😏 #মেঘের_আড়ালে_রোদের_লুকোচুরি ❤️
🌈💙🎨😏❤️🥳🐦💐🍫🏩💒
Part-44
বিয়ে পড়ানোর পর নিয়ম করে উজান আর হিয়াকে নিয়ে আসা হয় স্টেজের উপরে,,চলে সবার সাথে তাদের আলাদা আলাদা ফটোশুট,,যে যেভাবে পারছে ছবি তুলছে,,যেনো ছবি ওঠানো টাও বিয়ের একটা অনেক বড় দায়িত্ব,,ছবি ওঠানো শেষে এবার আসে সেই কাঙ্ক্ষিত সুবর্ণসুযোগ বরের জুতো চুড়ি করা,,দাদি কে দিয়ে টেকনিক খাটিয়ে খুলে নেওয়া হয় উজানের জুতো,,দাদি আম্মাও যে এ-তো ভালো অভিনয় জানে কে জানতো,,একটা বড় গামলায় উজানের পা দুটো পানিতে ডুবিয়ে উনি ওনার হাতের সোনার চুড়ি দু’টো খুলে সেটাকে প্রথমে পানিতে ভিজিয়ে নেয়,, তারপর উজানকে ব’লে এ-ই সোনার পানিতে না-কি এখন উনি উজানের পা ধুয়ে দেবে,,ব্যাপারটা তো উজানের বেশ ইন্টারেসটিং লাগে,সে তো খুশি মনে নিজের জুতো খুলে সবার সাথে তাল মিলিয়ে পা দুটো পানিতে ডুবিয়ে দেয়,,আর এ-ই সুযোগে সব মেয়েদের গ্যাং জুতো নিয়ে লে দৌড়,,কি হলো কেস টা,,উজান হিয়া কারোই প্রথমে ব্যাপারটা বুঝে আসে না এরা আবার এরকম দৌড় দিলো কেনো,,এদিকে দাদি তো দাদির মতো কাজ করে ফুড়ুৎ,,শেষে গিয়ে এবার স্টেজ থেকে ওঠার সময় শাহরিয়ার সাহেব খেয়াল করেন তার পায়ের জুতো নেই,,তারমানে কি তখন সন্ধিরা!!__উজান রাগে চোখ দু’টো ছোট করে কপাল কুঁচকে ভাঁজ করে নিলেও হিয়া মুখ টিপে টিপে হাসতে শুরু করে,,
উজানঃ হোয়াট দা,,,সন্ধিইইই,,এ-ই জিনিয়া___সন্ধিইই___ঝিনুককক কোথায় তোমরা,,আমি ডাকছি না
উজানের ডাকে সবাই ৩২পাটি দাঁত বের করে হেলেদুলে খিলখিল করে উজানের সামনে এসে লাইন করে দাঁড়িয়ে যায়,,আর শুরু করে সবার টান দেওয়া টানা টানা ন্যাকা সব কথা,,
ঝিনুকঃ yes jiju ডাকছিলেন আমাকে!
উজানঃ ইয়েস শালিসাহেবা ডাকছিলামই তো,,আমার জুতা গুলো একটু সুন্দর মতো আমাকে এনে দেওয়া যাবে কি এখন,,
উজানের কথায় যেনো সবাই আকাশ থেকে পড়লো,,জুতা আনতে হবে মানে,,জুতা আবার কি জিনিস!
