#আমার_একলা_আকাশ_তোমায়_জুড়ে
#৫ম_পর্ব
বিদ্যুতের প্রস্তাবে অর্জুনের চক্ষু চড়ক গাছ। অন্নাও রীতিমতো বিষম খেলো। অর্জুন তখন চোখ ঘুরিয়ে পেছনে বসে থাকা রবিন ভাই এর দিকে তাকালো। সে মিটিমিটি হাসছে এবং হাতের বুড়ো আঙ্গুল দেখাচ্ছে। অর্জুনের ব্যার্থ বানোয়াট প্রেমকাহিনী সফলের এটাই তার প্রথম প্রচেষ্টা। অর্জুন ভেবেছিলো ব্যাপারখানা চায়ের দোকানের আড্ডা এবং চাঁয়ের উত্তপ্ত ধোঁয়ায় মিলিয়ে যাবে। কিন্তু রবিন ভাই এর চকচকে চোখ এবং হাস্যজ্জ্বল মুখশ্রী দেখে বোঝা যাচ্ছে সে মোটামুটি কোমর বেধেই নেমেছেন। অন্নার অত্যা’চার কি কম ছিলো যে এখন রবিন ভাই ও হাত ধুয়ে পড়েছেন! অর্জুন সময় নষ্ট করলো না, প্রতিবাদ করে উঠলো সাথে সাথে,
“আমার ক্লাস আছে, মিলন আর রনবীরকে পাঠাও। আমি এসবে নেই। আর আমি এগুলো বুঝিও না। চুন থেকে পান খসলে তখন আমার পেছনে পন্ডিত মশাই খ’ড়া নিয়ে ছুটবেন। আমি বাবা এগুলোর ঝামেলাতে নেই। এমনেই ক্লিনিক থেকে ফিরেছি দু সপ্তাহও হয় নি। আসবো, অঞ্জলী দিবো, ঠাকুর দেখবো, চলে যাবো”
অর্জুনের কথা মাটিতে পড়তে দিলো না বিদ্যুৎ, খপ করে ধরে বসলো,
“এ কেমন কথা অর্জুন? আর তুই বুঝিস না বললে তো বলতে হয় জেলে মাছ ধরতে জানে না, চাষী চাষ করতে জানে না। তুই আর দেবব্রত ই তো প্রতিবার এই কেনাকাটা করিস, প্যান্ডেলের লোকের সাথে কথা বলিস। তুই ই তো এসব বুঝতে বুঝতে ঝু’নো হয়েছিস। বরং তোর সামনে আমরা ন’স্যি। মিলন আর রনবীর তো গ্যা’দা বাচ্চা, ওদের পাঠিয়ে আমরা খ’ড়ার দৌড় খাবো না। থাকলো তোমার ক্লাস, সে তো পুজোর ছুটিতে বন্ধ। আমাদের মতো চাকরি করলে তো তুমি নাই হয়ে যাবে। সুতরাং তুমি ই যাবে”
অর্জুন পড়লো মহা বিপাকে। হ্যা, কথাগুলো মিথ্যে নয়। সে এবং দেবব্রত প্রতিবার প্যান্ডেলের দায়িত্ব নিয়ে এসেছে। বিদ্যুৎ এর যুক্তি একটাও ফেলনা নয়। কিন্তু সে অন্নার সাথে একটা পুরো দিন কাটাতে মোটেই ইচ্ছুক নয়। একেই মেয়েটা তার মস্তিষ্কের প্রতিটি নিউরণে প্যাঁচ লাগিয়ে দেয়। উপরন্তু রবিন ভাই তো মানুষ সুবিধার নয়। তার কাছে এই প্যান্ডেলের কেনাকাটা কখন তাদের প্রেমঘন বিকেল হয়ে যাবে সেটার নিশ্চয়তা নেই। অর্জুন অধৈর্য হয়ে বললো,
“ঠিক আছে আমি মিলন আর রনবীরকে নিয়ে যাবো, অন্না যাবে না”
এবার পেছনে ঘাপটি মেরে বসে থাকা রবিন ভাই বলে উঠলেন,
“কেনো অন্না? তোমার কি যেতে আপত্তি আছে?”
