#পতিতা_বউ
৮ম পর্ব
আফিফ নুহাকে নামিয়ে দিয়ে আবার ভার্সিটি তে ব্যাক করলো। জাইরা তার ফ্রেন্ডস দের নিয়ে ভার্সিটি বিল্ডিং এর পেছনে একটি গাছ তলায় বসে স্মোক করছিলো। আফিফ জাইরার কাছে গেলো। জাইরা কে টেনে তুলে সজোরে একটি চড় বসিয়ে দিলো। আফিফের চোখে মুখে রাগ স্পষ্ঠ। জাইরার ফ্রেন্ডস গুলো সবাই চলে গেলো। জাইরা গালে হাত দিয়ে আফিফের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,
>>নিজেকে কি আদৌ মেয়ে মনে করিস তুই হ্যা? তুই পুরাই বেহায়া একটা মেয়ে। আবার আমাকে পাবার স্বপ্ন দেখিস। তোর মত কয়েকজনের জন্যই আমি সব মেয়েকেই হেইট করি।
>>ওহ রিয়েলি। সব মেয়েকে হেইট করো। তাহলে ওই মেয়ের সাথে এত সখ্যতা কিসের হ্যাহ? আমার মধ্যে কিসের কমতি আছে? যে অই ব্যাকডেটেট চিপ মেয়েকে মনে ধরেছে তোমার?
>>মুখ সামলে কথা বল। ও ব্যাকডেটেট হোক তাই ভালো। তোর মত বেহায়াপনা তো আর করে বেড়ায় না। নিজেকে ওর সাথে কম্পেয়ার ও করিস না। ভার্সিটির সব মেয়ে থেকে ও আলাদা। তুই ওর নোখের যোগ্য ও হবিনা হুহ।
জাইরা হঠাৎ আফিফ কে ঝাপটে ধরে বললো,
>>আমি বদলে যাবো আফিফ আই প্রমিস প্লিজ আমাকে একটু ভালোবাসো আই লাভ ইউ এ লট প্লিজ আফিফ প্লিজ।
আফিফ জাইরা কে ধাক্কা দিয়ে থেকে চলে আসে। আর জাইরা সেখানে বসে বসে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে।
বাসাই এসে নুহা ফ্রেশ হয়ে ওজু করে নামাজ পড়ে কোরান তিলাওয়াতে করতে বসলো। আজ তার মনে অনেক অশান্তি লাগছে। নুহার যখনি মন খারাপ হয় বা মনে অশান্তি লাগে তখন সে কোরান তিলাওয়াত করে। এতে তার অনেক ভালোই লাগে। মনেও শান্তি লাগে খুব।
কোরান তিলাওয়াত শেষে নুহা জানালা খুলে দিলো রুমের বাহিরের প্রকৃতি দেখতে লাগলো। আজকের আকাশ খুব সুন্দর। নুহা ভাবছে আফিফ তাকে কতটা পবিত্র আর সুশ্রী মনে করে আর আসলে সে একজন পতিতা। আচ্ছা আফিফ যদি কখনো তার আসল পরিচয় জানতে পারে তখন কি হবে? সে বিষয়টা কিভাবে নিবে? কে জানে পরে কি হয়। আল্লাহ যা করবেন অবশ্যই ভালোর জন্য করবেন।
আফিফ ঘরে ঢুকে সিড়ি তে উঠে তার রুমে যাচ্ছিলো। পেছন থেকে নাহিদা বলে উঠলো,
>>আফিফ দাড়াও
আফিফ দাঁড়িয়ে বললো,
>>জি ছোটমা বলুন।
>>এইটা কোন টাইম হলো ঘরে আসার? লাঞ্চেও বাসাই আসোনা ইদানীং। সমস্যা কোথায় তোমার?
আফিফ আগে ভার্সিটি ক্লাস শেষে বাসাই আসতো। কিন্তু নুহা কে দিতে গেলে লাঞ্চ টাইম পেরিয়ে যায়। তাই ফিরতে দেরি হয়। আফিফ নাহিদা কে কিছু বলতে যাবে তখনি দু’তলা হতে রাফি বলে উঠলো,
>>ভাই এখন যথেষ্ট এডাল্ট। সে কখন বাসাই আসবে না আসবে এত কিছু তোমাকে কে ভাবতে বলেছে? আর তার ইদানীং কাজ বেড়েছে। লাস্ট ইয়ারের এক্সাম সামনে। ভার্সিটি তে চাপ বেড়েছে। আর মম প্লিজ ভাই এখন আর বাচ্চা নেই যে তোমাকে সব কিছুর কৈফিয়ত দিতে হবে।
>>রাফি ছোটমা আমার সাথে কথা বলছে প্লিজ তুই চুপ কর।
>>আফিফ তুমি ঘরে যাও আর রাফি তুমি নিচে আসো আমার কথা আছে।
আফিফ চলে যেতেই রাফি নিচে নেমে এলো।
>>জি বলুন।
>>নিজের মায়ের সাথে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা তুমি দিন দিন ভুলেই যাচ্ছো। আফিফ থেকে কিছু শেখো পারলে।
>>ওহ রিয়েলি। মা? তুমি তোমাকে আমার মা ডাকতেও জাস্ট ঘেন্না করে জানো। কারণ তুমি কখনোই মা হতেই পারোনি। না ভাইয়ের না আমার। তুমি নিজের স্বার্থ চেনো শুধু। ভাই কিছু জানেনা তাই এত মানে তোমাকে। জানলে বিলিভ মি তোমাকে মেরেই ফেলবে।
>>রাফি চুপ একদম।
>>উফফ চিল্লিও না আমাকে চুপ করিয়ে দিচ্ছো সমস্যা নেই। আমি জানি ভাই সব জানলে নিজেকেই বরবার করে দেবে। তাই তাকে কিছু বলছিনা। কিন্তু আর কতদিন। আল্লাহ কিন্তু আছেই। তোমার পাপের ফল তুমি পাবেই দেখে নিও।
রাফি চলে গেলো। নাহিদা ধপ করে সোফায় বসে পড়লো। সে মনে মনে ভাবছে “আমার এতদিন এর পরিশ্রম লাশের উপর দিয়ে এত কিছু অর্জন করেছি। না আমি এত সহজেই হাল ছাড়তে পারিনা। আর রাফির কথা তো নাই বা ভাবলাম যার জন্য চুরি করলাম সেই বলে চোর।”
চলবে….