#প্রেমঘোর
#পর্ব_৮১_
💜💜
Writer:Nargis Sultana Ripa.
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
সাদাদ নৌশিনকে ঝাপটে ধরে ঘুমিয়ে আছে।
দুজনেই বিভোর।
সুখের ঘুম বলে কথা।💜💜
রাফসা সাদের বুকের উপর মাথা রেখে শুয়ে আছে।সাদ রাফসার মাথায় একটা হাত রেখে অন্য হাত দিয়ে রাফসাকে জড়িয়ে রেখেছে।
দুজনেই একটা পাতলা চাদরে আবৃত।💜💜সারা রাত ঘুমাতে দেয় নি সাদ টা।পাগল হয়ে গিয়েছিলো বোধহয়।
সাদ আবারও রাফসার চুলগুলো সরিয়ে ঘাড়ে কিস করছে।রাফসার চোখ টা লেগে এসেছিলো প্রায়।সাদের দুষ্টুমিতে তন্দ্র টা কেটে গেলো।
“উমহু…..সাদ,প্লিজ একটু ঘুমাই……..”💜💜💜সাদ উল্টো হয়ে রাফসার উপর আবারও শুয়ে পড়লো।কোনো কথা ছাড়াই গলায় মুখ গুজলো।
নেশা কাটে নি এখনো বেচারার।
রাফসা সাদকে আটকাতে পারছে না আজ।যেনো কত দিন পর তাঁর বউকে কাছে পেয়েছে এমন একটা ভাব।
রাত তিনটার বেশি বাজে এখনো পাগলামি কমছে না।
“সাদ,কি করছো???পাগল হয়ে গেছো???”
“হুম……পাগল…….আদর তো আমি করছি….তোমার তাতে কি……”
“ছাড়ো না,সকাল হতে চললো,একটু না ঘুমালে সারা দিন থাকতে পারবো না।কত কাজ সারা দিন”
“হুশশশশশ…..কিসের কাজ।কে করতে বলে কাজ তোমায়।কাল থেকে যেনো কোনো কাজ করতে না দেখি।দরকার পড়লে আরও সার্ভেন্ট লাগাবো।”
সাদ রাফসার হাত টা টেনে নিয়ে বললো,”কত নরম হাতটা কে শক্ত করে ফেলতেছো কাজ করতে করতে।কাল থেকে শুধু আমাকে আর ছেলেকে সময় দিবে।নো কাজ।….”
“আচ্ছা….করবো না।এখন তো সরো….”
“উমহু,বলছিলাম না সাত বছর আগে যা করেছিলাম আজ তাই করবো……..
অবশ্য সে দিন কষ্ট হচ্ছিলো তোমার একটু।প্রথম ছিলে তো।ইশশশশ সারা শরীরে দাগ করে দিয়েছিলাম রে বউ……”
রাফসা লজ্জা পেয়ে বললো,
“ধ্যাত…….আজে বাজে কথা সব……”
“আচ্ছা!!!!তাহলে আজ আরও দাগ করি নাকি!!!!”
বলেই ঠোঁটে চুমুর বদলে প্রথমেই বিট দিতে শুরু করলো।রাফসা সামলাতে না পেরে ইচ্ছামতো খামচি দিয়ে চলেছে।তবুও সাদ থামছে না।ঠোঁটের আশে পাশেও কামড়ে দিচ্ছে।
গলায়ও বিট বসিয়ে দিচ্ছে।
রাফসা বারবার হার মানছে সাদের কাছে।চুল খামছে ধরে সাদকে গলার আরও গভীরে নিয়ে যাচ্ছে।কোনো বারণ নেই।না আছে কোনো বাঁধা।দুষ্টুমি করতে করতে সাদ,রাফসাকে নিজের বুকের নিয়ে একসময় ঘুমিয়ে যায়।
আযান দেয় নি এখনো।ফোনের আওয়াজে ঘুম ভাঙে সাদ আর রাফসার।
রাফসার ফোন বাজচ্ছে।
“ওহ্ এতো রাতে আবার কে…বউকে নিয়ে একটু মিষ্টি আদর করবো তার উপায় নেই……..”(ঘুম ঘুম গলায় বললো সাদ)
“দেখি,উঠতে দাও…..এতো রাতে কে ফোন করলো আবার……”
“উঠতে হবে না……”
সাদ রাফসাকে বুকে নিয়েই হাত বাড়িয়েই বেড সাইড টেবিল থেকে রাফসার হাতে ফোন টা দিলো।
“সাড়ে চারটা বাজে,আর পাপার ফোন এতো রাতে???”
রাফসা জলদি কলব্যাক করলো,
“হ্যালো,পাপা।কি হয়েছে???অরূপ ঠিক আছে তো??”(ঘাবড়ে প্রশ্ন করছে রাফসা)
সাদ রাফসার কথা শোনে রাফসাকে নিয়ে উঠে বসলো।প্রশ্ন করলো,
“কি হয়েছে??”…….”কি জানি……পাপা,হ্যালো…….অরূপ ঠিক আছে তো…..”
“হ্যাঁ হ্যালো…..শুনতে পাচ্ছো??”
“হ্যাঁ পাপা,শুনতে পাচ্ছি….বলছি অরূপ ঠিক আছে তো…….”
অরূপের কান্নার আওয়াজ ভেসে আসলো ওপাশ থেকে।
“পাপা,ও কাঁদছে কেনো???”
“চিন্তার কিছু নেই,বাসায় যাবে এখন বায়না ধরেছে।তোমার মা বুঝিয়ে শান্তত করেছে।এখন আবার কান্না শুরু করেছে তোমার সাথে কথা বলবে।নাও কথা বলো….”
“দাও দাও……(সাদের দিকে তাকিয়ে বললো)…আগেই বলেছিলাম!!!ছেলে কাঁদছে এখন…..”
