প্রেমের পাঁচফোড়ন💖 #সিজন_২ #পর্ব_২০

0
715

প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
#সিজন_২
#পর্ব_২০
#Writer_Afnan_Lara
🌸
আবার কি?আর কি কোনো কথা শুনানো বাকি আছে আপনার?
.
তোমার সাথে অপ্রয়োজনীয় কথা বলার সময় আর ইচ্ছে দুটোই নেই আমার,জাস্ট বলতে এলাম তুমি এর পর থেকে নিতুকে আর পড়াতে আসবা না
.
আপনি বলার জন্য বসে নেই আমি,আমি এমনিতেও পড়াবো না ওকে,ঐ বাড়িতে গেলে আপনার এই চাঁদমুখ দেখতে হবে কিনা এই ভয়ে আমি যাবো না
.
শান্ত দাঁতে দাঁত চেপে আর দাঁড়িয়ে না থেকে গাড়ীতে উঠে চলে গেলো,হুদাই কথা বললে কথা বাড়ে
আহানা ও মুখ বাঁকিয়ে আবার হাঁটা ধরেছে
সে যে পথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে সেটার দুপাশে বাড়ি,মাঝখান দিয়ে ফাঁকা রোড,তবে অতোটাও ফাঁকা নয়,বাইক/কার/রিকসা এসবের চলাচলতি আছে খানিকটা
আহানা শান্তকে মনে মনে গালি দিতে দিতে হাঁটতেছে
হঠাৎই ওর সামনে কেউ এসে দাঁড়িয়ে পড়লো
আহানা রোড থেকে চোখ উঠিয়ে উপরে চেয়ে দেখলো রতন দাঁড়িয়ে আছে,ওর সাথপ আরও ৩টা ছেলে,সবার মুখে হাসি,আর এই হাসিতে আহানা নিজের ক্ষতিটা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে,চেঁচিয়েও যে মানুষ পাবে না তা আহানা জানে কারণ সে নির্জন এলাকায় আছে এই মূহুর্তে,এতক্ষণ আসার সময় রাস্তার দুপাশে বাড়িঘর ছিল আর এখন শুধু গাছ আছে দুপাশে
আহানার ভয় লেগে উঠলো,কারণ এমন একটা সময়ে রতনকে তার সাথীদের সাথে দেখলে ভয় লাগারই কথা
আহানা তারপরেও শক্ত হয়ে বললো”কি সমস্যা? আমার পথ আটকিয়েছিস কেন?”
.
তোকে নিয়ে যাবো তাই
এটা বলেই রতন আহানার হাত মুঠো করে ধরে ফেললো
.
আহানা হাত ছাড়ানোর চেষ্টায় বিফল হয়ে চিৎকার দিলো,কিন্তু ততক্ষণে রতন ওর মুখ চেপে ধরে ফেলেছে

আহানা এ অসময়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলো কেন?এই মেয়েটা!!একটা জেদি,নাছোড়বান্দা মেয়ে
বুঝে না কেন দেশের অবস্থা ভালো না মানে ভালো না!সে নিজে যে মেয়ে এটা তার জেদের নিছে সবসময় চাপা রাখে
সাত পাঁচ কিছু হয়ে গেলে তখন?
আমি বুঝতেছি আমার কেন এত ভাবনা ওকে নিয়ে! মরুক!
.
