#গোধূলি_বেলায়_তুমি_এসেছিলে
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ১৯
ফোন ধরে বসে রয়েছে রাগিনী। মাঝে মাঝে দুটো হাত দিয়ে ফোন মুচড়ে ধরছে। ঠোঁট কামড়ে গভীর কোনো চিন্তায় মশগুল। তার অক্ষিকোটরে থাকা সেই প্রগাঢ় কৃষ্ণবর্ণের মণি দুটো ফ্লোরের দিকে স্থির। খুব কম টেম্পারেচারে চালিয়ে রাখা এসিও রাগিনীর কপালের ঘাম কমাতে ব্যর্থ হচ্ছে। একটা সময় পর দৃষ্টিটা ফোনের দিকে নিয়ে এসে ফোনের লকটা খুলে আবারও কল লিস্টে প্রবেশ করল সে। অনেক হন্নি হয়ে খুঁজে একটা নম্বরে এসে চোখ আটকালো তার। একবার দম নিয়ে কল করল সেই নম্বরে। কানে ধরল। কিছুক্ষণ প্রতীক্ষার পর ভেসে এলো এক চিকন মেয়েলি কন্ঠ।
“হ্যালো, রাগিনী। হোয়াটস্ আপ? কী খবর? পড়াশোনায় একদমই ডুব লাগিয়েছিস নাকি? কোন গর্তে গিয়ে লুকিয়েছিস?”
রাগিনী না চাইতেও হেঁসে শান্ত গলায় উত্তর দেয়,
“তেমন কিছু না, উর্মিলা। একটু পড়াশোনায় বিজি হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু এক্সাম শেষে এখন একদম ফ্রি! ঢাকায় এসেছি বেশ কয়েকদিন হলো।”
“তোর যা চাপ! আঙ্কেলের মতো সাইকোলজিস্ট হবি। কিপ ইট আপ। তো আয় একদিন দেখা করি। কতদিন তোকে দেখিনা ইয়ার!”
“অবশ্যই একদিন দেখা করব। কিন্তু একটা কথা ছিল।”
বেশ গাম্ভীর্যের সাথে কথাগুলো বলল রাগিনী। অপরপাশ থেকে আগ্রহের সাথেই জবাব আসে।
“কি কথা বল না!”
রাগিনী কিছুটা সংকোচ নিয়েই বলে,
“তুই বলেছিলি না? তোর মামা মেন্টাল পেশেন্ট নিয়ে রিসার্চ করে? স্পেশালি পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারের পেশেন্ট নিয়ে?”
“হ্যাঁ। মামা তো এসব নিয়েই বিজি থাকেন এখন পার্টনারস্ নিয়ে।”
“তো উনার থেকে একটা হেল্প লাগতো। তুই কি পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারের পেশেন্ট নিয়ে যত ইনফরমেশন আছে বা যত আর্টিকেল আছে সব কালেক্ট করে দিতে পারবি?”
উর্মিলা ওপাশ থেকে উচ্ছ্বাসের সাথে বলে ওঠে,
“হুয়াই নট। দিতে তো পারব। কিন্তু হঠাৎ তোর এগুলো কোন কাজে লাগবে?”
