মেঘের_আড়ালে_রোদের_লুকোচুরি ❤️ 🌈💙🎨😏❤️🥳🐦💐🍫🏩💒 ইভা রহমান Part-48

0
971

😏 #মেঘের_আড়ালে_রোদের_লুকোচুরি ❤️
🌈💙🎨😏❤️🥳🐦💐🍫🏩💒

ইভা রহমান

Part-48

পরেরদিনঃ
স্যারদের সুন্দর মতো খাইয়ে দিয়ে বিদায় করে হিয়া এখন অনেকটাই ক্লান্ত,,শরীর টা বিছানায় মেলে দিয়ে চোখ টা একটু বুজতেই হিয়ার স্মরনে আসে সন্ধ্যার একটু পরপরই তার শ্বশুর মানে উজানের বাবার ডক্টরের কাছে এ্যাপয়নমেন্টের কথা,,হিয়া না ঘুমে উঠে উজানকে ফোন করে বলে বাড়িতে আসার জন্য,,উজান স্যারদের গাড়িতে তুলে দিয়ে বাড়িতেই আসছিলো,,তাই ওর আসতে বেশি দেড়ি হয় না,,উজান এলে হিয়া এবার উজানকে রিকুয়েষ্ট করতে থাকে উজান যেনো নিজে ওর বাবাকে নিয়ে ডক্টরের কাছে যায়,,কিন্তু উজান কিছুতেই রাজি হতে চায় না,

হিয়াঃ আপনি আজ বাবাকে হসপিটালে নিয়ে যাবেন,,আর আমি এ বিষয়ে আপনার কোনো না শুনতে চাই না উজান,,

উজানঃ আমি পারবো না,,উনি যথেষ্ট এ্যাডাল্ট আর অভিজ্ঞ এমন না যে উনি ছোট বাচ্চা একা একা ডক্টরের চেম্বার খুঁজে ডক্টর দেখাতে পারবে না,,আমি যেহেতু সব এ্যাপায়নমেন্ট করে রাখছি উনি জাস্ট যাবে গিয়ে ডক্টর টা দেখিয়ে নেবে ব্যাছ,

হিয়াঃ আমি আপনাকে যখন বলছি আপনি যাবেন তখন আপনি যাবেন,,আর যদি আপনি আমার কথা না শুনেন তাহলে এ-ই আমিই আপনার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেবো রাজি,

উজানঃ দিস ইজ টু মাচ হিয়া,,তুমি খুব ভালো করে জানো আমি ওনার সাথে কথা বলি না,,ওনার সাথে যাওয়া মানে কিছু না কিছু কারণে আমাকে ওনার সাথে কথা বলতে হবে, যেটা আমি করতে পারবো না,,

হিয়াঃ ঠিক আছে আপনাকে পারতেও হবে না,আপনি আজ থেকে আমার সাথে কোনো কথা বলবেন না,,

উজানঃ হিয়া প্লিজ,,

হিয়া এসে উজানের হাত দুটো মুঠো করে ধরে শান্ত গলায় বলতে শুরু করে,,

হিয়াঃ ও উজান শুনুন না,,যে-ই মানুষ টা শ্রাবণকে নিজের সব দিয়ে আগলে আগলে রাখছে আপনি কেনো তার সাথে এরকম ব্যবহার করছেন,,শ্রাবণের চিকিৎসার সময় উনিই তো আমাদের ওতোগুলো টাকা দিয়ে সাহায্য করেছিলেন,,বলুন

উজানঃ হিয়া আমি,,

হিয়াঃ (উজানকে থামিয়ে দিয়ে) আপনার সাথে পরিচয় হবার পর থেকে আমি আপনার এমন কোনো কথা নেই যেটা শুনি নাই,,আজ আমি আপনাকে রিকুয়েষ্ট করছি আপনি বাবা-র সাথে ডক্টরের কাছে যাবেন ওনার সাথে ভালো ব্যবহার করবেন,,ধরে নিন আপনার হিয়া এ-ই প্রথম আপনার কাছে মন থেকে কিছু চাইছে,,

উজানঃ (একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে) আমি ওনার সাথে গেলে তুমি খুশি হবা?

হিয়াঃ খুব,,

উজানঃ ঠিক আছে,,আমি যাবো___দেখি হাসো তো এখন একটু,,

হিয়া গাল টেনে হাসি দিতেই উজান হিয়ার মাথা টা ওর বুকের কাছে নিয়ে এসে হিয়ার মাথায় একটা চুমু এঁকে দেয় আর বলে,,

উজানঃপাগলি একটা,,

!
!

হিয়ার মন রাখতে উজান রাজি হয়ে ওর বাবাকে নিয়ে ডক্টরের কাছে আসে,,ডক্টর দেখিয়ে সব গুলো টেস্ট করে নিয়ে বাড়ি ফিরতে সময় তখন রাত দশটা,,ক্যাব না পেয়ে উজান বাধ্য হয়ে একটা রিক্সা ম্যানেজ করে নেয়,,এই তিন চার ঘন্টা সময়ে উজান একান্ত দরকার ছাড়া তার বাবার সাথে একটা অতিরিক্ত কথা বলে নি,,সমরেশ নিজেও তার সাথে কথা বলার সাহস মনে আনতে পারে নি,,কিন্তু এবার রিক্সার মধ্যে সব নিরবতা কাটিয়ে সমরেশ নিজে থেকেই কথা শুরু করে,,

