#কৃষ্ণময়ীর_অলংকার
#রাহনুমা_রাহা
#পর্বঃ২৩
“এমনি করে কালো কাজল মেঘ
জ্যৈষ্ঠ মাসে আসে ঈশান কোণে
এমনি করে কালো কোমল ছায়া
আষাঢ় মাসে নামে তমাল-বনে
এমনি করে শ্রাবণ-রজনীতে
হঠাৎ খুশি ঘনিয়ে আসে চিতে
এমনি করে শ্রাবণ-রজনীতে
হঠাৎ খুশি ঘনিয়ে আসে চিতে
কালো? তা সে যতই কালো হোক,
দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ
কৃষ্ণকলি আমি তারে বলি।”
বারান্দায় পা মেলে বসে গভীর মনোযোগ দিয়ে হৃদয়ে ঝংকার তোলা সুরে গা ভাসাল তপা। একেকটা শব্দ শ্রবণেন্দ্রিয় হয়ে সোজা হৃদপিন্ডে গিয়ে ধাক্কা মারছে। হামলে পড়ছে। নরম মাংসপিণ্ডকে ক্ষতবিক্ষত করছে।
তপা অনিমেষ চেয়ে রইল। এই গানটা সে দ্বিতীয় বার শুনলো। প্রথম বারেও বক্ষস্থলে ঠিক এভাবেই কাঁপন ধরে ছিল। তবে তখন সে ছিল অচেনা মানুষ। সম্পূর্ণ অচেনা নয়। খানিকটা চেনা, খানিকটা পরিচিত। বাকি পুরোটাই অচেনা। খোলসে আবৃত একটি পদার্থের ন্যায়।
তবে আজ লোকটা পরিচিত। সবচেয়ে আপনজন। সবচেয়ে কাছের।
সুরের ঝংকার শেষে পলক চোখ পিটপিট করে তাকাল তপার দিকে। মৃদু আওয়াজ তুলে ডাকল,
“কৃষ্ণময়ী।”
তপা তাকাল না পলকের দিকে। রান্নাঘরের ঘটনার পর তপা পলকের চোখে চোখ মেলাতে পারছে না। লজ্জারা ঘিরে রেখেছে তাকে।
বাইরে নজর রেখেই বলল,
“হুম।”
“আমার সাথে বুড়ো হবে?”
তপা কেঁপে উঠল। কিছু বলল না। তবে মনটা প্রশান্তিতে ভরে গেল।
পলক আবারও বলল,
“বলো না কৃষ্ণময়ী। হবে আমার সাথে বুড়ো? তোমার টানটান চামড়ায় যখন বার্ধক্যের ছাপ পড়বে তখনো আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকব। ঠিক এখন যেভাবে আছি।”
তপা মুখ তুলে তাকাল। পলকের চাহনি দেখে গাল গরম হয়ে উঠল তার। দ্রুত উঠে রুমে চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো। পলক বা হাত বাড়িয়ে তপার হাত টেনে আটকে দিল। হ্যাচকা টানে পুনরায় জায়গায় বসিয়ে দিতে চাইল। কিন্তু সামলাতে না পেরে তপা গিয়ে পড়ল পলকের উরুর উপর। আবার চলে যেতে চাইলে পলক কোমর আঁকড়ে ধরে রাখল। কোলের উপর বসে তপা চলে যাওয়ার জন্য ছটফট করছে। পলক অপলক চেয়ে আছে তপার মুখের দিকে। চাহনি সহ্য করতে না পেরে চোখ বন্ধ করে ফেলল তপা।
পলক নিচু গলায় বলল,
“তাকাও।”
তপা তাকাল না। তবে কেঁপে উঠল এত কাছ থেকে পলকের কণ্ঠ শুনে।
