কবর খোঁড়ার জন্য মাটিতে কোদাল ছোঁয়াতেই কোদালের গা রক্তে ভেসে আসে। মাটির ভেতর থেকে চুয়ে চুয়ে তাজা লাল রক্ত বের হচ্ছে। মনে হয় কিছুক্ষণ আগে এখানে কাউকে কবর দেওয়া হয়েছে আর বেশি গভীর নয় কবরটি যার কারণে কোদাল মৃত লাশের গায়ে লেগেছে তার থেকেই রক্ত লেগেছে কোদালে। কিন্তু পরক্ষণেই মনে হলো মৃত মানুষের গায়ে তো রক্ত থাকে না তাহলে, এই রক্ত কোথা থেকে আসছে??কবর খোঁড়া রেখে পুরুষ দুজন একে অপরের দিকে তাকিয়ে রইল। একজন আরেকজনকে চোখের ইশারায় আশ্বাস দিয়ে বোঝালো যে তারা যেন ভয় না পায়। দুজনে বোধহয় আগে থেকেই জানতো যে এমন কিছুই হবে। কিন্তু কবরের পাশে ক্যামেরা হাতে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়ে দুটি বোধহয় ভয় পাচ্ছে চোখমুখে ভয় স্পষ্ট। হাত দুটো কাঁপছে তাদের,রক্ত দেখে ভয় পেয়েছে। মেয়েটি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলল,”অভিনব আমার মনে হচ্ছে এই কবরটা না খোড়াই ভালো আমার কেমন ভয় ভয় করছে যদি কোন বিপদ হয়ে যায়??”
মেয়েটার কন্ঠ শুনে পুরুষ দুজন কবর খোঁড়া রেখে বিরক্ত চোখে মেয়েটির দিকে তাকায়। একটু চুপ থেকে অভিনব বলল,”ইয়ারকি করছিস তুই??এখানে আসার আগে ভয় করেনি তোর??বাংলাদেশ থেকে ইংল্যান্ড এসে এখন এতো ভয় পাওয়ার কি আছে??আমি আর রা’দ তো আছি তাহলে?? আমরা থাকতে তোর এতো ভয় কিসের??কি রে রা’দ তুই কিছু বল??” কথাটা রা’দের দিকে তাকিয়ে বলল অভিনব। কিন্তু রা’দের মুখ দেখে মনে হচ্ছে ও এখন কথা বলতে চায় না। এই মুহূর্তে যেই কাজটা করতে এসেছে এটা করা খুব জরুরি। তবুও রা’দ বলল,”দেখ লাবন্য আমরা এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজে এসেছি। আপাতত এই কাজটাই আমার কাছে অনেক বড় তাই তোরা চুপ করে দাঁড়িয়ে থাক আমাদের কাজ করতে দে?”
রা’দের কথা শুনে কথা শুনে লাবন্য বলল, “কিন্তু এই রক্ত??”
রা’দ আর কোন কথা না বলে কবর খোড়ায় মন দিলো। অভিনব বিরক্ত হয়ে বলল,”কথা না বলে চুপচাপ রেকর্ড কর। এতো ভয় পেলে চলবে??পূর্ণাশাকে দেখ কি সুন্দর চুপচাপ আছে। কি রে পূর্ণাশা ভয় করছে তোর??”
