স্বর্ণাভ_সুখানুভূতি আফিয়া খোন্দকার আপ্পিতা পর্ব-৩১

0
346

#স্বর্ণাভ_সুখানুভূতি

আফিয়া খোন্দকার আপ্পিতা

পর্ব-৩১

আকাশ মস্ত বড়ো চাঁদ। চারপাশে বসেছে হাজার তারার মেলা। রূপালী আলোয় আলোকিত প্রকৃতি। এক চিলতে আলো এসে ঠিকরে পড়ছে মুশরাফার মুখে। চিলেকোঠার ছাদ রেলিঙ ঘেঁষে বসে আছে ও। ডান হাতে কফি মগ। কফিতে চুমুক দিয়ে আকস্মিক প্রশ্ন করল,
‘ আপনি আমাকে নিজ থেকেই চন্দ্রবিলাসের প্রস্তাব দিয়েছেন! অবাক লাগছে ভেবেই।’

ওর থেকে খানিকটা দূরে সিমেন্টের উঁচু রেলিঙ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে জাওয়াদ। ওর হাতে ও কফি মগ। চাঁদের দিকে দৃষ্টি ওর। আকাশ থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে স্ত্রীর দিকে তাকাল।
ভ্রু কুঁচকে বলল,
‘ তো নিজ থেকে না দিয়ে কি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দিতাম?
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে জাওয়াদ আহমেদ এর সাথে মুশরাফা সিদ্দিকী’র চন্দ্রবিলাসের আয়োজন করা হয়েছে। আজ রাতে রুপটপে আসার আমন্ত্রণ রইল। এসব লিখে মেইল করতাম? তাহলে বিশ্বাস হতো!’

থেমে বিরক্তির ভান করে বলল,
‘এই জন্য আমি একাই আসব ভেবেছি। কিন্তু একা আসলে ভাবতে আমি সিগারেট খেতে এসেছি। শান্তি দিতে না। তাই নিয়ে সাথে আসতে বললাম।’

মুশরাফা হেসে বলল, ‘ অবাক হয়েছি ঠিকই। তবে খুশিও হয়েছি। স্বামী স্ত্রী একসাথে চন্দ্রবিলাস করাও সুন্নত।
আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিক। তা আপনাকে আজ ভীষণ খুশি খুশি লাগছে। কারণ কী?’

জাওয়াদ জবাব দিল না। আকাশের দিকে তাকিয়ে কফিতে চুমুক দিল। মুশরাফা সেসব ঘাটল না। সে বলল,
‘ কফি বসে পান করুন।’

জাওয়াদ এবার ওর দিকে তাকাল, ‘কেন দাঁড়িয়ে খেলে কী হবে?’

মুশরাফা বলল, ‘রাসূল (সাঃ) দাঁড়িয়ে পানাহারের ব্যাপারে কঠিনভাবে সাবধান করেছেন। অসুস্থ বা বাধ্য না হলে কোনভাবেই দাঁড়িয়ে পানাহার করা যাবে না।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যেন কখনো দাঁড়িয়ে পান না করে। কেউ ভুলে পান করলে সে যেন পরে বমি করে ফেলে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৫১৭৪)’

জাওয়াদ অবাক হয়ে প্রশ্ন করল, ‘ এত কঠিনভাবে নিষেধ করল কেন? কী হয় দাঁড়িয়ে পানাহার করলে?’

মুশরাফা শান্ত স্বরে বলল, ‘ আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান কী বলে জানেন? দাঁড়িয়ে পানাহার বা খাবার গ্রহণ করলে তা সরাসরি পাকস্থলীতে চলে যায়। এতে খাবার সঠিকভাবে হজম হয় না ও পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা দেখা দেয়। এতে বদ-হজম হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে, জিইআরডি-তে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে, অ্যাংজাইটি লেভেল বেড়ে যায়, পানি পান করলেও তেষ্টা থেকেই যায়, কিডনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, পাকস্থলীতে ক্ষত সৃষ্টি হয়, অ্যাসিড লেভেলে তারতম্য দেখা দেয়, আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ‘

