😏 #মেঘের_আড়ালে_রোদের_লুকোচুরি ❤️
🌈💙🎨😏❤️🥳🐦💐🍫🏩💒
Part-28
সন্ধি শ্রাবণকে হাত মুখ ধুইয়ে দিতে দিতে শিখিয়ে দেয় সে জেনো তার বাড়ির সকালের সামনে উজানকে বাবা আর হিয়াকে মা বলে ডাকে,,ব্যাপারটা শ্রাবণের বেশ লাগে সে সন্ধির থেকে সব শিখে নেবার পর থেকে কথায় কথায় উজানকে বাবা আর হিয়াকে মা বলে ডাকতে শুরু করে মাঝেমধ্যে একটু আধটু অভ্যাসের বশে ভুল করে বুবু ডেকে ফেলে কিন্তু সন্ধি আর উজান মিলে ঠিক সামলে নেয়,,সবাইকে খাইয়ে দিয়ে সন্ধি হিয়াকে ঔষধ খেতে দিয়ে শুতে বলে,,হিয়ার খুব ঠান্ডা করছে দেখে সন্ধি উজান কে দুটো কম্বল দিয়ে বলে হিয়াকে গায়ে দিয়ে দিতে,,রাতের দিকে জ্বর টা শরীর থেকে বের হয়ে আসলে আর শীত করবে না,,
উজান সন্ধির থেকে কম্বল গুলো নিয়ে এসে গেট লাগিয়ে দিয়ে একটা গুন্ডা গুন্ডা লুক দিয়ে হিয়ার দিকে তাকাতেই হিয়া ভূ কুঁচকে উজানকে একটা ভেংচি কেটে শ্রাবণকে শুতে বলে,,
উজানঃ শ্রাবণ তুই কানিতে গিয়ে ঘুমো তোর বুবু মাঝখানে আমি এ কিনারে
হিয়াঃ মাথা ঠিক আছে তো আপনার আমি আপনাদের দু’জনের মাঝে থাকবো নাকি আজব
উজানঃ yes of course রাতে বমি-টমি করলে আমি একা পারবো নাকি তোমাকে সামলাতে,,তুমি মাঝে থাকলে আমি আর শ্রাবণ দু দিক থেকে তোমাকে প্রটেকশন দিতে পারবো,,
হিয়াঃ লাগবে না আমার কোনো প্রটেকশন,,সবসময় শুধু ফাজলামো,,কিছুদিন পর এস এ টিচার হয়ে ভার্সিটি জয়েন করবেন তখনো কি সবকিছু তে এরকম মজা করে বের হবেন নাকি আপনি,,, এখন তো অনন্ত সব কিছু তে একটু সিরিয়াস হোন
উজানঃ মানে কি বলতে চাইছো কি তুমি আমি আমি তোমার ব্যাপারে সিরিয়াস না,,আমি তোমার ব্যাপারে সিরিয়াস না হলে না তোমার এ-ই টুকু জ্বরে তোমাকে নিয়ে এ-তো করতাম না,,পরীক্ষা দিয়ে এসে কি ঘুম পাচ্ছিলো জানো কিন্তু তোমার ফোনের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে উঠে ফোন করে জানতে পারলাম তোমার এই অবস্থা,,এক ছুটে সন্ধিকে নিয়ে তোমার বাড়িতে আসলাম আর তুমি বলছো আমি সিরিয়াস না তোমার ব্যাপারে,,কি অকৃতজ্ঞ তুমি হিয়া
হিয়াঃ আমি বলেছিলাম একবারো আমার জন্য আগ বাড়িয়ে গিয়ে কিছু করতে,,,,,করেছে করেছে আবার কেমন করে কথা শুনাচ্ছে দেখো______এই এই এদিকে আয় তুই,,ওদিকে কোথায় যাচ্ছিস এদিকে এদিকে এসে ঘুমো,,ঘুমো বলছি,,
উজান রাগে হাতে থাকা দুটো কম্বল হিয়ার গায়ে পেচিয়ে দিয়ে রুমের লাইট ওফ করে নীল রঙের ছোট বাতি টা জ্বালিয়ে শ্রাবণকে মাঝে দিয়ে নিজে দেওয়ালের কানিতে শুইয়ে পড়ে
উজানঃ শ্রাবণ এখন ঘুমোবে না,,আমরা এখন দুজন মিলে ফ্রি ফায়ার খেলবো
শ্রাবণঃ ইয়েএএ,,ধিস ধিস ধিস করে গুলি করবো আমরা এখন
হিয়াঃ যা খুশি করুন গিয়ে আমি ঘুমালাম আমার সত্যি খুব ঘুম পাচ্ছে,,এই শরীর নিয়ে আমি আর জেগে থাকতে পারবো না,,
উজানঃ তুমি ঘুমোও,,আমি এখন শ্রাবণ ঘুমোলে ওকে ঠিক করে শুইয়ে দেবো
!
