প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
#সিজন_২
#পর্ব_৪৪
#Writer_Afnan_Lara
🌸
পরেরদিন সকাল সকাল ব্যস্ততা আরও বেড়ে গেছে,আহানাদের আত্নীয় বলতে কেউই নেই যার কারণে যারা আসবে- যাবে বৌভাতের রাতে তারা সব শান্তদের ফ্যামিলি থেকেই আসবে আর সেটার জন্যই এত আয়োজন
আহানা আজ শান্তিতে এখনও ঘুমিয়ে যাচ্ছে হঠাৎ মা এসে বললো একটা মেয়ে এসেছে মেহেদি লাগিয়ে দিতে,শান্তি আন্টি নাকি পাঠিয়েছে ওকে
আহানা ভাবলো আজ সারাদিন ঘুমাবে তা আর হলো কই,এক রাশ বিরক্তি নিয়ে সে বিছানা থেকে নেমে ফ্রেশ হতে গেলো
তারপর হাতে বিসকিট নিয়ে মেয়েটার পাশে গিয়ে বসলো সোফায়
মেয়েটা সুন্দর করে মেহেদি লাগিয়ে শান্ত নামটাও লিখে দিলো ওর হাতে
আহানা দুহাত ভর্তি মেহেদি নিয়ে বারান্দায় একটা চেয়ারে হেলান দিয়ে সেই আবারও ঘুমিয়ে পড়েছে
যখন সে চোখ খুলেছে তখন সম্ভবত বেলা ১২টা বাজে
আহানা চেয়ার থেকে নেমে হাতের দিকে তাকালো,মেহেদি শুকিয়ে কাঠ,তাড়াতাড়ি ধুতে হবে
এই ভেবে সে আয়নার সামনে দিয়ে ওয়াসরুমে যেতে নিয়ে থেমো গেলো,আবার আয়নার সামনে ফেরত আসলো সে
সারা গায়ে তার হলুদ মাখানো,নিজেকে এমন অবস্থায় দেখে এক চিৎকার করলো আহানা,মা আর খালা দৌড়ে আসলেন ওর চিৎকার শুনে
আহানা গালে হাত দিয়ে বললো”শান্ত ভাইয়া এসেছিলো?”
.
না তো,ও কেন আসবে?
.
তাহলে আমার এই অবস্থা করছে কে?কখন করছে?বাসায় আর কে এসেছিলো?
.
কেউ তো আসেনি,গেট ও তো বন্ধ
.
আহানা ১০০%সিউর এটা শান্তরই কাজ,রেগে সে ফোন হাতে নিয়ে শান্তকে কল করলো,শান্ত সেই সময়ে নওশাদকে কল করেছে
.
হ্যালো নওশাদ!ভাই কাল বৌভাত হবে,হালকা ধুমধাম তুই রুপাকে নিয়ে চলে আসিস কেমন?
.
মাই গড!এত জলদি?আন্টিকে ম্যানেজ করে ফেললি?
.
মা তো শুরু থেকেই আহানাকে পছন্দ করে,এটা আর নতুন কি,অবশ্য আমি ভয় পেয়েছিলাম বিয়ে ব্যাপারটা নিয়ে যে কি রিয়েক্ট করে মা,পরে সব পজিটিভ হলো,কেউ বকলো না
.
ওকে ডান,আমি রুপাকে নিয়ে চলে আসবো
.
শান্ত এবার এক এক করে রিয়াজ আর সূর্যকেও জানিয়ে দিলো
আজ সকাল সকাল সে আহানাদের বাসায় গিয়েছিলো আহানাকে হলুদ দিয়ে ভূত বানাতে,এতদিনের শখ সে আজ পূরণ করলো,অবশ্য এর জন্য অনেক কষ্ট করতে হয়েছিলো বৈকি!
বাউন্ডারি পেরিয়ে,বারান্দায় পিলার বেয়ে উঠতে হয়েছিলো তাকে,কাজটা এমনভাবে সম্পন্ন করেছে সে আহানা যেন কোনো সূত্র না পায়
ওদিকে আহানা বারান্দার সব খানে তন্নতন্ন করেও কিছু পেলো না,তার ভয় হতে লাগলো রতন কিংবা সাইমনের কাজ নয়ত এটা এই ভেবে
পরে ভাবলো না তারা কেন হতে যাবে,তারা হলে এই কাজ করত না
.
