সীমাহিন_ভালোবাসার_নীড় #লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা #পার্টঃ২_৩

0
815

#সীমাহিন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ২_৩

আদ্রি ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে দেখে মিথিলা সোফায় বসে কান্না করছে। স্ট্রেট করা চুল গুলো পাখির বাসার মতো হয়ে আছে কান্না করার কারনে কাজল লেপ্টে আছে কিন্তু এই অবস্থাতেও যেনো সৌন্দর্য তার দ্বিগুন হয়ে গেছে। মিথিলা কে জরায় ধরে বসে আছে আদ্রিয়ান। পাশের সোফাতেই নাহিদ খান গম্ভির মুখে চেয়ে আছেন আর নওরিন খান নাহিদ খান কে উদ্দেশ্য করে হাজারো বিলাপ করে যাচ্ছেন
আদ্রি আর সেদিকে খেয়াল না দিয়ে বাড়ির বাহিরের দিকে হাটা ধরলো কিন্তু বাধ সাজলো আদ্রিয়ান

আদ্রিয়ানঃনা খেয়ে কই যাচ্ছিস। (গম্ভির গলায়)
আদ্রিঃক্ষুদা নাই এমনিতেও এই বাসায় আমার জন্য কোন খাবার থাকেনা ব্যাপারটা হয়তো আপনি ভুলে গেছেন মিস্টার খান
আদ্রিয়ানঃবস আমি স্টাফ কে বলচ্ছি কিছু তৈরি করে দিতে
আদ্রিঃকোন দরকার নাই আপনার এতো উদারতার আপনি আপনার বোন কে সামলান আমাকে দেখার প্রয়োজন নাই কারো

নওরিনঃএই মেয়ে তোর সা্হস হয় কি করে আমার ছেলেকে এই ভাবে বলার তোর মতো ছোট লোক মেয়ের পেটে আদৌও এই সব বড়লোক এর খাওয়ার পচবে নাকি মা তো ছিলো নর্দমার কিট মেয়েও ওই নর্দমার ই চিহ্ন
(তেজী গলায়)

আদ্রির রাগে সারা শরীর রি রি করচ্ছে সে চাইলেও দিতে পারে এর উত্তর কিন্তু কেন দিবে যেখানে তার আম্মুর স্বামি মুখ বুজে আছে।

আদ্রিঃএই জন্য বিয়ে করে আনেছিলেন আমার আম্মু কে তাই না সিনিয়ার খান যাতে প্রতিনিয়ত আমার মৃত আম্মুকে নিয়ে গালিগালাজ করা হয় প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন আপনারা তাই না কই গেছে এখন সে ভালোবাসা নাকি মানুষ মরলে ভালোবাসাও মরে যায়

নাহিদ খান মাথা নিচু করে ফেলেন কি বা উত্তর দিবেন তিনি তার মেয়ের কথায় ৯ টা বছর হয়ে গেলো মেয়ের মুখে আর বাবা ডাকটা শুনে না আসলেই তো সে দোষী সে জানে সে তার বউকে কতোটা ভালোবাসতো কিন্তু তার বউ যাওয়ার পর থেকে নওরিন বেগম ই যে তার সব তিনি চান না আদ্রির আম্মুর মতো নওরিন ও উনাকে ছেড়ে যাক তাই তো নওরিন এর কোন কথার প্রতিউওর তিনি করেন না

আদ্রিঃএন্ড ইউ মিসেস খান আমার আম্মু যদি নর্দমার কিট হয় না তাহলে আপনি কি আমাকে একটু বলবেন ছোট বোনের ভালোবাসার মানুষের সাথে রাত কাটানোকে কি বলে আই থিংক আপনাকে বলে দিতে হবেনা রাই,,,,,,

আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই আদ্রিয়ান ঠাস করে একটা চড় মেরে দেয় আদ্রিকে। চড় এর প্রোক্ষরতা এতোটাই ছিলো যে আদ্রির মাথা টা বাম দিকে হেলে যায় নাহিদ খান এর বুকটা ধোক করে উঠে নওরিন বেগম ও চমকে যান।সবাই মুখে আদ্রিকে যা তা বললেও আদ্রিকে আজ পর্যন্ত ফুলের টোকাও কেউ দেয়নি আর সে মানুষ টা যদি আদ্রিয়ান হয় তাহলে তো কথায় নাই

