#তুমি শুধু আমার
#লেখিকাঃমোনালিসা
#পর্বঃ১০
অনেক সকালে বৃষ্টির ঘুম ভেঙে যায়,,,বিছানা থেকে নেমে বড় থাইগ্লাস টা হাত দিয়ে সড়িয়ে দেয়া মাএই সকালের মিষ্টি রোদ বৃষ্টির মুখে এসে পরে। সাদা সাদা পর্দা গুলো বাতাসে দোল খাচ্ছে।বৃষ্টি গিয়ে মেঘের পাশে বসে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে আছে,,, কি নিষ্পাপ লাগছে মেঘ কে আর জেগে গেলে পুরাই ভিলেন এই বলে মুচকি হেসে বৃষ্টি মেঘের কপালে ভালোবাসার পরশ দিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়,,,ততক্ষনে মেঘ ও ঘুম থেকে উঠে যায়,,,,বৃষ্টি কে পাশে না পেয়ে মেঘ কিছুটা ভয় পেয়ে যায়।
মেঘ;;জানপাখি কোথায় তুমি?
বৃষ্টি ওয়াশরুমে গুন গুন করে গান গাইছে,ঝর্ণার পানির জন্য মেঘের ডাক বৃষ্টি শুনতে পাচ্ছে না।
মেঘ;;বৃষ্টি কোথায় তুমি,,, বৃষ্টিইইইইই
এইবার যেনো বৃষ্টি মেঘের ডাক শুনতে পায়,,,বৃষ্টি change করছে তাই আর মেঘের ডাকে সাড়া দেয় নি। যেই না মেঘ বৃষ্টি বলে আবার ডাকতে যাবে তখনি বৃষ্টি ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসে।মেঘ বৃষ্টি কে দেখা মাএই দৌড়ে গিয়ে ছড়িয়ে ধরে।
—বৃষ্টি,কি হয়েছে মেঘ,আর তুমি এমন করছো কেনো?
মেঘ,জানো আমি কতটা ভয় পেয়েছি আমার পাশে তোমাকে না দেখে,আমাকে কেনো ডাকোনি??আমি যখন এতো করে ডাকলাম তুমি কেনো সাড়া দেওনি??
—-বৃষ্টি, মেঘের কথা শুনে পুরাই অবাক হয়ে যায়।
বৃষ্টি;;Relax মেঘ আমি কোথাও যাইনি, আমি তো তোমার সামনেই আছি,,,,হঠ্যাৎ মেঘের মনে হলো বৃষ্টি তাকে তুমি করে বলছে।
বৃষ্টি;;কি হলো, এইভাবে তাকিয়ে আছো কেনো
মেঘ;;বৃষ্টি এই মাএ কি বললে তুমি,,,,
বৃষ্টি;;কখন কি বললাম আমি, আমি শুধু তু,,,,,(ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে)
মেঘ;;আর একবার বলো জান,,
—-বৃষ্টি লজ্জা পেয়ে যায়,,,
মেঘ;;বলনা জানপাখি,তুমি আমাকে কি বললে প্লিজ প্লিজ প্লিজ,,,
বৃষ্টি;;ok fine,তুমি ফ্রেশ হয়ে নেও,,,
মেঘ;;তুমি আমাকে তুমি করে বলছো,,,
—বৃষ্টি দুহাত মেঘের কাধে রেখে বলে,,ও হো মিষ্টারঃমাফিয়া হাসবেন্ড তুমি করে বলা টা কি পাপ,,,আর শুনো, এতো কথা না বলে তারাতারি ফ্রেশ হয়ে এসো,,,আমার পেটে ইদুর দৌড়াচ্ছে,,,
মেঘ;;জো হুকুম মহারানী,তুমি বসো আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
-বৃষ্টি, পাগল একটা,,,,
মেঘ,শুধু তোমার জন্য,,,মেঘ ফ্রেশ হয়ে এসে দুইজন একসাথে নিচে চলে যায়।
এলিনা,কিরে ঘুম হলো তোদের দুইজনের জন্য সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছি,নে তারাতারি বসে পরো অনেক টা দেরি হয়ে গেছে।সার্ভেন্টরা খাবার সার্ভ করে দেয়। মেঘ খাবার টেবিলে বসে বলে,,,,
মেঘ;;বৃষ্টি কাল থেকে তুমি কলেজ যাবে,,,মেঘের মুখে এমন কথা শুনা মাএই বৃষ্টি কাশি উঠে যায়,,
এলিনা;;আরে কি হলো,নে পানি টা খেয়ে নে,,,,
মেঘ,কি হলো, কলেজের কথা শুনা মাএই এই অবস্থা,,,
বৃষ্টি;;না,,মানে,,ইয়ে,,আমি কলেজে যাবো,,,কেমন যেনো ভয় ভয় করছে,, অনেক দিন হলো কলেজে যাই না সেই জন্য আর কি?(মেঘ ফিসফিস করে বলে,,যেই মেয়ে বিষ দিতে পারে সে না কি কলেজে যেতে ভয় পায়)।
মেঘ,তুমি এইসব নিয়ে ভেবো না,, আমি তোমার স্যারের সাথে কথা বলে রেখেছি,কাল তুমি কলেজে যাবে।খাবারের টেবিল থেকে উঠে বৃষ্টির কপালে কিস দিয়ে মেঘ বের হয়ে যায়।বৃষ্টি তো ভিষন খুশি আবার সে কলেজে যাবে নীলার সাথে দেখা হবে।
✨✨
মেঘ তার কেবিনে বসে ফাইল দেখছিলো,,সেই সময় টিনা এসে হাজির,,,
টিনা;;may i come in..
