#ভালোবাসার_অনুভূতি
#লেখিকাঃ_আরভি_আহিয়াদ_তিহু
#পর্বঃ63
সকালের মৃদ্যু রোদের আলো চোখে পড়তেই পিটপিট করে চোখ খুললো আহান।বুকে ভারি কিছু অনুভব করতেই ঘুমুঘুমু চোখে মেঘের দিকে তাকালো।তাকিয়েই মুহূর্তের মধ্যে ওর চোখ থেকে ঘুমের রেশ কেটে গিয়ে ঠোটের কোনে এক চিলতে মিষ্টি হাসি ফুটে উঠলো।মেঘ গুটিশুটি মেরে আহানের বুকের সাথে লেগে ঘুমিয়ে আছে।ওর মাথার ছোট ছোট চুলগুলো এলোমেলো হয়ে মুখের উপর পড়ে আছে।আহান আলতো হাতে খুব যত্ন করে মেঘের মুখের উপর থেকে চুলগুলো সরিয়ে কানের পাশে গুজে দিলো।গালে হাতের স্পর্শ লাগায় মেঘ একটু নড়ে উঠে আবার আহান কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লো।মেঘের কান্ড দেখে আহান আলতো হেসে ওর কপালে গভীর ভাবে একটা চুমু খেলো।তারপর খুব সাবধানে মেঘকে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে বেডে থেকে নেমে ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেস হওয়ার জন্য।
আহান ওয়াশরুম থেকে ফ্রেস হয়ে বের হয়ে দেখলো মেঘ বেডের উপর নেই।রুমের দরজাটাও খুলে রাখা।ওর আর বুঝতে বাকি রইলো না মেঘ ঘুম থেকে উঠে ওকে না বলেই চলে গেছে।আহান তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বিরবির করে বললো
“যতোই পালিয়ে যাও না কেনো,ঘুরে ফিরে তোমাকে সেই আমার কাছেই আসতে হবে।হয় ভালোয় ভালোয় আসবে,নাহলে জোড় করে নিয়ে আসবো।”
কথাটা বলে আহান হাতে থাকা তোয়ালে টা বেডের উপর ছুড়ে মেরে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
____________________________
মেঘ নিজের রুমে এসে জোড়ে জোড়ে দম নিতে লাগলো।নিজের উপর ওর ভিষন রাগ হচ্ছে।কেনো যে এখানে আসতে গেলো?বিয়ের জন্যে এই বাড়িতে না আসলেই আর এসব কিছু হতো না।মেঘ দরজার সাথে পিঠ ঠেকিয়ে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে বললো
“এতোদিন তো আপনারা সবাই আমাকে ছাড়াই থেকেছেন।বাকি জিবনটাও নাহয় আমাকে ছাড়াই থাকলেন।এখন শেষ সময়ে শুধু শুধু মায়া বাড়িয়ে কি লাভ?তার থেকে বরং এতোদিন সবটা যেভাবে চলছিলো সেভাবেই চলুক।আপনারা আপনাদের মতো ভালো থাকুন আর আমি আমার মৃত্যুর জন্যে অপেক্ষা করতে থাকি।”
কথাটা বলে মেঘ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ওয়াশরুমে চলে গেলো।ফ্রেস হয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে অফিসে যাওয়ার জন্যে রেডি হতে লাগলো।’ও’ তিনদিনের ছুটি নিয়েছিলো।গতোকালই ওর ছুটি শেষ হয়ে গেছে।যদিও ‘ও’ পার্ট টাইম জবটা করে।কিন্তু অফিস থেকে যে ফাইলগুলো ওকে কম্পিলিট করার জন্যে দিয়েছিলো,সেগুলো এখনো কম্পিলিট করা হয়নি।আর এখানে থাকলে এতো লোকজনের মধ্যে কম্পিলিট করাও সম্ভব না।তাই আজকে তাড়াতাড়ি অফিসে গিয়ে বাকি ফাইলগুলো কম্পিলিট করে ফেলবে।মেঘ পাউডার পিংক কালারের একটা সালোয়ার সুট পড়ে নিলো,সাথে হোয়াইট কালারের হিজাব।তারপর ছোট্ট হ্যান্ড ব্যাগ আর ফাইলগুলো হাতে নিয়ে দ্রুত রুমে থেকে বেরিয়ে গেলো।
__________
মেঘ নিচে এসে দেখলো আহান,আহির,হিয়ান,মিহির,অভি,রিয়ান, আহাদ খান,আজম রহমান সবাই ড্রইংরুমে বসে কফি আর স্নাক্স খাচ্ছে।মেঘ ওদের দেখেও,না দেখার ভান করে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলেই পিছন থেকে ওর বাসার সেই সার্ভেন্ট মহিলা বললো
“মেঘ মা কোথায় যাচ্ছো?”