সমরেশঃ ধন্যবাদ উজান,,আমার সাথে আজ আসার জন্য,,আজ কতোদিন বাদে,কতোদিন বলছি কেনো কতো বছর বাদে আমরা দুজন মিলে একসাথে কোথাও আসলাম,,এভাবে রিক্সা তে করে কতোদিন বাদে বাবা ছেলে তে মিলে,,

উজানঃ এখানে ধন্যবাদ দেওয়ার মতো কিছু নেই মিস্টার শাহরিয়ার,,আমার কোনো ইচ্ছে ছিলো না আপনাকে নিয়ে আসার,,জাস্ট হিয়া আমার কাছে জীবনে এই প্রথম নিজে থেকে কিছু চাইলো তাই আমি ওর এই রিকুয়েষ্ট টা রাখতেই আপনার সাথে এভাবে,,

সমরেশঃ তোর এখনো আমার উপর ভীষণ রাগ তাই না রাজা,,আমার ভূলের কি কোনো ক্ষমা নেই তোর কাছে?

উজানঃ আপনি যা করেছেন তার কোনো ক্ষমা হয় না,,আপনি আমাদের গোটা পরিবার টাকে দু ভাগে ভাগ করে দিয়েছেন,,আমার মা’কে আপনি ঠকিয়েছেন,,আমাদের ভাইবোন দের আপনার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত করেছেন,,নেহাৎ আমার মা একজন ভালো মানুষ বলে,সে এখনো আপনার সাথে সংসার করছে,,আপনি মা’কে ঠকিয়ে আরেকটা সংসার সাজিয়ে যে-ই পাপ টা করেছেন না তার ক্ষমা হয় না মিস্টার শাহরিয়ার তার কোন ক্ষমা হয় না,,

সমরেশঃ আমি হেল্পলেস ছিলাম উজান,,আমি বাধ্য হয়ে সেদিন,,আমি তোদের কে ঠকাইনি বাবা বিশ্বাস কর,,তুই বল না আমি মিনাক্ষীকে বিয়ে করবার পরো কি তোদের চার ভাইবোনের কোনো কমতি রাখছিলাম কিছুতে,,আমি তো যতোটা পারছি তার সব দিয়ে তোদেরকে

উজানঃ(খুব রেগে গিয়ে) প্লিজ আপনার এ-ই কথা গুলো বন্ধ করুন,,আপনাকে আমি এর আগেও বলেছি ঔ মহিলার নাম আপনি আমার সামনে নিবেন না আপনি তারপরো কেনো,,আর একটা কথা আপনি হয়তো আমাদের টাকা পয়সার কোনো কমতি রাখেন নি,,মাসে মাসে মা’র ব্যাগ ভর্তি করে টাকা পাঠিয়ে দিয়েছিলেন কিন্তু এ-তো কিছুর পরো আপনি আমাদের রাতের ঘুম টা কেঁড়ে নিয়েছিলেন,,আপনার একটা ভূলের জন্য আমার মা যে কতো গুলো রাত না ঘুমিয়ে কাটিয়ে ছিলো তা শুধু আমি জানি,,আপনার ভূলের কোনো ক্ষমা হয় না,,কোনো না,,

সমরেশ কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারে না,,কি উওর দেবে সে তার ছেলেকে,,হিয়া তো চেয়েছিলো বাবা আর ছেলের মধ্যেকার এ-ই দেয়াল টা ভেঙে ফেলতে তা না হয়ে উল্টো উজান তো যেনো ওদের মাঝের দেওয়াল টাকে ঘেন্নার ইট দিয়ে আরো শক্ত করে গেঁথে তুললো,,কোনোদিন কি হিয়া পারবে এই ঘেন্না আর অভিমানের প্রাচীর ভেঙে বাবা আর ছেলের মাঝে আবার একটা দুষ্টু মিষ্টি ভরা সু-সম্পর্ক তৈরি করতে!!
!
!
!

সেদিন ডক্টর দেখিয়ে পরশু সমরেশ বাসবিকে নিয়ে রংপুর ফিরে আসে,,শ্রাবণকে ছেড়ে আসতে যেনো তার একটু বেশিই কষ্ট হচ্ছিলো,,কিন্তু আমরা সবসময় যা চাই তা হয় কোথায়,,জীবনের এমন কিছু বেড়া জাল থাকে যেগুলোতে আমরা এমন ভাবে আটকা পড়ি যে সেখান থেকে বেড়িয়ে আসার অদম্য চেষ্টা করলেও আমরা সেসব থেকে বের হয়ে আসতে পারি না,,সমরেশেরো তাই হচ্ছে দ্বিতীয় স্ত্রী মীনাক্ষীর চাপে পড়ে তাকেও বাধ্য হতে হয় সব ছেড়ে দিয়ে রংপুরে ফিরে আসতে,,সমরেশ আর বাসবি ফিরে আসার পর শুরু হয় উজানের হিয়া আর শ্রাবণকে নিয়ে নতুন এক জীবন,,দিন গুলো খুব সুন্দর করেই কাটতে থাকে তিনজনের,,যেনো এ-ই তিনজনের মতো সুখী পরিবার হাজার খুঁজলেও একটা মেলা ভার!!