পূর্ণাশারও ভয় লাগছিল কিন্তু তবুও কিছু বলল না শুধু মাথা দোলায়। অভিনব রা’দের সাথে কবর খোঁড়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়ল। একটু খোড়ার পর ওরা খেয়াল করলো যে এখন আর রক্ত বের হচ্ছে না মাটির ভেতর থেকে তাই সবাই স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়ল। কিন্তু পূর্ণাশা আর লাবন্য এখনো একটু একটু ভয় পাচ্ছে। কারণ এই কবরস্থান সম্পর্কে ওরা সবকিছুই জানে।
ইংল্যান্ডের সবচেয়ে ভৌতিক স্থান হলো ব্রুকউড কবরখানা। এই ভৌতিক কবরখানাটি “লন্ডন নেক্রোপলিস” নামে খ্যাত। এখানে একা গেলে বুকে কাঁপন ধরতে বাধ্য কারণ শোনা যায় এখানে গেলে নাকি আত্মাদের গলার আওয়াজ শোনা যায়। এজন্য বিশ্বের টপ টেন ভয়ংকর ভুতুড়ে কবরস্থানের মধ্যে ইংল্যান্ডের ব্রুকউড কবরস্থানটি অন্যতম। এমনটাই ফেসবুক, গুগল বা অন্যান্য ওয়েবসাইটে পেয়েছে লাবন্য আর পূর্ণাশা। কিন্তু এখনও কোন আত্মার গলার আওয়াজ ওরা শুনতে পায়নি তাই অতোটাও ভয় ওদের করছে না। লাবন্য শক্ত হাতে ক্যামেরা ধরে চারিদিকে চোখ বুলায়। ছিমছাম জনমানব শূন্য কবরস্থান, চারিদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার একটা পাখির আওয়াজ ও শোনা যাচ্ছে না। অথচ এখন অতো রাত হয়নি সম্ভবত সাতটা বাজে।লাবন্যর মনে হচ্ছে রাতের বেলায় এখানে আসাটাই ভুল হয়েছে। কিন্তু এসে যখন পরেছে তখন আর কি করার??লাবন্য ওদের কবর খোঁড়া দেখতেছে। পূর্ণাশার এক হাতে টর্চ লাইট আরেক হাতে ক্যামেরা। দুজনে এই কবর খোঁড়ার দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি করায় মগ্ন হয়ে যায়।
অভিনব আর রা’দ ঘেমে একাকার। দুজনে বারবার কপালের ঘাম ফেলছে আর কবর খুড়ছে। অবশেষে ওদের কাজের অবসান ঘটিয়ে কফিনটি বের হলো। কফিনটি দেখেই রা’দ আর অভিনবের মুখে তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠল। দুজনে একে অপরের দিকে তাকিয়ে হাসলো। কিন্তু তখনই লাবন্য বলে উঠলো, “রা’দ আমার ক্যামেরা কাজ করছে না বন্ধ হয়ে গেছে।”
রা’দ মুখে বিষ্ময় ভাব ফুটিয়ে বলল,”কি বলছিস এসব?? আসার সময় চার্জ দিয়ে এনেছিলি??”
“ফুল চার্জ দিয়ে এনেছি।” অভিনব লাবন্যর কথায় ফোড়ন কেটে বলল,”তুই যে মন ভোলা,ক্যামেরা চার্জে বসিয়ে হয়তো সুইচ অন করিসনি।”
ওদের কথার মাঝে পূর্ণাশা বলে উঠলো,”কিন্তু একই ভুল তো আর দুজনের হতে পারে না।”
পূর্ণাশার কথা শুনে অভিনব আর রা’দ দুজনেই অবাক হয়ে গেল। কবরের ভেতর থেকে উঠে এসে পূর্ণাশা এবং লাবন্যর হাত থেকে ক্যামেরা নিয়ে চেক করে বলল,”এটা কি করে সম্ভব??”
লাবন্য রা’দের থেকে ক্যামেরা নিয়ে বলল,”এখানে সত্যি কোন গন্ডগোল আছে। আমাদের এখানে বেশি সময় থাকাটা ঠিক হবে না। যত দ্রুত সম্ভব এই স্থান ত্যাগ করাটাই বেটার।”
রা’দ লাবন্যর কথায় মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিয়ে অভিনবের দিকে তাকিয়ে বলল,”চল কফিনটা খুলি।” অভিনব মাথা নাড়িয়ে কফিনটির দিকে তাকিয়ে চোখ বড়বড় করে বলল,”বাপ রে এতো বড় বড় তালা!! এরকম তালা তো আমি বাপের জন্মেও দেখিনি।”
রা’দ এক লাফে কবরের মধ্যে নেমে পড়লো।কফিনটি ভালো করে পরখ করে বলল,”যেমন তেমন মানুষের কফিন নয় মামা??এটা হলো ব্ল্যাক ম্যাজিকারের কফিন। কালো জাদু করে অনেক মানুষের প্রান নিয়েছেন উনি। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো ওনার জাদুকরী বইটি
এই কফিনের ভেতর রয়েছে। এই জন্য বোধহয় এই তালার ব্যবস্থা বুঝেছিস। কিন্তু তাড়াতাড়ি এটা ভাঙতে হবে।”
বলেই একটা মাঝারি সাইজের পাথর হাতে নিয়ে তালার উপর আঘাত হানলো রা’দ। মূহুর্তেই যেন জায়গাটা হালকা কেঁপে উঠল।রা’দ নিজেকে সামলে নিয়ে আবার আঘাত করলো। পরপর কয়েকবার আঘাত করার পর তিনটা তালা খুলতেই সক্ষম হয়। রা’দ অভিনবের দিকে তাকিয়ে বলল,”এবার তুই কফিনের ঢাকনা খুলে ফেল”
অভিনব অপ্রস্তুত হয়ে বলল,”আ আমি??”