মেঘ;;yes come..
টিনা;;কেমন আছো মেঘ,,,
মেঘ,আরে টিনা তুমি,,এইখানে কি মনে করে,,,,টিনা,ও মেঘ খুব মিস করছিলাম তোমাকে তাই তো রনি কে ফোন করে জানতে পারি তুমি অফিসে তাই এইখানে চলে আসলাম,,,ও আচ্ছা,
মেঘ চলো না আজকে কোথা থেকে ঘুরে আসি অনেক দিন হলো বিডি তে এসেছি কিন্তুু একসাথে দুইজনের বের হওয়া হয় নি,চলো না মেঘ,,,,
মেঘ;;আমার অনেক কাজ আছে টিনা, আমি এখন বের হতে পারবো না, ইম্পট্যান্ট একটা মিটিং আছে,,,সরি টিনা আরেক দিন,,,
আকাশ;;আসবো মেঘ,,,
মেঘ,হুম,,,
—-আকাশ,আরে চিপকুুুউউউ থুক্কু টিনা তুমি এখানে কি মনে করে,,,
টিনা,মেঘের সাথে দেখা করতে এসেছি,,কিন্তুু তুমি এখানে কেনো,,,
আকাশ,মেঘের সাথে আমার কিছু কথা আছে।তোমার যদি মেঘের সাথে দেখা করা শেষ হয় তাহলে তুমি আসতে পারো।আকাশের কথা শুনে টিনা মেঘের দিকে তাকিয়ে কেবিন থেকে বের হয়ে যায়।
মেঘ;;বাচাঁলি ভাই এই টিনার হাত থেকে,,ও হ্যাঁ তুই যেনো কি বলবি বল??আর রাখ তোর কথা,,,
তারমানে তোর কোন কথা নেই,,কিরে তুই কোথায় হারিয়ে গেলি কিছু তো বল।আচ্ছা এক কাজ কর, চল আমার সাথে দাদি আর তোর বউমনির সাথে দেখা করবি,,,
আকাশ,না মেঘ আরেক দিন,ওইদিকে কিছু কাজ বাকি আছে তুই যা,, রনি আর আমি এইদিক টাও দেখে নিবো,,,
মেঘ;;ওকে, এই বলেই মেঘ অফিস থেকে বের হয়ে গাড়িতে বসে বাড়ির পথে রওনা দেয়।পিছনে মেঘের গার্ডরাও ছিলো।
মেঘ বের হওয়ার সাথে সাথে আড়াল থেকে বের হয়ে কেউ একজন ফোন হাতে নিয়ে স্যার মেঘ স্যার অফিস থেকে বের হয়েছে,,ফোনের ও পাশ থেকে ওকে, তোমাকে যা বলেছি তা করেছো তো,,,,জি স্যার, মেঘ স্যারের গাড়ি ব্রেকফেল করে দিয়েছি।
ফোন টা কেটে লোকটা উচ্চসরে হাসতে হাসতে বলে,,এখন তোকে কে বাচাঁবে মেঘ,,,আমার সাথে শক্রতা করে অনেক বড় ভুল করেছিস।
ফ্রেশব্যাক,,,,,
শফিক যেদিন মেঘের কেবিন থেকে চলে আসে, সেইদিন থেকে লোক লাগিয়েছে মেঘের উপর নজর রাখতে,,,অনেক চেষ্টা করেছে মেঘকে মারার জন্য কিন্তু প্রতিবারেই কোন না কোন ভাবেই মেঘ বেচেঁ যাই,কিন্তুু আজ যেনো সেই সুযোগ টা পেয়ে যায়।
—-মেঘ গাড়ি চালাতে চালাতে মনে হলো তার গাড়ির ব্রেকফেল করেছে।
মেঘ তার গাড়ি কন্ট্রোল করতে পারছেনা আর সেই সময় কোথা থেকে যেনো বড় একটা ট্রাক এসে মেঘের গাড়িকে থাক্কা মারে সঙ্গে সঙ্গে মেঘ সহ গাড়ি উল্টে অনেক ভয়ঙ্কর ভাবে এক্সিডেন্ট হয়।এই টা দেখা মাএই গাড়ি থামিয়ে রাস্তাতেই মেঘের গার্ড আকাশ কে ফোন করে।
