বিষাক্তময় আসক্তি – পর্ব ১২

0
1300

বিষাক্তময় আসক্তি (The Villain😈)
Sumaiya Akter Mim
পর্ব ১২………..🌼

সকাল সকাল হতে চারিদিকে হইচই পরে গেলো! আজকে আয়ানার এনগেজমেন্ট তাই সবার শ্বাস নেওয়ার সময় নেই। কেউ বিয়েটা মন থেকে না মানলে ও বিয়েটা বাস্তবতার কারণে মেনে নিতে হবে। জায়েদ আহাম্মেদ ও ছোট আদরের মেয়ের বিয়ের কোনো ক্রুটি রাখতে চান না হোক সেটা নিজের মনের বিরুদ্ধে।

“বাড়ির বারান্দায় রাখা বেতের চেয়ারের উপর বসে আছে আয়ানা। দৃষ্টি তার দূরের আকাশে, বিয়ে নিয়ে সব মেয়েদের মতো কোনো এক্সসাইটমেন্ট দেখা যাচ্ছে না ।না লজ্জা না অনুভূতি যা হচ্ছে শুধুমাত্র ভয়।।”

এই আয়ানা এখানে কি করছো?শীতলের ডাকে পিছনে ফিরে তাকালো আয়ানা ।আয়ানার চেহারা কেমন শুকিয়ে গেছে এই কয়েক দিনের মধ্যে , সারাজীবন কি করে থাকবে ওই অন্ধকার রাজ্যে ? এটা ভেবে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন তিনি! আবার বলতে লাগলো,,

তারাতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো আয়ানা! তোমার প্রয়োজনীয় সব জিনিস চলে এসেছে। কিছুক্ষণ আগে ইরফান গার্ডদের দিয়ে সব পাঠিয়ে দিয়েছে।

শীতলের কথায় আয়ানা মায়ভরা দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তার দিকে।আয়ানার দিক থেকে চোখ সরিয়ে তাকে তারাতাড়ি রেডি হয়ে নিচে যেতে বলে তিনি তাড়াতাড়ি করে আয়নার সামনে থেকে চলে যায়,কারণ আরেকটু সময় যদি আয়ানার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতো তাহলে তিনি নিজেকে সামলাতে পারত না।।। বড্ড অপরাধী মনে হয় মেয়ের চোখের দিকে তাকালে। শীতল কে এইভাবে চলে যেতে দেখে আয়ানা নীরবে চোখের পানি ফেলে ওয়াশরুমের চলে যায় ফ্রেস হতে তারপর ফ্রেস হয়ে নিচে যায়।।

___________________________________________

“সারা ড্রয়িংরুম ভর্তি ড্রেস জুয়েলারি জুতা আরো অনেক কিছুতে সব আয়নার জন্য পাঠানো হয়েছে আর প্রত্যেকটা জিনিস খুবই দামী এবং ইউনিক আর এইসব জিনিস ইরফান নিজের হাতে পছন্দ করে কিনে এনেছে। এসবের প্রতি কোন ইন্টারেস্ট নেই আয়ানার সে একটা সোফায় জড়বস্তুর মতো বসে আছে তার কোনো হেলদোল নেই। আজকে খুব মনে পড়ছে সাফিয়ার সেদিন বলে যাওয়ার কথাগুলো।।

“জীবনে একসময় ভাগ্য আমাদের এমন পরিস্থিতিতে ফেলবে আমাদের হাতে কিছুই থাকবে না আল্লাহর কাছে দোয়া করি যেন কখনো এমন পরিস্থিতি তোকে পরতে না হয় সাফিয়ার বলে যাওয়া কথাগুলো আজ আয়ানার সাথে মিলে গেল! কিন্তু দুঃখের বিষয় সাফিয়ার দোয়াটি কাজে লাগেনি ।পরিস্থিতি জীবনে এমন একটা অভিশাপ চলে এসেছে যেটা সে কল্পনাও ভাবতে পারেনি।।।””

