মেঘের_আড়ালে_রোদের_লুকোচুরি ❤️ 🌈💙🎨😏❤️🥳🐦💐🍫🏩💒 Part-29

0
1028

😏 #মেঘের_আড়ালে_রোদের_লুকোচুরি ❤️
🌈💙🎨😏❤️🥳🐦💐🍫🏩💒

Part-29

পরের দিন সবার আগে ঘুম ভাঙে হিয়ার কারণ খুব সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস আছে তার,,তাই রাতে যতোই দেড়িতে ঘুমোক সকালে তার ঘুম ভাঙ্গবে,,জানালা দিয়ে সকালের মিষ্টি বাতাসের সাথে মিষ্টি রোদ এসে উঁকি দিচ্ছে জানালার পর্দা সরিয়ে ঘরের মাঝে,,চোখ মেলে হিয়া নিজেকে উজানের বাহুডোরে আবিষ্কার করে লজ্জা পেয়ে যায় কাল রাতে কি একটা অহেতুক বায়না করেছিলো সে ধুর,,হিয়া আলতো করে উজানের উপর থেকে উঠে যেতে খেয়াল করে উজান পুরো ঘেমে গিয়ে একাকার অবস্থা,,শ্রাবণের দিকে তাকাতে দেখে শ্রাবণ গরমে কম্বল টা সরিয়ে দিয়ে হাত পা মেলে তার উপর ঘুমোচ্ছে,,হিয়া উজান আর শ্রাবণ দুজনকে ঠিক করে শুইয়ে দিয়ে মাথার উপর ফ্যান টা চালিয়ে সব জানালা খুলে দেয়,,কেউ এখনো উঠেনি দেখে হিয়া রুমের ব্যালকুনিতে গিয়ে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি ভেজা সকালের আবহাওয়া নিজের মধ্যে উপভোগ করতে শুরু করে,,

ফোনের কিরিং কিরিং শব্দ কানে ভাসতেই ঘুম টা ভেঙে আসে তার,,ঘুমো ঘুমো চোখে ফোন টা রিসিভ করতেই দেখে হিয়া তার পাশে নেই,, উঠে পাশে থাকা গেঞ্জি টা না পড়ে তাড়াহুড়ো করে শার্ট টা পড়ে বোতাম লাগাতে যাবে তখনি চোখ যায় ব্যালকুনিতে দাঁড়ানো হিয়ার উপর,,উজান ফোনে কথা বলতে বলতে ব্যালকুনিতে গিয়ে উন্মুক্ত বুকেই হিয়াকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে হিয়ার মাথার সাথে মাথা ঠুকে দেয়

উজানঃ মা ঔদিন তো আমার পরীক্ষা আছে আমি কি করে আসবো ঔদিন,,তুমি নীলিকে একটু বুঝাও

বাসবিঃ সত্যি কি তোর পক্ষে আসা সম্ভব না

উজানঃ না মা এরকম হুটহাট ডিসিশন নিলে হয়,,তবে নীলিকে বলো আমি ওর হলুদ এ্যাটেন্ড করতে না পারলেও ওর বিয়েতে ঠিক আসবো,,বিয়ে ৬তারিখে না ৫তারিখ পরীক্ষা দিয়ে আমার আর একটা পরীক্ষা থাকবে,,আমি ৫তারিখ পরীক্ষা দিয়েই না হয় ঔদিনে রওনা দেবো

বাসবিঃ দেখ যা ভালো মনে হয় সেটা কর,,কিন্তু এবার বিয়ে তে না আসলে কিন্তু নীলি তোর সাথে এ জীবনেও আর কথা বলবে না

উজানঃ আসবো আসবো তুমি এতো টেনশন নিও না তো

বাসবিঃ তা তোর বোন তো বিয়ে করে নিচ্ছে এবার তুই আমাকে আমার বউ মা এনে দে না বাবা,,কি হয় এই মা টার এতটুকু চাওয়া পূরণ করতে তোর