—আকাশ কলটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে হাপাতে হাপাতে বলে ওঠে “মেঘ স্যারের এক্সিডেন্ট হয়েছে।ব্যাস এই কথা শুনা মাএই আকাশের পুরো দুনিয়া উল্টে যায়।গার্ড একটা রোডের নাম বলাতেই আকাশ রনি কে নিয়ে গাড়িতে বসে বৃষ্টিকে ফোন করে,
এলিনা;;বৃষ্টি,,দেখতো কে ফোন করেছে?
—বৃষ্টি কে আর করবে, হয় তো তোমার আদরের মেঘ দাদু ভাই,,এই বলেই বৃষ্টি হেসে দেয়।
বৃষ্টি;;হ্যালো,,,
আকাশ;;বউমনি আমি,,,,
বৃষ্টি;;হুম, আকাশ ভাইয়া বলো কি,,,,!!
আকাশ,তুমি তারাতারি এই ঠিকানায় চলে এসো?আমার হাতে সময় নেই?
বৃষ্টি;;কি হয়ছে ভাইয়া তুমি এমন করছো কেনো?
আকাশ;;বউমনি মেঘের এক্সিডেন্ট হয়েছে।বৃষ্টি আকাশের মুখে এইটা শোন মাএই হাত থেকে ফোনটা পরে যায়।বৃষ্টি আর কিছু না বলেই দৌড়ে গিয়ে গাড়িতে বসেই রওনা দেয়,,বৃষ্টির চোখ দিয়ে শুধু পানি পরছে।
রাতুল;;হ্যালো স্যার,,,মেঘের গাড়ির অনেক বাজে ভাবে এক্সিডেন্ট হয়েছে।
শফিক শেখ;;good job,,আর শোন তুমি এইখান থেকে চলে এসো।
—রাতুল,ওকে স্যার,,
শফিক,আমার পথের কাটা শেষ হলো,, এই বলেই উচ্চসরে হাসতে থাকে।
—-আকাশ ফোন টা রেখে গাড়ি চালিয়ে হাওয়ার বেগে গার্ডের দেয়া ঠিকানায় সেইখানে পৌছে যায়।গাড়ি থেকে বের হয়ে দেখে চারপাশে মেঘের গার্ডরা দাড়িয়ে আছে,,বৃষ্টি গাড়ি থেকে বের হয়ে আকাশের সামনে গিয়ে দাড়ায়।আকাশ কে দেখা মাএই কিছু গার্ড সামনে গিয়ে দাড়ায়। গার্ডদের সরিয়ে দেখে রোডের মাঝখানে একটা আধভাঙ্গা গাড়ি খুব বাজে ভাবে উল্টে আছে আর তার মাঝখানে অথ্যাৎ উইন্ড এর দিক টায় মেঘের হাত টা দেখা যাচ্ছে।দুর থেকে দেখা যাচ্ছে ভেতরে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঘ কে।এই ভাবে আর না থাকতে পেরে বৃষ্টি “মেঘ বলে চিৎকার করে উঠে।
বিকট একটা চিৎকার দিয়ে বৃষ্টি, আকাশ, রনি তিনজনেই দৌড়ে মেঘের গাড়ির দিকে যেতে থাকে।একজন গার্ড গাড়ির দরজা খুলে দিতেই মেঘের আধা শরীর খপ করে আকাশ ধরে ফেলে।
আকাশ;;এই মেঘ,,, মেঘ,,চোখ খুল ভাই আমার কথা শুনতে পাচ্ছিস,,,মেঘ প্লিজ কথা বল,,আমি কি নিয়ে থাকবো মেঘ প্লিজ ভাই আমার সাথে কথা বল।
—-মেঘ কথা বলো মেঘ তোমার বৃষ্টির সাথে কথা বলো,,,প্লিজ মেঘ চোখ খুলো তুমি আমার সাথে এইরকম করতে পারো না মেঘ,,,,তুমি চলে গেলে আমি কাকে নিয়ে থাকবো এইভাবে আমাকে একা ফেলে চলে যেতে পারো না,মেঘ তুমি শুনতে পাচ্ছো আমার কথা।
