গল্প:- সি অফ মারমেইড
লেখায়:- যাবেদ খাঁন আবু বকর
দশম পর্ব
চৌত্রিশ.
‘ স্যার, আপনার জন্য পুলিশ সুপার রবিন ফোন কল করেছেন। ‘ রন ইওহার্ডের ভাই রিবন ইওহার্ডের সামনে দাঁড়িয়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে কথাটি জ্ঞাপন করল পারসোনাল এসিস্ট্যান্ট তানভীর।
‘ হ্যাঁ, ফোনটা দাও।’ ঘোর ভেঙে হাত বাড়িয়ে বলে উঠলেন রিবন ইওহার্ড।
তানভীর তার হাতে থাকা ফোনটি বাড়িয়ে দিল রিবন ইওহার্ডে দিকে। হাত বাড়িয়ে ফোন হাতে নিয়ে কানে তুলে নেয় রিবন। ওপাশ থেকে ভেসে আসে পুলিশ সুপার রবিনের কণ্ঠস্বর।
‘ হ্যালো স্যার ‘ ওপাশ থেকে হাসিযুক্ত কথাটি অনুভব করেন রিবন ইওহার্ড। হ্যালোর প্রত্যুত্তরে হ্যালো না বলে গম্ভীর স্বরে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন রবিনের উদ্দেশ্যে।
‘ আমার ভাইয়ের কোনো খোঁজ পেলেন? আর ওর উপর অজ্ঞাত হামলাকারীদের কোনো খোঁজ? ‘ উদগ্রীব হয়ে প্রশ্নটি উপস্থাপন করলেন তিনি। কোনোভাবেই তিনি স্বাভাবিক হয়ে থাকতে পারছেন না।
‘ দুঃখিত স্যার! আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে প্রচেষ্টা চালাচ্ছি আপনার ভাইয়ের উপর আক্রমণকারীদের ধরার। কিন্তু তাদের খোঁজ এখনো মিলে উঠছে না। ‘ আহত ধ্বনিতে প্রকাশ করলেন পুলিশ সুপার রবিন।
‘ আপনাদের উপর থেকে ভরসা এবং বিশ্বাস দুটোই উঠিয়ে দিচ্ছেন জনগণের। দুজন ক্রিমিনালকে ধরার মতো সামর্থ্য এখনো আপনাদের হয়ে উঠেনি ভেবে আমার নিজেরই লজ্জা লাগছে। ‘ কঠোর গলায় প্রত্যুত্তর করলেন রিবন। চোখমুখ শক্ত হয়ে গেছে তার। এরকম কথা শুনতে তিনি একদম নারাজ। এমনিতেই তার ভাইয়ের লাশ খুঁজে পায়নি। তন্মধ্যে এখন আবার নতুন খবর শোনাচ্ছে তারা। চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে তার। যেন লাভার ফুলকি ঝড়বে এখন।
‘ স্যার…! স্যার…! স্যার…!’
আর কিছু বলার সুযোগ পায়নি পুলিশ সুপার রবিন। তার পূর্বেই লাইন কেটে দিয়েছেন রিবন। কিছুই যে তার শোনার নেই। সামান্য একটা মাত্র কাজ। কিন্তু এখন পর্যন্ত সম্পন্ন করতে অক্ষম তারা। এখন তিনি নিজের উপরেই ধিক্কার দিচ্ছেন তাদের উপর ভরসা করে।
পঁয়ত্রিশ.