কোমরে রাখা হাতটা স্লাইড করে চেপে ধরতেই তপা পলকের হাত ধরে ফেলল। পলক তখনো তপার বন্ধ চোখের দিকে তাকিয়ে। মুখ এগিয়ে চোখের পাতায় ছুঁয়ে দিল। তপার হাত পলকের কাঁধ খামচে ধরল শক্ত করে। টিশার্ট পেরিয়ে ক্ষত বিক্ষত করে দিচ্ছে কাঁধের চামড়াটুকু। সেদিকে খেয়ালে নেই দুজনের কেউই। একহাত গ্রীবাদেশে গলিয়ে আঙুল ছুঁয়ে দিল তপার অধরে। মৃদু কম্পনরত ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে শুকনো ঢোক গিলল পলক।
তপা পিটপিট করে তাকাল। পলকের চোখ তখন নেশাগ্রস্ত যুবকের ন্যায়। চিবুকে ঠোঁট ছুঁয়ে গভীর আকুতি নিয়ে মৃদু স্বরে বলল,
“একটুখানি জান প্লিজ।”
তপা আবারও চোখ বন্ধ করে ফেলল। পলকের আঙুল তখন তপার কম্পনরত অধরে ছুঁয়ে দিতে ব্যস্ত।
পলক এগিয়ে গেল। ঘুচিয়ে দিল দুজনের মধ্যকার দুরত্ব। ছুঁয়ে গেল অধরের সাথে অধর। একবার, বারবার, বহুবার।
“বাবা আমি বিয়ে করতে চাই।”
মোর্শেদুল হক ছেলের মুখে সরাসরি বিয়ের কথা শুনে অবাক হলেন। ভ্রু কুঁচকে বললেন,
“বিয়ে করবি ভালো কথা। তা কাকে করবি শুনি?”
একমূহুর্ত দেরি করল না সিজান। তৎক্ষনাৎ বলল,
“পৃথা কে।”
হাজেরা বেগম পাশেই ছিলেন। অবাক হয়ে বললেন,
“আমাদের পৃথা?”
সিজান মাথা নাড়ালো।
মোর্শেদুল হক বললেন,
“ছেলে মেয়েদের কোনো খবরই তো তুমি রাখো না। এমনকি তোমার ছেলে যে এতগুলো বছর ধরে মরণ যন্ত্রণা সহ্য করছিল সেটাও তুমি জানো না। তপা নাহয় অন্যের মেয়ে ছিল। কিন্তু সিজান তো তোমার নাড়ী ছেড়া ধন। তার প্রতিও তুমি সঠিক কর্তব্য পালন করতে পারো নি। তোমার আছে কেবল ভাইয়ের চিন্তা। একদিন তুমি পস্তাবে। মিলিয়ে নিও আমার কথা।”
হাজেরা বেগম কিছু বুঝলেন না। প্রশ্ন করতে চাইলে সিজান থামিয়ে দিয়ে বলল,
“এতকথা রাখো মা। খালামণিকে বলো তুমি বিয়ের কথা। ভাইয়াকেও বলো। বলবে কাল আমরা যাব কথা বলতে।”
হাজেরা বেগম অবাক হয়ে বললেন,
“এত তাড়াহুড়ো কেন তোর? ধীরে সুস্থে বলি।”
মোর্শেদুল হক স্ত্রীর দিকে বিরক্ত চাহনি দিয়ে বললেন,
“তুমি বলবে? নয়তো ফোন আমাকে দাও আমি বলছি।”
হাজেরা বেগম ভেংচি কেটে চলে গেলেন কথা বলতে।
“এই পিথাগোরাসের উপপাদ্য শুনতে পাচ্ছিস? বিয়ের জন্য তৈরী হ বেয়াদব মেয়ে। এক্ষুনি তোর কানেও খবর যাবে। মা কল দিয়েছে খালামণিকে। কাল হয়তো যাব তোকে চাইতে। একবার বিয়ে হোক। তোর বিয়ের শখ আমি মিটিয়ে দিব অসভ্য মেয়ে। আমাকে নির্লজ্জের মত বাবাকে বলতে হলো বিয়ের কথা। এর শাস্তি তো তুই পাবি।”
পৃথা খিলখিলিয়ে হেসে উঠল।
সিজান কৃত্রিম রাগ দেখিয়ে বলল,
“দাঁত বার করে হাসছিস তো। তোর সাদা দাঁতগুলো আমি সাঁড়াশি দিয়ে গুনে গুনে তুলে ফেলব।”
পৃথা হাসি থামিয়ে বলল,
“তাহলে আমি খাব কি করে? খাবার চিবিয়ে খেতে হবে না?”