*************

সারা নিলাম বেলী থেকে শুরু করে প্রত্যেক টা শহরের কোনায় কোনায় জ্বলে উঠছে মরিচ বাতি এবং বিভিন্ন রং বেরঙের লাইটে। নতুন রূপে সেজেছে সম্পূর্ণ কাশ্মীর।এই জেনো উৎসবের শুরু।। ইরফানের বিয়ের উপলক্ষে শহরে আজকের থেকে সাজানো হয়েছে কোথাও কোনো একটি জায়গা খালি নেই সাজানো থাকে প্রত্যেকটা বাড়ি সাজানো হয়েছে রংবেরংগের লাইট ফুল এবং মরিচ বাতি দিয়ে শহরের রাস্তা গুলো যেন আলোতে ঝিকিমিক ঝিকিমিক করছে এখনো সম্পন্ন লাইট জ্বালানো হয় নি দিনের বেলা বলে । দিনের বেলায় এত সুন্দর লাগছে রাতের বেলায় তো আরো বেশী সুন্দর লাগবে।। এখনো সব কাজ সম্পূর্ণ হয়নি কিন্তু তোরজোর দিয়ে এসব কাজ করা হচ্ছে গাছের মধ্যে লাগানো হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের স্টার লাইট আরো বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম।। ইরফানের বিয়ে উপলক্ষে যেন নিলাম বেলিতে সুখের ঝড় বয়ে যাচ্ছে সবার মনে আনন্দ ।। সকাল সকাল ইরফানের সহ পরিবার লিপা বেলীতে চলে আসে তাদের বাগান বাড়িতে।।।। সম্পূর্ণ বাগান বাড়ি সাজানো হয়েছে খুবই সুন্দর করে।হাতে সময় কম তবুও এতোজন গার্ড অনায়াসে কাজ কমপ্লিট করে ফেলবে।।।

“ড্রয়িংরুমের এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত পর্যন্ত সারা বাড়িতে ছুটুছুটি করছে ইসহাক ,আর পেছন পেছন সাফিয়া। সম্পূর্ণ বাড়িতে তাকে দৌড় করিয়েছে।সারাবাড়িতে ইসহাকের পিছনে ঘুরে ও খাবার খাওয়াতে পারছে না সাফিয়া।। ইসহাক এর একটাই জিদ আগে ইরফানের বৌ দেখবে তারপর খাবার খাবে তার আগে নয়। সাফিয়া এবার বিরক্ত হয়ে বলল,,,,

ইসহাক আপনি কি খাবার খাবেন? নাকি আমি এখান থেকে চলে যাবো।।।

“আ-আমি খাবার খা-খাওয়বো না বৌ ত-তুমি আগে আ -আমাকে ইরফানের বৌ দেখাবে তা-তারপর খাওয়াবো।।‌(ইসহাক)

“এটা কেমন জিদ ইসহাক বলুন তো! আমরা আজকে সবাই সন্ধ্যার দিকে ইরফান ভাইয়ার বৌ দেখতে যাবো,এখন খেয়ে রেস্ট করে নিন।”

