#প্রিয়তমা ❤️
#সিজন_২
#writer- সালসাবিল সারা
পর্ব-১৮
*
*
কেবিনে জুমু আসতেই আমি সাদিফ ভাইয়া থেকে দুই হাত দূরে সরে দাঁড়ালাম।দরজার দিকে তাকিয়ে দেখলাম জুমু এখনো পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মুখে হাত দিয়ে।
“কি ব্যাপার?ঐভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো?ভিতরে আয়”।
সাদিফ ভাইয়ার কথায় মনে হচ্ছে উনি কিছুই করেননি, একেবারে ভালো মানুষ।উনার কথায় জুমু কিছু না বলে চুপচাপ কেবিনে চলে এলো।বেচারীর মুখ এখনো হা হয়ে আছে।
আমি বাবুকে কোলে নিয়ে বসে আছি।আর আরেক সাইডে বসে আছে জুমু। সাদিফ ভাইয়া সোফায় বসে মোবাইল চালাচ্ছেন।আমি শিউর জুমু আমাকে একা পেলে এই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করবেই করবে।
কি এক জ্বালা আমার।ভাই উল্টা পাল্টা কাজ করবে,আর আমাকে তার বোনকে এসবের কৈফিয়ত দিতে হবে।আল্লাহ্!
কিছুক্ষণ পরেই দরজায় নক করে একজন নার্স প্রবেশ করলেন।
“ম্যাম,বাবুকে দিন।ওকে ব্রেস্ট ফিডিং করাতে হবে”।(নার্স)
“কেনো?বাবু হওয়ার পরে ওকে তখন খাওয়াননি”?(আমি)
“হ্যাঁ।তখন তো বাবুকে খাইয়েছি।জন্মের পর বাবুর ব্রেস্ট ফিডিং করানোটা অত্যন্ত জরুরি।এখন আবার বাবুর খাওয়ার টাইম হয়ে গিয়েছে।ওর মাও এখন সুস্থ মোটামুটি।আমাকে দিন।বাবু এখন তার মায়ের কাছে যাবে”।(নার্স)
“আচ্ছা নিন”।(আমি)
মুচকি হেসেই আমি বাবুকে নার্সের কোলে দিয়ে দিলাম।
বাবুকে নিয়ে যেতেই আবারো আমি আগের জায়গায় বসে পড়লাম।
সাদিফ ভাইয়ার কল আসার কারণে উনি কথা বলতে বলতে বের হয়ে গেলেন কেবিন থেকে।
আর সাথে সাথে জুমু একলাফে আমার কাছে চলে এলো।কিছু বলতে যাবে ও এমন টাইমে আমি ওর মুখ চেপে ধরলাম।
“এই বজ্জাতের হাড্ডি।একদম চুপ।আমি জানি কি নিয়ে প্রশ্ন করবি তুই।তোর ভাই আমাকে কেনো কিস করেছে আমি তা জানিনা।এসব নিয়ে আমাকে প্রশ্ন করবি না”।
আমার হাত সরিয়ে জুমু বলে উঠলো..
“এহহ…জানেনা। ন্যাকা আসছে একটা।আমার ভাই এমনি এমনি যাকে তাকে কিস করবে নাকি?? মান অথবা না মান,তুই আমার ভাবী হবি…এটা আমি বুঝে গিয়েছিলাম অনেক আগেই।আজকে তো একদম পাক্কা বুঝে নিলাম”।
আমি হাঁ করে জুমুর বক বক শুনছি।
“এই বেআদব,চুপ একদম।আরেকটা কথাও বলবি না।কিসের ভাবী হু?তোর ভাই আমাকে কেমন করে জানিস না??একটা চুমু কি দিলো অমনি ভাবী হয়ে যাবো নাকি”?
জুমু আমার গাল টেনে বললো….
