এক তুমিতে আসক্ত – পর্ব ১৮

0
659

#এক_তুমিতে_আসক্ত
#পার্টঃ১৮
#Writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ

১২৫.

কি হয়েছে আম্মু স্টোর রুম পরিষ্কার করছো কেনো?

“আসলে কি বলতো একটা মেয়ে রুমটা ভাড়া নিয়েছে।

” হোয়াট? তাও স্টোর রুম? ছাঁদে চিলেকোঠার রুমটা দিলেইতো পারতে।

“আরে রেগে যাচ্ছিস কেনো? আসলে একা একটা মেয়ে উপরে একা দেয়নি। বিপদে পড়েছে। এই শহরে নতুন। আজকে মেয়েটার জায়গায় প্রিয়ন্তি হলে কি এমন করতাম?

” আম্মু মেয়েটাকে আমরা চিনিনা জানিনা হোট করে এমনভাবে বাসায় উঠতে দেওয়া ঠিক হবে?

“তুই এতো চিন্তা করিসনাতো। দেখলামতো মেয়েটা ভালোই৷ শান্ত সৃষ্ট।

” আম্মু তোমার না একটাই প্রবলেম মানুষের উপর দেখে ভেতর বুঝো। তুমি থাকো ভাড়াটে নিয়ে আমি গেলাম। অর্ষা প্রিয়ন্তি তাড়াতাড়ি নিচে নেমে বাইরে এসো।

প্রান্তিক হাক ছেড়ে ওদেরকে ডেকে বেরিয়ে গেলো বাইরে। মনিশা চৌধুরী কপালে হাত রেখে বলে,”হয়ে গেলো! ছেলেটা রেগেই গেলো অবশেষে আমি জানতাম ও এমন করবে কিন্তু একটা মেয়ের অনুরোধ ওতো ফেলতে পারিনা এইসব ভেবেই তিনি আবার স্টোর রুমের কাজে মন দিলেন।

১২৬.

অর্ষা তাড়াহুড়ো করে প্রান্তিকের পাশে বসে দ্রুতগতিতে বললো,”তাড়াতাড়ি চলুন লেইট হয়ে গেছে অলরেডি।

“প্রিয় কোথায়?

” যাবেনা।

“কেনো?

” ওর নাকি ভালো লাগছেনা। তাড়াতাড়ি চলুন আজ ইমপরটেন্ট ক্লাস আছে”।

অর্ষা জানালার বাইরে মুখ দিয়ে এক মনে বাইরে তাকিয়ে আছে। অর্ষার অবাধ্য চুলগুলো বার বার প্রান্তিকের চোখে মুখে পড়তেই আঁড়চোখে অর্ষার দিকে তাকায় প্রান্তিক। প্রান্তিক মনে মনে বিড়বিড় করতে থাকে,”মেয়েটা আসলেই নিষ্পাপ”।

“অর্ষা…

বাইরের প্রকৃতি দেখতে অর্ষা এতোটাই ব্যস্ত ছিলো যে প্রান্তিকের অস্ফুট ডাক তার কান অব্দি পৌঁছায়নি। প্রান্তিক অর্ষার দিকে আবার তাকিয়ে ড্রাইভ করতে করতে বললো,” অর্ষা….

“ক্ কিই কই কি হয়েছে?

” আরে হচকাচ্ছো কেনো? কিছু হয়নি। তোমার কি ফুল বেশি পছন্দ?

“আমার! কেনো বলুনতো?

” বলো”

“আরে গম্ভীর হচ্ছেন কেনো? বলছি। আমার বেলীফুল ভীষণ পছন্দ “।

” মানুষের গোলাপ পছন্দ আর তোমার বেলী! কেনো বলতো?

“জানিনা কেনো পছন্দ। তবে বেলী ফুলে এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে আমার। বেলী ফুলের নামটার সাথে এক গভীর সম্পর্ক যেনো খুঁজে পাই। কেমন একটা সাহিত্য পাওয়া যায় লাগে।

” গোধূলি লগ্নে প্রকৃতিতে মিশে থাকা একটু আদো আদো ক্লান্ত মোরে দিও,
সাথে তুমি থেকো মোর প্রিয়”

অর্ষার মুখে সাহিত্য ভাষায় এমন ছন্দ মাখা কথা শুনে প্রান্তিক বললো,”বাহ্ কি সুন্দর গভীর কথা। ক্লান্তি হোক তবে বেলী ফুল দিয়েই সব ক্লান্তি মুছে দিও” অসাধারণ।

“আপনি অর্থ বুঝে গেছেন?

” হুম কি মনে হয় আমাকে আমি পারিনা কিছু?

“আরে তা মনে হবে কেনো? আপনি হলেন মিস্টার…. প্রান্তিক ভ্রু কুঁচকে বললো,” কি? অর্ষা আমতা আমতা করে বললো,”না না কিছুনা। গাড়ি থামান ভার্সিটি এসে গেছি।

১২৭.

“কিরে মুখ এমন কালো করে আছিস কেনো?

” এমনি”

“শৈবাল তুই আবার মেয়েদের মতো ঢং করা কখন শুরু করলি গার্লফ্রেন্ড প্যারা টেরা দিছে নাকি?