ওনার কথা শুনে মেঘ দাড়িয়ে গেলো।ড্রইং উপস্থিত সবাই মেঘের দিকে তাকালো।মেঘ পিছনে ঘুরে জোর পূর্বক হেসে বললো
“খালা আমার ছুটি তো শেষ।তাই অফিসে যাচ্ছি।”
মহিলা কিছু বলতে যাবে তার আগেই আহান সোফা থেকে উঠে দাড়িয়ে মেঘের দিকে আসতে আসতে বললো
“অফিসে যাচ্ছো মানে?আজকে তো রিসেভশন।সবাই সেখানে উপস্থিত থাকবে আর তুমি অফিসে চলে যাচ্ছো?”
কথাটা বলতে বলতে আহান এসে মেঘের সামনে দাড়ালো।মেঘ স্বাভাবিক ভাবেই বললো
“সবাই উপস্থিত থাকলেও আমি থাকতে পারবো না।প্রথমতো আমার ছুটি শেষ আর দ্বীতিয়তো আমার এইসবে কোনো ইন্টারেষ্ট নেই।শুধু সাড়িকা,সাঈফা আমি না আসলে বিয়ে করবে না বলে জেদ করেছিলো তাই এখানে এসে ছিলাম।এখন যখন বিয়েটা হয়েই গেছে তাহলে আমার আর এখানে কোনো কাজ নেই।”
মেঘ এইটুকু বলে সার্ভেন্ট মহিলাটার দিকে তাকিয়ে বললো
“খালা জামা-কাপর সব কিছু গুছিয়ে নিও।আমরা কালকে সকালেই বাসায় চলে যাবো।”
মেঘ কথাটা বলে আর কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে হনহন করে বাসা থেকে বেড়িয়ে গেলো।আহান মেঘের যাওয়ার দিকে রাগি দৃষ্টিতে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে গটগট করে উপরে চলে গেলো।
__________________________
মেঘ অফিসে এসে ফাইলগুলো কম্পিলিট করে ক্যান্টিনে চলে গেলো।সেখানে গিয়ে অল্পকিছু খাবার খেয়ে মেডিসিন খেয়ে নিলো।তারপর আবার নিজের ডেস্কে এসে ফাইলগুলো হাতে নিয়ে বসের কেবিনের দিকে পা বাড়ালো।কেবিনের সামনে এসে ভিতরে যাওয়ার জন্যে পারমিশন চাইতেই ওইপাশ থেকে ভিতরে যাওয়ার অনুমতি দিলো।
মেঘ ভিতরে ঢুকে চেয়ারে বসে থাকা ব্যাক্তিটার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে ফাইলগুলো ওনার সামনে টেবিলের উপরে রাখলো।ব্যাক্তিটি ফাইলগুলো চেক না করে মেঘের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।ওনাকে এভাবে তাকাতে দেখে মেঘের মুখ থেকে হাসিটা মিলিয়ে গেলো।এই লোকটা মেঘকে বড্ড স্নেহ করে।মেঘ ওনাকে স্যার বলে ডাকলেও উনি সবসময় মেঘকে মামনি বলে সম্মোধন করে।প্রথম প্রথম যখন মেঘের কাজ বুঝতে সমস্যা হতো তখন উনি নিজে দাড়িয়ে থেকে ওকে সবটা বুঝিয়ে দিতেন।মেঘ চিন্তিতো ভঙ্গিতে জিঙ্গেস করলো
“স্যার এনি প্রভলেম?আপনাকে এমন লাগছে কেনো?”