যাই হোক আহানা আপাতত ফ্রেশ হয়ে ফোন নিয়ে বসেছে,শান্তর সাথে ওকে কথা বলতেই হবে,এটা নির্ঘাত শান্তরই কাজ আমি সিউর!
কিন্তু কথা হলো শান্ত ফোনই তো ধরছে না আজব!
শান্ত ইচ্ছে করেই ফোন ধরছে না
আজকের দিনটা কোনোরকমে কেটে গেছে,সকাল সকাল আহানাকে তৈরি হয়ে শান্তদের বাসায় যেতে হবে কারণ বৌভাতটা ওদের বাসাতেই হবে আর তারপর শান্ত আর আহানা এই বাড়িতে আবার ফেরত আসবে
তো আজ সারাদিন শান্ত আহানার ফোন ধরেনি একবারও,আহানা ভেবেছিলো জাস্ট বালিশের তলায় চিনি ঢালবে এখন তো রাগে ক্ষোভে সে ঠিক করেছে আরও অনেক কিছু করবে শান্তকে টাইট করতে,কত বড় সাহস,আজ সারাদিন আমার সাথে কথা বললো না,তোরে ছাড়মু না আমি মনে রাখিস তুই
.
পরেরদিনের সকালটাও এসে গেলো যথাযথ সময়ে
আহানাকে তার খালা আর ২টি পার্লারের মেয়ে মিলে তৈরি করছে,শান্তদের বাসা থেকে শাড়ী গয়না এসে গেছে,মনে হয় আজ বৌভাত নয় আজ বিয়ে
.
নওশাদ আর রিয়াজ মিলে শান্তকে তৈরি করছে,সূর্য ভিডিও করতেছে তাদের ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করবে তাই
শাহরিয়ার শান্তর বিয়ের কথা শুনলে ভিউ এমনিতেই আসবে,খুশি আর ধরে কই তার
.
আহানাকে সাজানো হয়ে গেছে,ঘাড়ো রঙের একটি গোলাপি শাড়ী পরেছে সে,শাড়ীটা জর্জেটের
আহানা শাড়ীটা পরার পর থেকে গাল ফুলিয়ে রেখেছে,এই শাড়ীটা পরে নাকি তাকে আজ সারাদিন কাটাতে হবে
গলা ঢাকা যায় এমন একটা সেট পরেছে সে
চুলগুলোকে খোঁপা করে দিয়েছে মেয়েগুলো
আহানা এখন রোবটের মতন হেঁটে হেঁটে গিয়ে কারে বসেছে,খালা আর মা ও তৈরি হয়েছে,তবে সাথে যাবে শুধু খালা
মা বাড়িতেই থাকবে কারণ শান্ত আর আহানা দুপুরে আবার ফেরত আসবে
বাড়িতে অনেক কাজ থাকায় মা রয়ে গেলেন,আহানার সাথে খালাই গেলেন আপাতত
শান্তদের পুরো বাড়িটা নীল রঙের ঝিলিক বাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে
এটা দেখে আহানার মনটা একটু হলেও ভালো হয়ে গেলো
সে কার থেকে নামতেই নিতু আর রিপা এসে হাজির হয়েছে
তারা তো শুরুতেই বললো”ঝাক্কাস”
.
আহানা মুচকি হেসে খালার সাথে বাসার ভিতরের দিকে গেলো
শান্ত তৈরি হয়ে সোফায় বসে আছে সেই কখন থেকে
মেহমানরা খালি একটাই প্রশ্ন করতেছে আর সেটা হলো”বিয়েটা কবে হলো,আর লুকিয়ে কেন হলো?”
.
শান্ত বললো”একটা সমস্যা ছিলো”আর কিছু বললো না সে
.
