মেঘলা আকাশে রুদ্রই ভরসা উম্মে হাবিবা তনু পার্ট:৪৭

0
367

মেঘলা আকাশে রুদ্রই ভরসা
উম্মে হাবিবা তনু
পার্ট:৪৭

শেষ বিকেলের পড়ন্ত রোদ।
সূর্যের রক্তিম আভা চারদিকে ছড়িয়ে দিয়ে জানান দিচ্ছে এইবার তার বিদায়ের ক্ষণ এলো বলে।
শেষে বিকেলের এই অপূর্ব সৌন্দর্য্যে ভূলোককে এক রহস্যের রঙে রাঙিয়ে প্রকৃতিকে করে তোলে রহস্যময়।
ধীরে ধীরে রক্তিম আভা মিলিয়ে গিয়ে নেমে আসে নিকষ কালো আঁধার।
তবে পূর্ণিমার দিনগুলো সে নিকষ কালো আঁধারকে আড়াল করে চাঁদ ঢেলে তার জোৎস্নাকে।
মানুষের জীবনও এমনই রহস্যে ঘেরা।কারো কারো জীবন রহস্যের বেড়াজালে হারিয়ে যায় নিকষ কালো আঁধারে।আবার কেউবা খুঁজে পায় পূর্ণিমার রাতের জোৎস্না।

যখন সূর্যি মামা রক্তিম আভা ছড়িয়ে দিতে ব্যস্ত তখন বাসন্তী রঙ্গা শাড়ি পরে এক অবোধ বালিকা তার প্রানউচ্ছলতায় সবাইকে মাতিয়ে দিয়ে যাচ্ছে।
যদিও তার জীবনের পুরোটাই এক রহস্য তবু তা তার অগোচরে নিভৃতে রয়ে গেছে।তাকে ঘিরে রেখেছে জানা তবুও খুব অজানা এক ভরসার ছায়া।

সারাদিন অনেক ঘুরাঘুরি করেছে।স্মৃতিসৌধ,শহীদ মিনার এবং সব শেষে এই এলো গোলাপ গ্রাম।যদিও আজ গোলাপ গ্রাম যাওয়ার ইচ্ছা ছিল না।কিন্তু এখনো সন্ধ্যেও হয়নি,হতে অনেকটা সময় দেরি।তাই ছোট করে ডু মেরে ঘুরে দেখা।

নদী পথ পার হয়ে ছোট্ট একটি গ্রাম। তবে গ্রাম হলেও পুরোটাই গোলাপের বাগান দিয়ে পরিপূর্ণ । এখানে গেলে মনে হবে যেন বিশাল একটি গোলাপের বাগানের ভেতর আপনি ঘুরছেন। সরু পথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দেখবেন রাস্তার দুপাশ গোলাপের বাগান দিয়ে ঘেরা।

মাহা আজ যেনো নিজের মাঝে নেই।হারিয়ে যাচ্ছে গোলাপের রাজ্যে।ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাচ্ছে প্রতিটি গোলাপকে।হাতে মাথায় তার গোলাপের সাজের ছড়াছড়ি।বাসন্তী শাড়ির সাথে গোলাপের সাজ….ভয়াবহ রকমের সুন্দর লাগছে।

মাহার এত আনন্দ,হাসিহাসি এই মুখটা দেখতেই তো শান্তি।কখনোই একবারের জন্য মনে হয়নি মাহা নিজের মেয়ে নয়।কিন্তু নিয়তি তো অন্য কথা বলে।বারবার সত্যি আড়াল করলেও সত্যি কখনো মিথ্যা হয়ে যায় না।নির্মম সত্যিটা যেমন মানতে হবে তেমনি বলতেও হবে।মনটা থেকে থেকেই খারাপ হয়ে যাচ্ছে।পরক্ষণেই মাহার হাসি আনন্দের কলরবে ভুলে যাচ্ছে সব।এ কেমন পরিস্থিতি!!হতেই তো পারতো মাহা আমার নিজের সন্তান…নাহ তা আর হলো কই?আকড়ে ধরলেই তো নিজের বলে ধরে রাখা সম্ভব নয়।বুক চিড়ে এক দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো।যা হবার তাই হবে আগে থেকে ভেবে কাজ নেই।এইটা তো হওয়ারই ছিল…আজ না হয় কাল।মন খারাপ করে থাকতে দেখলে আমার মেয়েটার আনন্দই মাটি হয়ে যাবে।আমাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাবে।যেনো আমার মন ভালো করাই ওর একমাত্র কাজ।মেয়েটা মায়েরই মত জেদী হয়েছে।অতি সন্তর্পনে নিজেকে গুটিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।বারবারই ব্যর্থ হচ্ছে।মাহার দিকে তাকিয়ে এক মনে এইসব ভাবছে রুদ্র।

