#কাগজের_তুমি_আমি
#দ্বিতীয়_অধ্যায়
#২১তম_পর্ব
হঠাৎ কলিংবেলের আওয়াজে তাদের ধ্যান ভাঙ্গে। মহুয়া উঠে দরজাটা খুলে। এদিকে নিজের রুম থেকে উঠে আসেন সুভাসিনী বেগম। মনটা কেনো যেনো অস্থির লাগছিলো তার। দরজার কাছে যেতেই পা জোড়া আটকে গেলো তার। দরজার ওপাশ থেকে একটা কন্ঠ তার কানে আসলো,
– সুভা…
কন্ঠটি যে খুব পরিচিত তার। শেষ কবে এই ডাকটা শুনেছিলেন সেটা মনে পড়ছে না। পাথরের মতো দাঁড়িয়ে রয়েছেন তিনি। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যাক্তিটিকে এক দৃষ্টিতে দেখে যাচ্ছেন তিনি। অনলের মতোই চোখ,মুখ, দেহের গঠন শুধু বয়সের ছাপ খুব ভালো করেই পড়েছে শরীরে, মুখে। ছ ফুটের লোকটি এখন আর আগের মতো বলিষ্ট নেই, কুজো হয়ে পড়েছে। চোখের দৃষ্টিও ক্ষীণ হয়ে এসেছে। মোটা সোনালী ফ্রেমের চশমায় ঢাকা সেই চিরচেনা মায়াবী চোখ জোড়া। মাথায় সাদা চুলে ঢাকা। মলিন হাসি ঠোটে একে দাঁড়িয়ে আছেন সুভাসিনী বেগমের সামনে লোকটি। লোকটি আর কেউ নন রাজ্জাক সাহেব। ছাব্বিশ বছর পূর্বের রাজ্জাক সাহেবের মতোই সুভাসিনী বেগমের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। শুধুমাত্র সময়টা বদলে গেছে। কতগুলো বছর কেটে গেছেন। রাজ্জাক সাহেব ইতস্তত ভাব নিয়ে আবার ডেকে উঠেন,
– সুভা
– উনাকে এখানে কেনো নিয়ে এসেছো অনল? এ কথাতো তোমার সাথে আমার ছিলো না।
সুভাসিনী বেগমের কথা শুনে মাথাটা গ্লানিতে নিচু হয়ে যায়। অনল কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না। এটাই হয়তো রক্তের টান যা চেয়েও এড়াতে পাড়ে নি। সত্যি বলতে সুভাসিনী বেগমের সাথে দেখা করার জন্য অনেকটা হাতে পায়েই ধরেছিলেন রাজ্জাক সাহেব। জীবনের শেষ ভাগটা একা একা থাকার সাহসটা করে উঠতে পারেন নি। ছাব্বিশটা বছর তো কম নয়। এবার আবার একটা শেষ চেষ্টা করতে চান। অনলের আমতা আমতা করা দেখে কিছুই বললেন না সুভাসিনী বেগম। দ্রুত নিজের রুমে চলে গেলেন। মাকে এভাবে চলে যেতে দেখে অনল পিছু নিতে চায়। ধারা বাধা দেয়। অসহায় ভাবে ধারার দিকে তাকালে চোখ দিয়ে ইশারা করে মানা করে। সুভাসিনীর হৃদয়ে কি ঝড় চলছে সে তা অনুভব করতে পারছে। দীর্ঘশ্বাস ফেলে রাজ্জাক সাহেবের সামনে যায় সে। ধীর গলায় বলে,
– ফুপা, আসসালামু আলাইকুম। বেয়াদবি নিবেন না তবে আপনার এখানে আসা উচিত হয় নি। এখন এসেই যেহেতু পড়েছেন তাহলে যে কাজে এসেছেন সেটা করুন। তবে সেই কাজে কেউ আপনাকে সাহায্য করবে না। যদি ফুপি আপনাকে ক্ষমা করেন তাহলে আপনি ক্ষমা পাবেন নয়তো নয়। যদি ফুপি আপনাকে দয়া করে এ বাড়িতে থাকার অনুমতি দেয় তবেই আপনি এখানে থাকতে পারবেন।
রাজ্জাক সাহেব মুচকি হাসি হেসে বললেন,
– তুমি ই ধারা?
