তুমি হাতটা শুধু ধরো – পর্ব ২৭

0
849

#তুমি_হাতটা_শুধু_ধরো
#পর্বঃ২৭
#Jhorna_Islam

লিফট অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় সোহা আরো ঘা’বড়ে যায়।অনবরত কাঁদতে থাকে।

দায়ান ফোন নিয়ে ফোনের ফ্ল্যা’শ জ্বা’লা’বে এমন সময় আবার আলো জ্বলে উঠে লিফট চলতে শুরু করে।

সোহা চোখ বন্ধ থাকায় বুঝতেই পারেনি।সেতো অনবরত কেঁপে চলেছে।

দায়ান হয়তো বুঝতে পারছে সোহা ভ’য় পাচ্ছে। তাই বলে উঠে,,, হেই লিসেন সোহা,,,চোখ খোলো দেখো সব ঠিকঠাক। কোনো কিছু হয়নি। স্বাভাবিক হও আমার সাথে কথা বলো।সোহা তাও দায়ানের কথা শুনছে না।দায়ান এইবার সোহা কে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নেয়।

দায়ান সোহার কান্নারত মুখের দিকে একবার তাকিয়ে,,, সোহাকে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত পর্যবেক্ষন করে। নিজের শরীর থেকে ব্ল্যা’জার টা খুলে পরিয়ে দেয়।

সোহা কান্না থামিয়ে দায়ানের দিকে তাকিয়ে আবার নিজের দিকে তাকায়। এতোক্ষনে ওর হুঁশ হয়।তারাতাড়ি করে নিজেকে দায়ানের দেওয়া ব্ল্যা’জার দিয়ে ভালো করে ঢেকে নেয়।

মাথার হিজাবটা নিচে পরে আছে।শাড়ীর সাথে হিজাব সেফটিপিন দিয়ে আটকানো ছিলো বলে,,,হিজাবটাও খুলে গিয়েছে।

দায়ান হিজাব টা তুলে সোহার হাতে দেয়।

সোহা হাত বাড়িয়ে হিজাবটা নিয়ে মাথায় দিতে থাকে।

ভালো ভাবে দাও। যেনো মাথার চুল একটাও না দেখা যায়।

সোহা দায়ানের কথায় মাথা নাড়িয়ে হিজাবটা সুন্দর করে মাথার মধ্যে পেচিয়ে নেয়।

লিফট অনেক আগেই থেমে গেছে।

দায়ান সোহাকে জিজ্ঞেস ,,এভাবে যেতে পারবা? আইমিন পেটি’কো’ট পরে?

সোহা ধীর গলায় বলে,,,সমস্যা নাই।এটা পেটি’কোট না।প্লাজু পরেছিলাম শাড়ীর নিচে।

ওহ আচ্ছা চলো।বলেই সোহার এক হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে লিফট থেকে বের হয়।

লিফটের সামনে দুইজন দাঁড়িয়ে ছিলো। লিফটে উঠার জন্য। দায়ানরা লিফট থেকে বেরিয়ে হতেই ঐ দু’জন লিফটে ওঠে চলে যায়। এই দিকে তেমন আর কোনো মানুষ নেই।

দায়ান নিজেদের জন্য রাখা ব’রা’দ্দ’কৃ’ত রুমের সামনে এসে দাঁড়ায়। চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে।

এসেই বিছানার উপর বসে পরে। সোহাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নিজের কাছে ইশারা করে বসার জন্য।

সোহা গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে এসে দায়ানের পাশে বসে।

হিজাব, ব্ল্যা’জারটা খুলো। খুলে দেখো কোথায় কোথায় কেটেছে।

দায়ান বসা থেকে উঠে এদিক ওদিক তাকিয়ে ফাস্ট-এইড বক্স খোঁজার চেষ্টা করে। এসব বড় বড় হোটেলে প্রয়োজনীয় সব কিছুর সুবিধাই পাওয়া যায়।

সোহা দায়ানের কথা মতো ব্ল্যাজারটা খুলে ফেলে।মাথা থেকে হিজাব টা খুলে শাড়ীর মতো করে শরীরে জড়িয়ে নেয় যতোটুকু পারে।

দায়ান ততোসময়ে ফাস্ট -এইড বক্স পেয়ে গেছে।ফাস্ট -এইড বক্স টা নিয়ে এসে সোহার পাশে বসে। দেখি কোথায় কোথায় লেগেছে বলে,,, নিজেই সোহার দুই হাত সামনে এনে চে’ক করতে থাকে।হাতের কুনুইর পাশে অনেক টাই কেটে গেছে। সেখানে ঔষধ লাগিয়ে দেয়। তারপর গলায় চোখ যায়,,গলার কাছটায় অনেকখানি কেটেছে। ফোটায় ফোটায় র/ক্ত ও পরেছে।দায়ান প্রথমে তুলো দিয়ে জায়গাটা পরিষ্কার করে নেয়।তারপর ঔষধ লাগাতে থাকে।ঔষধ লাগানোর সাথে সাথে সোহা আহ করে উঠে।

সোহার ব্যাথাতুর শব্দ শুনে দায়ানের হাত টা একটু থেমে যায়। তারপর আস্তে করে গলার কাছটায় ফু দিতে থাকে। ও ঔষধ লাগাতে থাকে। দায়ান সোহার গলায় ফু দিতে দিতে অনেকটাই কাছে চলে এসেছে।

দায়ানের গরম নিশ্বাসে সোহার ভিতরটা নাড়িয়ে দিচ্ছে। বিছানার চাদর দুই হাতে খামচে ধরে চোখ খিচে বন্ধ করে নেয়।

দায়ানের চোখ যায় সোহার গলার কাছটার তি’লটায়।কিছুটা যেমন ঘোরে চলে যায়।আরেকটু এগিয়ে যায় দায়ান সোহার দিকে। সোহা দায়ানের উপস্থিতি নিজের আরো কাছে টের পেয়ে।জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে থাকে।

দায়ান আস্তে করে হাত বাড়িয়ে সোহার গলার নিচের তিলটা হালকা করে ছুয়ে দেয়।দায়ানের স্পর্শে সোহার শরীর ঝাঁকুনি দিয়ে উঠে। দায়ান মুখটা সোহার গলার কাছে নামিয়ে তিলটায় চুমু খেতে যাবে।এমন সময় কলিং বেল বেজে উঠে। দুইজনেই ঘোর থেকে বেরিয়ে আসে।

দায়ান সোহার কাছ থেকে ছিটকে দূরে সরে যায়।কি করতে যাচ্ছিলো সে? ভাবতেই মাথা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।

সোহা লজ্জায় এখনো চোখ বন্ধ করে বসে আছে।

দায়ান নিজেকে স্বাভাবিক করে বলে,,, তুমি ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো। যাও লাগেজ মনে হয় নিয়ে এসেছে।আমি তোমার ড্রেস দিচ্ছি।

সোহা মাথা নাড়িয়ে তারাতাড়ি করে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়।

দায়ান নিজেই মনে মনে গা’লি দিতে থাকে। কি করতে যাচ্ছিলি দায়ান? কি হয়েছে তর? মনে মনে দরজার ঐ পাশে দাড়িয়ে থাকা লোকটাকে দায়ান ধন্যবাদ জানায়।তার মধ্যে আবার কলিং বেল বেজে উঠে।

দায়ান গিয়ে দরজা খুলে দেয়। দরজার ঐ পাশে একটা লোক এক হাতে লাগেজ নিয়ে ও অন্য হাতে ড্রিংকস এর বোতল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

দায়ান হাত বাড়িয়ে লাগেজ টা নেয়।ড্রিংকস এর বোতল টা দেখে বলে,,এসবের দরকার নেই আমি খাইনা।তুমি নিয়ে যাও এটা।

