#সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১৪
,
,
,
,
নির অবাক হয়ে দেখছে আদ্রিকে।ছোট বাচ্চার মতো রাস্তায় বসে আম্মু আম্মু বলে চিৎকার করে কান্না করছে।
আদ্রিঃআমি খুব মিস করছি তোমাকে আম্মু প্লিজ চলে আসোনা তোমার সোনা পরিটা খুব কষ্টে আছে গো মা কেউ বুঝেনা তোমার সোনা পরিটাকে সবাই তোমার মতো আগলে রাখেনা কিন্তু কেনো মা। সবাই তোমার মতো ভালোবাসেনা কেনো।না খেয়ে থাকলে তুমি যেমন নিজ হাতে তুলে খাওয়াতে এখন আর কেউ ওই ভাবে খাওয়ায় দেয় না।যানো সবাই খালি আমাকে বকা দেয় পচা পচা কোথায় শুনায়। আমি তোমার কাছে যাবো মা আমাকে নিয়ে যাও না গো এই মানুষ গুলা নিষ্ঠুর গো মা তোমার পরিটাকে খুব কষ্ট দেয় মা,,,,,(মা বলে জোড়ে চিৎকার করে রাস্তায় লুটিয়ে পরে)
নির দৌড়ে যেয়ে আদ্রিকে ধরে ফেলে আর কোলে তুলে নিয়ে হাটা ধরে।
নিরঃআমি জানিনা আদরপাখি তোমার কিসের এতো কষ্ট। জানিনা তোমার বাবা আর ভাই এর সাথে কিসের দূরত্ব। সব আমি জানবো আর তোমার লাইফ থেকে সব কষ্ট আমি মুছে ফেলবো দেটস মাই প্রমিজ আর আজকে আমার অজান্তেই যে তোমাকে কষ্ট দিয়েছি তার জন্যও সরি আদর পাখিটা। (কপালে ভালোবাসার স্পর্শ দিয়ে)
,
আদ্রিয়ানঃহয়েছে তো বাচ্চাটা আর কতো কান্না করবা তোমার ভাইয়া ঠিক আছে তো প্লিজ চুপ সোনাটা
নওমিঃনা আমি দেখেছি ভাইয়ার হাতে র র রক্ত। আব্বুর ও ওইরকম রক্ত পরছিলো আব্বু আব আব্বু,
হঠাৎ করে মাথায় প্রেশার পরায় মাথায় তীব্র ব্যাথা অনুভব করতে লাগে হুট করে নাক দিয়ে রক্ত পরা শুরু হয়ে যায়।মাথার রক্ত সঞ্চালন গতি স্বাভাবিক এর চেয়ে অধিক মাত্রায় শুরু হয়ে যায়।
হাতের কাছে যা পায় সেটাই ছুড়ে মারা শুরু করে। আদ্রিয়ান হঠাৎ এমন আক্রমণ সামলাতে পারেনি। এর আগে যতোবার এরকুম এগ্রেসিভ হয়েছে ততোবার ইঞ্জেকশন পুষ করা হয়েছে কিন্তু এই স্টেজে এসে ইঞ্জেকশন পুষ করলে নওমির অবস্থা বেগতিক হতে পারে।আদ্রিয়ান আর কিছু না বুঝে নওমির হাত দুইটা ধরে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরে।নওমি হাজার চেষ্টা করেও যখন আদ্রিয়ান এর বাধন থেকে নিজেকে ছাড়াতে পারেনা তখন দাঁত দিয়ে আদ্রিয়ান এর গলা ঘাড় হাত সব জায়গায় কামড় বসাতে থাকে প্রচন্ড ব্যাথা পেয়েও দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে নেয়। এক পর্যায়ে শান্ত হয়ে আদ্রিয়ান এর বুকে ঢোলে পরে।
আদ্রিয়ান আর সময় নষ্ট না করে কোলে করে রুমে নিয়ে যেয়ে তাকে বিছনায় শুয়ে দিয়ে ট্রিটমেন্ট শুরু করে দিলো।
