যাও পাখি বলো তারে
৪৫.
দিনের শুরুটা বৃষ্টিময়। তাই হয়তো আবহাওয়াও ঠান্ডা ঠান্ডা। এ আবহাওয়ায় বিয়ের পরিবেশটা যেন আরো জাকজমক পূর্ণ হয়ে উঠেছে। আবদ্ধ, ইয়াসিন আর সবুজ ভাইয়া সবাই একসাথে হলুদের স্টেজটা সাজাচ্ছেন। আমার বিয়ের দাওয়াত পেয়ে আজ সকালেই কুহু এবং তার ছোট ভাই চলে এসেছে রাঙামাটিতে। কুহু, মেহেরুন দু’জনেই আপাতত ঘরোয়া ভাবে সাজাচ্ছে আমাকে। সাদা রঙের মাঝে হলুদ পারের শাড়ি। ঢালা শাড়ি পড়ানো হয়েছে আমাকে। বেলীফুলের মালা দিয়ে পরিপূর্ণভাবে সাজানো হয়েছে আমাকে। ওদিকে স্টেজ তৈরি করা শেষ। অনুষ্ঠানও শুরুর দিকে। এবার আমাকে স্টেজের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন আম্মু, মেজো চাচী আর ফুফি।
বাড়ির উঠানে তৈরি স্টেজটির কাছাকাছি আসতেই নজর পড়ল রেয়ানের দিকে। আমার মতোই হলুদ, সাদা মিশেলের একটা পাঞ্চাবী পড়েছেন উনি। হাতা গোটানো, বাম হাতে কালো রঙের একটা বিরাট স্ক্রিনের ঘড়ি। মুখে স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে আছে তার। আমাকে স্টেজের কাছাকাছি আসতে দেখে সবাই আমার দিকে মনোযোগসহকারে তাকালো। সবাইকে অনুসরণ করে রেয়ানও তাকালেন আমার দিকে। সঙ্গে সঙ্গে ঠোঁটে বাঁকা হাসি ফুটে উঠল তার। সবার অগোচড়ে চোখ টিপ মারলেন। হতবাক হয়ে চেয়ে রইলাম। উনি যে অতিরিক্ত অসভ্য, তার জলজ্যান্ত প্রমাণ এটা। আমার লজ্জা লাগতে শুরু করল হঠাৎ। উনার দিকে তাকালাম না আর।
আমাকে নিয়ে বসানো হলো রেয়ানের ঠিক পাশে। আমাদের দুজনের মাঝখানে একটা পাতলা ওড়না দিয়ে দেওয়াল তৈরি করা হলো। সেটা দেখে ভ্রু কুঁচকালেন রেয়ান। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ছুঁড়ে মারলেন আবদ্ধ, সবুজ আর ইয়াসিন ভাইয়ার দিকে। সবুজ ভাইয়া দাঁত বের করে হেসে বললেন,
— “আমার দোষ নাই। আবদ্ধ টাকা দিয়েছে আমাকে এমন করতে।”
সাথে সাথে আবদ্ধর প্রতিবাদি কণ্ঠ,
— “মিথ্যা কথা। আমি কোনো টাকা-টুকা দেই নি। ইয়াসিন বলেছি আমাদের এটা করতে।”
ইয়াসিন ভাইয়া তেঁতে উঠলেন,
— “স্বার্থপর! মিথ্যুক! সুবিধা পার্টি! কি না করেছি তোদের জন্য। আর তোরাই নিজের ভাইকে ফাসিয়ে দিলি? ডাইনীর মেল ফার্সেন কোথাকার!”
এতটুকু বলে দম ছাড়লেন ভাইয়া। রেয়ানের দিকে তাকিয়ে আবার বললেন,
— “ভাইয়া, বিশ্বাস করো আমি একা এমন কিছু করি নি। সবাই মিলে একসাথে প্লেন করে করেছি।”
সাথে সাথে সবুজ ভাইয়া কপাল চাপড়ে উঁচু কণ্ঠে বলে উঠলেন,
— “শেষ! পর্দা ফাঁস!”
