#প্রেম_তুমি (দ্বিতীয় খণ্ড)
ফাবিহা নওশীন
পর্ব-10
অর্ষা ল্যাপটপে মুভি দেখছিল। পাশে রাখা মোবাইলটা কেঁপে উঠায় সেদিকে চোখ গেল। অর্পা কল করেছে। ওর কপালে ভাজ পড়েছে। অর্পা ওকে কল করেছে কিন্তু কেন? অনেক আগেই প্রিয়ার কাছ থেকে অর্পার নাম্বার নিয়েছিল। নাম্বারও সেভ করে রেখেছিল। কিন্তু কখনো কল দেওয়া হয়নি। এতকিছুর পরে নিশ্চয়ই খোশগল্প করতে কল দেয়নি। হয়তো সিরিয়াস কিছু নিয়েই কথা বলবে। অর্ষা ভেবে পাচ্ছে না কি বিষয়ে কথা বলতে পারে। এসব ভাবতে ভাবতে কল কেটে গেল।
“এই যাহ! কলই কেটে গেল। যাক ভালো হয়েছে।”
অর্ষা আবারও মুভি দেখায় ব্যস্ত হয়ে গেল। পরক্ষণেই আবার কল আসল মোবাইলে। অর্ষা অনেকটা বাধ্য হয়ে দুরুদুরু বুকে কল রিসিভ করল।
কল রিসিভ করে চুপ করে রইল। অপর পাশ হতে অর্পা বলল,
“অর্ষা!”
“হ্যা, অর্ষা বলছি।”
“আমি অর্পা।”
“হ্যা আপু বলো।”
“কেমন আছো?”
“এইতো ভালো। তুমি কেমন আছো?”
“ভালো। সামনের সপ্তাহে চলে যাচ্ছি।”
এই মুহুর্তে কি বলা উচিত অর্ষা জানে না তাই চুপ করে থাকাকে শ্রেয় মনে করল।
“আগামীকাল আমার জন্মদিন। ক্লাবে একটা পার্টি রেখেছি৷ আসলে পার্টি বললে ভুল হবে। জন্মদিন ইস্যু হলেও পার্টি মূলত শেষ মিলনায়তন। আবার কবে আসি ঠিক নেই। হয়তো আসবও না। আসলেও হয়তো কারো সাথে আর দেখা হবে না। কারণ সময় পরিস্থিতি সব সময় এক রকম থাকে না। সবকিছু, সবাই বদলে যেতে পারে। এখন তো বদলে যাওয়াই মানুষের ধর্ম। তাই চাইছিলাম শেষ বারের মতো প্রিয়দের সাথে একটু সময় কাটাতে। তুমি তো কখনো আমার অপ্রিয় ছিলে না। আশা করি আসবে। ব্যক্তিগত দ্বিধা দ্বন্দ্ব সব সময় সাথে নিয়ে ঘুরতে হয় না। সব অস্বস্তি কাটিয়ে মাঝেমধ্যে খোলামেলা বাঁচতে হয়। প্রাণ খুলে কথা বলতে হয়, হাসতে হয়। আই হোপ তুমি বুঝতে পেরেছো। যথেষ্ট বুদ্ধিমান তুমি।”
অর্ষা নিচু স্বরে বলল,
“হ্যা, বুঝতে পেরেছি।”
“তাহলে আসছো? লাস্ট টাইম। আর হয়তো কখনো বলব না। এড্রেস…….। সন্ধ্যে বেলায় চলে এসো।”
অর্ষা জানে না যাবে কি-না তবে এই মুহুর্তে মুখের উপর না করতে পারছে না।
“আচ্ছা। ভালো থেকো। অগ্রিম জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।”
“ধন্যবাদ। তুমিও ভালো থেকো। রাখছি।”
অর্ষা বিদায় দেওয়ার আগেই অর্পা কল কেটে দিল। অনেকটা ব্যস্ততা দেখাল। অর্ষা মোবাইল হাতে নিয়ে ভাবছে ব্যস্ত না ইগ্নোর করল। ইগ্নোর করলে কী কল করত? জন্মদিনের ইনভাইটেশন দিত?
