একটুখানি_সুখ #আনিশা_সাবিহা পর্ব ১৩

0
491

#একটুখানি_সুখ
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ১৩

“আপনার মাথা ঠিক আছে? আপনি কি বলছেন জানেন আদোও? নেশার ঘোরে যা ইচ্ছে তা বলছেন আমি জানি। কিন্তু তবুও আপনার এটা মাথায় রাখা উচিত যে আপনি মেরুর মানুষ আর আমি কোন মেরুর মানুষ।”

স্বচ্ছ চোখ ছোট ছোট করে মোহের কথা শুনল। চোখ রাঙিয়ে ঝাঁঝালো কন্ঠে বলছে কথাগুলো সে। দেখতে বেশ ভালোই লাগছে তার। নাকের ডগা একেবারে লাল টকটকে করছে। ফট করে সে বলেই ফেলে,
“নাকের ডগা ওটা? নাকি চেরীফল?”

বলে নিজেই তব্দা খেয়ে যায় স্বচ্ছ। চোরের মতো মুখ করে মোহের দিকে তাকায় সে। মোহ নিজেও বেকুব হয়ে তাকিয়ে আছে। মুখ থেকে রাগি রাগি চোখামোখা আকৃতি গায়েব হয়ে ধরা দিয়েছে বিস্ময় আর কিছুটা লজ্জা। শুকনো ঢক গিলে স্বচ্ছ বলে,
“তোমায় বিয়ে করতে মরে যাচ্ছি না বিশ্বাস করো। আমার নয় নম্বর গার্লফ্রেন্ডটা কষ্ট পাবে তোমায় বিয়ে করলে। কিন্তু কি করার! আমার কাছে আর বেটার অপশন ছিল না সো দিয়ে দিলাম। আর আমি মোটেই নেশায় নেয়। মাত্র কয়েক চুমুক ড্রিংকস করেছি। আর ড্রিংকস এর এতো ক্ষমতা নেই যে সে অন্য এক ভয়াবহ নেশাও কাটিয়ে ফেলবে।”

নিজেকে ধাতস্থ করে নেয় মোহ। চোখমুখে আবারও রাগি ভাবটা ফুটিয়ে তুলে বলে,
“নয় নম্বর? গতকালই না আট নম্বর ছিল বললেন? নয় নম্বর হয়ে গেল? সে যাই হোক। বিয়ে মানে বোঝেন আপনি? জানেন কি হয় বিয়ের শব্দের অর্থ। আর যেই মানুষটাকে আমার সহ্যই হয় না সেই মানুষটাকে আমি বিয়ে করব সেটা ভাবলেন কি করে?”

“বড্ড অদ্ভুত তুমি। আমি তোমায় জোর করে বিয়ে করতে বলিনি। আর বিয়ে মানে আমার কাছে সব ঠিক থাকবে। জাস্ট একটা জিনিসই পাল্টবে। এখন তো কোলবালিশ নিয়ে ঘুমাই। বিয়ের পর একটা পারমানেন্ট কোলবালিশ হয়ে যাবে। এসব কৃত্রিম কোলবালিশ মুক্তি পেয়ে যাবে। আর আরেকটা এডভান্টেজ হলো বিয়ে পর যেই কোলবালিশ পাব তাকে মাঝেমধ্যে একটু আদরও করা যাবে। চুমি টুমুও খাওয়া যাবে। দ্যাটস ইট!”

