😏 #মেঘের_আড়ালে_রোদের_লুকোচুরি ❤️
🌈💙🎨😏❤️🥳🐦💐🍫🏩💒
Part-45
হিয়াঃ দেখুন মা মনে হয় জেগে আছে,এখন তো অনন্ত নামান কোল থেকে,,
উজানঃ ইসস,,কি সুন্দর করে কোলে নিয়ে আছি সহ্য হচ্ছে না না,,আর কখনো শুধু কোলে ওঠার জন্য বায়না করো দেখো নেই কি-না,,
হিয়াঃ আমাকে আপনার কোলে ওঠার জন্য কখনো বায়না করতে হয়নি,,আপনি নিজে থেকেই যখন আপনার মন চায় আমাকে কোলে তুলে নিয়েছেন,,,,আ হা,,নামান নাআআআ এবার,,
উজান হিয়াকে নামিয়ে দিয়ে রুমে আসতেই বাসবির সামনে দাঁড়িয়ে যায়,,
উজানঃ মা তুমি এখনো জেগে আছো যে,,ঘুমোওনি?
বাসবিঃ আর ঘুম,,আমি গল্প বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে গেলাম কিন্তু এই বাচ্চা দু’টো আর ক্লান্ত হয় না,,একটা শেষে আরেকটা,,ওটা শেষ করে আরেকটা,,এমন এমন করে দাদি মনি ডেকে আবদার করে যে না শুনিয়ে আর পারি না,,
হিয়াঃ দেখলেন আপনাকে বললাম,শ্রাবণকে মা’র কাছে পাঠিয়ে দিয়েন না,,কি হলো এখন__মা ক্ষমা করবেন আমার জন্য আপনি এ-ই সারাদিন এতো কাজ করে এখনো,,
বাসবিঃ ধুর বোকা মেয়ে,,আমি তো ঠিক করেছি তোমরা যতোদিন আছো ততোদিন আমি ওদের দু’জনকেই নিয়ে ঘুমোবো,,মুহিন তো ছিলোই শ্রাবণো যে আমাকে এ-তো আপণ করে নিয়েছি এই কয়দিনে,,সত্যি____তা তোরা এ-ই সময় কোথায় থেকে আসলি,,ঘুমোসনি কেনো এখনো?
উজানঃ ছাঁদে ছিলাম মা,,ঔ সবাই বললো ওরা না-কি আজকে রাত জেগে গল্প করবে তাই ছাঁদে একটু ওদের সাথে থেকে,,
বাসবিঃ সত্যি এ-ই ছেলেমেয়ে গুলোর একদমই ক্লান্তি নেই,,আমি কি একটু ওদের জন্য চা নাস্তা কিছু পাঠিয়ে দেবো,,দেই না ভালো হবে তাহলে ওদের,,
উজানঃ হেই মা,,না না___ওরা খাবার দাবার সব কিছুর ব্যবস্থা করেই তবে না উঠেছে,,তোমাকে কিচ্ছু করতে হবে না,,তুমি যাও গিয়ে এখন শুইয়ে পড়ো,,
হিয়াঃ আর মা শ্রাবণ আবার উঠে যদি বিরক্ত করে আপনি কিন্তু ওকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিয়েন,,ও এ বাড়িতে আসার পর আমার কোনো কথা একদমই শুনতে চাইছে না,,
বাসবিঃ ছেলে মেয়েরা এ বয়সে এরকম দূরন্ত হবে এটাই স্বাভাবিক মা,,তুমি ওসব নিয়ে ভেবো না___যাও তোমরা ঘরে,,আমি এ-ই রান্নাঘরে সব ঠিক আছে কি-না দেখে নিয়ে ঘুমোতে যাচ্ছি,,
হিয়াঃ হুম
বাসবি এক ফালি হাসি উজান হিয়াকে বিলিয়ে দিয়ে নিজের শেষ কাজ টুকু করতে রান্নাঘরে চলে যায়,,এদিকে উজান হিয়াকে নিয়ে রুমে এসেই দরজা লাগাতে যাবে ওমনি হিয়া উজান কে থামিয়ে দেয়,,
উজানঃ কি?