– জ্বী ফুপা
– দোয়া করি যাতে সুখী হও। আর আমার ছেলেটাকে একটু দেখে রেখো।
বলেই তিনি সুভাসিনী বেগমের রুমের দিকে হাটা দিলেন। অনল ধুপ করে সোফায় বসে পড়লো। সুমনা বেগম এবং মহুয়ার মুখে কোনো কথা নেই। পরিস্থিতি মূহুর্তেই যেন থমথমে হয়ে উঠেছে। সুভাসিনী বেগম রাজ্জাক সাহেবকে ফিরিয়ে দিবেন নাকি মেনে নিবেন এই চিন্তাটাই সবার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। ধারা ধীর পায়ে অনলের পাশে বসে। তার হাতের উপরে হাত রেখে ধীর গলায় জিজ্ঞেস করে,
– তুমি তো বলেছিলে, শেষবারের মতো দেখা করতে যাচ্ছো। তাহলে? কি এমন হলো যে বাসায় নিয়ে এলে?
অনল ধারার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকায়। প্রশ্নের উত্তরগুলো তাকে এতোটা ঘাটিয়ে দিবে বুঝে উঠতে পারে নি অনল। কয়েনের যেমন দুটো পিঠ থাকে ঠিক তেমন কিছু কিছু কাহিনীর ও দুটো পার্ট থাকে। এতোদিন সে শুধু সুভাসিনী বেগমের পার্ট টুকু জানতো। আজ যখন রাজ্জাক সাহেবের পার্ট টুকু জেনেছে তখন কেনো যেনো জমা অভিমানগুলো গলে গেলো।
অপরদিকে,
বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছেন সুভাসিনী বেগম। বেহায়া মনটা পুনরায় গলতে শুরু করেছে। সুপ্ত অনুভূতি গুলো দাবানলের ন্যায় বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে মনে। ফেলে আসা দিনগুলো মনে হানা দিচ্ছে। সুভাসিনী বেগম ভেবেছিলেন হয়তো মনটা রাজ্জাক সাহেবের প্রতি বিমুখ হয়ে গেছে। কিন্তু তার সামনাসামনি হতেই ভুল প্রমানিত হলো তার ভাবনাগুলো। সূর্যটা পশ্চিমের দিকে ঢেলে পড়ছে। গোধুলির স্নিগ্ধ কিরণ মুখে আছড়ে পড়ছে সুভাসিনী বেগমের। রাজ্জাক সাহেব নীরবে তাকে দেখেই যাচ্ছেন। তার সামনে আঠারো বছরের কিশোরী নয় পঞ্চান্ন বছরের একজন নারী দাঁড়িয়ে রয়েছে। যে কেশের সুগন্ধে একটা সময় তিনি মত্ত থাকতেন আজ সে কেশ কাঁচাপাকা রঙ্গে ডাকা। পুতুলের মতো যে মুখে নিজের শান্তি খুজছেন আজ তাতে বয়সের ছাপ পড়েছে। চামড়াটা ঝুলে গেছে। সময়টা অনেক বেশি কেটে গেছে। নিজের ভুল সিদ্ধান্ত গুলো, নিজের জেদগুলো আজ তাদের সম্পর্ককে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। বয়সের গরমে সেদিন ঠিকভুলের বিচার ভুলে গেছিলেন। জেদের বসে তালাকের কথাও তুলে ফেলেছিলেন। কেনো যে এমনটা করতে গেলেন। এখন নিজেই পশ্চাচ্ছেন। জীবনের শেষ প্রহরে আর ভুল করতে চান না। বুক থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো। জড়ানো গলায় ধীর স্বরে বললেন,
– সুভা
– কেনো ফিরে এসেছেন?
– আর কত শাস্তি দিবে আমায় সুভা?
– কিসের শাস্তি বলুন তো? আমি আপনাকে কখনোই কোনো শাস্তি দেই নি।
– ক্ষমাও তো করো নি?