ঝিনুকঃ জুতা!!___কিসের জুতা দুলাভাই,,
উজানঃ কিসের জুতা,,,একটু আগে আপনারা আমার জুতা নিয়ে যে দৌড় দিলেন আমি সেই জুতার কথা বলছি ছোট বউউউ(চোখ টিপে)
ঝিনুকঃ ইসস যা আমি তো লজ্জা পেয়ে গেলাম,,এ-তো অসভ্য কেনো আপনি হু,,
উজানঃ ইসস আমার ছোট বউ টা কতো লজ্জা পায়,,এ-ই বড় বউ তুমি একটু শিখতে পারো না ওকে দেখে কিভাবে এ-তো লজ্জা পাইতে হয়,,
হিয়াঃ হুমমমম,,দেখছি তো,,আর শিখছিও,,
সন্ধিঃ এ-ই ঝিনুক কি হচ্ছে কি,,ওসব রঙ ঢং রেখে আসল কথা বল,,
ঝিনুকঃ হুম হুম__তা জিজাজি এখন আপনার এ-ই এতো গুলো ছোট বউদের খুশি করার জন্য যদি কিছু বকশিশ দেওয়া যায় ব্যাপারটা কিন্তু মন্দ হয় না,,তাই না বলুনননন
উজানঃ ওহ আচ্ছা এই ব্যাপার,,কিন্তু এখন যে আমার কাছে আপনাদের খুশি করবার জন্য সে-রকম কিছুই পকেটে নেই,,এ-ই খুশি করাটা না হয় পাওনা থাক কালকের জন্য,,ছোট বউউউউ
সন্ধিঃ রাখাচ্ছি পাওনা,,বেটা তুই দেনমোহর করিস কোটি টাকার আর এখন বলছিস আমার পকেটে কানাকড়িও নেই,,মানে ন্যাকামি দেখলে যেনো গা পিওি জ্বলে যায়,,
উজানঃ আরে ওটা তো জাস্ট একটা,
জিনিয়াঃ তোমার ঔ জাস্ট ফাস্ট তুমি তোমার কাছে রাখো ভাইয়া,,এখন জুতা পাইতে চাইলে টাকা দেও টাকা,
উজানঃ আরে সত্যি বিশ্বাস কর,আমার কাছে এ-ই মুহুর্তে কিচ্ছু নেই,আচ্ছা তোরা জুতা টা দিয়ে যা আমি বুথ থেকে টাকা তুলে এনে তোদের দিচ্ছি,,প্রমিস
সন্ধিঃ আ হা হা,,তুমি বললা আর আমরা সুরসুর করে তোমাকে জুতা এনে দিলাম তাই না,,বেশি কথা না বলে টাকা দে,,ওদিকে কিন্তু তোকে তোর মা ডাকছে হ্যা__এখন তুই যদি টাকা না দিয়ে জুতো না পড়ে এভাবে খালি পায়ে খাবারের ওখানে যাস তাহলে সেটা একান্তই তোর ইচ্ছে,,আমাদের কি
হিয়াঃ চাচ্ছে যখন দিয়ে দিন না ওদের কিছু টাকা,,
উজানঃ তুমি চুপ করো,,ওদের কে আমি চিনি না মনে করছো,, এখন জুতা নিয়ে টাকা চাইছে পরে যখন খেতে বসবো তখন আবার টাকা চাইবে,,তারপর রাতে রুমে নিয়ে যাবার সময় টাকা চাইবে,,ওদের জানো তুমি
ঝিনুকঃ ওসব ফিসফিস বন্ধ করে,,টাকা টা দিন,,নয়তো জুতো জোড়া নিলামে উঠবে কিন্তু
সন্ধিঃ নিলামে উঠবে আর এমন দামে নিলামে উঠবে না তুই নিজেও শকড হ’য়ে যাবি
সবার জোড়াজুড়ি,ধমকানি,খাবারের ওদিক থেকে উজানের মা’র তাড়া সব মিলিয়ে উজান বাধ্য হয় শেরওয়ানির পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করে এক হাজার টাকার দুটো নোট গুনতে,,
সন্ধিঃ ঔসব এক দুই দিয়ে হবে না মামা,,দশ ফেলো দশ,,
উজানঃ তোরা চাইতে থাক আমি এই দুইয়ের বেশি একটা টাকাও দেবো না,,