“কেন আমি চিবিয়ে দেব। তুই খাবি।”
“ইয়াক। দূরে গিয়ে মরো তুমি।”
সিজান শব্দ করে হেসে ফেলল। এরপর চলতে থাকল হাজারো কথা। চলতে থাকল খুনসুটিময় ভালবাসা।
তপা দরজা বন্ধ করে বসে আছে অনেকক্ষণ। পলক বিছানায় আধশোয়া হয়ে অপেক্ষা করছে দরজা খোলার। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত মূহুর্ত কতক্ষণে আসবে জানে না সে। এদিকে পেটে তার ইঁদুর দৌড়াচ্ছে খিদেতে। বাধ্য হয়ে উঠে বসল সে। ধীর পায়ে এগিয়ে গেল বন্ধ দরজার দিকে। দুবার নক করল। ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ নেই।
পলক গলা বাড়িয়ে ডাকল। তবুও তপা উত্তর দিল না। ঠায় বসে আছে বিছানায় পা ঝুলিয়ে।
“তিয়াশা বাইরে এসো। ক্ষুধা পেয়েছে তো আমার।”
তপা নড়েচড়ে বসল। এগারোটা বাজতে চলল। ক্ষুধা লাগাটাই স্বাভাবিক। বিছানা থেকে পা মেঝেতে নামাতেই আবারও ভেসে এলো পলকের কণ্ঠস্বর।
” আর কিছু করব না তো । বাইরে এসো।”
তপা হেসে ফেলল। মৃদু পায়ে এগিয়ে গেল দরজার দিকে। খুট করে শব্দ করে খুলে ফেলল দরজাটা। দৃশ্যমান হলো পলকের অবয়ব। পলক তাকাল তপার মুখশ্রীতে। মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে তপা। পলক আর ঘাঁটাল না। নিঃশব্দে গিয়ে দরজাটা তালাবদ্ধ করে দিল। তপা অবাক হয়ে তাকাল। পলক মুচকি হেসে এক ভ্রু উঁচিয়ে বলল,
“এখন কি করবে? কোথায় যাবে?”
তপা অসহায় মুখ করে তাকাল। পলক শব্দ করে হাসল। তপাকে ডাইনিংয়ে নিয়ে যেতে উদ্ধত হয়ে বলল,
“নিশ্চিন্তে খাবে চলো। আর কিছু করব না।”
পরের দিন সকাল বেলা। তপা বিছানায় বসে ফোন ঘাঁটছে। পলক ঘুমিয়ে আছে তখনো। মোবাইল স্কিনে পৃথার নাম্বার ভেসে উঠতে দেখে মুচকি হেসে ফোন কানে তুলে নিল।
পৃথা একটু কথা বলেই মায়ের কাছে ধরিয়ে দিল। আয়েশা কুশলাদি বিনিময়ের পর বলল,
“তপা মা চলে আসিস তো সকাল সকাল। পৃথা কে দেখতে আসবে। বলতে পারিস বিয়ে ঠিক করতে আসবে।”
তপা চমকে উঠল। পৃথার বিয়ে হয়ে গেলে ভাইয়ের কি হবে ভেবে।
তপা কে চুপ থাকতে দেখে আয়েশা আবারও বলল,
“কিরে আসবি তো?”
“তা আসব। কিন্তু আন্টি তপা বিয়েতে রাজি?”
