#সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১৭
,
,
,
,
,
অন্ধকার রাতে জোনাকি পোকার ভিরে পাশাপাশি বসে আছে নির আর আদ্রি।দুইজনার মুখে কোন কথা নাই। আদ্রি নিশ্চুপ হয়ে চোখের জল ফেলছে। আর নির সেটা বুঝতে পেরেও তার করার মতো কিছু নেয়।
নিরঃআদর পাখি একটা কথা জানো।
আদ্রির নির এর দিকে তাকায় কথাটা কি সেটা জানার জন্য।নির অন্ধকার রাতেও চাঁদের আলোতে সেটা বুঝতে পারে হেসে দিয়ে বলতে শুরু করে
নিরঃএই দুনিয়াতে জানো সবার মনে হাজারো না বলা কথা লুকিয়ে থাকে যেটা কাউকে বলতে না পারায় কারো সাথে শেয়ার না করায় ধীরে ধীরে মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়ে যায়। তাই মনোবিজ্ঞানীরা বলেছেন মনের কথা লুকিয়ে রাখতে হয়না কাছের কারো সাথে সব কিছু শেয়ার করতে হয়।মন টা হালকা হয় কষ্ট গুলোও কমে যায়। (সামনের দিকে তাকিয়ে)
আদ্রিকে কিছু বলতে না দেখে নির বুঝতে পারে যে আদ্রি তাকে কিছু বলতে চায়না হয়তো সে কাবিল এখনো হতে পারেনি সে। হয়তো পারেনি তার আদরপাখির আপন কেউ।আদৌ কোনদিন হতে পারবে কি না সেটাও ওর জানা নায়।
নিরঃমিস আদ্রিতা চলেন অনেক রাত হয়ে গেছে।(গম্ভির গলায় বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়ে রওনা দেয়। হঠাৎ তার পা জোড়া থমকে যায় আদ্রির কথা শুনে
আদ্রিঃআমার আম্মুরা দুই ছিলো।আমার আম্মু ছিলো সবার ছোট।দুই বোন একে অপরকে খুব ভালোবাসতো।একে অন্যকে ছাড়া কিছুই বুঝতনা।কিন্তু তাদের এই বন্ধনে টান পরে আমার আব্বুর আগমনে প্রথম দেখায় আব্বু আম্মুকে ভালোবেসে ফেলে।বন্ধুত্ব করে দুইজনে।ধীরে ধীরে আম্মুও ভালোবেসে ফেলে আব্বুকে। দুইজনার প্রেম জীবন টা ভালোয় যাচ্ছিলো।কিন্তু এই দিকে আমার বড়আম্মুর আব্বুকে ভালো লেগে যায়।আব্বুকে সেটা জানালে আব্বু সাফ সাফ না করে দেয় কিন্তু আমার বড় আম্মু ছিলো অনেক জেদী একবার যেটা বলে সেটা বলেই। আম্মু যতোটা শান্ত আর সবার কথা মেনে চলতো বড় আম্মু ছিলো তার উল্টো।
এইদিকে দুই ফ্যামিলিকে জানানো হয় দুইজনার ব্যাপারে। দুই ফ্যামিলি মেনে নেয়। কারন আব্বু সব দিক দিয়েই ছিলো পারফেক্ট। তেমনি আম্মুও। রুপে গুনে কথায় ব্যাবহার সব দিক দিয়েই অনন্য। এই দিকে দুই পরিবার বিয়ের তোরজোর শুরু করে অন্যদিকে বড়আম্মু নিজের প্ল্যানিং শুরু করে
সেদিন ছিলো ব্যাচলারস পার্টি। সব ফ্রেন্ডস কে নিয়ে আব্বু পার্টি করছিলো সেখানে বড়আম্মু ওয়েটার সেজে যেয়ে আব্বুর জুস স্পাইক করে দেয় আব্বু কোন দিন ড্রিংক না করায় নেশা চড়ে যায়। আর বড় আম্মু সেটার সুযোগ নিয়ে,,,,,,, (কথাটা বলেনা)