কিছু বলতে গিয়েও থেমে যায় রাগিনী। নিজের মনে জমে থাকা সব কথাগুলো আয়ত্তে করে নেয়। নিজেকে সামলে বলে,
“ফোনে এতো কথা বলা পসিবল নয়। একদিন দেখা করিস। সেদিন বলবো।”
উর্মিলা হচ্ছে কথার ঝুরি। যার কথা শুরু হলে থামানো বড্ড মুশকিল। এক কথায় বাঁচাল যাকে বলা হয়। এই মেয়েটা রাগিনীর বান্ধবী সেই স্কুল জীবন থেকেই। দুজনে একসঙ্গে স্কুল ও কলেজ জীবন শেষ করলেও রাগিনীর ভাগ্যে পড়ে চট্টগ্রাম। সে সেখানে তার খালার বাড়ি থেকে পড়াশোনা শুরু করে। ফলে দুজনের যোগাযোগ কমে। আজ উর্মিলা তার পুরোনো বান্ধবীকে কাজ ছাড়া করবেই না। কথার উপর কথার বর্ষন হতে থাকে। প্রায় গুনে গুনে ত্রিশ মিনিট পর রাগিনী ঘুমের বাহানা দিয়েই ফোনটা কাটে। ফোনটা বিছানায় রেখে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে রাগিনী আপনমনে আউড়ায়,
“মুখে যেন পপকর্ণ। আগের মতোই রয়ে গেল মেয়েটা।”
কথাটুকু শেষ হবার পর চুপচাপ বসে থাকে রাগিনী। কথার মাঝে দরজা খুলে রিওকে নিজের ঘরে এনেছিল সে। এখন রিও পরম শান্তিতে ঘুমোচ্ছে। তার গায়ে আলতো করে হাত বুলিয়ে দেয় রাগিনী। রাত বেশি না হলও সে স্পষ্ট বুঝতে পারছে আজ তার ঘুম হবে না। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের খেলা হচ্ছে যেন। সে খুব করে চায় তার বিশ্বাস জিতে যাক। সেই বিশ্বাস যাকে ভর করে সে কোহিনূরকে আস্তে আস্তে নিজের মনের সংলগ্নে এনেছে। সে চায় তার দেখা জিনিসগুলো ভুল প্রমাণিত হক। সঠিক হক তার দেখা সেই সুন্দর দৃষ্টি। ঠিক প্রমাণিত হক মানুষটির বলা প্রতিটা কথা!
পরদিন রাগিনী ঠিক করল সে আজ কোহিনূরের কাছে যাবে না। বাড়িতেই থাকবে। তার বাবার কথা রাখার চেষ্টা করল সে। যেই ভাবা সেই কাজ। সারাদিন বাড়িতেই কাটল তার। তবে কিছুটা অস্থিরতা নিয়ে। কিছুটা অশান্তি নিয়ে। মূলত অশান্তি কোথায় সেটা তার জানা নেই। চারিদিকে সব ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। এতো ফাঁকা ফাঁকা লাগার কারণও তার জানা নেই। একদিনেই কেমন যেন হাঁপিয়ে উঠেছে। বাড়িতে আর ভালো লাগছে না। ক্ষণে ক্ষণে গিয়ে নিজের আঁকা স্কেচ খুলে খুলে দেখছে। যেখানে সে কোহিনূর সাহেবকে সে নিজের মতো করে এঁকেছিল। তবুও যেন এই স্কেচটা জীবন্ত নয়। এতে সেই দৃষ্টি নেই যেই দৃষ্টি রাগিনীর মনে উথাল-পাতাল সৃষ্টি করে। এই স্কেচ তার সাথে কোনোরকম কথা বলে না। উদ্ভট সব কথা বলে তাকে রাগিয়ে দেয় না। এই স্কেচে থাকা মানবটিকে রাগিনী চোখ রাঙানি দিতে পারে না। এতো মহা মুশকিল!
বিকেল বেলা কোহিনূরের স্কেচই ঘাটাঘাটি করছিল রাগিনী। অবশেষে না পেরে স্কেচটা একটা বড় ফ্রেমে সেট করে খালি দেয়ালে আঁটকে দিয়েছে। কাজটা করেই ফিরে এসে বিছানায় হাঁটু ভাঁজ করে বসে সে। ব্যাকুল চোখ দুটো সরে না স্কেচ থেকে। আনমনে সে বলে ওঠে,
“কোহিনূর রত্ন, আপনি আমার কাছে একজন অদ্ভুত জাদুকর। আপনি কি সেই জাদু দিয়েই আমাকে ভুল প্রমাণ করতে পারবেন?”
