#শবনম(পর্ব ২১)
সায়লা সুলতানা লাকী
মাতৃসদনের ভেতরটা মনে হল হঠাৎ করেই স্তব্ধ হয়ে গেল। কেউ আন্দাজ করতে পারে নাই যে শবনম এতটা সাহস দেখাবে আজ। সবাই আড় চোখে বারবার শবনমকে দেখছে কিন্তু আগ বাড়িয়ে কোন কথা তুলছে না। শবনমও ওই রোগীর কেবিনেই ছিল অনেকটা সময় পর্যন্ত। রোগী ঘুমিয়ে পড়লে পড়ে ও ফিরে আসে নিজের ঘুমের জন্য। নিজের শাড়ি দুইটা ভাজ করে বিছাবে ঠিক তখনই জহুরা আয়া মিনমিন করে বলল
“মাইয়ারে মাইয়া, তোরতো মেলা সাহস। কেমনে কী বুদ্ধি কইরা এডমিন স্যাররে ধরায় দিলি। অহন যদি স্যারে মেডামরে আগরুম-বাগরুম বইলা বুঝাইতে পারে তাইলে কিন্তু তোর চাকরি ডিসমিস। এডমিন স্যার বড় মেডামের লগে বাইর অইছে দেখছোসতো ? অহন যদি……”
“কি আর অইব? আমি অহন আর ডরাই না কাউরে। আমার ইজ্জত কী শুধু আমার ইজ্জত? এইডা ছন্দার বাপের আমানত। এর আগেও একজন হাত বাড়াইছিল, দিছি পুড়াইয়া। জ্বলছে কয়দিন চোক্ষের সামনে, বড় মজা পাইছি দেইখ্যা। অহন এই খাচ্চররে কেমনে ছাড়ি? আমি শবনম কী আর বদলায় গেছিনি?”
“চাকরি গেলে চলবি কেমনে? ”
“ছন্দার বাপে কইত, রিজিকের মালিক রাজ্জাক, আব্দুর রাজ্জাক না। আমি রিজিক লইয়া ডরাই না বুবু।”
“তোর সাহস দেইখ্যা আমার কেমন জানি ভয় লাগতাছেরে বইন। জীবন বড় কঠিন। থাক এইসব বাদ দে এখন ঘুমা।” কথাটা বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিছানায় শুয়ে পড়ল ফিরোজা ।
পরদিন সকালে মাতৃসদনে শোনা গেল নানান ধরনের গুঞ্জন রাতের ঘটনা নিয়ে। শবনমকে আলাদা ডেকে ইনচার্জে যিনি আছেন সেই ডাক্তার বিভিন্ন প্রশ্নের মধ্যমে ঘটনা সবটা জেনে নিলেন। এরপর রোগীদের প্রয়োজনে ফিরে এল শবনম নিজের কাজে।
দশটার দিকে বড় ম্যাডামের রুমে এক এক করে সব আয়াদের আলাদা করে ডেকে নিয়ে নানান তথ্য যোগাড় করলেন তিনি। এরপর সিস্টারদের মধ্য থেকেও একজন বাতেনের আচরন নিয়ে কথা বলল। বারোটার সময় মাতৃসদনের সব স্টাফকেই ডাকা হল বড় ম্যাডামের রুমে। সেখানে ঢুকতেই দেখা গেল বাতেন মাথা নিচু করে বসে আছে। ওর উপস্থিতিতেই সবার বক্তব্য তুলে ধরলেন বড় ম্যাডাম যা শুনে শবনম স্তব্ধ হয়ে গেল। গতরাতে যারা এত ভয় দেখাল তারাও এখানে এসে নিজেদের কষ্টের কথা নানান সময়ের অস্বস্তিজনক অভিজ্ঞতার কথা বলে গেছে ম্যাডামকে।
বাতেন বারবার ক্ষমা চেয়েছিল কিন্তু এই মেয়েগুলোর নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আর বাতেনকে সুযোগ দেওয়া হল না। নতুন এডমিন নেওয়ার আগ পর্যন্ত এডমিনের ওই চেংরা ছেলেটাকেই দায়িত্ব দেওয়া হল সবটা দেখাশোনার।