উজানঃ দেবো দেবো,,নীলির বিয়ে টা হয়ে যাক তখন তোমার এই ইচ্ছে টাও পূরণ হবে

বাসবিঃ কি ব্যাপার বল তো সেদিন তোর দু বোনকেও দেখলাম তোমার বড় বউ মা তোমার ছেলের বিয়ে কিসব বলে বলে হেঁসে যাচ্ছিলো তা তুই আবার ওদিকে

উজানঃ ধরে নেও তাই

বাসবিঃ সত্যি(খুশিতে)

উজানঃ আস্তে মা,,প্রেম আমি করছি আর তোমার খুশি দেখো

বাসবিঃ মানে এটা সত্যি মানে সত্যি সত্যি আমার ছেলে,,মেয়েটা কি রকম রে কি নাম কোথায় থাকে,,তোকে ভালোবাসে তো,,তোর ঠিক মতো খেয়াল রাখে,,তুই কি খেতে ভালোবাসিস ও জানে,,না জানলেও আমি আছি না সব শিখিয়ে দেবো

উজানঃ আরে আরে মা থামো,,এতো এক্সাইটেড তো আমার সাথে দেখা করতে আসার সময়ো তুমি হও না কখনো,,,মেয়েটার নাম হিয়া,হিয়া মুনতাসীর আহমেদ,,আমাদের ভার্সিটিতেই পড়ে কেবলই ফাস্ট ইয়ারের শেষের দিকে,,ছোট্ট একটা বাচ্চা বুঝলা,,একদম পিচ্চি,,আর তুমি খেয়াল রাখার কথা বলছো আগে ঘন্টায় ঘন্টায় তোমার ফোনের জ্বালায় ফোন ওফ করে রাখতাম এখন তার জ্বালায় ফোন ওফ রেখে ঘুমোতে হয়,,আর হাতের রান্না একদম তোমার মতো,,স্পেশালি কুমড়োভর্তা টা,,মনে হয় তোমার মাখা ভাত খাচ্ছি,,আমার এই পিচ্চি টাকে তোমার খুব পছন্দ হবে মা ও একটা রসগোল্লা বুঝছো খুব মিষ্টি

বাসবিঃ যাক এতোদিনে আমার মন টা একটু হালকা হলো,,এখন শুধু তুই নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে যা,,নাহলে কি হিয়াকে সারাজীবন কুমড়ো আর ভাত খাওয়াবি না-কি,,তোরা ভালো থাকলেই আমি ভালো,,আচ্ছা শোন এ বিষয়ে আমি রাতে কথা বলবো এখন তোর সাথে এদিকে অনেক কাজ হলুদের,,আমি রাখছি এখন,,,গরম দেখে বেশি আবার ঠান্ডা লাগাস না,,সময় মতো খেয়ে নিস কেমন রাখছি

উজানঃ হুম

উজান ফোন রাখতেই হিয়া কপট রাগ দেখিয়ে ওর পেটের কাছে রাখা উজানের হাতের উপর দুটো চিমটি কাটে

হিয়াঃ আমি আমি ছোট বাচ্চা,,পিচ্চি মেয়ে আমি

উজানঃ পিচ্চিই তো,আমি কতো বড় তোমার থেকে এই দেখো এতো বড়,,আর তুমি কি হ্যা এতো সকালে এভাবে উঠে ব্যালকুনিতে কি করছো কি বাতাস দেখছো মনে হচ্ছে উড়ে যাচ্ছি,,শুধু শুধু ঠান্ডা লাগার কাজ

হিয়াঃ হুম,,মা ছিলো ফোনে?আমার কথা শুনে মা কি বললো

উজানঃ মা পুরো খুশিতে নাচ করবে এরকম অবস্থা,,নীলির বিয়ে টা মিটে গেলে তোমায় নিয়ে বাড়িতে যাবো ততোদিনে পরীক্ষা টা শেষ হয়ে আসুক,,নিজের একটা পারমানেন্ট ব্যবস্থা করে তোমাকে আর শ্রাবণকে অফিসিয়ালি একটা নাম দেবো

হিয়া ঘুরে গিয়ে দু হাতে উজানকে জড়িয়ে ধরে

হিয়াঃ ধন্যবাদ আপনাকে আমাকে এতো টা ভালোবাসার জন্য

উজানঃ তাই,,তা এর বদলে আমার রিটার্ন হিসাবে কিছু তো এখনো আমায় দিলে না তুমি

হিয়াঃ কি চাই আপনার?

