তুমি হাতটা শুধু ধরো – পর্ব ১৪

0
811

#তুমি_হাতটা_শুধু_ধরো
#পর্বঃ১৪
#Jhorna_Islam

কি ভেবেছিলেন আমার পিছন দিয়ে ছু/ড়ি চালাবেন আর আমি বুঝতেই পারবোনা? তাইনা ম্যানেজার সাহেব।

আমি এতোটাই বো’কা?এতো বড় একটা কোম্পানি আমি কাঁচা বুদ্ধি নিয়ে চালাই।যেই থালাতে খাবেন সেই থালাই ফোঁটা করবেন,আর দায়ান তা বুঝতেই পারবেনা। হাও ফানি!.

ম্যানেজার সাহেব একটা শব্দ ও মুখ দিয়ে উচ্চারণ করতে পারতেছেনা।গলা যেনো কেউ চেপে ধরে রেখেছে।হাত পা শুধু কাঁপতেছে।সারা শরীর দিয়ে দরদর করে ঘাম ছুটছে।দায়ানের চোখে চোখ মিলাতে পারতেছেন না।ঐই চোখে কি যে নো আছে।চোখ দিয়েই মনে হচ্ছে মে/রে দিবে।এতোদিন রাগী দায়ানকে দেখেছে।কিন্তু হিং’স্র রূপ দেখেনি।ফোনটা হাতেই আছে।কল টা এখনো কাটেনি।ঐপাশ থেকে সমানে হ্যালো হ্যালো বলে চলেছে।

কতো টাকা দিয়েছে আপনাকে? এতোই টাকার লো’ভ আপনার যে বি’শ্বা’সঘা’তকতা করতে দুইবার ভাবলেন না।একবার ও মনে হয় নি এর পরিনাম কি হতে পারে? এতোই যখন টাকার লোভ আমাকেই বলতেন আমি টাকা দিয়ে দিতাম।

ঠিক তখনই রুশ দায়ানের পিছন দিক দিয়ে এসে দায়ানের পাশে দাঁড়ায়। একবার দায়ানের দিকে তো একবার ম্যানেজার সাহেবের দিকে তাকায়।

ম্যানেজার সাহেব মাথা নিচু করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।

আপনার তো অপরাধের শেষ নেই ম্যানেজার সাহেব।কোনটা রেখে কোনটা বলবো? এক অপরাধের শা’স্তি ই আপনার এই হালকা পাতলা শরীর নিতে পারবেনা।অথচ আপনি কতো গুলো অপরাধ করেছেন।এবার আপনার ঐই সো কলড পার্টনার ও আপনাকে আমার হাত থেকে বাঁ’চাতে পারবেনা।আপনার জন্য আমার অনেক আফসোস হচ্ছে ম্যানেজার সাহেব।।বলেই মুখ দিয়ে চো,চো,, শব্দ বের করে দায়ান।

এবার ম্যানেজার সাহেব শুকনো ঢু’ক গিলে সাহস যোগিয়ে কিছু বলতে যান,,,,, স্যার আ-আসলে,,,,,,,বাকি টুকু আর বলতে পারেন না।

তার আগেই দায়ানের শ’ক্ত হাতের চ/ড় খেয়ে ছি’টকে গিয়ে মেঝেতে পরেন।

ব্যা’থায় চোখ মুখ কো’চকে ফেলেন,,এক হাত গালে চলে যায় আপনা আপনি। মনে হচ্ছে দাঁত সব ভে’ঙে গেছে। এরকম চ/ড় মনে হয় বাপের জ’নমে ও খাননি।

দায়ান সামনে এগিয়ে যায়,,ম্যানেজার সাহেবের কলার ধরে দাড় করায়। এই তুই কি ভেবেছিস বয়সে বড় বলে তোকে ছেড়ে দিবো? সম্মান তাকেই করা যায় যে সম্মানের যোগ্য। তুই এটাই ডিসার্ভ করিস হাত দেখিয়ে।সম্মান না।