লোকটা বলে উঠে স্যার না খেলেও রেখে দিন।আমাদের অর্ডার দেওয়া হয়েছে প্রত্যেক গেস্টদের দেওয়ার জন্য। দায়ান আর কথা বাড়ায় না চুপচাপ বোতল টা নিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়।

বোতলটা বিছানার পাশে টেবিলটাতে রেখে দেয়।

লাগেজ খুলে সোহার একসে’ট জামা নিয়ে বাথরুমের দরজায় ন’ক করে।

সোহা তোমার ড্রেস নাও।

সোহা দরজাটা খুলে হাতটা বাড়িয়ে দেয়।

দায়ান ড্রেস গুলো সোহার হাতে দিয়ে বারান্দায় চলে আসে।

সোহা ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসার শব্দ শুনে,,দায়ান রুমে আসে।লাগেজ খুলে নিজের ড্রেস বের করে নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে চলে যায়। একবারও সোহার দিকে তাকায় নি এর মধ্যে।

দায়ান ওয়াশরুমে ঢুকে গেলে,,সোহা ও টাওয়াল দিয়ে মাথাটা মুছতে মুছতে বারান্দায় চলে যায়।চার পাশের পরিবেশ টা খুবই মনোমুগ্ধকর। উপর থেকে দেখতে যেমন আরো সুন্দর লাগছে সব কিছু। তারউপর বৃষ্টি হচ্ছে। সব কিছু ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। সোহার ইচ্ছে করছে বৃষ্টির পানি গায়ে মাখাতে।তাতো সম্ভব নয়।কারণ এই অসুস্থতা সব শখ শেষ করে দিয়েছে।তাই কিছুই করার নেই।দূর থেকেই দেখতে হবে।কাছে যাওয়ার অনুমতি নেই।

প্রায় অনেকসময় ধরে এক দৃষ্টিতে বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে আছে সোহা।

দায়ান এই দিক দিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে রেডি হয়ে গেছে মিটিং এটেনড করার জন্য।

যাওয়ার আগে সোহাকে ডাক দেয়।

দায়ানের ডাকে সোহা দৌড়ে রুমে আসে।

আমি মিটিং এ যাচ্ছি। জানিনা কতো সময় লাগবে।কিছুসময় পর এসে খাবার দিয়ে যাবে।তুমি খেয়ে নিও আমার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। আর শুয়ে রেস্ট নাও।বাই।

সোহা মাথা নাড়ায় ।

দায়ান সোহার দিকে তাকিয়ে বেরিয়ে যায়।

—————————————–

চারিদিকে জমকালো আয়োজন। সব কিছু হাই ফাই কোয়ালিটি তে করা হয়েছে।আয়োজন দেখলে যে কেউ মুগ্ধ হবে। হবেই না কেনো বড় বড় ব্যবসায়িদের মিলন মেলা বলে কথা।

এর মধ্যে সকলেই প্রায় উপস্থিত হয়ে গেছে। কিছুসময়ের মাঝেই পার্টির মূল আয়োজন শুরু হবে।

সকলে সবার সাথে কথা বার্তা হাই,হ্যালো করতে ব্যস্ত।সবাই তাদের ফ্যামিলি কে সাথে করে নিয়ে এসেছে।