কথাগুলো বেশ স্বাভাবিকভাবে বলে একটা নিষ্পাপ হাসি দিয়ে কাবার্ডের কাছে গিয়ে দাঁড়ায় স্বচ্ছ। স্বচ্ছের এরূপকথায় মস্তিষ্ক ফাঁকা হয়ে যায় মোহের। কত সিরিয়াস কথাবার্তা বলতে এসেছিল সে। অথচ লোকটার কোনো মাথাব্যথায় নেই? বরং উল্টে আরো এমন কিছু কথা বলছে যে মোহের ইচ্ছে করছে মাটির সঙ্গে মিশে যেতে। মাথা নুইয়ে ফেলা মোহ একটু একটু করে মাথা উঠিয়ে দেখার চেষ্টা করে স্বচ্ছকে। কাবার্ডের সঙ্গে হেলান দিয়ে বুকে হাত দুটো গুটিয়ে নিচের ঠোঁট মুখে ঢুকিয়ে স্থির চোখে তাকিয়ে আছে স্বচ্ছ। উদাম গায়ে যে দাঁড়িয়ে আছে একটা মেয়ের সামনে তাতেও কোনো হেলদোল নেই তার। নাহ, লোকটার ঘরে আর এক মূহুর্ত থাকা সম্ভব না। যা সলিউশন বের করার মোহ একাই করবে। তাছাড়া দরকার হলে টিভি নিউজ চ্যানেলের ওনারের সাথে কথা বলবে। এই ছেলেকে কিছু বলা আর না বলা সমান। মোহ চোখমুখ খিঁচে বলে,
“ইউ নো হোয়াট? ইউ আর অ্যা ডিজগাস্টিং ম্যান।”

বলেই পেছন ফিরে হাঁটা দেয় মোহ। স্বচ্ছ খানিকটা জোরে বলে ওঠে,
“ওয়েট ওয়েট। পড়ে যাবে।”

কে শোনে কার কথা? মোহ দুই কদম হাঁটতেই পা পিছলে যায়। পড়তে পড়তে সামলে নেয় নিজেকে। তার পায়ের নিচে স্বচ্ছের শার্ট এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে। চোখ রাঙিয়ে তাকায় মোহ। স্বচ্ছ দুইহাত দুদিকে প্রসারিত করে বলে,
“এটা হচ্ছে তিড়িংবিড়িং করার ফল। আমি আগেই সাবধান করছিলাম। কিন্তু তুমি যেভাবে হাঁটছিলে যেন র‌্যাম্প শো করছো।”

স্বচ্ছ এগিয়ে আসে। শার্ট মোহের পায়ের সাথে জড়িয়ে গেছে একদম। কোনোমতে শার্ট ছাড়িয়ে নেয় পা থেকে। স্বচ্ছ এসে নিচু হয়ে শার্ট তুলতে গিয়েই ‘উফফ…’ বলে তড়িৎ গতিতে সোজা হয়ে দাঁড়ায়। পিঠে হাত দিতে গিয়েও থেমে যায় সে। চোখমুখ খিঁচে দাঁড়িয়ে থাকে কয়েক সেকেন্ড। মোহ বিস্ময়ের চোখে কি হয়েছে তা বোঝার চেষ্টা করে। কি হয়েছে স্বচ্ছের পিঠে। তার কি দেখা উচিত? কেন দেখবে? হয়ত মানবতার খাতিরে হলেও দেখা উচিত। স্বচ্ছ একে একে দুবার এমন করল। পিঠে কি এমন হয়েছে?

স্বচ্ছের পেছনে গিয়ে চোখ বুলিয়ে নিতেই মোহ শিউরে ওঠে। লাল দাগ কতগুলো! হলুদ ফর্সা শরীরে লাল দাগগুলো স্পষ্ট বলে দিয়েছে স্বচ্ছকে কোনো কিছু দিয়ে বেশ জঘন্যভাবে আঘাত করা হয়েছে। এবার সন্দেহটা গাঢ় হলো মোহের। সন্দেহ দমিয়ে রাখতে না পেরে বলল,
“আচ্ছা আপনি এভাবে আহত কেন? কাল তো ঠিক ছিলেন। একরাতে কি এমন ঘটল?”

থতমত খেয়ে ঘুরে তাকায় স্বচ্ছ। চোখের পলক ঘনঘন ফেলতে থাকে সে এপাশ-ওপাশ তাকিয়ে। অস্থির মনোভাব নিয়ে মানুষ তখনই থাকে যখন কিছু মিথ্যে বলার চেষ্টায় থাকে বা কিছু আড়াল করে। স্বচ্ছ হাসার ভঙ্গিতে বলে,
“আমার গায়ের দিকে এতো নজর কেন তোমার? আজকাল দেখি ছেলেদের সঙ্গে মেয়েরাও টিজ করা শুরু করেছে। প্রথম অ্যাটাকেই আমার বাথরোব আর এখন এভাবে চোখ দিয়ে গিলছো?”