!
!
!
রাত তখন একটার একটু পর,,কিছুক্ষণ হলো শ্রাবণ ঘুমিয়েছে,,আর শ্রাবণ ঘুমোতেই উজান হিয়ার কাছে এসে হিয়ার হাতে একটা প্যাকেট ধরিয়ে দেয়,,প্যাকেট টায় ছিলো হিয়ার জন্য কিনে আনা একটা খুব সুন্দর নাইট ড্রেস,,হিয়া তো প্যাকেট দেখেই খুব খুশি তার জন্য আবার একটা নতুন গিফট,,বাহ বা,,কিন্তু মুখে এক বালতি হাসি টেনে প্যাকেট টা নিলেও যখনি প্যাকেট খুলে ঔ নাইট ড্রেস টা দেখে ওমনি হিয়ার হাসি-হাসি মুখ টা নিমিষে বাংলার পাঁচ এর মতো আকার ধারণ করে,,হিয়া নাইট ড্রেস টা উপর থেকে নিচে দুচোখের সব দিয়ে পর্যবেক্ষন করতে থাকে,,সব দেখা শেষ হতেই রাগে হিয়ার চোখ মুখ পুরো শক্ত হ’য়ে আসে,,নাইট ড্রেস টা আলমারির ভেতর থুইয়ে দিয়ে হিয়া দাঁত কটমট করতে করতে উজানকে একশোটা গালি দিতে শুরু করে,,

উজানঃ তুমি এটা পড়বা না তাই তো,,

হিয়াঃ না মানে না,,আপনি ভাবলেন কি করে আমি,,দেখুন এসব ড্রেস পড়ার অভ্যেস আমার নেই,,আপনাকে কে বলেছিলো এসব কিনতে,,তুষার ভাইয়া সন্ধি আপুর জন্য কিনছে কিনছে তাই বলে আপনিও ওনার দেখাদেখি,,

উজানঃ ও হিয়াপাখি একটু আসো না দেখি কেমন লাগে পড়ে তোমাকে ওটা,,প্লিজজ

হিয়াঃ আমি যখন বলেছি না তখন না,,এখন গিয়ে চুপচাপ শুইয়ে পড়ুন ফাস্ট,,

উজানঃ পড়বা না তুমি ঠিক আছে জোর নাই,,কতো শখ করে আনলাম আমি আর তুমি কি করলা ওটা আলমারিতে ওভাবে থুইয়ে দিলা,,যাও লাগবে না পড়া,,

উজান মুখ ফুলিয়ে বিছানায় গিয়ে ওর ল্যাপটপ টা ধাম করে কোলের কাছে নিয়ে ঠুসঠুস টিপতে থাকে,,হিয়া উজানের রাগকে পাওা না দিয়ে রান্নাঘরে গিয়ে রাতের বাকি কাজ টুকু সেরে ফেলে,,হাত মুখ ধুইয়ে ফ্রেশ হ’য়ে এসেও হিয়া দেখে উজান কপট রাগ করে এখনো মুখ ফুলিয়ে আছে তো আছেই,,হিয়া হাতে থাকা তোয়ালে টা ব্যালকুনি নেড়ে দিয়ে রুমে আসে,,আলতো করে উজানের পাশে বসে মুখে এক বালতি হাসি টেনে হিয়া উজানের রাগ টা কমানোর চেষ্টা করে এবার,,

হিয়াঃ কি করছেন?এখনো রেগে আছেন আমার উপর,,আচ্ছা আমি কখনো ওসব ড্রেস পড়েছি বলুন তো,,আমার না কিরকম একটা লাগে তাই জন্য তো আমি,,

উজানঃ হ্যা লাগে তো ভালো,আমি তো তোমাকে ফোর্স করিনি না ওটা পড়ার জন্য,,তোমার ইচ্ছে হলে পড়বে না ইচ্ছে হলে নাই আমার কি,,

হিয়াঃ আপনার কিছু না হলে এরকম গাল ফুলিয়ে আছেন কেনো?আমি তো আপনার মুখ দেখে বুঝছি আপনি রেগে আছেন,,ও উজান একটু দেখুন না আমার দিকে,,আচ্ছা আমি কালকে এখন ওটা পড়বো,পড়ে আপনাকে দেখাবো ঠিক আছে,,

উজানঃ না থাক লাগবে না,,(অভিমানে)

হিয়াঃ সরি তোওও,,আচ্ছা দেখি তো কি দেখছেন ল্যাপটপে,,সেদিন আমাকে কোন জানি একটা মুভি দেখাতে চাইলেন আপনার না-কি খুববব ভালো লাগছে,,

উজানঃ মুভি না,,আসলে ওটাকে ওয়েব বলে,,

হিয়াঃ ওয়েব কি জিনিস,,

উজানঃ ওটা এক ধরনের সিরিজ,,মুভির মতো অনেকটা,,এগুলো নিদিষ্ট এ্যাপে রিলিজ পায়,,ওগুলো তুমি না দেখলে বুঝবা না,,

হিয়াঃ ওহ,,এখন কতো কিছু বের হয়েছে না,,আগে তো ছোট তে এসব কিছুই জানতাম না,,ছুটির দিনে বাবা মা’র সাথে মিলে সিনেমা হলে যেতাম তারপর সবাই মিলে বাদাম বুট খেতে খেতে সালমান শাহ,সাকিব খান এদের কতো কতো মুভি দেখতাম,,