আহানা বাসার ভিতর ঢুকতেই শান্তকে দেখলো সবার আগে
মন চাচ্ছে এখনই কাঁচা গিলে ফেলি কিন্তু নাহ সময় হোক,তোর একদিন কি আমার যতদিন লাগে আজ
শান্ত আজকে গোলাপি রঙের একটা শেরওয়ানি পরেছে
একটা ভাব নিয়ে সে সোফায় বসে আছে যেন আহানাকে সে দেখতেই পায়নি
আহানা এগিয়ে যেতেই সামনে এসে পড়লেন শান্তি আন্টি,হুইলচেয়ারে করে,রিপা নিয়ে এসেছেন উনাকে
আহানা তাকে দেখে হেসে সালাম করলো,তারপর কথা আরেকদিকে ঘুরে গেলো
কিছুক্ষণ পর সবাই বাসার সামনের বাগানের পাশে খোলা জায়গায় তৈরি করা স্টেজ টাতে আসলো,সেখানে শান্ত আর আহানাকে বসানো হবে
আহানাকে রুপা নিয়ে সেখানে বসিয়ে দিয়েছে
আর নওশাদ,রিয়াজ,সূর্য মিলে শান্তকে নিয়ে এদিকেই আসতেছে
শান্ত সিটে বসে এখনও আহানার সাথে কথা বলতেছে না,আহানা মনে হয় ফেটে যাবে ঠুস করে,এত এত রাগ সে কি করে সামলাবে
হাত মুঠো করে বারবার সে শান্তর দিকে তাকাচ্ছে
শান্ত সামনের দিকে চেয়ে নরমালি বললো”সুন্দরই লাগছে মোটামুটি ”
.
জিগাই নাই তোরে,আজ তোর একদিন কি আমার যতদিন লাগে,তুই আমার ফোন ধরিস কেন?
.
আস্তে আস্তে,মানুষ কি বলবে,একটু সম্মান দিয়ে কথা বলো
.
কিসের সম্মান,তুই আয় আমার সাথে এক রুমে,তোর হাড্ডি ভাঙ্গবো আজ আমি
.
আর আমি তোমায় ছেড়ে দিব?
.
কেন?আমি কি করছি যে তুইও আমার পিছে লাগবি,বরং তুই করছিস,আমার ফোন ধরিসনি
.
আমি কাজে ব্যস্ত ছিলাম,তোমার বুঝা উচিত ছিলো এটা,আর ফোন আমার কাছে ছিলো না,এত মানুষকে আমি একা ইনবাইট করেছি,তোমাকে দিলে তো ১মাস লাগাইতা
.
যাই হোক বাহানা দিতে হবে না,আর একটা কথা আপনি আমার গায়ে এত হলুদ মেখেছিলেন কেন?
.
কে?আমি?না তো
.
একদম মিথ্যা বলবেন না
.
কিরে শান্ত এত কথা কিসের?তর সয় না?
.
চুপ থাক নওশাদ,আগে বল তোরা বিয়ে করবি কবে?
.
আমি তো আরেকটু দেরিতে করবো,সূর্যকে জিজ্ঞেস কর আমাকে না করে
.
আমি এখনও ছোট,আমি এখন বিয়ে করবো না সরি
.
তুই ছোট??আমার বাচ্চা হলে তোকে নানাভাই ডাকবে
.
শান্ত আর রিয়াজ ফিক করে হেসে দিলো নওশাদের কথা শুনে
সূর্য জিভে কামড় দিয়ে ছবি তোলায় মনোযোগ দিলো আর হঠাৎ করেই ধাক্কা খেলো রিপার সাথে
.
রিপা হা করে সূ্র্যর দিকে চেয়ে রইলো,সূর্য সরি বলে আরেক পাশে চলো গেছে সাথেসাথে
.
দুপুরে মেহমানদের খাওয়া দাওয়া শেষে এবার শান্ত আর আহানার বাড়ি ফেরার পালা,আহানাদের বাসায় যাবে শান্ত এখন
মাকে বিদায় জানিয়ে কারে উঠে বসলো দুজনে
আহানা পা তুলে বসে এক এক করে মাথার টিকলি,হাতের চুড়ি খুলতেছে
শান্ত কার ড্রাইভ করতে করতে বললো”রাত হয়নি এখনও”
.
আমার জাস্ট বিরক্তি লাগতেছে এই সাজে,বাড়ি ফিরে শাড়ীটাও পালটে নিব,তারপর আপনাকে টাইট দিব
.
আমি কি করলাম আবার?
.
কি করেন নাই সেটা বলেন,আমাকে কাল সারাদিন টেনসনে রাখছেন আপনি,এলবার কল ধরলে কি মরে যেতেন?মনে রাখবেন আমাকে ২বার বিয়ে করেছেন আপনি,হুহ!