জাওয়াদ অবাক হয়ে শুনল। এই কথাও অজানা ওর। মুশরাফা থেমে বলল, ‘ আমার কাছে সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয় কী লাগে জানেন? এই যে চৌদ্দ’শ বছর আগে যা রাসূল (সাঃ) করতে বলেছেন বা নিষেধ করেছেন বর্তমান বিজ্ঞান ও গবেষণা করে তা বলছেন। তারা এখন বলছেন, অথচ হাদিসে কত আগে এটা বলা হয়েছে। ব্যাপারটা সুন্দর না?’

মুশরাফার মুখে আনন্দ। জাওয়াদ অবাক হয়ে বলল, ‘ আসোলেই সুন্দর। সেই সাথে বিস্ময়ের। আমার অবাক লাগে ইসলামের নতুন নতুন দিক দেখে। ‘

মুশরাফার হাসি চওড়া হলো, ‘ইসলামের প্রতি পরতে পরতে বিস্ময় আছে। আছে মানুষের মঙ্গল। ইসলাম পূর্ণভাবে একজন মানুষের সুস্থ থাকার সকল উপায় বলে দিয়েছে। আপনি যদি ইসলাম অনুসরণ করেন তবে আপনি সুখে থাকবেন, মন শান্তিতে থাকবে। ‘

জাওয়াদ রেলিঙের উপর বসল। ওকে রেলিঙের উপর বসতে দেখে আঁতকে উঠল মুশরাফা। এখান থেকে নিচে পড়লে বাঁচার সম্ভাবনা নেই। আতঙ্কিত হয়ে বলল,
‘ এত জায়গা থাকতে ওখানে বসলেন কেন? নেমে যান।’

জাওয়াদ নড়েচড়ে বলল, ‘ পড়ব না। আমার অভ্যাস আছে।’

মুশরাফা অনুরোধের সুরে বলল, ‘ নেমে যান প্লিজ! আমার ভয় করছে।’
চাঁদের আলোয় ওর মুখে ভাসা আতঙ্ক স্পষ্ট ধরা পড়ল জাওয়াদের চোখে। ও ভ্রু কুঁচকাল,
‘কেন ভয় করছে!’

‘যদি আপনি পড়ে যান! নিচে পড়লে রক্ষা নেই। ভেবেই বুক কাঁপছে। প্লিজ নেমে যান। ‘ মুশরাফা উঠে দাঁড়িয়ে ওর হাত ধরল।

ওর মুখটা কাছ থেকে দেখতেই জাওয়াদের মুখে হাসির রেখা ফুটে উঠল। মেয়েটার মুখে এখন স্পষ্ট ওর জন্য ভালোবাসা দেখতে পারছে ও। ব্যাপারটা সুন্দর। জাওয়াদ বলল,
‘ আল্লাহর উপর ভরসা থাকা মানুষদের মনে এত ভয় কাজ করে না।’

মুশরাফা ধীর স্বরে বলল, ‘
“হযরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত, এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি উট বেঁধে রেখে আল্লাহর উপর ভরসা করব, না বন্ধনমুক্ত রেখে? তিনি বললেন, উট বেঁধে নাও, অতঃপর আল্লাহর উপর ভরসা কর। (তিরমিযি)” উক্ত হাদিস দ্বারা প্রমাণ হয় যে সচেতনতা অবলম্বন করার পর আল্লাহর উপর ভরসা করতে হবে। আমি আল্লাহর উপর ভরসা করি বলেই আপনাকে সরতে বলছি।’

জাওয়াদ ভ্রু কুঁচকাল, ‘আমি আকস্মিক এখান থেকে পড়ে গেলে আল্লাহ আমাকে বাঁচাবেন না? ‘

মুশরাফা বলল,
‘ধরুন, আপনি দূর্ঘটনাবশত কোথাও থেকে পড়ে গেলেন। তারপর যথেষ্ট চেষ্টা করে গেলেন নিজেকে বাঁচানোর, সেই সাথে আপনাকে আল্লাহর জিম্মা করলেন। এতে আল্লাহ আপনাকে বাঁচাবেন। তবে তিনি সরাসরি সাহায্য করবেন না, বিভিন্ন মাধ্যমে আপনাকে বাঁচাবেন। কারণ দুর্ঘটনায় আপনার হাত নেই। এতে আপনার এই ভরসার জন্য আল্লাহ আপনার উপর সন্তুষ্ট হবেন।

কিন্তু আপনি নিচে পড়ে গেলে মারা যাবেন জেনেও যদি ও লাফ দেন তবে মরে গেলে ওটা আত্মহত্যা হবে। আত্মহত্যা কঠিন পাপ। ইসলাম বলেছে, কোনভাবেই নিজের ক্ষতি করা যাবে না। আপনি নিজেকে ক্ষতির দিকে ঠেলে দিয়ে ইসলামের বিধান অমান্য করলেন। তারপর লাফ দিয়ে যদি বলেন, আল্লাহ আমি তোমার উপর ভরসা করে লাফ দিচ্ছি, আমাকে বাঁচাও। তাহলে আল্লাহ আপনাকে বাঁচাবেন? সাহায্য করবেন? করবেন না। উলটো আপনি প্রাণ হারাবেন, সেই সাথে পাপের ভাগিদার ও হবেন। ব্যাপারটা এমন হয়ে যাবে যে, উট ছেড়ে আল্লাহর উপর ভরসা করার মতো। মানুষ সেটাই করে বেশি। নিজেকে ক্ষতির দিকে ঠেলে দেয়, তারপর আল্লাহর উপর সব ছেড়ে দেয়। এরপর আল্লাহ যখন সাহায্য না করে তখন ইসলাম বিদ্বেষী হয়ে যায়। বলে আল্লাহর উপর ভরসা করেছি, কোন কাজ তো হলো না। ভরসা করার মতো করুন। হয় পাখির মতো করুন, নয়তো চেষ্টার পাশাপাশি করুন। দেখবেন আল্লাহর সাহায্য প্রতি পদে পদে পাবেন। ‘

পুরো ব্যাপারটা শুনল জাওয়াদ। ব্যাপারটা আসোলেই যুক্তিযুক্ত। মানুষ নিজের ক্ষতি নিজে করে আর দোষ দেয় আল্লাহকে। যত সময় যাচ্ছে মুশরাফার বলা ইসলামের সৌন্দর্য যেন নতুন রূপে ওর সামনে ধরা পড়ছে। মুখে প্রকাশ না করলেও ওর একটা কৌতূহল আর ভালো লাগা জন্মে গেছে ইসলামের প্রতি। মুশরাফার বলা হাদিস গুলো শুনতে ভালো লাগে ওর। ওর ভাবনার মাঝে মুশরাফা বলল,

‘ আপনার শরীর আল্লাহর আমানত। আপনার নিজের এই শরীরের ক্ষতি করার অধিকার নেই। নেমে আসুন। ‘

‘শরীর আল্লাহর আমানত!’ কী সুন্দর কথা! চমৎকার লাগল জাওয়াদের। মেয়েটার কথা বলার ভঙ্গি সুন্দর। যত বলে বিরক্তি আসে না। জাওয়াদ নেমে গেল রেলিঙ থেকে। ঠেস দিয়ে দাঁড়াল। হুট করেই রেলিঙ সম্পর্কিত একটা ঘটনা মনে পড়ল ওর । ভেবেই হেসে ফেলল ও। মুশরাফা ভ্রু কুঁচকে বলল,
‘আপনি হাসছেন কেন?’