আদ্রি তাচ্ছিল্যে একটা হাসি দেয় চোখে তার পানি টলমল করচ্ছে
আদ্রিঃকি মিস্টার খান সহ্য হয়নি তো নিজের মায়ের বিরুদ্ধে কোন কথা তাহলে ভাবেন যখন এই মহিলা দিনের পর দিন রাতের পরে রাত আমার মায়ের চরিত্র নিয়ে কথা বলে তখন আমার কেমন লাগে হা আপনাদের কিছু বলার রুচি আমি ৯ বছর আগেই হারায় ফেলেছি

আদ্রিয়ানঃব,,(কিছু বলতে পারেনা আদ্রিয়ান তার হাত কাপচ্ছে সে নিজেও জানেনা আজকে কতোটা আঘাত সে তার বোন কে দিয়েছে। কিন্তু কি করবে যতই মায়ের বিরুদ্ধে কথা বলুক সে তো ওর মা কি করে শুনবে ওর মায়ের বিরুদ্ধে অপবাদ)

আদ্রিয়ান এর ধ্যান ভাংগে নওরিন বেগমের চিৎকারে আদ্রিয়ান পিছনে ঘুড়ে দেখে মিথিলা অজ্ঞান হয়ে সোফায় পরে আছে। আদ্রিয়ান দৌড়ে যায় বোনের কাছে বোনকে পাজা কোলে তুলে নেয় নাহিদ খান ও ডক্টর কে ফোন করেন।।।।।।।

_________

মিটিং রুমে বসে আছে নির চোখ মুখে ক্রোধ স্পষ্ট ফুটে আছে রুমের বাহিরে সব স্টাফ ভয়ে তটস্থ হয়ে দাঁড়ায় আছে আর নির এর ঠিক সামনেই মাথা নিচু করে দাঁড়ায় আছে
আহাদ নির এর পার্সোনাল এসিস্ট্যান্ট।

নিরঃতো আহাদ শেখ তুমি আমার জন্য কাজ করচ্ছো কই বছর হলো
আহাদঃস্যার আই এম সরি আমার ভুল হয়ে গেছে আর এমন হবে না স্যার আমি ভয় পায়ে গেছিলাম
নিরঃজাস্ট এন্সার কাই কুয়েশ্চন ড্যাম এট(টেবিলে সোজড়ে একটা থাবা মারে। বেচারা আরেকটু হলে প্যান্ট নষ্ট করে বসে থাকতো
আহাদঃস্যার ৪ বছর
নিরঃক্যারেক্ট ৪ বছর সো এই ৪ বছরে এই টুকু তো তোমার জানা রাইট যে নির আর যাই করুক ধোকাবাজ দের সহ্য করতে পারেনা আমার ডিক্সেনারিতে সরি বলে কোন ওয়ার্ড নাই
আহাদঃস্যার প্লিজ মাফ করে দেন স্যার(নির এর পা জরায় ধরে)
নিরঃকেন এমন করলা তুমি জানতা না যে নির জানলে কি করতে পারে তোমার সাথে বলো ভয় লাগে নি নির এর(আহাদ এর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)
আহাদঃস্যার সত্যি বলচ্ছি তারা আমাকে জানে মারে ফেলার ভয় দেখায়েছিলো আই এম সরি স্যার
নিরঃসরি মাই বয় বাট আমার ডিক্সারিতে সরি বলে কোন শব্দ নাই(পকেট থেকে গান বের করে আহাদ এর মাথার মাঝখানে শুট করে দেয় গুলির আওয়াজে বাহিরে দাঁড়ায় থাকা সব স্টাফ ভয়ে কাপে উঠে

তখনি ৩ টা গার্ড সব স্টাফ দের সরায়ে ভিতরে ঢুকে লাশ নিয়ে চলে যায় আর আরেকজন আসে ফ্লোরে পরে থাকা রক্ত পরিষ্কার করে দেয়,

(কি হলো বুঝলেন না তো আহাদ শেখ নির এর পিএ ৪ বছর যাবত সে নির এর সাথে কাজ করে। আর কাজের প্রতি খুব ভালোও ছিলো কিন্তু কিছু সপ্তাহ হলো সে টাকার লোভে পরে নির এর রাইভাল কাম্পানির সাথে হাত মিলায়ে নির এর কম্পানির তথ্য ওদের কাছে প্রাচার করতো আর নির সেটা জানে যায় ব্যাস খেল খাতাম)