ঝিনুকঃ হ্যা গো তুমি এরকম করতে পারবা,,আমরা এ-তো গুলো তোমার ছোট বউ এই দুই হাজারে কি হবে আমাদের,,তার উপর তোমার এ-ই বোন গুলোও তো আছে,,একটু বাড়াও নাআ প্লিজজ
উজানঃ অঅঅ আমার ছোট্ট বউ টা এ-তো কিউট করে বললো তার জন্য এ-ই এক্সটা পাঁচশো টাকা,,খুশি
সন্ধিঃ মাএ আড়াই হাজার,,তোর টাকা তুই তোর কাছে রাখ,,লাগবে না আমাদের টাকা,, আর না লাগবে তোর জুতো পড়া,,যা গিয়ে খালিপায়ে গেস্ট দের আপায়ন কর,,হু
হিয়াঃ চাচ্ছে যখন দিয়ে দিন না,,এমন তো না যে আপনার কাছে সত্যি টাকা নেই,
উজানঃ কোথায় তুমি আমার হ’য়ে না না করবে উল্টে তুমি ওদের উস্কে দিচ্ছো,,সত্যি হিয়া
হিয়াঃ না আমি তো শুধু,,আর তো কখনো ওরা এ-ই সুযোগে টা পাবে না না তাই জন্য তো আমি বলছি,,আমি কি চাই বলুন আপনার টাকা নষ্ট হোক,,
উজানঃ তা তো আমি দেখতেই পাচ্ছি না,,
উজান আর হিয়ার কথার মাঝে ঝিনুক ঝড়ের গতিতে ছো মেরে উজানের হাত থেকে মানিব্যাগ টা ছিনিয়ে নেয়,,আর নিয়েই একটা বিশ্ব জয়ের হাসি দিলেও মানিব্যাগ টা খুলতেই সবার মন খারাপ হ’য়ে যায়,,কারণ মানিব্যাগে যেই ৫,৭ এর মতো টাকা ছিলো সব তো উজান গুনতে ওর হাতে নিয়েছিলো,
উজানঃ বেশি পাকামো করলে যা হয়,,আমি তো আর দেবো না টাকা,,এখন ঔ মানিব্যাগ নিয়ে গিলে খাও এখন তোমরা,
ঝিনুকঃ সরি জিজু
সন্ধিঃ রাখ তো তোর সরি,,লাগবে না তোর সরি,,এই দেখখখখ আমি কি পেলাম তোর মানিব্যাগ থেকে,তোর এটিএম বুথের কার্ড,,হা হা হা,,এখন কার্ড আমাদের,টাকাও আমাদের
উজানঃ হা হা হা,,বেআক্কলের দল বুথ থেকে টাকা তুলতে পিন লাগবে,,পিন জানা আছে তোদের কারো,,
সন্ধিঃ জানা নেই তো,,
জিনিয়াঃ ধুর ঝিনুক আপু টানলে তো টানলে মানিব্যাগ টানার কি ছিলো হাত থেকে টাকা গুলো কেঁড়ে নিলেই তো হতো ধুর,এখন এই কার্ড দিয়ে কি করবো,,আন্ডা ভাঁজবো,,
এমন সময় শ্রাবণ কোথা থেকে এসে ফিঁক করে হেঁসে দিয়ে,
শ্রাবণঃ আমি জানি ভাইয়ার ঔ বড় টিপাটিপি করা মোবাইলের পিন কতো,,হে হে
শ্রাবণের কথায় যেনো সন্ধিরা সবাই প্রাণ ফিরে পায়,,ইসস এই মরুভূমি তে পিন নামক বৃষ্টিটারই তো দরকার ছিলো,,সবাই মিলে গপ করে শ্রাবণকে ধরে কোলে করে অন্য রুমে নিয়ে এসে ঘিরে ধরে,,আর শ্রাবণকে বাগিয়ে বুগিয়ে পিন কি সেটাই জানতে চায়,,এদিকে তো হিয়া উজানের এই নাস্তানাবুদ অবস্থা দেখে হেঁসে হেঁসে খুন,,
উজানঃ এতো হাসার কিছু নেই,,কার্ডে শুধু দেড় হাজারের মতো কিছু টাকা আছে হিয়া মুনতাসীর,,ঔ বাঁদরের দল গুলো কার্ড না নিয়ে এ-ই আড়াই হাজার টাকা নিলেই বরং লাভ করতো,,হু
!
!