“সত্যি!আ-আমরা আ-আজকে ইরফানের বৌ দেখতে যাবো খুশি হয়ে হাত-তালি দিতে লাগল ‌।
সাফিয়া ও মুচকি হেসে ইসহাককে খাওয়াতে লাগলো গুড বয়দের মতো।।
ইসহাক খাওয়ার মধ্যে দেখলো ইরফান আসছে! পিছন পিছন দুইজন ড্রেস ডিজেনার।লোক দুটো ড্রেস নিয়ে ডিসকাশন করছে।। ইরফান গিয়ে একটা সোফার উপর বসে দুই হাত দুই দিকে ছড়িয়ে পায়ের উপর পা তুলে বসে সিগারেট ফুকছে। একদম পাক্কা ডেসিং ফিল্মের ক্রাশ টাইপের বিলেন গুলোর মতো লাগছে তাকে।।
ব্লাক প্যান্ট, হোয়াইট শার্ট,হাতা কনুই পর্যন্ত গোটানো, , বুকের কাছের দুটা বাটন খোলে রেখেছে দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে।।
সাফিয়া একবার ইরফানের দিকে তাকিয়ে তারাতাড়ি চোখ নামিয়ে নিল ।বিয়ের পর ইরফান কে দুইবার দেখেছে আর আজকে সামনাসামনি দেখছে।। প্রচন্ড ভয় লাগে ইরফান কে তার কাছে মনে হয় আশেপাশে থাকলে কোনো ভুল যদি করে তাহলে সে তার গর্দান নিবে। বাড়ির সবাই কে ভয় পায় সে মাফিয়াদের বাড়ি থাকা কী চারটি খানা কথা! যেখানে সারা কাশ্মীর এদের ভয় পায় তাদের সাথে বসবাস টা ও সাফিয়ার কাছে খুবই ভয়ানক।। এখন তো তার কাছে তাঁর ছোট আদরের বোন ও সামিল হতে চলছে!আয়ানাকে সাফিয়া খুব ভালোবাসে কখনো চয়নি আয়ানার সাথে এমন কিছু হোক। কিন্তু ভাগ্যে ঠিক আয়ানাকে এমন জায়গায় দাড় করিয়েছে! ইচ্ছে তো করছে আয়ানাকে এইখান থেকে খুব দূরে কোথাও পাঠিয়ে দেওয়ার যাতে করে ইরফান আর আয়ানাকে কোথাও খুঁজে না পায়।।‌

“আমার থেকে আয়ানাকে দূরে রাখার কথা মাথায় ও আনবে না ! তাহলে দ্বিতীয় বার আমার ভাইজানের পাশে দাঁড়ানোর অবস্থায় থাকবে না।”(ইরফান)

ইরফানের কথায় থরথর করে কাঁপছে সাফিয়া। এতক্ষণ আকাশ পাতাল ভাবনা মিনিটে শেষ হয়ে গেছে।।সে ভুলে গেছে বাঘের সামনে দাঁড়িয়ে এমন কথা ভাবছে!যার মানুষের চোখ দেখলে ও তার মনে কী চলছে তা বুঝতে সময় লাগে না?আর সেখানে সাফিয়া কিনা তার সামনে আয়ানাকে তার কাছ থেকে দূরে রাখার কথা ভাবছে! মৃত্যুর পাখনা গজেছে তাই এসব কথা মাথায় আসছে। সাফিয়া ঢোক গিলে তারাতাড়ি ইসহাক কে খাওয়াতে লাগলো, উদ্দেশ্য খাইয়ে এখান থেকে দ্রুত সম্ভব কেটে পরার।।।।

_______________________________________

দুপুর হওয়ার সাথে সাথে সবাই ফ্রেস হয়ে খেয়ে আংশিক কাজ করতে শুরু করলো। কিছুক্ষণ আগে আয়ানাকে পার্লারে নিয়ে গেছে তুতুল,পার্লার থেকে রেডি হয়ে একদম ইরফানদের বাগান বাড়িতে চলে যাবে। আজকের পার্টি ইরফান দের বাগান বাড়িতে হবে। নানা প্রেশ এর লোক এখন থেকে ভির জামাচ্ছে বাড়ির সামনে। ইরফানের বিয়ের সব কাজ খুবই রাজকীয় ভাবে করা হচ্ছে।।।

“সন্ধ্যা হতে চারিদিকে ধুম পরে গেছে।। ইরফানের বাগান বাড়িতে মানুষের আওয়াজে জানান দিচ্ছে বড়সর পার্টি চলছে।। পার্টিতে অবস্থিত সকল ব্যাক্তি নামি দামী বড় লোক সেলিব্রিটি মিনিস্টার সিন্গার,বড় বড় বিজনেসম্যান , বিজনেস পার্টনার আরো অনেকেই।আর ইরফানের বিয়ে বলে কথা তাই সকলেই এমন একটা নিমন্ত্রণ পেয়ে খুশি মনে চলে এসেছে।। বেশিরভাগ লোকই এসেছে একটু ইরফানের কাছাকাছি থেকে নিজেদের বিজনেসের কথা বলবে সেই আশায় কারণ এসব বড় বড় পার্টি ছাড়া সহজে তাঁরা ইরফানের দেখা মিলবে না!