মেঘের কথা শুনে লোকটা বসা থেকে দাড়িয়ে মেঘের কাছে এসে ওর মাথায় এক হাত রেখে বললো
“সরি মামনি,বিনা অপরাধে তোমাকে এই অফিস থেকে বের করে দিতে বাধ্য হচ্ছি।পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও প্লিজ।”
ওনার কথা শুনে মেঘ হতবাক হয়ে গেলো।হঠাৎ ওকে এভাবে নোটিশ ছাড়াই কেনো অফিস থেকে বের করে দিচ্ছে ‘ও’ সেটাই বুঝতে পারছে না।মেঘ বললো
“হঠাৎ করে কেনো আমাকে এভাবে বের করে দিচ্ছেন স্যার?আমি কি কোনো অন্যায় করে ফেলেছি?”
লোকটা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো
“একটু আগে আহান খান ফোন করেছিলেন।উনিই বলেছেন তোমাকে এই জবটা থেকে বের করে দিতে।আমি প্রথমে না করেছিলাম।কিন্তু উনি বলেছেন যদি তোমাকে আজকের মধ্যে অফিস থেকে বের করে দেই তাহলে নেক্সট প্রযেক্টের কাজটা উনি আমাদের দিবেন।আর যদি ওনার কথা না শুনি তাহলে উনি আমাদের কম্পানি ধুলোয় মিশিয়ে দিবেন।”
লোকটার কথা শুনে মেঘ দু-কদম পিছিয়ে গেলো।শেষ পযর্ন্ত আহান ওর সাথে এটা করতে পারলো?লোকটি আবারও বললো
“দেখো মা,আমরা সবাই জানি ওনাদের কতো ক্ষমতা।ওনারা চাইলে যেকোনো সময় আমার কম্পানিটা শেষ করে দিতে পারেন।তাই আহান খানের কথা শোনা ছাড়া আমার আর কোনো উপায় নেই।প্লিজ যদি পারো আমাকে মাফ করে দিও।”
____________________________
বিকাল 04:00
রাস্তার দিয়ে এলোমেলো পায়ে হেটে যাচ্ছে মেঘ।বারবার ওর চোখ জোড়া ঝাপসা হয়ে আসছে।মাথাটা কেমন খালি খালি লাগছে।মাএ কয়েক ঘন্টার মধ্যে ওর জব,বাসা সবকিছু চলে গেলো।এখন কোথায় যাবে?কি করবে?কিচ্ছু বুঝতে পারছে না।এতো অল্প সময়ের মধ্যে নিউ জব,নিউ ফ্লাট কোথায় পাবে?
মেঘ ওর বসকে অনেক রিকোয়েস্ট করেছিলো কিন্তু উনি কিছুতেই মেঘকে আর ওনার কম্পানিতে রাখেনি।ওনার কিছুই করার ছিলো না।একজন এমপ্লোই কে রাখতে গিয়ে তো আর উনি পুরো কম্পানিটাকে ডোবাতে পারেন না।অগত্যা মেঘের জবটা চলেই গেলো।’ও’ বসের কেবিন থেকে বের হয়ে ডেস্কের কাছে গিয়ে নিজের সব জিনিস পএ ব্যাগে ঢোকাচ্ছিলো।ঠিক তখনই ওর ফোনে বাড়িওয়ালার কল আসে।ফোনের ওপাশ থেকে বাড়িওয়ালা একদম স্পষ্ট কন্ঠে বলে মেঘকে ফ্লাটে রাখা ওনাদের পক্ষে আর সম্ভব না।তাই মেঘ যেনো তাড়াতাড়ি এসে নিজের জিনিস-পএ গুলো নিয়ে চলে যায়। মেঘ ওনার কাছে এসবের কারন জানতে চাইলে উনি কিছু না বলেই হুট করে ফোনটা কেটে দেয়।তবে ‘ও’ খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে এটাও আহানের কাজ।
