ধূসর প্রেমের অনুভূতি – পর্ব ৩২

0
298

#ধূসর_প্রেমের_অনুভূতি
#ফারহানা_ছবি
#পর্ব_৩২
.
.
মেঘ অফিস থেকে সোজা বাড়িতে চলে আসে৷ এদিকে ফারিহা অর্নিল দুজনে বের হয় চৌধুরী ম্যানশনে যাওয়ার উদ্দেশ্য কিন্তু হঠাৎ মাঝরাস্তায় দু’টো গাড়ি অর্নিল এবং ফারিহার গাড়ি আটকে অর্নিল ফারিহাকে উদ্দেশ্য করে ফায়ারিং শুরু করে৷ আচমকা এমন এট্যাক হবে ফারিহা অর্নিলের উপর তা সেটা ফারিহা একদমি ভাবতে পরেনি৷ এই মুহূর্তে ফারিহার কাছে কোন আর্মস না থাকায় ফারিহা যেন অথৈ সাগরে পড়ে গেল৷ অর্নিল কোন ভাবে তার গাড়ি পেছনে ব্যাক করতে পর্যন্ত পারছে না৷ পেছনের গাড়ি থেকে দুজন একা ধারে ফায়ারিং করে যাচ্ছে ৷ অর্নিল ফারিহার চিন্তিত ভিতু মুখশ্রী দেখে অর্নিল ফারিহার হাত শক্ত করে ধরে বলে,

” ডোন্ট ওয়ারি জান আমি থাকতে তোমার বিন্দুমাত্র ক্ষতি হতে আমি দিবো না৷”

ফারিহা অর্নিলের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে বলল,” আই সোয়্যার অর্নিল আজ যদি আমার জন্য তোমার বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয় তাহলে আমি নিজেকে শেষ করে দিবো৷ আমার জন্য তোমার সিন্ধু পরিমান ক্ষতি দেখতে পারবো না৷”

অর্নিল ফারিহার কপালে আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে গাড়ি স্টাট দেয়৷ তখনি হুট করে আর একটা এসে থামে৷ দু’টো গাড়ির লোক গুলো থেমে যায় সেই গাড়িটা দেখে৷ লোক গুলো বুঝে ওঠার আগে সেই গাড়ি থেকে এক আগন্তক বের হয়ে সেই গাড়ি দুটোর লোক গুলোকে টার্গেট করে শুট করতে থাকে৷ লোক গুলোর বুক কয়েক মিনিটে ঝাঝড়া করে দেয় সেই আগন্তকের বন্দুক৷

অর্নিল এমন ঘটনা দেখে হতভম্ব হতবিহ্বল স্তম্ভিত হয়ে তাকিয়ে আছে৷ এদিকে ফারহা চোখে মুখের চিন্তিত ভাবনা উড়ে গিয়ে চোখে মুখে একরাশ ভয়ের ছাপ ৷ ভয়ে শুকনো ঢোক গিলে কাঁপা কাঁপা গলায় অর্নিলকে বলে উঠলো,

” অ,,অর্নিল গাড়ি স্টাট দেও৷ গা,,গাড়ি স্টাট দেও প্লিজ৷ আর এক মুহূর্ত এখানে নয়৷”

অর্নিল কোন প্রশ্ন না করে সামনের গাড়িটার সাইড দিয়ে চলে যায়৷

এদিকে সেই আগন্তকের কাজ শেষ হতে কাউকে ফোন করে৷ ফোনের ওপাশের মানুষটা যেন সেই কাঙ্ক্ষিত ফোনের অপেক্ষায় ছিলো ৷ ফোন বাজতে কল রিসিভ করে ৷

” কাজ কম্পিলিট?”

” ইয়েস ৷ আর হ্যাঁ ওদের কোন ক্ষতি হয়নি৷ ওরা এখুনি হয়তো চৌধুরী ম্যানশনে চলে আসবে৷ ”

” দ্যাট’স গুড৷ আমি তোমাকে তোমাকে পরে কল করছি৷ এই দিকটা এবার আমাকে সামলাতে হবে৷”

” ওকে বাই৷ ”

কল ডিসকানেক্ট করে ফারহা ব্যালকনিতে দাড়িয়ে ফারিহা অর্নিলের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো৷

অন্যদিকে তনু তার ব্যথা হাত নিয়ে বেডে শুয়ে আছে আর কারো ফোনের অপেক্ষা করছে৷

” উফফ এখনো কল করছে না কেন? কাজটা কি এখনো কম্পিলিট হয়নি? কিন্তু জাদের কাজটা দিয়েছি তাদের তো কাঁচা হাত নয়৷ ওদের শেষ করা লোক গুলোর বা হাতের খেল৷ কিন্তু এখনো কল কেন করছে না?”