“না, রবিন ভাই। অর্জুনদার সমস্যা না থাকলে আমার সমস্যা নেই”
সাবলীল কন্ঠেই উত্তর দিলো অন্না। অন্নার উত্তরে বিদ্যুৎ এবং প্রতীক মিটিমিটি হাসছে। তাদের হাসির কারণ বুঝতে বাকি রইলো না অর্জুনের। সে সাথে সাথেই রাগান্বিত কন্ঠে বললো,
“এই তোর সামনে পরীক্ষা, একাউন্টিং এ নয় পায় আবার তিনি নাচতে নাচতে পুজোর কেনাকাটায় যাবে”
“কিন্তু পরীক্ষা তো ডিসেম্বরে”
অসহায় কন্ঠে কথাখানা বললো অন্না। সাথে সাথেই রবিন ভাই বলে উঠলেন,
“ভায়া অর্জুন, আমরা জানি তুমি তোমার ছাত্রীর প্রতি অতি সচেতন, অতি যত্নশীল। কিন্তু তা বলে তুমি বেচারীকে উৎসবের সময় পড়াবে এ ঠিক নয় ভায়া। আর রণবীর এবং মিলনের তো মন্দিরে কাজ আছে। ওরা দেবী আনতে যাবে। তুমি বরং অন্নাকেই নিয়ে যাও। আর মেয়ে মানুষ সাজসজ্জা ভালো বুঝে”
অর্জুন অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো রবিন ভাই এর দিকে। সে তার মিছকে হাসি অব্যাহত রাখলো। মিটিং এ হালকা কানাগোসা শুরু হলো। অর্জুন বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে কপাল ঘষতে লাগলো। তার বুঝতে বাকি রইলো না সবার মাঝে ঠিক কি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। সে ভুল ছিলো, তার জীবনকে ভাজা ভাজা করে দিতে শুধু অন্না যথেষ্ট নয়। অন্নার উপরের মানুষ তো পেছনে বসে বসে কলকাঠি নাড়াচ্ছে আর মজা নিচ্ছে। এখন আফসোস হচ্ছে, কেনো যে দেবব্রতের সাথে কলকাতা চলে গেলো না! এখন তো মনে হচ্ছে সন্ন্যাসী না হওয়া অবধি এই রবিন ভাই তাকে শান্তি দিবে না। বুক চিরে দীর্ঘশ্বাস বের হলো অর্জুনের। অবশেষে রবিন ভাই এর পরিকল্পনা সফল হলো। অর্জুন বাধ্য হলো, একটা পুরো দিন অন্নার সাথেই কাটাতে হবে তাকে।
****
বেশ পরিপাটি হয়েই অর্জুনের বাড়িতে আজ আগমণ ঘটলো অন্নার। আজ প্রথমবার অর্জুনদার সাথে বিশেষ কাজে বের হবে সে। লোকটি তাকে অকালকুষ্মাণ্ড ভাবে, আজ তার ভাবনা ভেঙ্গেই ছাড়বে। তাই সকাল থেকেই তার সাজের ঘটা দেখে কে! ইস্ত্রী করা সেলোয়ার কামিজ পড়েছে, উশকোখুসকো কোকড়া চুলগুলো বেনীতে আটকেছে। রিতাদেবী তাকে দেখে প্রথমে বিশাল রকম ধাক্কা খেলেন। অবাক কন্ঠে বললেন,
“বা’দর আজ মানুষবেশে, ব্যাপার কি?”
“মা, তুমি কি আসলেই আমার মা? অন্য মায়েরা মেয়েকে সাজতে দেখলে কানের নিচে কালো টিপ দেয়, যেনো নজর না লাগে। আর তুমি কি না একেবারে বা’দ’র বলে দিলে?”