!
!
রাত তখন তিনটের কাছাকাছি,,উজানের সাথে গেম খেলতে খেলতে শ্রাবণ যে কখন উজানের বুকে ঘুমিয়ে গেছে সে টের পায় নি,,উজানের বুঝে আসতে উজান শ্রাবণকে ওর বুক থেকে তুলে খুব সুন্দর করে হিয়ার পাশের বালিশে শুইয়ে দিয়ে হিয়ার থেকে একটা কম্বলের অর্ধেক নিয়ে শ্রাবণকে গায়ে দিয়ে দেয়,,যদিও গরমের দিন কিন্তু হঠাৎ রাত থেকে বৃষ্টি হওয়াতে পরিবেশ টা এখন একটু ঠান্ডা,,শরীরে একটা পাতলা কিছু জড়ালেই যথেষ্ট,,হিয়ার কাঁপুনি জ্বর দেখে ও দুটো কম্বল পেচিয়ে নিয়েছে________মাঝরাতে তলপেটের প্রচন্ড ব্যাথায় হিয়ার ঘুম টা ভেঙে আসতে হিয়া উঠে বসে,,হালকা আলোর মধ্যে খেয়াল করে উজান আর শ্রাবণ কি রকম বাচ্চা দের মতো একে অপরকে লেপ্টে ঘুমোচ্ছে
হিয়াঃ না আর এই মানুষ টার সাথে রাগারাগি করবো না,সত্যি তো পরীক্ষা দিয়ে এসে কতো ক্লান্ত ছিলো এর মধ্যে আমাকে নিয়ে আবার,,আমি শুধু শুধু রাগ করি এনার উপর___ঔ নার্স আন্টি টা কি বললো মনে নেই ওনাকে সবসময় যত্নে রাখতে,,
হিয়া কিছুক্ষন দু’জনের দিকে তাকিয়ে থেকে আস্তে করে উঠে ওয়াশরুমের দিকে যায়
হিয়াঃ এই রাতের বেলা মানুষের বাড়িতে পিরিয়ড হলে মহা ঝামেলায় পড়বো,,এতো কেনো পেটে ব্যাথা দিচ্ছে অসহ্য,,
হিয়া ওয়াশরুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে নিয়ে দেখে সত্যি সত্যি ওর পিরিয়ড হইছে,,হিয়ার তো মাথায় হাত বেচারি এখন কি করবে,,তার উপর ঔষধ খেয়ে জ্বর টা হালকা কমলেও শরীর টা পুরো ছেড়ে দিচ্ছে,,মাথা ঘুরছে বমির ভাব টাও হালকা হালকা আছে এখনো
হিয়াঃ কি করবো আমি এখন,,ওনাকে একবার ডাকবো,ডেকেও বা কি বলবো ওনাকে যে আমার,না না,,নাকি সন্ধি আপুকে গিয়ে বলবো,,এতো রাতে আপুকে ডাকা টা কি ঠিক হবে__কি একটা সমস্যাতে পড়লাম আমি ধুর,,ভালোই লাগে না আমার একটা সমস্যা শেষ হতে না হতে আরেকটা শুরু হয় অসহ্য