!
রাত তখন সাড়ে দশটা,
অধিকাংশ গেস্টদের খাবার দাবার শেষ হয়ে আসার পথে,,বাড়ি থেকে এখন আস্তে আস্তে লোকসংখ্যা কমছে,,আরো কিছু গেস্ট আছে যাদের জন্য আর এক টেবিল বসলেই এনাফ হবে,,হিয়ার চাচ্চুদের খাবার দাবার শেষ হলে উনি আর কিছুক্ষণ থেকে উজান আর হিয়ার সাথে যাওয়ার সময় বিদায় নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন,,
এদিকে উজান আর হিয়াকে খাওয়াতে নিয়ে এসে এবার শুরু হয় মেয়েদের আরেক দফা আবদার,,তারা তো এখন উজানের হাত ধুইয়ে দিয়ে উজানের পকেটে যে বাকি টাকা টা আছে সেটা পুরো ঝেপে নিতে প্রস্তুত,,
উজানঃ ভাই মাফ কর ভাই,,,অসম্ভব রকমের খিদে লাগছে আমার,,প্লিজ আগে এখন একটু শান্তি মতো খেতে দে
সন্ধিঃ আমাদের টাকা না দিয়ে তুমি শান্তি মতো খাবা খুব শখ না তোমার,,
উজানঃ এগুলো কি রকম নিয়ম ভাই,,আমি কিন্তু এবার মা’র কাছে তোদের সবার নামে নালিশ করবো সন্ধি,
জিনিয়াঃ যাও গিয়ে করো,,মা তোমার কচু শুনলে তো,,দাঁড়াও আমি ডাকছি মা’কে,,মা ও মা,,মা,,,মা দেখো না ভাইয়া টাকা দিতে কিপ্টামি করছে__মাআআ
উজানঃ মানসম্মান সব ডুবাবি না-কি জিনি,,আস্তে
ঝিনুকঃ তাহলে টাকা দেও,,
উজানঃ আচ্ছা দেবো হাত টা তো ধুইয়ে দেও আগে,,যদি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাও তখন
সন্ধিঃ আচ্ছা দিচ্ছি,,কিন্তু আমাদের সাথে কোনো চালাকি করলে না তোর অবস্থা তেরো অবস্থা করে রাখবো,,
উজান আর হিয়াকে ঘিরে বসা রুপম সাব্বির তুষার সবাই এবার উজানের হয়ে ফোঁড়ন কাটতে শুরু করে
রুপমঃ শুধু ওরকম পানি দিয়ে হাত ধুয়ে দিলে হবে না,,সাবান আনো সাবান
সন্ধিঃ এএএএএ,,যে না হাতের চেহারা তার জন্য আবার আনো পেয়ারা___পরিষ্কার পানি দিয়ে হাত ধুয়ে দিচ্ছি এটা ভাগ্য ওর,
সাব্বিরঃ তাহলে তো আমরাও ভাবির হাত ধুইয়ে দিয়ে টাকা চাইতে পারি মিস মেহফতাউল আগমেদ সন্ধি ভাবিইইই
সন্ধিঃ হা হা,,এ-ই রুল শুধু বরের ছোট্ট বউদের জন্য তোমাদের অকর্মার ঢেঁকি গুলোর জন্য না হু,,
তুষারঃ ওতো সতো বুঝি না,,যাও গিয়ে সাবান নিয়ে আসো নাহলে টাকার পরিমাণো কমানো হবে বুঝলা,
সন্ধিঃ যা তো ঝিনুক সাবান নিয়ে আয়,,দেখি তারপর এই বজ্জাত তা কতো টাকা দেয়,,
ঝিনুকঃ হুম যাচ্ছি,,ওয়েট
ঝিনুক দৌড়ে কেটারিং এর লোক গুলো থেকে একটা ছোট্ট লাক্স সাবান নিয়ে আসে
ঝিনুকঃ এ-ই নেও,,কারিনা আর সাইফালি খানের মন মাতানো সুভাস লাক্স,,,,দেখি জিজু হাত জোড়া একটু দু’জনে এবার তুলে ধরুন তো
তুষারঃ এই থাম থাম,,এ-ই এ-তো ছোট্ট একটা সাবান,,তাও আবার দেখেই মনে হচ্ছে এটা ব্যবহার করা,,না এটা চলবে না,,ইটস রিজেক্টড!