সোহা আর দায়ান ও এই মাত্র উপস্থিত হয়েছে।

সোহা দায়ানের পিছন পিছনে যাচ্ছে। দায়ান যেখানেই যায়।

দায়ানকে কেউ একজন ডাক দেয়।তাকিয়ে দেখে চার-পাঁচ জন দাঁড়িয়ে কথা বলছে।ঐখানে যাওয়ার জন্যই ডাক দেয়।দায়ান ওদের ভালো করেই চিনে।ওদের সাথে বিজনেস ডি’ল করেছে অনেক।না গেলে কেমন দেখায়।তাই কিছুটা কোলাহলহীন ফাঁকা টেবিল দেখে সোহাকে নিয়ে গিয়ে বসায়।
তুমি একটু বসো এখানে।আমি ওদের সাথে একটু কথা বলে আসছি।
ঐখানে তোমায় নিয়ে যাওয়াটা ঠিক হবে না। একদম ভয় পাবেনা।আমি আশেপাশেই আছি।আর কোনো দরকার হলে ফোন তো আছেই আমাকে ফোন দিবা। তুমি এখানেই থাকবে। আবার অন্য কোথাও চলে যেও না ওকে?

সোহা মাথা নাড়ায়।

দায়ান সোহার মাথায় হিজাবের উপর দিয়েই হাত বুলিয়ে মুচকি হেসে চলে গেলো।

দায়ান সবার সাথে কথা বলতে ব্যস্ত হয়ে পরে।

সোহা বসে বসে অরেঞ্জ জুস খাচ্ছে আর আশে পাশের লোকজন দেখছে।কতো রকম কতো মানুষ এসেছে।কেউ খেতে তো কেউ গল্প করতে বিজি।

দায়ান কথা শেষ করে সোহার কাছেই এগিয়ে আসতেছিলো।হঠাৎ করে কেউ সামনে এসে দাঁড়ায়। তাতে দায়ান কিছুটা ভরকে যায়।দুই কদম পিছিয়ে গিয়ে নিজেকে সামলে নেয়।কপাল কোচকে সামনের দিকে তাকায় ।

সামনের মানুষটাকে দেখে।নিজের অজান্তেই অস্পষ্ট স্বরে একটা নাম বেরিয়ে আসে তিশা।

মূহুর্তের মধ্যেই দায়ানের কানে অতীতের কিছু বি/ষা’ক্ত কথা বাজতে থাকে।

আমি তোমার সাথে সারাজীবনের জন্য থাকাতো দূর কোনো সম্পর্কই রাখতে পারবো না দায়ান।তুমি আমায় ভুলে যাও।

— কি বলতেছো তুমি তিশা?

— ঠিকই বলছি। আমি কেনো কেউই তোমার সাথে এখন থাকতে চাইবে না।কি আছে তোমার? ফ্যামিলির সাথে তো বিজনেস টাও রসা’তলে যাচ্ছে। তাছাড়া তোমারতো আর কেউ নেই তুমি একা।ফ্যামিলির মানে তুমি কি বুঝবে? কিছু আছে তোমার সব তো শে/ষ। কেউতো আর নিজে জেনে বুঝে পায়ে কু’ড়ো’ল মারবে না।আমার এতো সুন্দর লাইফটা তোমার একার জীবনের সাথে জড়িয়ে শে’ষ করে দিতে পারবো না। আর তোমাকে একটা কথা বলি? আমিতো তোমার সাথে থাকবো না সিউর।কিন্তু তোমার এই একাকিত্ব জীবনের সাথে আর কাউকে জড়িয়ে তার জীবন টা নষ্ট করো না।

— দায়ান তিশার কথাগুলো শুনে নিজেকে সামলে বলে উঠে,,, কিন্তু আমার এই পরিণতির জন্য কে দায়ী তিশা? সব কিছুতো তোমার জন্যই হয়েছে।

— ওহ প্লিজ দায়ান।এসব ড্রামা তোমায় মানায় না অফ যাও।তোমার মতো এ’তিম ছেলে কে কেউই পছন্দ করবে না।সে যতো সুন্দরই হও না কেনো।সেই তো এ’তি’ম ই এরা সংসার করা,,,ফ্যামিলি এসবের মর্ম বুঝে না।সো প্লিজ আমার আশা ছেড়ে দাও।বাকি জীবন টা তোমার একাই কাটাতে হবে। সো একাই বাঁচতে শিখো।