রতন আহানাকে উঠিয়ে নিয়ে তার বাড়িতে নিয়ে এসেছে,হাত পা মুখ বেঁধে খাটের এক কোণায় বসিয়ে রেখেছে ওকে
আর সে বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে ছেলেগুলোর সাথে ওর আর আহানার বিয়ে নিয়ে কথা বলতেছে,বিয়েটা আজ রাতের মধ্যেই সেরে ফেলবে সে তাই ছেলেগুলোকে জোড় দিয়ে আদেশ দিচ্ছে
আহানা হাত পায়ের বাঁধন কিছুতেই খুলতে পারতেছে না,১০মিনিট ধরে হাত পা বহুত নেড়েছে তাও বাঁধ খুললো না,মজবুত করেই বেঁধেছে রতন,এখন আহানা দূর্বল হয়ে গিয়ে চুপচাপ এদিক ওদিক তাকাচ্ছে,একটা কিছু পেলেই সেটা দিয়ে নিজেকে কি করে রক্ষা করবে সেই ভাবনাই ঘুরতেছে আহানার মাথার ভেতর
এদিকে চিৎকার যে দিবে তার ও উপায় নাই,মুখ ও বেঁধে রেখেছে রতন
মায়ের সাথে রাগ করতে গিয়ে আজ এ ঝামেলায় পড়বো কে জানতো!নির্ঘাত বিয়ের বন্দোবস্ত করতেছে বেয়াদবটা!কি করে বাঁচবো আমি
বিশ পেলে সেটা খেয়ে বসে থাকতাম,জান দিব তাও ইজ্জত দিব না
.
শান্ত কার ঘুরিয়ে আবারও ফিরে আসলো সেই মোড়ে,কিন্তু আহানা কোথাও নেই
ওকে সেখানে না পেয়ে শান্ত বাসায় চলতে আসতে নিয়েও পারলো না
কেন জানি খুব চিন্তা হচ্ছে,তাই সে ফোন নিয়ে আহানার মাকে ফোন করলো,উনি নামাজ পড়তেছেন বলে ধরতে পারলেন না তখন
শান্ত কি আর করবে বাসায় ফিরে আসলো উপায় না পেয়ে
শান্তর মা মুখ ভার করে সোফায় বসে নিতুর বই খাতা দেখতেছেন,নিতু পাশে বসে বিসকিট খাচ্ছে
শান্ত একবার সেদিকে তাকিয়ে নিজের রুমে চলে গেলো
ফ্রেশ হয়ে এসে রিপাকে বললো কফি পাঠাতে,তারপর গিয়ে বারান্দায় বসলো সে
ফোন বিছানার উপর রাখা
এই মেয়েটা আমার জন্মের শত্রু অথচ এখন ওর জন্য এত চিন্তা হচ্ছে

আহানাকে এখানে বেশি রাখা যাবে না,ওর ফিরতে দেরি দেখলে ওর মা সিধা আমার বাড়িতে দেখতে আসবে
.
তাহলে ভাই কি করবা?
.
অন্য কোথাও নেওয়ার জায়গাও তো নেই,তোরা তাড়াতাড়ি বিয়ের ব্যবস্থা কর, বিয়ে হয়ে গেলে ওর মা কেন!!ওর মরা বাপের ও সাধ্য নাই আর কিছু করার
.
ওকে ভাই
সুমন আর সাজু মিলে হুজুর একজনকে আনতে চলে গেলো
রতন এসে দরজা খুলে দেখলো আহানা খাটের এক কোণায় বসে হাত পা ছাড়ানোর চেষ্টা করতেছে
.
নে নে করে নে,যত চেষ্টা আছে করে নে,তাও আজ আমার থেকে রক্ষা পাবি না তুই,তোকে আজ আমার হতেই হবে
.
মরে যাবো তাও আমি তোর হবো না,তোর এত ভয় কিসের?আমাকে ভয় পাস?হাত পা বেঁধেছিস কেন?সাহস থাকলে এগুলা খুলে দে,দেখি আমার সাথে তুই একা কত পারোস
.
রতন রেগে গিয়ে আহানার হাত আর পায়ের বাঁধন খুলে দিলো
আহানা এবার নিজেই নিজের মুখ থেকে বাঁধন খুলে দূরে সরে গেলো
রতন নিজের থুতনি ঘষতেছে আর হাসতেছে
আহানা রেগে রতনকে এক ধাক্কা দিলো কিন্তু রতন মাটিতে পড়লো না,সে শুধু জোরে জোরে হেসে যাচ্ছে
আর বলতেছে”মাইয়া মানুষ নাকি পুরুষ মানুষের সাথে পারবে”
.