সন্ধিঃ হোয়াট রিজেক্টেড,,,সাবান এনেছি তাও হয় না না,,
জিনিয়াঃ আপু সারো তো,,দেখি___এ-ই নেও একদম নতুন লাইফবয় হ্যান্ডওয়াশ সাথে আমার নতুন কেনা স্যান্ডেলিনা সাবান,,এবার সব সাবান শ্যাম্পু দিয়ে হাত গুলো এমন চটকে চটকে পরিস্কার করে দেও তো যেনো আগামী দুদিন আর ভাইয়াকে হাত ধুতে না হয়
সন্ধিঃ এ-ই তো আমাদের সোনা ননদিনী,,ইসস ছোট ভাবিদের কতো দুঃখ বুঝে,,
সন্ধি জিনিয়ার গাল টেনে দিয়ে উজান আর হিয়ার হাত ধুয়ে দেয়,,এদিকে কখন যে এর ফাঁকে ঝিনুক উজানের শেরওয়ানির পকেট থেকে মানিব্যাগ টা নিয়ে ফুড়ুৎ হ’য়ে যায় উজান কেনো কারোই সে বুঝ আসে না,,
উজানঃ তুষার আমার কাছে খুচরো নেই তুই খুচরো পাঁচশো টাকা দিয়ে দে তো ওদের,
তুষারঃ আচ্ছা দিচ্ছি,,
তুষার একটা পাঁচশো টাকার নোট দিতেই সন্ধিরা কোনো ঝামেলা না করে টাকা টা নিয়ে এক দৌড়ে চলে যায়,,কি হলো ব্যাপারটা সন্ধিরা সামান্য এই পাঁচশো টাকা টা নিয়ে নিলো এতো সহজে,কিচ্ছু বললো না,উজানের সন্দেহ হওয়াতে উজান ওর পকেটে হাত দিয়েই থ হ’য়ে যায়,,এ যা এর মধ্যে ওর সব ছোট বউ গুলো ওর মানিব্যাগ টা ডাকাতি করে নিয়ে গেলো কখন,,হায় রে!উজান এপাশ ওপাশ তাকিয়ে সবাইকে খুঁজতে থাক,,কিন্তু কারো অস্তিত্ব তো দূড়ে থাক ছায়া টাও সে দেখতে পারে না,,বেচারা উজান,,
!
!
উজানঃ কি হয়েছে খাচ্ছো না কেনো?
হিয়াঃ খাচ্ছি তো,,
উজানঃ শ্রাবণের জন্য চিন্তা হচ্ছে?
হিয়াঃ হ্যা মানে,,আমি ছাড়া তো ও খায় না,,ওকে ছাড়া আমিও এভাবে আগে কখনো খাইনি তাই
উজানঃ আমি জানি তো,,আমি আসার সময় তাই জন্য তো ওকে ডাকতে গিয়েছিলাম,,গিয়ে তো দেখি ছেলে আমার এমন খেলায় ব্যস্ত আমি যে ওকে ডাকছি সেটা শোনারো সময়ো ওর নেই যেনো,
হিয়াঃ তাই,,জীবনে কখনো এ-তো আনন্দ এ-তো মজা করেনি যে সে,,আজ করতে পেয়ে যেনো নিজেকে আঁটকে রাখতে পারছে না
উজানঃ মা ওজন্যেই বললো ওকে খেলতে দিতে তখন না-কি ঔ বড় খালার বাচ্চা টাকে খাইয়ে দেবার সময় খালা ওকেও খাইয়ে দিয়েছিলো একটু,,ঔজন্য আমি আর জোর করলাম না,,
হিয়াঃ আচ্ছা ঠিক আছে,,
!
!
!
