#মিশে_আছো_মুগ্ধতায়
#লেখনীঃআরভি_আহিয়াদ_তিহু
#পর্বঃ31
পুরো দমে অভির বিয়ের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। আত্মীয়-স্বজনেরা মোটামুটি সবাই চলে এসেছে। বিয়েটা অভিদের ফার্ম হাউজে বসেই হবে। ওখানেই দিশা আর অভির বিয়ের সমস্ত রিচুয়াল’স একসাথে পালন করা হবে। ওদের বিয়ের আয়োজনটা মোটামুটি ধূমধাম করেই দেওয়া হচ্ছে। আত্মীয়-স্বজনেরা ছাড়াও আজম রহমানের বিজনেস পার্টনার, অফিসের এমপ্লোই সহ সবাইকেই প্রায় এই বিয়েতে ইনভাইট করা হয়েছে। অভির বাবা নিজের একমাএ ছেলের বিয়েতে কোনো রকম কমতি রাখেনি। অভি যেভাবে বলেছে ওনি ঠিক সেই ভাবেই বিয়ের সমস্ত আয়োজন করেছেন।
বিকাল 4:30
মেঘ কিচেনে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ফ্রুটস কাটছিলো। তখনই মিড়া রহমান দ্রুত পায়ে কিচেনে ঢুকে মেঘের হাতে বড় একটা ট্রে ধরিয়ে দিলো। ট্রে’টার একপাশে অনেক গুলো টাওয়েল ভাজ করে রাখা। আরেক পাশে কতোগুলো মিনি টুথপেস্ট, টুথব্রাশ, স্যাম্পুর-কন্ডিশনারের ছোট কিউব, বডি-ওয়াশের ছোট বোতল রাখা। মেঘ ট্রে’টার দিকে এক পলক তাকিয়ে ট্রেতে থাকা জিনিস পএ গুলো একবার ভালো করে দেখে নিলো। তারপর মিড়া রহমানকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“এই গুলো দিয়ে কি করবো মাম্মাম?”
মিড়া রহমান ছুড়ি হাতে নিয়ে ফল কাটতে কাটতে ব্যাস্ত কন্ঠে বললেন
“উপরে গিয়ে প্রত্যেকটা ওয়াশ রুমে একটা করে টুথপেস্ট, টুথব্রাশ, শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, বডিওয়াশ এবং টাওয়েল রেখে আসবে। আর যেগুলো কাপলদের রুম ওগুলোতে টুথব্রাশ এবং টাওয়েল দুটো করে রেখে আসবে। আর আসার আগে প্রত্যেকটা রুম ভালো করে চেক করে দেখে আসবে যে সার্ভেন্ট’রা রুমগুলো ঠিক ভাবে গুছিয়েছে কিনা। একটু পরেই কিন্তু মেহমান’রা সবাই এখানে চলে আসবে। তখন কিন্তু আর কোনো কিছু গোছানোর সময়ই থাকবে না। তাই ঝটফট গিয়ে কাজটা করে আসো।”
মিড়া রহমানের কথায় মেঘ মাথা নেড়ে সম্মতি জানিয়ে ট্রে’টা হাতে নিয়ে কিচেন থেকে বের হয়ে গেলো। মেঘের এখন ছেড়ে দে মা, কেদে বাচি’র মতো অবস্থা। ওরা আজকে সকালেই এখানে এসেছে। আসার পর থেকে মিড়া রহমান সমানে মেঘ, সাড়িকা, সাঈফাকে দিয়ে কাজ করিয়ে যাচ্ছেন। উনি ওদের শান্তিতে এক মিনিট শ্বাস নেওয়ারও সময় দিচ্ছেন না। ওরা একটা কাজ শেষ করে আসার সাথে সাথে, মিড়া রহমান আরেকটা কাজের ফর্দ নিয়ে এসে ওদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন। সারাদিন এভাবে দৌড়ে দৌড়ে কাজ করতে গিয়ে সাড়িকা, সাঈফা, মেঘ তিন জনেরই একদম নাজেহাল অবস্থা হয়ে গেছে।