‘ বস, আপনার কাজ শেষ। আমার পেমেন্ট? ‘ ফোন কলের ওপাশে অন্ধকার এবং আলোর সংমিশ্রণে একটি বদ্ধ ঘরে এক অজ্ঞাত লোক। তবে যে আলো আছে তাতে তার মুখ দেখা অক্ষম। তার উদ্দেশ্য করে এপাশে থাকা লম্বাচওড়া একজন লোক কথাটি প্রকাশ করল।
‘ অবশ্যই। কাল তোমার একাউন্টে ট্রান্সফার করে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। উঠিয়ে নিও।’ বদ্ধ রুমে থাকা অজ্ঞাত লোকটি তার উদ্দেশ্য করে বললেন কথাটি।
‘ ধন্যবাদ বস।’ অজ্ঞাত লোকটির উদ্দেশ্যে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করল লোকটি। লোকটির দুই ঠোঁটের কোণে ফুটে আছে তৃপ্তির হাসি।
‘ ওখানে কোনো প্রমাণ রেখে আসোনি তো? ‘ ওপাশ থেকে জিজ্ঞাসাসূচক বাক্য বিনিময় করলেন অজ্ঞাত লোকটি। তবে তার কণ্ঠে কোনো অস্থিরতার ভাব নেই।
‘ আপনি কোনো চিন্তা করবেন না বস। সকল প্রমাণ লোপাট করে দিয়েছি।’ আস্বস্ত করে বললেন এপাশে থাকা লম্বাচওড়া লোকটি।
ছত্রিশ.
কক্ষের মাঝে বিছানায় বসে আলাপনে ব্যস্ত যুবরাজ রন ইওহার্ড এবং রাজকুমারী ডায়ানা। তারা যেন একে অপরের খুব ঘনিষ্ঠ কেউ। আলাপন দেখলে কেউ বুঝবেই না, আজকেই তাদের প্রথম মোলাকাত। খুব স্বল্প সময়ে তাদের মাঝে একটি বন্ধন সৃষ্টি হয়েছে। যেন একজন অপরজনের খুব পরিচিত কেই। দুজনই হাসি দিয়ে বাক্যবিনিময় করছেন।
‘ যুবরাজ, আপনি তো কয়েকদিন পরেই মহারাজ হয়ে যাবেন! ‘ রন ইওহার্ডের উদ্দেশ্য বাক্য জ্ঞাপন করল রাজকুমারী ডায়ানা। তবে কথাটির আড়ালে লুকিয়ে আছে ভিন্ন একটি আত্মতৃপ্তি।
‘ সে জানি না। কিন্তু আমার কাছে এখনো সব কেমন যেন স্বপ্ন মনে হচ্ছে! আমি বিশ্বাস স্থাপন করতে পারছি না। মনে হচ্ছে চোখ দুটো খুলে গেলেই সব কিছু ফিকে হয়ে যাবে।
এতদিন যা শুধু লোকের কল্পনা ভেবে এসেছি। আজ তা নিজ চোখে দেখতে হচ্ছে। বিশ্বাস করতে বেগ পেতে হচ্ছে বেশ। যদিও-বা কল্পনা বাস্তবতা থেকেই তৈরি, তবুও বিষয়টা বিশ্বাস করতে একটু কষ্ট হচ্ছে! ‘ খানিক অবাক এবং খানিক হর্ষক নিয়ে কথাটি সম্পন্ন করল রন ইওহার্ড। কথার মাঝে লুকিয়ে আছে বিস্ময়ক ভাব।
‘ খুব শীঘ্রই সবকিছু বাস্তব মনে হবে। যদিও কিছুদিন সময় লাগবে। তবুও খুব শীঘ্রই সকল কিছু আপনার রাজত্বতে পরিনত হবে। ‘ একটি মুচকি হাসি বিনিয়োগ করে কথাটি শেষ করল রাজকুমারী ডায়ানা। সাথে লজ্জায় গাল দুটো লাল হয়ে উঠেছে।