শ্রাবণঃ এ-ই দাদু ভাই এই,,কি খুঁজচো তুমি এভাবে,,
সমরেশঃ কিছু না,,এখানে কি করছো তুমি(গম্ভীর কন্ঠে)
শ্রাবণঃ এই তো তোমার চশমা টা দিতে আসলাম,,ঔ বুড়ো দাদু টার সাথে কথা বলার সময় ওকানে তখন খুলে রাখলে,,জানোওও মুহিন আছে না আর একটু হলেই এ-ই চশমা টার উপর বসে কুটুস করে এটা ভেঙে দিতো,,নেও নেও চোখে পড়ো নাওলে আবার হারিয়ে যাবে,,
সমরেশ একটা দীর্ঘ শ্বাস টেনে শ্রাবণকে নিজের রুমে আসতে বলে,,
সমরেশঃ দেখি এদিকে আসো,,
শ্রাবণঃ তুমি তো আসতে মানা করে দিলে,
সমরেশঃ এখন আসতে বলছি এখন আসো,,
শ্রাবণ গিয়ে সমরেশের সামনে দাঁড়িয়ে গিয়ে হাত বাড়িয়ে চশমা টা দেয়,,সমরেশ চোখের ইশারায় শ্রাবণকে বিছানায় বসতে বলে,,পাশে থাকা ঔষধ বক্স থেকে ঔষধ খেতে যাবে কিন্তু গিয়ে দেখে সাইড টেবিলে রাখা পানির গ্লাস টায় পানি নেই,,শ্রাবণ বুঝতে পেরে দৌড়ে গিয়ে সমরেশের জন্য এক গ্লাস পানি নিয়ে আসে,,
শ্রাবণঃ এই নেও,,পানি,,ঔষধ খাও একন
সমরেশঃ তোমাকে আমি বিছানায় গিয়ে বসতে বলেছি,,পানি আনতে বলেছি কি?
শ্রাবণঃ এ মা তোমার জন্যেই তো পানি আনলাম আমি,,তুমি ওসুদ খাবে ঔজন্য,,তুমি ওসুদ খাবে না?
সমরেশ কিছু না বলে শ্রাবণর হাত থেকে পানি গ্লাস টা নিয়ে ঔষধ গুলো খেয়ে নেয়,,এমন সময় হিয়া শ্রাবণের খোঁজে এদিকে আসলে দেখে শ্রাবণ সমরেশের পাশে বসে টুক টুক করে কিসব নামতার মতো বলছে থামাথামির কোনো নাম নেই,,হিয়া ভয় পেয়ে যায়,,
হিয়াঃ শ্রাবণ তুমি এখানে কি করছো,,,বাবা__মাফ করবেন,,ও না একটা জায়গায় বসে থাকতে পারে না,,তাই জন্য____দেখি আসো খাবে না রাতে,,আসো বলছি,,
সমরেশঃ আ হা___তুমি ওকে সবসময় এরকম বকাঝকার মধ্যে কেনো রাখো,,দেখছো তো আমার সাথে আছে,,কোনো সমস্যা হচ্ছে তোমার,,
হিয়াঃ না বাবা,,আমি ভাবলাম ও হয়তো আপনাকে বিরক্ত করছে তাই জন্য,,
শ্রাবণঃ বুবু চল,,আমি একন খাবো,,খুব ক্ষিদে লাগছে,,এই দাদু ভাই তুমি থাকো আমি খেয়ে এসে আবার তোমার সাথে গলপো(গল্প)করচি
হিয়াঃ বাবা আপনি খেয়েছেন রাতে?
সমরেশঃ হ্যা আমি তোমার চাচাদের সাথে বসে খেয়েছি,সব মুরুব্বিরা ছিলো ওখানে,,তোমরা খেয়েছো সবাই?