মেঘ হাটতে হাটতে অফিস থেকে অনেক দূরে চলে এসেছে।’ও’ ঠিক কোথায় যাচ্ছে সেটা ওর নিজেরও জানা নেই।শুধু শূন্য দৃষ্টিতে সামনে তাকিয়ে গন্তব্যহীন হেটে চলেছে।হঠাৎ মেঘের পাশে এসে একটা গাড়ি এসে জোড়ে ব্রেক করায় ‘ও’ চমকে উঠলো।তারপর ঘুরে গাড়ির দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আহান গাড়ি থেকে বের হয়ে ওকে টেনে নিয়ে গিয়ে পিছনের সিটে বসিয়ে দিয়ে দরজা লক করে দিলো।এলপর নিজেও গিয়ে ওপর পাশের দরজা খুলে মেঘের পাশে বসে পড়লো।ওরা বসতেই ড্রাইবার গাড়ি ষ্টার্ড দিলো।
গাড়ি ছুটে চলেছে তার নিজস্ব গতিতে।আর মেঘ আহানের পাশে বসে ওর দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আহান ডোন্ট কেয়ার একটা ভাব নিয়ে নিজের মতো ফোন স্ক্রল করে যাচ্ছে।হুট করেই মেঘ আহানের হাত থেকে ফোনটা টেনে নিয়ে গিয়ে সামনের দিকে ছুরে মারলো।ফোনটা গিয়ে গাড়ির সামনের কাচের সাথে লেগে সিটের উপরে ছিটকে পড়লো।মেঘের এমন কান্ডে আহান ফিক করে হেসে দিলো।তারপর মেঘকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“শুধু শুধু আমার উপরে থাকা রাগ বেচারা ফোনটার উপরে কেনো ঝাড়ছো বলো তো?পারলে যা বলার আমাকে বলো।”
মেঘ যেনো এতোক্ষন এটা শোনারই অপেক্ষায় ছিলো।আহানের কথা শেষ হতেই ‘ও’ চেচিয়ে বললো
“সমস্যা কি আপনার?শুধু শুধু আমার পিছনে পড়ে আছেন কেনো?আপনি বুঝতে পারেন না যে আমি আপনাকে একদম সহ্য করতে পারি না।তারপরেও কেনো আপনি বারবার আমার সামনে চলে আসেন?কি চান আপনি?”
মেঘের কথা আহান এক কান দিয়ে ঢুকিয়ে অন্য কান দিয়ে বের করে দিলো।তারপর হামি দিতে দিতে বললো
“বেশি কিছু চাই না।শুধু চাই আজকে সন্ধ্যায় তুমি আমার সাথে রিসেপশন পার্টিতে জয়েন করো।”
মেঘ রাগী কন্ঠে বললো
“নাহ আমি যাবো না।আমার কাজ আছে।”
আহান দাতে দাত চেপে বললো
“তোমার থেকে পারমিশন চেয়েছি নাকি?আমি বলেছি তুমি আমার সাথে যাবে মানে যাবে।এই বিষয় নিয়ে আমি কিছু বলতেও চাইনা আর শুনতেও চাইনা।”
আহানের কথা শেষ হতেই মেঘ বললো
“দেখুন আপনার জন্যে আমার জব আর ফ্লাট দুটোই চলে গেছে।তাই আমি রিসিভশনে আসতে পারবো না।আমাকে নিউ জব আর ফ্লাট দুটোই খুজতে বের হতে হবে।”
মেঘের কথা শুনে আহান বিদ্রুপের হাসি হেসে বললো
“এইসব ননসেন্স চিন্তা ভাবনা করা বাদ দাও।তুমি এখন থেকে আমার সাথে আমাদের বাড়িতেই থাকবে।আর জব করার ভুত মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে লেখাপড়ায় কনসিনট্রিয়েট করো।এতোদিন নিজের যা ভালো মনে হয়েছে তাই করেছো।এখন থেকে আমি যা বলবো তাই করবে।গট ইট?”