তোকে আমি ছেড়ে দিতাম বিশ্বাস কর।এমন বিশ্বা’সঘা’তক’তার পরও তোকে আমি ছেড়ে দিতাম। কিন্তু তুই তো শুধু বিশ্বাস ভাঙিস নি।তুই তর এসব অপরাধ গুলো এক নি’ষ্পাপ মানুষের উপর চা/পিয়ে দিতে চেয়েছিলি।

তুই কার উপর তোর করা অপরাধ গুলো চা/পিয়ে দিতে চেয়েছিলি? এই ছেলেটার উপর। আরে তুই ওর সম্পর্কে কি জানিস।এই ছেলেটা স্থান কোথায় জানিস? আমার এই খানে।বুকের দিকে ইশারা করে। আর তুই একেই ফাঁ’সাতে চাইলি? আরে ও যদি একবার মুখ ফোটে বলেনা।আমার এই বিশাল স’ম্রা’জ্য ওর নামে করে দিতে দু বার ভাববোনা।আর তুই ওকেই আমার কাছে অপরাধী করতে চাইলি? বলেই দায়ান ঠাস করে চ/ড় লাগিয়ে দেয় আরেকটা।

এবারো ম্যানেজার সাহেব ছি/টকে গিয়ে ফ্লোরে পরেন।কান ঝিম ধরে গেছে।মাথা ভনভন করে ঘুরছে।কোনো শব্দই যেমন কান দিয়ে পৌছাচেছ না।

এই এই তরে কি করা যায় বলতো? তরেতো আমার খু/ ন করতে ইচ্ছে করছে।তুই রুশের সম্পর্কে কি জানিস? কতোদিন হয়েছে অফিসে জয়েন করেছিস?এই ছেলেটা আমার সাথে কতো বছর ধরে আছে তোর কোনো ধারণা আছে?
তুই সামান্য ঠু/নকো কয়েকটা ছবি পাঠাবি।আর আমি সেই ছবি দেখে তাকে অবিশ্বাস করবো? সামান্য দুইটা ছবি দেখে সিরিয়াসলি? আহ আমি এতোই বোকা? তুই কি ভেবেছিস এসব করলে রুশ কে অফিস থেকে বের করে দিবো? আর তুই বে’হাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াবি।কেউ তোকে সন্দেহ করবেনা।

কি চা/ল টাই না চে/লেছিস ইয়ার।মানতে হবে।

তোর ঐই পাঠানো পিক গুলো দেখে বিশ্বাস কর সত্যিই আমার মাথা কাজ করা বন্ধ হয়ে গেছিলো।কিন্তু রুশকে দেখে না।কে এই কাজটা করতে পারে তাই ভেবে।আননোন নাম্বার থেকে ছবি পাঠালেই আমি রুশ কে ভুল বুঝবো?

আমার তো মাথা নষ্ট হয়ে গেছিলো কে এই ছবি গুলো পাঠালো এইটা ভেবে।

আর ছবি গুলো তোলার আগে আশেপাশে একটু তাকিয়েতো নিবি।ঐই দিন যদি পিছনে একটু খেয়াল করতি তাহলেই বুঝতে পারতি, রুশ ওখানে একা ছিলো নারে সাথে আমিও ছিলাম।আর তোর ঐই বস ও তা খেয়াল করলো না।ইসসস কি আফসোস।

এই ছেলেটাকে দেখছিস এর শি’রা উপশি’রা সব জানা আছে আমার। আমি ওকে যতো টুকু চিনি ও নিজেও ততোটুকু চিনে না।বলেই দায়ান আবার ম্যানেজারের গায়ে হাত তুলতে যায়।

রুশ ছুটে গিয়ে দায়ানকে ঝাপটে ধরে আঁটকে দেয়।দোস্ত প্লিজ শান্ত হয়ে যা।মাথা ঠান্ডা কর।আইন নিজের হাতে তুলে নিতে হবে না।আমি পুলিশকে ফোন দিয়েছি ওরা মনে হয় আসছে।তুই আর মাথা গরম করিস না।