অর্পা কল কেটে কাউচের উপর বসল। ইচ্ছে করছিল অর্ষাকে অনেকগুলো কথা বলতে। অনেক প্রশ্ন করতে কিন্তু নিজেকে দমিয়ে রেখে স্বাভাবিক কথাবার্তাই বলেছে।
অর্ষা ভাবতে ভাবতে প্রিয়াকে কল দিল। প্রিয়াকে কল দিতেই সাথে সাথে রিসিভ করল যেন ওর কলেরই অপেক্ষায় ছিল। কল রিসিভ করে সাথে সাথে বলল,
“হ্যা, বল কী খবর?”
অর্ষা ওর প্রশ্ন শুনে ভরকে গেল। তারপর কন্ঠ গম্ভীর করে বলল,
“কী খবর মানে কী? তোকে কী কোন খবর দেওয়ার কথা ছিল?”
প্রিয়া থতমত খেয়ে বলল,
“না মানে কিছু বলার জন্যই তো কল করেছিস।”
“হ্যা বলার জন্যই। শোন, আগামীকাল না-কি অর্পা আপুর জন্মদিন। তোকে ইনভাইট করেছে?”
“হ্যা, করেছে তো। কেন?”
“আমাকেও করেছে।”
“ওহ আচ্ছা।”
“সামনের সপ্তাহে তো চলে যাচ্ছে। অনেক করে বলল কিন্তু আমি কী করে যাব? ওখানে দর্শন থাকবে। দুজনেই অস্বস্তিতে পড়ব।”
“সে তোর ইচ্ছে। আমি কি বলব? তবে কি জানিস একটা কথা বলি। কিছু মনে করিস না। তোর কথা শুনলে মনে হয় তুই অনেক বড় ক্রাইম করে ফেলেছিস। তাই নিজেকে গর্তে লুকিয়ে রাখতে চাস। এই ব্যাপারগুলো আমার জাস্ট অসহ্য লাগে। আরে ভাই, বাঁচার হক তোরও আছে। তাই নিজের মতো বাঁচার চেষ্টা কর। কে কি বলবে ডোন্ট কেয়ার। কেয়ার করতে গেলেই তোকে সংকুচিত হয়ে পড়তে হবে। এমন ভাবে চলবি যেন তোর কোন কিছুই ফারাক পড়ছে না। কাকে কী বলছি,, যাকগে বল কি বলতে চাস।”
“কিছু না কল রাখছি।”
অর্ষা কল কেটে দিল।
_________________
রুশান ভাবছে প্রাক্তনকে কি উপহার দেওয়া যায়। প্রাক্তনের জন্মদিনের দাওয়াত পেয়েছে দুদিন পর হয়তো বিয়েরও দাওয়াত পাবে। কি নির্মম! কিভাবে সব বদলে যায়! কি করে মানুষও বদলে যায়! কি করে নিজেও বদলে গেল! জন্মদিনে যাবে কিন্তু ওকে কি উপহার দিবে? রুশান ওকে দেওয়ার মতো কিছুই খুঁজে পাচ্ছে না। মার্কেটে গেলে অনেক দামী দামী উপহারসামগ্রী চোখে পড়লেও সেগুলোতে সন্তুষ্ট নয় রুশান। ও অর্পাকে আনকমন কিছু দিতে চায়। যা অর্পার মন ছুয়ে যাবে অথবা মনে দাগ কেটে যাবে। রুশান কিছুক্ষণ ভেবে বসা থেকে উঠে গেল। টেবিলে গিয়ে বসে টেবিলল্যাম্প অন করে রঙিন কাগজে গটগট করে কয়েক লাইন লিখল। তারপর লেখাটার দিকে চোখ বুলিয়ে নিল। পারফেক্ট! হাতের লেখাও আগের চেয়ে যথেষ্ট সুন্দর হয়েছে। মনে রাখার মতো একটা চিরকুট লিখেছে। র্যাপিং পেপারে মাঝারি সাইজের একটা বক্স প্যাক করল। ব্যস। এই-বার সন্তুষ্ট রুশান। নাহ! আরো কিছু দেওয়া উচিত। অফিস থেকে ফেরার পথে ওর জন্য একটা শাড়ি কিনবে। সব গুছিয়ে রাতে পার্টি এঞ্জয় করতে চলে যাবে।