উজানঃ কি চাই?

উজান একটা দুষ্ট হাসি দিয়ে হিয়াকে ব্যালকুনির গেটে চাপা দিয়ে হিয়ার কোমড়ের ভাঁজে হাত রেখে

উজানঃ চাই তো অনেক কিছু আপাতত এই নরম নরম ঠোঁট গুলো কে নিজের করতে পারলে ব্যাপারটা মন্দ হয় না

হিয়াঃ কিসব বলছেন আপনি হ্যা,,জানেন না বিয়ের আগে এসব করা হারাম কাজ

উজানঃ ও আচ্ছা তাই,,আর তুমি যে কাল রাতে আমাকে জড়িয়ে কি সুন্দর ঘুম দিলা সেটা কিছু না তখন তখন এসব হারাম হালাল কোথায় ছিলো শুনি

হিয়াঃ হ্যা মানে মানে ওটাতো,,ওটা তো শুধু

উজানঃ চুপপ আর কোনো কথা না,,আমি যা চাচ্ছি তা আমার এক্ষুনি চাই

হিয়াঃ দে দেখুন আপনি আপনি এরকম লুক দিবেন না হ্যা,,আমার কিন্তু ভয় করছে,,প্লিজ ছাড়ুন আমায়,,আ আ আমার জ্বর টা কিরকম বাড়ছে দেখুন

উজানঃ উম হুম,,ইটস স্টাডি টাইম চুপচাপ শিখতে হবে

হিয়া ভয়ে চোখ মুখ বন্ধ করে নেয়,,উজান একটু একটু করে হিয়ার মুখের দিকে আগাতে ধরে,,একটা সময় দু’জনের নিঃশ্বাস পুরো এক হয়ে আসে,,হিয়া কেঁপে গিয়ে উজানের শার্ট খিঁচে ধরে,,কিছু একটা হবে হবে ওমনি রুম থেকে শ্রাবণের কান্নার শব্দ কানে ভাসতেই দু’জনে ছিঁটকে যায়,,হিয়া দৌড়ে রুমে এসে শ্রাআণকে জড়িয়ে ধরে হিয়ার পেছনে আসে উজান,,

হিয়াঃ কাঁদতিছিস কেনো তুই,,হেই ছেলে এই তো বুবু এই তো এই তো,,কাঁদে না সোনা আমি আছি ভালো ভাইয়া আছে

শ্রাবণ কাঁদতে কাঁদতে রাগে হিয়াকে দুটো মারে

শ্রাবণঃ কোতায় ছিলি তুই এতা এটা কার বাড়ি,,আমি তোকে না দেখে ভয় পাইছি না

হিয়াঃ চুপ চুপ আমি কোথাও যায়নি আমি তো এখানেই ছিলাম,,এই যে ভালো ভাইয়া আমার সাথে দেখ

উজানকে দেখে শ্রাবণ আরো কেঁদে উঠে,,উজান শ্রাবণকে কোলে নিয়ে শ্রাবণের মাথায় হাত বুলাতে থাকে

উজানঃ কি হ’য়েছে আমার বাবা টার,,এতো কেনো কাঁদে,,আমরা তো এখানেই ছিলাম

শ্রাবণঃ আমি ঘুমে উতে একা একা ভয় পাইছি না,,এটা এটা কোথায় আমি ভয় পাইছি

উজানঃ কালকে যে আমরা বুবুকে ডক্টর দেখিয়ে সন্ধি আপুর বাড়িতে আসলাম ভুলে গেলি,,এটা তো সন্ধি আপুর বাড়ি তারপর আমরা সারারাত মজা করে গেম খেললাম

শ্রাবণঃ এখন মনে মনে পড়ছে,,তখন ভয় পাইছি

হিয়াঃ হইছে এখন ঢং করে কান্না করা থামাও এবার,,আসো মুখ ধুইয়ে দেই তোমার,,কি চোখ মুখের অবস্থা করলো কান্না করে,,আর এ-ই যে আপনি এরকম শার্টের বোতাম খোলা থুইয়ে ঘুরে কেনো বের হচ্ছেন,,যান গিয়ে গেঞ্জি টা পড়ে নিন,,ঠান্ডা লাগার বুদ্ধি

উজানঃ আসছে জ্ঞান দিতে,,নিজের শরীর ঠিক করো আগে(হিয়ার চুল টেনে দিয়ে)

হিয়াঃ আহ লাগে না আমার

উজানঃ সরি সরি

!
!
!
সেদিন টা কোনোরকম সন্ধির বাবা মা কে বুঝিয়ে দুপুরের দিকে উজান হিয়াকে বাড়িতে ড্রপ করে দিয়ে নিজের বাড়ি ফিরে,,শুরু হয় আবার সেই পরীক্ষার পড়ার পাশাপাশি হিয়ার প্যারা,,সব মিলিয়ে পরীক্ষা গুলো সুন্দর মতো মিটিয়ে আর দুটো পরীক্ষা এখনো বাকি,,কাল হয়ে কিছুদিন বাদে আরো একটা,,

হিয়াঃ রাত দুটো বাজছে কখন ঘুমোবেন আর কখন উঠবেন আপনি শুনি,,এই জন্য আগে থেকে এই আমার পেছনে অহেতুক পরে না থেকে পড়াশুনা টা করলে আজ এতো কষ্ট হতো না

উজানঃ আমি সেই ৬টা থেকে পড়তে বসে এই এখন নিয়ে উঠলাম হিয়া,,একটু তো মায়াদয়া করো,,কোথায় একটু সুন্দর করে কথা বলে আমাকে ঘুম পাড়িয়ে দিবে তা না করে তুমি কি করছো

হিয়াঃ আমি আপনার মতো এতো সুন্দর করে কথা বলতে পারি না,,ডিনার শেষ করেছেন না,,যান গিয়ে এখন শুইয়ে পড়ুন আমি সকালে ডেকে তুলবো এখন

উজানঃ লাগবে না ডেকে তোলা এমনিতেও ফোনে চার্জ নেই,,সকালে উঠে ফোন চার্জ দেবো,,আর তুষার রা সবাই বাড়িতে আছে আজ,,কাল একসাথে যাবো পরীক্ষা দিতে তোমাকে ডেকে তুলতে হবে না

হিয়াঃ আচ্ছা ঠিক আছে,,আমি রাখছি এখন,,আর কিন্তু ফোনে হাত দিবেন না পরীক্ষার পড় যতো খুশি মনোযোগ দিয়ে গেম খেলুন আমি কিচ্ছু বলবো না,,এখন একদম ঘুম
উজানঃ তুমি না বললেও আমি এখন ঘুমোবো মাথা পুরো ছিঁড়ে যাচ্ছে

হিয়াঃ হ্যা তা রাখুন এবার

উজানঃ বলছি কি হিয়াপাখি

হিয়াঃ কি!!

উজানঃ কিছু না এমনি,,ঔ একটু আচ্ছা থাক অন্য দিন

হিয়াঃ রাখুন তাহলে

!
!
!

উজানকে ফোনের মধ্যে ঝারি দিয়ে হিয়া ফোন টা রেখে দিতেই কিছুক্ষণ বাদে একটা আননোন নাম্বার থেকে হিয়ার ফোনে একটা কল আসে,,এতো রাতে হিয়া প্রথমে কল টা ধরতে চায় না কিন্তু দু বার রিং হওয়াতে হিয়া ফোন টা রিসিভ করে

হিয়াঃ হ্যালো কে,,কে বলছেন?