নির বুঝতে পারে আদ্রি কি বুঝাতে চাচ্ছে তাই সেও কিছু বলেনা। আদ্রি কিছুক্ষন দম নিয়ে পুনরায় বলতে শুরু করে।
সকাল এর দিকে আব্বুর ঘুম ভেংগে নিজেকে আর বড় আম্মুকে বিদ্ধস্থ অবস্থায় দেখে প্রচুর পরিমানের শকড হয়।
বাড়ির সবাই জানতে পেরে দুইজনার বিয়ে দিয়ে দেয় আব্বু যেনো পুতুল হয়ে যায় আম্মুর অবস্থাও খারাপ হয়ে যায়।
বোনকে এই অবস্থায় সহ্য করতে পারেনা বড় আম্মু নিজের বিয়ের এক মাস পরে আব্বু আর আম্মুর বিয়ে দেয় নানা নানি মেনে নেয়না দুইজনকেই ত্যাগ করে।
দুই বোন সব সময় এক অন্যেকে মান দিয়েই চলতো কোন দিন জগড়া ঝামেলা হতোনা তাদের মাঝে।বিয়ের ২ মাস পরেই জানা যায় বড় আম্মুর বাবু হবে আব্বু বা্ আম্মুর বুঝতে বাকি থাকেনা যে এটা সেদিন পার্টির রাতের ফল।দুইজনেই বড় আম্মুকে মাথায় তুলে রাখতে শুরু করলো। তারপরে ভাইয়া হলো।
তার পরে সবার নয়নের মনি হয়ে আসলো মিথিলা আপু।আর তার এক বছর পরে আম্মুর কোল জুরে এলাম আমি।
ধীরে ধীরে সময় যেতে লাগলো।আম্মু কেমন জানি চুপ হয়ে যেতে শুরু করলো। বড় আম্মু কথায় কথায় আম্মুকে বকা দিতো কোন কারন ছাড়াই বা ছোট ছোট বিষয় নিয়ে আব্বু দেখেও কিছু বলতোনা।
হুট করে অনেকদিন পরে আব্বু নিজ থেকে আম্মুকে বললো বাহিরে ঘুরতে যাবে আম্মু খুব খুশি হয়েছিলো অনেকদিন পরে আব্বু সেদিন আম্মুর সাথে ভালো করে কথা বলেছিলো।আম্মু রেডি হয়ে বাহিরে এসে দেখলো আব্বু নেয়।
হঠাৎ করে ফোন বেজে উঠতেই আম্মু স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে দেখে আব্বু ফোন করেছে আমি তখন আম্মুর পাশেই ছিলাম সব লক্ষ করছিলাম৷ আব্বু ফোনের অপাশ থেকে কিছু বললো যেটা শুনে আম্মুর অন্ধকার মুখে হাসির রেখা ফুটে উঠলো্ আম্মু সেদিন শেষ বার এর মতো আমাকে আদর করে বেরিয়ে পড়েছিলো। ঘন্টা ৫ এক পরেই এম্বুলেন্স এ আম্মুর লাস ফিরে আসে।
সেদিন অনেক কেদেছিলাম কিন্তু আমার চোখের পানি দেখার সময় ছিলোনা কারো। সব নিজের মতো নাটক করতে ব্যাস্ত ছিলো।আম্মুর কবর দেওয়া হলোনা পারিবারিক কবরস্থানে অনেক দূরে নিয়ে যেয়ে দাফন করে এলো আম্মুকে।কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছিলাম জ্বর সব কিছু নিয়ে মরার মতো অবস্থা হয়ে গেছিলো বড় আম্মু নিজ হাতে আমাকে সুস্থ করেছিলো।
ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিলাম কিন্তু এই প্রকৃতি সেটা মানতে নারাজ ছিলো আমার আম্মুকে কেড়েও যেনো তার শান্তি হয়নি। সেবার ছিলো আমার আব্বুর ভাইয়ের ছেলের জন্মদিন। খুব খুশি মনে গেছিলাম কিন্তু আমার চাচাতো ভাইয়ার কু দৃষ্টি ছিলো আমার উপরে তখন ১৪ কিংবা ১৫ বছর হবে আমার এই সব কিছুর উপর ধারনা আমার ছিলোনা আর ভাইয়া ছিলো ২১ বছরের যুবোক। পার্টি চলাকালিন হঠাৎ করে একজন এসে আমাকে বলে আমাকে নাকি আম্মু ডাকছে আমি সেটা শুনে আমি উপরে চলে যায়।ছোট মাথায় আর ঢুকেনি যে নিচে পার্টি চলছে আর উপরে আমাকে ডাকা হবে কেনো।
উপরে যেতেই একজন আমার মুখ চেপে ধরে আমাকে একটা রুমে নিয়ে যায় ছাড়ানোর জন্য ধস্তাধস্তি করতে থাকি কিন্তু একজন সুঠম দেহী যুবোক এর সাথে পেরে উঠা আমার দ্বারা সম্ভব ছিলোনা। নিচে মিউজিক চলায় কারো কানে আমার চিৎকার পযন্ত যাচ্ছিলোনা।
হঠাৎ সেখানে ছোট চাচী আসে এই অবস্থায় দেখে চিৎকার করে উঠে সবাইকে ডাকে।চাচীর ডাকে সবাই সেখানে আসে। সবাইকে আসতে দেখে ভাইয়া্ আমাকে ছেড়ে উঠে বসে।
ততোক্ষনে আম্মু চলে আসে আমি দৌড়ে চলে যায় আম্মুর কাছে আম্মুর বুকে মুখ লুকিয়ে ঢুকরে কেদেদি।
কেউ ভাইয়াকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই ভাইয়া আব্বুকে বলে উঠে
ঃবড় আব্বু তোমরা কিছু বলবা তার আগে আমার কথা শুনো
ছোট চাচ্চুঃকি শুনবো হ্যা সব কিছু তো সবার সামনেই ছি তোর লজ্জা করেনা নিজের বোন এর সাথে এমন করতে।
ছোট চাচ্চু ভাইয়াকে কিছু বলতে যাবে তখনি আব্বু ছোট চাচ্চুকে থামতে বলে।সবাই অবাক হয়
আব্বুঃবল কি বলতে চাস
(ভাইয়াকে উদ্দেশ্য করে)
ভাইয়াঃবড় আব্বু বিশ্বাস করো আমি ওকে হাজার বার বলেছিলাম আমি তোর ভাই হয় এইসব ঠিক না
কিন্তু সে শুনেনি আমার সামনে নিজের(মাথা নিচু করে)
আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনি এখানে আমার দোষ টা কোথায়
ভাইয়ার কথায় ছোট চাচা চাচী বাদে সবাই বিশ্বাস করে নেয় উপস্থিত সবাই আমাকে বিভিন্না অপবাদ দিতে থাকে। সবাইকে অনেক বলি কিন্তু কেউ বিশ্বাস করেনা আমার কথায়।
আব্বু সবার সামনে সে অবস্থায় সবার সামনে অসভ্য লজ্জাহীন অপয়া আরো কতো কি বলতে থাকে।
সবার সামনে থাপ্পড় মারে চুল টেনে ধরে যখন থাপ্পড় মেরে হাতে ব্যাথা লাগে তখন নিজের বেল্ট খুলে মারতে লাগে কেউ আটকাতে আসেনা। এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে যায়।যখন জ্ঞান ফিরে তখন আমি ছোট চাচীদের বাসায়।।
কিছুদিন পরে বড় আম্মু এসে আমাকে নিয়ে যায়।
(বিদ্রঃনোটঃএখানে ভাইয়া বলতে আমি আদ্রির মেঝো চাচুর ছেলের যার বার্থডে পার্টি তাকে বুঝিয়েছি কেউ আবার আদ্রিয়ান কে মনে করিয়েন না)
চলবে!!!