জিদ_অনুভূতির_অন্য_এক_স্তর #পর্ব_৯

0
546

#জিদ_অনুভূতির_অন্য_এক_স্তর
#পর্ব_৯
#লেখিকা : #Kaynat_Ash

এই বলে আইজা চলে যেতে নিলে আমান তার কব্জি বরাবর এত শক্ত করে ধরে যে তার মনে হয়েছিল, তার হাঁড় নির্ঘাত ভেঙে গিয়েছে, নাহলে এতটা ব্যথা নিশ্চয়ই পেত না সে।

নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে আইজা বলল “এটা কি ধরনের বেয়াদবি, আমান। আমার কষ্ট হচ্ছে, ছাড়ো আমার হাত।”

আমান তার রক্তলাল চক্ষু দেখিয়ে অপর হাতের তর্জনী উঁচিয়ে আইজার উদ্দেশ্যে বলল “একবার তোমাকে ক্ষমা করেছিলাম। তখন তোমাকে ছাড়া বাঁচতেও পারতাম।

আর তোমাকে কিছু জানাই নি, প্রচন্ড অভিমান আর রাগ থেকে। তোমাকে কিছুই বলিনি, আর তুমিও কিছুই জানতে পারো নি!
অথচ সবসময় তোমার ভাব এমনটাই ছিল যে তোমার চেয়ে ভালো বন্ধু আমার জন্য অন্য কেউ হতেই পারে না কখনো।
অথচ আমি তোমার মত এমন কোনো ভাব যদিও কখনো দেখাই নি; কিন্তু ঠিকই বুঝতে অন্তত পারি, তোমার মনের সকল না-বলা অনুভূতি সম্পর্কেও। অথচ আমার ক্ষেত্রে তুমি যা কখনোই বুঝতে পারো নি।

আমি যেভাবে জানাই নি, তুমিও তো কিছুই জানাও নি। এরপরও ঠিকই পড়ে ফেলেছি তোমার মনের অব্যক্ত ভালোবাসা, যা তুমি পড়তে পারো নি আমার ক্ষেত্রে।

যাই হোক। এখন যেহেতু তুমিও সবকিছু বিস্তারিতভাবে জানোই। সুতরাং আমাকে ছেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে যদি এখন চিন্তাও করো। তোমার গলায় ছুরি চালিয়ে, নিজেকেও শুট করব। এখন তুমি কেবল আমার ভালোবাসা নও। এখন তুমি আমার একটা জিদও। ভালোবাসা ছাড়তে পারলেও নিজের জিদ আমি কখনো ছাড়তে পারি না।”

এরপর একটু থেমে বলল “আমার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখো আইজা, কি মনে হয়, আমার বলা প্রতিটি কথা সত্য নাকি মিথ্যা?”

আইজার হৃদয়ের গভীরে যেন আমানের সেই দৃষ্টি ছুরি বসিয়ে ভয়াবহ এক আতঙ্কের সঞ্চার করেছে।

আইজা কাঁপা গলায় বলল “তুমি সত্যিই পাগল হয়ে গিয়েছ। আমার ভয় করছে তোমাকে, প্লিজ ছাড়ো আমার হাত।”

আমান আইজার হাত ছেড়ে দিয়ে হাসতে লাগল। হাসতে হাসতে বলল “তোমাকে এতটা ভালবাসি, অথচ সেই তোমার দৃষ্টিতে আমার জন্য এত ভয়।

আমি পৃথিবীর সবার চোখে এই ভয়ই দেখি আমার জন্য, আর তা দেখতে আমার খারাপ লাগে না মোটেও।
কিন্তু তোমার চোখে এই ভয় আমি দেখতে চাই না। ছোটবেলায় যে স্নেহমাখা চোখ নিয়ে আমার দিকে তাকাতে, আমি সেই দৃষ্টি চাই তোমার চোখে।

আমাকে এটা অনুভূত হতে দিও না যে ছোটবেলার তোমার সেই বন্ধুত্বটাও তোমার ভালোবাসার মত ফেইক।”

এই কথাটা আইজার বেশ গায়ে লাগল। সে এবার কিছুটা রুক্ষভাবে বলল “আমি ভয় পাই না কাউকে। আমি তো কেবল হতবাক হচ্ছিলাম
এই ভেবে যে ছোটবেলার সেই চিরচেনা দৃষ্টিতে এতটা হিংস্রতা থাকতে পারে।
এছাড়া আমার বন্ধুত্ব ফেইক ছিল না, না আমার অন্য কোন অনুভূতি।”

আমান বেশ নির্লিপ্ত ভাবে বলল “সবকিছু আমি নতুন করে শুরু করতে চাই, আমাদের এই সম্পর্ক আমি নতুনভাবে শুরু করতে চাই।”

আইজা কি জবাব দিবে, ভেবে পেল না। সে অল্পক্ষণ ভেবে নিয়ে বলল “আমি এই বিষয়ে এখনই কিছু বলতে পারব না। আমার কিছু সময় প্রয়োজন।”

এই বলে সে সেখান থেকে দ্রুত প্রস্থান করল। আমান মুচকি হেসে পকেটে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগলো “তুমি কিছু না বললেও তোমার জবাব কি হবে, তা আমি ভালো করেই জানি।”

.
.
.

এই ঘটনার দুদিন পরেই আইজা আর তার পরিবার তাদের শহরে ফিরে যায়। যাওয়ার আগে আমানের সাথে তার খুব একটা কথাবার্তা হয়নি। আমানও তার সাথে কথা বলার কিংবা তার প্রশ্নের জবাব নেয়ারও চেষ্টা করে নি। বরং বেশ স্বাভাবিক আচরণই করছিল সে।

আইজা যদিও তার এমন ব্যবহারে একটু অবাক হয়েছিল। তবে মনে মনে ভাবল, যাক ভালোই হয়েছে। অনন্ত সে সময় তো পেয়েছে। এছাড়া এসব বিষয়ে সে এখনই ভাবতে চায় না। এমনিতেও সামনে রেজাল্ট, এ্যাডমিশেন টেস্ট, এসবের বাইরে এখন অন্য কিছু ভাবা তার পক্ষে প্রকৃতপক্ষেই সম্ভব না।

.
.
.

যেদিন তার রেজাল্ট দেয়, সেদিন বিকেলেই তার ফোনে একটি কল আসে।

{ গল্প কবে কবে আমার পেইজে দেয়া হবে সেই বিষয়ে দ্রুতই একটি পোস্ট করবো আমার পেইজে, যাতে আপনাদের মধ্যে এই কনফিউশন না থাকে যে কবে গল্প দেয়া হবে আর কবে নয়, এতে অপেক্ষা করতে আপনাদের সুবিধা হবে।। ধন্যবাদ ।। }

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here