ভালোবাসার অনুভূতি – পর্ব ৪৮

0
1131

#ভালোবাসার_অনুভূতি
#লেখিকা‌ঃ_আরভি_আহিয়াদ_তিহু
#পর্বঃ48

“মেঘ তুই এখানে?”

মেঘের নামটা কানে আসতেই আহান,আহির,মিহির চমকে দরজার দিকে তাকালো।হিয়ান থম মেরে দরজার কাছে দাড়িয়ে আছে।আর মেঘ অশ্রুসিক্ত চোখে একপা একপা করে রুমের মধ‍্যে প্রবেশ করছে।ওর দৃষ্টি আহানের উপরে স্থির।মেঘকে এভাবে তাকাতে দেখে আহানের কলিজাটা ছ‍্যাদ করে উঠলো।মনের মধ‍্যে অজানা একটা ভয় বাসা বাধলো।ভালোবাসার মানুষটাকে হারিয়ে ফেলার ভয়।মেঘকে দেখেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে এখানে এতোক্ষন যা হয়েছে সেটা ও শুনে ফেলেছে।আর সবটা শোনার পর মেঘ হয়তো কখনো ওকে ক্ষমা করতে পারবে না,সেটা ভেবে ‘ও’ অপরাধী ভঙ্গিতে মাথাটা নিচু করে বসে রইলো।মেঘের দিকে তাকানোর সাহস ওর নেই।

মেঘ সোজা এসে আহানের সামনে দাড়ালো।আহির,মিহির,হিয়ান একে অপরের দিকে তাকাচ্ছে।এই মুহূর্তে ওদের কিছুই করার নেই।আহান এখনো মাথা নিচু করে আছে।মেঘের দিকে এক বারের জন‍্যও তাকায়নি।সবাইকে অবাক করে দিয়ে মেঘ আহানের সামনে দুইহাটু গেড়ে বসলো তারপর আহানের চোখে চোখ রেখে শান্ত স্বরে বললো

“আমার মনে হয় কি জানেন?পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পানিশমেন্ট হচ্ছে অনুতপ্ত হওয়া।আমরা যখন কোনো ভুল করার পর নিজেদের ভুলটা বুঝতে পারি তখন সেটার থেকে বড় শাস্তি আর কিছুই হয় না।”

মেঘের কথা শুনে আহান মেঘের চোখে চোখ রাখলো।আহান ভেবে ছিলো মেঘ হয়তো ওকে ভূল বুঝবে।ওর সাথে সব সম্পর্ক শেষ করে দিবে। কিন্তু মেঘ তো তার উল্টোটা করছে।ও আহানের এক হাত নিজের দুই হাতের মুঠোর মধ‍্যে নিয়ে বললো

“আজকে আপনি আমার মাম্মামের সাথে যেই ব‍্যাবহারটা করেছেন তাতে আপনার জায়গায় অন‍্যকেউ থাকলে তাকে হয়তো আমি কক্ষনো ক্ষমা করতে পারতাম না।কিন্তু আমি জানি,আপনি মাম্মামকে কতোটা ভালোবাসেন আর শ্রদ্ধা করেন।আর আপনার চোখ বলে দিচ্ছে আপনি আপনার ব‍্যাবহারের জন‍্য কতোটা গিলটি ফিল করছেন।”

মেঘের কথা শেষ হতেই আহান হুট করেই মেঘকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।তারপর অসহায় কন্ঠে বললো

“বিশ্বাস করো মেঘ পরী আমি ইচ্ছে করে মামনিকে ওসব বলিনি।রাগের মাথায় যা মুখে এসেছে তাই বলে ফেলেছি।এইবার আমি কি করবো?কিভাবে মামনির সামনে গিয়ে দাড়াবো?আমি যেই অন‍্যায় টা করেছি তাতে মামনি কক্ষনো আমাকে ক্ষমা করতে পারবে না।”

মেঘ মৃদ‍্যু হেসে বললো

“আবার একটা ভূল কথা বলে ফেললেন।কে বলেছে মাম্মাম আপনাকে ক্ষমা করবে না?সন্তান যতোই অন‍্যায় করুক,কোনো মা তার সন্তানের উপরে কখনো রেগে থাকতে পারে না।একবার মাম্মামের কাছে গিয়ে ওনাকে সরি বলুন।দেখবেন উনি আপনাকে ক্ষমা করে দিয়েছে।”

মেঘের কথা শেষ হতেই আহান বাচ্চাদের মতো করে বললো

“সত‍্যি বলছো?মামনি সত‍্যিই আমাকে ক্ষমা করে দিবে?”

