বিষাক্তময় আসক্তি – পর্ব ৯

0
1285

বিষাক্তময় আসক্তি (The Villain😈)
Sumaiya Akter Mim
পর্ব ৯………….🌼

গাড়ির হর্নের আওয়াজে মিসেস সামিয়া জলদি গিয়ে মেইন ডোর খুলে দিলেন, দরজা খুলে দিতে দেখতে পেলো ইরফান এসেছে ! সামিয়া আহম্মেদ ইরফান কে দেখে সৌজন্য মূলক হাসি দিলেন।। এবং তাকে ভেতরে এসে বসতে বললেন।।

ইরফান বাড়ির ভিতরে গিয়ে একটা সোফায় পায়ের উপর পা তুলে বসে পরলো,আর সামিয়া আহাম্মেদ উপরে চলে গেলেন আয়ানাকে ডাকার জন্য ,যাওয়ার আগে ইরফানের জন্য নাস্তা ব্যবস্থা করতে বললে ইরফান নিষেধ করে দেয়। তাঁর পাঁচ মিনিট এর মধ্যে আয়ানাকে নিচে চায়।।

কিছুক্ষণ পর আয়ানাকে নিচে নিয়ে আসে মিসেস শীতল আর সামিয়া তাদের পিছনে তুতুল।আয়ানাকে নিচে আসতে দেখে সেদিকে তাকালো ইরফান ,হাতের মোবাইল টা পকেটে রেখে সোজা হয়ে দাঁড়ালো। আজকে তার পরীটাকে সাদা ড্রেসে মেঘ কন্যাদের মতো লাগছে একদম স্নিগ্ধ । কোনো সাজ নেই মুখে তবু ও কি চমৎকার লাগছে! ইরফান এক মনে তাকিয়ে দেখছে তার পরীকে তার নেশাকে যাকে সারা জীবন দেখলে ও দেখার শেষ হবে না।। সারা মুখ কেমন ফুলে আছে গোলাপী গাল গুলো কামড়ে দিতে ইচ্ছে করেছে। কেমন করে কাঁপছে তাকে দেখে একদম নেশা ধরে যাচ্ছে। সবসময়ের মতো মাথাটা নীচু করে রেখেছে।আর তার কেশবরন চুল গুলো হাঁটুর নিচ অব্দি কি সুন্দর ভাবে দোল খাচ্ছে।।

ইরফান আয়ানার হাত ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসে,একপলক তাকে দেখে মনটা যেনো স্থির হয়েছে কালকে সারা রাত র্নিঘুম কাটিয়েছে শুধু মাত্র একপলক দেখার জন্য।। এখন খুব ভালো লাগছে ড্রাগের চেয়েও নেশাক্ত আয়ানা তার কাছে। আয়নার কপালের চুল গুলো কানের পিছনে গুজে দিয়ে সবাইকে বলে বের হয়ে যায়।।

বস ইরফান খান বিয়ে করছে মেয়ের নাম আয়ানা।।
্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্(অপর পাশে)

জ্বি বস আমি লোক লাগিয়ে জানতে পেরেছি, কিন্তু আমাদের সব লোকদের ইরফানের লোক মেরে ফেলেছে আমি নিজের পরিচয় লুকিয়ে ছিলাম গতকাল রাতে আমি জায়গা বদলিয়ে ফেলেছি আমাকে ওরা সবাই সব জায়গায় খুজতেছে পেলে মেরে ফেলবে ।।

্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্(অপর পাশে)

না না বস আমি আর যাবো না আমাকে আর আআআআ বলে লোকটি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আর মোবাইলের ওইপাশের ব্যাক্তি আওয়াজ পেয়ে সাথে সাথে মোবাইল কেটে দেন।
একজন ব্যাক্তি মাটিতে লুটিয়ে থাকা ব্যাক্তির পালস্ চেক করে দেখে মারা গেছে !ওপর আরেকজন ব্যাক্তি লোকটির মোবাইল নিয়ে নেন তারপর সেখান থেকে লোকগুলো চলে যায়।।‌