জাওয়াদের ইচ্ছে হলো কথাটা বলতে মুশরাফাকে। সাতপাঁচ না ভেবে বলে ও ফেলল,
‘ ইন্টারমিডিয়েটে আমার একটা গার্লফ্রেন্ড ছিল। নাম ছিল তিন্নি। আমার ক্লাসেরই। তিন্নির বান্ধবীর জন্মদিন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল ওর বাসার ছাদে। যেহেতু আমরা কমন ফ্রেন্ড ছিলাম, তাই আমরা দুজনেই গিয়েছিলাম সেখানে। অনুষ্ঠানের আগে ছাদের কিনারায় তিন্নিসহ আমরা সব ফ্রেন্ড মিলে কথা বলছিলাম। কথা বলতে বলতে আমি উঠে বসেছিলাম রেলিঙের উপর। আমাকে বসতে দেখে তিন্নি ও বলল সে ও বসবে রেলিঙে। আমার অভ্যাস ছিল। ও তার আগে বসেনি। তাই আমরা সবাই নিষেধ করলাম। মেয়েটা শুনল না। একা একাই উঠতে গেল। বসতে তো পারলোই না, দোতলার ছাদ থেকে পড়ে গেল। মরে নি, তবে পায়ের হাড্ডি-গুড্ডি ভেঙে একাকার হলো। ওর পরিবার আগে জানতো না আমাদের সম্পর্কে কথা। এর মাধ্যমে জেনে গেল। ওর মা এসে যখন শুনল তখন অসুস্থ মেয়ের গালে চড় বসালেন। আমরা সবাই হা করে তাকিয়ে ছিলাম। মেয়ের বাবা এসে আমার খোঁজ লাগালেন। আমি তখন এক ছুটে পালালাম। যা অবস্থা হয়েছিল আমার। ভেবেই হাসি পাচ্ছে এখন। ‘

বলে হাসিতে ফেটে পড়ল। হাসতে হাসতে মুশরাফার দিকে তাকাল। দেখল মুশরাফা থমথমে মুখে বসে আছে। এ যাবত বিরাজ করা উৎফুল্লতা আর নেই। কোথায় যেন উবে গেছে। জাওয়াদ কৌতুকের সুরে বলল,
‘হাসির কথা বললে হাসতে হয়। হাসো! এভাবে পেঁচার মতো তাকিয়ে আছো কেন?’

মুশরাফা হাসল না। চুপচাপ গিয়ে আবার রেলিঙ ঘেঁষে বসল। ওর মাথায় ঘোমটা টানানো, মুখ খোলা। আসার সময় আপাদমস্তক ঢেকে মাস্ক পরে এসেছে। মাস্ক নামিয়ে নিয়েছে আসার পর। জাওয়াদ ওর গম্ভীর মুখ পরখ করে হাসি থামাল। তবে কৌতুক ছাড়ল না,
‘আর ইউ জেলাস?’

মুশরাফা উত্তর না দিয়ে আকাশের দিকে তাকাল। তাকিয়েই রইল ওই চাঁদের দিকে। পলক ফেলল না। ওকে কেমন উদাস দেখাচ্ছে। খানিক বাদে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল,
‘ ইয়েস আই এ্যাম। স্বামী স্ত্রী একে অপরের জন্য সুরক্ষিত। তাদের আবেগ, অনুভূতি ভালোবাসা সব একে অপরের জন্য বরাদ্দ। বাইরের কারো জন্য না। আমি বাইশটা বছর ধরে লালন করা আবেগ অনুভূতি ভালোবাসা সব জমা রেখেছি আমার জীবন সঙ্গীর জন্য। কত সুযোগ, কত প্রস্তাব এসেছিল অথচ আমি তার অপেক্ষায় অন্য কোন ছেলের দিকে বিনা প্রয়োজনে তাকাইনি অবধি। নিজেকে পুরোপুরিভাবে সংরক্ষণ করেছি তার জন্য। আমার ভাবনা ছিল সে ও তার অনুভূতি আমার জন্যই সংরক্ষিত রেখেছে। আমাদের প্রেমময় অনুভূতিগুলো দুজনের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা হবে। কিন্তু যখন আমি জানতে পারি, সে নিজেকে আমার জন্য সংরক্ষিত না রেখে এক বা অনেকের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছে। যেই অনুভূতি গুলোতে আমি নতুনত্ব খুঁজে পেয়েছিলাম, সেগুলোতে সে অভিজ্ঞ। তার জীবনে আমি ছাড়া ও মানুষ ছিল, তাও অবৈধভাবে। তখন হয়তো আমার জেলাস হওয়াটাও স্বাভাবিক। বরং না হওয়াটাই অস্বাভাবিক। ‘