মেঘ মুচকি হেসে হ‍্যা সূচক মাথা নাড়ালো।আহান মেঘকে ছেড়ে দিয়ে উৎফুল্ল কন্ঠে বললো

“ওকে তাহলে আমি এক্ষুনি মামনিকে সরি বলে আসছি।আর থ‍্যাংক ইউ সো মাচ আমার পিচ্চি টা আমাকে ভুল না বোঝার জন‍্য।”

কথাটা বলেই আহান মেঘের কপালে চুমু খেলো।তারপর আর কোনোদিকে না তাকিয়ে এক দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো।আর মেঘ আহানের যাওয়ার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলো।এদিকে আহির,মিহির,হিয়ান হা করে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে।মেঘ ওদের এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে লজ্জায় মাথা নিচু করে নিলো।তারপর লজ্জার হাত থেকে বাচার জন‍্য বসা থেকে দাড়িয়ে দ্রুত পায়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো।

মেঘ যাওয়ার পরই আহির আর মিহির হাসতে হাসতে বেডের উপরে শুয়ে পড়লো।হিয়ান ওদের কাছে এগিয়ে গিয়ে ধমক দিয়ে বললো

“ওই তোরা এবার ভালোয় ভালোয় মাফ চাইতে যাবি নাকি তোদের লাওি মেরে পাঠাতে হবে।আমি আবার মেঘের মতো সুন্দর করে বোঝাতে পারি না।কিন্তু উড়াধুরা ক‍্যালানি অবশ‍্যই দিতে পারি।”

হিয়ানের কথা শুনে আহির আর মিহিরের হাসি থেমে গেলো।মিহির ভ্রু কুচকে বললো

“তুমি ক‍্যাল‍্যানি দিবে আর আমরা কি বসে বসে ক‍্যাল‍্যানি খাবো?”

হিয়ান মুখ বাকিয়ে বললো

“তো কি করবি শুনি?আমাকেও ক‍্যাল‍্যানি দিবি?”

আহির বসা থেকে দাড়িয়ে বললো

“উহুম,, ক‍্যাল‍্যানি কেনো দিবো?তোমার বউ নিয়ে ভেগে যাবো।না থাকবে কনে আর না হবে বিয়ে!”

কথাটা বলেই আহির দিলো এক ভো দৌড়।মিহিরও বসা থেকে দাড়িয়ে ওর পিছনে দৌড়ে যেতে যেতে বললো

“আর আমি তোদের বিয়েতে শাক্ষী দিবো।”

হিয়ানও ওদের তাড়া করতে করতে দাতে দাত চেপে বললো

“বিয়ের গুষ্টি কিলাই।করবো না আমি এই বিয়ে।আজকে তোদের মেরে হসপিটালে পাঠাবো তারপর আমার জেল ফাসি যা হওয়ার হবে।”
_____________________________

মিরা রহমান ডাইনিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে ব্রেকফাস্টের জন‍্য নাইফস দিয়ে ফ্রুটস কাটছিলেন।তখনই আহান এসে পিছন থেকে ওনাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো

“আই অ‍্যাম সরি মামনি!আই অ‍্যাম রিয়েলি ভেরি সরি।আমার ভুল হয়ে গেছে,আমি আর কক্ষনো এমন ভুল করবো না মামনি।প্লিজ তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও।বিশ্বাস করো রাগের মাথায় কি থেকে কি বলে ফেলেছি আমি নিজেও জানি না।আর কক্ষনো এমনটা হবে না।”

আহানের কথা শেষ হতেই মিরা রহমান বললেন

“কি করছিস বাবাই ছাড় আমাকে।অনেক কাজ বাকি আছে তো।”

আহান আদুরে গলায় বললো

“নাহ ছাড়বো না।”

“এভাবে জড়িয়ে ধরে রাখলে কাজ গুলো কিভাবে করবো বাবাই?অলরেডি অনেক দেরি হয়ে গেছে।একটু পরেই সবাই ব্রেকফাস্ট করার জন‍্য নিচে নামবে।প্লিজ ছাড়,,”