হিয়াঃ আপনি না বললেন আপনি আগে এসে একটু ফ্রেশ হবেন,,আপনি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসুন,আমার মা’র সাথে কিছু কাজ আছে,
উজানঃ আমার মা’র সাথে তোমার কি কাজ আছে হিয়াপাখি,,বিয়ের রাতে ছেলের নামে মায়ের কান ভাঙ্গাতে চাচ্ছ বুঝি,,
হিয়াঃ সেটা করতে পারলে তো ভালোই হতো এক দিক দিয়ে,,আপনার একটু পানিশমেন্টেরও দরকার আছে বুঝলেন মিস্টার উজান শাহহহহরিয়ার,,
উজানঃ তাই না খুব পানিশমেন্ট দেওয়া শিখে গেছো দেখছি,,তোমার একটা ব্যবস্থা করতে হবে,,
হিয়াঃ তাইইই না___ব্যালকুনিতে তোয়ালে নেড়ে দেওয়া আছে ওটা নিন আর গিয়ে চুপচাপ ফ্রেশ হয়ে আসুন__আপনি বের হলে আমি যাবো__এসব ভারি শাড়ি গহনা পড়ে একদমই আর থাকতে পারছি না,,কি রকম দম বন্ধ বন্ধ লাগছে,,
উজানঃ যাচ্ছি ম্যাডাম,,,,আমার জন্য একটা ট্রাওজার আর টি শার্ট বের করে দিন দয়া করে,,
হিয়াঃ যান আমি দিচ্ছি,,
উজান তোয়ালে নিয়ে ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে চলে গেলে,,হিয়া আলমারি থেকে উজানের জন্য একটা কালো ট্রাওজার আর লাল টি শার্ট বের করে উজানকে দিতে ওয়াশরুমের দরজা ধাক্কাবে ওমনি উজান দরজা খুলে হাত বাড়িয়ে হিয়ার হাত টা গপ করে ধরে নেয়,,
হিয়াঃ আরে দরজা খোলা,,কি করছেন আপনি,,মা আসবে উজান,ছাড়ুননন,
উজানঃ আসো না আজকে দু’জনে একসাথে ফ্রেশ হই,,
হিয়াঃ ছিঃ,,কত্তো খারাপ আপনি__সবসময় এ-সবই করতে মন চায় আপনার তাই না,,
উজানঃ এখনো তো কিছুই করলাম,,সারারাত তো এখনো বাকি আছে হিয়া মুনতাসীর,,(একটা ডেভিল হাসি দিয়ে)
হিয়া উজানের থেকে ওর হাত টা জোর করে ছাড়িয়ে নিয়ে দরজা টা ধাম করে লাগিয়ে দেয়,,
হিয়াঃ অন্য সবার সামনে একটা গম্ভীর আর রকবাজ টাইপ attitude নিয়ে থাকে আর আমার সামনে আসলেই শুরু হয় ওনার পৃথিবীর সব ফাতরামি,,মনে তো হয় মাথা টা ফাটিয়ে দেই,,অসভ্য একটা😏
হিয়া রাগে গটগট করতে করতে ওর গা থেকে সব গহনা খুলে নিয়ে একটা বক্সে ভরিয়ে নেয়,,মাথার ওরনা টা খুলতে যাবে ওমনি দেখে হাজারটা সেফটিপিন লাগিয়ে রাখা,,হিয়া একটা একটা করে সেফটিপিন খুলতে চেষ্টা করে কিন্তু খুব ঝামেলায় পড়ে যায়,,
বাসবিঃ হিয়া মা ডাকছিলে,,,কি ওড়না টা খুলছে না,
হিয়াঃ হ্যা মা আসুন না ভেতরে,,মা দেখুন না ওড়না টা কি রকম কতো গুলো সেফটিপিন দিয়ে আঁটকে রাখা😥
বাসবিঃ দাঁড়াও দাঁড়াও ওতো অস্থির হবার কিছু নেই আমি খুলে দিচ্ছি,,দেখি
বাসবি এসে হিয়াকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে হিয়ার মাথার ওড়না টা থেকে এক এক করে লাগানো প্রায় পাঁচ টা সেফটিপিন খুলে দেয়,,
হিয়াঃ মা শাড়ির পিন গুলোও খুলে দিন নাআআ,,
বাসবিঃ দিচ্ছি মা,তুমি বসো