তনু ভাবতে ভাবতে অন্য নাম্বারে ফোন করে৷

” হ্যালো ওই দিকটার কি খবর? সব ঠিক আছে তো?”

” ইয়েস ম্যাম সব কিছু ঠিক আছে৷ কিন্তু পেশেন্টরা তো ভিষণ খামখেয়ালীপনা করছে ম্যাম৷ যখন তখন এটা সেটা আমাদের অর্ডার করছে৷”

” অর্ডার করছে তো তা পালন করো৷ ওদের যেন কোন অসুবিধা না হয়৷ তাহলে তোমাদের আমি নিজের হাতে শেষ করে দিবো যাস্ট মাইন্ড ইট ৷”

তনুর কথা শুনে ফোনের ওপাশ থেকে বলল,

” স্যরি ম্যাম ৷ এখন থেকে ওনারা যা বলবে আমরা তাই করবো৷”

” গুড ৷ আমার কথা মেনে চললে তোমাদের ফ্যালিমি সেইফ থাকবে৷ আর যদি কথা মনে না চলো তাহলে তাদের শেষ করতে দু’বার ভাববো না৷ ”

তনু কল ডিসকানেক্ট করে ফোনের দিকে চেয়ে রইল কাঙ্ক্ষিত কলের আশায়৷

(৫৯)

ফারিহা অর্নিলের গাড়ি চৌধুরী ম্যানশনে প্রবেশ করতে ফারহার ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠলো ৷ ফারিহা অর্নিল দুজনে বাড়ির ভেতরে ঢুকতে ফারহার মম আইরিন খান ফারিহাকে জড়িয়ে ধরে ৷

” ফারিহা মা কেমন আছিস?”

” ভালো মম তুমি কেমন আছো?”

” ভালো কিন্তু তোর চোখ মুখ এমন শুকিয়ে গেছে কেন? ”

আইরিনের প্রশ্নের জবাবে ফারিহা সত্যিটা বলতে না পেরে ঠোঁটের কোণে জোড় পূর্বক হাসির রেখা টেনে বলে,” মম জানো তো আমি একটু অসুস্থ তাই তোমার এমন মনে হচ্ছে ৷”

” হবে হয়তো ৷ বাবা অর্নিল ভেতরে এসে বসো৷ আমি তোমাদের জন্য নাস্তা পাঠাচ্ছি৷”

” ব্যতিব্যস্ত হবেন না আন্টি আমি এখন কিচ্ছু খাবো না৷”

” তা হয় না বাবা তুমি বসো আমি এখুনি আসছি৷”

আইরিন খান কিচেনে গিয়ে দেখে মেঘের মম মেহরীমা অলরেডি স্নাক্স কফি রেডি করে রেখেছে৷

” ভাবি আপনি দেখি সব কিছু তৈরি করে রেখেছেন৷”

” হ্যাঁ ভাবি ফারিহা আর অর্নিলকে আসতে দেখে আমি ঝটপট কাজ গুলো এগিয়ে দিলাম৷ আপনি গিয়ে মেয়ে আর হবু জামাইয়ের সাথে কথা বলুন৷”

” জ্বি আমি যাবো সাথে আপনিও যাবেন চলুন৷”

ফারিহা অর্নিল টুকটাক কথা বলতে লাগলো আইরিন খান এবং মেহরীমার সাথে, ফারহা ধীরে সুস্থে নিচে আসতে আসতে আশে পাশে দেখতে লাগলো৷ বাড়ির চারদিকে কয়েকজন সারভেন্ট নিজেদের কাজ করছে৷ কেউ কিচেনে রান্না করছে৷ আবার কেউ ঝাড়পোছ করছে৷ ফারহার দিকে সারভেন্টদের চোখ পড়তে ফারহা ইশারায় যেতে বলল৷ সারভেন্টরা মাথা নিচু করে অন্য কাজে চলে গেল৷

ফারহা ফারিহা আর অর্নিলের সামনে দাড়াতে ফারিহা ভয়ার্থ চোখে ফারহার দিকে তাকিয়ে কিছু একটা বলতে নিলে ফারহা হাতের ইশারায় ফারিহাকে থামিয়ে দিয়ে বলে,” ফারিহা তুই আমার রুমে আয়৷ তোর সাথে আমার কিছু ইম্পট্যান্ট কথা আছে৷”

ফারিহা তার মমের দিকে তাকিয়ে বলে,
” মম আমি আপুর সাথে কথা বলে আসছি৷ আর অর্নিল তোমার কথা হয়ে গেলে উপরে এসো৷ ”

ফারিহা ফারহার সাথে তার রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে ফারহাকে বলে,” আপু সে ফিরে এসেছে৷ আজ আমি তাকে দেখেছি৷”

” কার কথা বলছিস তুই?”