আহানা পুরো রুমে একটা ছুরি তো দূরে থাক একটা লাঠিও পায়নি,পুরো রুমটা খালি,শুধু একটা বিছানা
কোনো উপায় না পেয়ে আহানা পিছিয়ে গিয়ে টিনের সাথে লেগে দাঁড়িয়ে হাত শক্ত করতেছে
একদম নাক বরাবর মেরে দিবো বেয়াদবটার
.
রতন আহানার পা থেকে মাথা পর্যন্ত লালসার চোখে দেখতেছে,লাল বাতির আলোয় তার নেশা বেড়ে আসতেছে ক্রমশ
.
কিরে তোর তো হাত পা খুলে দিয়েছি তাহলে পালিয়ে দেখা,দেখি কেমন পারিস আমার সাথে
.
আহানা চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে,বাড়াবাড়ি করতে গেলেই গায়ে হাত দিবে,তার চেয়ে বরং দেখি কি করে তারপর নাহয় আঘাত হানবো
.
রতন অনেকক্ষণ চুপ করে চেয়ে থেকে এগিয়ে আসতে লাগলো এবার
আহানা হাত আগে থেকেই মজবুত করে রেখেছে,একটা সুযোগের অপেক্ষাই আছে
রতন আহানার হাতের দিকে তাকিয়েছে,সে বুঝেছে আহানা ওকে হাত দিয়ে মারতে চাইবে তাই সে সবার আগে আহানার হাত দুটো খপ করে ধরে ফেললো
আহানা ভাবতেও পারেনি রতন তার হাত ধরে ফেলবে
রতন তার ঠোঁট এগিয়ে আনতেই আহানা পা দিয়ে রতনকে জোরে একটা লাথি মেরে দূরে সরিয়ে ফেললো
.
হাত ধরেছিস পা কে ধরবে রতন??
.
রতনের মেজাজ গরম হয়ে এবার শেষ সীমানায়,সে মাটি থেকে উঠে আসতে যেতেই আহানা এক দৌড় দিলো
কিন্তু আফসোস,দরজা আটকানো, দরজা খুলতে খুলতেই রতন এগিয়ে এসে আহানার কাঁধ খাঁমছে ধরে টান দিয়ে দিলো,জামা কেটে চামড়াও কাটা গিয়ে রক্ত বেরিয়ে এসেছে আহানার কাঁধ থেকে
আহানা ব্যাথা পেলো কিন্তু তার এখন আপাতত একটাই উদ্দেশ্য আর সেটা হলো এই দরজাটা যে করেই হোক খোলা
রতন যখন দেখলো আহানার হাত কাটা যাওয়ার পর ও সে দূর্বল হলো না,ভয় পেলো না
তখন সে এবার আহানার দুহাতের কুনুই ধরে নিজের দিকে ফিরালো
আহানা অনেক সহ্য করেছে,হাত খোলা পেয়ে চড় মেরে দিলো রতনের গালে
তারপর আবারও ছিটখিনি খোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়লো সে
দরজাটা খুললো শেষমেষ,,খোলার সাথে সাথে আহানা বের তো হলো কিন্তু রতন ওকে আবারও ধরে ফেললো

তোর এত বড় সাহস আমার গায়ে হাত তুলিস!!
.