পার্টিতে সকলের নজর ইরফানের দিকে! সাদা শার্টের সাথে দামি নীল রঙের কুট যার একটা বোতাম লাগানো, হাতে নীল রঙের দামি ওয়াচ, বিড়াল চোখ দুটোয় সুরমা, দামি ব্রন্ডের জুতা,ফর্সা গালে মেচমেচে খোঁচা খোঁচা দাড়ি আর কালো ঠোঁটের কোনায় ঘায়েল করা বাঁকা হাসি নিয়ে নেমে আসছে! পেছন পেছন দুইজন বর্ডি গার্ড।। পার্টিতে অবস্থিত সকলের নজর এই অদ্ভুত সুন্দর মানবের উপর। কিছু মেয়েরা তো চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে,আবার ভয়ে চোখ নামিয়ে ফেলেছে কারন ইরফান দেখতে পারলে গর্দান নিবে তাদের তাই।।প্রেশ মিডিয়া্র সাথে কথা বলে চলে আসলেন ইমরান ছেলের পাশে।ছেলের কাঁধে হাত রেখে অভিনন্দন জানায় ছেলের নতুন জীবনের জন্য।। সকল প্রেশ মিডিয়া্র লোকেরা এসে অভিনন্দন জানাচ্ছে। বাড়ির সামনে দুইটা গাড়ি থামাতে সেখান থেকে নেমে আসে জায়েদ আহাম্মেদ আর শীতল আহাম্মেদ।অন্যটায় জায়েফ আর সামিয়া আহম্মেদ, বাকি আত্বিয় -স্বজন আগেই চলে এসেছে।। তাদের কে আসতে দেখে ইমরান খান ও আসফিয়া স্বাগতম জানায়। সাফিয়া ইসহাক কে নিয়ে তাদের কাছে ছুটে যান এবং জরিয়ে ধরেন তাদের।।
তার কিছু সময় পরে ব্লাক কালারের গাড়িটা বাড়ির সামনে থামাতে ইরফান মুচকি হেসে সেদিকে এগিয়ে যায় তার পিছন পিছন প্রেশের লোক ও পার্টিতে থাকা সবার নজর এখন ওই চকচকে কালো গাড়িটার উপর!!!

________________________________________

“আয়ানার কমড় ধরে একদম নিজের সাথে মিশিয়ে রেখেছে ইরফান আর আয়ানা ভয় আর নার্ভাসনেস এর কারনে মাথা নিচু করে রেখেছে তার মুখে স্পষ্ট ভয় দেখা যাচ্ছে। গাড়ি থেকে নামতে ইরফান এসে তার হাত ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। চারিদিকে এতো মানুষ দেখে অনেক ঘাবড়ে যায় আয়ানা।কারন এতো মানুষের ভিড়ে থাকা সে অবস্থিত না।। একটু পরপর ফ্লাশের আওয়াজ তার নার্ভাসনেস কে বাড়িয়ে দিচ্ছে সবাই তার দিকে হা করে আছে মনে হচ্ছে কোন একটা হরর মুভির ভুত এসেছে পার্টিতে।।”