______

কবরস্থানে বসে আছে আদ্রি হ্যাচকি তুলে কান্না করে যাচ্ছে ১ ঘন্টা যাবৎ।। কেউ জানে না আদ্রি নাহিদ খান এর মেয়ে। সে নিজের খরচ নিজেই চালাই জব করে কিন্তু নাহিদ খান সেটা মানতে নারাজ তাই আদ্রি এতোদিন যেখানে কাজ করতো সেখানকার ম্যনেজার কে ভয় দেখায়ে আদ্রি কে কাজ থেকে বের করে দিয়েছে আর কোন কম্পানি তাকে জব দিতে ইচ্ছুক না কারন একটাই নাহিদ খান এর নিষেধাজ্ঞা।।।

আদ্রিঃকেন আম্মু কেন গেলা আমাকে ছাড়ে এরা কেউ ভালো না কেউ না এরা সবাই শুধু তোমার রাজ কন্যাকে কষ্ট দেয় আব্বু ভাইয়া বড় আম্মু মিথু কেউ আমাকে ভালোবাসে না কিন্তু কেনো জানো আজকে না ভাইয়া আমাকে মারেছে হ্যা আমি জানি আমি বেশি বলে ফেলেছি ওই ভাবে বড় আম্মুকে বলা আমার উচিৎ হয়নি কিন্তু কি করতাম আম্মু বড় আম্মু৷ কথায় কথায় তোমাক অপমান করে কিন্তু কেন সে না তোমার নিজের বড় বোন তাহলে আমি আর পারচ্ছিনা আম্মু আমাকে নিয়ে যাও (কবরের উপর শুয়ে পরে)

______
পাঞ্চিং ব্যাগে একটার পর একটা পাঞ্চ করেই যাচ্ছে নির যার কারনে নির এর পেশিগুলা ফুলে উঠচ্ছে প্রায় অনেকক্ষন বক্সিং করার পরে শান্ত হয়ে বসে নির। ড্রিংক করার উদ্দেশ্য বেয়ার হাতে নিতেই দরজায় কেউ কড়া নারে

নির বেয়ার টা থুয়ে দরজা টা খুলে দিয়ে বিছানায় আসে বসে টাওয়াল দিয়ে ঘাম গুলা মুছতে লাগে মিসেস রেজওয়ান উর্ফে নিহারিকা রেজওয়ান নির এর নানীমা আসে বসে নির এর পাশে নির ছোট বাচ্চার মতো নানির কোলে মাথা রাখে

নিহারিকাঃকি হয়েছে আমার জামাই টার হুম আজকে আমার জামাইটার রাগ কই গেলো
নিরঃআজকে ওকে আবার দেখেছি ডার্লিং
নিহারিকাঃতুই এখনো ওদের পিছা কেন করিস নানু ভাই
নিরঃতো কি করবো ডার্লিং ওরা আমার কাছ থেকে আমার সব কিছু কারে নিয়েছে আমার বাবা মা দাদা দাদী সব কিছু কি করে ছাড়ে দি তাদের
নিহারিকাঃকিন্তু নানু ভাই
নিরঃনো ডার্লিং তাদের শেষ না করা পর্যন্ত আমি শান্ত হবো না। একটা বার ভাবেছো যদি তুমি না থাকতা তাহলে আমার আর পিচ্চির কি হতো তোমারা না থাকলে আমরা কই যাইতাম এই চৌধুরী এম্পায়ার টাকা পয়সা যা আছে সব তোমার আর নানুর জন্য
নিহারিকাঃব্যাস অনেক হয়েছে এবার যা ফ্রেশ হয়ে আয় খায়ে নিবি তোর নানু তোর সাথে কি নিয়ে যেনো আলোচনা করতে চায়
নিরঃহুম যাও তুমি আমি আসচ্ছি

নিহারিকা রেজওয়ান যাইতেই নির ফ্রেশ হতে চলে যায়,,,,,

চলবে!!!!

#সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ৩
,
,
,
,
পরেরদিন সকালে,,,,,
বিরাট এক কম্পানির সামনে দাঁড়ায় আছে আদ্রি। সকাল সকাল নিউজ প্যাপারে এড পরেছে চৌধুরী গ্রুপ ওফ ইন্ডাস্ট্রির সি ই ও র জন্য পিএ লাগবে। ব্যাস সকাল বেলায় কোন রকম রেডি হয়ে দৌড় দিয়েছে

আদ্রি চোখ বন্ধ করে দোয়া পড়তে পড়তে ভিতরে ঢুকচ্ছে। হুট করে তার মাথা একটা দেওয়ালের সাথে টক্কর খাই। আদ্রি চোখ খুলে দেখে সে অফিসের ভিতরে আর তার সামনে সুট বুট পরে দাঁড়ায় আছে অত্যন্ত সুদর্শন এক যুবোক। চোখে চশমা থাকায় বুঝতে পারচ্ছেনা লোকটা রাগে আছে নাকি অন্যকিছু।

আদ্রি কিছু বলতে যাবে তার আগেই সাইড দিয়ে চলে যায় যুবোকটি আদ্রিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই অবাক হয় সে আবার ভাবে ভাব বেশি তাই এমন করলো

রিসেপশনিস্ট এর কাছে থেকে যানতে পারে ইন্টারভিউ শুরু হতে এখনো ১০ মিনিট বাকি আছে ওকে ওয়েটিং রুমে ওয়েট করতে বলে ওয়েটিং রুমে যায়ে অবাক হয়ে যায় আদ্রি ওয়েটিং রুমে ছেলেদের ছায়া পর্যন্ত নাই সব গুলা মেয়ে তাও আবার আল্ট্রামর্ডান যাকে বলে সবার পড়নে ওয়েস্টার্ন পোশাক। আদ্রি একবার সবার দিকে তাকায় এক বার নিজের দিকে যেখানে সবাই বিয়ের সাজ দিয়ে আসেছে সেখানে সে নর্মাল একটা কুর্তি আর জিন্স পরে চুল গুলা ঝুটি করে গলায় স্কার্ফ পেচায়ে চলে আসেছে। আদ্রি ভাবেই নেয় তার জব কেন্সেল।

কিন্তু তার ধারণা কে এক দম পালটে একজন পিয়ন আসে

পিয়নঃসবার মধ্যে আদ্রিতা খান কে
আদ্রিঃজ্বি আমি
পিয়নঃআপনাকে ইন্টারভিউ রুমে ডাকা হয়েছে আর বাকিরা সসম্মানে এখান থেকে চলে যাওয়ার হুকুম জারি করা হয়েছে

আদ্রি পিয়ন এর পিছে পিছে চলে যায় একবার পিছনে তাকায়ে দেখে মেয়ে গুলা তার দিকে রাগী লুক নিয়ে তাকায় আছে মনে হচ্ছে এখনি কাচা চিবায়ে খায়ে ফেলবে। আদ্রির হাসি লাগে সবার চেহারা দেখে

______

আজকে আদ্রি অনেক খুশি বিনা কোন খোজ খবর ইন্টারভিউ সার্টিফিকেট ছাড়া তার জব ফাইনাল হয়ে গেছে কিন্তু এখনো সে তার বস কে চিনেনা কিন্তু সে বিষয়ে মাথা ঘামায় না ওতোটা।

দূর থেকে কেউ একজন আদ্রির সব কিছু ফলো করচ্ছে। আদ্রি কোথায় যাচ্ছে কি করচ্ছে সব কিছু।আদ্রির বেশ কয়েকবার মনে হয়েছে কেউ তাকে ফলো করচ্ছে কিন্তু আদ্রি কোন দিন এমন কাউকে পায় নি।

আদ্রি দোকান থেকে কিছু খাবার কিনলো আর সেটা নিয়ে চলে গেলো সামনের একটা শিশুআশ্রমে সবাই আদ্রিকে পায়ে খুব খুশি হয়ে যায় আদ্রি বেশির ভাগ ই এখানে আসে সব বাচ্চাদের খাবার দেওয়ার পরে ওদের সাথে মজা মস্তি করে বিকালের দিকে বাসায় যায়।

