বিষ_করেছি_পান(২৭)

0
584

#বিষ_করেছি_পান(২৭)

(কপি করা নিষেধ)
রাগে গজগজ করতে করতে তিন কবুল বলে দেয় সোহাগ। সাইনটা করার সময় দুহাতে মাথা চেপে ধরে। মাথা থেকে হাত সরিয়ে কপালে দু আঙুল দিয়ে ঘষে। ইন করে আসা শার্ট টা টান মেরে ইন খুলে ফেলে। বেল্ট খুলতে গিয়ে আবার বেঁধে ফেলে। কাজী অফিসে কাজীর ডেকে নেওয়া চারজন সাক্ষী একসাথে চিৎকার করে উঠে। মহিলা সাক্ষীটি বলে,
‘ এসব কি হচ্ছে?স্যার আপনার কি গরম লাগছে? বেল্ট খুলে ফেলছেন কেনো?’
‘ এখনো খুলিনি ওকে? ‘ দাঁতে দাঁত চেপে জবাব দেয় সোহাগ। মাথা নিচু করে আড় চোখে রিতীর দিকে তাকায়। রিতীর ঠোঁটে মিটি মিটি হাসি।

রিতী যখন চোখ বন্ধ করে টেবিলে মাথা রাখে তখনি কাজী চিল্লিয়ে উঠে সেন্সলেস হয়েছে বলে। সোহাগকে ফোন দেওয়ায়। রিতী ভেবেছিলো সোহাগ আসবেনা। রিতী যা করেছে সোহাগকে বোঝার জন্য। মাঝে মাঝে কেউ কেউ কাউকে ভালোবাসলে বুঝতে পারেনা। তবে তাদের ব্যবহার হয়ে যায় অদ্ভুত। কাল রাতে রিতী আয়নায় দাঁড়িয়ে নিজেকে খুটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে। আহামরি সে কেউ না। তবে সোহাগের চোখে কেনো সে রুপে অনন্যা?অন্য কারো চোখে তো না। সোহাগের কথা বার্তা আচরণ রিতীকে ভাবনার গভীরে টেনে নিয়ে যায়। সেই ভাবনার সত্যতা যাচাই করতেই তার এতো আয়োজন। সাথে এটাও ভাবনায় এসেছে যে সে যদি স্বেচ্ছায় অবৈধ ভাবে সোহাগের কাছে যায় তাহলে তার আখিরাতে জায়গা হবেনা। আর যদি ধর্ষিতা হয় তাহলে সমাজে জায়গা হবেনা । আর এদুটোর কোনটাই যদি না হয় তাহলে সোহাগের হাত থেকে মুক্তি পাবেনা। রিতীর ভাবনার ইতি টেনেছে। ধারণা গুলো মিথ্যে হয়েছে। সোহাগ রিতীকে কখনো ভালো চোখে দেখে না। যদি দেখতো তাহলে এখানে একা ফেলে চলে যেতো না। সোহাগের মতো ছেলেরা নোংরামোকে সাহসী কাজ ভাবে আর বিয়েকে পায় ভয়। একটা মাত্র রাত আর এখন থেকে শুরু করে জীবনের শেষ রাত দুটোর মাঝে হাজার হাজার তফাত। তবে রিতীকে এখান থেকে বেরোতে হবে। কিভাবে বেরোবে? উপায় খুঁজে পায়না। চিন্তায় দম বন্ধ হয়ে আসে। ফোন করার দশমিনিটের মাথায় রিতীর চিন্তায় জল ঢেলে সোহাগ এসে উপস্থিত হয়। বাদলেরা ইতি মধ্যে ঘুষি খেয়ে একেকজনের নাক ফাটিয়ে ফেলেছে। সোহাগ তাদের হাতে টাকা গুঁজে দিয়ে টেক্সিতে করে হসপিটালে পাঠায়। ফিরে এসে কাজীকে বিয়ে পড়াতে বলে রিতীর পাশে ধপ করে বসে পড়ে। কাজী সাক্ষী ম্যানেজ করে। যারা সাক্ষী দিতে এসেছিলো তারাতো হসপিটালেই চলে গেছে। প্রথমে রিতীকে কবুল বলতে বললে রিতী ঘোরের মাঝেই কবুল বলে দেয়। সোহাগ রিতীকে বিয়ে করবে এটা মোটেই ভালো বিষয় নয়। রিতী একটু আগে ভেবেছিলো আজ থেকে সোহাগ নামের কেউ তার পথে আর আসবেনা। আর এখন ভাবছে সোহাগ নামটা ছাড়া কেউ তার পথে থাকবেনা। রিতী নিজের ভাগ্যের টার্ন দেখে নিজেই মুচকি হাসে।যা সোহাগের শরীরে জ্বলন ধরায়। সজোরে হাতটা মুঠো করে টেবিলে বারি দিতেই কাজী সহ সবাই হকচকিয়ে যায়। রিতী দাঁত বের হেসে ফেলে। সোহাগ রিতীর দিকে ঘুরে বসে।