হিয়া কি করবে সেটা ভাবতে গিয়ে হঠাৎই মাথা টা হালকা ঘুরে গিয়ে হাতে থাকা মগ টা দুম করে নিচে ফেলে দেয়,,আর শব্দের চোটে ঘুম টা ভাঙ্গতেই উজান উঠে ঘরের লাইট ওন করে হিয়াকে বিছানায় না দেখে খুঁজতে শুরু করে
উজানঃ হিয়া কোথায় তুমি,,হিয়া,,হিয়া তুমি কি ওয়াশরুমে?হিয়া
হিয়া ওয়াশরুমের দরজা খুলে দিতেই উজান টপ করে ঢুকে পড়ে হিয়ার কিছু হয়েছে কি না হিয়া আবার পড়ে গিয়ে কোথাও ব্যাথা পেয়েছে কি না সব খুতিয়ে দেখতে থাকে
উজানঃ কি পরার শব্দ হলো,,তুমি তুমি পড়ে যাওনি তো,,কোথাও লাগেনি তো তোমার
হিয়াঃ না ঔ পানি ভর্তি মগ টা হাত থেকে,,আপনি শুধু শুধু উঠে আসলেন যান গিয়ে শুইয়ে পড়ুন আমি আসছি
উজানঃ না চলো একসাথে যাই
হিয়াঃ আরে আমার কাজ আছে আপনি যান আগে,,,,আচ্ছা শুনুন না উঠেছেন যখন তখন একটু কষ্ট করে সন্ধি আপুকে একটু ডেকে দিন না,,একটু দরকার আমার
উজানঃ সন্ধিকে এই রাতে আবার কিসের দরকার তোমার,,কি লাগবে বলো আমাকে আমি করে দিচ্ছি
হিয়াঃ উমহুম কিচ্ছু করতে হবে না,,আপনি শুধু গিয়ে বলুন আমি ডাকছি
উজানঃ কি সমস্যা আমাকে বললেই তো হচ্ছে শুধু শুধু মাঝরাতে ওকে বিরক্ত করে কি লাভ
হিয়াঃ আপনি বড্ড বেশি কথা বলেন,,যান আপনাকে ডাকতে হবে না আপনি শুতে যান
উজানঃ এক সেকেন্ড, তোমার কি পিরিয়ড হয়েছে??
হিয়াঃ ___হ্যা মানে না মানে!!
উজানঃ এজন্য সন্ধিকে ডাকছো?
হিয়াঃ হু হুম
উজানঃ ও জন্য শ্রাবণ তখন থেকে বলছিলো বুবুর পেটে ব্যাথা,,তা সেটা আমাকে বললেই তো হতো শুধু শুধু টাইম গুলো ওয়েস্ট করিয়ে দিলে,,একটু ওয়েট করো আমি এক্ষুনি আসছি
উজান দৌড়ে গিয়ে সন্ধিকে আস্তে করে ডেকে তুলে সন্ধির থেকে একটা প্যাড আর আন্ডারওয়্যার নিয়ে এসে হিয়ার হাতে ধরিয়ে দিতে হিয়া পুরো থ!!
উজানঃ নেও ধরো,,,,কি হলো নেও,,পড়তে পারবা না আমি পড়িয়ে দেবো
হিয়াঃ হ্যা কি!!