পাপা…
…..
ও পাপা…..
……
মাহা ডেকেই চলেছে রুদ্রকে।আর রুদ্র নিজ ভাবনায় ডুবে আছে।
মাহা বহুকষ্টে দৌড়ে আসছে।শাড়ি পরে মানিয়ে নিলেও শেষ বেলায় এসে বড্ড ঝামেলা মনে হচ্ছে।আর এই আঁকাবাঁকা সরু আইলের উপর দিয়ে হাটাই কষ্ট সেখানে ও শাড়ি পড়ে দৌড়ানোর চেষ্টা করছে।

কাধে করো স্পর্শ পেতেই ভাবনা থেকে বেরিয়ে এলো রুদ্র।মাথা ঘুরিয়ে তাকালো।
এইভাবে মন মরা হয়ে থাকলে মাহাকে বলবে কিভাবে??
আপু আমি চেষ্টা করেছি।কিন্তু….
পারছো না তাই তো??
রুদ্র মাথা নিচু করে রইলো।
সাবিবা রুদ্রর কাধে হাত রেখে বলল,
তুমি আমার ছোট ভাই এর মত।বড় বোন হিসেবে যতটা সাপোর্ট দেওয়া যায় আমি করবো।আমার বিশ্বাস মাহা ওর বাবার কাছে ফিরতে চাইবে না।
আপু…এই ব্যাপারটা এখন থাকুক।
ঠিক আছে।তুমি স্বাভাবিক হও।
চেষ্টা করছি…
মাহা অনেকক্ষণ থেকে ডাকছে।সাড়া দিচ্ছ না কেনো??
রুদ্র কিছু বলার আগে রিনরিনে গলার স্বরে থমকে গেল দুইজনই।কিছু কি শুনে নিল??
পাপা…
রুদ্র সাবিবা তাৎক্ষণিক পিছন ফিরে তাকালো।
মাহার চোখ মুখে এক কৃত্রিম কাঠিন্য।অন্যসময় হলে হয়তো বুঝতো এইটা কৃত্রিম অভিব্যক্তি।কিন্তু আজ দুইজনই ঘাবড়ে গেল,এখন সময়টাই ওদের দুইজনের কাছে বেক্ষাপা,বেয়াড়া।
পাপা…তোমাকে কতবার ডাকছি??
আসলে মা আমি শুনিনি…
শুনবে কি করে সকাল থেকে দেখছি তুমি আর মামনি হয় কিছু নিয়ে আলোচনা করছো আর না হয় এদিক সেদিক মুখ ভার করে ঘুরছ।
রুদ্র স্বস্তির শ্বাস নিল।তারমানে এখনো কিছু শুনেনি।কিন্তু কতক্ষণ!!
দেখলে তো মামনি আমার কথার মাঝেও পাপা যেনো কোথায় হারিয়ে গেল।
সাবিবা রুদ্রর দিকে একবার তাকিয়ে দেখে মাহাকে কাছে টেনে বললো,কি বলতো তোর পাপা অনেক বছর দেশে এসেছে তো তাই প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির মাঝে।
এই কথার পিঠে রুদ্রও একটু হেসে বুঝাতে চাইলো হ্যাঁ,ব্যাপারটা তাই।
মাহা কিছু একটা ভেবে বললো,ঠিক বলছো মামনি।পাপা তো নেচার লাভার।বলেই ফিক করে হেসে উঠলো।
সাবিবা ও রুদ্র দুইজনই স্বস্তির নিঃশ্বাস নিল।
এইবার চলো তো সবাই একসাথে কয়েকটা ফটো নিবো।
হ্যা,হ্যা চল।
তিনজন একসাথে এগিয়ে যাচ্ছে।
একই ফ্রেমে বন্দী হয়ে গেল পাঁচটি হাসি মুখের এক অনবদ্য ফটো।