এই ঘটনায় শুধু বাতেন একা না সাথে অন্য যে কজন পুরুষ স্টাফ থাকলেন তারাও বুঝে গেল এমন কিছু হলে কারো কোন ক্ষমা নেই। তাই মোটামুটি একটা কাজ করার সুষ্ঠ পরিবেশের সৃষ্টি হল এখানে।
অন্য রোগীদের মধ্যে আর কারও এই মুহুর্তে বাচ্চা নাই। একেকজন একেক সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছে আজ। এদের মধ্যে একজনের মিসক্যারেজ হয়েছে। এসেই কাঁদতে শুরু করল রোগী। ওর কান্না দেখে শবনম নিজেও যেন কেঁদে ফেলে এমন একটা অবস্থা হল ওর। বারান্দাতে রোগীর সাথে আসা লোকজনও কাঁদছে মনে হল। বাচ্চাটার জন্য পুরে পরিবারেরই এতদিন অনেক আকাঙ্খা জন্মেছিল নিজের প্রথম বাচ্চাটা মারা যাওয়ার পর যে শূন্যতা তৈরী হয়েছিল সে কথাগুলোই তখন বেশি বেশি মনে পড়তে লাগল।
রাতের খাবার আর কাজ শেষ করে রান্না ঘরেই ঘুমায়ে পড়ল। রোগী বেশি থাকলে যেকোন জায়গায় ঘুমানোটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। যারা ডিউটিতে থাকে তারাই সুবিধাজনক জায়গায় ঘুমায়। শবনম আর ইচ্ছা করেই এসব নিয়ে ঝামেলায় জড়ায় না।
কাজের প্রতি একাগ্রতার পাশাপাশি রোগীদের বাড়তি ফুটফরমাশ করে অল্প কয়দিনের মধ্যেই বেশ পরিচিতির সাথে ভালো বকশিস ও মিলে গেল ওর হাতে। ঠিক এই মুহুর্তেই আলাদা ঘর ভাড়া নিতে মানা করল আরেক আয়া। এই সময়টা এদিক সেদিক করে মেনেজ করে চলতে বলল। কিছু টাকা জমিয়ে পরে ঘর ভাড়া করে মেয়েদের আনার পরামর্শটাই সবাই দিল।
ভালোতে মন্দতে দিন যেতে লাগল শবনমের এই ঢাকা শহরে মেয়েদের ছাড়া এক একাকী জীবন।
হঠাৎ একরাতে এক রোগী নিয়ে এলেন বড় ম্যাডাম সাথে রোগীর বাবাও থাকলেন। রোগীর বয়স খুব একটা বেশি হবে না। পা বেয়ে রক্ত ঝড়ছে দেখে শবনমও ভয় পেয়ে গেল। মেয়েটার আ্যবরশন করানো হবে। ও ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট। এই বাচ্চাটা মেয়েটার ভুলের ফসল। বাবা জানতে পেরে লোকচক্ষুর আড়ালে মেয়েকে নিয়ে চলে এলেন এই কাজ করানোর জন্য। এর আগেই মেয়ে উল্টা পালটা কী যেন চেষ্টা করেছিল একা একাই। মেয়ের মা প্রচন্ড রাগী মহিলা, মেয়ের এসব অপকর্মের খবর জানতে পারলে তিনি লঙ্কা কান্ড বাঁধিয়ে ফেলবেন। সমাজের উঁচু পর্যায়ে তার চলাফেরা। মেয়ের এই কান্ড যে ঘটিয়েছে তাকে শাস্তি দিতে গিয়ে নিজেদের জন্য বিরাট কেলেংকারীর সৃষ্টি করে বসবে পরে দেখা যাবে কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে এসে সমাজে লজ্জিত হতে হবে । তাই মেয়ে নিজের বেগতিক অবস্থায় বাবার শরণাপন্ন হয়েছিল আর বাবা তার পাওয়ার দিয়ে এত রাতে মাতৃসদনের বড় ম্যাডামকে নিয়েই এখানে চলে আসেন। বড় ম্যাডাম যদিও বারবার আশ্বস্ত করছিলেন এটাতে তেমন কোন সমস্যা হবে না বলে তার পরও বাবার হাতটা ধরে মেয়েটা ভয়ে কাঁদতে লাগল। মেয়েকে নিয়ে ভেতরে চলে গেলেন ডাক্তাররা। শবনম ফ্লোরের রক্ত পরিস্কার করছিল এরই মধ্যে একবার এক ডাক্তার এসে বাবাকে জানিয়ে গেলেন যে রোগীর জন্য রক্ত লাগবে খুবই ইমারজেন্সিতে। রক্ত মেচিং করা এত রাতে আরেক ঝামেলা তা জানেন সব ডাক্তার কিন্তু রোগীর বাবা একজন উপসচিব, নব্যগঠিত বাংলাদেশ সচিবালয়ে আছেন তিনি। যে মন্ত্রণালয়ের অধিনে তিনি সেখান থেকে হুংকার দিলে বাঘের চামড়াও মিলানো যাবে। কিন্তু সমস্যা হল ভদ্রলোক এই বিষয়টা কাউকে জানাতে চাচ্ছেন না, বিষয়টা অতি গোপনে সারতে হবে তাই এই সদনের ভেতরই মেনেজ করা যায় কি না তা দেখতে বললেন। পরিশেষে জোর পূর্বকই সবার থেকে সেম্পল নিয়ে মেচিংএর জন্য এডমিনের ছেলেটা ছুটল হাসপাতালে । ঘণ্টা খানেক পর এসে জানাল তিনজনের মিলছে। তাদের মধ্যে একজন মেয়ের বাবা। কিন্তু তার উচ্চ রক্তচাপ আছে বিধায় তারটা নিবে না বলে জানানোর পর বাকি থাকে যে দুজন তাদের মধ্যে একজন শবনম আর একজন কলি সিস্টার। কলি সিস্টার রক্ত দিতে একটু গুরিমুসি করছে। তার আমতা আমতা ভাব দেখে রোগীর বাবা বেশ কিছু টাকার লোভও আলাদা করে দিলেন কিন্তু তারপরও নার্স কলি আক্তার সম্মতি দিচ্ছে না দেখে এবার সাহস করে শবনমই এগিয়ে এল রক্ত দিতে। সকালেই রোগীকে রক্ত দেওয়া হল। শবনমের থেকে রক্ত সংগ্রহ করে নেওয়ার পর যখন শবনম বেডে শুয়ে ছিল বিশ্রামের জন্য তখন মেয়ের বাবা এসে দাঁড়ালেন শবনমের সামনে। তার চোখেমুখে কৃতজ্ঞতার ছাপ স্পষ্ট। তার দিকে তাকাতেই শবনমের মনটা কেমনজানি করে উঠল। ওই মুখে তখন শুধু নিজের বাবার চেহারাটাই দেখতে পেল।
ভদ্রলোক যখন শবনমকে পুরস্কার হিসেবে টাকা দিতে চাইলেন তখন শবনম কিছু সময়ের জন্য চুপ হয়ে গেল। অন্য সময় হলে হয়ত কথাটায় কষ্ট পেত এমন প্রতিদানের কথা শুনে কিন্তু এখন আর কষ্ট পেল না দুলালের কথাগুলো মনে পড়ল
দুলাল সবসময়ই বলত “বুদ্ধিমানেরা সব জায়গায়, সব কথায় নিজের ভাব লইয়া চলে না। ভাব দেহানের লেইগ্যা আলদা জায়গা থাকে। এই দুইন্যায় পায়ের নিচে মাডি লইয়া সোজা হইয়া দাঁড়াইতে চাইলে মুখ বুইজ্যা অনেক কিছু সহ্য করতে অয়, মানায় নিতে অয়।”