” যাকে আমি কিং ফায়ার ধোকা দিয়ে মেরে ফেলেছিলাম৷”

ফারিহার কথা শুনে ফারহা অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো৷ ফারিহা ফারহার হাসি দেখে রেগে বলল,” আমি সিরিয়াস আপু৷ আমি ওকে দেখেছি৷ আজ ও আমাদের মৃত্যুর হাত থেকে বাচিঁয়েছে৷”

ফারহা হাসি থামিয়ে বলে,” হয়েছে? আচ্ছা ফারিহা সত্যি করে বলতো? তুই কি নেশা করেছিস? না মানে একজন মৃত ব্যক্তি কি করে জীবিত থাকতে পারে?”

” আই রেইলি ডোন্ট নো আপু৷ বাট আ’ম শিওর ও বেঁচে আছে কারণ ওকে শুধু আমি একা দেখেনি বরং অর্নিলও আমার সাথে তাকে দেখেছে৷”

“তার ফেস দেখেছিস?”

” না মুখে মাক্স পড়া ছিলো৷ কিন্তু আপু বিশ্বাস কর আমি তার চোখ জোড়া দেখেছি৷ সেই অবিকল তীক্ষ্ম দৃষ্টি৷ যে দৃষ্টি হৃদয়ের অন্তস্থলে পৌছে সবটা যেনে নেয়৷”

ফারহা ফারিহাকে বেডে বসিয়ে বলে,” ফারিহা তুই অসুস্থ তাই হয়তো চিনতে ভুল করেছিস কিন্তু আজ যেটা হলো সেটা আবার পূনরাবৃত্তি হবে না তার গ্যারান্টি কি? শত্রুর শেষ এখনো হয়নি ফারিহা৷ তাই এখন থেকে নিজের সেইফটি নিজেকে করতে হবে৷ ”

” ওকে তাই হবে৷”

ফারহা ফারিহাকে পানির গ্লাসটা এগিয়ে দিয়ে বলে,” পানি খেয়ে গলাটা ভিজিয়ে নে কারণ এখন আমার যে যে কথা গুলো তুই শুনবি ৷ সেগুলো শুনলে তোর হয়তো গলা শুকিয়ে আসবে৷”

ফারিহা পানি খেয়ে নিয়ে বলে,” বল আমি শুনছি৷”

” কিং ফ্যায়ার হ্যারি লিও এই তিনজনকে জেসিকা লুকিয়ে রেখেছে৷” ফারহার কথাটা শোনা মাত্র ফারিহার চোখ দুটো বেড়িয়ে আসার উপক্রম৷

” ম,,মানে! কি সব উল্টা পাল্টা কথা বলছিস আপু৷”

” আমি কোন উল্টা পাল্টা কথা বলছি না ফারিহা৷ যেটা সত্যি আমি সেটাই বলছি৷ ”

” কিন্তু এটা কি করে সম্ভব জেসিকা তো তোর বে,,, ” বাকিটা বলার পূর্বে ফারহা ফারিহার কথা আটকে বলে,” সি ইজ নট মাই বেস্টফ্রেন্ড ফারিহা৷ তুই খুব ভালো করে জানিস ৷ আমি ধোকা বিশ্বাসঘাতকদের সাথে সম্পর্ক তো দূরে থাক তাদের আমি একদম সহ্য করতে পারি না৷ তাদের চোখের সামনে দেখলে মাথায় আগুন ধরে যায় ৷ ”

” আমি জানি বাট জেসিকা! জেসিকা কি করে পারলো এই সব করতে?”

” তার উওর তো একমাত্র জেসিকা দিতে পারবে৷”

” এখন কি করবি আপু?”

