তুমি শুধু আমার – পর্ব ৬

0
395

#তুমি শুধু আমার
#লেখিকাঃমোনালিসা
#পর্বঃ৬

শফিক শেখ ফোন টা বের করে রাতুল কে কল দিয়ে বলে?

শফিক শেখ;;রাতুল,আমার বিডি যাওয়ার ব্যবস্থা করো?
রাতুল,ওকে স্যার সব ব্যবস্থা হয়ে যাবে আপনি চিন্তা করবেন না।এই বলে রাতুল কল কেটে তার কাজে লেগে পরে।আর এদিকে শফিক শেখ,
আমি আসছি মেঘ আহমেদ চৌধুরী আমি আসছি খুব তারাতারি তোমার সাথে আমার দেখা হচ্ছে, এইটা বলেই বাকাঁ হাসি দেয়।
✨✨✨
মেঘ,বৃষ্টি,আকাশ,এলিনা এই চারজনের বেশ ভালো সময় কাটে।

আকাশ;;আচ্ছা বউমনি, তুমি সাথে মেঘের প্রথম দেখা কোথায় হয়?

বৃষ্টি;; ইয়ে,, মানে,, আ,,,আব,,,মানে

মেঘ;;আরে বৃষ্টি কি মানে মানে করছো, আকাশ কে বলে দিলেই তো হয় যে তোমার সাথে আমার দেখা হয় একটা সপিংমলে।
বৃষ্টি;;কিইইইই,আপনার সাথে আ,,,,,,
-মেঘের রাগ দেখে বৃষ্টি চুপ হয়ে যায়।আর কিছুই বলতে পারে না।
মেঘ,দাঁতে দাত চেপে বলে, কি হলো বৃষ্টি বলছো না কেনো তোমার সাথে আমার কোথায় দেখা হয়েছে।

বৃষ্টি;;ও হ্যাঁ, মেঘের সাথে আমার সপিংমলে দেখা হয়েছে(কি মিথ্যাবাদি তার সাথে আমাকেও মিথ্যা কথা বলতে হচ্ছে, আল্লাহ উপর দেখে দড়ি ফালাও আমি এই মাফিয়া টাকে উপরে তুলে দেই)

আকাশ;;আচ্ছা, মেঘ বাদ দে, আরে একদিন তোদের love story কথা শুনবো।মেঘ শোন, তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে?
মেঘ;;হুম বল শুনছি?
আকাশ,বউমনি আমাকে একগ্লাস পানি দিবে?
—-জি ভাইয়া আপনি বসুন আমি পানি নিয়ে আসছি।এই বলেই বৃষ্টি পানি আনতে যায়।

মেঘ,কিরে তুই জানি কি বলবি,
আকাশ;;ও হ্যাঁ,বউমনি কি টিনার ব্যাপারে কিছু জানে?না মানে টিনা তো জানেনা যে তুই বিয়ে করেছিস, আর যদি একবার জেনে যায় যে তুই বিয়ে করেছিস তাহলে কি কান্ড টাই না বাঁধাবে।তুই তো জানিস টিনা যেই চিপকু।

মেঘ;;আরেএ বাদ দে তো, ও কিভাবে জানবে?ওর সাথে তো আমার কথায় হয় না।
বৃষ্টি;;কার সাথে কার কথা হয় না?
—-হঠাৎ, পিছন থেকে বৃষ্টির কন্ঠ শুনে আকাশ আর মেঘ দুই জনেই চমকে উঠে।

আকাশ;;কোথায় বউমনি কিছু না তো?আমি আর মেঘ তো কাজের কথা বলতেছি,কিরে মেঘ বলনা,,মেঘ চোখ বড় বড় করে আকাশের দিকে তাকালে আকাশ মেঘের এমন তাকানো দেখে একটা মেকি হাসি দেয়।

বৃষ্টি;;না ভাইয়া, আমি এই মাএ শুনলাম আপনি যেনো কার কথা বল,,,,,,
বৃষ্টি আর বাকি কথা বলতে পারলো না,, এই সময় বাড়ির কলিংবেল বেজে ওঠে।আমি দেখছি, এই বলেই বৃষ্টি দরজা খুলে দেখে তার সামনে ওয়েস্টান পোশাকে একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে, দেখতে খুব সুন্দর, পায়ে উচু হিল সু পরে আছে পুরো বিদেশি বিদেশি লাগছে।

বৃষ্টি;;কাকে চাই?আর কে আপনি?
টিনা;;এইটা কি চৌধুরী ভিলা?
বৃষ্টি;;জি, কিন্তুু আপনি কে?
টিনা;;আপনি আমাকে চিনবেন না?মেঘ আসে বাড়িতে?
বৃষ্টি;;জি আ,,,,,

—-বৃষ্টিকে আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে টিনা বেতরে প্রবেশ করে।টিনা কে দেখা মাএই আকাশ চিপকুুুউউউউ বলে চিৎকার দিয়ে উঠে।
মেঘ,আকাশের দিকে অনুসরন করে তাকিয়ে দেখে টিনা তার সামনে দাড়িয়ে আছে।টিনা কে দেখা মাএই মেঘ সাথে সাথে বসা থেকে দাড়িয়ে যায়।

মেঘ;;টিনা তুমি?