.
আর মনে করাতে হবে না,জানি আমি
♣
বাসায় ফিরে আহানা নিজের রুমে গেলো চেঞ্জ করতে,মা সাথে সাথে কোথা থেকে এসে বললেন”খবরদার চেঞ্জ করবি না,তোর ঠ্যাং ভেঙ্গে দিব,শান্তর সাথে ওর কিছু রিলেটিভ আসতেছে তারা কি বলবে?”
.
আহানা তাই গাপটি মেরে আবার বিছানায় বসে পড়েছে
সত্যি সত্যি শান্তর ১৪গুষ্টি আসলো আহানাদের বাসায়,সবাইকে মা আর খালা মিলে নাস্তা খাওয়াইছে
সন্ধ্যা ৭টা বাজতেই যে যার বাসায় চলে যাচ্ছে
এখন আপাতত বাসায় আছে মা,খালা,শান্ত আর আহানা,আরও কজন আছে মনে হয়
শান্ত আহানার রুমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে তাহসিনের সাথে কথা বলতেছে অফিসের কাজ নিয়ে
আর আহানা দরজায় দাঁড়িয়ে উঁকি মেরে দেখতেছে সবাই গেলো কিনা,তারপর পিছন ফিরে শান্তর দিকে তাকালো,শান্ত ফোনে কথা বলায় ব্যস্ত
আহানা শাড়ী চেঞ্জ না করে আগে কাজে লেগে পড়লো শান্তকে হেনস্তা করতে,শান্তর বালিশে ইচ্ছেমত চিনি ছিটিয়ে দিলো সে
কোমড়ে কাগজ মুড়িয়ে চিনি রেখেছিলো সেটা
তারপর শান্ত যে তোয়ালে ইউজ করবে সেটাতে লোশন ঢেলে দিয়ে চুপচাপ বিছানায় একপাশে গিয়ে বসলো সে
শান্ত কথা বলা শেষ করে বিছানায় এসে বসলো
আহানার হঠাৎ করে হাত পা চুলকাচ্ছে,চুলকাতে চুলকাতে সে বিছানা থেকে নেমে পড়লো,তারপর দৌড়ে বাথরুমের দিকে গেলো
শান্ত খিলখিল করে হাসতেছে,তার প্ল্যান সাকসেসফুল
এবার সে ফোন নিয়ে বিছানায় হেলান দিয়ে বসে ফেসবুকে ঢুকেছে
১০মিনিট পর আহানা বের হলো শাড়ী ওলটপালট করে,মনে হয় ওর উপর দিয়ে টর্নেডো গেছে
শান্ত মুখ টিপে হাসতেছে
আহানা এখনও বুঝেনি চুলকানির পাউডার ছিল তার জায়গায় আর এটা শান্তরই কাজ ছিল
আহানা আলমারি খুললো নিজের একটা থ্রি পিস বের করতে
তখন ঠাস ঠুস আওয়াজ আসলো পাশ থেকে
আহানা উঁকি দিয়ে দেখলো শান্ত ওর হাতে পায়ে থাবড় মারতে মারতে বিছানা থেকে নেমে বললো”মাই গড!এত পিপড়া কোথা থেকে আসলো”
.
আহানা মুখ টিপে হাসতেছে এবার
শান্ত হাত পা ঝাড়তে ঝাড়তে বাথরুমের দিকে চলে গেছে
আহানা এবার আলমারির দিকে চেয়ে দেখলো তার সব জামা উধাও,শান্তর একটা শার্ট আর প্যান্ট ঝুলতেছে শুধু,যেগুলো শান্ত সাথে করে এনেছিলো ব্যাগে করে
আহানা সোজা গেলো মায়ের কাছে, মা জানালো আহানা যাতে শাড়ী না চেঞ্জ করে তাই ওর সব জামা তিনি লুকিয়ে ফেলেছেন
.
সবাই তো চলে গেছে এবার তো দাও
.
না কে বলেছে গেছে?শান্তর কিছু ফ্রেন্ড আর ওর ফুফু আছেন দেখোস না?
.
তো কতক্ষণ এটা পরে থাকবো?
.