মেঘ ট্রে টা হাতে নিয়ে ড্রইংরুমে এসে দেখলো সাড়িকা, সাঈফা কোমড়ে হাত রেখে সোফার সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে। দুজনকেই দেখেই বোঝা যাচ্ছে ওরা বেশ ক্লান্ত। মেঘ এগিয়ে এসে নিজের হাতে থাকা ট্রে টা সাঈফার কোলের উপর রেখে ‘ও’ নিজেও সোফার উপর বসে পড়লো। তারপর সোফার সাথে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে সাঈফাকে উদ্দ্যেশ্য করে ক্লান্ত স্বরে বললো
“সাঈফু প্লিজ বনু, এইগুলো উপরে গিয়ে রেখে আয়। আমি আর পারছি না। আমার পা একদম অবশ হয়ে গেছে।”
মেঘের কথা শুনে সাঈফা কাদো কাদো কন্ঠে বললো
“তোমার তো শুধু পা অবশ হয়েছে আপি। আমার তো পুরো বডিটাই অবশ হয়ে গেছে। আগে যদি জানতাম, এখানে নিয়ে এসে আমাদের এভাবে জড়িনার মতো কাজ করাবে, তাহলে আমরা এখানে কখনোই এখানে আসতাম না।”
সাঈফার কথা শেষ হতেই সাড়িকা বললো
“আমি তো এখান থেকে আজকে রাতেই পালিয়ে যাবো ভাই। এরকম সাংঘাতিক বিয়েতে থাকার কোনো ইচ্ছেই আমার নেই। আগে নিজের জীবন বাচাই, তারপর এমন বিয়ে পরেও খাওয়া যাবে।”
সাড়িকা কথাটা শেষ করতেই সাঈফা ওর হাতে থাকা ট্রে’ টা সাড়িকার হাতে ধরিয়ে দিলো। তারপর অসহায় কন্ঠে বললো
“নিজের জীবন পরেও বাচাতে পারবি, আগে তোর এই ছোট্ট বোনটার জিবনটা বাচা। প্লিজ উপরে গিয়ে এইগুলো একটু রেখে আয়। আমার এখন এখান থেকে উঠে উপরে যাওয়ার মতো একটুও এনার্জি শরীরে অবশিষ্ট নেই। প্লিজ বোন তুই যা।”
সাড়িকা বসা থেকে দাড়িয়ে ঠোট ফুলিয়ে বললো
“তোরা দুজন মিলে সব সময় আমাকেই কেনো ফাশিয়ে দিস? নিজেদের কাজ নিজেরা করতে পারিস না?”
সাড়িকার কথা শুনে মেঘ বললো
“বেশি কথা না বলে কাজ’টা শেষ করে তাড়াতাড়ি নিচে আয় প্লিজ। সন্ধ্যায় আমাদের আবার শপিংয়ের জন্যেও তো বের হতে হবে। সন্ধ্যা হতে আর বেশি সময় নেই। এখনি গিয়ে আমাদের ফ্রেশ হয়ে রেডি হতে হবে। তাড়াতাড়ি যা।”
শপিংয়ে যাওয়ার কথা শুনে সাড়িকা একদম খুশীতে গদগদ হয়ে গেলো। তাই ঠোটের কোনে মুচকি হাসি ঝুলিয়ে ট্রে হাতে নিয়ে সিড়ি বেয়ে উপরে চলে গেলো। সাড়িকা চলে যেতেই মেঘ আর সাঈফা কিটকিটিয়ে হেসে দিলো। ওরা বেশ ভালো করেই জানে যে সাড়িকা অজ্ঞান থাকা অবস্থায়ও যদি কেউ ওর কানের কাছে গিয়ে শপিং করার কথা বলে, তাহলে সাথে সাথে সাড়িকার হুশ ফিরে আসবে। কারন সাড়িকা কেনাকাটা করতে ভিষন পছন্দ করে। ওর মন ভালো করার একমাএ অস্ত্র হচ্ছে শপিং করা।মেঘ কোনো রকম নিজের হাসি থামিয়ে সাঈফাকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“বুঝলি সাঈফু, ভাবছি শপিংয়ের লোভ দেখিয়ে সাড়িকাকে দিয়ে আমার সমস্ত কাজ করিয়ে নিবো। তাহলে কেমন হবে বল তো?”