চাচ্চুঃ টুকটুকি আমি তোর মুসতাকিম চাচ্চু বলছি চিনতে পারছিস না,,

হিয়াঃ চাচ্চু তুমি!!তুমি এতোদিন পর,,এটা এটা কার নাম্বার এটা তো তোমার নাম্বার ছিলো না

চাচ্চুঃ হ্যা আমার এটা নতুন নাম্বার তাই তোর চিনতে অসুবিধে হচ্ছে,,কেমন আছিস মা তুই শ্রাবণ ভালো আছে

হিয়াঃ হ্যা চাচ্চু আমরা দুজন ভালো আছি,,তুমি কেমন আছো?বাড়িতে সবাই কেমন আছে?

চাচ্চুঃ আমার আর ভালো থাকা রে মা,,আছে বাড়িতে তোর চাচি দাদু ছোট চাচা সবাই ভালো আছে

হিয়াঃ আর তুমি তোমার টা বললে না যে?

চাচ্চুঃ আমার টা তোকে শুনতে হবে না,,শোন আমি তোকে জরুরি একটা দরকারে ফোন দিয়েছি তুই কি কাল একবার রংপুরে আসতে পারবি?

হিয়াঃ কালকে রংপুরে?কেনো?

চাচ্চুঃ কালকে বাড়ির সব জায়গা জমি ভাগ হবে,,অনেকদিন ধরে তোর ছোট চাচ্চু এসব নিয়ে ঝামেলা করছে তাই তোর দাদু সিদ্ধান্ত নিয়েছে উনি এবার সবার টা সবার নামে লিখে দিয়ে সবাইকে সবটা বুঝে দিবে

হিয়াঃ তাই,,কিন্তু চাচ্চু তুমি তো জানো দাদু বা ছোট চাচ্চু আমাকে তেমনটা পছন্দ করে না,,আমি শুধু শুধু গিয়ে ওখানে কি করবো ওরা তো আমার ভাগের টা আর আমাকে বুঝিয়ে দিবে না

চাচ্চুঃ এটাই হচ্ছে তোর সমস্যা তুই সবাইকে ছেড়ে দিয়ে দিস,,শোন আজ যখন কথা হচ্ছিলো তখন আমি তোদের দু’জনের কথাও বলেছি,,ওরা কিন্তু তোদের কে তোদের পাওনা দিতে বাধ্য

হিয়াঃ দাদু কি বলেছে আমার কথা শুনে?

চাচ্চুঃ ওনার কিছু বলার মুখ আছে নাকি,,উনি বলেছে কাল যদি তুই এসে সবার সাথে মিটিং এ বসে আলাপ আলোচনা করে নিজের যে টুকু পাওনা আছে সেটা নিয়ে যেতে পারিস সেখানে তো আর ওনার কিছু করার নেই

হিয়াঃ কিন্তু ছোট চাচ্চু যদি আমরা যা-ওটা ভালো চোখে না নেন তখন??

চাচ্চুঃ শোন হিয়া আগে তুই ছোট ছিলি বলে ওরা কিন্তু সুযোগ টা পেয়েছিলো কিন্তু এখন তুই এ্যাডাল্ট যথেষ্ট বুঝিস,,তুই যদি পুলিশ নিয়ে বাড়িতে আসিস তোর মনে হয় ওদের কিছু করার মুরদ থাকবে

হিয়াঃ কালকেই যেতে হবে?

চাচ্চুঃ হ্যা কালকে কালকে না হলে পরশু তো হবেই,,আর এমনো হতে পারে হয়তো জমি নিলামে উঠবে যতো টাকাতে বিক্রি করা হবে ঔ টাকা সবার মাঝে ভাগ হয়ে যাবে,,তাহলে তুই কেনো এতো ভাবছিস

হিয়াঃ ভাগ হলে তাও কতো টাকা আসবে চাচ্চু,,আমার এমনিতেও কিছু টাকা লাগতো শ্রাবণের জন্য

চাচ্চুঃ ধর তাও ৫০/৬০হাজার তো পাবি আমি জানি ওটা হলেও তোর অনেকটা উপকার হবে,,এখন তুই ভেবে দেখ তুই কি করবি,,যদি সকালের গাড়িডে আসতে পারিস তো চলে আয়,,আমি তোর অপেক্ষা তে থাকবো,,রাখছি এখন এখন বেশি কথা না বলা টাই ভালো