— ইচ্ছে করে এগুলো করছিস তাইনা? আমাকে অপদস্ত করা? গেইম খেলছিস আমার সাথে? তোর মতো মেয়ের সাথে থাকা যায় বিয়ে না।

সোহাগের কথায় রিতীর হাসি বন্ধ হয়ে যায়। মুহুর্তেই চোয়াল শক্ত হয়ে উঠে। সোহাগের মুখের সামনে মুখ এনে বলে,
— আমার মতো মেয়ে মানে কি বলতে চান?এই আমার মতো মেয়ের জন্যই কিন্তু আপনি এতোটা ডেস্পারেট। আমি পবিত্র। আপনার ঘরের বউ হয়েই আপনার কাছে যাবো পতিতা হয়ে নয়।

রিতীর রক্তিম চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারেনা সোহাগ। চোখ বন্ধ করে নেয়।
— আমাকে ফোর্স করোনা পিরিতি। আমি কিন্তু তোমাকে শেষ করে দিবো।

— আমিও আপনার হাতে শেষ হতে চাই। দেখবো স্ট্যামিনা কেমন আপনার।

সোহাগ কাজী সাহেবের দিকে তাকায়। রিতীর দিকে আঙুল তুলে বলে,
— কাজী সাহেব আমি এই মেয়েটাকে চিনিনা। এই মেয়ে আমার পিরিতি কিছুতেই হতে পারেনা। এই মেয়ে অন্যকেউ। এই বিয়ে হবেনা।

কাজী সাহেব নাকোচ করে বলে,
— আপনাদের বিয়েটা একটা ঝামেলার কান্ড। কি হচ্ছে আমার অফিসে? একটু আগে বললেই চলতো। বিয়ে তো পড়ানো হয়ে গেছে। রেজিস্ট্রি পেপারে সই করে দিন বিয়ে সম্পূর্ণ হয়ে যাক।

— রিজিস্ট্রি পেপারে সই না করলেও চলবে।

— কিন্তু আপনাকে করতে হবে। যা হচ্ছে তাতে বুঝতে পারছি এই মেয়েটার কপালে দুঃখ আছে। আপনি সই করুন। আইন ছাড়া বেআইনি কাজ আমি কিছুতেই করতে পারবোনা।

— আপনি কিন্তু আমাকে চিনেন না কাজী সাহেব।

— আপনার পাওয়ার কতটুকু তা আমার দেখা হয়ে গেছে। পুরুষ মানুষ বাইরে বাঘ হলেও বউয়ের কাছে আজম্ন বিড়াল হয়েই থাকে। এখন সইটা করুন।

সোহাগ ভীষণ অপমান বোধ করে। সাক্ষী চারজন ও সোহাগকে ফোর্স করে। সোহাগ সই করতে করতে রিতীকে বার বার সাবধান করে,
— আজ রাতটাই। যাস্ট আজ রাত। কেউ যদি ক্ষুনাক্ষরেও এই বিয়ের কথা না জানতে পারে। পিরিতি লাস্ট ওয়ার্নিং তোমার এই গেম আজকেই শেষ করবে।

রিতী চুপচাপ শুনে। কাজীর টাকা দিয়ে বেরোনোর সময় সাক্ষী মহিলাটি রিতীকে বলে,
— শোন নতুন বউ। তোমার স্বামী মোটেও পুরুষ মানুষের কাতারে পড়ে না। ছেলেগুলো তোমাকে নিয়ে এমন টানা হেচড়া করলো আর এই ছেলে এসে ওদের উত্তম মধ্যম না দিয়েই সাদরে হসপিটালে ভর্তি করলো! পুরুষ মানুষ কে বিশ্বাস করোনা। তোমার না ক্ষতি করে দে।ভালো মানুষেরা তো এখন নারী পাচারো করে। সাবধানে থেকো।