আহ্হ্হ্হ্হ্ ইরফান তোকে আমি শেষ করে দিবো।।তুই আমার সব শেষ করে দিয়েছিস আমার বিজনেস আমার সব! আমার ছেলেকে ও তুই মেরে ফেলেছিস ছাড়বো না শেষ করে দিবো তোকে আমি জোরে চিৎকার করে বলে উঠলো।। এখন আমি তোর দুর্বল জায়গা চিনে ফেলেছি এতোদিন শুধু তোর দুর্বল জায়গা খুঁজেছি কিন্তু কিছু পাইনি এবার আমি খুব সহজে তোকে হারাতে পারবো বলে বিশ্রীভাবে হাসতে শুরু করল।।।

ইরফান গাড়ি চালাচ্ছে আর তার পাশে মাথা নিচু করে বসে আছে আয়ানা।।। ইরফান বারবার আড়চোখে আয়ানার দিকে তাকাচ্ছে। তাদের পিছনে দুইটা গাড়ি গাড়ি গুলো মূলত ইরফান এর বডি গার্ডদের। ইরফান গাড়ি চালানোর ফাঁকে আয়ানার হাত ধরে মুচকি হেসে উল্টো পিঠে চুমু খেলো! কেঁপে উঠল আয়ানা।আয়ানাকে এইভাবে কাঁপতে দেখে আবারও একই ভাবে চুমু খেলো, আয়ানা চোখ খিচে বন্ধ করে রেখেছে তা দেখে মুচকি হেসে সোজা হয়ে বসে আবার গাড়ি চালাতে থাকলো। আয়ানার হাত এখনো শক্ত করে ধরে রেখেছে!আয়ানা এখনো চুপ করে বসে আছে কোনো নরাচড়া করছে না মনে হচ্ছে কেউ একটা মূর্তি সাথে করে নিয়ে যাচ্ছে।।

“ইরফানের গাড়িটা একটা বড় রেস্টুরেন্টে এর সামনে থামালো। খুব চমৎকার রেস্টুরেন্টটা ! কাশ্মীর আসার পর এই প্রথম বাহিরে এসেছে আয়ানা। এতো সুন্দর দেখতে কাশ্মীর সে আজকে প্রথম পরিবেশটা দেখছে কিন্তু উপভোগ করতে পারছে না আয়ানাকে এইভাবে অভাক হয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখে ইরফান মুচকি হাসে। তার জানের জায়গাটা পছন্দ হয়েছে এইটা ভেবে তার খুশি লাগছে।। ”

ইরফান এর গাড়ির পিছনে বাকি গাড়ি দুইটা এসে থামলো ! একজন বডি গার্ড দরজা খুলে দিতে ইরফান নেমে আসলো, তার পর মুচকি হেসে আয়ানার পাশের দরজাটা খুলে দিল! নিজের হাত বাড়িয়ে দিল আয়ানার সামনে । আয়ানা কাঁপা কাঁপা হাতে ইরফানের হাত ধরে। ইরফান আয়ানার হাতটা শক্ত করে ধরে সাবধানে আয়ানাকে নামিয়ে আনে।। ইরফান আর আয়ানাকে রেস্টুরেন্টে ম্যানেজার এসে স্বাগতম জানায় খুব সুন্দর একটা বুকে আয়ানার সামনে ম্যানেজার ধরতে ইরফান হাত দিয়ে সরিয়ে দেয় এবং চোখ মুখ শক্ত করে চোখ দিয়ে নিষেধ করে।তা দেখে আয়ানা এবং ম্যানেজার দুজনে ভয় পেয়ে যায় ।আয়ানা ভয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে আর ম্যানেজার সরি বলে ওইখান থেকে কেটে পরে ! ভয়ে এখনো থরথর করে কাঁপছে তিনি কয়েকজন স্টাফ এসে ইরফান আর আয়ানাকে কেবিনে নিয়ে যায়।। সম্পূর্ণ রেস্টুরেন্টে ইরফান হায়ার করেছে ,যতক্ষন ইরফান থাকবে আর যেনো কেউ না আসে।।

ইরফান একটা বড় কেভিন আয়ানার জন্য সাজিয়েছে। খুব সুন্দর করে ডেকরেট করেছে একদম আয়ানা যেমন পছন্দ করে ঠিক তেমনি।।সারা কেভিন জুরে লাল সাদা গোলাপ স্টারগেজার আর ছোট্ট বড় নানা ফুল দিয়ে।।।

ইরফান আয়ানাকে একটা চেয়ার টেনে বসিয়ে দেয় আর তার পাশে ইরফান বসে পরে।।আয়ানার গালে হাত রেখে আয়ানার মুখটা ইরফানের মুখের কাছাকাছি নিয়ে আসে। আয়ানা ভয় পেয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে।। ইরফান আয়ানার চুল গুলো কপাল থেকে সরিয়ে দিয়ে বলতে লাগে;

পছন্দ হয়েছে জান! সম্পূর্ণ তোমার পছন্দ মতো ডেকরেট করিয়েছি তোমার পছন্দ হয়েছে তো কপালে চুমু খেয়ে।।

আয়ানা সাথে সাথে মাথা নাড়লো , যে তার পছন্দ হয়েছে।।
ইরফান মুচকি হেসে আয়ানার গাল ছেড়ে দেয়। কয়েক জন হোটেল বয় এসে খাবার সার্ভ করে দেয় । টেবিলে ভর্তি খাবার আর বেশিরভাগ আয়ানার পছন্দের। এতো খাবার কে খাবে সব তাকে গিলাবে না তো ভেবেই ঢুক গিললো।।

ইরফান আয়ানার সামনে আয়ানার প্রিয় চকলেট মিল্কশেক এগিয়ে দেয়।আয়ানার চেয়ারটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে আয়ানাকে হা করতে বলে আয়ানা তারাতাড়ি করে হা করে ইরফান মুচকি হেসে আয়ানাকে খাওয়াতে লাগে।।

কেমন হয়েছে জান! এখন থেকে প্রতিদিন আমি তোমাকে এই ভাবে খাইয়ে দিবো কেমন।।

জ্বি আচ্ছা , আয়ানা মৃদু আওয়াজে বলল।।
ইরফান মিল্কশেক খাইয়ে অন্য একটা ডিস নিলো যা দেখে চোখ গুলো বড় বড় হয়ে গেছে আয়ানার এতোখানি মিল্কশেক খেয়েছে এখন আর কিছু সে খেতে পারবে না ! খাবারের প্রতি অবহেলা বরাবরই বেশি আয়ানার শিতল জোর করে না খাওয়ালে সে খাবে না আর সকাল সকাল এতো খাবার খাওয়ার অভ্যাস নেই তার! তাইতো মুখটা কে একটুখানি বানিয়ে রেখেছে সে। কিছু বলতে পারবে না আবার খেতে ও না।। ইরফান আয়ানার চেহারা দেখে বেশ বুঝতে পারছ
বিষয়টা।।

এখন থেকে খাবারে পরিমান বাড়াবে, খাবারের প্রতি অনিহা আমি প্রশ্রয় দিবো না যা যা দিবো খেতে থাকবে !বলে আয়ানার মুখের সামনে ৎব্রেড এগিয়ে দেয় ।আয়ানা ও আস্তে আস্তে করে খেতে থাকে আর চোখের পানি মুছতে থাকে এমন করে কখনো তাকে কেউ জোর করে নাই ।।

আয়ানার চোখে পানি দেখে ইরফানের মাথা গরম হয়ে যায় তার আয়ানার চোখের পানি একদম পছন্দ না কেমন জানি কষ্ট হয় তাঁর বুকে।।