এমতাবস্থায় দরজায় করাঘাতের শব্দ শোনা যায়। একটু গলার আওয়াজটা বাড়িয়ে দিয়ে বলল যুবরাজ রন ইওহার্ড, ‘ হ্যাঁ, ভেতরে এসো। ‘ পুনরায় রাজকুমারীর সাথে আলাপনে ব্যস্ত হয়ে গেল সে।
প্রবেশদ্বার ঠেলে হাতে একটি বড় থালা নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করল একজন প্রহরী। যদিও থালাটি একটা বড় গোল বাটি দিয়ে ঢাকা। থালাটি তাদের সামনে থাকা উঁচু টেবিলের উপর রেখে রন ইওহার্ডের সামনে এসে প্রহরী মাথা ঝুঁকে কুর্নিশ জানিয়ে বলতে লাগল, ‘ অভিবাদন যুবরাজ ও রাজকুমারী। মহারাজ অরগাড আপনার এবং রাজকুমারীর জন্য খানা পাঠিয়েছেন। এছাড়া বলেছেন, খাবারগুলো দ্রুত খেয়ে নিতে।’ প্রহরী এই বলা শেষ করে পুনরায় মাথাটা নিচু করে কুর্নিশ জানিয়ে কক্ষ থেকে প্রস্থান করে। বেরিয়ে যেতেই প্রবেশদ্বারে উপস্থিত প্রহরীরা দ্বার দুটো একত্র করে প্রবেশদ্বার বন্ধ করে দেন।
রাজকুমারী ডায়ানা তাদের সামনে থাকা উঁচু টেবিলের উপর রাখা থালাটির উপর ঢেকে রাখা বাটিটি তুলে নিয়ে ভেতরে থাকা খাবারগুলো উন্মুক্ত করে দেয়। থালাটির মাঝে চারটি পাত্র রয়েছে। একটাতে আছে আপেল। পাশেরটায় রাখা আছে রন ইওহার্ডের অচেনা একপ্রকার ফল। এছাড়াও বাকি দুই পাত্রে রয়েছে দুই ধরণের পাতা। একটি দেখতে সামুদ্রিক শৈবালের মতো। অপর পাত্রে রয়েছে সবুজ রঙের কিছু ভিন্ন রকমের পাতা। দেখতে অনেকটা লেটুস পাতার মতো। কিন্তু এটাকে সম্পূর্ণ লেটুস পাতা বলাও সম্ভব নয়। রন ইওহার্ড খাবারের ধরণ দেখে তৎকালীন সময়ে কিছুক্ষণের জন্য থ হয়ে গেছে। এগুলো কি আসলেও খাবার? নাকি অন্য কিছু? তাই বুঝে উঠতে সক্ষম হচ্ছে না! যে খাবার এতকাল অযোগ্য ভেবে এসেছিল। আজ সেগুলোই তার সামনে খাবার হিসেবে রাখা আছে। কিন্তু সে মস্তিষ্কে কোনোপ্রকার ভাবনা যুক্ত না করে আপেল রাখা পাত্রটি থেকে একটি আপেল হাতে তুলে নেয়। আপেলে একটি কামড় দিয়ে মনে মনে আওড়াতে থাকে, ‘ এগুলো কি আদৌ কোনো খাবার? মনে হচ্ছে এখনই বমি করে দেবো। সে যাকগে, আপাতত আপেল খেয়েই থাকি। বাকিগুলো আমার পেটে এমনিতেও সইবে না। ‘ অভক্তি ভাব চেহারায় ফুটিয়ে নিজের মনের সাথে নিজেই কথা বলতে থকে সে।
এক কামড় দিয়ে তাকে এমন থ হয়ে বসে থাকতে দেখে রাজকুমারী ডায়ানা তার দেহে মৃদু একটি ঝাঁকুনি দিয়ে প্রশ্ন করল, ‘ কী হলো যুবরাজ? এত কী ভাবছেন?’ মনো ভাবনার জগত থেকে বেরিয়ে এসে একটি হাসি বিনিময় করে বলল, ‘ আসলে আপেলের স্বাদ অমৃতের মতো বলা যায়। তাই কিছু সময়ের জন্য সেই অমৃতের শহরে হারিয়ে গেছিলাম। ‘ অবস্থা বেগতিক হবার পরেও প্রশংসা করে একটু খুশি করতে চাইল রন ইওহার্ড।
