মেঘলা আকাশে রুদ্রই ভরসা উম্মে হাবিবা তনু পার্ট:১৬

0
444

মেঘলা আকাশে রুদ্রই ভরসা
উম্মে হাবিবা তনু
পার্ট:১৬

প্রাপ্তমনস্কদের জন্য😬

মেঘলা ধর এইটা।
আপু দিলো এই শাড়িটা??
ও না দিলে কি করে আনলাম!!
তাই তো।আমার খুব ভাল লাগছে।
এখন শাড়িটা তো ধরো।
মেঘলা শাড়িটা নিয়ে একদম চুপ হয়ে গেল।
কি হলো জান??
কিছু না।
পরিয়ে দিবো??
না না আমি পারবো।
ঠিক তো??
হুমম…
কোনো হেল্প লাগলে এখনই বলতে পারো।
আমি পারবো।ঠিক আছে আমি গেটের বাইরে অপেক্ষা করছি।তুমি গেট চাপিয়ে নেও।যদি কোনো দরকার হয়..
হুমম……
সীমান্ত চলে গেল।

অনেকক্ষণ ধরে শাড়িটা দেখেই চলেছে মেঘলা।এইটা কি করে পড়বে।ও এমনিতেই শাড়ি পরতে পারে না।আর এমন পাতলা শাড়ি কিভাবে পড়ে তাও জানে না।তারপরও পেচিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতো কিন্তু এর সাথে ওকে কোনো ব্লাউজ দিয়ে যায়নি।কিভাবে পড়বে এখন??জামার ওপরেই কোনো রকমে পেচিয়ে দেখছে।তাও ওর লজ্জা লাগছে।কারণ শাড়িটা এতই পাতলা যে কয়েকটা প্যাচ দেওয়ার পরও অস্পষ্টভাবে সব দেখা যাবে।খুব তো বড় মুখ করে বলেছিলাম একা একাই পারবো।কিন্তু এখন কি করব??এর মাঝেই সীমান্তর ডাক পড়লো।
শাড়ি পরতে পরতেই কি তুমি রাতটা শেষ করে দিবে জান??
এইতো হয়ে যাবে…
কখন হবে!!
আর কিছুক্ষণ..
আমার মনে হয় না তুমি পারবে।আমি হেল্প করে দেই…
না না পারবো।
ঠিক তো??
হুমম…কিন্তু..
কিন্তু কি??
এর সাথে ব্লাউজ নেই।
সীমান্ত বাঁকা হাসলো।জান সাবিবারটা তো তোমার হতো না তাই আনিনি।
এখন তবে কি করবো??
আচ্ছা জান মেয়েরা জামার ভিতর কি একটা পরে না…
এই কি বলছো এইসব?কি পরে??
আরে ওই যে inner না কি একটা বলে না….ওইটা তো আছেই তোমার…. ঐটাকেই আজকে ব্লাউজ হিসেবে পরে নেও।
কিহ বলছো এইসব যা তা…
বুঝেছি….তোমাকে দিয়ে হবে না।আমাকেই আসতে হবে।
এই না না এসো না।
কে শুনে কার কথা সীমান্ত দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকলো।
মেঘলা লজ্জা পেয়ে দুহাতে মুখ ডেকে নিল।
সবে ও পেটিগটের উপর শাড়িটা সেট করে জামার উপর দিয়ে আঁচল দেওয়ার চেষ্টা করছিল আর তখনই সীমান্ত ঘরে ডুকে গেল।
সীমান্ত মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে।মেয়েটা আসলেই খুব সুন্দরী।ফিটনেসও মাথা নষ্ট করা।জামার উপর কোনো রকম শাড়ি পেচিয়ে রেখেছে এতেই এত মোহময়ী লাগছে আর ঠিক করলে কি হবে!!!চোখের পলক ফেলতেও ভুলে গেছে।সীমান্তর চোখে মুখে মাদকতা ভর করেছে।ধীরে ধীরে মেঘলার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো।
মেঘলা জড়োসড়ো হয়ে দাড়িয়ে আছে।
সীমান্ত একদম মেঘলার কাছাকাছি এসে মুখমুখি হয়ে দাঁড়ালো।সীমান্তর একটা হাত দিয়ে মেঘলার কোমড় জড়িয়ে ধরলো।
মেঘলা কেপে উঠলো।
মাদকতা ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সীমান্ত।মুখটা মেঘলার দিকে এগুতে লাগলো।
মেঘলা মাথাটা ঘুরিয়ে চোখ বন্ধ করে নিল।
সীমান্ত মেঘলার গালে চুমু খেল।
মেঘলা এখনো চোখ বুঝে আছে।
আস্তে আস্তে গলায় চুমু খেল।তারপর ঘাড়ে মুখ ডুবালাম।
মেঘলা থরথর করে কাপছে।
সীমান্ত এইবার মেঘলার ঠোঁটের দিকে এগুতে লাগলো।