এমন করে তোমার মূল্যবান চোখের পানি অযথায় ফেলবে না। আমার এটা একদম পছন্দের না কিছুটা শক্ত গলায় বলল ।আয়ানা ভয়ে কান্না থামিয়ে দিয়েছে কিন্তু এখনো হিচকি তুলছে ! ইরফান আয়ানার চুখের পানি মুছে দিয়ে চোখের পাতায় চুমু খায় তারপর আয়ানাকে পানি খাইয়ে মুখ মুছে নিজের খাওয়া শুরু করে।। খেতে খেতে আয়ানাকে উদ্দেশ্য করে বলে;

তোমাকে কষ্ট ও আমি দেবো আর আদর ও আমি করবো বলে আবার খাওয়া মনোযোগ দেয়।।আয়ানা ইরফানের কথা শুনে নিচের দিকে তাকিয়ে চোখ মুছতে থাকে।।

ইরফান খাবার শেষ করে আয়ানাকে নিয়ে একটা শপিং মলে পৌঁছে সেখান থেকে আয়ানার জন্য অনেক শপিং করে সব ইরফান পছন্দের ড্রেস কসমেটিক জুয়েলারি ইত্যাদি।। শপিং মলে একজন ব্যক্তি অনেকক্ষণ ধরে আয়ানার দিকে তাকিয়ে আছে কিন্তু তার পাশের ইরফান কে দেখে নি।লোকটি বারবার আয়ানার দিকে আড়চোখে তাকাচ্ছে।

ইরফান আয়ানার জন্য একটা লাল কালারের স্লিক জামদানি শাড়ি পছন্দ করে।আয়ানার দিকে শাড়ি টা ধরে আয়ানাকে একটা আয়নার সামনে দাড় করিয়ে পিছন থেকে ইরফান শাড়িটা আয়ানার গায়ে জরিয়ে দেয় ।।

খুব সুন্দর লাগছে তোমাকে একদম আমার লাল টুকটুকে বউ লাগছে বলে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।আয়ানা মাথাটা নীচু করে চোখ শক্ত করে বন্ধ করে রাখে।। ইরফান আয়ানার গাড়ে কিস করে। আরেকটা কিস করতে যাবে তখন একটা প্রতিচ্ছবি আয়না ভেসে ওঠে যা গভীর ভাবে আয়ানাকে দেখছে ।। ইরফান আয়ানাকে ছেড়ে দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আয়ানাকে উদ্দেশ্য করে বলে।।

যাও এটা চেন্জ করে আসো হাতে একটা জামা দিয়ে তার নজর এখনো আয়নার ভিতরের মানুষটার উপর রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে তার।

“তোমাকে না চেঞ্জ করতে বলেছি তোমার কি কথা কানে যায় না খুব জোরে ধমক দিয়ে।।”

ইরফানের ধমক শুনে ভয়ে আয়ানা তাড়াতাড়ি করে চেঞ্জিং রুমে চলে যায় গিয়ে দরজাটা বন্ধ করে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে তারাতাড়ি ড্রেস চেঞ্জ করতে থাকে।।আয়ানাকে চেঞ্জিং রুমে ঢুকতে দেখে অপরিচিত ব্যক্তি তার পেছনে পেছনে যায় তা দেখে বাঁকা হেসে ইরফান নিজের গাঁড়টাকে এদিক-ওদিক হেলিয়ে পকেট থেকে মোবাইল বের করে গার্ডদের ফোন দেয়।।। তারপর কান থেকে মোবাইলটাকে রেখে নিজে নিজে বলতে থাকে।।

“আমার জিনিসে যে নজর দেয় তাকে আমি এই পৃথিবীর থেকে বিদায় করে দেই। আমার জিনিসের এক চুল ভাগ আমি কাউকে দিবো না।। আমি তোমার হিংস্র প্রেমিক আয়ু জান আমার এই বিষাক্ত ভালোবাসা দেখার জন্য প্রস্তুত হও।। আমি তোমার প্রেমে দেওয়ানা আর এই দেওয়ানা নিজের ভালোবাসার জন্য সব করতে পারবে বলে চলে যায় আবারো নিজের হিংস্রতার প্রমান দিতে।।”

To be continued……..🌼

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here