হিয়াঃ আর মা এই মাথার চুল গুলো থেকে সব কাটা গুলো খুলে দিন,,কি জট পাকিয়ে রাখছে,,এগুলো খুলতে তো আমার সব চুল ছিঁড়ে যাবে,,
বাসবিঃ আচ্ছা আমি সব করে দিচ্ছি,,দেখি,,
বাসবি হিয়ার শাড়ির সব সেফটিপিন খুলে দিয়ে হিয়ার মাথার জট থেকে এক এক করে আস্তেধীরে সব কাটা গুলো খুলতে শুরু করে,,সত্যি পার্লারে সাজার এই এক ঝামেলা,,চুলে জট লাগিয়ে এ-তো এ-তো কাটা লাগিয়ে দেয় যে ওগুলো দেখে শুনে না খুললে চুলের একদম বারো তেরো অবস্থা হয়ে যাবে এরকম একটা ব্যাপার,,
বাসবিঃ আমি সারাজীবন চেয়ে এসেছিলাম আমার উজানের যেনো এরকমই একটা সোনার টুকরো বউ হয়,,যে আমার ছেলের মুখে সবসময় হাসি ফুটিয়ে রাখবে,,ছেলে টা তো আমার ঔ ঢাকা যাবার পর আমাদের সাথে এমনি এক দূরত্ব তৈরি করলো যে এখানে যে ওর একটা পরিবার আছে সেটা যেনো ওর মনেই হতো না,,
হিয়াঃ আচ্ছা মা,,শুধু কি বাবা-র উপর উনি রাগ করে এভাবে নিজেকে আলাদা করে আপনাদের থেকে,,
বাসবিঃ আসলে ওনার দ্বিতীয় বিয়ে টা রাজা কখনোই মেনে নিতে পারেনি,, একটা সুখী পরিবার নিজের বাবার জন্য তছনছ হয়ে যাচ্ছিলো এটা ঠিক ওর হজম হয়ে উঠছিলো না সেসময়,,
হিয়াঃ কিন্তু মা,,বাবাকে দেখলে কিন্তু মনে হয় না ওনার আলাদা আরেকটা সংসার আছে,,আমি এ-ই দুদিনে ওনাকে যেটুকু দেখেছি বা চিনেছি ওনাকে দেখলে কিন্তু কেউ বলবে না যে উনি,,
বাসবিঃ হুম উজানের বাবা এ বাড়িতে আসলে একদম আমাদের সাথে মিশে যায়,,আমাকে কখনো মনেই আসতে দেয় না আমার একটা সতীন নামক সংসার আছে(তাচ্ছিল্যের সুরে)
হিয়াঃ মা আপনার কষ্ট হয় না,,আপনি কি করে এ-তো সহজে ওনাকে ক্ষমা করে দিলেন,,
বাসবিঃ ভালোবাসা মা,,ভালোবাসার কাছে আমরা সবসময় হারতে বাধ্য,,তখন অনেক কিছু আমাদের মন মতো না চাইলেও আমাদের মেনে নিতে হয়,যে না হোক মানুষটা তো আমার সাথে আছে,,ছেড়ে তো আর যায়নি____তবে সব কিছুর পেছনে একটা কারণ থাকে,,তাই হয়তো আমিও এটাকে নিজের ভাগ্য হিসাবে মেনে নিয়েছি মা,
হিয়াঃ কি কারণ মা,,আমাকে বলা যাবে?
বাসবিঃ কারণ টার সাথে তো তুমি নিজেই তোমার অজান্তে জড়িয়ে আছো হিয়া মা,,কিন্তু কারণ টা যতোটা টা গোপনে থাকবে ততোই তোমাদের সবার জন্য ভালো হবে(নিজ মনে)
হিয়াঃ মা চুপ হয়ে গেলেন যে,,আমাকে বলুন না কিসের জন্য আপনি এ-তো বড় কষ্ট বুকে চাপা ধরে এ-তো দিন ধরে এই সংসার টাকে আগলে ধরে আছেন,,বলুন না মা,,
বাসবি হিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে কিছু বলতে যাবে ওমনি উজান তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে বের হয়ে এসে হিয়ার পাশে ধাম করে শুইয়ে পড়ে,,
উজানঃ কি ব্যাপার হ্যা,,কি এমন কথা হচ্ছিলো শুনি,যে আমাকে দেখে দু’জনে চুপ হয়ে গেলে তোমরা?