দিনের আলোর ফুরিয়ে নেমে এসেছে কালো চাদরে ঢাকা রাত।সেই সাথে প্রকৃতিতে শুরু হয়েছে বর্ষণ।বর্ষার প্রথম বর্ষণ।থেকে বৃষ্টিরা বেড়ে চলেছে আর বেড়ে চলেছে রুদ্রর মনের সাথে মনের যুদ্ধ।কি করবে??কি করা উচিৎ??সময় যে দ্রুত শেষে হয়ে যাচ্ছে।সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে।হাতে তার ডাইরি এবং মেঘলার শেষ চিঠি।সেদিক পানে অনেকটা সময় নিয়ে তাকিয়ে রইল।ডাইরিটা পাশে রেখে খুব আলতো করে চিঠির ভাঁজ খুললো।চিঠিটার জায়গায় জায়গায় শুকিয়ে যাওয়া পুরোন লবণাক্ত পানির ফোঁটার চিন্হ রয়ে গেছে।আজও একবার এতে লবণাক্ত পানির প্রলেপ পড়বে হয়তো।

প্রিয় রুদ্র,

অবাক হচ্ছিস!!সম্মোধন দেখে!!অবাক হওয়ার তো কিছু নেই।তুই বরাবরই আমার প্রিয় ছিলি আজও আছিস।কিন্তু তুই কি আজ আমার বন্ধু আছিস??আমার সেই প্রিয় বন্ধুটি??

সেসব ছাড়।জানিস তোকে খুব মনে পড়ে।তুই একমাত্র ব্যক্তি যে কোনো কিছু পাওয়ার আশা না করে আমাকে নিয়ে ভাবতি।সেই মানুষটা তুই ছিলি,কিন্তু এখন কেনো যেনো মনে হলো আজ আর সেই তুই নেই।

সীমান্ত মানুষটা খারাপ ছিলো।খুব খারাপ।সে শুধু আমাকে কিংবা সাবিবা আপুকে ঠকিয়েছে তা কিন্তু না।সে যে কত মেয়েকে ঠকিয়েছে সেও হয়তো গুনে শেষ করতে পারবে না।

লোকটাকে আমি শেষের দিকে ক্ষমা করতেই চাইছিলাম।হটাৎ করেই অমানুষ থেকে মানুষের মতো ভদ্র সভ্য ব্যবহার করতো।আমার যত্ন নিত।আমার বেবির কথা ভাবতে।কি যে ভালো লাগছিলো তখন আমার।সব ভুলে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম।কিন্তু কি বলতো আমার জন্য বোধ হয় সুখ নামক শব্দটি নেই।সবকিছু তোলপাড় করে ঝড় উঠলো।প্রকাণ্ড ঝড়।আমার জীবনটা আবার ডেকে গেলো ঘুটঘুটে কালো অন্ধকারে।মেঘলার আকাশ মেঘলার মতোই বিবর্ণ হয়ে উঠলো।ধূসর ঘন কালো মেঘে ছেয়ে গিয়ে সেই মেঘলা দিন ফিরে এলো।রুদ্রের দেখা এজীবনে পেয়েও যে পাওয়া হলো না আমার।

তোকে একটা সত্যি কথা বলি,আমি না ওই অমানুষ লোকটাকে খুব ভালোবাসতাম।এখনো কি বাসি??বুঝতে পারছি না।এতকিছুর পরও আমি লোকটাকে ক্ষমা করতে চেয়েছিলাম।ঘরে বউ থাকার পরও মিথ্যা কথা বলে বিয়ে করা,তার নেশা করা,বাড়িতে মেয়ে এনে….চোখের সামনে সব দেখেও ক্ষমা করতে চেয়েছিলাম।কিন্তু পারিনি।কারণ সে ক্ষমার যোগ্যই না।সে নিজের সন্তানকে নিয়ে ব্যবসা করার কথা ভাবতে পারে এমনকি মেরেও ফেলতে পারে।তাকে কি করে ক্ষমা করতাম??আমার সন্তান…যাকে আমার সত্ত্বায় জায়গায় দিয়েছি,যাকে আমার শরীরে বহন করছি তাকে নিয়ে এই নোংরা মানুষটার নোংরা ভাবনা….ভাবতেও গা গুলিয়ে উঠে।কখনোই ক্ষমা করবো না তাকে।কক্ষনোই না।সে সাবিবা আপুর সন্তানকেও খুন করেছে।ওই লোকটা নিজের হাতে নিজের সন্তানকে খুন করেছে।এমন একজনকে ভালোবেসেছিলাম ভাবলেও নিজেরও উপর ঘৃনা হচ্ছে।