— জাস্ট শাট-আপ তিশা।আর একটা কথাও বলবে না তুমি।আমার জীবনটা ধ্বং’স করে দিয়েছো তুমি। তোমার জন্য শুধু মাত্র তোমার কারণে আজ আমার বাবা মা আমার সাথে নেই।না তুমি ঐদিন আমায় জোর করতে।আর না ঐ বুদ্ধি টা দিতে। তাহলে সব ঠিক থাকতো।আজ থেকে দায়ানের ঘৃ’ণা দেখবে। ভাবতেও আমার নিজের উপর ঘৃ’ণা হচ্ছে তোর মতো মেয়েকে আমি ভালোবেসে ছিলাম।আজকের পর থেকে আমার সামনে তুই কোনোদিন ও আসিস না।সেই দিন আমি কি করবো নিজেও জানিনা।

দায়ানননন। বলেই তিশা ডেকে উঠে।

তিশার ডাকে দায়ান অতীত থেকে বের হয়ে আসে।

দায়ানের চোখ গুলো টকটকে লাল হয়ে গেছে।রাগে কপালের র’গ ফুলে উঠেছে।

তিশা আরেকটু এগিয়ে এসে দায়ানকে কিছু বলতে নিবে,,,তার আগেই দায়ান অন্য পাশে তাকিয়ে নিজের ঠোঁটের মধ্যে আঙুল দিয়ে তিশাকে বুঝিয়ে দেয়।একটা কথা ও যেনো না বলে।

তবুও তিশা বলার চেষ্টা করে,, দায়ান প্লিজ,,,,,,,,,, আর কিছু বলতে পারে না।তার আগেই দায়ান উল্টো ঘুরে চলে যায়।

তিশার চ’ক্ক’রে দায়ান ভুলেই যায় তার জন্য যে কেউ একজন অপেক্ষা করে আছে।

দায়ান সোজা পার্টি থেকেই বেরিয়ে যায়।সোহা যে একা বসে আছে সে দিকে তার খেয়াল কই।তার ভিতর তো অতীতের ভয়াবহ স্মৃতি এসে ভ’র করেছে।

সোহা প্রায় দুই ঘন্টা সময় ধরে একই জায়গায় বসে আছে।কোমড়টা ব্যাথা হয়ে গেছে। তার উপর দায়ান কে আশে পাশে কোথাও দেখতে পাচ্ছে না।

নাহ এখানে আর এভাবে বসে থাকা সম্ভব না। এক জায়গায় এতে সময় নিয়ে বসে থাকায়।আশেপাশের লোক জন সোহার দিকে তাকিয়ে আছে। তাই কিছু না ভেবেই উঠে দাঁড়ায় সোহা।

দায়ানকে আশে পাশে খুজতে থাকে। কোথাও নেই ওয়াশরুম ও বাদ রাখেনি খোঁজার। কোথাও দায়ানের চিহ্ন টুকুও নেই।হাওয়া হয়ে গেলো নাকি লোকটা? তারপর ফোনের কথা মাথায় আসে। দায়ান বলেছিলো দরকার হলে ফোন দিতে।সোহা কল দিতে থাকে দায়ানকে।কল রিং হয়ে বাজতে বাজতে কেটে যায়। ঐ পাশ থেকে রিসিভ হয় না।অনেকবার কল দেওয়ার পর ও যখন রিসিভ হয় না কল টা তখন সোহা চিন্তায় পরে যায়।উনি ঠিক আছেন তো।ভেবেই রুমের দিকে এগোয়। হয়তো রুমে আছে এটা ভেবে।

রুমে এসে দরজার ন’ব টা ঘুরিয়ে দরজাটা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে সোহা। ভিতরে অন্ধকার। সোহা ফোনের ফ্লাশ জালিয়ে রুমের লাইট জালায়।৷

পিছনে ঘুরে দেখতে পায় দায়ান মাথার চুল খামচে ধরে বসে আছে।লাইটের আলো পেয়ে চোখ মুখ কুঁচকে সোহার দিকে একবার তাকায়।