‘ যুবরাজ দেখছি খুব সুন্দর করে কথা বলতে পারেন! ‘ হাসির প্রত্যুত্তরে প্রশংসার সাথে আরেকটু মুচকি হাসি বিনিয়োগ করে রাজকুমারী ডায়ানা।
‘ তেমন না। এই সামান্য চেষ্টা আরকি!’ একটি হতাশ এবং আপ্লুত সংমিশ্রণ হাসি দিয়ে কথাটি সম্পন্ন করল রন ইওহার্ড।
‘ আচ্ছা যাইহোক, আপনি আপেলটুকু দ্রুত খান। বাকিগুলোও তো খেতে হবে। ‘ আরেকটু হাসি পুনরায় বিনিয়োগ করে বলল রাজকুমারী ডায়ানা। কিন্তু শেষ কথা রন ইওহার্ডের যায় যায় অবস্থা।
রাজকুমারী ডায়ানার এই বাক্য শুনে এখনই তার গা গুলিয়ে আসছে। জীবনেও চিন্তা করেনি, তার সামনে এরকম কুরুচিপূর্ণ খাবার হাজির করবে। আর তা খাওয়ার জন্য বলা হবে। একবার ভাইয়ের সাথে সিঙ্গাপুর গিয়েছিল রন ইওহার্ড। সেখানে যেয়ে লোকেদের কাকড়া খেতে দেখে সে বমি করতে করতে তাকে হাসপাতাল ভর্তি করাতে হয়েছিল। পুরোনো ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে নিজের মনের সাথে নিজেই যুদ্ধ লড়ে বলতে লাগল, ‘ এ কোন ফ্যাসাদে এসে পড়লাম আবার? খাবারের যা চেহারা! আমার তো দেখেই বমি আসছে! শেষে কি না আমি সমুদ্র শৈবাল খাব! ভাবতেই তো কেমন বমি বমি ভাব পাচ্ছে। ‘ মনে মনে নিজে নিজেই আওড়াতে লাগল রন ইওহার্ড। ভাবনায় ছেঁদ পড়ল রাজকুমারী ডায়ানার ডাকে।
‘ কী হলো যুবরাজ? এত কী ভাবছেন?’ ভ্রু জোড়া খানিকটা কুঁচকে প্রশ্ন করল সে।
একটি মুচকি হাসি উপহার দিয়ে রন ইওহার্ড ব্যক্ত করল, ‘ তেমন কিছু না। তা আপনি এখনো নিচ্ছেন না কেন? ‘ কথা রেশ অন্যদিকে নিতে ভিন্ন প্রশ্ন রাখল।
‘ আবার আপনি করে বলছেন দেখছি! আপনাকে না একটু আগেই বললাম, আমাকে তুমি করে বলবেন। এরপরেও আপনি করে কেন বলছেন?’ কিছুটা ক্রন্দনরত হতবিহ্বল চেহারার ভঙ্গিমা ফুটিয়ে কথাটি সম্পন্ন করল রাজকুমারী ডায়ানা। স্বল্প রাগের পেছনে লুকিয়ে আছে কান্না।
‘ আচ্ছা দুঃখিত! তুমি খাচ্ছ না কেন?’ এবার মিথ্যে হাসি চেহারায় ফুটিয়ে প্রশ্নটি করল রন ইওহার্ড। যদিও মিথ্যে হাসিটি বুঝতে সবাই অক্ষম। তার সামনে রাখা খাদ্যগুলো দেখে কোনোভাবেই খুশি হতে পারছে না সে।
‘ নিচ্ছি। পাতার মতো দেখতে এটা খেয়ে দেখতে পারেন। বেশ সুস্বাদু। ‘ লেটুস পাতার মতো দেখতে খাবারগুলো রাখা পাত্রের দিকে ডান হাতের তর্জনী আঙুল দিয়ে ইশারা করে রন ইওহার্ডের উদ্দেশ্যে বলতে লাগল রাজকুমারী ডায়ানা।