হিয়াঃ সব কথা সবার শুনতে নেই,,এটা আমাদের মা মেয়ের পার্সোনাল কথা বুঝতে পেরেছেন,,হু
উজানঃ ওওওও ওমনি পার্সোনাল হ’য়ে গেলো তাই না,,ভালো তো কে আমি,,এখন তো মা’র শুধু একজন কে-ই চোখে পড়ে,,আমি তো যেনো অদৃশ্য হ’য়ে আছি,,,
হিয়াঃ দেখছো মা,,তোমার ছেলে একদিনেই আমাদের দেখে হিংসে করছে কেমন,,
উজানঃ হিংসে করবো আমি,,হু___মা মাথা টা একটু টিপে দেও না খুব ধরছে,,
বাসবিঃ বালাইষাট,,তোকে বিয়ে দিছি কি এমনি এমনি,,নিজের বউকে হুকুম কর,,এখন থেকে তোকে দেখে রাখার দায়িত্ব যে আমার না সোনা,,
উজানঃ শুনেছি বিয়ের পর না-কি মেয়েরা পর হ’য়ে যায় এখন তো দেখছি তুমি আমায় পর করে দিচ্ছো,,ভালো ভালো খুব ভালো,,
বাসবিঃ এখন এসব ঢং বাদ দিয়ে ঘুমিয়ে পড়,,অনেক রাত হচ্ছে,,
হিয়াঃ মা দাঁড়াও,,মা এই গহনা গুলো তুমি তোমার কাছে রাখো,,দেখো এগুলো পড়ার অভ্যাস আমার নেই,,এতো ভারী সব জিনিস,,আমি জানি তুমি এখন বলবে অভ্যাস করে নিতে কিন্তু আমার তো সময় লাগবে বলো,,আর আমি তো এখন কোথাও বেরো হচ্ছি না যে এগুলো পড়বো,,কোথায় রাখবো না রাখবো একটা বোঝা হ’য়ে থাকবে মাথায়,,তুমি প্লিজ,,
বাসবিঃ ঠিক আছে বিয়ে বাড়ির ব্যাপার আমি তোমায় জোর করবো না,,তবে আমি এগুলো আজ নিচ্ছি ঠিকই কিন্তু যখন তুমি আর রাজা ঢাকা ফিরবে ওগুলো তখন তোমার কাছেই থাকবে মনে থাকে যেনো,,সামান্য যদি গহনা না সামলে রাখতে পারো তাহলে এই গোটা শাহরিয়ার পরিবার টাকে কি করে দেখে রাখবা শুনি,,আমার পর যে বড় ছেলের বউ হিসাবে দায়িত্ব টা তোমার কাঁধেই এসে চাপবে মা,,
হিয়াঃ তখন কার টা তখন দেখা যাবা,,আপাতত এগুলো তুমি তোমার কাছে তোমার লকারে রাখো,,ওনার আলমারি তো যেকোনো কেউ ডাকাতি করে নিতে পারবে সবসময় খোলা থাকে,,তারচেয়ে এগুলো বরং তোমার কাছেই যত্নে থাকুক,,
বাসবিঃ ঠিক আছে,,কিন্তু তোমাকে রাফ ইউস করার জন্য আরো যেগুলো বানিয়ে দিলাম ওসব কিন্তু কাল পড়ো,,খালি গায়ে আবার বের হইও না,,এখনো বাড়িতে তোমার ফুফুরা আছে,,
হিয়াঃ জ্বী,
বাসবি বক্স টা নিয়ে হিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে নিজের ঘরে চলে যায়,,হিয়া রুমের দরজা লাগিয়ে পেছন ঘুরতেই উজান এসে গপ করে হিয়াকে ধরে নিয়ে দরজার ঠেসে ধরে,,
হিয়াঃ কি করছেন আপনি,,ছাড়ুন
উজানঃ গহনা গুলো এখনি খুলে মা’কে দিতে হলো,,কাল সকালে খুলে দিলে কি এমন ক্ষতি হতো শুনি,
হিয়াঃ দেওয়া নিয়ে তো কথা,এখন দেওয়া যা কাল সকালে দেওয়াও তো একই কথা তাই না,,
উজানঃ না এক না,,কোথায় ভাবলাম সিনেমার হিরোদের মতো নিজের বউয়ের গা থেকে এক এক করে সব গহনা খুলে তাকে আদর করবো,,আর তুমি কি করলে আমার সব ইচ্ছেই পানি ঢেলে দিলে,,
হিয়াঃ ইসস খুব শখ তাই না,,শুনুন,না আপনি কোনো হিরো না এটা কোনো সিনেমা,,বাস্তবে ফিরে আসুন শাহরিয়ার সাহেব,,
হিয়া উজানকে একটা ধাক্কা দিয়ে বিছানা থেকে তোয়ালেটা নিয়ে ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে যায়,,
উজানঃ ওনলি টেন মিনিটস,,বেশি দেড়ি করলে কিন্তু দরজা ভেঙে ঢুকে যাবো আমি,,
হিয়াঃ যান তো গিয়ে ঘুমান,,সবসময় বাজে কথা,,
!