সাঈফা দুষ্টু হেসে বললো
“দারুন হবে! আমিও এটাই করবো।”
_________________________
সাড়িকা উপরে এসে প্রত্যেকটা রুমে ঢুকে রুমের সাথের এটাচ করা ওয়াশরুম গুলোতে ট্রে’তে থাকা জিনিস-পএ গুলো একে একে রাখতে লাগলো। একদম লাষ্টের রুমটায় ঢুকে সাড়িকার চোখ গেলো ব্যালকনির দিকে। সেখানে দাড়িয়ে দাড়িয়ে আহির কারো সাথে ফোনে কথা বলছে। সাড়িকা এক নজর আহিরের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো। তারপর জিনিস-পএ গুলো জায়গা মতো রেখে খালি ট্রে টা হাতে নিয়ে বাইরে বের হলো। বাইরে বের হতেই সাড়িকা দেখতে পেলো আহির দরজার পাশের দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। সাড়িকা শুকনো একটা ঢোক গিলে মাথা নিচু করে গুটিগুটি পায়ে দরজার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো। দরজার কাছাকাছি যেতেই আহির দরজাটা লক করে চাবি’টা নিজের প্যান্টের পকেটে ঢুকালো। হঠাৎ দরজা লক করায় সাড়িকা চমকে উঠে আহিরের দিকে তাকালো। আহির বাকা হেসে সাড়িকার দিকে এগিয়ে এসে ওর সামনে দাড়ালো। তারপর নিজের প্যান্টের পকেটে দু-হাত গুজে সোজা হয়ে দাড়িয়ে সাড়িকাকে উদ্দ্যেশ্য করে শান্ত কন্ঠে বললো
“এই দু-বছরে তোর সাহস অনেকটা বেড়ে গেছে দেখছি। নাহলে কি আর সাফওয়ান সিজাত আহিরকে সেদিন পার্টিতে সবার সামনে অপমান করার চেষ্টা করতি?”
আহিরের কথা শুনে সাড়িকা মাথা নিচু করে কাঠ কাঠ কন্ঠে বললো
“আমি আপনাকে সেদিন কোনো রকম অপমান করার চেষ্টা করিনি। ওটা শুধুমাত্র একটা ডেয়ার ছিলো। ওইদিন আমার পুরনো কিছু ফ্রেন্ডদের সাথে পার্টিতে দেখা হয়ে গিয়েছিলো। তখন ওরাই আপনার গায়ে ডিম ছোড়ার ডেয়ারটা দিয়েছিলো। বলেছিলো, আমি যদি আপনার গায়ে ডিম ছুড়তে পারি, তাহলে ওরা মেনে নিবে যে আমি আপনাকে একটুও ভয় পাই না।”
সাড়িকা কথাটা বলার সাথে সাথে আহির গিয়ে সাড়িকার গাল চেপে ধরলো। আকষ্মিক ঘটনায় সাড়িকার হাত থেকে ট্রে টা নিচে পড়ে গেলো। আহির দাতে দাত চেপে বললো
“তুই আমাকে ভয় পাস না, এটা প্রমান করার জন্যে তুই আমার গায়ে ডিম ছুড়ে মারলি? আরেহ তোকে আমি ভয় দেখাতে চাইনা, সেইজন্যে তুই আমাকে ভয় পাস না। নাহলে তোর মতো পুচকে মেয়েকে ভয় দেখাতে আমার বেশি কিছুর প্রয়োজন হতো না। কানের নিচে কয়েকটা চ*ড় থা*প্প*র মারলেই তোর সব সাহস খাটের তলা দিয়ে পালিয়ে যেতো।”