শৈবাল প্রান্তিকের দিকে অসহায় ফেইস নিয়ে বললো,” প্রান্তিক তুইও? প্রান্তিক হেসে বললো,”আচ্ছা বলতো ব্যাপারটা কি? মন খারাপ কেনো?

“মন খারাপ হবেনা? বাসা থেকে মেয়ে দেখছে ”

“হুম তো? বিয়ে করে নে। আর সত্যিইতো বয়সতো কম হয়নি এখনতো বিয়ে করাই উচিৎ। নয়তো আর দাদা ডাক শুনতে পারবিনা। প্রান্তিকের এমন গা ছাড়ানো কথা শুনে শৈবাল একটু বিরক্ত নিয়ে বললো,” প্রান্তিক হয় কোনো সলিউশন দে নয়তো চুপ থাক। আর আমার বয়স হয়ছে তুমি কি ফিডার খাও বাবু? শৈবালের এমন কথা শুনে প্রান্তিক হো হো করে হেসে বলে,”নাগো তবে খাবে আমি না ছারিন এইটা বলেই প্রান্তিক আর শৈবাল অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে। হঠাৎ শৈবাল হাসি থামিয়ে বললো,”কিরে প্রান্তিক তুইতো এখনো বলিসনি যে তুই কিভাবে জানতি যে ছারিনের বিয়ে হবে।

এরপর প্রান্তিক সব খুলে বলে শৈবাল হা হয়ে তাকিয়ে অবাক সুরে বললো,”কি!

“হুমরে এইটাই আসল কথা”। আমি যদি ভিডিওটা না পাঠাতাম তাহলে একটা নিষ্পাপ বাচ্চা পৃথিবীর আলো দেখতে পেতোনা।

” যাক বাবা ভালোই করেছিস। তবে ছারিন এমন আমি ভাবতেও পারিনি।

“মানুষের উপর দেখে কি আর ভেতর যাচাই করা যায় শৈবাল?

” না তা যায়না ঠিকি বলেছিস। চল অনিকদের কাছে যায়।

১২৮.

‘এই যে মিস চাশমিস লুক এট মি’ এইটা বলেই কোনো এক ছেলের শিষ দেওয়ার আওয়াজ শুনে থমকে যায় তাইফা। পাশ থেকে রিমি মাথা নিচু করে হাঁটতে হাঁটতে বললো,’তাফু কোনো জবাব দিসনা। সোজা হেঁটে যা।

“কেনো? ওনারা অন্যায় করবে আর আমরা প্রতিবাদ করবোনা?

” আরে ওনারা আমাদের সিনিয়র ভাইয়া’

“এই যে মিস এতো ভাব কেনো দেখাও? একটু ছোঁয়ে দিলেইতো ঝড়ে যাবে। এমন নোংরা কথা শুনে হাতের মুঠোয় শক্ত করে ধরে দাঁড়িয়ে যায় তাইফা। রিমি হাত ধরে বলছে,’প্লিজ তাফু কিছু করবিনা চল প্লিজ। তাইফা হাত দিয়ে চশমাটা উপর করে ছেলেগুলোর দিকে এগিয়ে বললো,” কে বলেছপ কথাটা? ছেলেগুলোর মধ্যে একটা বিশ্রী হাসি দিয়ে আরেকটাকে বললো,”দেখ মামনির রাগ হয়েছে। তাইফা আবার রেগে চিৎকার করে বললো, “আমি জানতে চাইছি কথাটা কে বলেছে। অতঃপর একটা ছেড়ে বুক ফুলিয়ে বললো,” আমি বলেছি কি করবিরে?

ঠাসসস…ভার্সিটির প্রত্যেকটি দেয়ালে এই থাপ্পড়ের আওয়াজটা প্রতিধ্বনিতো হচ্ছে। ছেলেটা গালে হাত দিয়ে ক্ষিপ্ত কন্ঠে বলে উঠলো,” তোর এতো বড় সাহস আমাকে মারলি? এইটা বলে যেই ছেলেটা তাইফাকে মারতে গেলো হোট করেই ছেলেটির হাত ধরে ফেলে শৈবাল। ছেলেটি শৈবালকে দেখেই বললো,”ভাই ওনি আমারে থাপ্পড় মারছে।

“শৈবাল মেইরি সব সহ্য করতে পারে কোনো মেয়ের অসম্মান নয়। এইটা বলেই শৈবাল ছেলেটাকে মারতে লাগলো। সে একটু দূর থেকে সব লক্ষ করছিলো তাই তাইফাকে মারার আগেই হাত ধরে ফেলেছে। হঠাৎ দৌঁড়ে প্রান্তিক এসে বললো, ” আহা শৈবাল কি করছিস ছেড়ে দে’

প্রান্তিক শৈবালকে থামাতেই ছেলেটা পালালো৷

‘শৈবাল তুই কি করতে যাচ্ছিলি? ছেলেটাতো মরেই যেতো।

‘ওর সাহস কি করে হয় ইভটিজিং করার? শৈবালের কথা অনুসারে প্রান্তিক পাশে তাকায় প্রান্তিক আর তাইফা একে অপরের দিকে বিষ্ময় নিয়ে বললে,’আপনি?

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here