শবনমের যেহেতু এখন একটা উদ্দেশ্য আছে তাই তিনি কিছু দিতে চাইতেই তা ফিরিয়ে দিল না। বরং বলল
“স্যার, স্যারগো আমারে টেকা দেওন লাগব না। আপনে আমার বাপের লাহান৷ আপনে আমার জীবনডা বাঁচান, আমার মাইয়া দুইডা লইয়া বাঁচনের একটা ব্যবস্থা কইরা দেনগো স্যার। আমি সারাজীবন আপনের এই উপকারের কতা ভুলুম না। আমার এতিম বাচ্চা দুইডারে মায়ের আদর দিয়া যেন আমি এই দুইন্যায় বাইচ্যা থাকতে পারি হেই ব্যবস্থা কইরা দেন স্যার, আমি আপনের পাও দুইডা ধরি।”
শবনম অতি আবেগে আর কথা বলতে পারল না ওর গলা ধরে এল। একটা সময় কেঁদেও ফেলল।
এবার ওর কান্না দেখে ভদ্রলোক ওর পাশেই একটা চেয়ারে বসে ওর মুখেই ওর জীবন বৃত্তান্ত সবটা শুনলেন এরপর বললেন
“এখানে কাজে তোমার সমস্যা কী?”
“স্যার এই কামের কোন গেরান্টি নাই। এই আছে এই বলে ডিসমিস। এই কাম করতেও আমার ভক্তিতে লয় না, তবুও মাইয়া দুইডার মুখের দিকে চাইয়া অহন উপায়ন্তর না পাইয়া করতাছি। শুনছি ঢাকা শহরে কামের কোন অভাব নাই। আমারে আপনে একটা কামের ব্যবস্থা কইরা দেন স্যার? ”
” আর কি কাজ পারো তুমি ? বাসা বাড়ির কাজ করবা? ”
“নাগো স্যার, ওই কাম করলে মাইয়ারা বাইচ্যা যাইব ঠিকই তয় আমার বাপ মায় শরমে মইরা যাইব। সৈয়দ বাড়ির মাইয়ারা বাসা বাড়িতে কাম করে কেমনে?”
“তোমাকে একটা চাকরির ব্যবস্থা আমি চাইলেই করে দিতে পারি তবে তোমারতো কোন সার্টিফিকেট নাই। অন্তত এইট পাশ সার্টিফিকেট হলে সম্মানজনক কিছু দেওয়া যায়, অন্তত ফাইভ পাশতো লাগেই অফিস সহকারী পদের জন্য , অফিস ঝারামোছা পরিস্কার করা কিংবা ধর আমার অফিসের ফুটফরমাস, ফাইল এই টেবিল ওই টেবিল আনা নেওয়া করাই মূলত কাজের মধ্যে কাজ। এগুলা করা খুব কঠিন কোন কাজ না। এছাড়া সরকারি চাকরির জন্য আরও কিছু আনুষাঙ্গিক কাগজপত্র গ্যারান্টি….. ”
“স্যার স্যার, স্যার আমি সব আইন্যা দিমু আপনেরে। আপনে শুধু আমারে এই সম্মানের চাকরিডাই দেন স্যার, স্যারগো আপনে আমার ধর্মের বাপ লাগেন স্যার, স্যারগো আমারে চাকরিডা দেন স্যার। আমি মন লাগাইয়া সব কাম করুম।” বলতে বলতে এবার শবনম ভদ্রলোকের পা জড়িয়ে ধরে কান্না জুড়ে দিল।
শনমমের কান্না দেখে এবার তিনি আরও একটু নরম হলেন ওকে আশ্বাস দিলেন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুছিয়ে তার অফিসে গেলেই তিনি ওর চাকরির ব্যবস্থা করে দিবেন।