আহান মিড়া রহমানকে আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বাচ্চাদের মতো মুখ করে বললো

“আচ্ছা ছাড়বো,তুমি আগে আমাকে ক্ষমা করে দাও তারপর।”

আহানের কথা শুনে মিরা রহমান মুচকি হেসে বললেন

“কিসের জন‍্য ক্ষমা করবো বলতো?আরে আমি একটা ভুল করেছি তাই আমার ছোট্ট বাবাটা আমাকে একটু বকে দিয়েছে এইজন‍্য আমি কষ্ট পেতে পারি বল?আর ছোটরা ভুল করলে বড়রা যদি বকা দিতে পারে তাহলে বড়রা ভুল করলে ছোটরা কেনো বকা দিতে পারবে না?তাছাড়া তুইতো আমার আরেকটা আব্বু তোর উপর রেগে থাকার তো প্রশ্নই উঠে না।এইবার আমাকে ছাড় বাবা অনেক কাজ পড়ে আছে।”

“লাভ ইউউউ মামুনিইইই!আই লাভ ইউ ভেরি মাচ।”

বলেই আহান মিরা রহমান কে ছেড়ে দিলো।আহান ছাড়তেই আহির আর মিহির সিড়ি দিয়ে নেমে মিরা রহমানের সামনে এসে দাড়ালো।তারপর মিহির একটু ড্রামা করে বললো

“মা জননী তোমার ওই পাপিষ্ঠ ছেলেটাকে যখন ক্ষমা করেই দিয়েছো তখন আমাদের মতো দুইটা অবোলা বাচ্চাকেও ক্ষমা করে দাও।কথা দিচ্ছি জিবনে আর কোনো দিন তোমার হাতের কফি রিজেক্ট করবো না।দরকার হলে তোমার হাতের বানানো কফি দিয়ে প্রত‍্যেকদিন সাওয়ার নিবো,জামা কাপর ধুবো,ঘড় মুছবো।ইনফ‍্যাক্ট ব্রেকফাস্টে,লাঞ্চে,ডিনারে শুধুমাএ তোমার হাতের বানানো কফি খাবো আর কিচ্ছু খাবোনা।”

মিহিরের কথা শেষ হতেই আহির মিহিরকে উদ্দ‍্যেশ‍্য করে বললো

“কখন থেকে কি কফি কফি করছিস?ওগুলো কফি নয় অমৃত।আমার মামনির হাতের কফি তো অমৃতকেও হার মানাবে।”

ওদের কথা শুনে আহান ফিক করে হেসে দিলো।মিরা রহমান বিরক্তির স্বরে বললো

“এই তোরা দুইটা যা তো আমার চোখের সামনে থেকে।তোদের কাজ আর কথা দুইটার একটাও আমি গোনায় ধরি না।ইনফ‍্যাক্ট তোদের দুটোকে আমি মানুষের কাতারেও ধরি না।যাহ সর আমার চোখের সামনে থেকে উজবুকের দল।”

আহির বললো

“আহান ব্রো এর বেলায় বাবাই আর আমাদের বেলায় উজবুকের দল?ওরে মিহির কেউ আমাদের ভালোবাসে না রে।চল,আমরা আর এক মুহুর্তও এই বাড়িতে থাকবো না।এক্ষুনি এখান থেকে চলে যাবো।”

মিরা রহমান ফ্রুটস কাটতে কাটতে বললেন

“হ‍্যা তাই যাহ,তোদের মতো আহমোক বাড়িতে থাকার চেয়ে না থাকা ভালো।”

মিহির নাক ফুলিয়ে বললো

“হ‍্যা চলে যাবো। তার আগে এটা বলো তুমি আমাদের মাফ করেছো কিনা।”

মিরা রহমান কিছু বলতে যাবে তার আগে সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে হিয়ান বললো

“মনি মা যখন তোদের মানুষ বলেই মনে করেন না তাহলে আবার মাফ করবে কিভাবে?গরু ছাগলকে কি আর মাফ করা যায়?”