আয়েশা মুচকি হাসলেন তপার কণ্ঠ শুনে। মেয়ে তার বান্ধবীর জন্য চিন্তায় পরে গেছে বুঝতে পারলেন। কিন্তু তিনি সেটা তপা কে বুঝতে না দিয়ে বললেন,
“রাজি হবে না কেন? সিজান ভালো ছেলে। পৃথা কে নিশ্চয়ই ভাল রাখবে।”
তপা অবিশ্বাস্য সুরে বলল,
“ভাইয়ের সাথে বিয়ে হবে?”
“কেন তুই রাজি না?”
তপা উচ্ছ্বাসিত হয়ে বলল,
“একশ বার রাজি আন্টি। আমি কিছুক্ষণ পরই চলে আসব।”
আয়েশা হাসলেন। বললেন,
“আচ্ছা। তাহলে রাখি। পলক কেও তো বলতে হবে। ও কি তোর ওখানে?”
তপা লজ্জা পেল। মিনমিনে গলায় বলল,
“হ্যা আন্টি। ঘুমোচ্ছে।”
আয়েশা প্রসন্ন হলেন। বললেন,
“ডেকে দিবি? নাকি পরে কল দেব?”
“ডাকছি আমি। একমিনিট অপেক্ষা করো আন্টি।”
তপা ফোন হোল্ড করে রেখে মৃদু স্বরে ডাকল পলক কে। দুবার ডাকতেই চোখ পিটপিট করে তাকাল। ঘুম জড়ানো গলায় বলল,
“এখনই ডাকছো কেন বউ? রাতে ঘুমাতে পারি নি আমি। ঘুমাতে দাও।”
তপা ভ্রু কুঁচকে বলল,
“রাতে ঘুমাতে পারেন নি কেন? কোন গোয়ালে গরু চুরি করতে গিয়েছিলেন?”
পলক হাত টেনে শুয়িয়ে দিয়ে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরে বলল,
“বউয়ের ঘুমন্ত মুখশ্রী দেখতে ব্যস্ত ছিলাম বউ। বউ তো আর আমার যন্ত্রণা বুঝে না। সে তো পরে পরে ঘুমাচ্ছিল। আমি বেচারা ঘুম ফেলে বউ পাহারা দিচ্ছিলাম।”
তপা নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করে বলল,
“আন্টি কল দিয়েছে। লাইনে আছে। আপনি কথা বলুন। তারপর এসব জড়াজড়ি করুন প্লিজ।”
পলক শুনল। তবে তপাকে ছাড়ল না। হাত বাড়িয়ে ফোন এনে কথা বলল। জানালো দুপুরের আগেই চলে আসবে দুজনে।
ফোন রেখে নজর দিল তপার দিকে। তপা চোখ পিটপিট করে বলল,
“কি?”
পলক ঠোঁট কামড়ে হাসল। বলল,
“জড়াজড়ি করব।”
পৃথার রুমের বেহাল দশা। রেডি হওয়ার চক্করে পুরো বিছানার নাজেহাল অবস্থা করে ফেলেছে পৃথা। তপা মাথায় হাত দিয়ে চেয়ারে বসে । পৃথা কিছুক্ষণ পর পর তপার সামনে ঘুরেফিরে দেখিয়ে বলছে,
“দেখতো সুন্দর লাগছে না?”
তপা কেবল মাথা নাড়িয়ে সায় জানাচ্ছিল। কিন্তু শেষবার মলিন গলায় বলল,
“ভাই যদি তোর রুমের এই অবস্থা দেখে তোকে রেখে পালাবে। ভাই কিন্তু প্রচন্ড গোছানো স্বভাবের।”
পৃথা মলিন হেসে বলল,
“আমিও তো গুছিয়েই রাখি সব। কিন্তু আজ কিভাবে যেন অগোছালো হয়ে গেছে।”
তপা হাসল। মেয়েটা এক্সাইটমেন্ট ধরে রাখতে পারছে না। তিন বছরে মেয়েটা নিজের অস্তিত্বই হারিয়ে ফেলেছিল। নিজের চঞ্চলতা ভুলে শান্ত হয়ে গিয়েছিল। জিন্দা লাশের মত।
তপা কাজল নিল কড়ি আঙুলে। পৃথার কানের পেছনে কাজল ছুঁয়িয়ে বলল,
“আমার বাচ্চাটার সুখে যেন কারও নজর না লাগে।”
পৃথা হাসল। দু’হাতে জড়িয়ে ধরল। সাথে সাথে ছেড়েও দিল। চোখ ছোট ছোট করে বলল,
“তোর শরীর থেকে মেল পারফিউমের ঘ্রাণ আসছে কেন?”