“ইয়েস, মাই লাভ।আমার ভাইয়া তোকে ভালোবাসে।বাট ভাইয়ার ভালোবাসার স্টাইল টা একটু ইউনিক আরকি”।
ভালোবাসা!!এই শব্দটা আমার কাছে একদম নতুন।কারণ ফ্যামিলি ছাড়া অন্য কোনো পার্সন কে আমি কখনোই ভালোবাসিনি। সাদিফ ভাইয়াকে আমি কখনো ফ্যামিলিতে রাখিনি। কারণ উনি আমার একমাত্র শত্রু ছিলেন, এখনো আছেন।কিন্তু উনি হচ্ছেন আমার একজন হ্যান্ডসাম ভালোলাগার শত্রু।
কিন্তু উনি আমাকে ভা..ভালোবাসবেন??
উফফ এসব প্যাঁচাল ভাবতে পারছিনা আর।
জুমুকে চুপ করতে বলে আমি বেডে শুয়ে গেলাম।হঠাৎ সাদিফ ভাইয়া কেবিনে এসে বললেন..
“কি ব্যাপার,বাসায় যাবি না?তোরা কি এখানে থাকার প্ল্যানিং করছিস?শেফা উঠে পড়।চল বাসায় যেতে হবে”।
আমি উনার কথায় উঠে বসলাম..
“ভাইয়া,তাহলে ভাবীর সাথে কে থাকবে?আন্টি তো দুইজনকে সামলাতে পারবে না”।
“চুপ থাক।এত বুঝতে হবে না তোকে। ইসলাল ভাইয়া আছে,ভাবীর যত্ন নেওয়ার।তোকে কারবারি করতে হবে না।তাছাড়া খালামণি আর রাফসান এসেছে।ওরা সেকেন্ড ফ্লোরে আছে।হারি আপ। লেটস গো”।
আমি আর জুমু উনার পিছে পিছে হাঁটতে লাগলাম।
দ্বিতীয় তলায় যেতেই মা, আন্টি,আর আমার দুইভাইকে দেখতে পেলাম।
“ফুল…তুই সাদিফের সাথে চলে যা।খালামনির বাসায় থাকবি আজকে।আমি এখানে থাকবো।আর রাফসান কিছুক্ষণ থেকে বাসায় চলে যাবে।তুই তো আমাকে ছাড়া একা ঘুমাতে পারিস না।তাই আপুদের সাথে থাকবি আজকে,কেমন সোনা”?
আমার মাথায় হাত বুলিয়ে মা বলে উঠলেন।
“হ্যাঁ,কোনো সমস্যা নেই মা।ভালো করেছো তুমি এসে”।
“আচ্ছা খালামণি।আমরা আসছি তাহলে। ইসলাল ভাইয়া, কোনো হেল্প লাগলে কল করবে অবশ্যই”।
“অবশ্যই ব্রো।তুই থাকায় অনেক হেল্প পেয়েছি আজ”।(ইসলাল ভাইয়া)
সাদিফ ভাইয়া হালকা হেসেই ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরলো।
“সাবধানে থাকিস তোরা”।(মা)
“আচ্ছা খালামণি”।(জুমু)
সবাই থেকে বিদায় নিয়ে আমরা রওনা দিলাম খালামনির বাসার উদ্দেশ্যে।
খালামনির বাসায় পৌঁছাতেই,লিভিংরুমে খালামণি আর ইতি আপুকে দেখতে পেলাম।আমাদের দেখা মাত্রই,খালামণি আর ইতি আপু দ্রুত হেঁটে আমাদের কাছে আসলো..
“ইরা কেমন আছে এখন?? মেয়েটা কি বেশি অসুস্থ্য”?(খালামণি)
“নাহ মা।ভাবী ভালই আছে এখন।পরশু ডিসচার্জ করে দিবে ভাবীকে।তুমি চাপ নিও না।কালকে হসপিটাল গিয়ে দেখে নিও”।(সাদিফ ভাইয়া)
“আচ্ছা বাবা।তোরা তিনজন গোসল করে নে।হাসপাতালে কতো জীবাণু থাকে।গোসল সেরে খেতে আয়,দশটা বাজতে চললো”।(খালামণি)
খালামনির কথায় আমরা তিনজন শাওয়ার নিতে চলে গেলাম।
অবশ্য আমি গরম পানি দিয়ে করেছি গোসল।নাহলে তো আমার নাক দিয়ে পানি পড়বে। হেহে।
খাবার টেবিলে বসতে বসতে প্রায় এগারোটা বাজলো।আমি, জুমু,খালামণি,খালু আর ইতি আপু ডাইনিং এ বসে পড়লাম খাবার খেতে।কিন্তু সাদিফ ভাইয়া কোথায় আল্লাহ্ জানে।উনি কি ডিনার করবেন না??