মহিলার কথা শুনে সোহাগ তেড়ে যায় মহিলার দিকে। ধাক্কা দিয়ে বলে,
— ঐ আমি আপনাকে কথা বলতে বলেছি? আমি নারী পাচার করি? আপনাকে পাচার করবো। আপনার ঘরে মেয়ে বউ নাই? বাড়ি যান। কাল থেকে আর মুখটাও দেখতে পারবেন না। শেষ করে দিবো আমি।

সোহাগ পাগলের মতো বিহেভিয়ার দেখে লোকগুলো টেনে হেঁচড়ে বের করে দেয়। রিতী সোহাগের শার্ট ধরে এনে ড্রাইভিং সিটে বসিয়ে দেয়। নিজে বসে বলে,
— সরাসরি রিসোর্টে যাবেন। কি খেয়ে এসেছেন? ছিহহ?

— খেতে আর দিলি কই? রুপ দেখিয়ে আমার ভাই ব্রাদারদের মাথা নষ্ট করে দিলি। তখন যদি না আসতাম তো একেকজনের মাথা ফেটে যেতো। এখন তো মাত্র নাক ফেটেছে।
সোহাগের কথায় রিতী হো হো করে হাসতে থাকে। সোহাগ ড্রাইভ করছে আর রিতীর অট্টোহাসি মুখ বুঝে সহ্য করছে। একহাতে রিতীর মুখ চেপে ধরে বলে,
— আল্লার ওয়াস্তে চুপ কর। তোর হাসি আমার সহ্য হচ্ছেনা।
— আমার হাসি দেখলে বুঝি আপনার পাগল পাগল লাগে?
— তোর কি আমাকে ভয় লাগছেনা? কলিজা কাঁপছে না?
— ভয় কেনো লাগবে? কি করবেন আমার সাথে? আমি তো আপনার ই।
— তুই কিছুতেই আমার পিরিতি হতে পারিস না।
— পিরিতি বুঝি আপনার? এক রাতের জন্য?