দায়ান রাগি লুক নিয়ে রুশের দিকে তাকিয়ে মুখ অন্য দিকে ফিরিয়ে নেয়।শরীর এখনো মৃদু কাপছে রাগে।

কিছুসময়ের মধ্যেই পু’লিশ এসে হাজির হয়।

ম্যানেজার সাহেব পুলিশ দেখে ভ’য় পেয়ে যায়।দৌড়ে গিয়ে দায়ানের পা ঝাপটে ধরে। স্যার ভুল হয়ে গেছে।অন্যায় করে ফেলেছি। টাকার লোভ সামলাতে পারিনি।এবারের মতো মাফ করে দেন।আর এমন ভুল জীবনেও হবে না।একটা সুযোগ দিন স্যার।স্যার আমার বউ বাচ্চার কি হবে স্যার? ওদের কথা ভেবে না হয় একটা সুযোগ দিন।

দায়ান এক ঝাটকা মেরে নিজের পা ছাড়িয়ে নেয়। এটা তোর আগে ভাবা উচিৎ ছিলো।আর ওদের কথা তোর চিন্তা করতে হবে না। ওদের দায়িত্ব আজ থেকে আমি নিবো।এটার ও দায়িত্ব নিবো যেনো তুই দশ বছর আগে বাইরের হাওয়া না খেতে পারিস। অফিসার একে আমার সামনে থেকে নিয়ে যান।নয়তো কি করে ফেলি আমি নিজেও জানিনা। আর রুশ এই রুমের সিসিটিভি ফুটেজ দিয়ে দে।আর এনার ফোন থেকেও সব কিছু পেয়ে যাবে।একটাও যেনো ছাড় না পায়।কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা কর। বলেই বেরিয়ে যায় দায়ান।

রুশ অফিসারদের সকল প্রমান দেয়।এবং অফিসারদের সাথে পুলিশ স্টেশনে যায়।অপরাধীদের শা’স্তি’র ব্য’বস্থা করার জন্য।

দায়ান নিজের ক্যাবিনে গিয়ে চেয়ারে মাথা হেলিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখে কিছুসময়। কাল সারারাত ঘুমোতে পারেনি।চোখ জ্বা’লা করছে।সারারাত জেগে কতো কি প্লেন করেছে।কিভাবে কি করবে সব কিছু সাজিয়েছে।রুশকে কালই সব ব্যবস্থা করতে বলেছিলো।প্রথমে দায়ান নিজেই কনফিউশন ছিলো ছবিগুলো নিয়ে,,কে করতে পারে।জায়গাটা কোথায়,,তারপর ছবিগুলো লক্ষ করেই বুঝতে পারলো সব কিছু। ঐই দিন সকল ব্যবসায়ীদের সম্মেলন ছিলো।তাই দায়ান ও রুশ গিয়েছিলো। পরে কোনো কলের কারণে দায়ান অন্য দিকে গিয়েছিলো কথা বলতে,।এই সুযোগে লোকটা এসে নিজ থেকে রুশের সাথে কথা বলেছিলো।রুশ সেটা দায়ানকে বলেছিলো।দায়ানের কথাটা মাথাতেই ছিলো না।তারপর সব মনে পরায় দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে ফেলে।আর ম্যানেজার কে আগে থেকেই দায়ানের সন্দেহ হয়েছিল। তাই দায়ান ম্যানেজারের পিছনে লোক লাগিয়েছিলো।আর সেই লোক ই দায়ান কে খবর দেয় যে ম্যানেজার সকাল সকাল অফিসে এসেছে।তাই দায়ান তাড়াতাড়ি করে অফিসে এসেছে। ম্যানেজার কে হা’তেনাঃতে ধরার জন্য। এসবের চ’ক্করে ভালো করে খাওয়া ও হয়নি।খিদে পেয়েছে তাও খিদে কে বেশি পাত্তা দেয়নি।