রেয়ানের দৃষ্টি বদলালো না। উনি আগের ন্যায়-ই তাকিয়ে। গম্ভীর কণ্ঠে বললেন,
— “শুধু হলুদটা শেষ হোক, এর শাস্তি তোরা পাবি।”
কথাটা শুনে আঁতকে উঠল তিন জনেই। রেগে গিয়ে আবদ্ধ আর সবুজ ভাইয়া ইয়াসিন ভাইয়ার পিঠে ধুমধাম চড় মেরে দিলেন। ইয়াসিন ভাইয়া পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে কাঁদো কণ্ঠে বললেন,
— “নিষ্পাপ একটা শিশুকে তোরা মারতে পারলি?”
আবদ্ধ ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলল,
— “মেরেছি ভালো করেছি। বেয়াদব!”
রেয়ান বিরক্ত হলেন এবার। বিরক্তি নিয়ে বললেন,
— “এভাবে ঝগড়া করলে কেউ তোদের ভাত দেবে না। জলদি এই ওড়না সরা। নাহলে কোনো আফ্রিকানকে ধরে এনে বিয়ে করিয়ে দেবো।”
আবদ্ধ দাঁত কেলিয়ে বলল,
— “আমার তো বিয়ে হয়ে গেছে।”
ইয়াসিন ভাইয়া মুচকি হেসে বললেন,
— “তো কি হয়েছে? এবার ছেলে আফ্রিকানকে বিয়ে করবি। ঝামেলা শেষ!”
কথাটা শুনে রেয়ান মুচকি হেসে উঠলেন। আবদ্ধ কটমট দৃষ্টিতে তাকালো ইয়াসিন ভাইয়ার দিকে। ভাইয়া ঢোক গিললেন। আস্তে করে সেখান থেকে সরে এসে আমাদের মাঝের ওড়নাটা সরিয়ে দিতে চাইলে মেজো চাচী বলে উঠলেন,
— “ইয়াসিন? সরাচ্ছিস কেন ওড়নাটা?”
ইয়াসিন ভাইয়া মিনমিনিয়ে বললেন,
— “আসলে, এভাবে সুন্দর লাগছে না। ওড়নাটা সরালে সুন্দর লাগবে।”
মেজো চাচী জোড় গলায় বললেন,
— “দরকার নেই। আমার থেকে তো এভাবেই সুন্দর লাগছে। থাক এভাবে।”
ইয়াসিন ভাইয়া পড়লেন বিপদে। রেয়ানের দিকে তাকাতেও ভয় লাগছে তার। কোনোমতে মুখে হাসি ফুটিয়ে রেয়ানের দিকে তাকালেন তিনি। রেয়ান এমন ভাবে তাকিয়ে আছেন যেন এখুনি মেরে ফেলবেন ভাইয়াকে। ইয়াসিন ভাইয়া ভয় পেলেন যেন। আস্তে করে সেখান থেকে সরে আসলেন। সঙ্গে আবদ্ধ আর সবুজ ভাইয়াও চলে গেলেন সুযোগ বুঝে।
অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। একে একে সবাই হলুদ লাগিয়ে দিচ্ছে রেয়ান এবং আমাকে। আমাদের মাঝের ওড়নার তৈরি দেয়ালটাও এখনো বিদ্যমান। পাতলা হওয়ার অস্পষ্টভাবে হলেও দুজনকে দুজন দেখতে পারছি আমরা। আমি কিছুক্ষণ পর পর আড়চোখে তাকাচ্ছি উনার দিকে। আর উনি তো সেই কখন থেকে আমার দিকে তাকিয়ে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার খোঁচাও মেরেছে মেহেরুন আর বাকিরা। অথচ সে তার মতোই তাকিয়ে। হঠাৎ উনার ফিসফিসানো আওয়াজ কানে এলো,
— “এভাবে আড়চোখে বারবার তাকাচ্ছো কেন? ট্যারা হয়ে যাবে তো!”