“ইরফানের আজকে কোনো দিকে হুস নেই সে তো আজ তার আয়ু জান কে দেখতে ব্যাস্ত যে কিনা এখন ভয়ে মাথা নিচু করে আছে।যেদিন থেকে দেখেছিলো সেদিন থেকে এই দিনটির অপেক্ষায় করছিল যে কখন তার আয়ুকে সম্পূর্ণ রূপে নিজের করে পাবে, আজকে সেই দিন চলে এসেছে আজকে থেকে সবাই জানবে আয়ানা শুধু ইরফানের আর আয়ানার উপর সম্পূর্ণ অধিকার তার। এখন থেকে তাঁর জানের দিকে ভয়ে ও কেউ তাকাবে না কারণ সবাই জানে ইরফানের জিনিসে কেউ হাত দিলে সেই হাত ইরফান উপড়ে ফেলবে। আজকে সম্পূর্ণ ভাবে তার। আজকে তার জানকে অসাধারণ সুন্দর লাগছে চোখ ফেরানো দায় হচ্ছে।।
আজকে আয়ানা ইরফানের সাথে মেচ করে ডার্ক নীল রঙের গ্ৰাউন পরেছে যেইটা নেট আর স্টোন দিয়ে তৈরি।চুল গুলোকে সুন্দর করে পার্টি খোঁপা করে তার পেছন সাইটে বাঁকা চাঁদের মতো নীল ফুলের ব্যান্ট গলায় হালকা খুবই সুন্দর একটি হিরের পেন্ডেল। দুই হাতে মোটা দুটো হিরের চুড়ি কানে ছোট হিরের দুল।মোখে কোনো মেকআপ নেই হালকা পিংক কালারের গাল দুটো আরেকটু ব্লাস করে দিয়েছে আর চকলেট কালার ঠোঁট দুটো ডার্ক চকোলেট কালারের লিপস্টিক দিয়েছে এতে করে একদম ডার্ক প্রিন্সেস লাগছে তাকে।। ইরফান তো তাকিয়ে আছে অন্য কোথাও তার ধ্যান নেই আশে পাশে মিডিয়ারা অনেক প্রশ্ন করছে সেদিকে কোনো খেয়াল নেই!সে তো তার নেশা #বিষাক্তময়_আসক্তি কে দেখতে ব্যাস্ত।আয়ানা তার আসক্তি আর এই আসক্তি টা দিন দিন খুব গভীরভাবে গ্ৰাস করছে তাকে। ইরফান আয়ানার কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস বললো ,,,,,,,,,,,,

“তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে মেরি জান একদম চকলেট লাগছে! ইচ্ছে করছে পুরোটাই এক নিঃশ্বাসে খেয়ে ফেলতে বলে বাঁকা হাসলো ইরফান।।”

ইরফানের এই ফিসফিসানো কথায় আয়ানা আরো ভরকে গেলো ! এখন ভয় আর নার্ভাসনেস এর সাথে লজ্জাটাও যুক্ত হলো। লজ্জার কারনে পিংকি পিংকি গাল গুলো আরেকটু পিংকি হয়ে গেছে যাতে করে ইরফানের নেশা চরে যাচ্ছে আয়ানা নামক নেশা।।

ফ্লাশের আলো আর আওয়াজে আয়ানা ভালোভাবে কিছু দেখতে পাচ্ছে না তার খুব অস্বস্তি লাগছে।তা দেখে ইরফান হাত দিয়ে সামনের ব্যাক্তিদের ক্যামেরা বন্ধ করতে বলেন কারন ইরফান খুব ভালো করে বুঝতে পারছে আয়ানার এতো কাছ থেকে ফ্লাশের আলোয় ছবি তোলার অভ্যাস নেই!কারন এর আগে কখনো আয়ানা এমন কোনো কিছুর সামনাসামনি হয় নি।।
ইরফানকে শক্ত চোখে তাকাতে দেখে মিডিয়ার লোকেরা ভয়ে ক্যামেরা বন্ধ করে দেয় এবং ভির কমিয়ে দেয়।। ইরফান আয়ানাকে নিয়ে ভেতরে যেতে কিছুক্ষণ এর মধ্যে এনগেজমেন্ট শুরু হলো।।