“আসলে তোমাকে এমন দেখার অভ্যাস নেই তো। তাই হজম হচ্ছে না। আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম একটা মেয়ে জন্ম দিয়েছি। আমার তো মনে হয়েছিলো সুগ্রীবের বংশধর হয়তো তুমি”
অন্না মায়ের ত্যাড়া কথার উত্তর দিলো না। মাকে ক্ষেপানো যাবে না। নয়তো বাহিরে যাওয়াটা ফাঁকতালে কেঁচে যেতে পারে। তাই প্লাস্টিকের হাসি একে বললো,
“হজম করে নাও মা। মেয়ে তোমার বড় হয়েছে। বিয়ে দিবে, এখন হজম না করলে কবে করবে?”
রিতাদেবীর মনে হলো সে যেনো “ভুতের মুখে রামনাম” শুনছেন। এই কথাগুলো অন্না ই বলছে। নাকি মেয়েকে কেউ জাদুটনা করেছে! অন্না মায়ের গালটা হালকা করে টিপে বেরিয়ে পড়লো। রিতাদেবী তখন ও অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন মেয়ের দিকে।
কাকলী দেবী অন্নাকে দেখেই তার ভুবনভুলানো হাসি একে বললেন,
“ভেতরে আয়”
“অর্জুন দা কোথায় গো?”
“ও একটু বাহিরে গেছে, চলে আসবে। তুই বয়। আমার সাথে গল্প কর”
অন্না মাথা দোলালো। মহিলাকে তার প্রচন্ড ভালো লাগে। এতো অমায়িক মানুষ হয় তার জানা ছিলো না। মাঝে মাঝে মনে হয় নিজের মায়ের সাথে কাকীমাকে বদলে দিলে ভালো হতো। খ’চ্চর মানুষটা সোজা হয়ে যেতো। অন্না সোফায় বসলো। কাকলীদেবী বললেন,
“যখন শুনলাম তোরা একসাথে কেনাকাটায় যাবি আমার না খুব ভালো লাগলো। ছেলেটা বাসায় বসে বসে আরোও কাটখোট্টা হচ্ছে। দেবব্রত নেই, ও একা হয়ে গেছে। আচ্ছা দেব কবে আসবে? এবার কি আসবে না?”
“গতকাল কথা হয়েছে। অষ্টমীতে আসবে বলেছে। সন্ধিপুজোতে আমাদের সাথেই থাকবে।”
“কতদিন দেখি না ছেলেটাকে। ও থাকতে অর্জুনটা একটু বাহির হতো। এখন তো শুধু ঘর আর ক্লাস। পাড়ায় ও যায় না এখন। মাঝেমধ্যে তোকে পড়াতে যায়। তাও গজগজ করতে করতে বাসায় আসে। ছেলেটাকে নিয়ে চিন্তা হয় জানিস”
“তোমার ছেলেকে বলো একটা প্রেম করতে”
অকপটে কথাটা বলে উঠলো অন্না। বলেই নিজের জিভ কাটলো। কাকলীদেবী হো হো করে হেসে উঠলেন। হাসি থামিয়ে বললেন,
“হয়েছে, অর্জুন আর প্রেম। তোর মনে হয় আমার ছেলের পক্ষে সেটা সম্ভব? ওমন বই পোকার সাথে কে প্রেম করবে? তুই বয় আমি নাড়ু নিয়ে আসি”
বলেই হাসতে হাসতে হেসেলে চলে গেলেন তিনি। অন্নাও বিশ্বাস করে অর্জুনদার দ্বারা প্রেমটি হবে না। এতো কাঠখোট্টা মানুষ প্রেম বোঝার ক্ষমতা রাখে না। কাকলী দেবী না থাকায় অন্না টি-টেবিলের ম্যাগাজিন দেখতে লাগলো। তখন ই তার চোখ পড়লো নৌকাডুবি বইটির দিকে। বইটি টেবিলের উপর ই উলটে রাখা। হয়তো কাকীমা পড়ছিলেন। লোভ সামলাতে না পেরে অন্না বইটি হাতে নিলো। উল্টাতে উল্টাতে একেবারে শেষ পাতায় চলে গেলো। একদম শেষ পাতায় তার চোখ আটকে গেলো, লাল কালিতে ছোট ছোট করে একটি কবিতা লেখা,
“আধার ঘেরা রাত্রি মোর কাটে আলোর আশে,
তুমি মায়াবিনী থাকলে আমার পাশে।
প্রাণ খুঁজে পাই নিরব কবিতারা,
তুমি আমার লুকিয়ে রাখা নিরব ভালোবাসা।
তোমার দুষ্টুমিতে কাটে সারাদিন,
তুমি হাসলেই হাসে আমার প্রতিদিন।
তোমার দীঘল চুলজুড়ে,
আমার একলা আকাশ থাকে।
তুমি আসবে গোধূলীর সুরে?