উজানঃ বললাম যে একা একা পড়তে পারবা না আমি হেল্প করবো
হিয়াঃ মাথা কি পুরোই গেছে আপনার,,আপনি বের হোন তো ওয়াশরুম থেকে বের হোন এক্ষুনি
উজানঃ আরে হিয়া পিচ্চি এরকম করছো কেনো তুমি,,তোমাকে একা রেখে আমি কি করে রুমে যাবো আবার যদি মাথা টা ঘুরে পড়ে যাও তখন
হিয়াঃ আমি আবার মাথা ঘুরে কখন পড়লাম,,আপনি না বেশি বুঝেন ওলয়েজ,,কি হলো যান নাআআআআ
উজানঃ আরে কি সমস্যা আমি থাকলে,,আমি তোমাকে দেখবো না উল্টো দিকে মুখ ঘুরে থাকবো হ্যাপি,,আর তাছাড়া আমি তোমাকে দেখে নিলেও বা কি কিছু দিন পর বিয়ে করে তোমাকে নিজের করে নেবো এখনো যদি তুমি এতো লজ্জা পেয়ে আমাকে কিছু শেয়ার না করে দূরে দূরে সরিয়ে রাখো তাহলে বিয়ের আগে প্রেম করে লাভ টা কি হচ্ছে
হিয়াঃ কতো কি বলে দেন আপনি এক লাইনে,,আপনার মাঝে লজ্জা শরম নাই থাকতে পারে কিন্তু আমার মাঝে আছে,,আপনি কি যাবেন এখন আমার সামন থেকে,,ভাত আর ঔষধ খেয়ে যেটুকু শক্তি এসেছিলো শরীরে সেটাও আপনার সাথে কথা বলে বলে ফুরিয়ে গেলো
বলতে বলতে হিয়া এবার বাচ্চাদের মতো কেঁদে ফেলে
হিয়াঃ আমার কিছু ভালো লাগছে না আমার শরীর খারাপ লাগছে,,পেটে ব্যাথা করছে,,গা কাঁপুনি দিয়ে ঠান্ডা লাগছে,,তারপর উপর আপনি বক বক করছেন বক বক করে করে আমাকে আরো ইরিটেট করছেন
উজানঃ হিয়া হিয়া কাম ডাউন,,আমি আমি যাচ্ছি রুমে আমি যাচ্ছি
উজান ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসতে হিয়া কাঁদতে কাঁদতে ধাম করে গেট টা লাগিয়ে দেয়
হিয়াঃ এ-ই লোকের নিজের কোনো লজ্জা শরম নেই সাথে আমাকেও নির্লজ্জ বানিয়ে দিচ্ছে দিনে দিনে,,কিচ্ছু মুখে আটকায় না এনার কিচ্ছু
না,,দেখছে আমার শরীর টা খারাপ
!
!
!
ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে হিয়া শুয়ে পড়ে,,আর কিছুতেই সে পারছে না,,হাত পা তল পেট ব্যাথায় পুরে অসার হয়ে গেছে,,তার উপর জ্বরের কারণে বারবার কাঁপুনি দিয়ে শরীর শিউরে উঠছে,,পেট ভারি লাগছে,,মাথা টা ব্যাথায় ছিঁড়ে যাচ্ছে,,দুটো কম্বল পেঁচিয়েও আরাম মিলছে না যেনো,,এমন সময় উজান সন্ধির রুম থেকে ওদের রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দেয়,,উজানের হাতে একটা গরম পানির বোতল আর এক হাতে কিছু গরম সরিষার তেল,,উজান গরম পানির বোতল টা হিয়ার পেটের কাছে গুঁজে দিয়ে হিয়ার পায়ের কাছে গিয়ে বসে নিজের কোলের উপর হিয়ার পা দুটো রাখে❤️
উজানঃ হিয়া পাখি,,দেখি একটু
হিয়াঃ কি করছেন আপনি,,ভাইয়া আমার কথা বলার শক্তি নেই,,প্লিজ আমার পা টা ছাড়ুন কি করবেন ওগুলো নিয়ে
উজান গরম তেল গুলো নিয়ে হিয়ার পায়ের পাতা থেকে শুরু করে আঙ্গুল গোড়ালি সব টেনে টেনে টিপি দিতে থাকে
উজানঃ আমি তো ওসব বুঝি না সন্ধি কে গিয়ে বললাম তোমার পেটে ব্যাথা দিচ্ছে খুব,,ও বললো গরম পানি টা পেটের দিকে চাপা দিয়ে রাখতে আর এই তেল টুকু তোমার পায়ে মালিশ করে দিতে,,তোমার আরাম লাগবে না-কি এসব করলে তাই জন্য তো আমি
হিয়াঃ সন্ধি আপু আর কোনো কাজ পেলো না,,আচ্ছা হয়েছে আপনি এবার ঘুমোন আমার এখন আর ব্যাথা করছে না সত্যি
উজানঃ তুমি ঘুমিয়ে গেলে আমি ঘুমিয়ে যাবো,,তুমি আগে ঘুমোও
হিয়াঃ না আপনি আমার পা ছাড়ুন আগে,,আপনি না তখন বললেন আপনার ঘুম পাচ্ছে,,আচ্ছা আপনার পরীক্ষা আবার কবে?