!
!
হিয়া ফ্রেশ হ’য়ে নিয়ে ভেতর থেকে উজানকে বলে ওর একটা কামিজ আর চুড়িদার,লাগেজ থেকে বের করে দিতে,,কিন্তু উজানটা যে এতোটাই অসভ্য সে কি আর হিয়া জানতো,,
হিয়াঃ দিন না প্লিজ,,এরকম করছেন কেনো?
উজানঃ গহনা খুলছো একা একা মানলাম,,আমাকে না বলে একা একা শাড়ি কেনো খুলতে গেলে?তুমি জানো না বাসরে বউয়ের শাড়ি খুলে দেওয়া বরের ফরজ কাজ,,
হিয়াঃ এ-তো দেখছি মহা জ্বালা,,আপনি এসব ইললজিক্যাল কথা বাদ দিয়ে আমাকে দেবেন কি জামা বের করে,,😡
উজানঃ কখনোই না,,এ জীবন থাকতে তো নয়ই,,যাও গিয়ে ওরকমি জামা কাপড় ছাড়া বের হ’য়ে আসো,,হু
হিয়াঃ আপনি আমার সাথে সবসময় এরকম বাচ্চা দের মতো জেদ কেনো করেন বলুন তো,,শ্রাবণো বাচ্চা হয়ে আমার সাথে এতো জেদ করে না,আমি কি এখন এই সারারাত ওয়াশরুমে বসে থাকবো না-কি,,,ও উজান দিন নাআআ,,,আমি আমি কথা দিচ্ছি কাল যখন আমি শাড়ি পড়বো তখন আপনি এসে আমার শাড়ি টা খুলে দিয়েন ঠিক আছে,,,এখন তো আমাকে আমার একটা জামা দিনননন,,
উজানঃ বাসর তো আজকে,,কালকে শাড়ি খুলে আমি কি করবো,,তুমি এক কাজ করো তুমি শাড়িটা তো আর ভেজাও নি না,,ওটা আবার পড়ে আসো কুইক,,
হিয়াঃ পাগল আপনি,,আমি এখন ফ্রেশ হয়ে আবার ঔ ঘামে ভেজা শাড়ি টা পড়বো___কেনো এরকম ছেলেমানুষি করেছেন বলুন তো,,দিয়ে দিন না একটা জামা বের করে,,
উজানঃ নেভার,,
হিয়াঃ প্লিজজজজ,,(আদুরে কন্ঠে)
উজানঃ আদুরে স্বরে ডেকে কোনো লাভ নেই হিয়া পিচ্চি,,ইচ্ছে হলে জামাকাপড় ছাড়া বের হ’য়ে আসো না হলে শাড়ি টা আবার পড়ে নিয়ে আসো আর নয়তো সারারাত ওয়াশরুমে থাকো,,আমার কি
হিয়াঃ আপনি আসলেই খুব খারাপ,,আমি আর কখনো আপনার সাথে কথা বলবো না,,(রাগে)
ব’লেই হিয়া ধাম করে ওয়াশরুমের দরজা টা লাগিয়ে দিলো,,রাগে তো হিয়ার গা গটগট করছে,,মনে হচ্ছে উজানের মাথায় যদি এখন সে একটা এটম বোম ফাটিয়ে দিয়ে আসতে পারতো,,একটা মানুষ কি করে এ-তো জ্বালাইতে পারে,,অসহ্য একবারে,,হিয়া দাঁত মুখ খিঁচে আবার ঔ ঘামে ভেজা পেটিকোট আর ব্লাউজ টা পড়ে নেয়,,ওয়াশরুমে তো শাড়ি পড়া অসম্ভব তাই সে তোয়ালে টা সামনে মেলে নিয়ে শাড়ি টা হাতে গোটা করে নিয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসে,,ভাগ্যিস উজান ওসময় ব্যালকুনিতে ছিলো,,হিয়া শাড়ি টা বিছানার কানিতে রেখে লাগেজ থেকে ওর একটা জামা বের করে যেই পেছনে ঘুরতে যাবে ওমনি উজান এসে হিয়াকে জড়িয়ে ধরে বিছানায় নিয়ে গিয়ে ফেলে,,