রুশান দুটো গিফট বক্স নিয়ে অর্পার পার্টিতে গেল। ওর গায়ে এস কালার স্যুট। অনেকটা ফ্রেশ লাগছে। একটা টেবিলের উপরে অনেকগুলো বক্স রাখা। রুশান চুপচাপ সেখানে বক্স দুটো রেখে দিল। চারদিকে হরেক রকমের লাইটিং। স্লো মিউজিক চলছে। তবে লোকজন কম। সব মিলিয়ে বিশ কি পঁচিশ জন হবে। হয়তো আরো মানুষ পরে আসবে। রুশান ওয়েটারের কাছ থেকে একটা ড্রিংক নিল। এক স্থানে দাঁড়িয়ে অর্পাকে খুঁজছে। আজকে অর্পার জন্মদিন। ওকেই তো খুঁজবে। অর্পাকে খুঁজে পেল। অর্পা কালো খয়েরী রঙের একটা গাউন পরেছে। মাথায় একটা ক্রাউন। চুলগুলো খোলা। চোখে টানা টানা কাজল, ঠোঁটে গাঢ় খয়েরী লিপস্টিক। কানে স্টোনের দুল আর গলায় জ্বলজ্বল করছে একটা লকেট। একদম খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখল অর্পাকে। মনে হচ্ছে কোনো রাজ্যের রাজকন্যা এসে দাঁড়িয়েছে। রুশান অপলক চেয়ে আছে। তখনই হঠাৎ ঘাড়ে কারো হাত পড়ল। রুশান চমকে পেছনে তাকাল। দর্শন ওর কাঁধে হাত রেখেছে। দর্শনের সাথে হাতে হাত মেলালো রুশান।
“হেই, কী খবর দোস্ত?”
“আমার খবর তো ভালো। তোর খবর বল।”
“চলছে, ভালোই।”
দর্শন একবার অর্পার দিকে তাকাল। তারপর বলল,
“তুই ভালো আছিস?”
রুশান প্রথমে ভরকে গেল। অতঃপর মুখে হাসি ফুটিয়ে বলল,
“অবশ্যই।”
“তাহলে ওইদিকে এভাবে চেয়ে আছিস কেন? অর্পাকে ভুলতে পেরেছিস?”
রুশান তাচ্ছিল্য হেসে বলল,
“বলদ! ওর বার্থডেতে এসেছি। ও আজকের বড় চমক। অবশ্যই আজ সবাই ওকে দেখবে। ওর দিকেই সবার এটেনশন থাকবে। তাই আমিও দেখছি।”
‘আর ইউ শিওর?”
“হান্ড্রেড পার্সেন্ট।”
দর্শন আর কথা বাড়ালো না। অর্পাকে শুভেচ্ছা জানাতে চলে গেল। অর্পার সাথে কুশলাদি বিনিময় করল। বারবার মনে হলো অর্পা কিছু বলতে চাচ্ছে কিন্তু বলছে না।
দর্শন ড্রিংক নেওয়ার জন্য অন্যদিকে গেল। ড্রিংক নিতে গিয়ে প্রিয়াকে দেখল। প্রিয়া নিজের মোবাইলে সেল্ফি তোলায় ব্যস্ত। দর্শন ওকে দেখে ওর আশেপাশে তাকাল। অর্ষা আনেনি তো? ওকে না দেখে নিশ্চিন্ত হলো। দর্শন ড্রিংক নিয়ে ক্লাবের বাইরের দিকে গেল। ক্লাবটি তিনতলায়। দর্শন বারান্দার রেলিঙের ধারে গিয়ে দাঁড়াল। ভেতরে অস্বস্তি লাগছে। এত মানুষের মধ্যে সচারাচর যায় না ও। হঠাৎ অপর পাশে একটা মেয়েকে দেখে থমকে গেল। অর্ষা এসেছে। ওকে দেখে মনে হচ্ছে না পার্টিতে এসেছে। ওর চেহারা কিংবা সাজে তার আমেজ নেই। ও কালো রঙের একটা লং ড্রেস পরেছে, কানে স্টোনের ছোট টপ, আর ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক, লম্বা সিল্কি