রেগে তাকালাম তার দিকে। বললাম,
— “আপনি যে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন? সবাই এত কিছু বলছে, লজ্জা লাগছে না?”
উনি অবাক হওয়ার ভান করে বললেন,
— “কই? শুনলাম না তো কিছু। তাছাড়া আমি তো আড়চোখে দেখছি না। সোজা ভাবে দেখছি।”
কিছু বলব তার আগেই আম্মু এসে আমার গালে হলুদ ছুঁইয়ে দিলেন। আমি মুচকি হাসলাম। এরপর মেহেরুন আর কুহু একসাথে আসলো আমাকে হলুদ ছোঁয়াতে। হলুদ হাতে নিয়ে আমার গালে লাগিয়ে দিতে দিতে মেহেরুন রেয়ানকে উদ্দেশ্য করে বলল,
— “আব্রাহাম ভাই? মীরুর সাথে কি কথা বলছিলেন এতক্ষণ? আমরা কিন্তু দেখেছি কোণায় দাঁড়িয়ে।”
কুহু বলল,
— “ভাইয়া, আপনাকে আর মীরুকে কিন্তু একসাথে বেশ লাগে।”
কারো প্রশ্নেরই জবাব দিতে পারলেন না রেয়ান। মাথা নিচু করে মুচকি হাসলেন মাত্র।
_________________
হলুদের অনুষ্ঠান শেষ। আমি ফ্রেশ হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছি মাত্র। বাসার প্রায় কমবেশি সবাই ঘুমিয়ে গেছে। অথচ রেয়ান, আবদ্ধ, সবুজ আর ইয়াসিন ভাইয়া এখনো জেগে। উঠানের এক কোণে চেয়ারে বসে আছেন তারা। রেয়ান বেশ শীতল ভাব নিয়ে আছেন। আবদ্ধ আমতা আমতা করে বলল,
— “ভাই, তুই মীরুর রুমে যেতে পারবি না। দাদি নিষেশ করেছেন। বিয়ের আগে দেখা করা যাবে না।”
রেয়ান ভ্রু কুঁচকালেন এবার। বিস্ময় নিয়ে বললেন,
— “কোথাকার কোন দাদির কথা আমরা কেন শুনবো।”
সবুজ ভাইয়া আর্তনাদ করে উঠলেন,
— “এটা তুই কি বলছিস রেয়ান? এ এলাকার লিডার ওই মহিলা। অনেক পাওয়ার আছে ভদ্রমহিলার।”
রেয়ানের নির্লিপ্ত কণ্ঠ,
— “তো?”
সবুজ ভাইয়া তোতলিয়ে বললেন,
— “তো, তো.. কিছু না। মানে, ইয়াসিন তোকে বলবে কিভাবে মীরার সাথে দেখা করবি তুই। কেননা ও-ই তোদের মাঝে ওড়নার দেয়াল তৈরি করেছিল। তাছাড়া চাচী আমাকে আর আবদ্ধকে দায়িত্ব দিয়েছে তোকে যেন মীরার সাথে দেখা করতে না দেই। তাই এ কাজটা আমরা করতে পারবো না। তারচেয়ে ভালো ইয়াসিন বলে দেক, আর আমরা দুজন এমন ভাব করবো যেন আমরা জানিই না তুই কিভাবে মীরার সাথে দেখা করেছিস। এতে কাজের কাজও হবে, আর আমাদের দুজনের সম্মানও বেঁচে যাবে।”
ইয়াসিন ভাইয়া মুখ কুঁচকে বললেন,
— “আহা! কি সুন্দর! তোমাদের কেন মনে হয় আমি এমনটা করবো? মেজো চাচী যদি একবার জানে আমি আব্রাহাম ভাইকে সাহায্য করেছি, তাহলে আমার পিঠের ছাল রাখবে না। তোমরাই সমাধান করো তোমাদের ঝামেলা।”
আবদ্ধ বলল,
— “তাহলে তুই বলছিস মাকে দেওয়া প্রতিজ্ঞা ভেঙ্গে ফেলবো আমরা?”