মেঘলার মুখে গরম নিঃশ্বাস পরতেই আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকালো।
সীমান্তর মুখ একদম ঠোঁটের কাছাকাছি নিয়ে গেলো।
আর তখনই মেঘলা সীমান্তকে জড়িয়ে ধরলো।
সীমান্তও জড়িয়ে ধরলো শক্ত করে।মেঘলা বারবার কেপে উঠছে।যেটা ওর খুব ভালো লাগছে।আস্তে করে মেঘলার থেকে সরে দাঁড়ালো।
মেঘলা চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে আছে।
মেঘলার আঁচল ধরে টান দিল।
সাথে সাথেই মেঘলা বাঁধা দিতে চাইলো।কিন্তু লাভ হলো না।
আস্তে আস্তে শাড়িটা ঠিক করে পরিয়ে দিলো।একদম পাকা হাতে।যেনো বহুবার সে শাড়ি পড়িয়েছে।
সীমান্তের প্রতিটা ছোঁয়ায় মেঘলা কেপে কেপে উঠছে।শাড়ি পরিয়ে মেঘলাকে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড় করাল।সেখানে যা ছিল তা দিয়ে হালকা করে সাজিয়ে দিলো।এইবার মেঘলার পিছনে দাড়িয়ে মেঘলাকে আয়নায় দেখার জন্য ইশারা করলো।
মেঘলা এতক্ষণে চোখ তুলে আয়নায় তাকালো।ওর চোখ মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গেছে।ওকে একদম অন্যরকম লাগছে।ওর যে সবে ১৬বছর বুঝাই যাচ্ছে না।মনে হচ্ছে একদম প্রাপ্ত বয়স্ক আর ৫টা বউয়ের মতো।শাড়িতে আসলেই মেয়েদের অসাধারণ লাগে।বেশিক্ষন আয়নার দিকে তাকিয়ে থাকতে পারলো না।চোখ নামিয়ে নিতে হলো।সীমান্ত যে অপলক তাকিয়ে আছে ওর দিকে।
হাত ধরে মেঘলাকে খাটে বসিয়ে দিল সীমান্ত।তারপর অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল।
কি দেখছো এইভাবে!
আমার বউটাকে।
আগে দেখনি??
দেখেছি,বহুবার।
তাহলে এইভাবে তাকিয়ে আছো কেন??
বহুবার তো তোমাকে এমন অপ্সরার মত লাগেনি।
মেঘলা আবার লজ্জা পেল।তবু বললো,এইভাবে তাকালে আমার বুঝি লজ্জা পায় না।
লজ্জা তে তো তোমাকে আরো বেশি মোহময়ী লাগছে।
কি যে বলল….
মেঘলার ঠোঁটে আঙ্গুল রাখলো।আর কোনো কথা না।চুপ করে বস।আজ মন ভরে তোমায় দেখবো।
মেঘলা আবার থরথর করে কাঁপতে লাগলো।
সেদিকে চোখ যেতেই সীমান্ত মেঘলার ঠোঁটের দিকে এগুতে লাগলো।একদম ওর কাছে চলে গেল।সীমান্তর গরম নিঃশ্বাস মেঘলার মুখে আছড়ে পড়ছে।
মেঘলার ভিতরে কেমন একটা হচ্ছে।মনে হচ্ছে তোলপার হয়ে যাচ্ছে ওর মধ্যে।
সীমান্ত মেঘলার ঠোঁট দখল করে নিল।
মেঘলা আর বাধা দিতে পারলো না সীমান্তকে।কিছুক্ষণ যেতেই ও ও রেসপন্স করতে লাগল।
এইবার ওরা হারিয়ে গেল কোনো এক অজানাতে।কোনো এক মদকতার রাজ্যে।

কলিং বেলের শব্দ পেয়ে মুবিন হাসান এর ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো।ভালো করে আশেপাশে তাকিয়ে দেখলেন সবে ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে।বারান্দায় বসেই কাল রাতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিল টের পান নি তিনি।কি করে পাবেন।যা কিছু হচ্ছে।আবারও কলিং বেলটা বেজে উঠলো।এত সকালে কে এলো??মেঘলা ফিরে আসে নি তো?তিনি দ্রুত রুমে ঢুকলেন।মমতা হাসান এখনো ঘুমিয়ে আছে হয়তো ওষুধের ইফেক্ট।তিনি তাড়াতাড়ি একটা গেঞ্জি গায়ে দিয়ে গেটের দিকে হাঁটা দিলেন।এরমধ্যেই আবার বেলটা বেজে উঠলো।তিনি দ্রুত গেট খুলে দিলেন।গেট খুলেই উনার মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেল।তিনি ভেবেছিলেন মেঘলা এসেছে কিন্তু না।