কিন্তু তুই!!তুই আর ওই লোকটার মধ্যে সূক্ষ্ম মিল যে রয়েই গেছে।আবার অবাক হলি??হাহাহা…আর অবাক হওয়া লাগবে না মিলটা বলছি।আমি তো বোকা তাই বোকার মত তোকেও বিশ্বাস করতাম।এখনো করি।তোদের মিলটা হলো তোরা দুইজনই আমাকে ঠকিয়েছিস।ওই লোকটার কাজই হলো ঠকানো তাই সে ধোঁকা দিয়ে ভালোবাসা,বিয়ের নামে আমাকে বোকা বানালো শরীরটার নেশায় পরে।আর তুই??তোর চোখেও তো নেশা ছিলোরে….মেঘলাকে ঘিরে নেশা।

আমি তখন নতুন নতুন গায়ে প্রেমের রঙ মাখিয়ে হাওয়ায় উড়ছিলাম…সে সময়গুলোতে তোর ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিকে উপেক্ষা করে মনে হতো এত তোর ভেবলার মত তাকানো।হাহাহা…কি বোকা কি বোকা আমি।
তোর মনে আছে তুই আমার প্রেমের কথা শুনে কি অভিব্যক্তি দিয়েছিলি??আমার মনে আছে।সেদিন ছাদ থেকে নেমে তোদের বাসা থেকে বের হয়ে গিয়েছিলাম রাগে।বুঝিনি তোর চোখের ধোঁকা।
যেদিন আমাকে ফিরিয়ে আনতে সীমান্তের বাড়ি গিয়েছিলি সেদিনও বুঝিনি তোর আকুতি।ধোঁকা ধোঁকা ধোঁকা সবকিছু ধোঁকা।তোরা সব প্রতারক।
বুঝেছি অনেক পরে।যখন বাস্তবতা আর আবেগের মধ্যকার তফাৎ বুঝতে পারি তখন।বারবার মনে হতো তোর সাথে আমার শেষ সময়গুলোর তুই আর অন্য সবসময়ের তুইয়ের মধ্যে তো অনেক ফারাক।তুইতো আমাকে আর তোর বন্ধু ভাবতিস না!!তোর চোখে আমাকে ঘিরে ছিল মোহ।হয়তো ভালোবাসাও।জানিস এইটা ভাবতেও আমার কষ্ট হয়।আমার এই ভাবনাকে অতি সন্তর্পনে নিজের মনেই লুকিয়ে রেখেছি।আমার ভাবনা ভুলও হতে পারে হয়তো।

বাস্তব আর আবেগের তফাৎ বুঝাতে সাহায্য করেছিল কে জানিস??সাবিবা আপু।এই একটা মানুষ যার সাথে রক্তের সম্পর্ক না থেকেও বিনাস্বার্থে আমাকে ভালোবেসেছে,পাশে থেকেছে,সাহস দিয়েছে।জানিস এই মানুষটা আজ বোকার মত একটা কথা বলেছে।বলেছে ওই অমানুষটা নাকি আমাকে আর আপুকে ভালোবাসে।হাহাহা….তুই বল একসাথে কি দুইজনকে ভালোবাসা যায়??যদি যেত তবে তো আমিও তোকে ভালোবাসতে পারতাম।আর তুইও আমাকে ভুলে অন্য কাউকে ভালোবাসতে পারতি।
ভাবছিস এই কথা কেনো বলছি??তুই যদি আমাকে ভুলতে পারতি তাহলে আমি ফিরে আসার পর থেকে তোর উপস্থিতি থাকতো সবার আগে।কিন্তু এখন পর্যন্ত আমি তোর কোনো হদিস পাইনি।এলাকাসুদ্ধ কত মানুষ বাড়ি বয়ে এসে কত কথা শুনিয়ে যাচ্ছে…কিন্তু তুই এলি না আমার পাশে থাকার জন্য।কেনো আসবি??তুই তো এখন নিজেকে ভাবিস মেঘলার অভিমানী প্রেমিক যে কিনা মেঘলার বিরহে লাপাতা হয়ে গেছে।

তোকে অনেক কথা শুনলাম।রাগ করিস না।আমি কেমন যেনো হয়ে গেছি।এইটুকু জীবনে পরপর অনেকগুলো ধাক্কা খেলাম।তাও ঘুরে ফিরে একটা মানুষের থেকে।ভিতর থেকে নড়বড়ে হয়ে গেছি।বাবা আমার সাথে কথা বলে না আর মা তো পাগল পাগল হয়ে গেছে আমার শোকে।নিজেকে বড্ড অসহায় লাগে।এখন অবধি টিকে আছি মেয়েটার কথা ভেবে।তোকে তো বলাই হয়নি তুই তো মামা হচ্ছিস।আর আমি জানি তোর একটা ভাগ্নীই হবে।একদম ছোট্ট মেঘলা।আল্ট্রা করিয়েছি কিন্তু আমি জানতে চাইনি ছেলে না মেয়ে।আমার বিশ্বাস আমার মেয়ে হবে।আমি আমার মেয়ের নামও ঠিক করেছি।মাহা।মাহা অর্থ সুন্দর।

তোর কাছে একটা শেষ আবদার করি রাখবি??আমি বড্ড স্বার্থপর রে।সবসময় তোর থেকে নিয়েই গেলাম কিছু দিলাম না।তবুও বলি?
আমি চাই আমার মেয়েটা তোর মত হোক।ভালো মেয়ে,ভালো বন্ধু,ভালো ছাত্রী,অনেক বুদ্ধিমান।পারবি না আমাকে যেভাবে রাখতি সেভাবে আমার মেয়েটাকে রাখতে??আমি জানি একদিন তোর অভিমান ভাঙবে আর তখন ঠিক আমার মেয়েকে তুই তোর মত হতে সাহায্য করবি।

আর কি লিখবো??পারছি না রে।অনেক কিছু বলে ফেলেছি ক্ষমা করে দিস পারলে।তোর সাথে বোধ হয় আমার দেখা হবে না।রুদ্রের মুখ দেখা মেঘলার ভাগ্যে নেই হয়তো।শরীরের যা অবস্থা ডক্টররাও ভয় পাচ্ছে।আমার কিন্তু ভয় নেই।আমার সন্তানের জন্য আমার থেকেও ভালো মা রয়েছে আমার সাবিবা আপু।তোর মত মামা আছে।আমার ভাবনা কিসের বল তো??আমি নিশ্চিন্তে পৃথিবী ছাড়তে পারবো।মা বাবার জন্য কষ্ট হয়।জানিনা আল্লাহ ভাগ্যে কি লিখে রেখেছে!!
তুই ভালো থাকিস।তোর জীবনটা সুন্দর হোক।সুন্দর জীবনসঙ্গী হোক।ভুল সময়ের ভুল ভালোবাসার মোহ ভুলে সত্যিকারের ভালোবাসা আসুক তোর জীবনে।
সব শেষে তোর কাছে একটা প্রশ্ন,”মেঘলা আকাশে রুদ্রই ভরসা”কথাটা কি সত্যি???আমার কাছে মাঝে মাঝে মনে হয় সত্যি,মাঝে মাঝে মনে হয় মিথ্যা।তোর কি মনে হয়??

ইতি,
তোর প্রিয় বন্ধু মেঘলা

চিঠিটা বুকে আঁকড়ে ধরতে দুচোখের বর্ষণ যেনো বেড়ে গেলো।মেঘলার ডাইরি আর শেষ চিঠিটা আকড়ে ধরে গোটা রাত পাড় করে দিলো রুদ্র।সারারাত ঘুম হলো না।আজ সে এক ভয়াবহ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।মাহার পুরো অধিকার আছে নিজের অতীত জানার।

চলবে……..

গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকবেন ধন্যবাদ 😇

সকল পর্বের লিংক
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=169467331959466&id=140699218169611

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here