উজানঃ তাই,,

হিয়াঃ হুম তো,,ইসস আমার সালমান শাহ কে যা ভালো লাগতো না,,আমার তো কখনো ওনার নতুন মুভি দেখার সুযোগ হয় নি তবে হলে ওনার যেই পুরানো ছবি গুলো দিতো আমি মা’কে জোর করে নিয়ে গিয়ে ওগুলো দেখতাম,,

উজানঃ তারমানে তোমার ওনাকে ভালো লাগে,,

হিয়াঃ হুম ঔ একটু একটু,,ওনার ঔ গান টা আছে না ও আমার বন্ধু গো চিরসাথী পথ চলার,,ঔ গান টা তো আমার ঠোঁটস্ত,মুখস্থ,মানে একদম পুরো গান টা ঝরঝরা মনে ছিলো,,জানেন আমি ছোটতে কি করতাম,, শ্রাবণকে ঘুম পাড়ানোর সময় কিছু না পেলে এ-ই গান টা গেয়ে গেয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতাম

উজানঃ বাহ খুব ভালো তো,,একদিন শুনাইও তো,,

হিয়াঃ হুম এখন আর মনে আছে নাকি,,আচ্ছা আপনার কোন নায়িকা কে ভালো লাগে,,না মানে সবার একটা পছন্দ থাকে না তাই বলছি আরকি,,

হিয়ার প্রশ্নে উজানের এবার মাথায় দুষ্টবুদ্ধির আর্বিভাব ঘটতে থাকে,,উজান হিয়াকে এবার ঔ ড্রেস টা পড়ানোর জন্য মনে মনে ফন্দি বের করে,,তারপর মুখে এক বালতি হাসি টেনে,,

উজানঃ আমার তো পছন্দের অনেক নায়িকা আছে,,ওরা যা সুন্দর না তোমার দেখলেই হিংসে হবে বুঝলা,,

হিয়াঃ তাই না-কি,,তা দেখি কি রকম সুন্দর?

উজানঃ সত্যি দেখবা,,

হিয়াঃ হুম দেখবো,,

হিয়ার চোখে মুখে হালকা রাগের আভা দেখে উজান বুঝে ওর ট্রিক টা কাজে দিচ্ছে,,উজান ঠুস ঠুস করে কিবোর্ড এ কিসব একটা চেপে ল্যাপটপটা হিয়ার দিকে হালকা কাত করে হিয়াকে দেখতে বলে,,

উজানঃ আমার ফেবারিট তো অনেক নায়িকাই আছে যেমন এ্যান্জেলিনা জলি,,ক্যাটরিনা তবে এ-ই মেয়ে টাকে আমার সেই লাগে,,

হিয়াঃ সেই লাগে বলতে,,

উজানঃ মানে খুবই ভালো লাগে,,দেখো কি মিষ্টি একটা মেয়ে,,যেমনি হাসি ওমনি গুলুমুলু কিউটের ডিব্বা একটা,,

উজানের কথায় হিয়া ছবি টার দিকে আরো বড় বড় চোখ করে তাকায়,,তারপর উজানের দিকে তাকিয়ে দেখে উজান কি রকম নেশাতুর চোখে ঔ মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে,,উজানের ঔরকম নেশাতুর চাহনি দেখে হিয়া এবার খুব ক্ষেপে যায়,,

হিয়াঃ নাম কি নায়িকা টার?

উজানঃ কার,এর,,এর নাম তো অনামিকা,,মুভি করে না ঔ ওয়েবে কাজ টাজ করে,,নাম টা যেমন সুন্দর দেখতেও কি মিষ্টি দেখো,,দেখো তোমার মতো সেইম একটা তিল গলার কাছে,,উফফ(বুকে হাত দিয়ে) যা লাগে না তিল টা,,

উজানের এ-ইসব কথা শুনে হিয়ার মনে এখন আগুনের লার্ভা জ্বলছে,,এ-ই বুঝি আগুন সহ সেই লাভা এবার ধপ করে বেড়িয়ে আসবে,,এতোদিন ও হিয়ার তিলের গুনগান গাইতে আর আজকে কি না অন্যের তিল নিয়ে,,

উজানঃ তুমি তো এখনকার এসব নায়ক নায়িকাদের খুব একটা চেনো না,,তুমি এসব কি বুঝবা,,তুমি তো ঔ আগের সব,ইউ নো একটু আগে যে বললা,,

হিয়াঃ (খুব রেগে গিয়ে)আপনি কি জানেন হ্যা যে আমি এখনকার কোনো হিরোদের চিনি কি না,,কচু জানেন আপনি,,আমি আমি তো সালমান খান,শাহরুখ খান এদেরকে খুব ভালো করে চিনি,,রিমা আপুর ল্যাপটপে তো মাঝেমধ্যে ওনাদের কতো মুভি দেখছি,,

হিয়ার কথায় উজান এবার হেঁসে গড়াগড়ি খাবে খাবে এরকম অবস্থা,,

উজানঃ ওরা এই ইরার হিরো বুঝি,,হাসালে হিয়া,,আমার বাবা দাদা চাচারা ওনাদের মুভি দেখে বড় হইছে বুঝলা ওনারা এখন বুড়ো,,আর কিছুদিন পর ওনাদের বাচ্চা কাচ্চা মুভি করবে আর তুমি কি না,,