অনেকটা ইমোশনাল ভাবে বলল আবদ্ধ। যা শুনে মোটেও দমলেন না ইয়াসিন ভাইয়া। নিজের মতো বলে উঠলেন,
— “চুপ ছেড়া! আমি আছি আমার জ্বালায়, আর তোরা আছিস তোদের প্রতিজ্ঞা নিয়ে। জীবনে কি চাচীর প্রতিজ্ঞা ভাঙ্গিস নি তোরা? এত ভাব নিচ্ছিস কেন এখন? তোরা কি জানিস আমার সাথে কি হয়েছে? একবারও কি খবর নিয়েছিস আমার? উল্টো আমাকে সব জায়গাতে ফাসিয়ে দিস।”
রেয়ান, আবদ্ধ আর সবুজ ভাইয়া একসঙ্গে ভ্রু কুঁচকে বললেন,
— “কি হয়েছে?”
ইয়াসিন ভাইয়া এবার একটু নরম হলেন। চোখ মোছার ভান করে কাতর কণ্ঠে বললেন,
— “আমার গার্লফ্রেন্ড কুহু মানে মীরুর ফ্রেন্ড কুহু আজকে সকালেই এখানে এসেছে। হলুদেও ছিল।”
আবদ্ধ মুখ বাঁকিয়ে বলল,
— “তো?”
‘তো’ শব্দটা শুনতেই রেগে গেলেন ইয়াসিন ভাইয়া। রাগী কণ্ঠে বললেন,
— “আগেই তো, তো করছিস কেন? আগে শুনবি তো পুরো ঘটনা।”
বলেই থামলেন ভাইয়া। কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আবারো বললেন,
— “কুহু ওর সাথে ওর ১৫বছরের ভাইকেও এনেছে। বিশ্বাস করবি না, ছেড়া আস্ত মিস্কা শয়তান! কুহুর কাছে একটু ঘেঁষতেও দেয় নি আমাকে। কাছে গেলেই হাতে কামড় বসিয়ে দিয়েছে। এই যে এখানে!”
বলেই নিজের হাত দেখালেন ইয়াসিন ভাইয়া। দুহাতেই কামড়ের দাগ। ভাইয়া নাক টেনে আবারো বললেন,
— “আমি ভেবেছিলাম রাতে যখন ওই ছেড়া ঘুমাবে তখন কুহুর সাথে একটু দেখা করবো। কিন্তু তোদের জ্বালায় সেটাও আর করতে পারলাম না। আমাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে এসেছিস এখানে।”
বলা শেষে হাতে থাকা টিস্যু দিয়ে নাক মুছলেন ইয়াসিন ভাইয়া। আবদ্ধ নির্বিবাক কণ্ঠে বলল,
— “বলা শেষ? এখন কাজে আসি?”
ইয়াসিন ভাইয়া আগের বারের চেয়েও বেশি রেগে গেলেন এবার। ঝাঁঝালো কণ্ঠে বললেন,
— “পাষাণ! এত কিছু বলেছি তোদের, এট লিস্ট একটু শান্তনা তো দিতে পারতি আমাকে।”
সবুজ ভাইয়া মুচকি হেসে বললেন,
— “ওসব মহৎ কাজ আমাদের দ্বারা হয় না। সুন্দর মতো এখন প্লেন বলো আমাদের। ওই যে দেখছো না বসে আছে? কতক্ষণ পর লাঠি দিয়ে পেটাবে আমাদের।”
শেষের কথাটা রেয়ানকে উদ্দেশ্য করে বললেন সবুজ ভাইয়া। ইয়াসিন ভাইয়া এক হাতে মাথা চুলকালেন। হঠাৎ-ই চেঁচিয়ে উঠলেন,
— “আইডিয়া! প্লেন পেয়ে গেছি।”
এতক্ষণে রেয়ান বললেন,
— “কি?”