“নয়তো কি সবসময় কাজে ফাঁকি দিস তুই। এবার তাড়াতাড়ি কফিনটা খুলে এর ভেতর থেকে বইটা বের করে ফেল। তারপর এখান থেকে চলে যাব। তাড়াতাড়ি কর।”
শেষ উক্তিটি ধমকের সুরে বলল রা’দ। অভিনব আর কথা বাড়ালো না। গলায় ঝুলানো প্লাস লকেটটাতে শব্দ করে চুমু খেয়ে কাঁপা কাঁপা হাতে কফিনের দরজাটা খুলে ফেলল। ভেতরে মরা মানুষের কংকাল দেখে লাবন্য আর পূর্ণাশা ভয়ে দুকদম পিছিয়ে গেলেও মুখ দিয়ে টু শব্দটি করলো না। রা’দ আর অভিনব ও বোধহয় ভয় পেয়েছে। চোখের সামনে আশি বছরের পুরোনো কংকাল দেখে তো যে কেউ ভয় পাবে। তবে অনুভব আর রা’দ ভয়টা প্রকাশ করলো না সাথে দুজন মেয়ে মানুষ আছে। ছেলেদের ভয় পেতে দেখলে না জানি ওরা ভয়েই জ্ঞান হারায় তখন আবার আরেক বিপদ হয়ে যাবে।
কফিনের ভেতর থেকে ভ্যাপসা গন্ধ বের হচ্ছে কিছুক্ষণ এভাবে থাকলে সবাই বমি করে দেবে। এটা ভেবে রা’দ আর অভিনব ফোনের ফ্লাস অন করে বইটা খুঁজতে লাগলো।কফিনের এক কোণায় বইটির দেখা মিললো। অন্ধকারে বেশি কিছু খেয়াল করলো না শুধু এটাই দেখলো যে বইয়ের উপর গোটা গোটা অক্ষরে লেখা “”THE BOOK””. রা’দ তাড়াতাড়ি বইটা হাতে তুলে নিলো তারপর কফিনের ঢাকনা বন্ধ করে দুজনে কবর থেকে উঠে আসলো। অভিনব বলল,”এবার কফিনটাকে মাটি দিয়ে ঢেকে ফেলতে হবে।”
অভিনবের কথা শুনে রা’দ বলল,”এখানে থাকা আমাদের ঠিক হবে না। কফিনটা এভাবেই থাক কালকে কেউ না কেউ এসে ঠিকই কফিনটা ঢেকে দেবে। আমাদের তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে।” বলেই রা’দ ঘড়ির দিকে তাকালো সাড়ে সাতটা বাজে। রা’দ আবার বলল,”ভোর সাড়ে চারটায় আমাদের ফ্লাইট। এখন না গেলে ফ্লাইট মিস হবে।”
রা’দের কথা শুনে অভিনব আর কথা বাড়ালো না। লাবন্য আর পূর্ণাশা অলরেডি হাঁটা শুরু করে দিয়েছে। অভিনব আর রা’দ ও ওদের পিছু পিছু চলল। একটু এগোতেই বিকট শব্দে চারজনেই দাঁড়িয়ে পড়লো কিন্তু কেউই পিছন ফিরে তাকালো না। তবে সবাই এটা বুঝতে পারল যে এই শব্দটা কফিনের ঢাকনা খোলার শব্দ। কিন্তু আপনাআপনি কফিনের ঢাকনা কিভাবে খুলে গেল??পূর্ণাশা আর লাবন্য ভয়ে চুপ করে আছে। ঠকঠক করে কাপতেছে। কারো গোঙানির আওয়াজ শুনে ওরা দুজন আরো ভয় পেয়ে গেল। রা’দ আস্তে করে বলল,”ভুলেও কেউ পিছনে ফিরে তাকাবি না।”
সবাই এখনও ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে পেছন থেকে এক অদ্ভুত আলো এসে পরছে সবার পিঠে। চোখ ধাঁধানো সে নীল আলোকরশ্মি। পিছনে কি আছে তা দেখার জন্য রা’দ পকেট থেকে ছোট্ট আয়না বের করে ধরলো যাতে পিছনে কে আছে তা দেখতে পারে। কিন্তু আয়নায় যা দেখলো তা যেন অবিশ্বাস্য। দুটি কুৎসিত পা দেখা যাচ্ছে এবং পা দুটি অনেক লম্বা। যে কেউ দেখলেই অজ্ঞান হয়ে যাবে কিন্তু রা’দ নিজেকে সামলিয়ে একটু জোরেই বলল,”সবাই দৌড়া এখানে থেকে তাড়াতাড়ি বের হ।”