ওপাশ থেকে অরূপ ফোন কান্না নিয়ে কান্না কন্ঠে বলে উঠলো,”আম্মুমুুমুমুমু………”
ধুক করে উঠলো রাফসার বুক।
“বাবা……..কাঁদছো কেনো????”
“আমম্মু……..আমমম্মু……”
“বাবা,কাঁদে না সোনা……..ও বাবা নানু,নানু ভাই আছে তো সেখানে কাঁদছো কেনো বাবু…..আম্মুর কষ্ট হয় তুমি কাঁদলে…..”
“আম্মু আমার কষ্ট হচ্ছে……তুমি আসো…..”
“আব্বু আমার কাঁদে না সোনা।কষ্ট হবে না বাবু,ঘুমাও এখন।আম্মু প্রমিস করছে সকাল সকাল এসে যাবে তোমার কাছে”
“ঘুমিয়েছিলাম আম্মু,তোমাকে ছাড়া হয় না ঘুম।চলে গেছে……”(কান্না করছে এখনও অরূপ)
“বাবা,আমায় ছাড়া এতো কষ্ট হচ্ছে সোনা…তাহলে আসলে না কেনো তোমার সন্ধ্যায়??”
“আব্বু তো আসে নি,নানুভাই আব্বুকে আসতে দেয় নি।তখন তো আমার কষ্ট হয় নি।এখন হচ্ছে
আসো তুমি আম্মু।এখনি আসো।আসো আসো আসো আম্মু……আম্মুমু…..”
রাফসাও কেঁদে দিলো বলে…..চোখে পানি এসে গেছে রাফসার।সেটা দেখে সাদ রাফসার কাছ থেকে ফোন নিয়ে নিলো।রাফসা সাদের বুকে মুখ রেখে এবার আর কান্না আটকে রাখতে পারলো না।
সাদ অরূপের সাথে কথা বলছে,
“আব্বু,তোমার আম্মকে নিয়ে সকালেই এসে যাবো…..”
“আব্বু,এখনি আসো….আমি বাসায় যাবো…..”
“বাবাই আমরা এখনি রওনা দিবো আসতে তো সময় লাগবে।তুমি ততক্ষণ তোমার নানুর কাছে ঘুমাও….”
“আম্মুকে ছাড়া ঘুম আসে না আব্বু……”
“বাবা,একটু ঘুমাও…..তোমার আম্মু আর আমি তুমি ঘুম থেকে উঠার আগেই এসে যাবো…….”
সাদ অরূপের সাথে কথা বলছে।অরূপ কাঁদছে না আর।রাফসা সাদের বুক থেকে সরে গিয়ে এক রকম দৌঁড়ে একটা শাড়ি নিয়ে ওয়াশরোমে ডুকে পড়লো।
পনেরো মিনিটের মতো হয়েছে।তাড়াহুড়ো করে বরিয়ে এলো।
সাদ ফোন বুকে নিয়ে শুয়ে আছে দেখেই মাথা টা গরম হয়ে গেলো রাফসার।
“এখনো শুয়ে আছো তুমি??উঠো,ফ্রেস হও…..আর তাড়াতাড়ি করে গাড়ি বের করো……..”
সাদ কিছু না বলে রাফসার দিকে কেমন একটা ভাব নিয়ে তাঁকিয়ে আছে।
“আতেলের মতো চেয়ে আছো কেনো…..উঠো প্লিজ……আমার ছেলে কাঁদছে…..”
“মানে কি??আযান দেয় নি এখনো।।।এখনি শশুড় বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিবো???”
“সাদ,ছেলে কাঁদছে….আর তুমি এখন এসব বলছো??”
“আরে এখন শান্ত হয়েছে,এসো ঘুমাই একটু….সাত টায় রওনা দিবো নি………নয় টায় পৌঁছে যাবো……”
রাফসা হাতের টাওয়েল টা সাদের শরীরে ছুঁড়ে দিয়ে বললো,
“যেতে হবে না তোমায়।ঘুমাও তুমি……..”
হেয়ার ড্রায়ার নিয়ে তাড়াতাড়ি চুল শুকিয়ে নিচ্ছে।সাদ দেখে যাচ্ছে রাফসা কি করতে চলেছে।চুল টা কোনো রকমে খোপা করে হিজাব কোনো রকমে প্যাঁচ দিয়ে নিলো শুধু।
কি যেনো খুঁজচ্ছে এখন।
ড্রয়ার,টেবিলের উপর সব জায়গায় কিন্তু পাচ্ছে না।
অবশেষে সাদকে ঝাড়ি দিয়ে বললো,
“গাড়ির চাবি কোথায়???”
মুঁচকি হাঁসলো সাদ,জবাব না দিয়ে কাঁথার ভেতরে মুখ ডুকিয়ে নিলো।
রাফসা আগুন হয়ে আছে একদম।কাঁথা টা এক টানে সরিয়ে দিলো সাদের শরীর থেকে,রাগে কষ্টে চোখে পানি এসে গেছে বেচারীর।
“চাবি কোথায়???কানে যায় না আমার কথা???ছেলে কাঁদলো ফোনে,কোনো ইনটেনশন হলো না তোমার???এখনো শুয়ে আছো….আর চাবি আমি চাইছি তবুও দিচ্ছো না……তুমি চাবি দাও আমি একা যেতে পারবো…….”
“বললাম তো সাত টাই……”
রাফসা নিজের ঠোঁট কামড়ে ধরে,কান্না শুরু করলো,
“দিবে না তুমি???সাত টায় না আমি এখনি যাবো……”
“আরে,আবার!!!!!!”
“চাবি দাও তুমি……যাওয়া লাগবে না তোমার……আমার ছেলে আমি একাই যাবো……”
বাধ্য হলো সাদাদ বিছানা ছেড়ে উঠতে।
“আরে পাগলী,ঘুমাচ্ছে তোমার ছেলে……”
“সরো তুমি,একদম দরদ দেখাতে আসবে না…..চাবী দাও আমায় না হলে আমি হাঁটা শুরু করবো….পাঁচ টার পরেই বাস পাবো………”
“আরে আরে,,,কোথায় যাচ্ছো…..মা ছেলে পারোও বটে……..পাঁচ মিনিট দাও গোসল টা সেরে আসি।রাতে কম কিছু করি নি….. গোসল টা করা দরকার তো…..”