এবার মলিন হাসি হেসে তার দিকে তাকান তিনি। এক রাশ অভিমান নিয়ে কঠিন কন্ঠে বলেন সুভাসিনী বেগম,
– দোষটা কি আমার ছিলো? ক্ষমা পাবার মতো কাজ কি আপনি সত্যি করেছেন? নিজের বউ বাচ্চা ফেলে যখন দিনের দিন একজনের কাছে পড়ে ছিলেন তখন তো আপনার এই কথাটা মনে পড়েনি। আজ হঠাৎ ক্ষমার কথা মনে পড়লো। সেদিন তো খুব বড় গলায় বলেছেন আমার মতো নারীর সাথে এক ঘরে থাকবেন না আপনি। তাহলে আজ কেনো এই নারীর ক্ষমার প্রয়োজনীয়তা হলো আপনার?
– তুমি সেদিনও আমাকে ভুল বুঝেছো আজও। সাফিয়ার সাথে আমার তখন ও কোনো সম্পর্ক ছিলো না এখনো নেই। শুধু বন্ধুত্ব ব্যাতীত কোনো সম্পর্ক আমাদের কখনো ছিলো না। সেদিনো তোমাকে বোঝাতে চেয়েছি। তুমি বুঝো নি। ও অসুস্থ ছিলো বলেই আমি তার সাথে হাসপাতালে ছিলাম।
– তাই তো আমাদের ছেড়ে তাকে বেছে নিয়েছিলেন। আপনি হয়তো ভুলে যাচ্ছেন সেদিন আমার থেকে মুক্তিটা আপনি চেয়েছিলেন। আমি শুধু আপনার কথা রেখেছিলাম। সকল দায়িত্ব থেকে আপনাকে মুক্তি দিয়েছি। আপনি আমার কখনো ছিলেন ই না। আমি মরীচিকার পেছনে ছুটেছি কেবল।
সুভাসিনী বেগমের গলা কাপছে। ঠিক ভাবে কথাও বলে উঠতে পারছেন না। কোনো নারী তার স্বামীকে অন্য কারোর সাথে ভাগ করে নিতে পারেন না। তার ক্ষেত্রেও একই জিনিস ঘটেছিলো। ছাব্বিশ বছর পূর্বে নিজের সাজানো সংসার ভাঙ্গার ভয়ে রাজ্জাক সাহেবকে বাধা দিয়েছিলেন। রাজ্জাক সাহেবের কলিগ এবং বন্ধু ছিলেন সাফিয়া। তাদের মাঝের বন্ধুত্ব এতোটাই গভীর ছিলো যে মাঝ রাতেও সাফিয়া বেগম রাজ্জাক সাহেবকে ফোন দিতেন। সংসার ভাঙ্গার ভয় মনে জেকে বসেছিলো সুভাসিনীর বেগমের। তাই তাকে বাধা দিতে চাইছিলেন। কিন্তু এই বাধাই তার সংসারকে ভেঙ্গে ফেলবে কখনো বুঝতে পারেন নি। রাগের বশে ঘর ছেড়েছিলেন রাজ্জাক সাহেব। সুভাসিনী বেগম হয়ে গিয়েছিলো তখন একজন সন্দেহপ্রবণ, কন্ট্রোলকারী মহিলা যে তার বন্ধুত্ব সম্পর্ককেও সন্দেহ করে। অনলকেও নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। শুধু নিজের বাবা-মার জন্য পারেন নি। সময়ের সাথে সাথে রাগ,জেদগুলো ঠুনকো হতে লাগলো। আত্নগ্লানিতে ভুগতে লাগলেন রাজ্জাক সাহেব। আমরা রাগের বশে কতোভুলই না করি। ক্ষণসময়ের রাগে প্রিয় মানুষকেও কত কি না বলি। রাগটা পরে গেলে আফসোস করেও কুল পাই না। মাথানিচু করে রাজ্জাক সাহেব বলেন,
– বারবার ফিরতে চেয়েও ফিরতে পারি নি। কিন্তু তোমাদের কখনো ভুলি নি। প্রতিটা মূহুর্ত তোমাদের খোজ নিয়েছি। আচ্ছা তুমি তো জানতে আমি একটু রাগী,