আমার একলা আকাশ থাকে তোমায় জুড়ে” (জান্নাতুল মিতু)
কবিতাটি অর্জুনদার লেখা, এতে সন্দেহ নেই। অন্না তার হাতের লেখা চেনে। কিন্তু অর্জুনদার পক্ষে এমন একটি অনুভূতিপ্রবণ কবিতা লেখা সম্ভব এ যেনো বিশ্বাস হচ্ছে না অন্নার। মনের ভেতরে বিশাল একটি প্রশ্ন ডানা মেললো, পুরো বিশ নম্বরের জটিল প্রশ্ন। প্রশ্নটি হলো, এই কবিতাটি কার জন্য লেখা? কে এই মায়াবিনী! যে এই বইটি দিয়েছে সেই কি এই কবিতার জননী! কৃষ্ণা নামের নারীটি কি অর্জুনদায়ের মায়াবিনী? হুট করেই মনটা মিয়ে গেলো অন্নার। ভেতরটায় সূক্ষ্ণ একটা ব্যাথা মাথা নাড়া দিলো। ব্যাথাটা বিরক্তিকর। অহেতুক কারণ কিন্তু ব্যাথাটা প্রখর। তখন ই কলিংবেল বাজলো। অন্না বই টা রেখে দিলো। কাকলী দেবী দরজা খুলতেই ক্লান্ত অর্জুন বাসায় ঢুকলো। তার কালো টি-শার্ট ঘামে লেপ্টে আছে। চুলগুলো কপালে এসে পড়েছে। সে কথা না বলেই ভেতরে ঢুকলো। জল খেলো দু-গ্লাস। চোখ ঘুরিয়ে দেখলো বসার ঘরে অন্না বিষন্নচিত্তে বসে রয়েছে। সে গলাটা ভিজিয়ে বললো,
“উঠ, বের হবো। মা আমরা আসলাম”
“সে কি কথা! ও কিছু খেলো না তো এখনো”
“কাকীমা আমি এসে খাবো৷ দেরী হচ্ছে। অনেক কাজ”
প্লাস্টিকের হাসি ঝুলিয়ে কথাটা বললো অন্না। বলেই উঠে দাঁড়ালো। অন্নার কন্ঠে বিষন্নতা। ব্যাপারটা নজর এড়ালো না কাকলী দেবীর। কিন্তু জিজ্ঞেস করাটা হলো না।
******
রোদের তেজ নেই, মৃদুমন্দা বাতাস বইছে। তবুও লোকের ভিড়ের জন্য একটা হাসফাস অবস্থা। প্যান্ডেলের লোকের সাথে কথা বলতে বলতে হাপিয়ে উঠলো অর্জুন। লোকটি বেশ প্যাঁচায়। বড্ড বাঁচাল প্রকৃতির, সাথে কথা মাত্রা ছাড়া। কথায় কথায় তার নিজের প্রশংসা এবং দাম বাড়ানোর ধান্দা। অর্জুনের তাকে অতীব অপছন্দ। কিন্তু লোকটির কাজ ভালো তাই বাধ্য হয়ে তার কাছেই আসতে হয়। তবে এইবার লোকটির বিরক্তিকর স্বভাব যেনো মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। সে অর্জুনকে মোটেই পাত্তা দিচ্ছে না। ঘুরে ফিরে ডিজাইন থেকে শুরু করে সকল ব্যাপার অন্নাকে শুধাচ্ছে। “দিদিমনি এটা দেখো, দিদিমনি এটা কেমন?” যা অর্জুনকে বিরক্ত করছে। শেষে না পেরে বলেই দিলো,
“নিমাই দা, টাকা কিন্তু দিদিমনি দিবে না”
“আরে অর্জুনদা কি রাগ করলেন?”