“যাবে তুমি???”(ধমক দিয়ে)
“আরে যাচ্ছি আস্তে……এতো আদর করে কি লাভ হলো,সকাল না হতেই ঝাড়ি…..”
“তাড়াতাড়ি যাও তো…..”
.
সাদ সাওয়ার নিলে আযান দিতে শুরু করে।
“আচ্ছা,তাহলে নামায টা পড়ে যাই বাসা থেকে”(রাফসা)
“হ্যাঁ।সেটাই ব্যাটার…..”
দু জনে একসাথে নামায পরে তাড়াহুড়ো করে রোম থেকে বেরিয়ে গেলো।সাদ যতই মুখে রাফসার সাথে উল্টাপাল্টা বলুক ছেলের জন্য ওর মনটাও খুঁচখঁচ করছে।
“আমি গাড়ি বের করছি,তুমি ততক্ষণে কাউকে বলে আসো যে আমরা যাচ্ছি……..”
“আচ্ছা,আমি নৌশিনকে বলে আসছি……”
নৌশিনের রোমে নক করতেই সাদাদ এসে দরজা খুলে দেয়।উদ্বিগ্ন হয়ে প্রশ্ন করে,
“কি হয়েছে ভাবী,এমন দেখাচ্ছে কেনো তোমায়???”
“অরূপ না কাঁদছে খুব,ফোন দিয়ে কথা বলছিলো আর কাঁদছিলো,আমাকে ছাড়া নাকি ওর ঘুম আসে নি…….আমি আর তোর ভাইয়া যাচ্ছি………মা কে এতো সকালে ডাকলাম না……বলিস তুই…..”
“আচ্ছা,আচ্ছা…..ব্যাপার না যাও তোমরা…….সাবধানে যেও……..”
রাফসা কিছু না বলে জলদি করে নিচে নেমে এলো।রাফসার এমন ছুটাছুটি দেখে হাঁসলো সাদাদ।আনমনে মুখ থেকে বেরিয়ে এলো”হাইরে মা!!!!”
.
নৌশিন সাওয়ার নিচ্ছিলো এতক্ষণ।ভাগ্যিস সাদাদকে জাগিয়ে গিয়েছিলো না হলে রাফসা নক করতে করতে কাহিল হয়ে যেতো তবুও সাদাদের ঘুম ভাঙতো না।
নৌশিন চুল মুছতে মুছতে এসে সাদাদকে প্রশ্ন করে,
“কে এসেছিলো গো??”
“ভাবী….”
“এতো সকালে??কিছু বললো??”
“অরূপ নাকি কান্নাকাঁটি করছে তাই যাচ্ছে সেখানে,এটাই বলে গেলো….”
“কাঁদছে অরূপ!!!!!ভাইয়া টাও না কি হতো ছেলে টাকে সন্ধ্যা সময় নিয়ে আসলে……”
“বোধহয় রোমান্স পেয়েছিলো…..”(হাসতে হাঁসতে বললো সাদাদ)
“মানে???”
সাদাদ নৌশিনের কাছে দাঁড়িয়ে ওর হাত থেকে টাওয়েল নিয়ে চুল মুছে দিচ্ছে আর বলছে,
“ভাবী,তো সারাক্ষণ ছেলে নিয়েই থাকে।আমার ভাই টার প্রতি নজর দেওয়ার সময় কোথায় পায়?সব সময় তো ছেলে ওনার।রাতেও মে বি আমার ভাইকে কোনো সুযোগ দেয় না।তাই ভাইয়া এই সুযোগ টা কাজে লাগিয়েছে…….রাত ভর সময় টা হয়তো একান্ত নিজের করে পেতে চেয়েছে…..”
নৌশিন সাদাদের হাতে ঘুষি মেরে বললো,
“অসভ্য কোথাকার……..”
“আরে এমনি অসভ্য হয়ে গেলাম……”
“শোনো ভাবীর বাবা না করেছিলো ভাইয়া যাওয়ার জন্য তাই ভাইয়া যায় নি….আর ওনি আছে…..”
“আরে সেটাই তো সুযোগ ভাইয়ার……”
“সাদাদ!তোমার লজ্জা করে না ভাইয়া,ভাবীর সর্ম্পকে বলতে এভাবে…..”
“লজ্জার কি আছে?তুমি আমি যা করি ওরা তো তাই করে…..”
“আসলেই তুমি না…….”
“এই জানো,আগে তো বুঝতাম না….এখন বুঝি….”
“কি??”
“আরে মা-বাবা না মাঝে মাঝে আমাকে আর আপুকে দাদুর কাছে রেখে বাংলোতে কোনো কাজে যেতো……..আর ভাইয়া তো স্কুলেই থাকতো……..”
“সাদাদ!!!!!!!মা-বাবা?????”