“কথা ঘুরানোর চেষ্টা করছেন আপনি। বলছেন না তো কি হয়েছে এসব আপনার সাথে?”

“কি হবে আবার? কাল কার রেসিং করতে গিয়ে সামান্য এক্সিডেন্ট করে বসেছি।”

স্বচ্ছের কথাগুলো বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না মোহের কাছে। ক্ষীণ দৃষ্টিতে তার মুখে দিকে তাকিয়ে বলে,
“এক্সিডেন্ট হলে পিঠে লম্বা লম্বা লাল দাগ হয়ে যায় মার খাওয়ার মতো জানা ছিল না তো!”

ফ্যাকাশে হয়ে যায় স্বচ্ছের মুখ। মেয়েটা কি গোয়েন্দা? এমনভাবে জেরা করছে যেন এক্ষুনি তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিবে! সে বিরক্ত হওয়ার ভান করে বলল,
“তোমাকে বলেছি না গোয়েন্দাগিরি না করতে? বিয়ে হওয়ার আগেই সন্দেহ করা শুরু করে দিয়েছো? আগে ডিসিশন তো নাও কি করতে চাও। তারপর না হয় সন্দেহ করবে। আন্ডারস্ট্যান্ড?”

মুখ বেঁকিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে মোহ। করিডোর ধরে হাঁটতেই পায়ের ধুপধাপ আওয়াজে আঁখি জোড়া সামনের দিকে স্থির করতেই দেখতে পায় একটা মেয়ে তার দিকে হম্বিতম্বি করে এগিয়ে আসছে। মনে হয় মেয়েটা বাড়িতে কাজ করে। কপালে সূক্ষ্ম ভাঁজের রেখা দেখা যায় তার। মেয়েটা দ্রুত এগিয়ে এসে একেবারে মোহের সামনে হাঁপাতে থাকে। হাঁপাতে হাঁপাতেই বলে,
“তাড়াতাড়ি দাদির(নাফিসা বেগম) ঘরে চলেন। উনি কেমন জানি করতেছেন।”

এক মূহুর্তের জন্য যেন হৃৎস্পন্দন থেমে যায় মোহের। ধক করে ওঠে ভেতরটা। গলা আঁটকে আসে তার। গলায় চাপ দিয়ে বলে,
“কি হয়েছে নানিমার?”

“কান্নাকাটি করতেছে, অস্থির হয়ে পড়তেছে। বড় বড় শ্বাস নিতেছে। আর আপনার নাম নিতেছে। ম্যাডাম বললেন আপনারে ডেকে আনতে।”

আর দেরি করে না মোহ। আগপাছ না ভেবে ছুটতে শুরু করে সে। একপ্রকার দৌড়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে নাফিসা বেগমের ঘরে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে সে। কান্নার সুরটা শুনতে পায়। দৃষ্টি যায় বেডে শুয়ে থাকা নাফিসা বেগমের ওপর। বড় বড় শ্বাস ফেলছেন আর ডুকরে ডুকরে কেঁদে যাচ্ছেন।

“কি হয়েছে তোমার? এভাবে কাঁদছো কেন নানিমা?”
মলিন সুরে জিজ্ঞেস করে মোহ। কান্না খানিকটা থামে নাফিসা বেগমের। মোহ গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে এসে বসে উনার কাছে। সেখানে উপস্থিত আছেন মিসেস. রেবা। চুপটি করে দাঁড়িয়ে কান্ড দেখে যাচ্ছেন উনি। মোহ গিয়ে নাফিসা বেগমের পাশে বসতেই উনি মোহের হাত ধরে বসেন। নিজের দুর্বল হাত দিয়ে মোহের হাত চেপে ধরে বলেন,
“তোর নাকি বদনাম হয়ে গেছে? উল্টাপাল্টা কথা ছড়িয়েছে তোর আর স্বচ্ছের নামে কথাটা সত্যি?”