তপা লাজুক হাসল। মাথা এদিক ওদিক ঘুরিয়ে লজ্জা থেকে নিজেকে আঁটকে রাখতে চাইল।
পৃথা আবারও বলল,
“এটা পলক ভাইয়ার পারফিউমের ঘ্রাণ?”
তপা মৃদু স্বরে বলল,
“হ্যা। কি হয়েছে বল তো। আমি আমার পারফিউম খুঁজে পাচ্ছিলাম না। তাই নিচে এসে উনারটা লাগিয়েছি।”
পৃথা চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বলল,
“তুই আবার কবে থেকে পারফিউম দিস?”
তপা হার মানার ভঙ্গিতে বলল,
“আম্মা মাফ কর আমারে। আমি রেডি হওয়ার পর উনি এসে জড়িয়ে ধরেছিল। মাত্রই পারফিউম লাগিয়েছিল। তাই ঘ্রাণ আমার জামায়ও লেগে গেছে। বুঝতে পেরেছিস। আর মাথা খাবি না। চুপচাপ বসে থাক।”
পৃথা কিছু বলতে চাইল।
তপা আঙুল উঁচিয়ে বলল,
“নো মোর কোয়শ্চেন।”
রান্নাঘর থেকে পৃথার রুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায় তপা। কিছুদূর চলেও যায়। কিন্তু অদূরেই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে মামুনকে আসতে দেখে তপা থমকে দাঁড়ালো। তপা ভাবেও নি এভাবে অতীতের কাটা বর্তমানে এসে ফুটবে। তপা পেছন ফিরে চলে যেতে শুরু করল। আবার ভাবল কতদিন এভাবে লুকিয়ে থাকবে। পালিয়ে বেড়াবে ভয় পেয়ে। নিজের ট্রমাটিক সিচুয়েশন থেকে অতিদ্রুত বের হতে হবে। পলক কে একটা সুস্থ দাম্পত্য জীবন উপহার দিতে হবে। চোখ বন্ধ করে জোরে নিশ্বাস ছাড়ল তপা। নিজেকে শক্ত করে সামনে ফিরল আবার। বড় বড় পা ফেলে এগিয়ে যেতে শুরু করল। আর কয়েক কদম এগিয়ে গেলেই মুখোমুখি হবে সে বিকৃত মস্তিষ্কের লোকটার। ঠিক সেই মূহুর্তে পলক এসে তপার বাহু আঁকড়ে ধরল। একহাতে জড়িয়ে নিল নিজের সাথে। মামুন হিংস্র দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল পলকের হাতের দিকে। পলক তপার চোখে চোখ রেখে সাহস সঞ্চার করল। তপা অসহায় চোখে তাকিয়ে মুচকি হাসল। পায়ে পায়ে চলে গেল মামুনের সামনে থেকে।
মামুন ঘুরে দাঁড়িয়ে তপার চলে যাওয়া দেখল। হিংস্র দৃষ্টিতে হিংস্রতা খেলা করছে তার।
পলকও একবার পেছন ফিরল। তার চোখে খেলা করছে অন্য কিছু। তার কৃষ্ণময়ীর উপর হওয়া অত্যাচারের বিনিময় করার সময় চলে এসেছে বোধহয়। শান্ত দৃষ্টিতে দেখল মামুনের পা থেকে মাথা অবধি। পরক্ষণেই ঠোঁটের কোণে ফুটে উঠল ক্রুর হাসি।
চলবে…