আসসালামুয়ালইকুম আঙ্কেল।
ওয়ালাইকুমসালাম।ভিতরে এসো।
আঙ্কেল সারারাত ঘুমান নি?
আর ঘুম…..
আণ্টি কি এখনো উঠেনি???
তোমার আন্টিকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ঘুম পারিয়েছি।এখনও উঠেনি।
ভালোই হলো।আপনি তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে আসেন।
হ্যাঁ ফ্রেশ তো হবই।কিন্তু এত তাড়া কেনো??আর তুমি এত সকালে?
আঙ্কেল আমাদের এক্ষুনি বের হতে হবে।নাস্তা খেতে খেতে বাকি কথা বলবো।
তোমার আণ্টি তো এখনো উঠেনি নাশতা তো বানানো হয়নি…
আপনি এইসব নিয়ে ভাববেন না।আপনি ফ্রেশ হতে যান।আম্মু নাস্তার সব ব্যবস্থা করে ফেলেছে।আপনি রেডী হতে হতেই চলে আসবে।
তোমরা এত ভাবছো আমাদের নিয়ে…
আঙ্কেল এইসব পরেও বলতে পারবেন।আগে আপনি যান তো।
তুমি বসো আমি আসছি।

এরমধ্যেই রেহানা মাহমুদ খাবার নিয়ে চলে এলেন।মমতা হাসান এখনো ঘুমাচ্ছেন।রেহানা মাহমুদ রুদ্র আর মুবিন হাসানকে খাবার দিয়ে মমতা হাসানের কাছে গেলেন।

প্রথমে কি আমরা হসপিটাল এ খোঁজ করবো??
এখনই এইসবের দরকার নেই আঙ্কেল।
এক রাত চলে গেল এখনো ওর কোনো খোঁজ নেই….মুবিন হাসান এর গলাটা ধরে এলো।
আঙ্কেল আপনি নিজেকে সামলান।সব ঠিক হয়ে যাবে।
কি করে হবে??কই থেকে শুরু করবো??
সীমান্তর এলাকা থেকে শুরু করবো।
সীমান্ত!!নামটা শুনেই মেসেজগুলোর কথা মনে পড়লো।তাই তো কি করে ভুলে গেলাম!
আঙ্কেল কিছু ভাবছেন??
না কিছুনা।আমরা সীমান্তর এলাকাতেই যাবো।কিন্তু…
কি…
ওকে খুঁজে পাবো কী করে??
আঙ্কেল আমার ওই এলাকায় একটা ফ্রেন্ড আছে।ওকে নিয়ে বের হবো।ওই আমাদের সাহায্য করবে আশেপাশের মানুষজনকে জিজ্ঞেস করে খুজে বের করতে।
কিন্তু মেঘলার ব্যাপারটা কাউকে জানানো কি ঠিক হবে??
এইসব নিয়ে আমি কিছু বলিনি আপনি একদম চিন্তা করবেন না।আঙ্কেল একটা কথা…
হ্যাঁ,বলো।
আম্মু যদি এইখানে থাকে তাহলে কি কোনো প্রব্লেম হবে??
না কেনো হবে?
আসলে আণ্টি তো একা থাকবে আমরা কখন ফিরি ঠিক নেই তো….
মুবিন হাসান মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছেন।এতটুকু ছেলে অথচ কতদিকে চিন্তা তার….

চলবে………

(প্রিয় পাঠক পাঠিকা বৃন্দ, আস্সালামুআলাইকুম।একটি গল্প লিখা হয় আপনাদের ভালো লাগার জন্য।সে গল্প পরে যখন আপনাদের সাড়া পাওয়া যায় না তখন লিখার উৎসাহটাই নষ্ট হয়ে যায়।আপনারা যত উৎসাহ দিবেন গল্প লিখায় তত আগ্রহ বাড়বে এবং গল্প তত সুন্দর হবে।তাই গল্প যদি আপনাদের ভাল লাগে এবং পরবর্তী পর্ব পেতে চান তবে অবশ্যই গঠনমূলক মন্তব্য করে পাশে থাকার অনুরোধ রইলো।ধন্যবাদ।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here