“তো কি হয়েছে????আমার বাপ টা বেশি ছিলো জানো…..অনেক দিন আমি দাদুর কাছে থাকবো না বলে কান্না কাটি করতাম।আর মা আমাকে ঘুম পাড়িয়ে রেখে যেতো দেন বাবা মাকে নিয়ে ওদের রোমে চলে আসতো…..আমি তো উঠেই মা কে পাশে না পেয়ে চিৎকার শুরু করতাম…….আর একটা জিনিস তোমাকে বলা হয় নি,”আমি তো রাতে বাবা,মার সাথে ঘুমাতাম ক্লাস টু অবদি,আমারও না মাঝখানে থাকতে গরম লাগতো অরূপের মতো।তাই মায়ের পাশে ঘুমাতাম।বাট মাঝে মাঝে মাঝ রাতে উঠে যখন বুঝতাম,মা আমাকে জড়িয়ে না ধরে বাবার কাছাকাছি আছে তখন উঠে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করতাম।কারণ এটা ভাবতাম যে,মা শুধু আমাকে আদর করবে আর কাউকে না।তাই কতদিন তো বাবাকে আমার জেদের জন্য অন্য রোমেও থাকতে হয়েছে।তখন আপু আসতো থাকতে মায়ের কাছে।আপু তো তিন ইয়ার বড় আমার চেয়ে।।।আমার জন্য বেচারীও মায়ের কাছে থাকতে পারতো না…..যখন আসতো তখনি আমি কান্না কাটি করতাম।ভাবতাম ও আসলে মা আমাকে আদর কম করবে।আর আপু তো আমাকে অনেক সময় রাগে দুঃখে পিটিয়েছে পর্যন্ত।তবে আপুকে বাবা যা আদর করতো।অফিস থেকে বাসায় ডুকার আগে থেকেই “নিপা মা,নিপা মা….”শুরু হয়ে যেতো…….।তবে আপু আর ভাইয়াকে মায়ের পাশে সহ্য করলেও আমি বাবাকে মায়ের পাশে সহ্য করতাম না।বাবা মায়ের পাশে বসে হাত ধরলেই আমি মায়ের হাত টা নিয়ে আমার বুকে জড়িয়ে ধরতাম।আর তখন বাবা”সিট,”বলে উঠে যেতো সেখান থেকে।আর মা হাঁসতো শুধু।……আহা রে আগে যদি বুঝতাম।রোমান্স কি জিনিস তাহলে তো বাবাকে এতো কষ্ট দিতাম না।বেচারা আমার জন্য তাঁর বউকে ঠিকমতো পেতো না……”
নৌশিন তো সাদাদের কথা শোনে হা।ছোটো বেলা থেকেই সাদাদ এতো পাঁচি!!!!আর এখনও সে সব কাহিনী মনেও আছে!!!!
“এই বউ,আমার শশুড় শাশুড়ী এমন করতো না কি???আমার শশুড় এখনো যা ইয়াং দেখতে।করতো নাকি তোমার শশুড়ের মতো।জ্বালাতে তুমি???”
নৌশিন কিছু না বলে,সাদাদের হাতে টাওয়েল টা রেখে দিয়ে ড্রসিং টেবিলের সামনে বসে যায়।
“আরে বউ বলো না।জ্বালাতে তুমি ওদের???”
নৌশিন অসহ্য হয়ে গেছে।এই পাগলের কথা বার্তা শোনে।চেঁচিয়ে উঠলো এবার,
“সাদাদদদদদদদ……”
“আস্তে ভাই…..”
“যাও সাওয়ার করো…..বদ কোথাকার।আর শোনো আমি তোমার মতো হিংসুটে ছিলাম না।খুব শান্ত ছিলাম।সারাক্ষণ ভাইয়ার সাথে মজা করতাম।বাবার কাঁধে চড়ে ঘুরতাম।কখনো বাবার বুকে কখনো মায়ের বুকে ঘুমাতাম।আর আমি না ইচ্ছা করেই কোনো দিন ভাইয়ার সাথে ঘুমাতাম।আর সকালে উঠে দেখতাম বাবা পাশে আমি আর মায়ের পাশে ভাইয়া শুয়ে আছে।বাবা-মা পাশাপশি বসলে আমি বাবার হাত মায়ের হাতে ধরিয়ে বলতাম”বাবা,তুমি আমাকে যেভাবে আদর করো,মাকেও একটু করো….”
তখন,বাবা,মা দুজনেই হাঁসতো কিন্তু বুঝতাম না তখন বাবা কেনো মাকে আদর করে না আমার মতো বাট এখন তো বুঝি বাবা আমাকে সবার সামনে আদর করলেও মাকে আলাদা করে করতো…….”
“আরে,বউ এতো ভালো ছিলে তুমি?????হায় হায়……”
“তোমার মতো না…. ছোট থেকে বাঁদড়ামি!!!!মা বাবাকেও শান্তি দাও নি আর আপুকেও না।”
সাদাদ নৌশিনকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললো,
“আমার ছেলে মেয়েকেও ওদের নানু বাড়ি পাঠাবো বেশি বেশি।বলা তো যায় না যদি ওদের বাবার মতো হয় তাহলে তো আমার বউকে আমি আদরি করতে পারবো না….”
নৌশিন সাদাদের দিকে আয়না দিয়ে রূক্ষ দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে আছে।পেটে কনুই মরে বলছে,
“মোটেই না,আমার বেবী অল টাইম আমার কাছে থাকবে।।।যখন আমি যাবো তখন যাবে আমার সাথে ওদরে নানহ বাড়ী”
“ইশশশশ বললেই হলো,তোমার ছেলে হলে ওকে তো আমি নানু বাড়ী রাখবো সপ্তাহে দু দিন।আম সিউর ও তোমাকে আমার কাছে আসতে দিবে না।আর মেয়ে হলে সপ্তাহে কেনো মাসেও যেতে দিবো না…..”
“কেনো??কেনো??”
“কারণ আমার বিশ্বাস,ও তাঁর মায়ের মতো কিউট আর শান্ত-মিষ্টি মেয়ে হবে।যে তার বাবাকে বলবে তাঁর মাকে ওর মতো আদর করতে…..”
হাঁসলো নৌশিন সাদাদের কথা শোনে।পাগল একটা!!!
“হয়েছে যাও,এবার সাওয়ার নাও…..নামায পড়তে হবে তো….”
সাদাদ নৌশিনের ঘাড়ে একটা চুমু খেয়ে ছেড়ে দিলো ওকে।বললো,
“যো হুকুম মেরে আঁকা…….”
মুঁচকি হাসলো নৌশিন আবারও।
“আচ্ছা!!!!যাও এবার…..”
.