” খেলবো ৷ যেভাবে সাপকে খেলিয়ে তার বিষ দাঁত ভেঙে ঝুড়িতে বন্দি করে৷ ঠিক তেমনি আমিও ওর বিষ দাঁত ভেঙে ওকে ওর আসল জায়গা বুঝিয়ে দিবো৷”

” আমি তোর পাশে আছি৷ কোন প্রয়োজন হলে আমাকে জানাবি৷”

” তার প্রয়োজন নেই ফারিহা৷ তুই বরং তোর আর অর্নিলের বিয়েটা দ্রুত সেরে ফেল৷ আনুষ্ঠানিক না হলেও রেজিট্রি করে বিয়েটা সেরে ফেল৷”

” কিন্তু অর্নিল আর তার পরিবার?”

ফারিহার কথা শেষ হতে অর্নিল ফারহার রুমের দরজা খুলে দিয়ে বলল,” সেটা নিয়ে তোমায় ভাবতে হবে না সুইটহার্ট ৷ মম ড্যাডকে আমি রাজি করিয়ে নিবো তুমি যাস্ট বিয়ের জন্য প্রস্তুত হও৷” ফারিহাকে চোখ মেরে বলল অর্নিল৷

ফারহা সবটা দেখেও না দেখার ভান করে অর্নিলকে বলল,” অর্নিল আন্টি আঙ্কেলের সাথে কথা বলে দ্রুত আমাকে ডেটটা জানাবেন৷ ”

” অবশ্যই৷ কিন্তু আজ আমার একটা প্রশ্ন আছে আপনার কাছে ফারহা৷”

” বলুন৷”

অর্নিল গলা খাকাড়ি দিয়ে বলতে লাগলো……

তনু ফারহার বর্তমান ফেসটা দেখার জন্য বড়ই উদগ্রীব হয়ে আছে ৷ ব্যথা হাত নিয়ে বেড থেকে উঠে ফারহার রুমের দিকে হাটতে লাগলো৷

এদিকে অর্নিলের প্রশ্ন শুনে ফারহার মুখে গাম্ভীর্যতার ছাপ স্পষ্ট ৷ ফারহা দাঁতে দাঁত চেপে ফারিহার দিকে তাকিয়ে বলল,” অর্নিলকে তোর সবটা জানানো উচিত ছিলো ফারিহা৷ তুই যদি সবটা ক্লিয়ার করে অর্নিলকে বলতি তাহলে আজ অর্নিল আমাকে এই প্রশ্নটা করতো না৷ এনে ওয়েস মিস্টার অর্নিল আপনি এবং ফারিহা দুজনে সাবধানে থাকবেন৷ বিপদ কিন্তু চারিদিকে ওতপেতে আছে৷ সো বি কেয়ার ফুল ৷”

” কিন্তু আমি কিন্তু এখনো আমার কাঙ্ক্ষিত প্রশ্নের জবাব পেলাম না ফারহা৷”

” আপনার প্রশ্নটা ঠিক কি ছিলো আর একবার বলুন তো?”

ফারহা কিছু বলতে যাবে তখনি দরজায় তনু নক করে৷ ফারহা তনুর গলা পেয়ে ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটিয়ে নিয়ে বলে, ” ওয়েট আমি এখুনি আসছি৷ ”

ফারহা দরজা খুলে দিতে তনু হুরমুরিয়ে রুমে ঢুকে ফারহাকে কিছু বলতে নিলে অর্নিল এবং ফারিহার উপর নজর পড়তে ভুত দেখার মত চমকে ওঠে তনু বলতে লাগলো,

” তো,, তোমরা এখানে?”

ফারিহা বা অর্নিলের উওর দেওয়ার পূর্বে ফারহা বলে,” তনু তুই হঠাৎ ওদের কে দেখে চমকে গেলি কেন? ”

” চমকে কে আমি? কই না তো৷”

” না চমকালে ভালো৷ যাই হোক তুই এখন এই সময়ে তোর তো রেস্ট নেওয়ার কথা৷”

” হ্যাঁ কিন্তু তোর সাথে গল্প করতে ইচ্ছে হলো তাই আর কি৷”

ফারহা ক্রুর হেসে তনুর পেছন থেকে গলা জড়িয়ে ধরে বলে৷

” তনু বেইব তুই আমি তোর বেস্টু এটা কেন তুই ভুলে গেলি? নেভার মাইন্ড তুই ভুলে গেলেও আমি ভুলবো না৷ যার যার যা পাওনা সেটা আমি তাকে দিবো৷”

তনু শুকলো ঢোক গিলে বলে,” কিসের পাওনার কথা বলছিস ফারু?”