হিয়াঃ ঠিক আছে চাচ্চু,,আমি আসলে তোমাকে ফোন করবো,,,,
_____________

চাচ্চুর কথা শুনে হিয়া এখন কি করবে তাই ভাবতে থাকে,সে কি যাবে তার দাদু বাড়িতে না যাবে না,,সারারাত দু রকমের চিন্তা কাটিয়ে সকালে হিয়া সিদ্ধান্ত নেয় সে তার দাদু বাড়ি যাবে,,যদি কিছু টাকা আসে তাও তো অনেক

হিয়াঃ না একদিনেরই তো ব্যাপার এখন বাজে ৭ঃ৩০ আমি এগারোটা বা বারোটার টিকিটে রওনা দিলে সন্ধ্যা অবধি পৌঁছে যাবো রংপুরে,,তারপর কি সিদ্ধান্ত হয় সেটা শুনে না হয় কাল আবার ব্যাক করলাম,,একদিনের তো একটু কষ্ট হবে এই যা,,ভাইয়া আর কতো করবে আমাদের জন্য প্রতি মাসে তো শ্রাবণের জন্য এমনিতেও ওনার অনেক খরচ হয়ে যায়,,তার উপর সেদিন কতো গুলো টাকা খরচ করে কিসব বাজার কিনে দিয়ে গেলো এখন তো আমি ওনার মুখের উপর নাও করতে পারি না রাগে কি রকম আমার সাথে কথা না বলে থাকে,,কিছু না নিলে ভার্সিটিতে গিয়েও দেখেও না দেখার ভান করে আমার কষ্ট হয় এটুকুও উনি বুঝে না,,কিছু টাকা হাতে আসলে আমার অনেক টা উপকার হবে,,কখনো তো আমি ওনাকে কিছু কিনে দেই নি এবার একটা কিছু কিনে ওনাকে উপহার দিতে পারবো তাহলে,,আচ্ছা এখন তো আটটার কাছাকাছি বাজছে উনি কি এখনো ঘুমোচ্ছেন নয়টায় তো ভার্সিটি যেতে হবে,,একটা ফোন দিয়ে দেখি,,
!
!

হিয়া উজানকে ফোন করে কিন্তু উজানের ফোন সুইচড ওফ দেখায়,,হিয়া ভাবে উজান হয়তো ফোনে চার্জ দিচ্ছে কাল রাতে তো কথা বলার সময় বললো যে ফোনে বেশি চার্জ নেই,,হিয়া ফোন থুইয়ে সব গুছিয়ে শ্রাবণকে তুলে খেতে মিলতে তখন সাড়ে নয়টা হয়ে আসে,,হিয়া উজানের নাম্বারে আবার ট্রাই করে কিন্তু ফোন তখনো ওফ,,পরীক্ষা চলাকালীন এমনিতেও উজানের ফোন ওফই থাকে,,হিয়া কোনো উপায় না পেয়ে আগে গিয়ে শ্রাবণকে নিয়ে বাসের দুটো টিকিট কেটে ক্যাম্পাসে আসে,,ঘড়িতে তখন ১০ঃ২০ উজানের এতক্ষণে পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে,,হিয়া এখন কি করবে ওদিকে তো ঝিনুকো ফোন তুলছে না,,ঝিনুক কি ক্লাসরুমে ক্লাস করছে নাকি কে জানে,,ঝিনুক কে বলে গেলেও তো সে উজানকে বলতে পারতো,,হিয়া শ্রাবণকে নিয়ে চুপিচুপি পায়ে পরীক্ষা হলের কাছে আসতে দেখেই ভেতরে তিনজন লম্বা মোটাসোটা টিচার দাঁড়িয়ে গার্ড দিচ্ছে,,একটা উজানের ঠিক সামনে,একটা পুরো রুমে পায়চারি করছে আর একটা সামনে দাঁড়িয়ে কিসব ফাইল দেখছে

হিয়াঃ কি করি আমি এখন,,না না বেশিক্ষণ এখানে থাকা যাবা না,,কেউ দেখে নিলেই কেলেংকারী হয়ে যাবে,,জানালার এ সাইডে ওটা তুষার ভাইয়া না,,হ্যা তো,,কি করি আমি এখন,, ওনাকে কি করে বলে যাবো,,