সকাল সাত টা বাজে প্রায়।অভ্যাস বসত এই সময়ে ঘুম থেকে উঠে যায় অরূপ।চোখ খুলতেই মুখে খুশির ঝলক।
কারণ ওর পাশে ওর মা শুয়ে আছে।অপর দিকে চোখ ফিরাতেই আরও খুশি হয়ে যায় ওর বাবাকে দেখে।দুপাশে দুজন মাঝখানে অরূপ।সাদ আর রাফসা এসেছে একটু আগে।অরূপ ঘুমাচ্ছিলো,রাফসা ইচ্ছমতো আদর করেছে ঘুমন্ত ছেলেকে।
রাতে ঘুমাতে পারে নি,তাই শুয়ার পর পরই চোখ লেগে এসেছে।
অরূপ এতটাই খুশি হয়েছে বলার বাইরে।ওর মায়ের বুকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে জোরে চিৎকার করে বললো,
“আম্মু……” আর গালে সমানে চুমু দিচ্ছে।সাথে সাথে ঘুম ভেঙে যায় সাদ আর রাফসার।
রাফসাও ছেলে জড়িয়ে ধরে।
“আম্মু……তুমি আসো নি কেনো????আমি কত্ত কেঁদেছি….”
“পাগল আমার,এই তো এসেছি।তুমি কেনো কাঁদছিলে???নানু-নানুভাইয়ের কাছে থাকা যায় না বুঝি??আর তোমার বড় আম্মুও তো ছিলো…..”
“ওরা তো ছিলোই তুমি তো ছিলে না।নতুন বউও ছিলো না।আর আব্বুও তো ছিলো না আম্মু…..”
“মানিক আমার,আর এমন হবে না।তোমাকে একলা কখনো পাঠাবো না।তুমিই তো আসার জন্য বায়না ধরেছিলে।”
“আর আসবো না।তুমি আসলেই আসবো।তোমাকে ছাড়া ভালোই লাগে না আমার।নানুভাই অনেক মজা এনেছে আমি একটাও খাই নি।নানু জোর করে শুধু একটা ডিমম খাওয়াতে পেরেছে।তোমাকে ছাড়া খেতেও ইচ্ছা করে নি আম্মু।”
রাফসা ছেলের কপালে চুমু খেয়ে বললো,
“যখন আমি থাকবো না,তখন কি করবে শুনি??”
সাদ রাফসার এই কথা শোনে অগ্নিদৃষ্টি নিয়ে ওর দিকে তাঁকিয়ে আছে…….
“কেনো আম্মু??কোথাও যাবে তুমি??”
“বারে মানুষ তো এক সময় হারিয়ে যায়।আমিও তো একদিন হারিয়ে যাবো….”
অরূপ রাফসার গলায় মুখ লুকিয়ে বলে,
“না আম্মু,তুমি হারাবে না…..তুমি সব সময় আমার কাছে থাকবে……”
“আচ্ছা….আচ্ছা থাকবো….”
পাশ থেকে সাদ বলে উঠে,
“আর কোনো দিন যদি এমন কথা শুনি তাহলে কি হবে চিন্তাও করতে পারবে না…..”
রাফসা ছেলেকে জড়িয়ে ধরেই বললো,
“আমি জাস্ট ওকে বুঝাচ্ছিলাম…..তেমন ভাবে বলি নি…..”
“নেক্সট যেনো না শুনি…..”
“আচ্ছা!!!সরি…..আর বলবো না…….”
“মনে থাকে যেনো…….”
অরূপ ওর মায়ের বুক থেকে উঠে।বিছানার মাঝখানে বসে পড়ে।তারপর কি যেনে কি ভেবে ওর আব্বুর গলা জড়িয়ে ধরে লম্বা একটা কিস করে গালে।ওর আম্মুর দিকে তাঁকিয়ে একগাল হেঁসে দিয়ে বলছে,
“আম্মু,আব্বুর রাগ কমে গেছে….তোমার হয়ে আমি আদর করে দিয়েছি……”
হাঁসছে রাফসা।
সাদ ছেলেকে বুকে জড়িয়ে অনেকক্ষণ আদর করার পর রাফসার দিকে তাঁকিয়ে বললো,
“তোর মাকে আদর করতে বল একটু আমাকে……সাথে তোকেও করুক…..”
অরূপ রাফসার হাত ধরে টানছে,”আম্মু আসো এদিকে……এখন তুমি আব্বুকে আর আমাকে আদর করো.।।।”
“এই না না……তোমরা দুজন দুজনকে আদর করো……আমি উঠবো এখন……”
“না আম্মু একটু আদর করো…..বেশি না…..”
“আরে করলে কি হয়…..তোমার অরূপকে আদর করবে আমি চোখ বন্ধ করে রাখবো আর আমাকে আদর করবে অরূপ চোখ বন্ধ করে রাখবে।তাই না অরূপ??”
“হ্যাঁ হ্যাঁ….আব্বু তুমি চোখ বন্ধ করো আম্মু প্রথমে আমাকে আদর করবে……..পরে আমি চোখ বন্ধ করবো আর আম্মু তোমাকে আদর করবে….”
“ওকে ডান,তোর হয়ে গেলে আমাকে বলিস কিন্তু চোখ খুলবো…..”
“আরে কি হচ্ছে…….”
“প্লিজ আম্মু একটু একটু…দেখো আব্বু চোখ বন্ধ করেছে……”
অবশেষে বাবা-ছেলের পাগলামোতে হার মানলো রাফসা।ছেলের দু গালে আর কপালে কিস করে দিলো।
অরূপও ওর মাকে কপালে,নাকে কিস করলো।
“আব্বু,আমার হয়ে গেছে…..এবার তোমার টা
……”
চোখ খুললো সাদ।রাফসা কি করবে ভাবছে,ছেলের সামনে কি ভাবে কি!!!!!
রাফসা উঠে চলে আসতে চাইলে অরূপ আর সাদ দুজনেই টেনে ধরে ফেললো।
“এটা তো হবে না,শুধু নিজের ছেলেকেই আদর।আর শাশুড়ির ছেলেকে কিচ্ছু না….”