________

শামসের রেজওয়ান এর বাসায় এসেছে আদ্রিয়ান। উনার একমাত্র নাতনির চিকিৎসার জন্য (ওওহ আপনাদের তো বলাই হয়নি আদ্রিয়ান একজন psychiatrist )

আদ্রিয়ান বাসার ভিতরে ঢুকতেই একটা কাগজের প্লেন আসে লাগে আদ্রিয়ান এর কপালে। আদ্রিয়ান বিরক্ত হয় কিন্তু তার সব বিরক্ত দূর হয়ে যায় সামনে দাঁড়ানো রমনীকে দেখে

দুই পাশে দুই ঝুটি করা মায়াবী চোখের অধিকারীনি
দাঁড়ায় আছে তার সামনে মাজায় হাত দিয়ে রাগী চোখে তাকাই আছে আদ্রিয়ান এর দিকে গোলাপি ঠোঁটের মাঝ থেকে বের হয়ে আসা শব্দ তার কান অব্দি পৌঁছাতেও যেনো সক্ষম হচ্ছেনা

আদ্রিয়ান এর ধ্যান ভাংগে দাড়িতে টান পড়ায়। আহ করে উঠে আদ্রিয়ান।

আদ্রিয়ানঃহেউ ইউ আর ইউ মেড এই ভাবে কেউ কাউকে ব্যাথা দেয় (চিল্লায়ে)

মেয়েটা আদ্রিয়ান এর চিৎকার শুনে ঠোঁট উলটে কান্না করে দেয়। আদ্রিয়ান অবাক হয়ে যায় এতো বড় মেয়েকে বাচ্চাদের মতো কান্না করতে দেখে
হঠাৎ করে আদ্রিয়ান এর টনক নড়ে তার আর বুঝতে বাকি নাই এই সে মেয়ে যার চিকিৎসার জন্য শামসের রেজওয়ান এর মতো এতো বড় একজন ভিআইপি নিজে আসে তার কাছে রিকোয়েস্ট করে গেছিলেন।

আদ্রিয়ানঃহুস কাদেনা তুমি না বিগ গার্ল আর বিগ গার্লস কান্না করেনা তাই না এই ভাবে কান্না করলে মানুষ তো পচা বলবে তাই না।তুমি কি পচা

রমনী দুই সাইডে মাথা নাড়ায়

নওমিঃনা আমি পচা না আমি তো নওমি আর নওমি গুড গার্ল (ঠোঁট উলটে)

আদ্রিয়ানঃইয়েস রাইট নওমি গুড গার্ল তো এবার চোখের পানি মুছো দেখি
নওমিঃচোখ কি(ফ্যালফ্যাল করে আদ্রিয়ান এর দিকে তাকায়ে)
আদ্রিয়ানঃচোখ মানে এই যে এটা যেটা দিয়ে তুমি আমি আমরা সবাই দেখি
নওমিঃকিন্তু আমি তো শুধু তোমাকে দেখতে পারচ্ছি নিজেকে তো দেখতেই পারচ্ছিনা
(নওমির চোখ জোড়া আবার পানিতে টইটম্বুর হয়ে যায়)

আদ্রিয়ানঃনিজেকে দেখা যায় না নিজের চোখ দিয়ে অন্যকে দেখা যায়
নওমিঃকিন্তু আমি তো আমাকে দেখতে চায় তুমি দেখাও আমাকে
আদ্রিয়ানঃসেটাতো হয়না
নওনিঃনাহ নাহ নাহ আমি কিছু জানিনা আমি দেখবো আমাকে আমাকে আমাকে দেখাও বলচ্ছি(ছোট বাচ্চাদের মতো ফ্লোরে পা ছুড়াছুড়ি করে)
আদ্রিয়ানঃআচ্ছা আচ্ছা আমার চোখের দিকে তাকাও (নওমির চোখের দিকে তাকায়ে)

নওমি আদ্রিয়ান এর চোখের দিকে তাকায়ে চুপ হয়ে যায় আদ্রিয়ান ও নওমির চোখের মায়ায় হারাতে শুরু করে। যেনো কোন এক ঘোরের মাঝে ঢুকে যায় দুইজন

আদ্রিয়ান এর ধ্যান ভাংগে মিসেস রেজওয়ান এর ডাকে

মিসেস রেজওয়ানঃআরে ডক্টর আদ্রিয়ান যে বাহিরে দাড়ায় আছো কেন ভিতরে এসো
নানুভাই তোমাকে না বলেছি বাসায় মেহমান আসলে তাকে ভিতরে ঢুকতে বলতে হয়