মিস্টার এন্ড মিসেস রেজওয়ান রুমের বাহিরে দাঁড়িয়ে সবটি লক্ষ করলেন তিনি ভেবেছিলেন নওমির এমন অবস্থা দেখে হয়তো আদ্রিয়ান নওমিকে হিট করবে বা সে অবস্থায় নওমিকে রেখে সেখান থেকে চলে যাবে কিন্তু আদ্রিয়ান সেটা করেনি বরং নওমিকে শান্ত করার জন্য নিজেকে ক্ষত বিক্ষত পর্যন্ত করে নিয়েছে একটা টু শব্দ ছাড়া।
মিসেস রেজওয়ানঃআমি কি বলি আদ্রিয়ান ছেলেটা ভালো ফ্যামিলি টাও খারাপ না আমাদের নওমিকে ভালো রাখবে।
মিস্টার রেজওয়ানঃসেটা হয়না এমনটা করলে সার্থপরতা হবে।কারন নওমির যে কন্ডিশান তোমার মনে হয় আদ্রিয়ান আজকে নওমির এই সব মুখ বুঝে সহ্য করছে বাট ভবিষ্যৎ এ করবে বলে তার কোন মানে আছে। আদ্রিয়ান এডুকেটেড ছেলে অন্য কোন মেয়ের জন্য নওমিকে ছেড়ে দিবেনা তার কোন গ্যারেন্টি আছে।কেন আমরা আমাদের জন্য তার ভবিষ্যৎ নষ্ট করবো সেটা কি ঠিক হবে।
মিসেস রেজওয়ানঃআজ না হয় কালকে তাকে বিয়ে দিতে হবে আদ্রিয়ান এর মতো কে বা বুঝবে বা কন্ট্রোল করতে পারবে হয়লাম নাহয় একটু সার্থপর আর বিয়ের প্রস্তাব টা তো আর আমরা দেয়নি আদ্রিয়ান নিজে দিয়েছে নিশ্চয় কিছু ভেবেই দিয়েছে সে তো আর ছোট বাচ্চা নয় তাই না নিজের ভালো খারাপ সে বুঝে।
মিস্টার রেজওয়ান আর মানা করতে পারলেন না কেনোই বা মানা করবেন আদ্রিয়ান কোন দিক দিয়েই কম না সব দিক দিয়েই সে পার্ফেক্ট আদ্রিয়ান কে মেয়ে দিতে কোন পরিবার এর সমস্যা থাকবে।
,
,
,
রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পরে আছে তখন কার সে লোকটা। পানির জন্য ফ্লোরে শুয়ে কাতরাছে সে।হঠাৎ করে কোথায় থেকে এক বালতি পানি লোকটার মুখে ছুরে মেরে দিলো। লোকটা ধরফরায়ে সম্পূর্ণ চেতনায় ফিরে আসলো।
অন্ধকার এর কারো ছায়া দেখে লোকটা জানে জান ফিরে পেলো বাঁচার একটা আশা তার চোখে মুখে খুশির ঝিলিক হয়ে ফুটে উঠলো।
লোকটাঃপ্লিজ আমাকে এখান থেকে বাঁচান আপনার যতো টাকা লাগে আমার বস দিবে শুধু আমাকে এখান থেকে বাঁচান নাহলে সে সাইকো টা এসে মেরে ফেলবে। মায়া দয়া কিছু নাই।
লোকটার কথায় হা হা করে হেসে দিলো অন্ধকারের আড়ালে থাকা মানুষ টা হাসিটা এতোটাই ভয়ংকর ছিলো যে লোকটার রুহ পর্যন্ত কেঁপে উঠলো।
অন্ধকার এর আড়াল থেকে বের হয়ে লোকটার সামনে আসতেই লোকটার মুখ বন্ধ হয়ে গেলো যার বিরুদ্ধে এতো কথা বললো সে মানুষ টাই তার সামনে দাঁড়ায় আছে।হ্যা লোকটার সামনে আর কেউনা নির দাঁড়িয়ে আছে।
নিরঃতুই ঠিক বলেছিস আমি সাইকো শুধু সাইকোনা প্রচন্ড লেভেলের সাইকো আর পাষান যার মনে দয়া মায়া বলে কোন শব্দ নাই।