“আকাশ মেঘের দিকে তাকিয়ে বলে যেইটা ভয় পেয়েছি সেইটাই হয়েছে?
—মেঘ, তুই একটু চুপ করবি?

মেঘ;;টিনা তুমি এইখানে?
টিনা,মেঘ কে দেখা মাএই কাছে গিয়ে মেঘ কে জড়িয়ে ধরে বলে,কেমন আছো মেঘবেবি,খুব মিস করছিলাম তোমাকে,i love u baby.

আকাশ;;কিইইইই, মেঘবেবি?মেঘ কবে থেকে বেবি হলো আর টিনা তুমি এইভাবে মেঘ কে জড়িয়ে ধরেছো কেনো?
টিনা;;ও হো আকাশ, মেঘ কে আমি ভালোবাসি আর ভালোবাসার মানুষ কে একটু জড়িয়ে ধরতেই পারি,এই বলেই টিনা মেঘের গালে কিস করে বসে।

বৃষ্টি এই দৃশ্য দেখা মাইএ সাপের মতো ফুসতে থাকে আর বলে উঠে।কি বেশরম রেএ বাবা অন্য স্বামীকে জড়িয়ে দরে কিস করা হচ্ছে।

আকাশ, বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে টিনা কে বলে,,তুমি মেঘকে এই ভাবে জড়িয়ে ধরতে পারও না।মেঘ কে ছেড়ে দেও টিনা।।
–টিনা, না ছাড়বো না,,এই বলেই মেঘকে আবার জড়িয়ে ধরে।

মেঘ;;টিনা ছাড়ো আমাকে?
-টিনা কেনো মেঘ, তোমাকে জড়িয়ে ধরলে সমস্যা কি?
মেঘ;;এইটা বিডি তোমার আমেরিকা না,,তাই সমস্যা আছে, আর হ্যাঁ আমি বিয়ে করেছি?
টিনা,মেঘ ছেড়ে দিয়ে বলে, কি তুমি বিয়ে করেছো আর আমি জানি না, আমার সাথে মজা করছো মেঘ।

মেঘ;;তোমার সাথে মজা করবো কেনো? আমি সত্যি বিয়ে করেছি।

—–টিনা,আমি তোমাকে ভালোবাসি মেঘ, তুমি ও তো আমাকে ভালোবাসো?
মেঘ;;না,,,আমি কখনই তোমাকে ভালোবাসিনি,,তুমি আমার খুব ভালো একজন বন্ধু। আমি শুধু একজন কেই ভালোবাসি আর সে হলো,,,,
টিনা,,,সে কে মেঘ, কাকে তুমি ভালোবাসো?
—-মেঘ বৃষ্টির কাছে গিয়ে হাত ধরে টিনার সামনে এনে দাড় করিয়ে চোখে চোখ রেখে বলে।
যাকে প্রথম দেখাতেই আমি ভালোবেসেছি,,যাকে পাওয়ার জন্য আমি সব কিছু করেছি,,যার চোখে আমি আমার মরন দেখেছি,,যার জন্য আমি পৃথিবীর সবার সাথে লড়াই করতে রাজি সে আর কেউ না আমার জান,আমার প্রান ভোমরা মিসেসঃবৃষ্টি মেঘ আহমেদ চৌধুরী।
—-বৃষ্টি এতোক্ষন মেঘের উপর রেগে ছিলো কিন্তু মেঘের বলা কথা গুলো শুনে বৃষ্টি পুরো শান্ত হয়ে যায়।
বৃষ্টি আর একমূহুত না দাড়িয়ে সেইখানে থেকে চলে এসে সোজা নিজের রুমে আসে পরে, মেঘের বলা কথা গুলা বার বার বৃষ্টি কানে বারি খাচ্ছে।
বৃষ্টি অনমনে বলে উঠে,মেঘ আমাকে কতোটা ভালোবাসে,আর আমি যে তাকে ভালোবাসতে পারছি না,সে যে একজন মাফিয়া,এইটা বলেই বৃষ্টির চোখ দিয়ে একফোটা জল গড়িয়ে পরে।
—-মেঘ,বৃষ্টি কে এইভাবে চলে যেতে দেখে অবাক হয়ে যায়।

—-টিনা মেঘের মুখে এইসব শুনা মাএই যেনো তার মাথা আকাশ ভেঙে পরলো,,কান্না চোখে টিনা মেঘের দিকে তাকিয়ে বললো।

টিনা;;তুমি এসব কি বলছে মেঘ এই মেয়ে টা কে তুমি ভালোবাসো,,, না এই টা হতে পারে না মেঘ, তুমি শুধু আমার, আমি তোমাকে ভালোবাসি।

মেঘ;;কিন্তু, আমি তোমাকে ভালোবাসি না? আমি বৃষ্টিকে ভালোবাসি।

টিনা, মেঘের মুখে বৃষ্টির নাম শুনাতে, মনে মনে বলে, তুমি এটা ভালো করলে না বৃষ্টি, আমার কাছ থেকে মেঘ কে কেরে নিয়ে তুমি অনেক বড় ভুল করছো, এর শাস্তি তুমি পাবে বৃষ্টি।আমার মেঘ কে আমি তোমার কাছ থেকে কেরে নিবো it’s my promise……
এই বলেই টিনা মেঘের বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।

আকাশ;;মেঘ,বউমনি কে সামলা, আমি এখন আসি,এইটা বলেই আকাশ মেঘের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বের হয়ে যায়।

—-মেঘে রুমে এসে দেখে বৃষ্টি চুপচাপ বসে আছে কোনো কথা বলছে না।
তুমি ওইভাবে চলে আসলে কেনো?
বৃষ্টি, ভালো লাগছে না তাই,,,আপনি কেনো এসেছেন যান না আপনার বান্ধীর কাছে, আমার কাছে কি?
মেঘ,প্যান্টের পকেটে হাত গুজে বলে,কেমন যেনো একটা পোড়া পোড়া গন্ধ পাচ্ছি,এই বলেই মেঘ মুচকি মুচকি হাসি দেয়।

বৃষ্টি;;আমার বয়েই গেছে। আপনি কি মনে করেছেন, টিনার সাথে আপনাকে দেখে আমার হিংস্রে হবে, কখনই না।।
—-মেঘ,তাই বুঝি,,
বৃষ্টি;;জি।

—-সময়টা তাদের এইমনেই পার হয়ে যায়—–

রাতে বৃষ্টি কে খাবারে টেবিলে দেখা যায় নি।মেঘ রাতের ডিনার করে রুমে এসে দেখে বৃষ্টি ওপাশ হয়ে শুয়ে আছে।মেঘ বৃষ্টিকে কিছু না বলে সোফায় বসে ল্যাপটপে কিছু কাজ করতে থাকে।
হঠ্যাৎ করেই বৃষ্টি ঘুম ভেঙ্গে যায় আর তার সাথে প্রচুর ক্ষিধেও পায়।বৃষ্টি বিছানা ছেড়ে ওঠে দেখে মেঘ মনোযোগ দিয়ে কাজ করছে।তখনই বৃষ্টি গিয়ে মেঘের সামনে দাড়ায়।

মেঘ;;কিছু বলবে?

বৃষ্টি;;আমার প্রচুর ক্ষুধা লেগেছে।মনে হচ্ছে পেটে ইদুর দৌড়াছে।

মেঘ;;কি?পেটে ইদুর,,,,,

বৃষ্টি;;হুম,,,

মেঘ;;এতো রাতে খাবার দেয়া যাবে না।এখন সবাই ঘুমাচ্ছে,,এতই যখন ক্ষিধে পেয়েছে তাহলে নিজের রান্না নিজেই করে নেও।

বৃষ্টি;;কিইইইইইই,আমি এখন নিজের জন্য রান্না করবো।
—–মেঘ,হুম, নিজের খাবার রান্না করে খাও আর ষাড়েঁর মতো চিৎকার করার কিছুই নেই।আমি কানে শুনতে পাই।

বৃষ্টি;;কি বললেন আপনি, আমি ষাড়েঁর মতো চিৎকার করছি,দাঁড়ান, আপনাকে তো আমি,,,,,যেই না মেঘের কাছে যাবে ওমনি বৃষ্টির শাড়ির সাথে পা বেজে মেঘের উপর পরে যায়।
—-মেঘ,বৃষ্টির দিকে পলকহীন ভাবে তাকিয়ে থাকে আর বৃষ্টি মেঘের কাছ থেকে ছুটার জন্য নড়াচড়া করছে।
মেঘ,ছাড়ুন আমাকে।মেঘ বৃষ্টি কে সাথে সাথে ছেড়ে দেয়।
মেঘ,নিজেই ইচ্ছে করে আমার উপর পরেছো আবার আমাকেই বলছো ছেড়ে দিতে।
—–মেঘের মুখে এমন কথা শুনে, মেঘের দিকে রাগি ভাবে তাকায়,এইটা দেখে মেঘ বৃষ্টি কে চোখ টিপ মারে।
বৃষ্টি;;কি বেশরম রে বাবা কথায় কথায় চোখ টিপ মারে।

—–মেঘ,তোমার ক্ষিদে পেয়েছে তাই না।
বৃষ্টি,হুম।
মেঘ;;খাবার এনে দিতে পারি একটা শর্তে?

—-বৃষ্টি কি শর্ত, তারাতারি বলুন।।

মেঘ;; শর্ত টা হলো,তুমি আমাকে কাছে এসে, আমাকে জড়িয়ে ধরবে।
বৃষ্টি;;কিইইইইইই, কখনই না।
—-ok fine,,,তোমার ইচ্ছে,যাও গিয়ে শুয়ে পরো,,আমার অনেক কাজ আছে আর হ্যাঁ ষাড়েঁর মতো আবার চিৎকার করো না।
বৃষ্টি,এইটা শুনা মাএই রেগে গিয়ে বিছানায় ওপাশ হয়ে শুয়ে পরে…..

#চলবে……

কি লিখেছি জানি না।ভুল হলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here