_________________________
রাত 08:00
রিসিভশন পার্টিতে সবাই নিজেদের মতো ইনজয় করছে।আহির,মিহির,আহান,অভি,হিয়ান ওরা মেহমানদের সাথে কথা বলছে।মেঘ এক কোনায় চুপচাপ দাড়িয়ে আছে।ভিষন শরীর খারাপ লাগছে ওর।মাথার মধ্যে অনেক যন্থনা হচ্ছে।জব আর ফ্লাট চলে যাওয়ার টেনশন,আহানের দেওয়া হুমকি,ওকে জোড় করে রিসিভশনে নিয়ে আসা আর এখন এখানে উপস্থিত মানুষের চিৎকার চেচামেচি সব মিলিয়ে মেঘের মাথায় ভিষন চাপ পড়েছে।ডাক্তার ওকে সব সময় টেনশন ফ্রি থাকতে বলেছে।কোনো কিছু ভেবে ব্রেনে অতিরিক্ত চাপ দিতে বারন করেছে।কারন ব্রেনে অতিরিক্ত চাপ পড়লে যেকোনো সময় ওর ব্রেন ষ্টোক হতে পারে।আর যদি ষ্টোক নাও হয় তাহলেও বড় ধরনের কোনো সমস্যা হয়ে যেতে পারে।যেটা এই মুহূর্তে মেঘের জন্যে লাইফ রিস্ক হয়ে যেতে পারে।অনেকক্ষন একা একা দাড়িয়ে থাকার পরেও মেঘ যখন বুঝতে পারলো ওর মাথা ব্যাথ্যা না কমে আরো বেড়ে যাচ্ছে তখন ‘ও’ বাসার ভিতরে যাওয়ার জন্যে পা বাড়ালো।
এদিকে আহানের ফোন আসায় ‘ও’ পকেট থেকে ফোন বের করে দেখলো ওর সোর্স কল দিয়েছে।তাই ‘ও’ একটু সাইডে গিয়ে ফোনটা রিসিভ করে কানে ধরলো।ফোনটা কানে ধরতেই ফোনের ওপাশ থেকে যা বললো সেটা শুনে আহানের পৃথিবী থমকে গেলো।ওর পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেলো।আহান যেনো নিজেই কানকেই বিশ্বাস করতে পারছে না।’ও’ শুধু র্নিবাক হয়ে অপর পাশের ব্যাক্তির কথা গুলো শুনে গেলো।ওর মুখ থেকে একটা শব্দও বের হলো না।ফোনটা কাটতেই আহান হতবাক হয়ে থম মেরে কিছুক্ষন দাড়িয়ে রইলো।তারপর ছুটে গেলো মেঘকে খোজার জন্যে।আহান পাগলের মতো দৌড়ে দৌড়ে পার্টির মধ্যে মেঘকে হন্নে হয়ে খুজে যাচ্ছে।ওকে দেখে মনে হচ্ছে ওর খুব প্রিয় একটা জিনিস হারিয়ে গেছে সেটাকেই ‘ও’ এভাবে পাগলের মতো খুজে চলেছে।আহানের এমন দৌড়াদৌড়ি দেখে অনেকেই ওর দিকে তাকিয়ে আছে।কিন্তু সেদিকে ওর বিন্দুর মাএও ভ্রুক্ষেপ নেই।এই মুহূর্তে ওর তো শুধুমাত্র মেঘ পরীকে চাই।খুজতে খুজতে আহান তার মেঘ পরীকে পেয়েও গেলো।আহান দৌড়ে মেঘের কাছে আসতে নিবে ঠিক তখনই মেঘ মাথ ঘুড়ে ঠাস করে মাটিতে পড়ে গেলো।মেঘকে পরে যেতে দেখে আহান জোড়ে “মেঘ পরী” বলে চিৎকার দিলো।আহানের চিৎকারে পার্টিতে উপস্থিত সবাই হতোবম্ভ হয়ে গেলো।কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই আহান দৌড়ে মেঘের কাছে গিয়ে ওকে বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে হাউমাউ করে কেদে দিলো।আর ওখানে উপস্থিত সবাই স্তব্দ হয়ে আহানের দিকে তাকিয়ে ওর কান্না দেখছে দেখছে।
চলবে
বিঃদ্রঃ আর শুধুমাত্র একটা পর্ব আছে😶😶