#জিদ_অনুভূতির_অন্য_এক_স্তর
#পর্ব_১১
#লেখিকা : #Kaynat_Ash
আইজার মেজাজ ভীষণ খারাপ হলো। সে বলল “যার ফোন তার সাথে কথা বলতেই নিশ্চয় কল করেছি। বাই দা ওয়ে, আমান কোথায় ? আর তার ফোন তোমার কাছে কেন, আমি কি জানতে পারি।”
তিথি কিছু বলার আগেই আমান তার হাত থেকে নিজের ফোন কেড়ে নিয়ে বলল “আমার ফোন কোন সাহসে তুমি রিসিভ করো?!
এরচে গুরুত্বপূর্ণ যে কথা, আমার অনুমতি ছাড়া আমার রুমে প্রবেশ করার সাহস কীভাবে হয়েছে তোমার?! তোমার এটা অজানা থাকার কথা নয় যে, আমার রুমে অন্য কারো উপস্থিতি আমি সহ্য করতে পারি না।”
তিথি বেশ সরল আর স্বাভাবিক গলায় বলল “তুমি ওয়াশরুমে ছিলে আর তোমার ফোনে অনেকক্ষণ যাবৎ রিং হচ্ছিল,তাই আমি ভাবলাম…।”
আমান তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল ” আমার অনুমতি ছাড়া আমার রুমে কখনো প্রবেশ করতে কিংবা আমার ফোনে যদি আর কখনো তোমাকে হাত দিতে দেখি, আমার চেয়ে খারাপ তোমার জন্য অন্য কেউ হবে না। একজন মেয়ে দেখে কেবল ওয়ার্নিং দিয়ে তোমাকে ছেড়ে দিচ্ছি। গেট লস্ট নাও।”
তিথি কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ রুম থেকে বের হয়ে যায়। কারণ সে ভালোভাবেই জানে, এসব বিষয়ে আমানের রাগ একটু তাড়াতাড়িই উঠে যায়।
এরপর ফোন স্ক্রীনে আইজার নাম দেখে আমান কল কাট করে ফোন বিছানায় ফেলে দেয়।
এদিকে আইজার মেজাজ তো দ্বিগুণ খারাপ হচ্ছে। সে আবারও ফোন করল আমানকে।
আমান ফোন হাতে তুলে কিছুক্ষণ সময় নিয়ে কল রিসিভ করল।
আইজা বলল “কি করছিলে তুমি? এতক্ষণ ধরে ফোন দিচ্ছি, রিসিভ করার প্রয়োজনীয়তাও অনুভব করো না আমার কল?!”
আমান বলল “ফোন কেন দিয়েছ?”
আইজা বলল “তোমার সাথে কথা বলার জন্যই নিশ্চয়ই। কিন্তু তোমার ফোন তো অন্য কারো কাছে থাকে। কল করে খুব বিরক্ত করছি তোমাকে, তাই না!
বাই দা ওয়ে, আমি তোমাকে আমার খুশিতে শরীক করতে ফোন দিয়েছিলাম।”
আমান বলল “তুমি তোমার স্বপ্নের ভার্সিটিতে চান্স পেয়েছ, এটা জানাতেই তো!”
আইজা বলল “হ্যাঁ।
তবে তুমি এটা কেবলই অনুমান করছ নাকি সত্যি সত্যিই জানতে আমার রেজাল্ট সম্পর্কে?”
আমান বলল “হয়ত অন্য শহরে আমার থেকে দূরে আছো। তবে তোমার কোন বিষয়েই যে খবর রাখি না, এমনটি নয়। তোমার জানার আগেই তোমার রেজাল্ট জানতাম আমি।”
আইজা বলল “ওহ।”
এরপর একটু থেমে বলল “আর তোমার কি খবর?”
আমান বলল “সময় হলে নিজেই জানতে পারবে।
আর কিছু?”
আইজা বলল “আচ্ছা, আমার সাথে দুই মিনিট কথা বললে এমন কি সমস্যা হচ্ছে তোমার! তোমার এত কি তাড়া কল কাট করার।
আরেকটি কথা, তোমার ফোন যদি আমি এরপর থেকে অন্য কাউকে রিসিভ করতে দেখি, তো আমি…। আমি সত্যিই তোমাকে আর কখনো ফোন দেব না।”
এই বলে আইজা কল কাট করে দেয়। আমান বাঁকা, মুচকি হাসি ঠোঁটে টেনে ফোন বিছানার উপর রেখে দিল আবার।
.
.
.
কয়েকদিন পর আইজা তার বাবা মা, এবং অন্য সবার থেকে বিদায় নিয়ে নতুন শহরে, নতুন মানুষজনের মধ্যে চলে আসে, তার স্বপ্ন পূরনের জন্য। ভার্সিটি লাইফ কেমন হবে সে জানে না, তবে এই বিষয়ে এত ভাবছেও না সে।
প্রথম যেদিন সে হোস্টেলে উঠেছিল, তার মনটা ভীষণ খারাপ ছিল, বাবা মায়ের কথা খুব মনে পড়ছিল।
কিন্তু এর পরদিন তার রুমমেট এবং ব্যাচমেট রিতা, একই রুমে উঠার পর থেকে, সে ভালোই সঙ্গ দিচ্ছে তাকে।
বেশ মিশুক রিতা মেয়েটি, অন্যদিকে আইজা খুব একটা মিশতে পারে না মানুষের সাথে, এরপরও তাদের বন্ধুত্বটা সুন্দর মতই হয়েই যায়।
ভার্সিটির প্রথম দিনও তার খারাপ কাটে নি, তবে ততক্ষণ যতক্ষণ না সে ভয়াবহ টাইপস একটি সারপ্রাইজ পায়।
আইজা আর রিতা তখন ক্যান্টিনের দিকে যাচ্ছিল। হাঁটতে হাঁটতেই সে দেখতে পায়, সামনে কিছুটা দূর থেকে আমান এদিকটায়-ই হেঁটে আসছে। তার সাথে তিথিও ছিল। তার ঠোঁটে সেই বাঁকা মুচকি হাসি লেগে আছে।
চলবে…