রতন আহানার চুলের মুঠি ধরে আবারও টেনে ঘরে ঢুকাচ্ছে,আহানা তার চুল না ছাড়িয়ে হাত দিয়ে নিজের হাতের কাঁচের চুড়ি ভাঙ্গলো সবার আগে
তারপর ভাঙ্গা টুকরা নিয়ে রতনের হাতে ঢুকিয়ে দিলো সে
(NB-কেউ চুল ধরে টান দিলে তার হাত থেকে নিজের চুল ছাড়ানোর চেষ্টা না করে নিজের যে দুহাত খালি আছে সেটা দিয়ে যা করার করবেন আক্রমণকারীকে)
রতন চিৎকার দিয়ে আহানার চুল ছেড়ে দিলো,নিজের হাত থেকে চুড়ির ভাঙ্গা অংশ বের করে দেখলো আহানা উধাও
আহানা প্রান নিয়ে দৌড়াচ্ছে,অনেকদূর এসে পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো কেউ নাই,তারপর হাঁপ ছেড়ে সামনে চেয়ে দেখলো সাজু আর সুমন আসতেছে সাথে একজন হুজুরকে মিয়ে
আহানা পাশের একটা টিনের বাড়ির সামনে থাকা রসুইঘরে ঢুকে গুটিশুটি দিয়ে নিচে বসে পড়লো
কাঁধ প্রচণ্ড ব্যাথা করতেছে তার কিন্তু কিছু করার নেই,মুখ চেপে ধরে বসে আছে আহানা
রতন দৌড়ে এসে সাজু আর সুমনকে জানালো আহানা পালিয়েছে
তাদের কে দল গঠন করে তারপর আহানাকে খুঁজতে বললো,এক গলিতে সাজু গেলো,আরেক গলিতে সুমন,আর মাঝখানের গলি দিয়ে রতন ছুটলো
আহানা মুখে হাত দিয়ে রসুই ঘরটাতে বসে আছে

আসসালামু আলাইকুম,,আন্টি কেমন আছেন?
.
ভালো আছি বাবা,তুমি কেমন আছো?
.
ভালো,আসলে এখন ফোন করলাম আহানা বাসায় ফিরেছে কিনা জানার জন্য
.
আহানা?ও তো এখন নিতুকে পড়াচ্ছে তাই না,এখন বাসায় আসবে কেন?
.
মানে!আহানা তো আজ নিতুকে পড়াতে আসেনি,আর আমি অনেকক্ষণ আগে অফিস থেকে আসার সময় দেখলাম ও বাড়ি ফিরতেছে
.
কি বলো?তাহলে এখনও আসলো না কেন?
.
শান্তর এবার খুব টেনসন হচ্ছে,আহানার নাম্বার ও নেই তার কাছে
ওর মাকে ফোন করতে বলে জ্যাকেট পরতে পরতে সে বেরিয়ে গেলো বাসা থেকে
এই মেয়েটাকে এখন আবার কই খুঁজবো!আমি মানা করছিলাম এভাবে বাইরে একা একা না থাকতে,আমার একটা কথা যদি শুনতো!
.
আহানা রসুইঘরটা থেকে বেরিয়ে এদিক ওদিক তাকালো,এখান থেকে তাদের বাড়ি বেশি দূরে না তবে কয়েকটা মোড় পার হতে হবে এই আর কি,এখন কথা হচ্ছে যদি কোনো মোড়ে গিয়ে ঘুরেফিরে ওদের সামনেই পড়ি??
.
আন্টি আমি পথে আহানাকে কোথাও পেলাম না,কি করবো এখন?ও কোথায় যেতে পারে জানেন?
.
না আহানার তো একটাই বান্ধুবী আর সে হলো রুপা,রুপাকে আমি ফোন করেছি সে বললো আহানা আসেনি,আর আহানা ফোনটা সুইচ অফ বলতেছে,আমি কি করবো বুঝতেছি,একা একটা মেয়ে!! কিছু হয়ে গেলে কি করবো তখন!!
.
আন্টি টেনসন নিয়েন না,আমি পুলিশে খবর দিচ্ছি
.
এটা নির্ঘাত ঐ রতনের কাজ
.
শান্ত ফোন করতে গিয়ে থেমে গেলো তারপর বললো”রতন কে?”
