#সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ৯
,
,
,
,
,
চেয়ারে বসে পানি পান করছে আদ্রি গলা ব্যাথা করচ্ছে মারাত্মক ভাবে। ৫ আঙ্গুলের ছাপ বসে আছে। মিনেট ২ এক পর পর ই খুক খুক করে কেশে উঠছে আদ্রি।আদ্রির সামনেই মাথা নিচু করে দাঁড়ায় আছে নির অপারাধীর মতো করে।
কিছুক্ষন আগের কথা,,
নির আদ্রিতার চোখে পানি দেখে তাকে ছেড়ে দিয়ে জোরে জোরে কয়টা নিশ্বাস নেয়
আদ্রিঃস্যার কি হয়েছে এরকুম করছেন কেনো(গলায় হাত দিয়ে)
নিরঃজানিনা আমি কেনো এমন করছি বুঝতে পারছিনা কিছু নিজেকে পাগল পাগল লাগছে দম বন্ধ হয়ে আসছে। পারছিনা নিজেকে সামলাতে। মনে হচ্ছে সব কিছু শেষ করে দেয়
( টি-টেবিলের উপর লাথি দেয়। কাচের হওয়ায় মহূর্তে তছনছ হয়ে যায় বিকোট আওয়াজ করে।)
আদ্রি ঘাবড়ে যায় বুঝে উঠতে পারেনা মহূর্তে মধ্যে কি হয়ে গেলো মানুষ টার কিছুক্ষন আগেই তো ভালো ছিলো
হঠাৎ করে আদ্রির মাথায় আসলো হয়তো তার ভাইয়া এসেছিলো অফিসে আর এই সব ঝামেলা বাধালো তাই হয়তো নির রাগ করেছে।
গলায় প্রচন্ড ব্যাথা হচ্ছে কোন আওয়াজ বের করতে গেলেও জান বের হয়ে যাচ্ছে। তাও অনেক কষ্টে আদ্রি বলে উঠলো
আদ্রিঃআপনি কি আমার ভাইয়ার জন্য রেগে আছেন(আস্তে আস্তে করে)
ভাইয়া শব্দটা কানে যেতেই বুকের উপরে ভার টা যেনো কমে গেলো হঠাৎ করেই সব রাগ হাওয়ার মতো উড়ে গেলো।কিন্তু সাথে সাথে বেপারটা মাথায় আসতে নিজেকেই থাপড়াতে ইচ্ছা করলো।
নিরঃনানী সব সময় বলে রাগ কমা আগে কি হয়েছে ব্যাপারটা সেটা বুঝ কিন্তু না তা বুঝার সময় কি আপনার আছে কিন্তু আমিও কি করতাম না চায়তেও রাগ উঠে গেলো কি করে সহ্য করতাম আমি ওকে অন্যকারো বুকে। আমাকে স্বপ্নে আসে কেউ বলে গেছিলো ওই ছেলেটা আমার ফিউচার শালা ধুর ভালো লাগেনা। আমার আগেই উচিৎ ছিলো এর ব্যাপারে সব খোজ নেওয়ার কিন্তু তোর তো জেদ ছিলো আদ্রির প্রতি উইক হবিনা এবার ঠ্যালা বুঝেন (মনে মনে নিজেকে গালি দিয়ে ডাক্তার কে ফোন দিলো)
ডাক্তার আসে চেক আপ করে কিছু ঔষধ এর নাম লিখে দিলো নির ডাক্তার কে সি ওফ করে এসে একটা স্টাফ কে দিয়ে আদ্রির ঔষধ আনায় নিলো
নিরঃব্যাথা হালকা কমেছে(হোট ওয়াটার ব্যাগ দিয়ে সেক করতে করতে অপরাধী সুরে বললো)
আদ্রি নির এর দিকে তাকায়ে দেখে নির বাচ্চাদের মতো মুখটা করে রেখেছে বড্ড মায়া হলো তাইতো মুখ ফটে উচ্চারণ করতে পারলোনা যে ব্যাথা কমেনি।আদ্রি উপর নিচ মাথা নাড়ালো।
নিরঃআই এম সরি আমার উচিৎ হয়নি এইভাবে রিয়েক্ট করার এই যে কান ধরচ্ছি আর হবেনা (এক হাত দিয়ে কান ধরে ঘাড় টা হালকা বেকা করে)
আদ্রি নির এর রিয়েকশান দেখে খিলখিল করে হেসে উঠলো নির ও মুগ্ধ নয়নে তাকায় থাকলো মুক্তর ন্যায় স্বচ্ছ হাসি মুখের দিকে।