লজ্জার কারণে কারো থেকে কিছু জিজ্ঞেস করা যাবেনা।আর জুমু যদি টের পায় কিছু তাহলে তো আর কথা নেই।শুরু করে দিবে তার সেই ভাবী নামক অত্যাচার।
কিন্তু খাওয়ার মাঝে খালামণি বলে উঠলো..
“আমার ছেলেটাকে নিয়ে আমি আর পারলাম না। রাত দিন তার কাছে এক মনে হয়।এত রাতে কার না কার ফোন এলো,অমনিই “আসছি” বলে চলে গেলো।কই গেলো কিছুই বললো না”।
“তোমার ছেলের অনেক কাজ।আর গুরুত্বপূর্ণ কাজ না থাকলে সে কখনোই যেতো না”।(খালু)
“হ্যাঁ তাও ঠিক।তবে ওর এই রাজনীতি করা আমার একদম পছন্দ না”।(খালামণি)
“কি আর করবে বলো।তোমার ছেলে নিজের কথা ছাড়া অন্য কারো কথা শুনেছে কখনো”?(খালু)
“আমার একটা মাত্র কলিজার ছেলে।আল্লাহ্ ওকে যেনো সব সময় সুরক্ষিত রাখে।আমিন”।(খালামণি)
কথাগুলো বলেই খালামণি উনার আঁচল দিয়ে চোখ মুছে নিলেন।
“উফফ মা!কান্নার কি এখানে।ভাইয়া জানলে তোমাকে ঠিকই আবার বকবে।কান্না করো না তো।ভাইয়া অনেক স্ট্রং।আর তুমি তো জানোই আল্লাহ্ ভাইয়াকে রক্ষা করবে। সো খেয়ে নাও।কান্না করতে হবে না”।(ইতি আপু)
ইতি আপুর কথায় খালামণি একটা প্রশান্তির হাসি দিয়ে খাবার খেতে লাগলো।
আর আমি ভাবছি অন্য কথা। সাদিফ ভাইয়া এটা একদম ভালো করেনি।পলিটিক্স ছাড়া কি উনার চলে না নাকি??পলিটিক্স অনেক রিস্কি একটা জিনিস।কত শত্রু তৈরি হয় এটা কেউ বুঝেও উঠতে পারে না।তবে আল্লাহ্ যেনো উনাকে সকল খারাপ জিনিস থেকে রক্ষা করে আমিন।
খাবার শেষে আমি আর ইতি আপু মিলে খালামণিকে সবকিছু গোছাতে সাহায্য করলাম।সকালের দিকে সার্ভেন্ট থাকলেও,রাতের সব কাজ খালামনিরাই করে।কারণ সাদিফ ভাইয়া নাকি রাতের বেলা কোনো সার্ভেন্ট এলাও করেন না।আল্লাহ্ জানে কেনো!