.
আর বলিও না বাবা,ছেলেটা কয়েকবছর ধরে আহানাকে অনেক জ্বালাচ্ছে,আমার মনে হয় ওর কাজ এটা!!
কথাগুলো বলতে গিয়ে কেঁদে দিলেন উনি
.
শান্ত চুপ করে থেকে তারপর বললো”ওর বাসা কোথায় জানেন?”
.
এখানেই,সোজা গিয়ে মাঝখানের গলিটা দিয়ে ঢুকলে তারপর ডান পাশে ঘুরে একদম শেষ প্রান্তের টিনের বাড়িটা ওর
.
ফাইন!
.
শান্ত বেরিয়ে গেলো,আন্টির কথামত সেদিকে ছুটছে সে,পুলিশকে খবর দেওয়া হয়ে গেছে ততক্ষণে
শান্ত ফোনের ফ্ল্যাশ অন করে হাঁটতেছে,চারিদিক শুধু অন্ধকার,কিছু দেখা যাচ্ছে না,শুধু বুঝা যাচ্ছে পথটা ইটের তৈরি
আহানা পা টিপে টিপে হাঁটতেছে,বাড়ি পর্যন্ত যেতে পারলেই হলো
মাথা চক্কর দিতেছে বারবার,যেকোনো সময় অজ্ঞান হয়ে যাবো মনে হয়,সকালে যে ভাত খাইছিলাম আর কিছু খাইনি তারপর থেকে
আল্লাহ শক্তি দাও,আমি যেন ঠিকঠাক ভাবে বাড়ি পৌঁছাতে পারি
.
এদিক ওদিক ভালো করে দেখতে গিয়ে অন্ধকারে একটা লোকের সাথে ধাক্কা লেগে আহানা নিচে পড়ে গেলো
পিছোতে পিছোতে বললো”খবরদার আমাকে ছুঁবে না!একদম জানে মেরে ফেলবো আমি”
.
শান্ত ফ্ল্যাশ ভালো করে সামনো ধরে দেখলো আহানা কথা বলতেছে,ভয়ে মুখটুখের অবস্থা ওর বেহাল,জামা ছিঁড়ে গেছে অনেকটা,কাঁধ দেখা যাচ্ছে
আহানা মাথা ধরে এখনও বলতেছে”মেরে ফেলবো”
বলতে বলতে জ্ঞান হারিয়ে ফেললো সে
.
শান্ত হাঁটু গেড়ে বসে ওকে কাছে নিয়ে আসলো
মুখ দিয়ে ওর কোনো কথাই বের হচ্ছে না,আর দেরি না করে আহানাকে মাটি থেকে তুলে নিয়ে হাঁটা ধরলো সে
রতন লুকিয়ে তাকিয়ে আছে শান্তর দিকে,ও আহানাকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে আসা ধরেছিলো কিন্তু তার আগেই শান্ত এসে পড়লো তাই থেমে গেলো সে
শান্তকে দেখে আর তার দলের কোনো লোককেই সে এগোতে দেয়নি,কারণ শান্তকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে সে সহজে ছাড়বে না কাউকে,কার নিয়ে এসেছে,নিশ্চয় যেনোতেনো মানুষ নয় বৈকি
বরাবরের মতই রতন বড়লোক মানুষদের ভয় পায় খুব
এখন যদি তাদের মধ্যে কেউ আসে আহানাকে ধরতে তাহলে যদি জেলে টেলে যেতে হয়??
তাই তারা গাপটি মেরে দাঁড়িয়ে রইলো ঐ জায়গায়
শান্ত আহানাকে ওদের বাসায় নিয়ে আনলো,মা তো এক চিৎকার করে আহানার হাত ধরে শান্তর দিকে তাকিয়ে বললেন”কিছু হয়নি তো?”
.