উজানঃ সরিইইই,,
হিয়াঃ আপনি কোনো কথাই বলবেন না আমার সাথে,,আপনার সাথে আরি আমার,,
উজানঃ কোথায় আমার রাগ করে মুখ ফুলিয়ে রাখার কথা আর ম্যাডামকে দেখো উল্টো আমাকে রাগ দেখাচ্ছে,,
হিয়াঃ দেখালে দেখাচ্ছি,,ছাড়ুন আমি ঘুমোবো এখন,,
উজানঃ ঘুমোতে দিলে তো আপনাকে,,
হিয়াঃ তাই,,তা না ঘুমিয়ে এ-ই রাতে কি করবেন শুনি,,চড়ুইভাতি খেলবেন,,
উজানঃ তা কেনো খেলতে যাবো,,ওসব খেলতে গেলে আদর টা কে করবে শুনি,,
হিয়াঃ আপনি কি ভার্সিটিতেও আপনার স্টুডেন্ট দের সাথেও এরকম ফ্লাট করেন নাকি শুনি,,সবসময় এ-তো সাবলীল ভাবে এতো এতো এসব কথা বলেন,,অভ্যাস না থাকলে তো এ-তো টা ইয়েএএএ হবার কথা না,,
উজানঃ আমাকে সন্দেহ করা হচ্ছে বুঝি,,
হিয়াঃ ঔ একটু একটু,,
উজানঃ এ-ক-টু এ-ক-টু
হিয়াঃ কি করছেন,,দেখুন ওসব করবেন না,,আমি ঘুমোবো এখন,,আরে আমার সুরসুরি আছে কিন্তু
উজানঃ এ-তো দিন নিজেকে সংযত রেখেছি বলে আজকেও যে রাখবো এটা ভাবলেন কি করে আপনি,,
হিয়াঃ তাই___তাহলে আগে বলুন আর ঝগড়াঝাটি রাগারাগি করবেন আপনি আমার সাথে,,
উজানঃ দেখুন মিসেস হিয়া শাহরিয়ার আমি আপনার মতো কথায় কথায় এ-তো প্রমিস করতে পারবো না,,
হিয়াঃ তারমানে আপনি আমার সাথে ঝগড়া করবেন তাই তো,,
উজানঃ এসব রাগারাগি ঝগড়াঝাটি তো ভালোবাসায় একটু আধটু হয়,,তাতে কি,,পড়ে তো সব ঠিকও হ’য়ে যায়,,
হিয়াঃ সবসময় না আমি ঠিক করি হ্যা,,
উজানঃ কি বলতে চাইছেন কি আপনি আমি বেকার,কিচ্ছু পারি না,
উজানের এই প্রশ্নে হিয়া কোনো উওর না দিয়ে উজানকে এক ফালি লজ্জারাঙা হাসি উপহার দেয়,,উজান হিয়ার গা থেকে তোয়ালে টা সরাতে যাবে ওমনি হিয়া থামিয়ে দিয়ে,,
হিয়াঃ বলছি কি লাইট টা যদি ওফ করে দিয়ে আসতেন,,প্লিজজজ
ব’লেই হিয়া লজ্জায় চোখ বন্ধ করে ফেলে,,উজান একটা অমায়িক হাসি দিয়ে লাইট ওফ করতে করতে,,
উজানঃ আজ লাইট ওফ করছি শুধু তোমার লজ্জা রাঙা মুখ টা সহ্য করতে পারবো না বলে,,কাল কিন্তুউউ
হিয়াঃ ধ্যাত,অসভ্য একটা,
!