“আয়ানার হাতে রিং দিতে আবারো আগের সেই ঘটনা , কিছুতেই ভয়ের কারণে আয়ানা ইরফান কে রিং পড়াতে পারছে না তা দেখে শীতল সামনে এগিয়ে এসে আয়ানার হাত ধরে ইরফানের আঙ্গুলে রিং পরিয়ে দেয়।আয়ানার নজর তার মায়ের দিকে,শীতল হালকা মলিন হেসে পেছনে চলে যায়। ইরফান মুচকি হেসে আয়ানার হাতে অনামিকা আঙ্গুলে রিং পরিয়ে দেয় এবং হাতে গভীর ভাবে চুমু খায় সাথে সাথে সবাই স্বজোরে হাততালি দেয়।।এক এক করে সবাই এসে ইরফান আর আয়ানাকে অভিনন্দন জানায় আয়ানা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে আর ইরফান হাসিমুখে আয়ানার কমড় জরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে দৃষ্টি তার সবসময়ের মতো আয়ানার উপর বিদ্যমান।সব টিভি চ্যানেলে আজ ইরফান আর আয়ানার বিয়ের নিউজ ছরিয়ে পরেছে ডেইট ও জানানো হয়ে গেছে আর জেনে গেছে ইরফানের গোপন শত্রুরা এই নিউজ।।।

হঠাৎ ইরফান আয়ানার হাত ধরে ডান্স ফ্লরে নিয়ে যায়। মুচকি হেসে আয়ানাকে গভীর ভাবে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়! একজন গার্ড কে ইশারা করতেই লাইট অফ হয়ে হালকা আলোর সাদা লাইট জ্বালানো হয় ইরফান আর আয়ানার উপরে আর খুব রোমান্টিক একটা গান চালু করেন।।।
আর গানের মুভমেন্টের সাথে তাল মিলিয়ে ডান্স শুরু করে।।।

🎵🎵🎵🎵🎵🎶🎶🎶🎶🎶🎶

কেসে কাহু ইষ্ক মে তেরে কিত্না হু বেতাব মে,
আখোসে আখে মিলাকে চুরালু তেরে খোয়াব মে(2)

মেরে ছায়ে হে সাথ মে,
ইয়ার আজ জিস জাগা তুম হো…!

মে যো জী রাহাহু…..
ওয়াজা তুম হো..
ওয়াজা তুম হো….(2)

হে এ্যা নাশা, ইয়া হে জেহের,
ইস পেয়ার কো হাম কেয়্যা নাম দে! (2)

কাবসে আধুরি হে এক দাসতা,
আজা উসে আজ আনজাম দে!

তুম হে ভুলু কেসে মে…
মেরি পেহলি খাতা তুম হো…. ..

মে যো জী রাহাহু…..
ওয়াজা তুম হো..
ওয়াজা তুম হো….(2)🎶🎶🎶🎶
সম্পূর্ণ গানের ভেতর ইরফান আয়ানাকে খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে এবং অনেকগুলো ভালোবাসার পরশ ও এঁকে দিয়েছে।আয়ানা অনেক ছুটাছুটি করার চেষ্টা করেছে কিন্তু পারেনি! ইরফান আয়ানা যতো দূরে যাচ্ছে সে তাকে আরো কাছে টেনে নিচ্ছে। ইরফান বুঝাতে চাচ্ছে তুমি যতো দূরে সরে যাবে ততো আমাকে কাছে পাবে।।

“ডান্স শেষ হওয়ার পর ইরফান আয়ানাকে নিয়ে মেইন প্লেসেয় চলে যায়। সেইখানে গিয়ে এনগেজমেন্ট এর কেক কেটে রাতের ডিনার এর মাধ্যমে এনগেজমেন্ট শেষ হয়।।।”