কোনোকিছুর স্পর্শ পেতেই নিচু হয়ে তাকায় রাগিনী। রিও তার সামনের পা দিয়ে রাগিনীকে ডাকছে বারবার। রাগিনী তাকাতেই সে ভং ধরে শুয়ে পড়ে খেলা করতে লাগে। রাগিনী হেঁসে ফেলে তৎক্ষনাৎ। রিওর মাথায় হাত রেখে বুলিয়ে দিয়ে বলে,
“এতো ভং ধরা কই থেকে শিখেছো লিটল কিউটি?”
কথাটা বলতেই তার স্মরণে এলো কোহিনূরের বলা কথাগুলো। লোকটা বলেছিল, ‘দেখো একদিন হতে না হতেই তোমার সঙ্গে থেকে থেকে সে তোমার স্বভার পেয়ে যাচ্ছে। যখন তখন আমাকে ধমকাচ্ছে।’
রাগিনী আবার নিঃশব্দে হাসলো। পরমুহূর্তেই মুখটা ভার হলো তার। সে আবারও কোহিনূরের কথা মনে করছে? নিজের মাথা জোরে জোরে ঝাঁকিয়ে রিও এর দিকে একটু ঝুঁকে রাগিনী আদুরে সুরে বলে,
“তুমি বাড়ি থেকে বোর হচ্ছো রিও? তাহলে চলো বাহিরে থেকে ঘুরে আসি?”
রিও যেন মনে মনে খুশি হয়। দ্রুত উঠে দাঁড়িয়ে লেজ নাড়াতে থাকে। সেও বোধহয় বাহিরে যেতে চায়। রাগিনী মুচকি হেঁসে তাকে কোলে তুলে নেয়।
বিকেলে আকাশ জুড়ে নামে রঙিন মেঘের খেলা। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি নিজেরে নীড়ে ফিরতে দেখা যায়। সূর্যের দিনের শেষ রোদটা তখন একটু নমনীয় হয়ে ওঠে। হালকা রোদের তাপে তখন পরিবেশ স্নিগ্ধ হয়ে ওঠে।
ফোনে কথা বলতে ব্যস্ত ছিল রায়ান। গাড়িতে তেল নেই। পাম্প স্টেশনে দাঁড় করানো ছিল তার গাড়ি। রাস্তার একপাশে রায়ান একনাগাড়ে ফোনে কারোর সঙ্গে কথা বলে চলেছে ব্যস্ত ভঙ্গিতে। শার্টের মাঝখানে ঝোলানো সানগ্লাসটা নড়ছে। স্কাই ব্লু রঙের শার্টের বোতামের ফাঁকে আটকানো সেটি। মুখে পড়েছে বিকেলের সেই নম্র রোদ।
“হ্যাঁ। আমি আসছি এখনি। আর পনেরো মিনিটের মতো লাগবে।”
বলেই ফোনটা কাটে রায়ান। ফোনটা পকেটে ঢুকিয়ে এগিয়ে আসে গাড়ির দিকে। বিল মিটিয়ে দিতেই গাড়ির দরজা খুলে যখন বসতে যাবে তখনই তার নজরে পড়ে গাড়ির পেছনে থাকা একটা মেয়ের। তৎক্ষনাৎ রায়ান বলে ওঠে,
“কে ওখানে?”
গাড়ির পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটি হকচকিয়ে ওঠে। রায়ান দ্রুত পেছনের দিকে যেতেই মেয়েটি বেরিয়ে আসে। মুখটা মাস্ক দিয়ে ঢাকা সেই নারীর। চোখটা বেরিয়ে থাকলেও সামনের চুলগুলোতে লেয়ার কাট দেওয়ায় কপাল ও চোখের অর্ধেকটাও ঢেকে গিয়েছে। পরনে ছিমছাম সুন্দর একটা টপস আর গলায় একটা স্কার্ফ ঝোলানো। মেয়েটা ভয়াতুর গলায় বলে ওঠে,
“বিলিভ মি! আমি কিচ্ছু করিনি।”
“বিলিভ করার মতো কোন কাজটা করলেন ম্যাডাম? গাড়ির পেছনে চোরের মতো লুকিয়ে থাকলে কাকে বিলিভ করা যায়?”