হিয়া কি জানি একটা ভেবে একটা চিরকুটে কি জানি লিখে তুষারকে আস্তে করে ডাক দিতেই তুষার চোখ তুলে এ পাশে তাকাতেই শ্রাবণ গিয়ে আস্তে করে তুষারকে ঔ চিরকুট টা ঢিল দিয়ে ফেলে দেয়,,হিয়া হাতের ইশারায় বলে ওটা উজানকে দিতে,,তুষার মাথা নাড়িয়ে ঠিক আছে বলতেই হিয়া দৌড়ে শ্রাবণকে নিয়ে ওখান থেকে পালিয়ে আসে,,

!
!
!

সাড়ে এগারোটার কাছাকাছি বাস রওনা দেয়,, মহাখালী পাড় হয়ে টাঙ্গাইলের মাথাতে আসার সময় হিয়ার হুশ ফিরে,,হিয়া উঠে তড়িঘড়ি করে ওর ফোন টা ব্যাগ থেকে বের করে

হিয়াঃ আমি এতো গাধা আমি তো ওনাকে একটা টেক্সট করেও বলতে পারি যে আমি,,ইসস সত্যি উনি ঠিকই বলে আমার মাথায় সত্যি যদি কিছু থেকে থাকে,,তখন আমি আন্দাজই তুষার ভাইয়া আর লাইব্রেরি মামা কে বিরক্ত করলাম,,,,,নির্ঘাত আজো ঘুম থেকে উঠে কিছু না খেয়ে পরীক্ষা দিতে এসেছে,,নাহলে কি একবারো ফোন খুলে আমাকে উনি ফোন না করে,,পরীক্ষা দিয়েই খাবারের জন্য আজো চেঁচামেচি করবে আমি সিউর,,না আগে একটা ওনাকে টেক্সট দিয়ে রাখি তাহলে আর উনি আমাকে নিয়ে এতো টেনশন করবেন না,,হুম

হিয়া ফোন টা নিয়ে টেক্সট করতে যাবে ওমনি পাশ থেকে একদল ছিনতাই কারি জানালা ভেদ করে হিয়ার ব্যাগ সহ ফোন টা নিয়ে এক টানে বেড়িয়ে যায়,,ঘটনা হিয়ার বুঝে আসতে হিয়া উঠে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে কিন্তু এতে লাভের লাভ আর কিচ্ছু হয় না,,

হিয়াঃ আমি আমি এখন এই ফোন ছাড়া কি করে,,আমার ব্যাগে তো আমার বাকি যেটুকু টাকা ছিলো তার পুরোটাই

পাশ থেকে একজন ভদ্রমহিলা হিয়ার দিকে একটা পানির বোতল এগিয়ে দিয়ে

ভদ্রমহিলাঃ জার্নিতে এরকম অন্য দিকে মন দিয়ে রাখলে হয় রে মা,,দেখলাই তো জানালা টা পুরো খোলা,,গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে,,কেউ এরকম জানালার সামনে ব্যাগ আর ফোন রেখে কথা বলে,,তোমরা এ যুগের মেয়েরা কোনোদিকেই হুঁশ ঞ্জান থাকে না তোমাদের,,বাড়িতে কাউকে কিছু জানানোর হলে আমার ফোন থেকে কল করতে পারো নেও

হিয়াঃ আমার যে কারো নাম্বার মনে নেই,,,,এখন এই ফোন ছাড়া আমি কিভাবে চাচ্চুর সাথে দেখা করবো,,ওনার নাম্বারো যে আমার মনে নেই,,কেনো সবসময় আমার সাথেই এরকম হতে হয়!!কেনো____ওদিকে উনিও তো পরীক্ষা দিয়ে এসে আমার সাথে কথা বলতে চাইবে আমি এখন কি দিয়ে ওনার সাথে,,লাইব্রেরি মামা কি বই টা ওনার হাতে দিতে পেরেছে??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here