বাড়ি গিয়ে খেয়ে লম্বা একটা ঘুম দিতে হবে।নয়তো ঐই মাথা ব্যাথায় টিকতে পারবেনা।এখনই বাড়ি যাওয়া প্রয়োজন ভেবেই বসা থেকে উঠে দাঁড়ায় দায়ান।

—————————————–
দায়ান সকাল সকাল চলে যাওয়ায় সোহা আর কিছুই রান্না করে নি নিজের জন্য। একা একজনের জন্য রান্না করতে ভালো লাগে না খেতেও ভালো লাগে না। তাই কালকের বেশি হয়ে যাওয়া খাবারই ফ্রিজ থেকে বের করে গরম করে খেয়ে নিয়েছে।

দায়ান অবশ্য বলে গেছে আজ হয়তো দুপুরের দিকেই বাসায় এসে পরতে পারে।তাই আরো রান্না করেনি।একবারে গোসল সেরে তারপর দুপুরের রান্না বসাবে।

ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো এখন সাড়ে বারোটা বাজে।তাই কিছু না ভেবেই গোসলে ঢুকে গেলো গোসল করার জন্য। নয়তো আবার চুল শুকাবে না।বড় চুলের এই একটা ঝামেলা সহজে শুকাতে চায় না।

————————————-
গোসল সেরে এসেই সোহা চুল গুলো ছেড়ে রান্না ঘরের দিকে চলে যায় রান্না বসানোর জন্য।

দায়ান ও কিছুসময়ের মধ্যেই বাসায় চলে আসে।দরজায় ন’ক না করে।নিজের কাছে থাকা চাবি দিয়েই ঢুকে পরে।
মেয়েটা কি করছে কে জানে।হয়তো কলিং বেল এর শব্দে সব ছেড়ে দৌড়ে আসবে দরজা খুলতে।তাই ইচ্ছে করেই বেল বাজায় নি।

দরজা খুলে আশে পাশে লক্ষ করে দেখলো সোহা কে দেখা যায়নি।কোথাও না দেখতে পেয়ে নিজের রুমে ঢুকে গেলো।আগে ফ্রেশ হতে হবে।নয়তো মাথা ঠান্ডা হবে না।তাই রুমে ঢুকে গায়ের ব্লেজার টা খুলেই ওয়াসরুমে ঢুকে গেলো।

———————————
দায়ান ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে, টাওয়াল দিয়ে মাথার চুল ঝা’ড়তে ঝা’ড়তে বেরিয়ে এলো।টাওয়াল কাঁধে ঝু’লিয়েই সোহা কে খোঁজার জন্য বের হলো।

সোহাকে বলবে আজ কিছু স্পেশাল রান্না করতে।এবং নিজে যেনো ফোন করে রুশ কে আসতে বলে বাসায়।নয়তো আগামী এক সপ্তাহ মন খারাপ করে বসে থাকবে কাউকে বুঝতে দিবেনা।রুশের মনটা খুব নরম একটুতেই গ/লে যায় তাই হয়তো অভিমানটা ও বেশি।
সোহার সাথে কথা বললে হয়তো মনটা ভালো হয়ে যাবে।

সোহাকে ডাকার জন্য সোহার রুমের দিকে এগোয়।এমন সময় রান্না ঘর থেকে আওয়াজ পায়।হয়তো সোহা রান্না ঘরে তাই রান্না ঘরের দিকে এগিয়ে যায়।

রান্না ঘরের দিকে তাকিয়ে দায়ানের চোখে মুখে একরাশ মুগ্ধতাতে ভরে যায়।সোহার চুল দেখে মনের কোণে বিষ্ময় খেলা করে।এই প্রথম দায়ান সোহা কে খোলা চুলে দেখলো।কোমড় ছাড়িয়ে ঘণ কালো রেশমি চুল।কিছু সময় আগেই হয়তো গোসল করেছে।চুল দিয়ে টপটপ করে পানি পরে ফ্লোর ভিজে যাচ্ছে। জামার কিছু অংশ ও ভিজে গেছে সেই দিকে মেয়েটার খেয়াল নেই।একমনে কাজ করে চলেছে।