মেয়েটির চোখে স্পষ্ট ভয়। আমতা আমতা করছে। রায়ানের ভ্রু কুঁচকে যায়। কেমন যেন চেনা চেনা লাগছে মেয়েটাকে। কিন্তু ঠিক মনে আসছে না। রায়ান হাত নাড়িয়ে আবারও বলে,
“ও হ্যালো! কিছু বলুন নাহলে…”
“আ…আসলে আমার ভাই এ…এক্সিডেন্ট করেছে। আমি তো টাকা নিয়ে বের হতে ভুলে গেছি। তাই কেউ লিফট দিচ্ছে না।”
রায়ানের কাছে বিষয়টা অযৌক্তিক লাগলেও সে বিষয়টা এড়িয়ে বলে উঠল,
“তাহলে চলুন আমি আপনাকে পৌঁছে দিই?”
“আ…আপনি…”
মেয়েটিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই রায়ান বলে ওঠে,
“হ্যাঁ। কাম।”
মেয়েটা একটু একটু করে পিছিয়ে যায়। রায়ান ক্ষীণ দৃষ্টিতে তাকায়। তীব্র সন্দেহ জাগছে তার মনে। তাকে জানতে হবে মেয়েটা কে। রায়ান এগিয়ে যেতেই মেয়েটি তড়িঘড়ি করে ফোন ধরে বলে,
“হ্যালো, মা। তোমরা পৌঁছে গেছো? আমি দেরিতে গেলেও হবে?”
বলেই চুপ রইল মেয়েটি। আঁড়চোখে তাকালো। রায়ান এখনো সন্দিহান হয়ে তার দিকেই চেয়ে রয়েছে দেখে মেয়েটি আবারও বলল,
“ঠিক আছে তাহলে রাখছি।”
বলেই ফোনটা রাখল মেয়েটি। আর রায়ানের উদ্দেশ্যে ধড়ফড়িয়ে বলে উঠল,
“থ্যাংক ইউ আপনাকে। কিন্তু আমার আর লিফট লাগবে না। মা হসপিটালে পৌঁছে গেছে।”
বলেই রায়ানকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়েই মেয়েটি দ্রুত পেছন দিকে হাঁটা ধরল। রায়ান ডাকতে চাইলো। কিন্তু এই রাস্তায় কোনো মেয়েকে আটকানো ঠিক হবে না বলে মনে করল। তাই মেয়েটির অযৌক্তিক কথাগুলো চিন্তা করতে করতে গাড়ির দরজা খুলে ড্রাইভিং সিটে বসে পড়ল সে। গাড়ি স্টার্ট দিল। সেখান থেকে বেরিয়ে পড়ল দ্রুত। বেশ কিছুদূর যেতে যেতে কিছুক্ষণ আগে দেখা হওয়া সেই মেয়েটির মুখ স্মরণে এলে হঠাৎ করেই রাস্তার মাঝে দ্রুত গাড়ি সাইড করে গাড়ি থামায় সে। কেমন যেন গোলমেলে লাগছে সে। মাথায় অতিরিক্ত চাপ দিতেই তার মনে পড়ে সে এই মেয়েটাকে চিনে। হুবহু সেই রাগিনী তাজরীনের মতোই ছিল চোখ। যদিও অনেকাংশেই ঢাকা ছিল মুখশ্রী কিন্তু রায়ানের চোখ চিনতে ভুল করবে না। সে বিরবির করে নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে,
“তবে সে আমার গাড়িতে কী করছিল?”