লোকটাঃতোর কাছ থেকে দয়া মায়া আশা করা যে ভুল সেটা আমি জানি। তোর মতো সাইকোকে এতো পাগলা গারদে থাকা উচিৎ তোকে এই ভাবে খুলে রেখেছে কেরে।
(বিদ্রুপ স্বরে)
নিরঃএতোটা ঘৃণার কারন কি। খালি বসের কথায় কারো মনে আর যায় হোক ঘৃণা জন্মে না
লোকটাঃঠিক আবির কে মনে আছে।
নিরঃআমার কম্পানির আবির
লোকটাঃহ্যা সে আবির আমার ভাই হয় যাকে সারাজীবন এর জন্য পঙ্গু করা হয়েছিলো শুধু মাত্র ওই মেয়েটার জন্য।
নিরঃতো আমার উপর প্রতিশোধ নিতে তুই আমার শত্রুর সাথে হাত মিলিয়েছিলি তাই তো।
লোকটাঃহ্যা আমাকে পাঠানো হয়েছিলো তোকে মেরে ফেলার জন্য কিন্তু যখন আমি ওই মেয়েটাকে দেখলাম তখন আমার মাথা নষ্ট হয়ে গেছিলো তাই দেখে ভেবেছিলাম ওই মেয়েটাকে নষ্ট করবো আর ওর ক্ষতি করলে এমনিতেই সে শোকে তুই ধুকে ধুকে মরে যেতি।
নির হাতা থাকা বড় হাতুরি দিয়ে গায়ের সমস্ত জোর দিয়ে লোকটার বুকে বারি দিলো।রাগে তার হিতাহিত জ্ঞান শুন্য হয়ে গেছে। পাশে থাকা গরম লোহা আগুনে তাঁতিয়ে লোকটার চোখে ঢুঁকিয়ে দিলো লোকটা ব্যাথায় চিৎকার করে উঠলো কিন্তু সে চিৎকার রুমের বাহিরে কারো কানে পৌঁছাতে সক্ষম হলোনা।
নিরঃতুই ঠিক করিসনি আমাকে মারতে আসলেও এতো ভয়ানক মৃত্যু তোকে দিতাম না। হয়তো শুট করতাম নাহলে এই অবস্থায় ছেড়ে দিতাম কিন্তু তুই কি করলি আমার আদর পাখির দিকে নজর দিলি তাকে নষ্ট করতে চাইলি কি করে ছেড়ে দি তোকে। (বড় চুলোর উপরে যেমন শিক কাবাব করা হয় ঠিক সেয় ভাবেই লোকটাকে পুরাছে সে)
তার একটা গার্ডকে দিয়ে লোকটাকে তার বস এর বাসার বাহিরে ফেলে আসতে বলে বেরিয়ে গেলো।লোকটার মৃতু দেহ দেখে শরীর শিওহরে উঠলো।
,
কারখানা থেকে বের হয়ে সোজা যায় আদ্রির কাছে হোস্টেলে। আদ্রি কে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।অতিরিক্ত মানসিক চাপ এর জন্য জ্ঞান হারায়েছে ডাক্তার বলে দিয়েছে এরকুম হতে থাকলে আদ্রিকে বাচানো সম্ভব হবেনা।সে একটা ট্রোমার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।
নিরঃউঠে যাও না আদর পাখি।আমি যে তোমাকে ছাড়া নিজেকে কল্পনা করতে পারিনা।আজকে তোমার এরকুম অবস্থার জন্য যারা যারা দায়ী সবাইকে নিজ হাতে শাস্তি দিবো তোমাকে সেটা আমি তোমাকে প্রমিজ করছি ভয়ানক মৃত্যু দন্ড দিবো। যে যে তোমার দিকে চোখ তুলে তাকাবে তার চোখ দুইটা উপরে ফেলবো আমি।#সীমাহীন ভালোবাসার নীড় তোমার জন্য অপক্ষে করছে । তারতাড়ি সুস্থ হয়ে যাও আমার নীড়ের পাখিটা।
আদ্রির সাথে গল্প করতে করতে আদ্রির হাতের কাছে মাথা দিয়েই ঘুমায় পড়লো নির।ভোরের আলোয় ঘুম ভেংগে গেলো নির এর। আর চোখের সামনে,,,,,,,
চলবে!!!!