ফারহা তনুর কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বলে ওঠে,” খুব শীগ্রই সেটা তুই জানতে পারবি৷ ততোক্ষণ না হয় সে পর্যন্ত অপেক্ষা কর৷ আই প্রমিজ ইউ বেইব বেশি দিন তোকে আমি অপেক্ষা করাবো না৷” কথাটা বলে সরে আসে ফারহা৷ কিন্তু তনুর ভাব ভঙ্গির ধরন যেন একটু পাল্টে গেল ফারহার কথা শুনে৷

” আ,,আমি এখন আসছি ফারু ৷ পরে তোর সাথে গল্প করবো৷” ফারহাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে তনু দ্রুত রুম থেকে বেড়িয়ে গেল৷ কিন্তু বের হতে আচমকা মেঘের সাথে ধাক্কা লেগে পড়ে যায় তনু৷ মেঘ চাইলে তনুকে ধরে নিতে পারতো কিন্তু মেঘ সেটা না করে তনুকে পড়ে যেতে দিতো৷

তনু পড়ে যাওয়ায় ব্যথা হাতে আরো বেশি ব্যথা পেল৷ কিন্তু এখন ব্যথার থেকে তনুর প্রচন্ড রাগ হচ্ছে৷ রাগে পুরো শরীর জ্বলছে তনুর৷ এদিকে মেঘ আফসোসের সুরে তনুকে বলতে লাগলো,

” শালী সাহেবা আপনার বেশি লাগেনি তো?”

তনু দাঁতে দাঁত চেপে কটমট করে মেঘের দিকে তাকিয়ে বলে নাহ জিজু আমার বেশি লাগেনি৷ ” এদিকে ধুরুম শব্দে ফারহা ফারিহা অর্নিল রুম থেকে বের হয়ে তনুর অবস্থা দেখে হেসে ফেললো সবাই পরক্ষণে ফারহা নিজের হাসি দমিয়ে রেখে বলল,” কি ভাবে পড়লি তনু?”

তনু কোমরে আর হাতে দারুণ ব্যথা পেয়ে কথা বলার ধৈর্য ইচ্ছে হারিয়ে তা রাগে প্রকাশ পেতে চাচ্ছে৷ এদিকে মেঘ ফারহার দিকে তাকিয়ে বলল,” ফারুপাখি শালী সাহেবা হয়তো প্রচন্ড ব্যস্থ ছিলো তাই হয়তো সামনের মানুষটাকে না দেখে ধাক্কা লেগে পড়ে গেল৷ ফারুপাখি শালী সাহেবার হয়তো কোমরে বেশ লেগেছে৷ দেখছো কেমন চোখ মুখ কুচকে আছে!”

তনু দাঁতে দাঁত চেপে একা একাই উঠে দাড়িয়ে মেঘের উদ্দেশ্য বলে ,” আমি একদম ঠিক আছি জিজু৷ আপনি দয়াকরে আমাকে নিয়ে ভাবতে জাবেন না৷ ” তনু ফারহার দিকে এক নজর তাকিয়ে ” রুমে যাচ্ছি ” বলে এলোমেলো পায়ে যেতে লাগলো৷

তনু যেতে মেঘ ফারহা অর্নিল ফারিহা জোড়ে জোড়ে হেসে ফেললো৷

(৬০)

রাফি আর আদিল পুরনো এক জরাজীর্ণ বিল্ডিংয়ের সামনে দাড়িয়ে আছে৷ চারিদিকে ঝোপঝাড়ে ভর্তি রাফি ভয় পাচ্ছে ঝোপঝাড় থেকে যদি কোন সাপ বেড়িয়ে আসে তখন কি হবে৷ চিন্তায় হাতের নখ দাঁত দিয়ে কাটতে লাগলো রাফি৷ আদিল দশ তালা বিল্ডিংয়ের উপর থেকে চোখ সরিয়ে রাফির দিকে তাকিয়ে চোখ পাকিয়ে বলে,” এখনো তোর বদ অভ্যাস যায় নি রাফি? ”

” কি করবো ভাই ভয় লাগছে তো৷ সন্ধ্যা হয়ে আসছে আর এই খানে ঝোপঝাড়ে দাড়িয়ে আছি আমরা, কিন্তু কাকে খুজতে আমরা এখানে এসেছি ভাই?”

আদিল রাফির কথায় বিরক্ত হয়ে চোখ পাকিয়ে বলে উঠলো ,” বেশি কথা না বলে আমার সাথে আয় আয়৷ সূর্য ডুবে যাচ্ছে এই সময় আমাদের ভিতরে ঢুকতে হবে৷ ”

” কিন্তু কেন?”

আদিল এবার দাঁতে দাঁত চেপে কটমট করে রাফির দিকে তাকিয়ে বলল,
.
.
.
#চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here