!
!
পরের দিন ঘুম থেকে উঠে হিয়া প্রথমে উঠে ফ্রেশ নিয়ে রুমে আসে,,উজান এখনো ঘুমোচ্ছে দেখে হিয়া শাড়ি টা নিয়ে রুমে এসে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পড়তে থাকে,,একটা হলুদ শাড়ি হাতে নিয়ে সেটায় কুঁচি করতে ব্যস্ত হিয়া,,
হিয়াঃ যাগ ঘুমে আছে এ-র মধ্যে টপাটপ শাড়ি টা পড়ে নেই নাহলে আবার ওনার শুরু হ’য়ে যাবে,,ইসস ঘুমে থাকলে কি মিষ্টি লাগে,,একদম শ্রাবণের মতো যেনো কিচ্ছু বুঝে না,আর জেগে থাকলেই শুরু হ’য়ে যায় ওনার যতো সব কাহিনি,,
হিয়া উজানকে দেখে নিয়ে আবার শাড়ি পড়াতে মন দিয়ে সুন্দর মতো শাড়ি টা পড়ে নিয়ে যেই ভেজা চুল গুলো চিরুনি দিয়ে আছড়াতে যাবে ওমনি উজান এসে হিয়ার শাড়ির ফাঁকে হাত ঢুকিয়ে হিয়াকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে,,
হিয়াঃ আপনি জেগে ছিলেন!!
উজানঃ না ঘুমিয়ে ছিলাম,,কিন্তু তোমার এই চুলের পানি গুলো ঘুমোতে দিলো কোথায় আমায়,,
হিয়াঃ মানে!
উজানঃ শাড়ি পড়ছিলে ঠিক ছিলো,,কিন্তু আমাকে সেটা দেখানোর জন্য কৌশলে আমার মুখে এভাবে পানি ছেটানোর দরকার ছিলো কি খুব,,
হিয়াঃ আমি কোনো কৌশলে কিছু করি নি হ্যা,,উঠছেন না,,যান এখন গিয়ে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিন,,আটটা পার হচ্ছে সে খেয়াল আছে,,
উজান হিয়াকে সামনে ঘুড়িয়ে হিয়ার ভেজা চুল গুলো কানের পাশে গুঁজে দিয়ে,,
হিয়াঃ আবার কি!!
উজানঃ ইসস কতো দিনের স্বপ্ন আমার ঘুম থেকে উঠে এই মিষ্টি বউটার মুখ দেখবো,,স্বপ্ন টা যে আজ সত্যি হয়েছে ভাবতেই পারছি না আমি,,
হিয়াঃ পারতেও হবে না আর,,,ছাড়ুন না আমি যা-ই এবার,,প্লিজ
উজানঃ আট একটু থাকি না এভাবে,,
হিয়াঃ নাআআআআ,,
উজান হিয়ার মাথার সাথে মাথা ঠুকে দিয়ে বলে ঠিক আছে যাও,,হিয়া হেঁসে দিয়ে দরজার সামনে এসে দরজা খুলে এক পা বাড়াতে যাবে ওমনি এক ভয়াবহ ঝড়ের আভাস দেখে এক সেকেন্ডে ধাম করে দরজা লাগিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিতে শুরু করে,,
উজানঃ হোয়াট!!
হিয়াঃ বা বা বাহিরে,,,,,,,,!!
______________________🖤😏❤️______________________
কার কার জানি শখ ছিলো উজান হিয়ার বাসরে তারা খাটের তলায় লুকিয়ে থাকবে,,তোমরা লাইক দিতে এতো কিপ্টামি করো তাই জন্য আমিও বাসরে লাইট ওফ করে দিছি হু,,🥱🤗