এই ক্ষণে এসে জাওয়াদ নিজের ভুলটা বুঝতে পারল। চরম ভুল হয়ে গেছে। বিবাহিত পুরুষদের একটা কাজ কখনোই করা উচিত না, তা হলো বউয়ের সামনে প্রাক্তন প্রেমিকার গল্প করা। এটা যার মাশুল তাকে পদে পদে দিতে হয়। এই তো সেদিনই এক বন্ধু কথায় কথায় মুখ ফসকে নিজের প্রাক্তনের কথা বলে ফেলেছিল বউয়ের সামনে। এই নিয়ে তুলকালাম বেধেছে। সেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করল। এটা বলা উচিত হয়নি বোধহয়। জাওয়াদের মাঝে একটা অনুতাপ কাজ করল। তবে তা প্রকাশ করল না। উপরে বলল,

‘ এতে এত সেন্টি খাওয়ার মতো কিছু নেই। বিয়ের আগে এমন এক আধটু সবাই করে। আমি ও করেছি। সিম্পল।’

ওর স্বরে অনুতাপ না দেখে মুশরাফার অভিমান হলো। চাপা গলায় বলল,
‘ সবাই করলে ও গুনাহ বলে আমি করিনি। আপনার জন্য নিজেকে সংরক্ষণ করেছিলাম। আপনার ও উচিত ছিল আমার জন্য নিজেকে সংরক্ষণ করা। তারচেয়ে বড়ো কথা, এই সুন্দর মুহুর্তে এসে নিজের অতীত স্মরণে এনে মুহুর্তটাকে নষ্ট না করা।’

জাওয়াদের কপালে বিরক্তির ভাজ উঁকি দিল। বিরক্তিটা কার উপর বুঝা গেল না। চোখ মুখ কুঁচকে কফিতে চুমুক দিতে গেল। মুখের সামনে লাগিয়ে ও চুমুক দিল না। ও দাঁড়িয়ে আছে। দাঁড়িয়ে আর পান করতে ইচ্ছে করছে না। মগটা সরিয়ে ফেলল। আকাশের দিকে তাকাল এক পলক। তারপর মগ হাতে মুশরাফার পাশে গিয়ে বসল। মুশরাফার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে কফিতে চুমুক দিল। অভিমানী মেয়ের মুখটা কালো করে বসে আছে। ওর দিকে তাকাচ্ছে না। স্থির দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। এই অভিমানের মাঝে কী যেন উঁকি দিচ্ছে, কত কথা বলে দিচ্ছে। জাওয়াদ সব পড়ে নিল তারপর ধীর স্বরে বলল,
‘তোমার মুখ দেখে আমার হাসি পাচ্ছে কেন বলো তো?’

মুশরাফা উত্তর দিল না, তাকাল ও না। উঠে দাঁড়াল। যাওয়ার জন্য পা বাড়াল। জাওয়াদের কপালে চিন্তার ভাজ পড়ল। এখন রাগ ভাঙাতে গেলে, ওকে নিজের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হবে। জড়তাহীন প্রেমিক জাওয়াদকে প্রকাশ করতে হবে। আর রাগ বা ভাঙালে মেয়েটা মুখ ফুলিয়ে বসে থাকবে। ঝগড়া করবে না, যদি আল্লাহর কাছে বিচার দেয়? সাংঘাতিক! এবার কী হবে? জাওয়াদ কী করবে? দ্বিধায় পড়ল।

চলবে….

অশান্ত মনের খাপছাড়া লেখা। সাজানো কাহিনি সব এলোমেলো হয়ে গিয়েছে লিখতে বসে। ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here