– সে জন্যই আপনার পাঠানো ডিভোর্স পেপারে সাইন করি নি। ভেবেছি হয়তো ফিরবেন। আশা করেছি, অপেক্ষা করেছি। কিন্তু অপেক্ষার বাধটা ভেঙ্গে গেছে। ছাব্বিশটা বছর কেটে গেছে। এখন আমি নিঃস্ব হয়ে আছি। যখন আমার আপনাকে খুব দরকার ছিলো তখনই আপনাকে খুজে পাই নি। আচ্ছা কতটা বয়স ছিলো আমার বলুন তো? কি ভুল ছিলো আমার? এটাই যে আপনাকে হারাতে চাই নি। সর্বস্ব দিয়ে আটকে রাখতে চেয়েছিলাম এটাই তো। ভুল করেছিলাম, সেটার শাস্তি এতোটা কঠিন হবে বুঝি নি। যাক গে, এতোটা সময় আপনার ব্যাতীত আমি কাটিয়েছি, এখন আর নতুন করে স্বপ্ন দেখার ক্ষমতা বুড়ো চোখে নেই।
– সুভা, একা থাকতে থাকতে আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি। এটা আমার বুড়ো বয়সের ভীমরতি বলো কিংবা মৃত্যুর আগ ইচ্ছে, জীবনের শেষ পর্যায়ে পরিবার নামক সুখটাকে আবার আগলে ধরতে চাই। আচ্ছা সুভা তোমার কি ইচ্ছে হয় না?
রাজ্জাক সাহেবের কথা শুনে চুপ হয়ে যান সুভাসিনী বেগম। মান-অভিমানের এই খেলায় জীবন যে মৃত্যুর দারপ্রান্তে এসেছে এটাই ভুলতে বসেছিলেন। একটা গোলাকধাধার মাঝে পড়ে গেলেন তিনি। আচ্ছা চাইলেই কি ক্ষমা করা যায়? কিছু ভুলকে হয়তো চাইলেও ক্ষমা করা যায় না। কিংবা ক্ষমা করার সময়টা পেরিয়ে যায়।
রাত ৮টা,
সুভাসিনী বেগম ঘরে থাকার পারমিশন তো দিয়েছেন তবে এক রুমে তার কিছুতে থাকবেন না। ধারা চিন্তিত মনে বসে রয়েছে। বুড়ো বয়সে এখন ফুপাকে তো ড্রয়িংরুমে থাকতে হচ্ছে। অনলের কাছ থেকে সব শোনার পর ধারাও তার সিদ্ধান্তে একমত হলো। দোষ হয়তো রাজ্জাক সাহেবের ও ছিলো কিন্তু সুভাসিনী বেগমের ছিলো না এমনটা নয়। আর রাজ্জাক সাহেবের শরীরটাও ভালো নয়। হার্টের রোগ ধরা পড়েছে। লাঙ্গস ও দূর্বল এই অবস্থায় রাস্তায় ফেলে দেওয়াটা ছেলে হিসেবে দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া। কিন্তু সমস্যা হলো অনলদের বাসাটা অতি ছোট। দুটো রুম আর ড্রয়িং,ডাইনিং। এখন রাজ্জাক সাহেবকে কোথায় রাখবে ধারা বুঝে উঠতে পারছিলো না। তখন অনল একটা রেডিমেট খাট কিনে নিয়ে এসেছে। ফুপি এবং ফুপার সম্পর্কটা ঠিক কিভাবে করা যায় এটাই ভাবছে আর এক বড় বাটি আচার আর তরকারির চামচ নিয়ে খাটের উপর বসে আছে সে। চিন্তা করতে করতে আচার খাচ্ছে। আনমনে আচার খাচ্ছিলো তখন ই রুমে প্রবেশ ঘটে অনলের। ধারার হাতে এতো বড় বাটি দেখে অবাক হয়েই জিজ্ঞেস করে,
– তুই আচার খাচ্ছিস নাকি সাঁতার কাঁটছিস?