হিয়াঃ একদম এরকম করে হাসবেন না,,আপনি জানেন আমি কিছু জানি কি না,,জানেন আপু না ঔ রোজ ওনার ল্যাপটপে কি যেনো একটা নাটক দেখতো কি যেনো একটা নাম,কি যেনো একটা নাম,,যাই হোক কি যেনো একটা আকাশ না কি জানি,,তো আমি একদিন আপুকে ওনার টাকা ফেরত দিতে গিয়ে ঔ নাটক টা অল্পইকটু দেখেছিলাম,,ইসস নায়ক টাকে দেখে না আমি পুরো ফিদা হয়ে গিয়েছিলাম জানেন,,নায়ক টা ডক্টর ছিলো আর একটা সাদা শার্ট আর নীল জিংকস পড়ে রুগীদের চিকিৎসা করছিলো,, কি যে লাগছিলো না,,এ-ই আপনার মতো লম্বা ফর্সা আর বডি তো উফফ আপনার চাইতেও সুন্দর,,

উজানঃ তাই না-কি,,তা কি নাম তোমার ঔ হিরোর,,আমিও একটু দেখি

হিয়াঃ ইয়ে মানে নামটা জানি আপু কথা বলতে বলতে কি বলেছিলো,,ইয়ে মানে ঔ শ শ কি জানি শন না কি একটা আমার ওতো মনে নাই,,

উজানঃ কেমন ফিদা তুমি হিয়া যে নাম-ই মনে নাই ইসস,,

হিয়াঃ শুনুন আমাকে একদম ভেঙ্গাবেন না হ্যা,,আমি কিন্তু খুব রেগে যাচ্ছি,,

উজানঃ ইসস কি রাগ ম্যাডামের,,আমি কি ভাবছি জানো যে এ-ই নাইট ড্রেস টা আমার এ-ই অনামিকা কে পড়লে কি রকম লাগবে,,হট না

হিয়া রাগে ল্যাপটপ টা ধাম করে বন্ধ করে দিয়ে উজানের মাথার সব চুল গুলো টেনে ধরে

হিয়াঃ বউ রেখে আপনি এসব নায়িকাদের হট বলছেন,,লজ্জা করে না আপনার,,তাহলে তাহলে রাত জেগে ইমেল চেক করার নাম করে এ-ই এ-ই এ্যান্জেলিনা ফ্যান্জেলিনা কে দেখা হয়,,আপনাকে তো আজ আমি

উজানঃ কি করছো হিয়া লাগছে আমার,,ছাড়ো,,আরে,,সব চুল উঠে নিবা না-কি,,হেই পাগলি থাম না,,

হিয়াঃ হু,,আর আর দেখবেন আপনি এসব নায়িকাদের,,

উজানঃ আচ্ছা আগে তুমি প্রুভ দেও তুমি এদের চাইতেও হট এন্ড ইউ নো….তাহলে যা-ও আমি ওদের দিকে আর তাকাবোও না,,তাকা তো দূর আমি আর কখনো কোনো ওয়েবই দেখবো না,,

হিয়াঃ কি কি করলে প্রুভ হবে যে আমি ঔ

উজানঃ যাও ঔ নাইট ড্রেস টা পড়ে আসো,আমি দেখি,,তারপর নাহয়

হিয়াঃ আপনি আমাকে ওটা পড়িয়েই ছাড়বেন তো,,কত্তো খারাপ আপনি,,

উজানঃ আরে তুমি তো প্রুভের কথা বললা তাই জন্য তো আমি,,

হিয়াঃ ঠিক আছে,,আমি আসছি পড়ে,,আপনি থাকুন আপনার এই অনামিকা কে নিয়ে,,আমিও আজ দেখাবো আমিও কতো সুন্দর,,হু,,

হিয়া রাগে গটগট করে আলমারি থেকে নাইট ড্রেস টার প্যাকেট টা নিয়ে ওয়াশরুম চলে যায়,,আর এদিকে উজানের হাসি এখন দেখে কে,,হিয়াকে বোকাতে বানাতে পেরে যা তার ক-তো আনন্দ হচ্ছে সে আর বলতে,,

উজানঃ হাঁস পাখি তুমি নিজেই তো আমার অনামিকা,,আমার ক্যাটরিনা আমার সব কিছু,,পিচ্চি টাকে বোকা বানাতে যে আমার এ-তো ভালো লাগে কেনো,,(একটা শান্তির দীর্ঘ শ্বাস ফেলে)কবে যে আমার এই পিচ্চি টা একটু বড় হবে,,

!
!
!

হিয়াঃ ইসস কি ন্যালন্যালে একটা কাপড়,,এ-তো নরম কাপড়ের কেউ জামা পড়ে কখনো,,আমি বুঝি না রাতে ঘুমোনো টা-ই তো মেইন নাকি,তাহলে কি রকম জামা পড়লাম তাতে কি এমন এসে যায়,,যে না কাপড়ের চেহারা নাম তার পেয়ারা,,নাইট ড্রেস কচু ড্রেস একটা____আআআআ মনে হচ্ছে নিজের মাথার চুল আমি নিজে ছিঁড়ে ফেলি,,কেনো যে ওনার সাথে প্রুভ নিয়ে লড়তে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল টা মারতে গেলাম,,,এ-তো ফিন ফিনে ড্রেস পড়া যায় না-কি সব বুঝা যাচ্ছে,,মনে তো হচ্ছে গিয়ে মাথা টা ওনার ফাটিয়ে দিয়ে আসি,,ধুর

!
!