কিছু একটা মনে আসতেই আশংকা করে ঝড়ের গতিতে নিজের গাড়ির সিট বেল্ট খুলতে শুরু করে সে। গাড়ির দরজায় হাত লাগায়। টেনশনে গাড়ির দরজাও সহজে খুলতে পারছে না। অবশেষে সক্ষম হয়েই বাহিরের দিকে নেমে অনেকটা দৌড়ে কংক্রিটের দিকে যেতেই তীব্র বিকট শব্দে আশপাশ কেঁপে ওঠে। রায়ান সবে তিন থেকে চার ধাপ রাখতে পেরেছিল বাহিরে। তৎক্ষনাৎ এমন ঘটনায় বেশ দূরে গিয়ে ছিটকে পড়ে সে উপুড় হয়ে। শরীরে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। কোনোরকমে মাথা উঠিয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে পিছু ফিরে দেখে তার গাড়িতে দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। সেই আগুনে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে গাড়ি। আর একটু হলে বোধহয় সে নিজেও সেই গাড়ির সাথে পুড়ে জ্বলে যেতো। ঝাপ্সা দেখতে চারিপাশ। চোখজোড়া হয়ে আসছে নিস্তেজ।
পা টিপে টিপে করিডোর দিয়ে হাঁটছে রাগিনী। একহাতে একটা ব্যাগ। অন্যহাতে রিও। আশেপাশে তাকাচ্ছে সে বারংবার। চোরের মতো উঁকিঝুঁকি দিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে সেই কাঙ্ক্ষিত মানুষটি আশেপাশেই নেই তো? মন যে মানছে না আর। শুধু একটুখানি খবর পাওয়ার জন্য ছটফটিয়ে উঠেছিল। দম বন্ধ হয়ে এসেছিল। অন্যদিকে মস্তিষ্ক বলেছিল, হসপিটালে আজকের দিনটা অন্তত পা না রাখতে। তবে দিনশেষে মন ও মস্তিষ্কের কঠিন লড়াইয়ে মনের জিত হয়। মনের আদেশ পালন করতে রাগিনী আবারও হসপিটালে পা রাখে। তবে তার উদ্দেশ্য একটাই। কোহিনূরকে সে দেখা দেবে না। কোনোমতে খাবার তার ঘরে রেখে পালাবে।
সেই উদ্দেশ্য নিয়েই কোহিনূরের রুমের সামনে এসে দাঁড়াল সে। উপরে রুম নম্বর লিখা ১০৭। দরজা হালকা করে ভিড়িয়ে দেওয়া। রাগিনী আড়াল থেকে উঁকি দিয়ে ভেতরটা দেখার চেষ্টা করেও বৃথা গেল চেষ্টা। বিরক্তিতে ‘চ’ এর ন্যায় শব্দ করে আরেকটু দৃষ্টি প্রবল করে দেখতে চাইলো। সেই মূহুর্তেই চোখের সামনে আস্ত প্রশস্ত হাত চলে এসে তার চোখ দুটো চেপে ধরল। হতবিহ্বল হয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে গেল রাগিনী। ঢক গিলে ফেলল বেশ কয়েকটা। মনে হচ্ছে পুরো প্ল্যানটাই পানিতে গেল। কারণ এই হাওয়ায় এমন সুভাস তখনি আসে যখন তার আশেপাশে সেই কাঙ্ক্ষিত মানবটির আনাগোনা হয়। এই শীতল স্পর্শ রাগিনীর পরখে পরখে চেনা। এবার সেই পুরুষালি কন্ঠে শিরশির করে কেঁপে উঠল রাগিনী।
“এতো কাছে এসেও পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তো হবে না মিস!”
“কেন?”
“আপনি যতই অতলে গিয়ে লুকিয়ে পড়ার চেষ্টা করুন কিংবা অজস্র নারীর মাঝে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করুন আমার এই দৃষ্টি ঠিক আপনার উপরেই পড়বে। আপনাকে রন্ধ্রে রন্ধ্রে চিনে নেবে। কাছে এভাবেই টেনে নেবে।”
চলবে…
[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক। গঠনমূলক মন্তব্যের আশায় রইলাম। রহস্য উদ্ঘাটন হবে আর কিছু পর্বের মাঝেই।]