আহির জোড়ে গাল চেপে ধরায় সাড়িকা চোখ খিচে বন্ধ করে রেখেছে। ব্যাথায় সাড়িকার চোখের কোন থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। ‘ও’ ব্যাথায় মৃদ্যু আর্তনাদ করে আহিরকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“আমার লাগছে আহির, ছাড়ো আমাকে।”
সাড়িকার কথা শুনে আহির আরো জোড়ে সাড়িকার গাল চেপে ধরলো। তারপর রুক্ষ কন্ঠে বললো
“আমারও লেগেছিলো! খুব লেগেছিলো, যেদিন তুই আমাকে ঠকিয়ে দেশ ছেড়ে নিজের বোনের কাছে চলে গিয়েছিলি। আমিও সেদিন তোর মতো এভাবেই ছটফট করেছিলাম। কিন্তু কাউকে কিচ্ছু বলতে পারিনি। চুপচাপ মুখ বন্ধ করে সবকিছু মেনে নিয়েছি।”
আহিরের কথা শেষ হতেই সাড়িকা এক ঝটকায় আহিরের হাতটাকে নিজের গাল থেকে সরিয়ে ফেললো। তারপর আহিরের বুকে জোড়ে একটা ধাক্কা মেরে ওকে নিজের থেকে কিছুটা দূরে সরিয়ে দিলো। এরপর ক্রুদ্ধ কন্ঠে চেচিয়ে বললো
“কি বললে তুমি? আমি তোমাকে ঠকিয়েছি? কিভাবে ঠকিয়েছি আমি তোমাকে? তুমি কি মুখ ফুটে কখনো আমাকে বলেছো যে তুমি আমাকে ভালোবাসো? নাকি আমি তোমাকে কখনো বলেছি যে আমি তোমাকে ভালোবাসি?”
সাড়িকার আচমকা ধাক্কায় আহির সাড়িকার থেকে কিছুটা দূরে সরে গিয়েছিলো ঠিকই। কিন্তু সাড়িকার কথা শুনে ‘ও’ আবারও সাড়িকার দিকে এগিয়ে এসে ওর হাত পিছনে মুচকে ধরে ওকে একদম নিজের সাথে মিশিয়ে ফেললো। সাড়িকা ধাক্কা দিয়ে আহিরকে নিজের থেকে ছাড়াতে চাইলো, কিন্তু এইবার আহির ওর হাত শক্ত করে চেপে ধরায় ‘ও’ আহিরকে এক চুল পরিমানও নড়াতে পারলো না। আহির সাড়িকার একদম কাছাকাছি গিয়ে ওর চোখে চোখ রেখে বললো
“হ্যা, আমি হয়তো কখনো নিজের মুখে তোকে ভালোবাসি কথাটা বলতে পারিনি। কিন্তু তুই কি জানতিস না যে আমি তোকে ভালোবাসি?”
“হ্যা জানতাম! বেশ ভালো করেই জানতাম যে তুমি আমাকে ভালোবাসো।”
“তাহলে আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলি কেনো? কেনো আমাকে নিজের মুখে একটা বার ভালোবাসি কথাটা বলার সুযোগ দিসনি?”