নিরঃআই এম সরি আদর পাখি আমি আমার করা প্রমিজ টা রাখতে পারলাম না এই জীবন টা যদি ২ দিন এর ও হয় তবুও তোমাকে আমার চাই ভীষণ করে চাই যে কোন মূল্যে তে চাই পারবোনা তোমাকে অন্যকারো সাথে দেখতে যদি বলো আমি স্বার্থপর তাহলে হবো স্বার্থপর। বাট আই নিড ইউ আই ওয়ান্ট ইউ। তুমি আমার এমন নেশা হয়ে গেছো যে নেশা ছাড়া আমার বাচা অসম্ভব। #সীমাহীন ভালোবাসার নীড়ে তোমার স্বাগতম আদর পাখি।
তোমাকে পাওয়ার জন্য যতো পাগলামী করার করতে রাজী আমি কিন্তু তোমাকে হারাতে আর রাজী নয় দরকার পরলে সারাজীবন আমার কাছে বন্ধী করে রাখবো তবুও আর হারাতে দিবো না (মনে মনে কথা গুলো বলে মুচকি হাসি দিলো)
নির এর মন জুরে ছুয়ে গেলো আলাদা এক প্রশান্তি এতো দিনে নিজের মনের সাথেই যুদ্ধ করেছে আদ্রি কে নিজের থেকে দূরে রাখার জন্য কিন্তু এখন সে যুদ্ধের সমাপ্তি। এখান থেকেই কি শুরু হবে নির আদ্রির নতুন পথ চলা নাকি কোন ঝড় আসবে এদের আলাদা করতে।
——–
আদ্রিয়ানঃমেডিসিন নেও নি কেনো কি সমস্যা
(ভ্রু কুচকে ঔষধের পাতা চেক করে)
নওমিঃবলবোনা আমি তোমার সাথে কথা আর খাবোও না ঔষধ
আদ্রিয়ানঃকেনো
(অবাক হয়ে)
নওমিঃকয়টা বাজে হ্যা কয়টা বাজে পুরো ১২ টা বাজে (ঘড়ির দিকে আঙুল করে)
আদ্রিয়ানঃহুম ঘড়ি দেখতে জানি আমি (সোজা সাপ্টা উত্তর)
নওমিঃজানো মানে কি হ্যা যদি জানো তাহলে এতো দেরি করে আসলে কেনো জানো মিনি তোমাকে কতো মিস করচ্ছিলো(বিলায়ের গলা জরায় ধরে)
আদ্রিয়ানঃআচ্ছা শুধু মিনি মিস করছিলো বুঝি মিনির আম্মু মিস করেনি
(নওমির পাশে বসে)
নওমিঃকরেছে তো এই এইটুকু
(আঙুল দিয়ে এক চিমটি দেখায়ে)
আদ্রিয়ানঃওহ তাহলে আমাকে যখন কেউ মিস ই করে নি তাহলে আমি আর আসবো না কালকে থেকে ওকে তোমার ঔষধ তোমার নানিকে বুঝায় দেবোনি কেমন(উঠতে উঠতে)
নওমিঃএই না না প্লিজ যেও না আমিও তো মিস করেছি এতো এতো এতো গুলা মিস করেছি সত্যি অনেক গুলো মিস করেছি(দুই হাত দুই দিকে ছড়ায়ে)
আদ্রিয়ানঃআচ্ছা তাই বুঝি নওমি ম্যডাম আমাকে এতো মিস করেছে আচ্ছা তাহলে তো কালকে থেকে সময় মতো আসতে হবে।
নওমিঃহুম। আচ্ছা আদি তুমি একেবারে থেকে যাও না এখানে তোমাকে ছাড়া ভালো লাগে না তুমি থাকলে আমি গল্প করতে পারি খেলতে পারি মজা করতে পারি কেউ বকা দেয় না। কিন্তু তুমি চলে গেলে একা একা খেলতে হয় নানু তো সারাদিন রুমের ভিতরে থাকে নানা ভাই ও অফিসে যায় আর ভাইয়াকে তো খুজেই পাওয়া যায় আমি উঠার আগে চলে যায় আমি ঘুমানোর পরে আসে(মন খারাপ করে)