“জানি না আমি কিছুই”
শান্তর চোখে মুখে যেমন আহানার প্রতি কষ্ট দেখা যাচ্ছে তেমনই রাগে ফেটে যাচ্ছে সে
মা পানি এনে আহানার মুখে ছিঁটা দিলেন
শান্ত দূরে দাঁড়িয়ে এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে আহানার দিকে
আহানা চোখ খুলতেই মায়ের মুখ দেখতে পেয়ে সিউর হলো সে নিরাপদ তারপর হকচকিয়ে উঠে বসে পড়লো সে
সামনে শান্তকে দেখে বিছানার উপরে থাকা চাদরটা টেনে গায়ে দিয়ে নিলো সে
একে তো জামা ছিঁড়া আরেকতো ওড়নাও নাই
তারপর মাথা নিচু করে বসে থাকলো
.
শান্ত শুধু জিজ্ঞেস করলো “তোমাকে ছুঁয়েছে?খারাপ ভাবে?”
.
আহানা মাথা তুলে বললো”আপনার কি?”
.
শান্ত এগিয়ে এসে ওর মাকে বললো “আন্টি আপনি একটু বাইরে যাবেন?আমার আহানার সাথে কিছু কথা আছে”
.
আন্টি মাথা নাড়িয়ে হাতে থাকা পানির মগটা নিয়ে চলে গেলেন,তারপর বাড়ি থেকে বের হতেই দেখলেন দূর থেকে কয়েকটা ছেলে চলে যাচ্ছে,এতক্ষণ এখানেই ছিল মনে হয়
.
সোজা প্রশ্নের উত্তর দাও
.
দিব না, বাধ্য নই আমি
.
তার মানে ধরে নিতাম উল্টা পাল্টা কিছু করেছে তোমার সাথে?
.
কারোর সাধ্য নেই আহানার ইজ্জত কেড়ে নেওয়ার,আমি নিজেই নিজের রক্ষা করতে জানি
.
শান্ত আহানার গায়ের থেকে চাদর টান দিয়ে বললো”তাহলে কাঁধের এ অবস্থা কেন?”
.
ঐ রতন বেয়াদব জোরজবরদস্তি করার চেষ্টা করেছিলো
.
ঠিক আছে!
.
কি?নায়কের মত গিয়ে মাইরপিট করে আসবেন নাকি?এটা মুভি না,বাস্তব,আর আপনাকে কিছু করতে হবে না
যা করার আমিই করবো
পুলিশকে খবর দিয়ে লাভ নাই
আমি এই রতনের দলবলের সাথে পেরে তো উঠবো না,মাকে নিয়ে এই জায়গা ছাড়তে হবে যতদূর বুঝলাম
.
আমি কি করবো না করবো সেটা তোমার বলতে হবে না
ঠিক বলেছো!!এটা মুভি নয় বাস্তব!
কথাগুলো বলে শান্ত চলে গেলো,সাথে সাথে মা ভিতরে এসে বললেন”কি বললে রে?”
.
কিছু না বাদ দাও,আমাকে ভাত দাও,ভাত খাবো,সকালে যে খাইসি আর কিছু খাওয়া হয়নি,তাই তো জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিলাম
.
আন্টি চলুন
.
আহানার মা চমকে পিছন ফিরে চেয়ে দেখলো শান্ত হাতে জ্যাকেট নিয়ে তাকিয়ে আছে
.
কোথায় যাবো বাবা?
.
আমাদের বাসায়,সব প্যাক করে নিন
.
আহানা মাথা বাঁকিয়ে দরজার দিকে তাকিয়ে বললো”এত কেয়ার দেখাতে হবে না,আমি যাবো না আপনাদের বাসায়,কথায় কথায় বলেন বাসা থেকে বের করে দিব”
.
হ্যাঁ যেও না,থেকে যাও,রেপ হলে তারপর আমার সাথে পুলিশ স্টেশন যেও কেমন?নাকি একা একা যেতে পারবা?
চলবে♥

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here