আহিরের প্রশ্ন শুনে সাড়িকা কাঠ কাঠ কন্ঠে বললো
“কারন তখন আমার বোনের আমাকে খুব প্রয়োজন ছিলো। ওকে সামলানোর জন্যে আমাকে ওর কাছে যেতেই হতো। তোমরা সবাই মিলে আমার বোনটার যেই অবস্থা করেছিলে তাতে তো ওর বেচে থাকাও মুশকিল হয়ে গিয়েছিলো।”
আহির অবাক কন্ঠে বললো
“তোমরা সবাই মিলে মানে? আমি কি করেছিলাম? সাঈফাকে সেদিন মিহির অপমান করেছিলো, আমি না।”
সাড়িকা বললো
“হ্যা, সাঈফাকে সেদিন মিহির অপমান করেছিলো ঠিকই। কিন্তু তুমি পাশে দাড়িয়ে দাড়িয়ে সবটা দেখেও তোমার ভাইকে কিচ্ছু বলো নি। চুপচাপ মুখ বন্ধ করে দাড়িয়ে দাড়িয়ে শুধু আমার বোনের অপমান হওয়াটা দেখে গেছো।”
আহির বললো
“আমি কিই বা বলতাম মিহিরকে? এমনটা তো নয় যে মিহির অহেতুক কারনে সাঈফাকে অপমান করেছে। দোষ তো সাঈফারও ছিলো। ‘ও’ নিজের দোষে নিজেই মিহিরের কাছে অপমানিত হয়েছে।”
আহিরের কথা শুনে সাড়িকা বিদ্রূপের হাসি হাসলো। তারপর বললো
“হ্যা, ঠিকই বলেছো। সব দোষ আমার বোনেরই ছিলো। কারন ‘ও’ তোমার ভাইকে পাগলের মতো ভালোবাসতো। আর তোমার ভাই ওকে সব সময় অপমান করতো। যা নয় তাই বলে কথা শুনাতো। কিন্তু তাও ‘ও’ বারবার তোমার ভাইয়ের কাছে ছুটে যেতো, তার সাথে একটুখানি কথা বলার জন্যে। কিন্তু তোমার ভাই, না কখনো ওর ভালোবাসা বুঝতে পেরেছে, আর না কখনো ওর ইচ্ছের কোনো মূল্য দিয়েছে।”
সাড়িকার কথা শুনে আহির চুপ করে অসহায় দৃষ্টিতে সাড়িকার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো। কিন্তু সাড়িকা অন্যদিকে ঘাড় ঘুড়িয়ে চোখে মুখে কাঠিন্য ভাব এনে দাড়িয়ে রইলো। আহির আর কিছু না বলে সাড়িকা কে ছেড়ে দিয়ে ওর থেকে দূরে সরে গেলো। তারপর পকেট থেকে চাবিটা বের করে দরজার লক খুলে দিলো। দরজার লক খুলে সাড়িকার দিকে এগিয়ে এসে সাড়িকাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে, ওর হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে ওকে ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের করে দিলো। এতো জোড়ে ধাক্কা দেওয়ায় সাড়িকা ছিটকে গিয়ে ফ্লোরের উপর উপুর হয়ে পড়ে গেলো। আহির দরজার সামনে দাড়িয়ে সাড়িকাকে উদ্দ্যেশ্য করে শক্ত কন্ঠে বললো
“তোর শুধু নিজের বোনের কষ্টটাই চোখে পড়লো তাইনা? অথচ আমি যে এতোগুলো দিন ধরে তোর সাথে একটুখানি কথা বলার জন্যে ছটফট করেছি, সেটা কখনো তোর চোখেই পড়েনি। তুই শুধু তোর বোনের ব্যাপারেই ভেবেছিস। আমাকে নিয়ে তোর বিন্দুমাত্রও মাথা ব্যাথা ছিলো না। তবে চিন্তা করিস না, এখন থেকে আমাকে নিয়ে তোর সব সময় মাথা ব্যাথা থাকবে। আই প্রমিস, এখন থেকে তুই সারাক্ষন শুধু আমাকে নিয়েই ভাবতে বাধ্য হবি। তোকে আমি একটা সেকেন্ডও শান্তিতে নিঃশ্বাস নিতে দিবো না। যাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াট! এই দুই বছরে যতোটা ছটফট আমি করেছি, তারথেকে তিনগুন বেশি ছটফট আমি তোকে করাবো।”
কথাটা বলে আহির গিয়ে ধরাম করে নিজের রুমের দরজাটা বন্ধ করে দিলো। আর সাড়িকা অশ্রুসিক্ত চোখে বন্ধ দরজার দিকে তাকিয়ে রইলো।
#চলবে