কথাটা শোনামাত্র তড়িৎ গতিতে অনলের দিকে তাকায় ধারা। অনল তার পাশে বসতে বসতে বলে,
– একেই লিলিফুট, এই হারে খেলে একটা ছোট খাটো ফুটবল হয়ে যাবি। এমনিতেও ফুটবল ই লাগে তোকে।
বলেই গাল টিপে দেয় ধারার। অনলের কথা শুনে বেশ ক্ষেপে যায় ধারা। আচারের বাটিটা ছেড়ে কোমড়ে হাত দিয়ে বলে,
– এই শোনো খোটা দিবে না, একদম খোটা দিবে না। কে বলেছিলো তোমাকে আমাকে এতো এতো দুধ, ডিম খাওয়াতে। ঠুসায় ঠুসায় খাওয়াবা আর এখন একটু আমার পছন্দের জিনিস খেলেই দোষ?
– দেখোছো প্রিন্সেস তোমার মাম্মাম কতোটা ঝগরুটে হয়ে গেছে। সারাক্ষণ এভাবে ঝগড়া করে তোমার বাবার সাথে।
অনলের কথায় একেবারে বেকুব বনে যায় ধারা। পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া অনল করলো আর মেয়ের কাছে ধারাকে দোষী বানাচ্ছে। এর সাথে কথা বলা মানেই অহেতুক কষ্ট। মুখ ফুলিয়ে চুপ করে বসে পড়লো ধারা। ধারার মুখ ফুলানো দেখে হো হো করে হেসে উঠে অনল। চুলগুলো এলোমেলো করে দিয়ে অনল তখন বললো,
– তুই এতো কিউট কেনো বলতো? আচ্ছা শোন কালকে চেকাপ আছে কিন্তু সকালে। উঠে পরিস। কুম্ভকর্ণের মতো ঘুমোলে হবে না।
– নিজে ঘুমায় আমাকে বলছে। দেখা যাবে আমার ই ডাকতে হবে। হাহ।
– ঠিক আছে মহারাণী। আমার ভুল। এই যে কান ধরলাম
অনলের কান ধরা দেখে মূহুর্তেই খিলখিল করে হেসে উঠে ধারা। লোকটাকে যে তার এতো ভালোলাগে বলে বুঝাতে পারবে না। অনল ধারার চঞ্চল হাসিকে মন ভরে দেখে। মেয়েটা ধীরে ধীরে মনে নিজের খুটি বসিয়েছে। মনের গহীনে নিজের বিস্তার করে নিয়েছে। এখন শুধু মনের কথাটা বলা বাকি________
সকাল ১১টা,
চেকাপ করিয়ে বের হয়েছে অনল ধারা। বাচ্চা এবং মায়ের রিপোর্টগুলো খুব ভালো এসেছে। তাই অনলের মন বেশ ভালো। রাস্তায় আইসক্রিম দেখেই ধারা আইসক্রিমের জিদ শুরু করলো। একেই কড়ারোদ, উপরে প্রেগ্ন্যাসির সময় একটু বেশি ই গরম লাগে। প্রথমে না করলেও ধারার মুখের দিকে তাকিয়ে জীবন বাজি ধরতে পারবে অনল। আইসক্রিম তো একটা সামান্য ব্যাপার। বাধ্য হয়ে আইসক্রিম কিনে দিতে হলো। দু হাতে দুটো আইসক্রিম নিয়ে বাচ্চাদের মতো খেতে লাগে ধারা। আর অনল এক দৃষ্টিতে তাকে দেখতে থাকে। তখন ই এক জোড়া চোখ ধারাকে মনোযোগ সহকারে লক্ষ্য করতে থাকে। এক রাশ বেদনা তার চোখে ফুটে উঠে।
ধারাকে বাসায় রেখে ডিউটিতে আসে অনল। মনটা আজ খুব ভালো অনলের; বাবাকে ফিরে পেয়েছে, ধারার শরীরটাও ভালো। এখন শুধু ডেলিভারিতে ঝামেলা না হলেই হয়। হঠাৎ……..
চলবে
[ পরবর্তী পর্ব ইনশাআল্লাহ আগামীকাল রাতে দিবো। দয়া করে কার্টেসী ব্যাতীত কপি করবেন না]
মুশফিকা রহমান মৈথি