*
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ব্যালকনিতে গেলাম। জুমু আর ইতি আপু এখনো ঘুম।বাগানে কিছু নতুন ফুলের গাছ দেখতে পারছি।প্রশান্তির নিঃশ্বাস নিলাম একটা।
আশে পাশের পরিবেশটা একদম ঠান্ডা।হঠাৎ বাগানের একপাশে আমার চোখ আটকে গেলো। সাদিফ ভাইয়া বাগানের গাছ গুলোয় পানি দিচ্ছে।আর উনার পাশে মালি দাঁড়িয়ে আছে।উনার পড়নে শর্ট প্যান্ট আর একটা হাতকাটা টি শার্ট।উনার মাসেল ওয়লা হাত গুলো দেখে আমার মনে উথাল পাথাল করা শুরু করলো।
উনি পানি দিচ্ছেন আর মালির সাথে হেসে হেসে কথা বলছেন। আমি অবাক চোখে উনার দিকে তাকিয়ে আছি।হঠাৎ আমার দিকে চোখ পড়ায় উনি পানির পাইপ মালিকে ধরিয়ে দিলেন।
আমার ব্যালকনি বরাবর এসে কোমরে হাত দিয়ে উপরে তাকালেন আমার দিকে।
আমি এখনো উনার দিকে তাকিয়ে আছি।
“গাছে পানি দিবি”?(সাদিফ ভাইয়া)
উনার কথায় আমি প্রচন্ড অবাক হলেও, মাথা নাড়িয়ে এক দৌড়ে নিচে উনার কাছে চলে গেলাম।
আমার দিকে উনি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললেন…
“বললাম আর দৌড় দিলি??এসেছিস ভালো কথা।কিন্তু এসব কি ড্রেস পড়েছিস?ছোট একটা টপস আর ঢোলা প্যান্ট!আর এটা কি ওরনা নাকি স্কার্ফ!!তোকে আমি মানা করিনি?এসব ড্রেস শুধু রুমের ভিতরে পড়বি।রুমের বাহিরে না। আশে পাশে তাকিয়ে দেখিস নি মানুষ আছে নাকি নেই?অসভ্য কোথাকার”।
সাদিফ ভাইয়ার কথায় মনটা একদম ভেঙে গেলো। উনি এত কথা শুনাবেন আমাকে আমি ভাবতেও পারিনি।
আশে পাশে তাকিয়ে দেখলাম..খানিকটা দূরে উনার গার্ডস,আর উনার থেকে বেশ একটু দুরত্ব রেখে একেবারে বাগানের কোণায় মালি দাঁড়িয়ে আছে।আর মেইন দরজাতে দাঁড়িয়ে আছে দাড়োয়ান।
আমি কিছু না বলে চলে যেতে নিলেই সাদিফ ভাইয়া আমার হাত ধরে ফেললেন।
আমি উনার দিকে না ফিরেই হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু উনি শক্ত করেই হাত ধরে রাখলেন।একে তো নিজেই আসতে বললেন আর এখন ড্রেস নিয়ে ইনসাল্ট করছেন!এদিকে আবার আমার হাত ছাড়ছেন না।
আমার হাত ধরে রাখা অবস্থায় উনি মালিকে বললেন..
“করিম ভাই,আপনি এইদিক থেকে যান।গার্ডদের বলেন অন্যদিকে গিয়ে দাঁড়াতে”।(হালকা চিল্লিয়ে)
“ঠিকাছে স্যার”।
মালি যেতেই সাদিফ ভাইয়া আমার হাতে এক টান দিতেই আমার পিঠ গিয়ে ঠেকলো উনার বুকের মাঝে।
আমি যতই ছাড়ানোর চেষ্টা করছি হাত উনি ততই আরো শক্ত করে ধরছেন আমাকে।
“উফফ আমার বাবুইয়ের এত রাগ!!রাগ করে না বেবি।আমি চায় না আমার বাবুকে কেউ এই অবস্থায় দেখুক।
তোমাকে সব অবস্থায় শুধু আমি দেখবো।আর কেউ না”।
সাদিফ ভাইয়া আমার ছাড়তেই আমি উনার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললাম…
“এই একদম বাবু ডাকবেন না আমাকে।আমি কেনো আপনার বাবু হতে যাবো??আমি আমার আব্বু আম্মুর বাবু।আর প্রথমে বাঁশ দিবেন পরে আবার মধুর কথা শুনাবেন..এসব চলবে না”।
সাদিফ ভাইয়া আমার কথায় হা হা করে হাসতে লাগলেন…
“আসলেই তুই একটা বাচ্চা।ধর আর এক বছর পরেই তোর বিয়ে হয়ে যাবে।এরপর আমাদের বেবি আসবে।কিন্তু তখন কাহিনী হবে বাচ্চা থেকে বাচ্চা হয়েছে”।
সাদিফ ভাইয়ার কথায় সম্পূর্ণ শরীর আমার কাঁটা দিয়ে উঠলো।কি বলে এই লোক।আমাদের বেবি মানে!!