“সাদ!!!!কি হচ্ছে….ছেলের সামনে…..”
“আরে,অরূপ তো দেখবে না….চোখ বন্ধ থাকবে ওর…..তাই না অরূপ তুই চোখ অফ রাখবি না??”
“হ্যাঁ, আম্মু্…তুমু একটু আদর করো আব্বুকে আমি এই যে(হাতে চোখ বন্ধ করে)চোখ বন্ধ করলাম…..”
এই সুযোগে সাদ রাফসাকে এক টানে নিজের বুকের উপর ফেললো।রাফসার দিকে তাঁকিয়েই বললো,
“চোখ খুলিস না অরূপ,আমার হয়ে গেলে তোকে বলবো।”
“ওকে আব্বু…..খুলবো না….”
রাফসা সাদকে চিমটি দিচ্ছে।তবুও ছাড়াতে পারছে না।সাদ রাফসার চুলের পেছনে মুঠির মতো করে ধরে রাফসাকে বালিশের উপর শুইয়ে দিয়ে…ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে দিলো।চুমুর সাথে সাথে নরম ঠোঁটে কামড় না দিতে কোন হাজবেন্ডের ভালো না লাগে!!
সাদও তাই করছে।
দু তিন মিনিট যাবত সাদ একি কাজ করে যাচ্ছে।রাফসা কোনো ভাবেই ছাড়াতে পারছে না।এর মাঝে অরূপ বলে উঠলো,”আব্বু,খুলবো চোখ???”
হোশ আসে সাদের যে ছেলে রোমে।এই সুযোগে রাফসার গলায়ও একটা চুমু দিয়ে দেয়।রাফসা ভেবেছে ছেড়ে দিবে।জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে।কিন্তু সাদের মাথায় অন্য কিছু।গলা থেকে মুখ নিয়ে আবারও রাফসার ঠোঁটে লেহন দিচ্ছে।
অরূপ আবারও চোখ খোলার কথা বললে,ইচ্ছা করেই রাফসাকে ব্যাথা দেওয়ার জন্য জোরে জোরে দুটো কামড় বসিয়ে দেয়।রাফসা না পারছে চিৎকার করতে,না পারছে বাঁধা দিতে।ছেলের সামনে ঐসব আওয়াজও মুখ দিয়ে আসছে না।এই সুযোগটাই সাদ কাজে লাগিয়ে এতো জোরে দুটো কামড় বসিয়ে অবশেষে শান্ত হলো।রাফসাকে ছেড়ে দিয়ে দপাস করে শুয়ে পড়লো সাদ।রাফসার সব শক্তি চলে গেছে।
জীবন আর একটু হলেই শেষ হতো বোধহয়।এভাবে কেউ ঠোঁটে!!!!আর কামড় প্রথম থেকে দিলেও লাস্ট কামড় দুটো তো ঠোঁটের বারো টা বাজিয়ে দিয়েছে।রাফসার ঠোঁট কেঁটেও গেছে একটু।
পরে হয়তো ফুলেও যাবে।
সাদ রাফসার অবস্থা দেখে মুঁচকি হাঁসলো।রাফসা ঠোঁটে হাত দিয়ে হাঁপাচ্ছে।
সাদ রাফসার ঘন শ্বাস নেওয়ার কারণে বুকের দিকে নজর দিয়ে বললো,
“হবে নাকি??”বলেই নিজের নিজের ঠোঁটে লিক করলো।
রাফসার আর বুঝতে বাকী রইলো না কিসের কথা বলছে সাদ।লজ্জায় তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে উঠে এক দৌঁড়ে রোমে বাইরে।আর অরূপ আর অপেক্ষা করতে না পেরে চোখ খুলে তখন।
“ওফফ,আব্বু এতক্ষণ লাগে???আম্মু চলে গেলো??”
সাদ অরূপকে বুকে নিয়ে বললো,
“হ্যাঁ রে বাপ….এতোক্ষণ লাগে……..তোর আম্মু বেশি আদর করছিলো তো আমায় তাই…..”
“ও….কিন্তু বেশি কেনো??”
“আমি যে তোর চেয়ে বড়….তাই……”
“ওওওওও
……..”
“হুম…চল আমরা আর একটু ঘুমাই…….”
“ওকে আব্বু….তাহলে মাথায় হাত বু্লিয়ে দাও……”
রাফসা এক দৌড়ে ওর দাদীর রোমে।দাদী ঘুমাচ্ছে….এই সুযোগে আয়নার নিজেকে দেখছে।ইশশশশশ কাল সারা রাত!!!আর এখনও ঠোঁটে।
ভাবতেই বিয়ের পরের কথা মনে পড়লো রাফসার।
সাদ বিয়ের দিন রাতে!!!
কাল আবারও সেটা রিপিড করেছে।যদিও এমন অনেক করেছে সাদ।তবুও রাফসার সাদরে এই সারা রাত জেগে আদর করা টা কেমন অদ্ভুত লাগে।নিজেই ভাবে ক্লান্ত হয় না নাকি সাদ।তবে রাফসার খুব ভালো লাগে সাদের এসব পাগলামী।
রাফসা আঁচল টা সরিয়ে নিলো।কাল রাতে সাদের ভালোবাসার চিহ্ন গুলো ফুঁটে আছে শরীরে।হেঁসে দিয়ে চুল টা খুলে দিলো।ঠোঁটে একটু আগে যা করলো।লাল হয়ে গেছে পুরো।কেঁটেও গেছে একটু তবে সেটা বাইরে থেকে বুঝা যাচ্ছে না।
এমন সময় কারও সর্প্শ পেয়ে পেছন ফিরতেই দেখলো ওর দাদী বাঁকা হয়ে দাঁড়িয়ে রাফসার দিকে তাঁকিয়ে হাঁসছে। রাফসা লজ্জায় জড়িয়ে ধরলো দাদীকে,”দাদী……..”