মাথা নিচু ফেলে মোহ। না বলতে গিয়েও আস্তে করে মাথায় দুলাতেই নাফিসা বেগম আবারও কেঁদে ওঠেন। মোহ চমকে তার নানিমাকে শান্ত করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
“কি হয়েছে বলবে তো? কান্নাকাটি করছো কেন? আমার বদনাম হয়েছে এজন্য? দেখো, আশেপাশের লোকের কাজই এটা। সামান্য বিষয় এটা নানিমা। আজ সবাই হয়ত উল্টোপাল্টা কথা বলবে কিন্তু কয়েকদিন পর সবাই ভুলে যাবে। ব্যাস… এতটুকু বিষয়ে পাত্তা দিতে নেই।”

“বদনাম মানে কি তুই জানিস? একটা মেয়ের যখন বদনাম হয় বিশেষ করে ছেলের সাথে জড়িয়ে পড়া নিয়ে তখন মেয়েটার সম্মান নষ্ট হয়ে যায়। তখন তাকে কেউ বিয়ে করতে চায় না। নিরার সাথে কথা হয়েছে আমার। তোকে নাকি কোনো পরিবার পছন্দ করেছে? এটা জানার পর যদি বিয়েতে ওরা নাকচ করে দেয়? আর তো কোনো সম্মন্ধ আসবেই না তোকে নিয়ে। তারপর কি হবে তোর ভাগ্য?”

বলে কান্নার গতি বাড়িয়ে দেন উনি। মোহ অসহায় চোখে তাকিয়ে থাকে নাফিসা বেগমের পানে। তার নানিমা আগের যুগের মানুষ। তাই এসব ব্যাপার অনেক বড় বড় করে দেখছে। আর এমন এমন লজিক বানিয়ে ফেলছে যে মোহ কি বলবে সেটাই বুঝে উঠতে পারছে না। সে দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে বলে,
“কে বলল আমার সম্মান নষ্ট হয়েছে? নিজে যতক্ষণ না অনুভব করব আমার সম্মান নষ্ট হয়েছে ততক্ষণ নষ্ট হবে না। এটা ভাইরালের যুগ। সামান্য কথা অনেক দূর গড়িয়ে যায়। আর আমার বিয়ের বিষয়ে তোমায় চিন্তা করতে হবে না।”

“তুমি যদি কিছু মনে না করতে তাহলে একটা কথা বলতাম।”

পাশ ফিরে তাকায় মোহ। মিসেস. রেবার উদ্দেশ্যে বলে,
“জি বলুন মামি।”

“দেখো মেয়ে, আমি সোজাসুজি কথা বলতে পছন্দ করি। তুমি জানো আমার বংশের কোনো অপমান বা বদনামের তকমা লাগেনি। কিন্তু তুমি সেটার মর্যাদা রাখোনি। স্বচ্ছ ছেলেমানুষ। আর ছেলে মানুষ একটুআধটু এমন হবেই। কিন্তু তুমি মেয়ে। তুমি কি সামলে থাকতে পারোনি? ঠিক আছে যাই হোক পারোনি যখন তখন আর কিছু বলছি না সেই বিষয়ে। তবে একটা কথা একটা ছোট্ট বদনামও আমার গায়ে এসে লাগে। আমার ছেলেটার সঙ্গে যখন এমন সম্পর্ক গড়েই ফেলেছো তখন আর দেরি করে লাভ কি? একটা প্রস্তাব রাখছি তোমার কাছে। আমার ছেলের সঙ্গে তোমার বিয়ে দেব আমি। এটাই একমাত্র উপায়। তাছাড়া তুমি তো তোমার নানিমাকেও কাছে কাছে রাখতে চাও না? এতে তোমার কাছেই তোমাট নানিমা থাকবে। বদনামও করতে পারবে না কেউ।”

সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়ালো মোহ। তেতে উঠল সে।
“আমাকে কি মনে করেন আপনি? সামান্য কিছু ছবির জন্য আপনার ছেলেকে বিয়ে করতে হবে? আমাকে বিয়ের একজন মানুষ আছে। আপনার ছেলেকে কোনোকালেই বা দুঃস্বপ্নেও বিয়ে করতে চাই না। আর এই বদনাম আমি একাই ঘুচতে পারব। আর বাকি রইল নানিমার কথা। আমি জানি এসব কথা উনার কানে আপনিই পৌঁছে দিয়েছেন। নানিমাকে তো আমি এখান থেকে নিয়ে যাবই। এরজন্য আপনার ছেলেকে বিয়ে করার আমার কোনো প্রয়োজন নেই।”