চুলগুলো খোলা। হাতের হ্যান্ড ব্যাগটা ড্রেসের সাথে ম্যাচিং করা। ও আশেপাশে না চেয়ে নিজের মতো করে ভেতরে ঢুকে গেল। দর্শন অর্পার উপর ভীষণ বিরক্ত হলো। সব জেনেও অর্ষার প্রতি এত ভালোবাসা কই থেকে আসে? একবারও কি দর্শনের কথা ভাবেনি? ওর সাথে কী করেছে ভুলে গেল? ওকে ইনভাইট করা কি খুব জরুরী ছিল? দর্শনের ইচ্ছে করছে চলে যেতে কিন্তু পারছে না। আজ অর্পার জীবনের এত বড় একটা দিন। বিরক্ত মুখেই ভেতরে গেল।
অর্ষা অস্বস্তি নিয়ে অর্পার কাছে গিয়ে শুভেচ্ছা জানাল৷ সবাই চলে আসার পর অর্পা কেক কেটে জন্মদিন উদযাপন করল। রুশান দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখল। কাছে যায়নি। আজ ইচ্ছে করছে না কাছে যেতে। কেমন একটা ব্যথা অনুভব করছে। মনে হচ্ছে কাছে গেলে অঘটন ঘটে যাবে।
কেক কাটা শেষে অর্ষা, অর্পার দেখে বিদায় নিতে যাচ্ছিল। তার আগেই দর্শন অর্পার সামনে গিয়ে দাঁড়াল। এতক্ষণ ও দর্শনকে দেখেনি।
দর্শন অর্পার কাছে গিয়ে একটু গম্ভীর ও অসন্তুষ্ট মুখে বলল,
“অর্পা আমি যাই, আজ আমার একটু কাজ আছে।”
অর্পা রহস্য নিয়ে বলল,
“আজ একটা সারপ্রাইজ আছে। তাই কারো যাওয়া হবে না। প্লিজ আরেকটু অপেক্ষা কর।”
অর্ষা পেছনে থেকে ফিসফিস করে বলল,
“আপু আমার তো এখানে কোন কাজ নেই। অনেক রাত হয়ে গেছে। আজ আমি আসি।”
অর্পা, অর্ষার হাত চেপে ধরে বলল,
“এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটা তোমারই।”
অর্পা ওর হাত চেপে ধরে এক পাশে নিয়ে যাচ্ছে। অর্ষা ওর আচরণে ভরকে গেল। বুঝতে পারছে না কি করতে যাচ্ছে তবে ভীষণ ভয় হচ্ছে।
ক্লাবের সাথে ঝুলন্ত বড় একটা বারান্দা। সেখানে প্রিয়া, অর্ষা, অর্পা, দর্শন, রুশান, তামিম আর রাতুল বসে আছে। কেউ কিছু বুঝতে পারছে না। অর্ষা বারবার কিছু একটা বলার চেষ্টা করছে আর অর্পা বারবার থামিয়ে দিচ্ছে।
“অর্ষা, তুমি না কত সুন্দর গান করতে? আমার জন্মদিন উপলক্ষে একটা গান গাইবে?”
অর্ষার চোখেমুখে ভয়, অস্বস্তি, আতংক।
“আপু আমি এখন আগের মতো গাইতে পারি না। এখন আর গান গাওয়া হয় না।”
অর্পা কিছু বলল না শুধু মৃদু হাসল।
“দর্শন, তুই গিটার বাজিয়ে শোনা।”
দর্শন সরাসরি বলল,
“আবল তাবল বকিস না।”
অর্পা ওকেও কিছু বলল না।
“অর্ষা, সেদিন তুমি কেন আসোনি? দর্শনকে পাগলের মতো ভালোবাসতে ওর সুইসাইড করার নিউজ শুনে তো সেদিন পাগলের মতো ছুটে আসার কথা ছিল। কিন্তু আসোনি। ও কাপুরুষের মতো কাজ করেছে এই যুক্তিতে আড়ালে ছিলে, তারপর একদম আড়াল হয়েই রইল। কেন? তুমি সত্যি ওকে ভালোবাসতে তো?”