🌚🌚🌚🌚
ঘুটঘুটে অন্ধকার চারিদিকে! জনবহুল শহরটি এখন ঘুমে কাদা হয়ে আছে। সারা বাড়ির মানুষ ঘুমাচ্ছে।রাত এখন একটার কাঁটা ছুঁইছুঁই। সবাই ঘুমিয়ে থাকলে ও ঘুম নেই একজনের চোখে আর সেই হলো আয়ানা।আয়ানা বাদে কয়েকজন গার্ড নিজের কাজের তাগিদে জেগে আছে।।হালকা পাতলা সাদা শার্টের সাথে কালো কালারের প্লাজো আর গায়ে কালো পাতলা চাদর জরিয়ে বারান্দার রকিং চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছে তার দৃষ্টি আকাশের সেই জ্বকমকে তাঁরা টায় যেইটা তার সামনে আকাশের মাঝখানে অবস্থিত,আর সেই তাঁরা টার আশেপাশে কোনো তাঁরা নেই কিছুটা দূরে দূরে সেই তাঁরা গুলো। মূলত সবার থেকে আলাদা রয়েছে বলে সবার নজর প্রথমে সেই তাঁরা টার উপর পরবে।।এই তাঁরা টাও আয়ানার মতো অসহায় একা।। তাকে ও সঙ্গ দেওয়ার মতো কেউ নেই! হয়তোবা আয়ানার পরিবারের মত তাঁরা গুলো নিরোপায় তাইতো এই তাঁরা টা কে আলাদা থাকতে হচ্ছে।।আর দুই দিন সময় আছে তারপর তার জীবনের বিশেষ অধ্যায় শুরু হবে , যেইটা আয়ানা চায় নি ভবিষ্যতে তাকে সেইটায় করতে হবে। ভবিষ্যৎ কী সে জানে না? কিন্তু এতো টুকু জানে মৃত্যু ছাড়া সে কখনো মুক্তি পাবে না।আর পরিবারের ভালোর জন্য নিজেকে কুরবানী দিতে হবে ভেবে দুই ফোটা চোখের পানি বেয়ে পরে চোখ থেকে।।
বারান্দায় থেকে রুমের ভিতর তাকিয়ে দেখে তুতুল কম্বলের ভেতর গুটিসুটি মেরে ঘুমোচ্ছে।এনগেজমেন্ট থেকে আসার পর সকলে ফ্রেশ হয়ে যার যার রুমে এসে ঘুমিয়ে পরে শুধু জেগে আছে আয়ানা।।।

_________________________

“ক্রিং ক্রিং মোবাইলের আওয়াজে আয়ানা নরেচড়ে উঠে। মোবাইলের দিকে তাকিয়ে দেখে অচেনা নাম্বার তাই প্রথম বার ধরেনি !পরে বার বার কল করায় ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে পোনে একটা বাজে এতো রাতে কে কল করতে পারে।আয়ানা মোবাইলটা নিয়ে রিসিভ করতে অপর পাশ থেকে খুবই গম্ভীর একটা গলা ভেসে আসলো।।”

“নিচে আসো তোমার কাছে দুই মিনিট সময় দিলাম বলে মোবাইলটা গট করে কেটে দিলো।”

আয়ানা কিছুক্ষণ স্তব্দা খেয়ে যায় তারপর চাদরটা ভালো করে জরিয়ে তারাতাড়ি নিচে চলে আসে।মেইন ডোর খুলে বাহিরে চলে আসে!চারপাশে কোথাও ইরফান নেই তখন পেছন থেকে একজন গার্ড আয়ানাকে ডেকে বলে পেছনের সাইটে যেতে।আয়ানা ভয়ে ভয়ে পেছনের দিকে যায় । হালকা লাইটের আলো আর কুয়াশা ঢাকা চারিপাশ হয়ে আছে।আয়ানার এবার আরো ভয় করতে লাগলো এমন নিস্তব্ধ এতো রাতে কেনো ডাকলো।

“হঠাৎ ঠান্ডা একটা হাত আয়ানার চাদরের উপর পেট ছুঁয়ালো।আয়ানা কিছুটা কেঁপে উঠলো কাঁপা কাঁপা হাতে হাতটা খামচে ধরল।”

“ইরফান আয়ানার গারের চুল সরিয়ে নাক দিয়ে গারে স্লাইট করে জোরে নিঃশ্বাস নিলো ,আয়ানাকে আরেকটু গভীরভাবে জরিয়ে ধরে।গারের মধ্যে ছোট ছোট চুমু খেয়ে চুলের মধ্যে মুখ ডুবিয়ে দিলো।।আয়ানা তো তরতর করে কাঁপছে মনে হচ্ছে সুনামি ভয়ে যাচ্ছে। ইরফান আয়ানার চুলে মুখ রাখা অবস্থায় দুই হাত দিয়ে আয়ানাকে জরিয়ে আস্তে আস্তে নেশাবড়া কন্ঠে বলতে লাগলো।।