হিয়াঃ জ্বী এ-ই মাএ খেয়ে আসলাম,,আপনি কি কাল চলে যাবেন,,আর দুটো দিন থেকে না হয় তারপর যেতেন,,আসলে মা চাইছিলো যে আপনি যদি আমরা যতোদিন আছি ততোদিন একটু,,
সমরেশঃ তোমাকে ওসব ভাবতে হবে না,,আমি থাকবো কি থাকবো না সেটা নিশ্চয়ই তোমাদের বলে করবো না,,,,,এখন আসতে পারো
হিয়াঃ জ্বী,,ঠিক আছে
হিয়া মনটা হালকা খারাপ করে শ্রাবণকে নিয়ে বাহিরে এসে শ্রাবণকে খাওয়াতে থাকে,,মন খারাপ হওয়া টাকে হিয়া বেশি পাওা দেয় না,, হোক সবার যখন মন সে জয় করতে পেরেছে একদিন না হয় উজানের বাবার মনেও সে আর শ্রাবণ জায়গা করতে সক্ষম হবে,,
শ্রাবণঃ বুবু মাংস টা কি টেস্ট,,এটা দে না বেশি করে,,
হিয়াঃ হুম হা করো____তোমাকে আমি বলছি না শ্রাবণ দাদুভাইয়ের কাছ থেকে একটু দূরে দূরে থাকবা,,ওনাকে দেখলে কি তোমার ভয় করে না
শ্রাবণঃ হে হে ওনাকে দেখলে ভয় কেনো করবে আমার,,উনি বাঘ না বাল্লুক(ভাল্লুক)
হিয়াঃ সবসময় বেশি কথা,,দেখি পানি টা খাও
শ্রাবণঃ বুবু আমি কিন্তু আজকে দাদি মনির কাছে থাকবো,,দাদি মনি আমাকে বলেছে সে আজকে আমাকে আর মুহিনকে সারারাত এ-তো এ-তো গল্প বলবে,
হিয়াঃ কোনো গল্প শোনা হবে না,,এখন তুমি ভাত খেয়ে ঘুম দেবা,,বুঝছো
শ্রাবণঃ তুই যা তো,তুই একা একা আজ ঘুমো গিয়ে,,আমি দাদি মনির কাছে ঘুমোবো এটা আমার শেষ কথা,
হিয়াঃ ও হো রে,,এটা আমার শেষ কথা,,বুবুকে শাসাচ্ছেন দেখো কেমন,,একটা মাইর লাগিয়ে দেবো না তখন বুঝবি তুই
শ্রাবণঃ হে হে,,না না তুই না আমার ভালো বুবু
হঠাৎ খাওয়ানোর মাঝে উজান দৌড়ে আসে হিয়ার ধরে থাকা প্লেট থেকে একটা টিকিয়া তুলে নিয়ে খেয়ে হাত মুছতে মুছতে,,
হিয়াঃ কি করছেন কি,,পাঞ্জাবি টাতে ঝোল টা পড়লে কি হতো
উজানঃ সরি সরি,,শোনো শ্রাবণ ঘুমিয়ে গেলে আমি সবাইকে নিয়ে ছাঁদে যাবো,,তুমিও থাকবে,,
হিয়াঃ হ্যা বুঝলাম কিন্তু এই রাতে ঘুম বাদ দিয়ে ছাঁদে গিয়ে আমরা কি করবো সবাই?
উজানঃ কাজ আছে,,তুমি শুধু যখন সন্ধিরা কেউ এসে বলবে তুমি এই ফানুস দেখার বায়না করেছিলে কি না,,তার উওরে তুমি তখন বলবে হুম,,
হিয়াঃ ছাঁদ,,ফানুস,,সন্ধি আপুরা আসবে আমার কাছে কেনো?
উজানঃ বড্ড বেশি প্রশ্ন করো তুমি,,যা বলছি তাই করবা,,
হিয়াঃ আমি কেনো আপনার জন্য শুধু শুধু মিথ্যে বলতে যাবো?