হিয়ানের কথা শুনে আহির নাক ফুলিয়ে বললো

“এতো বড় অপমানের পর এই বাড়িতে থাকার তো কোনো প্রশ্নই উঠে না।মিহির চল আমরা হিমালয়ে চলে যাই। আর যাওয়ার আগে আমার আলিশা বেবিকেও সাথে করে নিয়ে যাবো।ওর বিয়ে আমি কিছুতেই এই রাক্ষস ছেলের সাথে দিবো না।”

হিয়ান চেচিয়ে বললো

“আহিরের বাচ্চা আবার এক কথা বলছিস?এতোক্ষন মার খেয়েও তোর শিক্ষা হয়নি?”

কথাটা বলেই হিয়ান আবার আহিরকে তাড়া করলো।
_____________________________

ব্রেকফাস্ট করার পর মিহিরের ভীষন বোরিং লাগছিলো।সবাই সবার মতো কাজ নিয়ে ব‍্যাস্ত।হিয়ান আলিশার সাথে ফোনে কথা বলছে।আহান ডেকারেশনের লোকদের ইন্সট্রাকশন দিয়ে কাজ করাচ্ছে।মেঘ আর সাড়িকা মিড়া রহমানদের কাজে হেল্প করে দিচ্ছে।আহির গিয়ে ঘুমাচ্ছে।কারন ওদের কারোরই ফ্লোরে শোয়ার অভ‍্যাস নেই তাই কালকে রাতে কেউই ভালো করে ঘুমাতে পারেনি।মিহিরেরও শরীরটা কেমন ম‍্যাজ ম‍্যাজ করছে তাই ভাবলো ও গিয়ে একটু ঘুমাবে।যেই ভাবা সেই কাজ।মিহির সিড়ি বেয়ে উপরে এসে কড়িডোর দিয়ে হেটে হিয়ানের রুমে যাচ্ছিলো। তখনই দেখলো সাঈফা পানির বোতল হাতে নিয়ে দেয়াল ধরে খুড়িয়ে খুড়িয়ে রুম থেক‍ে বের হয়ে নিচের দিকে যাচ্ছে।সাঈফা কে দেখে মিহিরের পা দুটো থেমে গেলো।চোখ জোড়া স্থির হয়ে গেলো এলোমেলো চুলের মেয়েটার উপর।আজ যেনো সাঈফা কে বড্ড আগোছালো লাগছে।চুল গুলো খোলা অবস্থায় পিঠে ছড়িয়ে পড়ে আছে।চোখের নিচে কালো দাগ পড়েছে,মুখ টা শুকিয়ে একদম পানসে হয়ে গেছে।ঠিক মতো দাড়াতে অবদি পারছে না।মিহির দ্রুত পায়ে সাঈফার সামনে গিয়ে দাড়ালো।তারপর চিন্তিত ভঙ্গিতে বললো

“আর ইউ ওকে?”

সাঈফা গম্ভীর স্বরে বললো

“ইয়াহ!একদম ফিট এন্ড ফাইন।”

বলেই সাঈফা একপা এগোতে নিলেই ওর শরীর টা অবশ হয়ে আসলো।মাথা ঘুড়িয়ে পড়ে যাবে ঠিক সেই সময়ে মিহির এক হাত সাঈফার কোমরে দিয়ে ওকে ধরে ফেললো।মিহিরকে ধরতে দেখে সাঈফা যেনো তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো।ও ধাক্কা দিয়ে মিহিরকে নিজের থেকে সরিয়ে দিয়ে দাতে দাত চেপে বললো

“ডোন্ট ডেয়ার টু টাচ মি..মিঃ তাসনিধ সায়াজ মিহির।আপনার সাহস হলো কিভাবে আমাকে টাচ করার?”