“আহা রে….লজ্জা!!লজ্জা!!!”
কিছু দাঁত পরে গেছে দাদীর তাই ভাঙা আওয়াজ আসে কথার।
“দাদী……”
“দেখি দেখি…..আমার নাতনীর এতো লজ্জা…..”
নিঁচু হয়ে হাঁসছে রাফসা।
“ইশশশশ,বিয়ে হুলো এতো বছর।একটা তো বেরও করছিস।তারপরও এতো…… জ্বালায় আগের মতোই???
শরীর দেখি আরও ত্যানা ত্যানা করে ফেলছে……এমনিতেই আমার নাতনী কত নরম….বেহায়া ছেলেকে সুযোগ টা ছাড়ে নি আর…..তা হ্যাঁ রে…..শক্তি কমে না তোর মরদের???”
ইশশশশ রাফসা যেনো মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে।কি সব বলছে দাদী।
“বুড়ি,ভালো হবে না কিন্তু…..”
“রাখ তো ছুড়ি,ঐ চায় নাকি আরও দু একটা ছাও????”
“দাদী,বেশি করতেছো তুমি…..”
“চুপ কর তো…..আয়নায় ভালো করে দেখ…..ঠোঁটে তোর মরদের কামড়ের দাগ…..(আঁচল টা একটু সরিয়ে,চশমা রা ভালো করে নিলো)আহা রে নাতনী টা রে কি করছে আমার……”
“বুড়ি তুমি না…..”
“আরে শোন শোন….এতো লজ্জা পাস কেনো???চায় কিছু আরও????এতো আদর করে দে আরও কিছু……”
“ওফফ…..সরো তো….বুড়ি বেশি যুবতী হতে চাও নাকি???”
“হইলে তোর টা দিবি নাকি???”
“দাদী!!!!!!”
“হা হা হা……মজা করি রে মজা করি….কত দিন পর আসলি…..পাই তো না তোরে…..”
রাফসা জড়িয়ে ধরলো ওর দাদীকে।দুজনেরই পরশ আবেশে চোখে পানি এসে গেছে।দু জনেই স্বাভাবিক হয়ে নিলো।রাফসার দাদী রাফসার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো,
“কেমন আছিসস??”
“খুব ভালো দাদী….খুব….তুমি??”
“আমিও……আদর করে এখনো???”
“হুম……”
“চায় আরও কিছু….তুই না বলছিলি মেয়ের খুব শখ ওর….”
“কালকেও বলছিলো।এবার নাকি মেয়ে লাগবেই……”
“কি বললি তুই???”
“কি আর বলবো……শোনে আমার কথা!!!”
“ও তারমানে আদায় করে নিবে……তোর কোনো ইচ্ছা নাই??”
“ইশশশশ….আছে তো…..একটা পুতুলের মতো মেয়ে হবে……রাজার মতো তো আছে একজন…..আরেকটা রানী হলে সব আশা পূরণ আমার…..”
“দিবি দিবি,যা চায় তাই দিবি….তোরে কি কম দেয় নাকি…..তোরে যা সুখ দেয় তুইও দিবি সব
…..”
“দাদী…….”(আবারও জড়িয়ে ধরলো)
“হুম,খুব তাড়াতাড়ি যেনো শুনি তোর মরদের আশা পূরণের কথা…..”
মুঁচকি হাঁসলো রাফসা।
“আচ্ছা,যা এখন….তোর মায়ের কাছে যা।ভালো করে কথাও বলিস নাই হয়তো…..আর বাবুন(অরূপ) তেমন কিছু খায় নাই তোকে ছাড়া।ওর জন্য কিছু কর তাড়াতাড়ি।বাপরেও যেমন আঁচলে বাঁধছোস,ওর পোলা রেও মায়ায় আটকাইছিস….”
কিছু বললো না রাফসা।হাঁসলো শুধু।
“হইছে,যা এখন তোর জামাইরে আসতে বলিস আমার রোমে।।।।আর তোর মায়ের সাথে হাত লাগা একটু,কাল তো তোর মরদও বেশি কিছু খায় নায়……যা জলদি তোর মায়ের কাছে….”
রাফসা চলে গেলো।এখানে আর থাকা সম্ভব না।যা দুষ্ঠু ওর দাদী টা।বাধ্য হয়ে ওর মায়ের কাছেই চলে গেলো।আর ঐ দিকে সাদ আর অরূপ মনের সুখে ঘুমাচ্ছে।
!
রোজকার মতো রিদি আজও অফিসে চলে গেলো।ভালো লাগে না আজ কাল আগের মতো।তাই বাসা থেকে তাড়াতাড়িই বেরিয়ে পড়লো।নৌশিন আর সাদাদকে একসাথে দেখলে কষ্ট টা বহুগুণ বেড়ে যায়।আর সাথে তো প্যারা দেওয়ার জন্য পরশের দেওয়া আংটি টা আছেই।ইচ্ছা হয় রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দিতে।কিন্তু মায়ের কড়া বারণ আছে।তাই পারছে না।
আনমনে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে।হঠাৎ সামনে আরেক টা প্রাইভেট কার আসছিলো কোনো মতে ব্রেক কষলো রিদি।না হলে উল্টাপাল্টা কিছু হয়ে যেতো।খেয়াল ই করে নি সামনে গাড়ি আসছিলো।
কোনো কাজে মন দিতে পারছে না আজকাল।কাল অফিসেও কাজে ফল্ট হয়ে গিয়েছিলো।যা আগে কখনো হয় নি।আর আজ ড্রাইভিং এ ও!!!!!!
ভাবতেই পারছে না রিদি।যা আগে কখনো হয় নি সেসব ই হচ্ছে ওর সাথে।হবেই না কেনো??