উজানঃ প্লিজ হাঁস পাখি,,আর কোনো কথা না,,প্লিজ প্লিজ প্লিজ
হিয়াঃ এটাই শেষ হ্যা,এরকম মিথ্যে বলার রিকুয়েষ্ট করলে কিন্তু আমি আর কখনো শুনবো না,,
উজানঃ এ-ই তো আমার সোনা পাখি,,পরের টা পরে দেখা যাবে,,এখন তুমি শ্রাবণকে খাইয়ে মা’র কাছে ঘুম পাড়িয়ে দেও দেখি,,
হিয়াঃ অসভ্য যান তো,,আমাকে খাওয়াতে দিন,,সবসময় বাজে কথা,,ভার্সিটির টিচার হ’য়ে গেছে এখনো তাও ছেলেমানুষী যায় না,,,,আর তোমার কি ভাত গিলতে এতোক্ষণ লাগছে কেনো,,আমি কি সারারাত প্লেট নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবো নাকি,,খাও তাড়াতাড়ি
শ্রাবণঃ খাচ্ছি তো রে বুবু,,উফফ
!
!
!
রাত তখন দুটোর কাছাকাছি,,বাড়ির বড়রা যখন ক্লান্ত শরীরে বিছানায় মেলে দিয়ে ঘুমে ব্যস্ত তখন আমাদের বরমশাই ছাঁদের উপর সবাইকে ডেকে ফানুস ওড়ানোর ব্যবস্থা করে,,আর কথা মতো হিয়াও স্বীকার করে যে হ্যা তার আবদার রাখতে না-কি উজান এ-ই সব ফানুস ওড়ানোর ব্যবস্থা করেছে,,সবাই সেটা বিশ্বাস করে নিয়ে ফানুসের উড়ে চলার সাথে নিজেদের আনন্দ ভাসাতে থাকে,,এদিকে এবার সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে উজান হিয়াকে নিয়ে আলতো করে আস্তে আস্তে গুটি গুটি পায়ে ছাঁদ থেকে নেমে আসে,,আর ছাঁদের গেটে লাগিয়ে দেয় ইয়া বড় বড় তিনটে তালা,,উজানের এ-ই কাজ দেখে তো হিয়া পুরো শকড,,এ-ই ছেলে কি সত্যি পাগল হয়ে গেলো নাকি,,
হিয়াঃ এসব কি করছেন আপনি,,তালা কেনো লাগাচ্ছেন,,উজান,, আরে,,
উজানঃ চুপপপপ,,
হিয়াঃ হ্যা চুপ কিন্তু,,এভাবে কেনো,,কি হবে তালা লাগিয়ে,,আরে
উজান তালা গুলো লাগিয়ে দুম করে হিয়াকে এসে জড়িয়ে ধরে
উজানঃ ইমার্জেন্সি ডিউটির সময় আমি কোনো ডিস্টার্বেন্স পছন্দ করি না মিসেস হিয়া শাহরিয়ার
হিয়াঃ আপনি কি পাগল,,এজন্য আপনি ওদের সারারাত এভাবে ছাঁদে আটকায়ে রাখবেন,,
উজানঃ দরকার পড়লে তাই করবো,সাহস কতো উজান শাহরিয়ার এর বাসর নাকি ওরা ভেস্তে দিবে,,আজকে আমার আর তোমার মাঝে যে আমি কোনো প্রকার ডিস্টার্বেন্স এলাও করবো না হিয়াপাখি,,
হিয়াঃ আপনি সত্যি একটা অসভ্য,,এ-ই অসভ্যতামির জন্য আপনার নোবেল পুরষ্কার পা-ওয়া উচিৎ,,ছাড়ুন এখন আমার লাগছে,,
উজানঃ আমার তো বেশ লাগছে,,
হিয়াঃ আরে,,
উজান আর হিয়াকে কিছু বলতে না দিয়ে টুক করে হিয়াকে কোলে নিয়ে গান গাইতে শুরু করে
এই রাত তোমার আমার
ঐ চাঁদ তোমার আমার
শুধু দুজনের
এই রাত শুধু যে গানের
এই ক্ষণ এ দুটি প্রাণের
কুহু কূজনে
এই রাত তোমার আমার❤️
_____________________________________
আমি ভীষণ ব্যস্ত,,কি থেকে কি লিখলাম নিজেও জানি না,,পড়েও দেখিনি একবার,,😥❤️