সোহাগ রিসোর্টে এসে রিতীকে না নিয়েই বেরিয়ে যায়। রিতীও নেমে পিছু পিছু দৌড়ে আসে। সোহাগ রুমের লক খুলেই বারান্দায় চলে যায়। রিতী রুমের সবগুলো লাইট অন করে দেয়। ব্যাগটা রেখেই বাথরুম থেকে ফ্রেস হয়ে আসে। মাথায় পানিও ঢালে। গ্লাসের পানি টুকু এক চুমুকে শেষ করে নরম বিছানায় বসে। টাওয়েলে মাথা মুছতে মুছতে রুমটাকে দেখতে থাকে। সিম্পল একটা রুম। দুপাশে ক্যাবিনেট,একটা ফ্রিজ,একটা টেলিভিশন,একটা সোফা,একটা ভ্যানিটি, একটা খাট। খাটের উপর গোলাপ দিয়ে লাভ শেইপ করা। খাটের দুপাশে রজনীগন্ধার দুটো বুকে। দারুন সুন্দর স্মেল আসছে নাকে। রিতী সোফায় টাওয়েল মেলে দেয়। বিছানায় বসে ভাবতে থাকে সে কি ঘুমোবে? বাসর রাতে কি কেউ ঘুমায়? বাসর রাতে স্বামীর আদর নেয়। সোহাগ কি তাকে আদর করবে? নাকি জানোয়ারের মতো ছিঁড়ে খাবে? নানান রকম চিন্তায় রিতীর ঘুম ক্ষিধে দুটোয় চলে যায়। নিজের অবস্থান সে চিন্তা করছে। অনান্য সময় হলে সে ভয়ে লেপ্টে যায়। আর আজ তার বিন্দুমাত্র ভয় লাগছেনা। এইযে সোহাগ নামের লোকটা কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে শেষ করতে আসবে তবুও ভয় লাগছে না। বরং অদ্ভুত একটা অনুভুতি খেলা করছে নিজের মধ্যে। এরপর কি হয় সে দেখতে চায়। কিন্তু সোহাগ রুমে আসেনা। রিতীর কৌতুহল ও দমে না। প্রকৃতি যে অশান্ত হয়ে উঠেছে তা রিতী জানেনা। যখন দেখলো বারান্দার দরজাটা মেলে দিয়ে সোহাগ দাঁড়ালো তখনি দেখতে পেলো বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে। মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।রুমের ভেতর থেকে বুঝা যায়না। বৃষ্টির ছিটায় সোহাগের শার্টে লেগেছে। হালকা ভিজেও গেছে। সোহাগ দরজা লক করে রিতীর দিক না তাকিয়েই সোফার উপর ছড়িয়ে রাখা টাওয়েল টা নিয়ে মাথা সহ ভেজা শার্টের উপরিভাগ মুছে। পিঠের দিকে চেপে চেপে মুছতে না পারলে রিতী সেচ্ছায় এগিয়ে যায়। টাওয়েলে হাত রাখতেই সোহাগ সরে দাঁড়ায়। ভেজা চুলে বেনারসীতে মোড়ানো মেয়েটিকে তার চোখে ভয়ঙ্কর সুন্দর লাগে। চোখ দুটো জ্বলজ্বল করে উঠে। শরীর তেগড়ে উঠে। ধপ ধপ পা ফেলে রিতীকে দুহাতের বাঁধনে বেঁধে ফেলে। রিতী স্বাভাবিক। সে জানে এটাই হবে। মন থেকে খারাপ লাগাগুলো ঠিকরে উঠে। তবুও নিজেকে শক্ত রাখে। রিতীর শক্ত হয়ে থাকা দেখে সোহাগ ভ্রু কুঁচকে ফেলে। মুখের উপর মুখটা এনে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে।রিতী নিরুত্তর। নিজের মাঝে অচেনা অনুভূতি সঞ্চার করে। লডাই করতে থাকে প্রতিনিয়ত সেই অনুভূতির সাথে। সোহাগ রিতীর কোমড় চেপে ধরতেই রিতীর টনক নড়ে। হালকা ব্যথায় উহ করে উঠতেই সোহাগের চোখে চোখ পড়ে। সোহাগ চোখ দুটো এখন বেশ শান্ত দেখাচ্ছে। রিতী মুচকি হাসে।
— মি. সোহাগ! রাত কিন্তু ধীরে ধীরে চলে যাচ্ছে। মনে রাখবেন সকাল অব্দি আর মাত্র ছয় ঘণ্টা আছে। মাত্র ছয়ঘন্টা। আপনার তৃষ্ণা মিটবে? শান্তি পাবেন আপনি?