মন যে আর নিজের মাঝে নেই।সেটা তো সব সময় সাদাদের কাছেই পড়ে থাকে।
এসব ভাবতে ভাবতে আর খেয়াল হ নি বেচারী যে রাস্তার মাঝে।গাড়ির হর্ণে হোশ আসে।পেছনে ছোট খাটো একটা জ্যামও লেগে গেছে।তাড়াহুড়ু করে আবারও গাড়ি সার্ট দিলো।মোড় টা ক্রস করতেই সামনে আবারও একটা প্রাইভেট কার।তবে এটা রিদির ভুল না।গাড়ি টা রং সাইড থেকে রিদির গাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়।রিদি কিছু বুঝে উঠার আগেই।ওর গাড়ির দরজা খুলে কেউ পাশে বসে পড়ে।
“আরে,আপনি???”
“গাড়ি স্টার্ট দাও…..”
“বাট আপনি এখানে কেনো…..”
“যা বলছি তাই করো…….পেছনে জ্যাম লেগে যাবে না হলে…..”
“আপনি নামুন আগে….তারপর আমি গাড়ি ছাড়বো……আমি অফিস যাবো…..নামুন আপনি…..”
পরশ রিদির কমড় ধরে এক ঝটকায় নিজের সাথে চেঁপে ধরলো।
পরশের ছোঁয়ায় রিদির ভেতরে একটা কম্পন বয়ে যাচ্ছে।এই প্রথম কোনো ছেলে রিদির এতোটা কাছে।সাদাদকে তো রিদি নিজে জড়িয়ে ধরতো।সাদাদ কখনো ধরে নি।তাই সে রকম কোনো ফিলিংস আসে নি রিদির মাঝে।কিন্তু আজ পরশ এতটা কাছে!!!!!
“কি করছেন,ছাড়াুন আমায়……..”
পরশ অপলক তাঁকিয়ে আছে রিদির দিকে।পলক পড়ছে না।
“আরে,ছাড়ুন আমায়………”
পরশ কিছুটা স্বাভাবিক গলায় বললো,
“যাবে না আজ অফিসে…..”
“মানে কি????আমি অফিসে যাবো…..ছাড়ুন আপনি আর নামুন……”
পরশ রিদিকে আরও চেঁপে ধরে রাগী গলায় বললো,
“হ্যায় লেডি,শেষ করে ফেলবল একদম…..যা বলবো তাই করতে হবে……..পরশের চয়েস তুমি,সো পরশের মতো করে চলতে হবে…….চুপচাপ বসবে…..গাড়ি আমি চালাবো……”
“আরে।আমি চালাবো গাড়ি……”
রিদিকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে পরশ রিদিকে একটানে ও যে জায়গায় বসেছিলো সেখানে এনে বসালে।রিদি অবাক!!!কি শক্তি মানুষটার।এক হাতেই রিদিকে এক সিট থেকে অন্য সিটে নিয়ে এলো।পরশ গাড়ি চালু করছে দেখে রিদির মাথা গরম হয়ে গেলো।দরজা খুলে বের হতে যাবে,এমন সময় পরশ আবারও রিদিকে আটকে ফেলে।সিটের সাথে চেঁপে ধরে,রিদি কি বুঝে উঠার আগেই ঠোঁটে ঠোঁট ডুবায়।
রিদির সারা শরীর কারেন্ট বয়ে যাচ্ছে।কি হচ্ছে এসব!!!!!
একটা ছেলের ছোঁয়ায় এতো কিছু!!!!!!ভাবতেই পারছে না রিদি।পরশ পাগলের মতো শুষে নিচ্ছে রিদির ঠোঁট।রিদি বেশ খানিক টা সময় ছাড়ানোর চেষ্ঠা করেও পারলো না শেষমেষ হাল ছেড়ে দিলো।
পরশ মনে হয় হারিয়ে গেছে।জেদের বশে কামড়েও দিচ্ছে রিদির ঠোঁটে।রিদির ফার্স্ট লিপ কিস এটা।এমনিতেই অন্য রকম হচ্ছে।তার উপর পরশের কমড় এতো জোড়ে লাগছে,চোখ দিয়ে পানি পড়ছে রিদির।ছাড়াতেও পারছে না রিদি।দম বন্ধ হয়ে আসছে।চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে শুধু।পাক্কা দশ মিনিট পর পরশ রিদিকে ছাড়লো।রিদি যেনো নতুন জীবন ফিরে পেলো।
পরশের দিকে তাঁকিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে আর কান্না টাও আরও বেড়ে যাচ্ছে।
কাঁদতে কাঁদতেই রিদি বললো,
“আপনি এতোটা খারাপ!!!!!আমাকে…..”
আর বলতেও পারলো না কান্নায় ভেঙে পড়লো।
দশ মিনিটে পেছনে অনেক গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে।
রিদির কান্না পরশের মনে দাগ বসিয়ে দিচ্ছে।দেরী করলো না পরশ।গাড়ি সার্স্ট করলো……..
গাড়ি রিদির অফিসে যাচ্ছে না……..বুঝতে পারলো রিদি,খিলক্ষেত পার হচ্ছে….
তার পর আজিমপুর,উত্তরা…হাউস ব্লিডিং ক্রস করছে গাড়ি টা। তার মানে ঢাকার বাইরে!!!!!!
সিটে গা এলিয়ে দিলো রিদি।
বাইরের দিকে তাঁকিয়ে থাকা ছাড়া আর কিছু করার নেই ওর।এই লোকটার সাথে পেরে উঠবে না রিদি,এই কিছু দিনে এটা বেশ ভালো করে বুঝে গেছে সে।চোখের বাঁধ ভেঙে গেছে রিদির।থামছেই না কোনোভাবে।হোক যা হওয়ার সব ছেড়ে দিয়েছে রিদি।যাক যেখানে নিয়ে যায় যাবে সে………….
মনের আসল চাওয়া টাই যখন পূরণ হলো না,আর কোনো চাওয়া পাওয়া নেই এই জীবনে।চলুক না জীবন নিজের মতো……………………….
চলবে।