কথাগুলো বলে থামল সে। ঘাড় ঘুড়িয়ে নাফিসা বেগমের উদ্দেশ্যে বলল,
“আমি আসছি নানিমা। পরের বার তোমাকে এখান থেকে নিয়ে যাব। জোর করে হলেও।”
আর এক মূহুর্ত দাঁড়ায় না মোহ। বেরিয়ে আসে বাড়ি থেকে। বাড়িী সবকটা মানুষের ওপর চরম বিরক্ত সে।

রোদে গা দরদর করে ঘামছে স্বচ্ছের। তবুও ছাঁদে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সে। দুপুর সময়। নিচ থেকে বার বার খাবার জন্য ডাক এসেছে। কিন্তু স্বচ্ছ যায়নি। সে কিছু একটা ভাবতে ব্যস্ত। আনমনে বলে ওঠে,
“আমি জানি মোহ নামক মেয়েটি আমার ওপর বিরক্ত। সে মনে মনে এটা বিশ্বাস করে তার আর আমার ছবিটি আমি ভাইরাল করেছি। কিন্তু সেটা নয়। আমি তো এবিষয়ে কিছু জানি না।”

একটু থামল স্বচ্ছ। ম্লান হেঁসে বলল,
“একটুখানি বিশ্বাস করতে পারলে না রূপবতী রাজকন্যা?”

“ও তোকে বিশ্বাস করুক বা না করুক। তাতে তোর এতো ব্যথা কীসের? কীসের এতো দুঃখ?”

কন্ঠটা চিনতে ভুল হয় না স্বচ্ছের। তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে,
“তুমি বুঝবে না মা। তুমি তো শুধু একজনের কষ্ট বুঝতে পারো।”

“ভুলভাল বকবি না। তুই আমার ছেলে। তোর জন্য আমিও ভাবি। আমি তোকে জন্ম দিয়েছি। তোর জন্যও চিন্তা হয় আমার। তাই সময় থাকতে বলছি মোহের মোহ থেকে বেরিয়ে আয়।”

“মোহ আর ভালোবাসার পার্থক্য বোঝো তুমি?”

ঘাড় ফিরিয়ে মিসেস. রেবার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ল স্বচ্ছ। মিসেস. রেবা স্বচ্ছের পাশাপাশি দাঁড়িয়ে বলেন,
“ওসব বুঝতে চাই না আমি। তোকে সময় থাকতে সাবধান করছি।”

“আমার আর মোহের ছবি তোমার দ্বারা ভাইরাল হয়েছে?”

অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন মিসেস. রেবা। গলা খাকিয়ে কিছু একটা বলতে উদ্যত হলেই স্বচ্ছ থামিয়ে দেয় উনাকে।
“মিথ্যে বলবে না। চেষ্টা করবে না মিথ্যে বলার। তোমাকে ফার্স্ট অ্যান্ড লাস্ট চান্স দিলাম। এসব ছবি যেভাবে ভাইরাল করেছো সেভাবেই সব নিউজ চ্যানেল থেকে বিষয়টাকে বন্ধ করতে বলবে। আদারওয়াইজ…”

“কি?”

“তোমার বলা কোনো কাজ আমি করব না।”

বলেই চলে আসতে নেয় স্বচ্ছ। মিসেস. রেবা পিছু ডেকে বলে,
“আচ্ছা ঠিক আছে। তুই আমার কথা রাখবি তো?”

স্বচ্ছ পেছন ঘুরে একটা অদ্ভুত হাসি দেয়। তারপর চলে আসে। বিড়বিড়িয়ে বলে,
“বিয়েটা তো হবে। কিন্তু মায়ের প্ল্যান অনুযায়ী না। আমার প্ল্যান অনুযায়ী। মোহের বিয়ে হয়ে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি। সে যত একা থাকবে তার ওপর আক্রমণ বাড়তে থাকবে।”

চলবে…

[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আর গল্পটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক। বাস্তবতার সাথে মেলাবেন না।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here