যতক্ষন এরা না যাচ্ছে,ধর এই চায়ের কাপ,তুই আর শান্ত খেয়ে নে
.
আহানা ট্রেটা হাতে করে আবার রুমে ফেরত আসলো,এসে দেখলো শান্ত সোফায় পা উঠিয়ে বসে বিছানার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে আছে
আহানা বিছানায় বসতে গিয়ে ওর মনে পড়লো চুলকানির কথা,শেষে সেও গিয়ে শান্তর পাশে বসে পড়লো
২মিনিট নিরবতা পালন করে তারা চা শেষ করেছে
তারপর দুজন দুজনের দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে চেয়ে চেঁচিয়ে বললো”এটা তোমার কাজ”
.
আমি কি করছি?জাস্ট চিনি ছিঁটিয়ে দিয়েছিলাম
.
আমিও তো জাস্ট চুলকানোর পাউডার ঢেলে দিয়েছিলাম
.
কেন করলেন এমন?
.
তুমি কেন করলে?
.
আমি তো করেছি আপনি আমার ফোন ধরেননি কাল সারাদিন সেই ক্ষোভে,আর আপনি কেন করলেন সেটাই বুঝলাম না
.
তুমি আমাকে সবসময় জ্বালাও বলে আমি এই দিনে শোধ নিতে চেয়েছিলাম
.
হইছে তো?এবার বিছানায় ঘুমাবেন কি করে,আপনার জন্য আমার ঘুমটাও গেলো
.
তোমার জন্য ও আমার ঘুমটা গেলো
.
আমি আগে থেকে বলে রাখছি আমি সোফায় ঘুমাবো
.
আর আমি ফ্লোরে??এত সুখ কেন দিব তোমাকে?
আমি সোফায় ঘুমাবো ব্যস!
.
আমি সোফায় ঘুমাবো ব্যস
.
ওপাশ থেকে নওশাদ,সূর্য মিলে বলে উঠলো”যেখানেই ঘুমাস না কেন,এই রুমেই থাক তোরা,ওকে বাই”
এটা বলে ওরা বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে পালালো
শান্ত আর আহানা ছুটে এসে দরজা অনেক ধাক্কালো কিন্তু লাভ হলো না
.
শান্ত আহানার দিকে চোখ বড় করে তাকিয়ে বললো”সব তোমার দোষে হয়েছে”
.
আমি কি করলাম,বরং আপনার দোষে হয়েছে,আমার অন্তত এরকম বিচ্ছু বন্ধুবান্ধব নেই,একেবারে দরজাটাই লক করে পালালো,কোথায় ভাবলাম অন্য একটা রুমে ঘুমানো যাবে,এখন কি করবো?
.
আমি সোফায় ঘুমাবো
.
শান্তর কথা শুনে আহানা দৌড়ে গিয়ে সোফায় লম্বা হয়ে শুয়ে পড়েছে শান্ত যাওয়ার আগেই
শান্ত হাত ভাঁজ করে তাকিয়ে আছে ওর দিকে
আহানা নাক ডাকার একটিং করতেছে,যেন সে গভীর ঘুমে আছে
শান্ত শয়তানি করে বিছানার চাদরটা নিয়ে আহানার গায়ে লেপটে দিতেই আহানা চিৎকার করে বললো”এটা কোন ধরনের শত্রুতামি!অসভ্য লোক কোথাকার”
আহানা গা চুলকাতে চুলকাতে চাদরটা নিয়ে এবার শান্তর গায়ে মুড়িয়ে দিলো
দুজন মিলে এবার গা চুলকাচ্ছে
একজন আরেকজনের চুল টানাটানি ও শুরু করে দিয়েছে
এমন করে ১০মিনিট কেটে গেলো
এখন আপাতত দুজনে ফ্লোরে বসে আছে
দুজনকে আফ্রিকার জঙ্গলের জন্তুর মতন লাগছে
আহানা ফিক করে হেসে বললো”আপনাকে সত্যি মিঃআউলাঝাউলার মতন লাগছে এখন”
.
তোমাকেও!হাহা
.
দুজনে হাসলো,তারপর হাসা থামিয়ে গাল ফুলিয়ে আবারও একজন আরেকজনেকে দোষারোপ করা শুরু করে দিলো
চলবে♥