নওমিঃকেন বলবো আমি বলবোনা
মিসেস রেজওয়ানঃনানু ভাই পচা কথা
নওমিঃনা না না আমি বলবো না বলবোনা(চিল্লাতে চিল্লাতে)
মিসেস রেজওয়ানঃনওমি(ধমক দিয়ে)

নওমি ভয় পায়ে যায় অভিমান ভরা চোখে একবার নানু মার দিকে তাকায় আরেকবার আদ্রিয়ান এর দিকে তাকায়। নওমির অভিমানী চোখ জোড়া আদ্রিয়ান এর বুকের ভিতর তোলপার শুরু করে দেয়।

নওমিঃতোমরা কেউ ভালোনা আমি ভাইয়াকে বলে দিবো তখন ভাইয়া তোমাদের সবাইকে শাস্তি দিবে দেখে নিও পচা পচা সবাই পচা(বলতে বলতে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে যায়)

আদ্রিয়ান এর কেনো জানি খুব ইচ্ছা করচ্ছিলো বাচ্চাটাকে বুকে জরায় ধরে চোখের পানি গুলা মুছে দিতে কিন্তু চাইলেই কি সম্ভব
আদ্রিয়ান এর অজান্তেই তার বুকটা ভারি ভারি লাগা শুরু করলো

মিসেস রেজওয়ানঃওর তরফ থেকে আমি ক্ষমা চাচ্ছি বাবা আসলে ওই শুধু শারীরিক ভাবে বেড়ে উঠেছে কিন্তু মানসিক ভাবে সে এখনো বাচ্চাটিই রয়ে গেছে

আদ্রিয়ানঃআসলে ওর সাথে কি হয়েছিলো কিভাবে হয়েছিলো একটু ডিটেলস এ বললে ভালো হতো চিকিৎসার জন্য

মিসেস রেজওয়ানঃহুম অবশ্যই তখন নওমির ১২ বছর ছিলো সে তার আব্বু আম্মু দাদা ভাই দাদি মার সাথে গেছিলো ফ্যামিলি পিকনিকে। নওমি জেদ ধরেছিলো এক্সাম শেষ এখন একটা ট্রুরে যাবে সে। বাবা মায়ের আদরের ছিলো প্রচন্ড সে মুখ থেকে বের হওয়া মাত্র তার বাবা রাজি হয়ে যায় মেয়ের আবদার বলে কথা
সবাই মিলে যায় তারা কিন্তু মাঝ রাস্তাই,,,,,,,

মিসেস নিহারিকা রেজওয়ান কিছু বলবে তার আগেই শামসের রেজওয়ান বলে উঠে

ঃগাড়ির ব্রেক ফেল হয়ে যায় আর গাড়িটা ব্লাস্ট হয়ে যায় কিন্তু নওমির বাবা আগেই নওমিকে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়েছিলো যার কারনে সে বেচে যায় কিন্তু তার মাথা যায়ে লাগে একটা পাথরের সাথে। আসেপাশে মানুষ তাদের হস্পিটালে এডমিট করায় নওমির বাবা মা দাদা দাদী সবাই মারা যায়। নওমি বাচে গেলোও তার মাথায় আঘাত পাওয়ার কারনে সে মানসিক ভারসাম্য হারায় ফেলে।।।

আদ্রিয়ান মনোযোগ দিয়ে সব কিছু শুনলো
আদ্রিয়ানঃনওমির এই অবস্থা আই মিন এক্সিডেন্ট হওয়ার কই বছর হলো
শামসের রেজওয়ানঃ৯ বছর
আদ্রিয়ানঃহুম আচ্ছা আমি কি তার ম্যাডিকাল রিপোর্ট দেখতে পারি
নিহারিখাঃআমি নিয়ে আসচ্ছি
আদ্রিয়ানঃওকে আমি ততোক্ষন নওমির রুমে গেলাম ওর নরমাল চেকআপ এর জন্য
শামসের রেজওয়ানঃউপরে যায়ে ৩ নাম্বার রুমটা ওর
আদ্রিয়ানঃজ্বি

_______

চলবে!!!!.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here