#জিদ_অনুভূতির_অন্য_এক_স্তর
#পর্ব_১০
#লেখিকা : #Kaynat_Ash
যেদিন তার রেজাল্ট দেয়, সেদিন বিকেলেই তার ফোনে একটি কল আসে।
ফোন রিসিভ করার পর ওপাশ থেকে বলল “রেজাল্ট আউট হয়েছে, বিষয়টি হয়ত মনে নেই তোমার!”
আইজা কান থেকে ফোন নামিয়ে স্ক্রীনে আমানের নাম দেখতে পায়।
তাড়াহুড়ো করে ফোন রিসিভ করতে গিয়ে কে ফোন দিয়েছে সেটাও খেয়াল করে না বেশিরভাগ সময়, এই ভেবে নিজেকে তিরষ্কার শেষে ফোন আবার কানে ধরে সে বলল “আমি তো জানি, মনেও আছে ভালো করে।
এছাড়া রায়হান আংকেল আর রেহানা আন্টিকেও ফোন করে রেজাল্ট জানিয়েছিলাম।”
আমান বলল “তুমি জন্মগতভাবেই একটা ইডিয়েট। নাকি যত বড় হচ্ছ, তোমার এসব বিশেষ গুণ বিকশিত হচ্ছে!”
আইজার কথাটি গায়ে লাগল। সে বলল “মানে?!”
আমান বলল “কয়েকদিন আগ পর্যন্তও আমাকে বলছিলে, আমি তোমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু, তোমার প্রিয় বন্ধু। ছোটবেলার খেলার সঙ্গী, গড নোস, আরো কত কি!”
আইজা বলল “হ্যাঁ। তো?”
আমান বলল “এভাবে তো কখনো ফোন করো না, এসব অবশ্য আমি পরোয়াও করি না। তবে রেজাল্ট জানানোর জন্য ছোটবেলার এই সঙ্গীটিকে একটি ফোন করলে তোমার মত হায়ার মিডেল ক্লাস মেয়ের খুব বেশি টাকা নিশ্চয়ই অপচয় হয়ে যেত না।”
আইজা কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। সে বিব্রত কন্ঠে বলল “আমি তোমাকে কল করতাম, আসলে একটু ঝামেলা ছিল, বিধায়…।”
আমান বলল ” থাকুক, আইজা। এত কষ্ট করে এক্সকিউজ খুঁজতে হবে না। এছাড়া আমি কোন এক্সপ্লেনেশেন চেয়েছি তোমার কাছে!
আমি তো কেবল তোমাকে এটা দেখাতেই ফোন করেছি যে তোমার সব অনুভূতি তোমার ছোটবেলার সেই বন্ধুত্বের মতই ফেইক। যে বন্ধুত্বের দোহাই দিয়ে সবসময় বড় বড় দাবি করে এসেছ! ”
এই বলে আমান আর কিছু শোনার অপেক্ষা না করে কল কাট করে দেয়।
আইজা কিছু বলতে গিয়েও পারল না। কান থেকে ফোন নামিয়ে হতাশ হয়ে বসে ভাবতে লাগলো, আমার ছোটবেলার অনুভূতি যতটা অকৃত্রিম ছিল, আমার ভালোবাসাটা এরচে বড় সত্য। এই কথাটা শুনেই নাহয় কল কাট করতে!
একটি অপবাদ দিলে কমপক্ষে এর সপক্ষে বা বিপক্ষে যুক্তিও শুনতে হয়। তবে তুমি এসব কানে না তুলে কেবল সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারো।
এরপর সে আবারও ভাবতে লাগলো, এই কার প্রেমে পড়লাম আমি। যে ধরনের তার মেজাজ, রাগ, বাকি জীবন আমাকে এভাবেই হতাশার মধ্যেই কাটিয়ে দিতে হবে হয়ত।
সে মনে মনে ভাবল, আমানকে তো সে পরে মানিয়ে নেবে। তবে এখন তার হাতে অনেক কাজ। সামনে বিভিন্ন পরীক্ষা। আগে তার নিজের জন্য একটি ভালো পজিশন নিশ্চিত করতে হবে, তার ভবিষ্যৎ, ক্যারিয়ারের জন্য বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
.
.
.
দেখতে দেখতে কয়েকটি মাস কেটে গেল। এডমিশেন টেস্ট শেষ হওয়ার পর সেগুলোর রেজাল্টও আউট হলো।
আইজার যে ভার্সিটিতে পড়ার ইচ্ছা ছিল, তার পরিশ্রম আর সৌভাগ্যের কারণে সেখানে তার চান্সও হয়ে গেল।
রেজাল্ট দেখে খুশিতে যেন আত্নহারা হয়ে যাচ্ছিল সে। বাবা মাকে ফোন করে জানানোর পর ফোন হাতে দুই মিনিট ভেবে নিয়ে আরেকজনকে কল করে।
অনেকক্ষণ রিং হওয়ার পর ফোন রিসিভ হলো। একজন মেয়ে ফোন রিসিভ করে বলল “হুম, কাকে চাই?”
আইজার মেজাজ ভীষণ খারাপ হলো। সে বলল “যার ফোন তার সাথে কথা বলতেই নিশ্চয় কল করেছি। বাই দা ওয়ে, আমান কোথায় ? আর তার ফোন তোমার কাছে কেন, আমি কি জানতে পারি।”
চলবে…
{ গল্পে মূল কাহিনী সব অতীতেই ঘটেছে, সেজন্য তাদের অতীত ফোকাস করা হচ্ছে। এছাড়া তিথি যা করেছে তা তো সিক্যুয়াল অনুযায়ীই লিখব, কারো কনফিউশন দূর করার জন্য যদি আগেই লিখে দেই যে সে আসলে কি করেছে আপনাদের কনফিউশন তখনও ক্লিয়ার হবে না, বরং আরো বাড়বে। সুতরাং সিক্যুয়াল অনুযায়ী তার টার্ম আসা পর্যন্ত, দয়া করে, অপেক্ষা করুন।
এছাড়া আমি কেবল আমার পেইজে গল্প দেই এবং কেবল আমার নিজস্ব পেইজের পাঠকদের সব প্রশ্নের জবাব দিব, কারণ যারা আমার পেইজের আমার রিয়েল পাঠক তাদের জন্যই আমি গল্প লিখি এবং পোস্ট করি,অন্যান্য বিভিন্ন জায়গায়ও হয়তো আমার গল্প পোস্ট করা হয়ে থাকে, তাদের বেশির ভাগেরই ব্যাপারে আমি জানি না, এবং তাদের কোন প্রশ্নের জবাব দেয়ার ব্যাপারেও খুব একটা আগ্রহী না ।। ধন্যবাদ সবাইকে ।।
আজ গল্পের schedule আমার পেইজে পোস্ট করা হবে।। }