উজানঃ চারদিন পর,কেনো?
হিয়াঃ না এমনি,,আজ তো আমার পেছনেই আপনার সব সময় চলে গেলো কাল থেকে কিন্তু আপনি পড়া ছেড়ে একদম উঠবেন না,,সিগারেট খাবার জন্য হলেও নিচে নামবেন না
উজানঃ যখন তুমি আমাকে নিজের ভেবে সব শেয়ার করতে পারবা ওদিন আমিও তোমার এই বউ বউ টাইপ হুকুম শুনবো তার আগে না
হিয়াঃ কি বলতে চাইছেন আপনি আমি আপনাকে নিজের কেউ ভাবি না
উজানঃ না ভাবো না____এখন কি ঘুমাবা তুমি,,দেখো শ্রাবণ কিন্তু নড়ছে এরপর উঠে গেলে কি হবে
হিয়াঃ আপনি আসুন তো এদিকে আমার পা না পেট ব্যাথা করছে,,মাথা ধরছে,,এর চেয়ে চুল গুলো টেনে দিন আমার আমি ঘুমিয়ে যা-ই
উজান হিয়ার পা গুলো আরো কিছুক্ষণ টিপে দিয়ে উঠে তেলের বাটি টা টেবিলে থুইয়ে হাত ধুইয়ে আসে,,এসে হিয়ার পাশে আলতো করে বসে হিয়ার মাথার চুল গুলো টানতে শুরু করে
উজানঃ এই তুমি চুল কাটছো হিয়া?
হিয়াঃ হ্যা মানে নিচের দিকে কি রকম আগা গুলো ফেটে যাচ্ছিলো তাই রিমা আপুকে বলে একটু কেটে নিয়েছি,,কেনো
উজানঃ এটা একটু কাটা,,কতো দূর কেটে দিছে রিমা চুল গুলো,,দেখো আগে চুল গুলো কোমড়ের এই অবধি আসতো see এখন এখানে
হিয়াঃ এটার মধ্যে তফাৎ কি আছে?এখানে পড়া আর এখান অবধি আসা তো সেম
উজানঃ না সেম না,,এরপর থেকে আমার পারমিশন ছাড়া চুল কাটবা না,,আমি যেনো না দেখি
হিয়াঃ চুল কাটতেও এখন আমার আপনার পারমিশন নিতে হবে,,
উজানঃ হ্যা হবে,,কতো সুন্দর বড় বড় চুল গুলো কেটে কি করছে দেখো,,মনে তো হচ্ছে মাথার চুল গুলো সব ছিঁড়ে দেই ইডিয়ট
হিয়াঃ আহ,,লাগে না আমার,,আপনি যান তো যান ওদিকে গিয়ে শুইয়ে পড়ুন,,আপনার বকবকানির জ্বালায় আমার পেট মাথা দুটোই আরো ব্যাথা উঠে গেলো,,কোথায় আমি অসুস্থ মানুষ আমাকে চুপ করে রেখে একটু সেবা করবেন তা না আপনি উল্টো আমাকে
উজানঃ সরি সরি,,আর কথা বলবো না ঘুমোও,,
উজান হিয়ার মাথা টা বুকের কাছে লেপ্টে হিয়ার মাথা ঘাড় চুল সব টিপে দিতে থাকে
হিয়াঃ এই যে শুনছেন এদিকের জানালা টা একটু দেখে আসুন না,,এটা ঠিক করে লাগানো নেই বুঝি,,কেমন বাতাস আসছে
উজানঃ তোমার শীত করছে খুব?