সোহাগ রিতিকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
— এই মুহূর্তে আমার সব থেকে বড় অশান্তির নাম তুমি। আচমকা এমন ধাক্কায় রিতী পিছিয়ে যায়। সোহাগের কথায় বড্ড হাসি পায়। শান্তির হাসি। সোহাগ যতোটা অশান্তিতে ভুগছে রিতীর ঠিক ততোটাই শান্তি লাগছে। দুহাত বাড়িয়ে দিয়ে লাস্যময়ী ভঙ্গিতে বলে,
— সামনেই আছি করে নিননা শান্তি।
— তুমি রিতী কখনোই হতে পারো না। রিতী তোমার মতো জোর করে বিয়ে করবেতো দূর আমার সামনেই আসবেনা। কারণ রিতী আমাকে সহ্য ই করতে পারেনা।
— কে বললো? আমি বলেছি কখনো? বলিনি। আপনি কি ভেবেছিলেন শুধু আপনার আমার প্রতি ইন্টারেস্ট আছে জন্যেই আমি এখানে? উহু। আপনাকে আমার বেশ ভালো লাগে। আপনার ঐ লোভাতুর জোড়াচোখ,চাপ দাঁড়ি, সিগারেট খাওয়া কালো ঠোঁট, চওড়া কাঁধ উপপপসস! পাগল হয়ে যাই আমি।
— ফ্লাটিং করবেনা আমার সাথে পিরিতি।
— আপনার থেকেই তো শিখলাম। না করলে কি চলে?আমাকে নাকি আপনার নায়িকাদের মতো লাগে? চোখে জ্বালা ধরানো সুন্দরীদের মতো লাগে? আপনার সময় কিন্তু পেরিয়ে যাচ্ছে।
— তোমার এই মুহূর্তে আমার কাছে বিষাক্ত লাগছে।
— জেনেশুনে বিষ পান করতে চেয়েছেন আপনি। আমি করাবো সেই বিষ পান আপনাকে।
রিতী একটানে শাড়ির আঁচল ফেলে দেয়। সোহাগ চিৎকার করে উঠে।
— পিরিতি ডোন্ট। না পিরিতি। বেরিয়ে যাও এখান থেকে।
— আপনার সাথে সময়টা কাটাবো বলে এসেছি। চোখ ধাঁধানো রুপ থাকতেও এভাবে অপমান করতে পারেন না আমার সাথে। কাছে আসুন।
রিতী হাত বাড়িয়ে দেয়। সোহাগ মাথা চেপে সোফায় বসে পড়ে। চুল টানতে টানতে বলে,
— আমাকে ছোবার চেষ্টাও করোনা পিরিতি।
— আপনাকে ছোবার পূর্ণ অধিকার আমার আছে।
রিতী এগুতে নিলেই সোহাগ ধাক্কা দিয়ে রিতীকে বিছানায় ফেলে দেয়। বড় বড় শ্বাস ফেলতে ফেলতে বলে,
— আমার সাথে এতো বড় খেলা খেলার স্পর্ধা তোমার কি করে হলো পিরিতি?
— যে যেমন তার সাথে তো তেমনভাবেই খেলা উচিত তাইনা? আপনার চ্যালারা কখন আসবে? সোহাগ আমি না আসলেই অনেক হট। আপনি একা পারবেন তো? নাকি এখনি ডাকবেন আপনার সাগরেদদেরকে?
পাশে সাজানো ফ্লাওয়ার ভাসটা সোহাগ স্বজোরে ফ্লোরে ছুঁড়ে মারে। রিতীর দিকে আঙুল তুলে বলে,
— আমাকে জালিয়ে কি পাচ্ছিস তুই এভাবে? আর একটা কথা বলবিনা বলে দিলাম তোকে।
— শুধু শুধু রাগবেন না সোহাগ। আপনার হাতে মাত্র সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা সময় আছে। তারপর আর কোনদিন পাবেন না আমাকে।
— ভয় দেখাচ্ছিস?
— এ রিসোর্টে কি আগের এরকম কোনো রেকর্ড আছে?
ভয়ে ঢুক গিলে সোহাগ। রিতী কি করতে চাইছে? সোহাগের ভয়ার্ত মুখ দেখে রিতী শরীর কাঁপিয়ে হেসে উঠে। বড্ড সুখ সুখ ফিল হচ্ছে। একসময় ঘুমিয়ে পড়ে।সোহাগ রিতীর ধারে কাছে এগোয় না। ভয়ে আতঙ্কে চুপসে থাকে। সারারাত ছটফট করে ভোর চারটার দিকে রিতীর কাছে এগিয়ে যায়। অন্যদিকে চোখ রেখেই শাড়ির আঁচল দিয়ে রিতীকে মুড়িয়ে নেয়। পাঁজাকোলা করে ঘুমন্ত রিতীকে কোলে তুলে রিসোর্ট ছেড়ে বেরিয়ে আসে। রিতীর বাটন ফোনে কল দিয়ে ছুটিকে দরজা খুলে দিতে বলে। এতো ভোরে ছুটি সোহাগের কোলে রিতীকে এই অবস্থায় দেখে আকাশ থেকে পড়ে। বুকের মধ্যে ভয় চেপে ধরে। নানারকম প্রশ্নেরা আনাগোনা করে। সোহাগ রিতীকে নিয়ে গিয়ে তার রুমে শুয়িয়ে দেয়। ছুটির মাথায় হাত রেখে বলে,
— আপুকে দেখে রাখবে। সব সময় চোখে চোখে রাখবে। কোন প্রশ্ন করবেনা। কোনো ঝামেলা করতে চাইলে আমাকে জানাবে।

আজকের পার্টটা লিখতে গিয়ে মাথা ব্যাথা করছে। মাথায় এতো প্রেশার দিয়ে মানুষ কিভাবে লিখে!!
চলবে,
লাবিবা তানহা এলিজা~

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here