আশ্বাস পেয়ে শবনম যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেল। যেভাবেই হোক এই চাকরিটা ওর চাই’ই চাই। গ্যারান্টিওয়ালা চাকরি হল সরকারি চাকরি তা শবনম খুব ভালো মতোই জানে। কিন্তু এখন কীভাবে কী করবে তাই একবার ভাবল। প্রথমেই ঠিক করল ও আবার গ্রামে ফিরে যাবে। সবুজের সাথে যে সব ছেলেরা ফেইল করেছিল ওরা স্কুল থেকে এইট পাশ সার্টিফিকেট তুলেছিল। ওর বিশ্বাস ও নিজেও ওটা তুলতে পারবে। এরজন্য হয়ত ওর ছোট চাচার সুপারিশ হলে কাজটা সহজ হবে এই ভেবে সকাল হতেই বেরিয়ে পড়ল চাচার বাসার ঠিকানা খুঁজতে কিন্তু মনে করতে পারল না জায়গার নামটা কী? এলোমেলো ঘুরলো অনেকটা সময় এরপরে স্টুডিও নাম ধরে খুঁজে মজনুরে নিয়ে বিকালেই চাচার বাসায় গিয়ে পৌঁছালো। প্রথম দেখায় ওর চাচি ধরে নিল ও মজনুর সাথেই বুঝি গ্রাম থেকে ভাগছে। পরে শবনমের মুখে বিস্তারিত জেনে ভুল ভাঙল তার। রাতে চাচা বাসায় ফিরতেই তাকে চাকরির কথাটা বলল।
পরদিন সকালে চাচার সাথে শবনম আবার গ্রামের পথে রওয়ানা হল ।
মাঝের সময়টা কীভাবে কেটেছে সে হিসাব এখন আর করে না বরং সামনে কীভাবে কাটবে তা নিয়ে ভাবতেই বরং ওর ভালো লাগে। লঞ্চের থেকেই কত কী যে কিনল দুই মেয়ের জন্য তার আর হিসাব নেই। যা দেখে তাই কিনতে ইচ্ছে করে কোনভাবেই মনকে থামাতে পারে না। ওর চাচা চুপচাপ সব দেখছেন কিন্তু তিনিও ওকে কিছু বলছেন না। একবার ওর চাচার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল
“আইচ্ছা কাকা কনতো স্বপ্নায় কী আমারে চিনব? ও এহন কত বড় অইছে? ”
“হুমমম, মাস খানেকতো গেছোই, বড়তো মাশা আল্লাহ যথেষ্ট বড়ই হইছে৷ ইচ্ছা করলে তুই এইবার বাড়ি গিয়া ওরে বিয়াও দিতে পারবি।”
চাচা কথাটা বেশ মজা করেই বলে হাহাহা করে হেসে উঠলেন। কিন্তু কেন জানি শবনমের মুখে হাসি আসে না চাচার এই ঠাট্টা শুনে। এভাবে পালিয়ে আসা নিয়ে ওর ভেতরে কোন ভয় কাজ করছে না। ওর চাচা সবটা শুনে ওকে আশ্বস্ত করেছেন তিনি পুরো বিষয়টা মেনেজ করবেন। তাই বাবা মা’কে নিয়ে আপাতত ও কিছু ভাবছে না। ওর ভাবনা শুধু ছন্দা আর স্বপ্নাতেই আটকে থাকল। এতদিন পর ওরা ওদের মা’কে পেয়ে কীভাবে গ্রহন করবে সেই চিন্তায় এখন বুকটা ধুকধুক করে কাঁপতে লাগল। ওরা মা বলে ওর বুকে ঝাপিয়ে পড়বে না কি রাগে অভিমানে দূরে সরে থাকবে তা দেখার জন্য চোখ দুটো আপাতত নদীর পানির দিকে তাকিয়ে রইল আর পথ ফুরাবার প্রতিক্ষার এই প্রহরগুলো গুনতে লাগল।
চলবে