হিয়াঃ হ্যা খুব,,জ্বর না ঔ জন্য কাঁপুনি দিচ্ছে শরীর টা
উজানঃ আচ্ছা দেখছি আমি
উজান উঠে গিয়ে জানালার দিকে গেলে দেখে এদিকের থাই টা নষ্ট হয়ে এরকম বাতাস আসছে
উজানঃ হিয়া এদিকের থাই টা মনে হয় একটু নষ্ট আর এপাশে আসছে না
হিয়াঃ আচ্ছা তাহলে আর কি করার,,আপনি এবার শুইয়ে পড়ুন দেখুন সাড়ে তিনটে পাড় হচ্ছে আর কখন ঘুমোবেন আপনি
উজানঃ যাই,,
উজান এসে শুতে যেতেই দেখে শ্রাবণ একদম কানিতে গিয়ে কোলবালিশ টা মুড়ে ঘুমে আছে,,এখন কি হবে,,উজান আলতো করে শ্রাবণকে সরিয়ে মাঝে দিতে গেলেই হিয়া থামিয়ে দেয়
উজানঃ কি??
হিয়াঃ আপনি এদিকে মাঝে এসে ঘুমোন আমি কানিতে আছি আমি মাঝে শুবো না যখনতখন বমি আসলে সমস্যা হবে
উজানঃ আমি মাঝে ঘুমোনো আর তুমি ঘুমানো তো সেম হিয়া
হিয়াঃ আমি জানি,,আমি আপনাকে যা বলছি আপনি তাই করুন,,ঘুমোন মাঝে এসে
উজান একটা নীরব হাসি দিয়ে মাঝে গিয়ে শুইয়ে পড়ে,,হিয়া একটা কম্বল উজান আর শ্রাবণকে দিয়ে আরেক টা নিজে গায়ে দেয়,,
হিয়াঃ আর একটা কথা বলবেন না,,আমার সত্যি আর বিন্দুমাত্র ক্ষমতা নেই আপনার সাথে রাত জেগে এসব আজগুবি গল্প করার,,আমি অসুস্থ একটু বুঝুন
!
!
!
হিয়াঃ এই যে শুনছেন,,কি করছেন ফোন নিয়ে,, ঘুমোননি এখনো কেনো,,
উজানঃ আমি বললাম না তুমি ঘুমোলে আমি ঘুমাবো
হিয়াঃ ফোন টা রাখুননন,,রেখে আমাকে একটু জড়িয়ে ধরুন না আমার খুব ঠান্ডা লাগছে
উজানঃ কি!!তুমি আমাকে তোমায় জড়িয়ে ধরতে বলছো হিয়াপাখি
হিয়াঃ দেখুন আমি মোটেও মজা করার অবস্থায় নেই,,আমার সত্যি খুব কষ্ট হচ্ছে,,আমি অনেক কষ্টে আপনার সাথে কথা গুলো বলছি
উজানঃ তুমি কি কোনোভাবে বডিহীট মানে আমার শরীরের গরম চাইছো
হিয়াঃ তাই মনে করলে তাই চাইছি
হিয়ার প্রস্তাবে উজান আহ্লাদে পুরো ভরে খুশিতে লাফিয়ে উঠে,,সে তো চায় ই সবসময় হিয়াকে নিজের বুকে একদম আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রাখতে আর আজকে হিয়া নিজে থেকে তাকে এই অফার দিচ্ছে ভাবা যায়,,
উজান শ্রাবণকে কম্বল টা পেঁচিয়ে দিয়ে ভালো করে মাথা গা ঢেকে বালিশ ঠিক করে দিয়ে শ্রাবণের কপালে একটা স্নেহের পরশ বুলে দিয়ে বিছানা থেকে উঠে একবার ওয়াশরুমে যায়,,ওয়াশরুম থেকে এসে সে হিয়াকে কিছু খাবে নাকি জিজ্ঞেস করে
উজানঃ কিছু খাবা তুমি আনবো কিছু
হিয়াঃ বলছি না পেটে ব্যাথা করছে আমার,,এই ব্যাথা নিয়ে কিছু খেতে পারবো আমি এখন
উজানঃ একটুতে এতো রেগে যাও কেনো,,পানি খাবা পানি দেবো
হিয়াঃ আপনি আবার কথা বলছেন
উজানঃ সরি সরি,,হিয়া!!