“আমাদের বেবি মানে কি??আমার বাবু শুধু আমার বাবু।আপনার কেনো হবে।আমার আর আমার হাজবেন্ডের বাবু হবে সে”।
সাদিফ ভাইয়া হাসি থামিয়ে হঠাৎ গম্ভীর সাদিফ ভাইয়াতে পরিণত হলো।
আমার দুই বাহু ধরে বললো..
“জাস্ট শাট আপ!!আমি ছাড়া অন্য কোনো ছেলের নাম কি কথাও স্মরণে আনবি না।মেরে দিবো আমি তাকে।
উফফ…ফুল!আমি যা পরে করতে চাচ্ছিলাম আমাকে তা আগে করার জন্যে বাধ্য করবি না।আর যতটুক আসছে বিয়ের কথা,তোর বিয়ে শুধু অা”..
ব্যস আর কিছুই বললেন না উনি।আমার দুই বাহু ছেড়ে দিলেন।উনার সবুজ চোখগুলো লাল হয়ে গেল মুহুর্তেই।
“যা এখান থেকে।আমার সামনে থেকে যা”!!
সাদিফ ভাইয়ার চিল্লানো শুনে আমার রুহ কেঁপে উঠলো।আমি সামনের দিকে আগাতে গেলেই, সাদিফ ভাইয়া আমার হাত ধরে টান দিয়ে উনার বুকের উপর ফেলে দিলেন।আমি তাল সামলাতে না পেরে আঁকাবাঁকা ভাবেই উনার বুকের সাথে আটকে রইলাম।
“প্লিজ বেবি..আমি ছাড়া অন্য কোনো ছেলের দিকে তাকাবে না তুমি।আমি মেরে দিবো তাকে।সত্যি মেরে দিবো। অন্যজনকে বিয়ের স্বপ্ন দেখাও তোমার জন্যে মানা।আমাকে নিয়ে ভাববে তুমি বেশি বেশি”।
সাদিফ ভাইয়ার এমন নরম কথার সাথে সাথে আমি উনার হার্টবিট অনেক ভালোভাবেই এঞ্জয় করছি।উনাকে আমার ইদানিং ভয়ের সাথে সাথে ভালোলাগে বেশি।কিন্তু এগুলো উনাকে জানতে দেওয়া যাবে না।
নাহলে নিশ্চিত আমাকে মেরে ফাটিয়ে দিবেন উনি।
“আচ্ছা ঠিকাছে।দেখবো না কোনো স্বপ্ন।কিন্তু একটা শর্ত আছে”।
উনি আমাকে ছাড়িয়ে ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করলেন…
“কি”?
“আমাকে আপনি বকা দিবেন না আর”।
“অসম্ভব।যা এখন।বাসায় যা।নাস্তা করতে হবে”।(ধমক দিয়ে)
উনার ধমকে আমাকে ঢং করা বের হয়ে গেলো।অসহ্য লোক একটা।আমার যদি ক্রাশ না হতো না উনি,আমি উনাকে আলুভর্তা বানাতাম।
আমাকে যেতে বলে নিজেই আমার হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে বাসার ভিতরে ।এই লোকটা যে কি পদার্থ দিয়ে তৈরি আল্লাহ্ জানে।
”
পরদিন ভাবীকে বাসায় নিয়ে এসেছিল।এর তিনদিন পরেই বাবুর নাম রাখার জন্যে ধার্য করা হলো।
ঘরোয়াভাবেই বাবুর নাম রাখলো, আরোয়া বিন আফ্রা।
এইদিকে এডমিশনের দিনও কাছে চলে আসছে।আমি আর জুমু মিলে ঠিক করলাম আমরা ইংলিশে অনার্স কমপ্লিট করবো।
নির্দিষ্ট দিনে আমি, জুমু রাফসান ভাইয়ার সাথে চলে গেলাম এডমিট হতে।শহরের বেসরকারি ভার্সিটির মধ্যে সবচেয়ে ভালো এই ভার্সিটি।চারপাশে অনেক স্টুডেন্ট।
অনেক্ষণ পরে এই এডমিশনের যুদ্ধ শেষ হলো।ক্লাস শুরু হবে আরো একসপ্তাহ পরে।
বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম।অনেক খুশি আমি শেষ পর্যন্ত ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম।খাবার খেয়ে রুমে শুয়ে রইলাম মায়ের পাশে।ফেসবুকিং করতে লাগলাম।প্রোফাইলে ভার্সিটির নাম অ্যাড করে দিলাম। সাদিফ ভাইয়ার প্রোফাইল চেক করা আমার নিত্যদিনের কাজ।আজও উনার প্রোফাইল চেক করে এমনি নিউজফিড দেখছিলাম।অমনিই দেখলাম নিউ রিকুয়েস্ট আসলো।
আমাদেরই ভার্সিটির ছেলে।দেখতে সুন্দর স্মার্ট।কিন্তু এসব ছেলে একদিকে আর আমার সাদিফ ভাইয়া একদিকে।উনার জন্যেই অন্য কোনো ছেলের দিকে আমার দেখতেই মন চায় না।কেনো জানি আমিও বুঝি সাদিফ ভাইয়া আমাকে খুব করে চায়।
এসব কথা ভাবতেই জুমুর কল আসলো।
“হুঁ বলেন আপা”।(আমি)
“রাখ তোর আপা।পরশু নবীন বরণ অনুষ্ঠান।ড্রেস কোড হলো ব্ল্যাক শাড়ি।এই ভার্সিটিতে ড্রেস কোড মেনে চলা ফরজ”।
“আমি নাই এসব শাড়িতে। ডিসগাস্টিং শাড়ি পরতে পারবো না আমি। যাবই না অনুষ্ঠানে”।
“নো বেবি।যেতে হবে মাস্ট।কোনো না যাওয়া চলবে না”।
“কেনো? না গেলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে নাকি”??
জানিনা।বাট না গেলে তুই মিস করবি আমাদের ভার্সিটির অনুষ্ঠানের মজা।তাছাড়া,আমরা নিউ স্টুডেন্ট এভাবে ভার্সিটির কথা অমান্য করা ঠিক হবে না”।
“আচ্ছা দেখা যাবে।বাট শাড়ি কেনো ইয়ার?শাড়ি ছাড়া চলবে না”??
“নো ব্ল্যাক শাড়ি পড়তেই হবে।আর কথা না ফুল।আমি আসছি বিকালে”।
“আচ্ছা আল্লাহ্ হাফেজ”।
ফোন কেটে মোবাইলটা বুকের উপরে রাখলাম।আর আমার চোখে ভেসে আসছে কিছু স্মৃতি।এই শাড়ি নিয়েই কতো কাহিনী।এই কাহিনীর জন্যেই সাদিফ ভাইয়াকে আমি এতটা ভয় করি।উনি যেমন ভালো তেমনি হিংস্র।অনেক অনেক হিংস্র।
চলবে…
ভাইরে ভাই।কি এক গল্প লিখি। লেট কেনো হয় গল্প দিতে সবাই জানেন।তাও কেন আমাকে এভাবে হার্ট করে কথা বলেন আপনারা??এটাই আমার লিখা লাস্ট গল্প হবে।আর কখনোই গল্পতে পা দিবো না।শিক্ষা পাচ্ছি আমি অনেক।ভেবেছিলাম অনেক গল্প লিখবো।বাট এখন তা মন থেকে বের করে দিয়েছি। শুভাকাঙ্ক্ষী ছাড়াও অনেক মানুষ আছে যারা আমার সামান্য লেট করে দেওয়াটা মেনে নিতে পারছে না।অনেকে তো বলছেন আমার ব্যস্ততা তাদের ধার দিয়ে দেওয়ার জন্যে।যদি পারতাম সত্যি ধার দিতাম।তখন বুঝতেন মজা।আর ২০২০সালটা আমার জন্যে অনেক খারাপ যাচ্ছে।অনেক আপনজন হারিয়েছি আমি।গত পরশু আমার আঙ্কেল মারা গিয়েছিলেন। সো,আমার ব্যস্ততা নিয়ে কেউ উপহাস করবেন না।
আপনজন হারানো অনেক কষ্টদায়ক।যে হারায় সে বুঝে।😊