পূর্ণাশা আর লাবন্য বোধহয় রা’দের এই কথা শোনার জন্য অপেক্ষা করছিল তাই ওরা সাথে সাথে দৌড় মারে অভিনব পুরোটা বুঝলো না তারপর ও দৌড় দিল। ওরা যখন দৌড়াচ্ছিল তখন মাটি কাঁপছিল মনে হচ্ছে ভুমিকম্প হচ্ছে। কেউ বড়বড় পা ফেলে ওদের পিছু পিছু আসছে তার কারণেই মাটিসহ পুরো কবরস্থান কাপতেছে। সবাই দৌড়ে কবরস্থানের বাইরে চলে এসে গাড়িতে বসে পড়লো। রা’দ ড্রাইভিং সিটে বসে বইটি অভিনবের হাতে দিলো। তারপর গাড়ি স্টার্ট দিলো কিন্তু আশ্চর্য গাড়ি স্টার্ট নিচ্ছে না। রা’দ অবাক হয়ে গেল। প্রথমে ক্যামেরা কাজ করছে না আর এখন গাড়ি স্টার্ট নিচ্ছে না। সব অলৌকিক ঘটনা ঘটছে। ওদিকে কবরস্থানে যেন ঝড় হচ্ছে গাছপালা ভাঙার শব্দ আসছে। তা দেখে ভয়ে লাবন্য আর পূর্ণাশা কেঁদে ফেলেছে বারবার রা’দকে বলছে গাড়ি স্টার্ট দিতে। রা’দ আর অভিনব ও এবার ভয় পাচ্ছে তাই ওদের দুজনকে কিছু বলল না। অনেক চেষ্টা করার পর গাড়ি স্টার্ট নিলো।
বড় একটা নিঃশ্বাস ফেলে রা’দ ড্রাইভিং এ মন দিলো। হোটেলে পৌঁছে সবাই রুমে গেল।পূর্ণাশা আর লাবন্য ভয় পেয়ে আছে তাই ওরা নিজেদের রুমে না গিয়ে রা’দ আর অভিনবের রুমে গেল।
বিছানায় লাবন্য বসে আছে তার পাশেই পূর্ণাশা বই হাতে বসে আছে। পূর্ণাশা এক ধ্যানে বইটির দিকে তাকিয়ে আছে।”THE BOOK” লেখাটা জ্বলজ্বল করছে। কেমন অদ্ভুত দেখতে বইটা। একদম অন্যরকম বইয়ের কভার পেজটা। কিরকম বিদঘুটে সব জিনিসপত্রের ছবি। পূর্ণাশা অবাক চোখে বইটার দিকে তাকিয়ে আছে। কি আছে এই বইতে যার কারণে ওরা বাংলাদেশ থেকে ইংল্যান্ড চলে এসেছে??দেখে তো সামান্য একটা বই মনে হচ্ছে। আর এতো জায়গা থাকতে বইটি কেন কবরের মধ্যে রেখে দেওয়া হয়েছে?? কোন মিউজিয়ামে রাখতে পারতো।সবচেয়ে বড় কথা হলো কফিনের নোংরা আবর্জনার মধ্যে থেকেও বইটিতে একটুও ময়লা লেগে নেই। ঝকঝক করছে বইটা। এসব ভাবনা মনের মধ্যে আওড়াতে লাগলো পূর্ণাশা। লাবন্য মাথা চেপে ধরে বসে আছে। রা’দ আর অভিনব লাগেজ গোছাচ্ছে। অভিনব লাগেজ গোছানো রেখে রাগন্বিত স্বরে বলল,”আর কতক্ষন এভাবে থম মেরে বসে থাকবি তোরা??ফ্লাইট তো ক্যান্সেল হয়ে যাবে। তারপর দেখবি এই বইটাও হাতছাড়া হয়ে যাবে।”
পূর্ণাশা বইটার দিকে দৃষ্টি রেখে বলল,”আচ্ছা অভিনব এই বইটাতে কি এমন আছে যার জন্য আমরা এতকিছু করলাম। আর তখন ওই আওয়াজ টা কিসের ছিলো??রা’দ বল না তখন কি তুই কিছু দেখেছিলি??”