হিয়াঃ আবার কি!!
উজানঃ সত্যি সত্যি আমি জড়িয়ে ধরবো তোমাকে?
হিয়া এবার রাগে পাশে থাকা একটা কুশন বালিশ উজানের গায়ে ছুঁড়ে মেরে আবার কান্না করে দেয়
হিয়াঃ এ্যা হ্যা এ্যা,,না লাগবে না জড়িয়ে ধরা,,তখন থেকে বলছি আমি অসুস্থ আমার পেটে ব্যাথা করছে আমার ঘুম পাচ্ছে,,তাও উনি আমাকে জাগিয়ে রেখে একটার পর একটা কথা বলে যাচ্ছে,,কোথায় আমি শান্তি করে ঘুমোবো তার ব্যবস্থা করবে তা না করে উল্টে আমার কষ্ট টা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে তো দিচ্ছে,,এ্যা হ্যা
উজানঃ আচ্ছা আচ্ছা চুপ চুপ শ্রাবণ উঠবে,,আমি আমি জড়িয়ে ধরছি তো তোমাকে এই যে আর কথা বলছি না দেখো চুপপপ,,চুপ
উজান একটা দীর্ঘ শ্বাস টেনে এক এক করে ওর শার্টের সব বোতাম খুলে শার্ট টা খুলে ফেলে,,ভেতরের গেঞ্জি সহ শার্ট টা হিয়ার মাথার কাছে আলতো করে রেখে দেয়,,হিয়া উজানের দিকে দেখে চোখ নামিয়ে নিয়ে ঘুমের ভান করে,,উজান রুমের লাইট ওফ করে পুরো ঘর অন্ধকার করে দিয়ে আসে কারণ শ্রাবণ আবার ঘুম থেকে উঠে দেখলে ছোট মানুষ কি ভাবে না ভাবে এই ভেবে সব ওফ করে সে মাঝখানে গিয়ে শুইয়ে পড়তেই হিয়া গপ করে উজানকে জড়িয়ে ধরে,,উজানো নিজের সব দিয়ে হিয়াকে পুরো আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে,,
উজানঃ হঠাৎ আজ নিজে থেকে এতো কাছে আসলে
হিয়াঃ আবার কথা বলছেন আপনি,,আমি আপনাকে বিশ্বাস করি এটুকু কি আপনার জন্য যথেষ্ট না!!
উজান একটা হাসি দিয়ে হিয়ার কপালে একটা চুমু এঁকে দিয়ে বলে হ্যা তুমি থাকলেই আমার যথেষ্ট,,উজান হিয়াকে আবার জড়িয়ে ধরে দু হাত আগলে,,একদিকে জানালা দিয়ে আসা দমকা বাতাস অন্য দিকে কম্বলের মাঝে গরম উওাপ,,দু’জনের মনকে ভরিয়ে তুলতে যথেষ্ট,,হিয়া তো তার নিরাপদ আশ্রয়ের বুকে মাথা রেখে নিশ্চিন্তে ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেলো এদিকে যে হিয়াকে আজ এতো কাছে পেয়ে উজানের ঘুম উধাও হয়ে গেলো,,এর দায় ঠিক কে নেবে এখন,,উজানের তো গরম লাগছে পিঠ ঘেমে লোনা জলের ছাপ মিলছে,,হিয়া তার বুকের লোমে মুখ গুঁজে বিরক্ত নিয়ে বার বার নড়ছে,,হিয়ার কি বায়না টা না করলেই আজ চলতো না!!