খয়েরী রঙের সার্টিনের নাইট ড্রেস টা পড়ে হিয়া মাথা নিচু করে চোখ মুখ খিঁচে বেড়িয়ে আসতেই গেটের কাছে দাঁড়িয়ে যায়,,উজান যখন ওকে আদর করে তখন তো ওর এ-তো লজ্জা কাজ করে না তাহলে আজ হঠাৎ এ-ই ড্রেস টা পড়তেই এরকম কেনো লাগছে তার,,না এর বেশি এক পা বাড়ালেই যেনো হিয়ার দম টা এবার ফুট করে বেড়িয়ে আসবে,,ল্যাপটপ টা ওফ করে সাইড টেবিলে রেখে এপাশ ফিরতেই উজানের চোখ আঁটকে যায় ওয়াশরুমের গেটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা হিয়ার উপর,,উজান একটা শুকনো ঢোক গিলে দুচোখের সর্বস্ব দিয়ে হিয়াকে পা থেকে মাথা অবধি পুরোটা গিলে খেতে শুরু করে,,সাহস করে চোখ টা তুলে উজানের দিয়ে তাকাতেই হিয়া খেয়াল করে উজান কিরকম ওর দিকে নেশাতুর চোখে তাকিয়ে আছে,,হিয়া তৎক্ষনাৎ ওর চোখ টা নামিয়ে নেয়,,না উজানের এ-ই চোখে তাকিয়ে থাকা আজ অসম্ভব,,নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে উজান হিয়ার কাছে আসে,,হিয়ার মুখ টা আলতো করে তুলে একটা স্নেহের চুমু এঁকে দেয় হিয়ার কপালে,,পাঁজা কোলা করে হিয়াকে কোলে তুলে নিয়ে,,

উজানঃ ইসস আমার এ-ই পিচ্চি টার কাছে পৃথিবীর সব সৌন্দর্য মূল্যহীন,,

হিয়াঃ খুব ভালো লাগে না আমাকে বোকা বানাতে,,

উজানঃ যা কি করে ধরা খেয়ে গেলাম আজ!!

হিয়া কিছু না বলে একটা লজ্জাসূচক হাসি দিয়ে উজানের বুকে মুখ লুকিয়ে নেয়,,উজান হিয়াকে নিয়ে বিছানায় আসতে আসতে গুনগুনিয়ে গান গাইতে শুরু করে

ও আমার বন্ধু গো
চিরসাথী পথ চলার
তোমারই জন্য গড়েছি আমি
মাঞ্জিল ভালোবাসার❤️
!
!
আজ এক সপ্তাহ পর,,
রাতে খাবার টেবিলে খেতে এসে দুই টোনাটুনির আজ ভীষণ ঝগড়া লেগে যায়,,ঝগড়া লাগার কারণ শ্রাবণের জন্য কিনে আনা একটা ব্যাটারি চালিত ছোটদের বাইক,,যা দেখেই হিয়ার মেজাজ এখন হাই ডিগ্রি তে ঘোরপাক খাচ্ছে,,রাগে উজানকে শাসন করতে গিয়ে এবার উজান জিদ ধরে হিয়া যদি গাড়ি টা ঘরে না ঢুকায় তাহলে সে আজ ভাতই খাবে না,,হু

হিয়াঃ সবসময় এ-ই সব বাচ্চামো আমার ভালো লাগে না উজান,,খাবার টা খেয়ে নিন ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে,,

উজানঃ আমি না খেলে তোমার কি,,এখনো তো তুমি আমাকে তোমার নিজের ভাবতে পারলা না,,যদি পারতা তাহলে আজ এ-ই ব্যবহার টা আমার সাথে করতা না,,

হিয়াঃ আমি খুব ভালো করে জানি আমি আপনার সাথে ঠিক কি ব্যবহার করেছি,,আপনার যদি মনে হয় গাড়ি টা না নেওয়াতে এটা প্রমাণ হয় যে আমি আপনাকে আমার কিছু মনে করি না,,তাহলে তাই হোক,,হ্যা আমি আপনাকে কিছু মনে করি না শান্তি,,

উজানঃ তুমি তাও গাড়িটা ঘরে তুলবা না তাই তো,,

হিয়াঃ না তুলবো না,,উজান আমি আপনাকে আগেও বলেছি এখনো বলছি কিছু কেনার আগে সেটা আমাকে বলে তারপর আপনি কিনবেন,,বাবা শ্রাবণকে সাইকেল কিনে দিছে আমি কিছু বলি নি,,যে আচ্ছা হোক শ্রাবণ বড় হচ্ছে ওর একটা সাইকেল দরকার,,আর ফয়সালের সাইকেল দেখে ঔ নিজেও একবার আমাকে সাইকেলের কথা বলেছিলো,,যেটা ওর দরকারনসেটা নেওয়া ওর শোভা পায়,,কিন্তু এই গাড়ি টা,,এটা আমি কিছুতেই ওকে নিতে দেবো না,,

উজানঃ কি সমস্যা তোমার,,বাচ্চা টা ওটা পছন্দ করছে,,কাল নিচে মাঠের মধ্যে রিয়াদকে ওটা নিয়ে খেলতে দেখে সব বাচ্চাদের ওটা পছন্দ হইছে জানো,,সবাই ওটা চালাবে বলে কি রকম করছিলো,,দিয়েছে না-হয় আমি কিনে তাই জন্য তুমি,,