দর্শন ওকে থামিয়ে দিয়ে বলল,” অর্পা, এই টপিক কেন? অতীত নিয়ে আর কোন কথা না হোক। এসব নিয়ে আর ঘাটাঘাটি করিস না, ভালো লাগে না। বাদ দে এই টপিক।”
“আমি জানতে ইচ্ছুক দর্শন। কোন অপরাধে তুই, আমরা এতবড় শাস্তি পেলাম। তুই ভুল কাজ করেছিলি এটা জানার পরেও আমরা সবাই ছুটে গিয়েছি, তোর পাশে থেকেছি। তোকে সব সময় সাপোর্ট করেছি। আসলে কি জানিস বন্ধুরা এমনই হয়৷ প্রেম ভালোবাসার চেয়ে বন্ধুত্ব অনেক বড়। বন্ধুরা কখনো বন্ধুকে বিপদে ফেলে পালায় না।”
অর্ষার বদলে প্রিয়া বলল,
“বন্ধুরা বন্ধুর অপমানও সহ্য করে না। বন্ধুকে কারো সামনে ছোট হতে দেয় না। অর্ষা সেদিন গিয়েছিল। ছুটেছিল পাগলের মতো। আর সেই ছোটাই ওর জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। পিচঢালা রাস্তায় রক্তের বন্যা বয়ে যায়। আই সিওতে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছিল। ডাক্তার যখন ভরসা দিতে পারছিল না তখন একমাত্র মেয়েকে হারানোর আতংকে স্ট্রোক করে বসে ওর বাবা। অর্ষা তো রেসপন্স করে কিন্তু ওর বাবা না ফেরার দেশে চলে যায়। অর্ষার জ্ঞান ফেরার পর জানতে পারে ওর বাবা নেই। ওর ভেতর তখন কি চলছিল কেউ আন্দাজ করতে পারছো? ভাঙা পা, সারা শরীর ভর্তি ক্ষত নিয়ে চলেছে দুইটা মাস। ওর শরীরে এখনো অনেক ক্ষতের চিহ্ন আছে। দর্শনের আর কি ক্ষতি হয়েছে? কিছুদিন পরে ঠিকই সেই দর্শন হয়ে গেছে। কিন্তু ও এতিম হয়ে গেছে সেদিন। পরবর্তীতে ডাক্তারের কাছে রিপোর্ট নিয়ে যাওয়ার পর জানতে পারে…..
” স্টপ প্রিয়া!”
অর্ষার চিৎকারে সবার মনোযোগ নষ্ট হয়। এতক্ষণ ধরে সবাই গভীর ভাবে তলিয়ে গিয়েছিল একটা দুঃখজনক অতীতে। অর্ষা চোখ বন্ধ করে কান চেপে ধরে চিৎকার করছে। জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগল অর্ষা। চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। বসা থেকে উঠে দাঁড়াল। শরীর থরথর করে কাঁপছে ওর।
অর্ষা আর এক মুহুর্ত দেরি করল না। বেরিয়ে গেল। কিন্তু প্রিয়া গেল না।
“ওর হাসিখুশি জীবনটা তছনছ হয়ে গেছিল সেদিন। সব হারিয়ে মেয়েটা যখন নিঃস্ব তখন দর্শন ইউএসএ বসে বসে পিক পোস্ট করে। অর্ষা যখন নতুন করে বাঁচার জন্য, খুশী থাকার জন্য ঢাকা ব্যাক করে তখন প্রতিনিয়ত তোমাদের প্রশ্ন আর খোঁচায় দুর্বিষহ হয়ে পড়ে ওর জীবন। তোমরা সবাই মিলে ওর বেঁচে থাকা হারাম করে দিচ্ছো। কি চাও ও মরে যাক? মরে তো গেছেই। বেঁচে আছে শুধু খেয়ে-পরে, মনটা মরে গেছে। দুপক্ষের দেখার পরেও আরো কিছু থাকে যার সাক্ষী তৃতীয় কোন ব্যক্তি।”
প্রিয়া কাঁদতে লাগল। তারপর অর্ষার পেছনে ছুটতে লাগল।
সবাই ওর কথা শুনে বাকরুদ্ধ। বিশেষ করে দর্শন। ও হাঁটু গেরে বসে পড়ল। পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। ওর চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।
চলবে……
(এলোমেলো হয়েছে অনেক। 😔😔)
ইসসসসসসস,,,,,,, জাস্ট অস্থির একটা গল্প