রা’দ লাগেজ গোছাতে গোছাতে বলল,”জানি না এই বইতে কি আছে??কালো জাদু শেখার কোন সূত্র নাকি অন্যকিছু??তবে আমার জানা মতে এই বইটা পড়ার কারণে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। এজন্যই তো এই বইটা হাতে পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ থেকে ছুটে এসেছি।”
“আমার মনে হয় এই বইটা পড়লে আমাদের ও ক্ষতি হতে পারে।” চোখে ভয় ফুটিয়ে পূর্ণাশা বলল। অভিনব হালকা কেশে বলল,”আরে কিছু হবে না। দেখ যখন আমরা এই বইয়ের বিষয়বস্তু নিয়ে ভিডিও করে আমাদের চ্যানেলে ছাড়বো না দেখবি লাইক কমেন্ট আর ভিউয়ারস বেড়ে গেছে।”
“কিন্তু লাইফের ঝুঁকি নিয়ে এই কাজটা করা কি ঠিক হবে??”
“বেশি কথা বলিস না চল। ইয়ারপোর্টে পৌঁছাতে অনেক টাইম লাগবে।”
নিজেদের সবকিছু গুছিয়ে রওনা হয়ে গেল সবাই। লাবন্য এখনো ভয়ে আছে। ওর মনে হচ্ছে আজ থেকে কোন বিপদ বোধহয় ওদের পিছু নিলো। কিন্তু ওর এরকম মনে হচ্ছে কেন?? ওরা এর আগেও তো কত হন্টেড প্লেসে গিয়েছে। রাত কাটিয়েছে সব ভুতুড়ে জায়গায়। রেকর্ড করে নিজেদের ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করেছে যার কারণে ওরা অনেক জনপ্রিয় সবার কাছে। তখন তো ওর এতো ভয় করেনি তাহলে আজকে কেন ভয় করছে??কেন এতো ভয় ওর মনে বাসা বাঁধছে??এই বইটা নেওয়া কি আদৌ ঠিক হচ্ছে??বড় কোন ভুল হচ্ছে না তো??লাবন্য পূর্ণাশার সাথে কথা বলতে চাইলো কিন্তু ততক্ষণে পূর্ণাশা ঘুমিয়ে পড়েছে। রা’দ আর অভিনবের সাথে কথা বলার কোন মানেই হয় না। ওদের পাগলামির জন্যই ইংল্যান্ডের মাটিতে পা ফেলতে হয়েছে। ওরাই জোর করে পূর্ণাশা আর লাবন্যকে এখানে নিয়ে এসেছে।লাবন্য আর কিছু না ভেবে সিটে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
ইয়ার্পোটে যথাসময়ে পৌঁছে যায় সবাই। সব ফর্মালিটি পূরণ করে এয়ারবাসে চেপে বসে।
লাবন্য পূর্ণাশা ক্লান্ত বিধায় সিটে হেলান দিয়ে শুয়ে পড়ল। অভিনব ও রা’দ কথা বলায় ব্যস্ত বইটি সম্পর্কে। যদিও বইটা এখনো খুলে দেখেনি কিন্তু বাংলাদেশে গিয়ে খুলবে। ওদের দুজনের ধারণা এই বইয়ের হাত ধরেই ওদের চ্যানেলকে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। কিন্তু আদৌ কি তা হবে?? চারজনের সাফল্য কি এই বইটি?? নাকি ওদের জিবনের নতুন সূচনা ঘটাবে “”THE BOOK” নামের বইটি??
#চলবে,,,,,,,
#THE_BOOK
#পর্ব_১
#Ishita_Rahman_Sanjida(Simran)
গল্পটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক বাস্তবের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। তবে এটা সত্যি যে ইংল্যান্ডে অবস্থিত ব্রুকউড কবরস্থানটি বিশ্বের টপ টেন ভৌতিক স্থানের মধ্যে একটি। এখানে একা গেলে বুকে কাঁপন ধরাতে বাধ্য। শোনা যায় এখানে গেলে নাকি আত্মাদের গলার আওয়াজ শোনা যায়। গুগলে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন।
কিন্তু এখানে কোন ব্লাক ম্যাজিকারের কোন কবর নেই আর না আছে কোন বই।
রোমান্টিক গল্প তো কয়েকটা লিখলাম এবার হরর গল্প লেখার ইচ্ছা হলো। হ্যাপি রিডিং। সবাইকে ধন্যবাদ ❤️❤️