হিয়াঃ না তাই জন্য আপনি এটা কিনে দিতে পারেন না ওকে,,শ্রাবণের এটা ভূলে গেলে চলবে না ওর মূল টা কি ছিলো ও আগে কিভাবে চলেছে,,এখন আপনার টাকা আছে বলে যে ও বায়না করবে আর আপনি কিনে দিবেন আমি এটা মানবো না,,

উজানঃ শ্রাবণ তোমার শুধু একার ছেলে না ও এখন আমারো বাচ্চা,,তাই আমি যা বলবো তোমাকেও তাই শুনতে হবে,

হিয়াঃ আমি শুনবো না,,দশ হাজার টাকা কি আপনার টাকা মনে হয় না,,বেতনটা হাতে আসতে না আসতেই ওটা আপনাকে কিনে আনতে হলো,,আপনি কাল এটা গিয়ে ফেরত দিয়ে আসবেন,,নয়তো সাইকেল সহ এটাকেও আমি স্টোররুমে রেখে তালা দিয়ে রেখে দেবো,,কথা টা যেনো মাথায় থাকে,,

হিয়া রাগে হাতে থাকা সবজির বাটি টা ধাম করে টেবিলে থুইয়ে রুমে যায়,,আর গিয়ে দেখে শ্রাবণ চুপ করে পা গুঁজে বিছানায় বসে আছে,,শ্রাবণ এতোক্ষন উজানের ফোন নিয়ে ফ্রি ফায়ারে উড়া ধুরা বন্দুক শুট করছিলো কিন্তু হিয়া আর উজানের ওরকম চিৎকার শুনে আর হিয়াকে রুমে আসতে দেখে ভয়ে চুপসে গিয়ে,ফোন রেখে একদম ভদ্র বাচ্চার মতো বসে যায়,,হিয়া এসে শ্রাবণের পাশ থেকে ফোন টা নিয়ে এবার আরো খেঁকিয়ে উঠে,,

হিয়াঃ সারাক্ষণ ফোন ফোন ফোন,,কাল থেকে যদি তোমাকে আমি দেখছি না ফোনে হাত দেওয়া,হাত ভেঙে রেখে দেবো,,পড়াশোনা তো নাই যেনো তোমার,,কখন থেকে খাওয়ার জন্য ডাকছি?কথা শুনোনি তুমি আমার?

শ্রাবণঃ বুবু আমি,,

উজানঃ (চিৎকার করে ডেকে)শ্রাবণ এদিকে আয় তো,,,,কি হলো আমি আসতে বললাম না,,শ্রাবণ

হিয়াঃ একদম বিছানা ছেড়ে উঠবা না,আমি ভাত এনে দিচ্ছি ভাত খেয়ে চুপচাপ ঘুম দেবা,,

শ্রাবণঃ আমি ভাইয়ার কাছে যাবো😥

হিয়াঃ যাওয়া হবে না,,উনি খাচ্ছে এখন,,

হিয়া কিছু বলার আগে উজান শ্রাবণকে নিয়ে গিয়ে ওর রুমে চলে যায়,,আর ঠিক করে সে আজ ভাত খাবে না তো খাবেই না,,হিয়া ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে দেখে ভাত তরকারি এখনো টেবিলে ওভাবে খোলা পড়ে আছে,,কেউ কিচ্ছু খাচ্ছে না,,রাগে হিয়া উজানের রুমের গেটের কাছে গিয়ে দুজনকে উদ্দেশ্য করে কথা শুরু করে,,

হিয়াঃ টেবিলে ভাত তরকারি সব দিয়ে রাখলাম,,খাবার ইচ্ছে হলে খেয়ে নিবা নয়তো একটু কষ্ট করে ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখবা,,খাবার কিনতে গেলেও না টাকা লাগে অহেতুক সেগুলো নষ্ট করবা না,,(রাগে)

এ-ই বলে হিয়া এদিকের রুমে এসে লাইটের সুইচ গুলো ঠাস ঠাস করে ওফ করে বিছানায় শুতে যায়,,থাক আজকে আর কাউকে ভাত খেতে হবে না,,খাবার গুলো ওভাবেই পড়ে থাক,,এদিকে উজান বিছানায় বসে রাগে মাথা নিচু করে ওর চুল গুলো টেনে ধরে বসে আছে,,শ্রাবণ এসে উজানের মাথা থেকে হাত নামিয়ে উজানের কোলে বসে যায়,,

শ্রাবণঃ আমার ঔ গাড়ি টা লাগবে না ভাইয়া,তুমি ওটা ফেরত দিয়ে আসো,,বুবু নাহলে তোমার সাথে আরো রাগ করবে,,বুবু তোমার সাথে রাগ করলো আমার একটুও ভালো লাগে না,,

শ্রাবণের কথায় উজান শ্রাবণের কপালে একটা স্নেহের পরশ বুলে দিয়ে,,

উজানঃ আমার কি ভালো লাগে,,তোর বুবুরো তো দোষ নেই,ও যে অতিরিক্ত খরচ পছন্দ করে না,,

শ্রাবণঃ হুম বুবুকে আমি এখন ইচ্ছে মতো বকা দিয়ে দেবো আচ্ছা,,আর তোমাকে রাগ হবে না,,চলো খাবে আসো

উজানঃ হুম,,এখন না একটু পর খাবো,,তুই খাবি আয় আমার সাথে,,

শ্রাবণঃ না,তাহলে আমিও একটুপর খাবো তোমার সাথে,ঠিক আছে

উজানঃ খিদা লাগে যদি,,

শ্রাবণঃ লাগবে না তো,,আমরা এখন খেলবো দেখবা খিদা সব ফুড়ুৎ হ’য়ে গেছে,,

উজানঃ হুম বলেছে আপনাকে

এ-ই বলে উজান শ্রাবণের পেটে পিঠে কাতুকুতু দিতে শুরু করে আর শ্রাবণ শুরু করে তার খিলখিল হাসি,,
!
!
!