ইয়াসিন ভাইয়া উচ্ছ্বাসিত কণ্ঠে বললেন,
— “দেখো, মীরু তো এখন ঘুমে। এক কাজ করি আমরাও রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি।”
রেয়ান চোখ ছোট ছোট করে তাকালেন ইয়াসিন ভাইয়ার হাসি,হাসি চেহারার দিকে। তারপর কিছু একটা ইশারা করতেই আবদ্ধ আর সবুজ ভাইয়া দ্রুত গতিতে উঠে দাঁড়িয়ে মারতে লাগলেন ইয়াসিন ভাইয়াকে। না পারতে ইয়াসিন ভাইয়া বলে উঠলেন এবার,
— “আরে আর মারিস না। প্লেন বলছি তো আমি।”
বলে থামলেন ইয়াসিন ভাইয়া। আবদ্ধ আর সবুজ ভাইয়া নিজের চেয়ারে এসে বসলেন। ইয়াসিন ভাইয়া নিজের আঘাতে হাত বোলাতে বোলাতে বললেন,
— “আমি আর আবদ্ধ ড্রইংরুমে বসে থাকা মেজো চাচ্চুকে গল্পের মাঝে ডুবিয়ে রাখবো। এ সুযোগে আব্রাহাম ভাইয়া চলে যাবে মীরুর রুমে। আর সবুজ ভাইয়া? তুমি মীরুর রুমের সামনে দাঁড়িয়ে থাকবে। চাচী আসলেই আব্রাহাম ভাইকে খবর দিবে। ওকে?”
হলোও তাই। ইয়াসিন ভাইয়া আর আবদ্ধ মেজো চাচ্চুকে কথার মশগুলে ডুবিয়ে রাখলে রেয়ান দ্রুত চলে আসেন আমার রুমে। ওদিকে সবুজ ভাইয়া আমার রুমের বাহিরে দাঁড়িয়ে পাহারা দেওয়া শুরু করেন। কেননা মেজো চাচীর বলেছেন, তিনি মাঝরাতে রেয়ানের রুমে গিয়ে চেক করবেন রেয়ান রুমে আছেন কিনা। আর সবুজ ভাইয়ার কাজ হলো মেজো চাচীকে দেখলে রেয়ানকে জানানো এবং পরবর্তীতে চাচীজানকে রেয়ানের রুমে ঢুকতে না দেওয়া।
_____________
মাঝরাত হওয়ায় বেঘোরে ঘুমুচ্ছি আমি। রেয়ান আমার পাশে এসে বসলেন। ঘুমন্ত আমাকে জাগাতে ইচ্ছে করলো না তার। কপালে আলতো স্পর্শ এঁকে দিলেন উনি। তারপর গালে পরপর দু’বার চুমু খেলেন। ঘুমের মাঝেই খানিকটা নড়ে উঠলাম আমি। রেয়ান মুচকি হাসলেন। প্যান্টের পকেটে থাকা হলুদের প্যাকেট বের করে সেখান থেকে একটু হলুদ হাতে নিলেন উনি। আলতো ভাবে আমার দু’গালে আর নাকে লাগিয়ে দিলেন হলুদ। তারপর কানের কাছে ঝুঁকে ফিসফিসিয়ে বললেন,
— “প্রেয়সী নাকি প্রিয়তমা তুমি?
উহু, তুমি আমার হৃদয় হরনী।
আমার একান্ত কিছু একটা!
যার চোখে তাকালে হারাতে ইচ্ছে করে আমার।
যার ঘুমন্ত মুখ দেখে হৃদয় কেঁপে ওঠে আমার।
শুনছো কি তুমি? আমি তোমাকে আমৃত্যু আমার পাশে চাই।
তুমি কি থাকবে আমার পাশে?”
কিন্তু আফসোস! ঘুমন্ত আমি প্রতিউত্তরে জবাব দিতে পারলাম না আর।
____________
চলবে…
ঈশানুর তাসমিয়া মীরা
(গল্পের আর বেশি পর্ব নেই। একদমই নেই। আর আজকে কি লিখেছি আমি জানি না। খাপছাড়া হয়েছে হয়তো। তার জন্য দুঃখীত।)