সোহার চুল দেখে দায়ানের মুখ দিয়ে নিজের অজান্তেই অস্ফুট স্বরে বরিয়ে আসে,,,,”মাশা-আল্লাহ”।
অবাক হয়ে সোহার চুলের দিকেই তাকিয়ে রয়।

ছোটো থেকেই দায়ানের লম্বা চুলের প্রতি দূর্ব’লতা।দায়ানের মায়ের ও এমন লম্বা ,ঘন,কালো রেশমি চুল ছিলো।দায়ান প্রতিদিন তার মায়ের চুল আচরিয়ে বে’নি করে দিতো।আর এক মনে মায়ের চুলের দিকে তাকিয়ে থাকতো।মা দায়ানের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতেন। আর বলতেন বুঝেছি আব্বা আপনার জন্য লম্বা চুলওয়ালি মেয়ে আনতে হবে।যেনো আপনি তার চুলের য’ত্ন নিতে পারেন নিজ হাতে।
দায়ান তখন মাথা চুল’কিয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে লা’জুক হাসতো।

সোহা কারো অ’স্তি’ত্ব নিজের পিছনে টের পেয়ে,,পিছনে ঘুরে। দায়ানকে দেখে তাড়াতাড়ি মাথায় ওড়না দেয়।নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক করে বলে,,,,,,

— কখন এসেছেন?

— দায়ান নিজের চোখ সোহাতেই নিবদ্ধ করে উত্তর দেয়,, কিছুসময় আগেই।

— সোহা কাজ করতে করতেই উত্তর দেয়,,,ওহ।কিছু লাগবে আপনার? বলেন করে দিচ্ছি।

— না,,, মানে,, আসলে,,,আজকে একটু ভালো কিছু রান্না করতে পারবা? আর রুশকে একটা ফোন দিয়ে বলো আসার জন্য। তোমার কথা ফেলতে পারবেনা।

— সোহা দায়ানের দিকে হাসি মুখে তাকায়।এই কথা আপনি আগে বলবেন না আমায়।রুশ ভাইয়ার জন্য আমি এখনই রান্না করতেছি। আপনি কোনো চিন্তাই করবেন না। আর ফোন করে আসতে বলতেছি।

— হুম।

— আপনার ফোনটা দেন আমায়।আমারটা তো রুমে।আর আমার মোবাইলে ব্যালেন্স ও নাই। রুশ ভাইয়া কে কল লাগিয়ে দেন।

— দায়ান সোহার কথা মতো রুশের ফোনে কল লাগায়।
ঐপাশ থেকে কল রিসিভ হতে দুই মিনিট ও সময় ব্য’য় হয় না।

রুশ দায়ানের ফোন পেয়ে তাড়াতাড়ি রিসিভ করে।মাত্রই পুলিশ স্টেশনের সব কাজ শেষ করে বের হয়েছে।মনটা খুব খারাপ।ভালো মানুষের আজ কাল দা/ম নেই।ভালো মানুষগুলোকেই বেশি হেন’স্তা হতে হয়।

— হ্যা,,,, দোস্ত বল।

— নে তর সাথে সোহা নাকি কথা বলবে।দেখ কি বলে।

তারপর দায়ান হাত বাড়িয়ে ফোনটা সোহার দিকে এগিয়ে দেয়।
সোহা হাত বাড়িয়ে তাড়াতাড়ি ফোনটা কানে তুলে নেয়।
উচ্ছসিত গলায় বলে উঠে,,,,,,,,
— হ্যালো,,, রুশ ভাইয়া আমি সোহা।

— হ্যা সোহা কেমন আছো বোন?

— আমি অনেক ভালো আছি ভাইয়া। তুমি কেমন আছো?