“কী আছে আয়ু জান? কী আছে তোমার মাঝে?যে তোমাকে ছাড়া একমিনিট ও আমি থাকতে পারছি না। উন্মাদ এর মতো তোমার কাছে ছুটে এসেছি। মনে হচ্ছে কতো জনম তোমাকে দেখি না আমি আমার নেশার থেকে দূরে আছি।আর একটু যদি তোমার শরীরের গন্ধ না নিতে পারতাম তোমাকে না দেখতে পারতাম তাহলে পাগল হয়ে যেতাম।। আমার তোমাকে জানার জন্য সারাজীবন তোমাকে চাই।। আমার নেশা তুমি !তোমাতে আসক্ত আমি। আমি তোমার #The_Villain Lover আয়ু জান। বলে একটানে আয়ানাকে সামনে ঘুরিয়ে ফেলে ইরফান।আয়ানা শক্ত হয়ে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে আছে। ভয়ে তার শরীর এখনো কাঁপছে। ইরফান দীর্ঘশ্বাস ফেলে আয়ানাকে আরেকটু গভীরভাবে জরিয়ে ধরে তাঁর অনেক কষ্ট করতে হবে এই পিচ্চি মেয়েটার ভালোবাসা হাসিল করতে।।

ইরফান আয়ানার ঠোঁটে একটা হালকা কিস করে ,আয়ানাকে নিজের সামনে দাঁড় করিয়ে দুই হাত আয়ানার গালে রেখে বলতে লাগে,,

“আর মাত্র দুই দিন তারপর তুমি আমার,এর মাঝে আমি চাইবো তুমি কোনো ভুল করবে না।আর তোমার ভুলের শাস্তি তোমার পরিবার পাবে এটা তুমি খুব ভালো করে জানো।তো নিজের ফেমিলির ভালো চাইলে তেমন কোনো ভুল করবে না বলে মাথায় একটা কিস করলো।।”

আয়ানা অভাক হয়ে ইরফানের দিকে তাকিয়ে আছে কি বুঝাতে চাইছে ইরফান তাকে সে বুঝতে পারছে না।আয়ানাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে মুচকি হেসে বলল,

গো জান বলে হাত ছেড়ে দিয়ে কিছু পা পিছিয়ে গেলো।আয়ানা মাথা নিচু করে চলে যেতে নিয়ে আবার ফিরে তাকালো ইরফানের মুখে লেগে আছে এক রহস্যময় হাসি তার মানে আয়ানার কাছে অস্পষ্ট।আয়ানা চলে যেতে ইরফান কাউকে কল করে, কথা বলতে বলতে চলে যায়।আর যাওয়ার আগে গার্ডদের ইশারা করে কিছু বলে যায়।।।।

“আয়ানা রুমে প্রবেশ করে ইরফানের বলে যাওয়া কথাগুলো ভাবছে! কী বুঝাতে চাচ্ছে ইরফান তাকে? আবার ও কী কোনো ঝড় আসতে চলেছে? ভেবে ভয়ে গলা শুকিয়ে গেছে তার । মুখে হাত দিয়ে কান্না করতে লাগলো। হঠাৎ পেছনে কারোর হাতের স্পর্শে তার দিকে তাকিয়ে জাপটে জরিয়ে ধরলো লোকটিকে।।।।

#To_be_continued_……….🌼

(কালকে একটু সমস্যার কারনে গল্প দিতে পারেনি।তাই আজকে বড় করে দিলাম।। অনেকে বলছেন নায়িকা এতো ভিতু কেনো কিছু বলে না কেনো নায়িকাকে স্ট্রং হতে হবে আরো অনেক কিছু ।তাই সবার উদ্দেশ্যে বলছি আমাকে আমার মত লিখতে দিন আমি আমার বেস্ট দিয়ে চেষ্টা করছি।আর গল্প লিখার পূর্বে গল্পের থ্রিম ঠিক করা আছে তাই আমি চাইলে ও চেন্স করতে পারবো না। তাই ধৈর্য্য ধরে পরার অনুরোধ রইল)

Happy reading 😊

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here