“নাহ, আমি সত্য বললাম”
অর্জুনের কথার ইঙ্গিত বুঝতে পেরে কিছুটা হলেও নিজেকে দমালো নিমাই ভট্টাচার্য। অর্জুন মনে মনে বলল,
“আছো বাছা, জায়গায় আসো”
প্যান্ডেলের বাহিরের সাজসজ্জার কাজ ঠিক করে অর্জুন এবং অন্না গেলো একটি কাগজের দোকানে। মন্ডবের সাজ এবার হিমুলেন যুবসমাজ নিজ হাতে করবে। তাই কাগজ, রঙ, তুলি কিনতে হবে। প্রদীপ, ঘট, ঘি, যাবতীয় পুজোর জিনিস কেনা শেষ। এখন এই সাজসজ্জার জিনিস কিনলেই কাজ শেষ। হাসফাস করছে পুরোদেহ। বাসায় যেয়ে গা এলিয়ে দিবে অর্জুন। আজ শারীরিক ভাবে বেশ খাটুনী গিয়েছে। অন্নার মুখে আজ কথা নেই। ব্যাপারটা ভালো, শুধু ভালো নয় খুব ভালো। শারীরিক ভাবে খাটুনি গেলেও মস্তিষ্ক ঠান্ডা। তবে এই শান্ত অন্নাকে বেশ বেমানান ঠেকলো। তাই নিজ থেকে শুধালো,
“মন ভালো নেই?”
“মনের কি হবে?”
অন্নার বেপরোয়া উত্তরটা ভালো লাগলো না অর্জুনের। তাই সে আবার শুধালো,
“তোর মন আমি কিভাবে বলবো?”
“হ্যা, ভালোই আছে”
“তাহলে এভাবে প্যাঁচার মতো মুখ করে রেখেছিস কেন? মনে হচ্ছে কেউ তোকে মে’রেছে, যে সে মা’র না একেবারে উত্তম মধ্যম”
অর্জুনের কথায় কটমট করে তাকালো অন্না। বেশ ঝাঝালো কন্ঠে বললো,
“তোমাকে দেখতে বলেছি আমি? দিব্যি দিয়েছি অর্জুনদা আমার মুখ দেখো!”
“আহা, আমি যেনো ম’রে যাচ্ছি তোমাকে দেখতে? বয়েই গেছে আমার। সে তো রবিন ভাই গলায় ঝু’লিয়ে দিয়েছে। বাধ্য হয়ে দেখছি। একেই তোর চেহারা ভালো না, আজ আরোও দ্বিগুন বাজে লাগছে”
“চোখ বুজে হাটো, আমি কি মানা করেছি?”
“পারবো না। তুই তোর মুখ ঠিক কর। লাগছে কেমন? পেঁচামুখী”
“হ্যা হ্যা, আমি তো পেঁচামুখী! তা শুনি যে মায়াবিনীর জন্য রাত জেগে কবিতা লেখো, বই এর পাতায় পাতায় টুকে রাখো সে বুঝি খুব সুন্দর! কাকীমা জানে তুমি প্রেম করছো? তাই তো বলি, পাড়ায় সামান্য প্রেমিক বানিয়েছি, এতো তেলে বেগুনে জ্বলছিলে কেনো? শোনো খাই আমি সুজি, কিন্তু একটু হলেও বুঝি”
অন্নার কথায় হতবিহ্বল হয়ে গেলো অর্জুন। কিছু সময় লাগলো মেয়েটির কথাগুলো মস্তিষ্কে ধারণ করতে। তারপর ধীর কন্ঠে বললো,
“তুই আবার আমার জিনিসে হাত দিয়েছিস?”
অর্জুনের প্রশ্নকে সম্পূর্ণরুপে উপেক্ষা করে অন্না সাবলীল কন্ঠে বললো,
“হ্যা দিয়েছি, কি করবে? তার আগে আমাকে এটা বলো কে ওই মায়াবিনী যার জন্য তোমার মনে এতো আবেগ?”………
চলবে
মুশফিকা রহমান মৈথি