— এইতো ভালো।

— ভাইয়া এখন আপনি যেখানেই থাকেন না কেনো,এখোনি এই বাড়িতে আসার জন্য বেরিয়ে পরুন।

— এখন? কিন্ত বোন,,,,,

— ওহু কোনো৷ বাহা না শুনতে চাই না। আসবেন মানে আসবেন।নয়তো আপনার বোন আপনার সাথে আ/ড়ি করবে।আর কথাই বলবেনা। ভেবে দেখেন।

— রুশ কিছুসময় চুপ থেকে বলে,,, ঠিক আছে আমি আসছি।আমার বোন আমায় ডেকেছে আমি না এসে থাকতে পারি?

— সোহা খুশিতে লাফ দিয়ে বলে,,,,ওকে তাড়াতাড়ি আসুন।

দায়ান এতোসময় সোহার আর রুশের কথা শুনতেছিলো চুপচাপ। ফোন লাউডেই দেওয়া ছিল বলে সব কথাই শুনেছে দায়ান।রুশ আসবে শুনে স্বস্থির নিশ্বাস ফেলে দায়ান।দায়ান বললে কখনোই আসতে চাইতো না । নানান বাহানা দিতো।চ’ক্ষু ল’জ্জায় দায়ান জানে দায়ানকে এ’ড়িয়ে চলতে চাইবে কয়দিন।রুশ কিছু না করলেও ওর নামটা তো তাতে জড়িয়েছে সে জন্য।

সোহার এতোক্ষনে খেয়াল হয়।সে একা না তার পাশে দায়ান ও দাঁড়িয়ে আছে। ভেবেই জি/ভে কা’মড় দিয়ে দায়ানের দিকে তাকায়। এই লোকটার সামনেই লাফালাফি শুরু করে দিছে। ধুর,,,,,,,

সোহা কল কেটে হাসি মুখে ফোনটা দায়ানের দিকে বারিয়ে দেয়।

দায়ান হাত বাড়িয়ে ফোনটা হাতে নেয়।

আপনি যান আমি সব কিছু রুশ ভাইয়া আসার আগেই সেরে ফেলবো।

—- দায়ান সোহার দিকে তাকিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় বেরিয়ে যাওয়ার জন্য। কি মনে করে আবার পিছনে ফিরে সোহার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে এটা আমার থেকে তোমার বেশি জরুরি। বলেই,,,,,,,,,,

নিজের কাঁধে থাকা টাওয়াল টা ছুড়ে দেয় সোহার দিকে।

ফ্লোরে দেখে চলাচল করো।চুলের পানিতে তো ব’ন্যা বানিয়ে ফেলেছো। পরে গিয়ে আবার যেনো কো’মড় ভে’ঙোনা।

টাওয়াল গিয়ে সোজা সোহার মুখে পরে।পুরো মুখ ঢেকে যায় টাওয়ালে।

দায়ান শি’স বাজাতে বাজাতে রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।

সোহা মুখ থেকে টাওয়ালটা সরিয়ে দায়ানের যাওয়ার দিকে একবার,টাওয়ালের দিকে একবার তাকায়।

টাওয়ালটা হালকা ভিজা।দায়ান মাত্রই হয়তো এটা দিয়ে চুল মুছেছে।টাওয়াল থেকে একটা মিষ্টি গ’ন্ধ নাকে এসে বারি খাচ্ছে। টাওয়ালটায় দায়ানের ছোঁয়া আছে।ভাবতেই সোহার শরীরের লোম গুলো দাড়িয়ে যায়।টাওয়ালটা দুই হাতে জড়িয়ে নাকের কাছে নিয়ে চোখ ব’ন্ধ করে নেয়।

আহহহ এতো সুখ সুখ লাগছে কেনো সব কিছু? চোখ ব’ন্ধ করেই নিজেকে নিজে প্রশ্ন করে সোহা।

#চলবে,,,,,,

বিঃদ্রঃ আপনাদের সুন্দর সুন্দর ম’ন্তব্য আশা করছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here