আদ্রিয়ানঃকি করে বুঝায় রে পাগলী আমিও যে তোকে ছাড়া থাকতে পারছিনা অজানা এক শূন্যতাই ঘিরে ধরে তাই তো এতো সময় তোর কাছে কাটায় যেখানে এর আগে এই রকম পেশেন্ট আমি দেখতাম ই না যারা চেম্বারে আসতো শুধু তাদের ই দেখতাম আমি তো ভেবেছিলাম প্রথম দিন এসেই আর আসবোনা তোকে নিয়ে যেতে বলবো কিন্তু দেখনা কোন মায়ায় ফেলে দিলি সব কাজ ছেড়ে ছুড়ে সারাদিন তোর সাথে কাটায়।কিন্তু এটা যে ঠিক হচ্ছেনা একবার যদি তুই ঠিক হয়ে যাস তখক হয়তো তোর মনেও থাকবেনা আদ্রিয়ান নামের কেউ তোর লাইফে এসেছিলো(মনে মনে কথা গুলো বলে নিজেই অবাক হয়ে যাচ্ছে)
এগুলো কি ভাবচ্ছে ওই নওমি ওর পেশেন্ট আর কিছুই না কথা গুলো মস্তিষ্ক কে বুঝানোর চেষ্টা করলেও মন তো জেদ্দি সে তো চলে নিজের ইচ্ছায় নিজের মর্জিতে কারো জোর খাটেনা তার উপর।
——
নির আদ্রিকে ছুটি দিয়েছে দেখে মেহের আজকে একাই চলে গেছে অফিসে। নির আজকে অনেক আগেই চলে এসেছে অফিসে সবাই অবাক হয়ে দেখছে নির এর কর্মকান্ড যে ছেলে অফিস টাইম শুরু হওয়ার সাথে সাথে অফিসে পা রাখতো সে এখন সময় এর আগে চলে এসেছে। আর শুধু তাই না যে ছেলে কোন কারন ছাড়া রুম থেকে বের হতোনা সে ছেলে আজকে হাজার বার রুমের বাহিরে রাউন্ড মেরে গেছে। ওর মাথা থেকেই বের হয়ে গেছে যে আজকে সে আদ্রিকে আসতে মানা করেছে মেহের কে আসতে দেখেই পিয়ন কে দিয়ে খবর পাঠায় মেহের কে রুমে আসার জন্য।
মেহেরঃআসবো ভাইয়া
নিরঃহুম আয় তোকে যে প্রডাক্ট ডিজাইন দিয়েছিলাম সেটা করেছিস
মেহেরঃআমি তো সেটা কালকেই জমা দিলাম ভুলে গেছো
নিরঃনা মানে আসলে ওহ মনে পরেছে। তুই একা এসেছিস যে মিস আদর আসেনি
(আমতা আমতা করে)
মেহেরঃতুমি না কালকে ওকে ছুটি দিলা ওর গলা ব্যথার জন্য
(অবাক হয়ে)
নিরঃওহ আসলে ভুলে গেছিলাম তুই যা
মেহেরঃহুম আচ্ছা
ভাইয়া(পুনরায় ঘুড়ে এসে),
নিরঃহ্যা
মেহেরঃকাজের পেশার টা একটু কমাও যে লেভেলের ভুলাকার হচ্ছো কবে বলে নাম ভুলে যাবা নিজের(হেসে দিয়ে)
নিরঃ(রাগী লুক দিলো)
মেহের দে দৌড়
———
নির কিছুতেই শান্তি পাচ্ছেনা কেমন জানি হাস্ফাস করচ্ছে কিছুতেই কাজে মন বসাতে পারছেনা দোম আটকে আসছে সারা রুম ময় পায়চারী করে বেরাচ্ছে তবুও যেনো শান্তি নাই
টাই এর নাট টা লুজ করে চেয়ারের উপরে রাখা ব্লেজার টা হাতে নিয়ে কেবিন থেকে বের হয়ে গেলো
নিরঃআমি আসছি আদর পাখি তোমাকে না দেখে আমি থাকতে পারবোনা পাগল হয়ে যাবো এর চেয়ে ভালো তোমাকে দেখে আসা
আই এম কামিং আদর পাখি(গাড়ি চালাতে চালাতে)
——
নির আদ্রির ফ্লাটের কলিং বেল প্রেস করে কিন্তু ওই সাইড থেকে কোন সারা শব্দ পাইনা৷অনেকক্ষন যাবত যখন কেউ আসেনা তখন নির এর চিন্তা হয় কোন রকম সোসাইটির সেক্রেটারি কে ডেকে রুমের ডুবলিকেট চাবি আনিয়ে দরজা ওপেন করায়। কিন্তু ভিতরে যেতেই অবাক হয়ে যায়। পা দুইটা যেনো আসাড় হয়ে যায় ওর পা জেনো তার এগুচ্ছেনা কারন সামনে,,,,,
চলবে!!!!!!