সাঈফার কথা শুনে মিহির ঝটকা খেলো।যেই মেয়ে ওর সাথে সামান‍্য একটু কথা বলার জন‍্য এতো পাগলামি করেছে।সে কিনা আজকে ও একটু ছুয়েছে বলে এইভাবে রিয়‍্যাক্ট করছে?মাএ কয়েকদিনে একটা মানুষের কি এতোটাও বদলে যাওয়া সম্ভব?হ‍্যা এতোদিন হয়তো সাঈফা ওকে ইগনোর করেছে কিন্তু এভাবে কখনো কথা বলেনি।মিহির একটু ইতস্তত কন্ঠে বললো

“তুই মাথা ঘুড়ে পড়ে যাচ্ছিলি তাই তোকে ধরেছি নাহলে আমি কখনো তোর মতো মেয়ের ধারে কাছেও আসতাম না।”

মিহিরের কথাটা যেনো সাঈফার কাছে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মতো লাগলো।ও মৃদ‍্যু চিল্লিয়ে বললো

“পড়ে গেলে যেতাম।আপনাকে আমার জন‍্য এতো দয়া দেখাতে কে বলেছে।আমি যদি মরেও যাই তাহলেও আপনার থেকে আমার কোনো দয়া লাগবে না।”

সাঈফার কথাটা মিহিরের ইগোতে লাগলো।ও রাগি স্বরে বললো

“আমারও তোর মতো অসভ‍্য মেয়েদের প্রতি এতো দয়া দেখানোর শখ নেই।আর দয়া দেখাবো কি করে?তুই তো আমার দয়া পাবারও যোগ‍্য না।তুই বেচে থাকলেও আমার কিছু আসে যায় না।আর মরে গেলে তো এই পৃথিবীতে আমার থেকে বেশি খুশী আর কেউ হবে না।”

কথাটা বলেই মিহির হনহন করে হেটে হিয়ানের রুমের দিকে চলে গেলো।সাঈফার চোখ থেকে গাল গরিয়ে পানি পড়ছে।ও একটা তাছ‍িল‍্য হাসি দিয়ে বললো

“আপনাকে খুশী করার জন‍্য তো আল্লাহর কাছে রোজ নিজের মৃত‍্যু কামনা করি।কিন্তু উনি তো আমার দিকে মুখ তুলে তাকান না।তবে মন থেকে কিছু চাইলে আল্লাহ নাকি কখনো তার বান্দাদের ফেরান না।হয়তো আমাকেও ফেরাবেন না।কোনো একদিন হয়তো আপনাদের সবাইকে মুক্তি দিয়ে এক অন্ধকার রাজ‍্যে পাড়ি জমাবো।যেখান থেকে কেউ চাইলেও আর কখনো আমাকে ফিরিয়ে আনতে পারবে না।”

কথাটা সাঈফা বেশ আস্তে করে বললেও মিহিরের কানে ঠিকই পৌছালো।ও হাটা থামিয়ে দাড়িয়ে গেলো।হঠাৎ ওর মনে হলো ওর বুকের বাম পাশে কেমন চিনচিন ব‍্যাথ‍্যা করছে।ভিষন কষ্টও হচ্ছে।মিহির আবারও হেটে সামনে এগোতে নিলেই ওর কানে কিছু পড়ে যাওয়ার একটা শব্দ ভেষে এলো।মিহির পিছনে তাকিয়ে দেখলো সাঈফা পেট ধরে ফ্লোরে বসে আছে আর ওর চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পড়ছে।মিহির দ্রুত সাঈফার কাছে গিয়ে ওকে পাজ কোলে তুলে নিলো।সাঈফা হাত পা ছুড়তে ছুড়তে অসফুট স্বরে বললো

“ছাড়ুন আমাকে!একদম আমাকে ছোবেন না।”

মিহির একটা ধমক দিয়ে বললো

“কানের নিচে ঠাটিয়ে দুইটা চড় দিবো।তোর সব ঢং আর ন‍্যাক‍্যামো বের হয়ে যাবে।এই টুকু পুচকে মেয়ে আমাকে এ‍্যাটিটিউট দেখাতে আসিস?এমন মার মারবো তোর সব এ‍্যাটিটিউট বেড়িয়ে যাবে।”

কথাটা বলতে বলতে মিহির সাঈফাকে ওদের রুমে নিয়ে আসলো।ভিতরে ঢুকে সাঈফাকে বেডের উপর শুইয়ে দিয়ে ও গিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিলো।দরজা বন্ধ করতে দেখে ভয়ে সাঈফার কলিজার পানি শুকিয়ে গেলো।ওর মনে হচ্ছে মিহির ওকে মারার জন‍্য দরজা বন্ধ করেছে।মিহির সাঈফার দিকে এগিয়ে আসতেই ও ভয়ে একদম নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে বেডের অপর প্রান্তে চলে গেলো।

চলবে,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here