অভক্তি থাকার পরেও বাধ্য হয়ে অজ্ঞাত পাতাগুলো মুখে নিয়ে চিবান কর্ম চালু করে দেয় রন ইওহার্ড। প্রথম সামান্য অভক্তি অনুভব হলেও পরবর্তীতে প্রতিটি চিবানোতে যেন আলাদা করে নতুন রকমের স্বাদ পাচ্ছে। প্রথম একটি পাতা শেষ হতেই দ্রুত আরেকটি পাতা হাতে তুলে নিয়ে মুখে পুরে দেয়। পাতা চিবানোর ফলে মুখের ভেতরে লালা যুক্ত রস হয়েছে। প্রতিটি ঢোক রস পেটে যেতেই সাথে সাথেই রন ইওহার্ডের অনুভব হচ্ছে তার দেহের পরিবর্তন ঘটছে। যেন পাতাগুলো দেহের সমস্যা হয়ে থাকা হাড়গুলো সুনিপুণভাবে বসে যায়। এছাড়া দেহে থাকা মৃদু ব্যথাগুলো সেড়ে গেছে। হয়তো পাতাগুলো দেহের জ্যাম সাড়াতে সাহায্য করে। ইতোমধ্যেই যুবরাজ রন ইওহার্ডের সাথে বসে পালাক্রমে আপেল কামড়ে খাচ্ছে রাজকুমারী ডায়ানা।
সাইত্রিশ.
প্রবেশদ্বারের সামনে থাকা রক্ষী অক্টোপাসগুলোকে দ্বার খোলার জন্য আদেশ করলেন অক্টোপাস ডারলেন। প্রবেশদ্বারে করাঘাত করতেই ভেতর থেকে গম্ভীর এবং মোটা স্বরে ভেসে এলো রাজা অক্টাইসের কণ্ঠস্বর। ‘ ভেতরে এসো।’ কন্ঠে লেগে আছে কঠিন ভাব।
রক্ষী অক্টোপাসগুলো প্রবেশদ্বার খুলে দিতেই হন্তদন্ত হয়ে কক্ষের ভেতরে প্রবেশ করলেন অক্টোপাস ডারলেন। হতভম্ব হয়ে প্রশ্নসাপেক্ষ বললেন রাজা অক্টাইস,
‘ কী হলো ডারলেন? হঠাৎ এরকম আচরণ করছো কেন?’ কৌতূহলী হয়ে জানতে চাইলেন তিনি। ডারলেনের এমন আচরণ মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে তার।
রাজা অক্টাইসের প্রশ্নসূচক বাক্যটির প্রত্যুত্তরে বললেন,
‘ সেদিন মৎস্য রাজা অরগাডের রাজ্যের দিকে তিমি রাজ এবং তার দেহরক্ষী তিমিগুলো গেছে বলে জানিয়েছিলাম। মনে আছে?’ হাঁপাতে হাঁপাতে শেষ প্রশ্নটি করলেন তিনি। ভ্রু কোঁচকে তাকান রাজা অক্টাইস।
‘ বলে তো ছিলে। তবে এখন কী হয়েছে তা বলো! আর এভাবে হাঁপাচ্ছ কেন?’ ভাবনার প্রতিফলন ঘটিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন রাজা অক্টাইস। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন অক্টোপাস ডারলেনের মুখপানে।
‘ তাদেরকে আমাদের রাজ্যের শেষ সীমানার পাড় দিয়ে চলে যেতে দেখা গেছে!’ একটি দম নিয়ে সম্পূর্ণ কথাটি শেষ করলেন অক্টোপাস ডারলেন। বলতে যেয়ে সামান্য চমকে ওঠেন তিনি। কিন্তু অক্টোপাস ডারলেনের দিকে একদৃষ্টি নিয়ে বাজপাখির মতো তাকিয়ে রইলেন রাজা অক্টাইস। এরকমভাবে তার দিকে তাকিয়ে থাকার মতো কারণ দর্শন করতে পারলেন অক্টোপাস ডারলেন।