আকাশ,বউমনি সময় নষ্ট না করে মেঘ কে হস্পিটালে নিতে হবে,, রনি তারাতারি গাড়ি নিয়ে এসো
—রনি,ওকে স্যার
মেঘ কে গার্ডেদের সাহায্যে গাড়িতে তুলে, বৃষ্টি মেঘের মাথা নিজের কোলে রেখে শুধু মেঘ কে ডেকেই যাচ্ছে,আকাশ ভাইয়া তারাতারি গাড়ি চালাও আমাদের হাতে সময় নেই।
আকাশ, এতো দ্রুত গাড়ি চালায় যে এক ঘন্টার রাস্তা বিশ মিনিটেই পাড়ি দিয়ে হস্পিটালে পৌছে যায়।আকাশ রনি দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে ডক্টর বলে চিৎকার করাতেই কেবিন থেকে একজন সিনিয়ার ডক্টর বের হয়ে আসে,আকাশ কে দেখা মাএই, স্যার আপনি এইখানে,,,,
আকাশ,আমার হাতে সময় নেই ডক্টর প্লিজ মেঘ কে দেখুন।
ডক্টর;;কি হয়েছে মেঘ স্যারের,,,
আকাশ;;অনেক বড় একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে মেঘের,,প্লিজ ডক্টর ওকে চেক করুন,,,
ডক্টর দ্রুত একটা বেড নিয়ে আছে কিছু ওয়াড বয়দের সাহায্যে মেঘকে বেডে শুয়ে দেয়,,বৃষ্টি মেঘের হাত টা শক্ত করে ধরে রেখেছে।
ডক্টর;; o my god, মেঘ স্যারের অনেক রক্তক্ষরন হয়েছে,নার্স তারাতারি মেঘ স্যারকে আইসিইউ তে নেয়ার ব্যবস্থা করো।ওকে স্যার,,,
—বৃষ্টি ডক্টরের মুখে এইটা শুনা মাএই কান্নায় আর ভেঙে পরে,,,
আকাশ;;বউমনি প্লিজ কান্না করো না।মেঘ ঠিক হয়ে যাবে।
—-বৃষ্টি, কি থেকে কি হয়ে গেলো ভাইয়া,মেঘের এই অবস্থা দেখে নিজেকে কি ভাবে শান্ত রাখি।আকাশ বৃষ্টির কাছ থেকে সরে এসে চিন্তায় পরে যায় বলে,,,,,
রনি;;কি ভাবছেন স্যার,,,
আকাশ;;ভাবছি এই কাজ টা কে করাতে পারে?
রনি;;স্যার আমি যদি ভুল না হয়ে থাকি, তাহলে এর পিছনে শফিক শেখের হাত আছে,
আকাশ;;মানে,,,
রনি;;জি স্যার, ওইদিন শফিক শেখ মেঘ স্যারে সাথে দেখা করতে এসেছিলো কিন্তুু তখন ম্যাম কে নিয়ে বাজে কথা বলাতে স্যার রেগে গিয়ে শফিক কে মারে।
আকাশ;;কিইইই,তুমি আমাকে আগে বলেনি কেনো?
রনি;;sorry sir..
— আকাশ, it’s ok,,,তুমি লোক লাগিয়ে খবর নেও যে,শফিকের কথায় কে এই কাজ টা করেছে,, আর বাকিটা আমি সামলে নেবো,,,,ওকে স্যার এই বলে রনি হস্পিটাল থেকে চলে যায়,,,,
#চলবে,,,,,,
(আজকের পর্ব টা হয়তো তেমন সাজিয়ে লিখতে পারি না।কি লিখেছি জানি না।লেখায় ভুল হলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন)