেটা অন্য কেউ
.
আমি যদি এখন বলি ছেলেটা আমি তাহলে তুমি যে কাল আমার সাথে আংটিবদলে যাবা তার গ্যারান্টি কি?
.
😒আমি জানি না আমার মাথা ঘুরাচ্ছে
আপনি ভাবুন,আমিও আপনাকে বিশ্বাস করতে পারছি না আর আপনিও আমাকে বিশ্বাস করতে পারছেন না
.
আন্টি!
.
হ্যাঁ বাবা বলো
.
আন্টি আমি এই ছেলেটার খোঁজ বের করছি আপনি আহানাকে কিছু বলবেন না কেমন?
.
আহানা মনে মনে শান্তকে গালি দিয়েই যাচ্ছে,মা ওকে এক ধমক দিয়ে বললেন চা বসাতে
শান্ত মানা করে বললো তার কাজ আছে সে এখন চলে যাবে
এটা বলে সে চলে গেলো
আহানা ভয়ে মায়ের দিকেও তাকাচ্ছে না,মুখটা কোনোমতে ধুয়ে বাচ্চাদের পড়াতে চলে গেলো সে
২৪টা বাচ্চার একটা ছোট্ট স্কুল চালায় আহানা,সবাই ১০০করে দেয় মাসে,তারাও গরীব,এর চেয়ে বেশি দেওয়ার সামর্থ্য নেই তাদের
তো এখন আহানা তাদের পড়াচ্ছে মনোযোগ দিয়ে
এর মধ্যে ঘটে গেলো বিপত্তি
রতন তার কিছু দলবল নিয়ে এসে বাচ্চাদের সাথে বসে পড়েছে
আহানা চোখ রাঙিয়ে ওদের বললো এখান থেকে চলে যেতে
রতন হেসে হেসে বললো”জায়গা কি তোমার বাপের নাকি? আমার মন চাইছে বসছি,কি করবা?”
.
আহানা বাচ্চাদের ছুটি দিয়ে ব্যাগ হাতে নিয়ে হেঁটে চলতেই রতন ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো
আহানার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখতে দেখতে বললো”কতদিন ছুটি দিয়ে দিবা,আমি তো প্রতিদিন আসবো জানেমান”
.
আহানা আর কিছু বললো না,বললেই তিল থেকে তাল হয়ে যাবে তাই সে পাশ কাটিয়ে চলে গেলো,বাসায় এসে ব্যাগ ছুঁড়ে মারলো বিছানায়
মা ভাত বাড়তে বাড়তে বললেন”আবারও রতন জ্বালিয়েছে?”
মা ভালো করেই জানেন রতনই সবসময় এমন এমন কাজ করে যাতে আহানার মেজাজ বিগড়ে তারপর সে বাসায় ফিরে
.
আহানা মাথায় হাত দিয়ে বিছানায় বসে বললো”আর কতো??আর কতো সহ্য করবো আমি?”
”
তাই তো বলছি চাকরি একটা খোঁজ তাহলে আর তোকে দিনে বেশি দেখবে না, জ্বালাবেও কম
.
হুম তাই তো মনে হয় করতে হবে
.
আহানা আজ আর ভার্সিটিতে গেলো না,সারাদিন টইটই করে চাকরি খুঁজে গেলো,কিন্তু তার যোগ্যতা দিয়ে কোনো চাকরি পাচ্ছে না সে
যদি ইন্টারমিডিয়েটে এ+ পেতো তাও হতো আর তার তো গ্রেট ছিল এ গ্রেট যার কারণে চাকরির ধারের কাছেও নেই সে
মন খারাপ করে হেঁটে বাড়ি ফিরছিল সে হঠাৎ মনে হলো শান্তর অফিসে যাবে,যদি চাকরি পায়?কিন্তু শান্ত তো ওকে দেখলেই শুরু করবে খোঁচানো,কি করা যায়!
আর সেদিন শান্তকে ফোনে কথা বলতে শুনেছিল তাদের নাকি একটা সহকারী এসিস্টেন্ট লাগবে যে ক্লাইন্টদের সাথে সব মিটিং এটেন্ড করবে সহকারী হিসেবে
আমি যদি ছদ্দবেশেও যাই তাও তো আওয়াজ শুনে চিনে ফেলবে,ধুর,এই আশাও গেলো
.
আচ্ছা এক কাজ করলে হয় না?অফিসে কে চাকরি তে ঢুকলো তার ইন্টার্ভিউ তো আর শান্ত নিবে না,তাহলেই তো হয় কেউ চিনবে না আমাকে,জলদি করে বোরকা একটার ব্যবস্থা করে নিতে হবে
আহানা দৌড়ে বাসায় ফিরে গেলো,খুঁজে খুঁজে একটা কালো বোরকা পেলো সে,ইন্টারে পড়ার সময় রতন অতিরিক্ত জ্বালাতো বলে আহানা এই বোরকা পরে বের হতো সবসময়
তো যেমন ভাবা তেমন কাজ! বোরকা পরে সে “Shanti’s Group of industry ” এর সামনে এসে হাজির
গুনে গুনে ১২তলার একটা দালান
আহানা দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করলো মেইন ফ্লোর কোনটা উনি বললেন শান্ত যে ফ্লোরে থাকে সেটা হলো ৯তলায়
আহানা তাই হিজাব ঠিক করে লিফটে গিয়ে দাঁড়াতেই ৪৪০ভোল্টের একটা শক খেলো
ওর পাশেই শান্ত আর তার পিএ ঊষা দাঁড়িয়ে কথা বলতেছে
আহানার মন চাচ্ছে লিফট থেকে লাফ দিয়ে মরে যেতে
শান্ত ফোনের দিকে তাকিয়ে ঊষাকে বলছে”আজ সে ৬টার আগেই বাড়ি ফিরে যাবে
কথাটা বলে সে আহানার দিকে তাকালো,পরনে কুচকুচে কালো বোরকা,ইয়া বড় হিজাব,মুখ তো দূরে থাক চোখ ও দেখা যাচ্ছে না
শান্ত চোখ নামিয়ে ফোন কানে ধরে বেরিয়ে গেলো লিফট থেকে
আহানাও বের হয়ে গেলো ওদের সাথে,ঊষা অনেকক্ষণ ধরে খেয়াল করছে আহানা ওদের পিছু পিছু আসতেছে
ঊষা থেমে গিয়ে আহানাকে বললো”কিছু লাগবে আপনার?”
.
আহানা হালকা কেশে গলা মোটা করার চেষ্টা করে বললো”আমি আসলে ক্লাইন্টদের সাথে মিটিং এটেন্ড করতে যে এসিস্টেন্ট খুঁজতেছিলেন আপনারা আমি সেটার ইন্টার্ভিউ দিতে এসেছি
.
ওহ তাহলে সোজা গিয়ে ডান পাশের কেবিনে সিরিয়ালে বসুন,আমি আসতেছি
.
আহানা মাথা নাড়িয়ে ছুটলো সেদিকে,শান্ত চলে গেছে তার অফিস রুমের দিকে
ঊষা শান্তকে কফি দিয়ে এসে ইন্টার্ভিউ নিতে এসেছে
একটা চেয়ার টেনে বসে বললো”মিনিমাম বিএ পাস হতে হবে এবং ইংরেজীতে দক্ষ হতে হবে আর কথা মার্জিত হতে হবে,যারা যারা এসব কিছুর যোগ্য তারা যেন এক এক করে আসে
আহানা থ হয়ে বসে আছে,একে তো সে বিএ পাস না আরেকেতো ইংরেজী বলায় মোটামুটি বলতে পারবে সমস্যা না,ছোট থেকে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়েছে সে,বাবা যখন মারা যায় তখন সে ক্লাস নাইনে পড়তো তার পর থেকে সে বাংলা মিডিয়ামে পড়েছে কারণ মায়ের কাছে এত টাকা ছিল না যে ইংলিশ মিডিয়ামের ফিস জোগাড় করবে
তাই বলতে গেলে ইংরেজীতে ভালোই পারদর্শী আহানা
কথা হলো বিএ পাস নিয়ে
আহানা মুখের পর্দা উঠিয়ে ঊষার কাছে এসে ভ্যাত করে কেঁদে দিলো
বললো”আমার সব ঠিক তবে বিএ পাস ঠিক নেই,আমি আইএ পাস আর অনার্সের ছাত্রী,প্লিস আমাকে চাকরিটা দেন😭
.
আরে আরে মঘেরমুলুক নাকি,এমন করে চাকরি পাওয়া যায় না,আপনি প্লিস যান
.
না প্লিস আমাকে চাকরিটা দেন,আমার ৩টা বাচ্চা না খাইয়া আছে😂😭
.
কিহ!এ বয়সে ৩টা বাচ্চা?আপনি প্লিস অন্য কোথাও দেখুন
.
অন্য কোথাও যাবো কি করে আমি??
এই কোম্পানির অনেক নাম ডাক শুনেছি,আপনারা নাকি যোগ্যতা দেখে চাকরি দেন
তো আমার তো খালি আই আর বিএ এর মধ্যে তফাৎ
চলবে♥