‘ তিমি রাজ এলো আবার চলে গেল! ব্যাপারটা মোটেও সুবিধার ঠেকছে না। কিছু তো একটা উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছিল। কিন্তু কী ছিল সেই উদ্দেশ্য? ‘ নিজ মনের মাঝে কথাগুলো আওড়াতে লাগলেন রাজা অক্টাইস। ভাবনার ছেঁদ পড়ল অক্টোপাস ডারলেনের হাঁকে।
‘ মহারাজ, কী এতো ভাবছেন?’ চিন্তিত ভাব চেহারায় ফুটিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল অক্টোপাস ডারলেন।
প্রত্যুত্তরে রাজা অক্টাইস তার বাহুগুলো নড়াচড়া করিয়ে বলার উপক্রম করলেন।
‘ আমি ভাবছি, হঠাৎ করেই কেন তিমি রাজ মারমেইড শহরের দিকে গেল? কোনো কারণ আছে নিশ্চয়ই। এমনি এমনিতেই তো আর তিমি রাজ সেখানে যাবে না। বিশেষ কোনো কারণ তো নিশ্চয়ই ছিল। আবার যেয়ে সেখান থেকে চলেও গেল! বিষয়টা বেশ ভাবনার।’ ভাবনা চিত্ত মনোভাব নিয়ে কথাগুলো ব্যক্ত করলেন তিনি।
‘ তা বলা যায়! তিমি রাজের সেখানে উপস্থিত হওয়ার বিষয়টা একটু ভাবনার অংশ। ‘ ভাবান্তর হয়ে সম্মতিতে তাল মিলিয়ে স্বাভাবিক স্বরে হ্যাঁ সূচক জবাব দিলেন অক্টোপাস ডারলেন।
‘ তোমার কাছে বিষয়টা একটু ভাবনার অংশ হলেও আমার কাছে এটি পুরোটাই ভাবনার অংশ। ‘ অক্টোপাস ডারলেনের উদ্দেশ্য করে এতটুকু প্রকাশ করলেন রাজা অক্টাইস। ভাবনার রাজ্যে ডুব দেন তিনি।
‘ তিমি রাজ কেন শুধু শুধু তাদের শহরে যাবে? তাছাড়া যদি তিমি রাজ এবং রাজা অরগাড একত্র হয়ে আমাদের শহরে হামলা চালাবার উদ্দেশ্যে আসত। তবে ভেবে নেয়া যেত তিমি রাজ তাদের সাথে থেকে আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য এসেছিল। কিন্তু তা হয়নি! এখানে আসার নিশ্চয়ই কোনো নতুন কারণ ছিল।’ নিজ মনকে নিজে প্রশ্নবিদ্ধ করতে লাগলেন রাজা অক্টাইস। ভাবনার ছেঁদ ঘটালেন অক্টোপাস ডারলেন।
‘ মহারাজ, তবে আমি আসি। আর নতুন খবর নিয়ে খুব শীঘ্রই উপস্থিত হবো। ‘ কুর্নিশ জানিয়ে কথাটি সম্পন্ন করল ডারলেন।
‘ ঠিক আছে। তুমি এখন যাও। ‘ চিন্তিত ভাবনায় সম্মান সূচক জবাব দিলেন রাজা অক্টাইস।
[– চলবে –]
• রিবন ইওহার্ড কি এবার নিজেই কোনো পদক্ষেপ নেবে?
• পুলিশ কি আসলেই সক্ষম হবে নাকি অক্ষমই থাকবে?
• রাজা অক্টাইস কি পারবে তার প্রশ্নের জবাব খুঁজে পেতে?