দায়ানের চোখ দেখে সোহা শিউরে ওঠে। একি অবস্থা উনার।

আপনাকে এমন দেখাচ্ছে কেন? ঠিক আছেন আপনি?
বলেই দায়ানের দিকে এগুতে নিবে,,,তার আগেই দায়ানের মুখের বাক্য শুনে থেমে যায়।

একদম আমার কাছে আগানোর চেষ্টা করবিনা।তুই কি ভেবেছিস আমি একা থাকতে পারবো না।দেখ আমি কতো ভালো আছি।চলে যা আমার সামনে থেকে। বে’হা’য়া মেয়ে মানুষ।তর লজ্জা করে না এতো কিছুর পরও আমার কাছে আসার চেষ্টা করিস।টাকা লাগবে তর? বল আমায় কত টাকা লাগবে কতো টাকা হলে মুক্তি দিবি আমায়? আমি তোকে জাস্ট ঘৃ’ণা করি। তুই আমায় আর জালাইস না।মুক্তি দে আমায়।

সোহা দায়ানের কথায় স্ত’ব্ধ হয়ে রয়েছে।উনি আমায় ঘৃ’ণা করে? মুক্তি চায় আমার থেকে। আমিকি উনার টাকার জন্য উনার সাথে আছি।এসব ভেবেই কেদে দেয়।

কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠে,,, আ-আপনি এগুলা কি বলছেন দায়ান? কি হয়েছে বলেন আমায়? আমি কি কিছু ভুল করেছি? আপনি এগুলো মন থেকে বলছেন না তাইনা দায়ান আমি জানি।

শুধু মন থেকে না অন্তর থেকে বলতেছি এসব বুঝলি? আর ভুল তুই কি ভুল করবি? ভুলতো করেছি আমি তোকে আমার লাইফে জায়গা দিয়ে। কিন্তু আর না তোর ছায়া ও দেখতে চাইনা।বেরিয়ে যা এখান থেকে সাথে আমার জীবন থেকেও।তর মুখ ও আমি দেখতে চাইনা।বলেই অন্য পাশে মুখ ঘুরিয়ে নেয় দায়ান।

সোহা আর দায়ানের কথা গুলো নিতে পারে না।দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসে। বাইরে প্রচন্ড বেগে বৃষ্টি হচ্ছে সেই দিকে সোহার খেয়াল নেই। এক দৌড়ে হোটেল থেকে বের হয়ে মাঝ রাস্তা দিয়েই দৌড়াতে থাকে।হঠাৎ করেই কোথা থেকে একটা গাড়ি দ্রুত বেগে ছুটে আসে।গাড়ির আলোর ঝলকানি চোখে মুখে লাগতেই সোহা চোখ খিচে বন্ধ করে নেয়।এই বুঝি সব শে/ষ।দায়ান ও এবার মু’ক্তি পেয়ে যাবে।

দায়ান সোহার চলে যাওয়ার পর উঠে দাঁড়ায়। বিছানায় ভালো করে শুয়ার জন্য এগিয়ে যায়। হাঁটতে গিয়ে কিছু একটার সাথে হোঁচট খায়। । চোখ কচলে তাকিয়ে দেখে বোতল।আর কিছু না ভেবেই বিছানায় গিয়ে শুয়ে পরে।

আর বির বির করে বলে,,,,,আই হেইট ইউ।আই জাস্ট হেইট ইউ।আমি তোমায় কখনো ক্ষমা করবোনা। কখনো না।স্বা’র্থ’পর। কখনো আমার চোখের সামনে আর আসবানা। আসলে তোমায় খু/ ন করে ফেলবো তিশা।

বলেই ঘুমিয়ে যায়।

#চলবে,,,,,,

বিঃদ্রঃ দায়ানের পুরো অতীত খুব শি’ঘ্র’ই সামনে নিয়ে আসবো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here