আধাঘন্টা পর,,

ডাইনিংএর কাছে হিয়ার খুটখুট শব্দ কানে আসতেই উজান মুচকি হেঁসে দেয়,,উজানের আর বুঝতে বাকি থাকে না হিয়া কি করছে,,যাক পেটের ভেতর এখন যেই ছুঁচো টা খুব ছটফট করছে সেটা এবার একটু শান্ত হবে,,

হিয়া একটা বড় প্লেটে ভাত আর মাছ তুলে নিয়ে রুমে এসে শ্রাবণের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে গোল গোল লোকমা বানাতে শুরু করে,,

হিয়াঃ হা করো,,কথা কানে যায় নি,,মুখ খুলো

শ্রাবণঃ ভাইয়া না খেলে আমিও খাবো না,,তুই খুব খারাপ বুবু আমার ভাইয়া টাকে শুধু শুধু বকা দিয়ে দিস,,

হিয়াঃ তুমি মুখ খুলবা কি?এ-তো কথা তোমায় কে বলতে বলেছে,,সবসময় বেশি কথা,,হা করো,,(রাগে)

শ্রাবণ হিয়ার লাল লাল চোখ দেখে ভয়ে হা করে এক লোকমা গিলে ফেলে,,হিয়া আরেক লেকমা বানিয়ে এবার উজানের মুখের কাছে এনে দাঁড় হয়,,

হিয়াঃ কালকে আমার ভার্সিটিতে ক্লাস আছে তার আগে সকালে গুনগুনকে পড়াতেও যেতে হবে তাই জন্য আমাকে এখন ঘুমাতে হবে আর আমার ঘুম পাচ্ছো খুব,,

উজানঃ তা যাও তুমি ঘুমাও,আমাকে কেনো বলছো?

হিয়াঃ ভাত টা খাইয়ে দিচ্ছি খেয়ে নিন আমার দেড়ি হচ্ছে,,

উজানঃ খাবো না আমি,,

হিয়াঃ আমি খাইয়ে দিচ্ছি তারপরো খাবেন না,,

উজানঃ না,,

হিয়াঃঠিক আছে কেউ না খাইতে চাইলে তো আমি তাকে জোর করতে পারি না,,ওকে

হিয়া এক পা এগিয়ে চলে যেতেই উজান হিয়ার গায়ের ওড়না টা টান দিয়ে ধরে ফেলে,,

উজানঃ মাছ বেছে ভাত খাইয়ে দেও,,একটাও যেনো কাটা না থাকে,,

হিয়া একটা হালকা হাসি দিয়ে উজানকে ভাত খাইয়ে দিতে থাকে,,একবার শ্রাবণ একবার উজান তো কখনো নিজে,,খাবারের পর্ব শেষ হলে হিয়া আসে রান্নাঘরের বেসিনে,,প্লেট টা ধুইয়ে হাত ধুতে যাবে ওমনি উজান এসে হিয়াকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে হিয়ার কানের কাছে মুখ গুঁজে দেয়,,

হিয়াঃ শ্রাবণ এখনো জাগনা আছে উজান,,

উজানঃ আসবে না গেম খেলতে বসিয়ে দিয়েছি ওকে,,

হিয়াঃ আবার ফোন,,আমি নিষেধ করার পরো,,

উজানঃ এরকম করো কেনো তুমি বাচ্চা টার সাথে,,এমন তো না যে ও এসব গেমটেম খেলতে গিয়ে ওর পড়াশোনাতে ফাঁকি দেয়,,

হিয়াঃ তা দেয় না কিন্তু,,

উজানঃ কোনো কিন্তু না,,আচ্ছা শোনো না শ্রাবণ ঘুমিয়ে গেলে তুমি আজকে আসবা এ-ই ঘরে,,একসাথে মুভি দেখবো গল্প করবো তারপর একটু ইউ নো

হিয়াঃ আমার ঘুম পাচ্ছে উজান,,আজকে কোনো কিচ্ছু না,,

উজানঃ প্লিজ হিয়াপাখিইই,,একটু

হিয়া লজ্জায় উজানের মুখে ট্যাপ থেকে পড়া পানি গুলো ছিটিয়ে দিয়ে হালকা করে হেঁসে দেয়,,

উজানঃ কি করলা এটা পুরো ভিজিয়ে দিলা,,

হিয়াঃ সবসময় আদর আদর আদর,,আপনার এ-তো আদর আমি রাখবো কোথায় শুনি,,এবার তো একটু সভ্য হোন,,

উজানঃ তুমি সভ্য হতে দেও কোথায়,,(হিয়ার কানের লতিতে একটা কামড় দিয়ে)

হিয়াঃ যা অসভ্য,,লাগলো না আমার!!

_________________________

খুব দেড়ি করে ফেললাম না গল্প দিতে,,সরি সরি,,আর আমার পরীক্ষা ভালো হয়েছে,,সবাইকে ধন্যবাদ এভাবে পাশে থাকার জন্য ❤️❤️❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here