#বিষাক্তময়_আসক্তি(The Villain 😈)
#Sumaiya_Akter_Mim
#পর্ব_৫০…………🌼
“ব্ল্যানকেট জড়িয়ে বিছানায় গুটিসুটি মেরে বসে আছে আয়ানা তাঁর সামনে রক্তলাল চোখে তাকিয়ে আছে ইরফান । তাঁর মুখ দেখে বুঝা যাচ্ছে কতোটা রেগে আছে সে যেকোনো সময় জ্বোয়ালামূখীর মতো ফেটে যাবে।।আয়ানা ভিতু চোখে ইরফানের দিকে তাকিয়ে আবার চোখ সরিয়ে নিল।রুমে দুজন লেডিস ডাক্তার আয়ানাকে দেখছে রুমে পরিবারের সবাই উপস্থিত আছে।সবার মুখে চিন্তা আর ভয়ের ছাপ।। একজন ডাক্তার আয়ানাকে ভালো ভাবে চেকাপ করে বললো,,
—-টেনশনের কিছু নেই ওনার ঠান্ডায় একটু সমস্যা আছে তাই অতিরিক্ত ঠান্ডা খাওয়ার ফলে গলা বসে গেছে জ্বর নেই শুধু কথা বলতে পারবে না আ,,,….
—-হোয়াট রাবিশ সমস্যা নেই ! আয়ু কথা বলতে পারছে না এটা সমস্যা নেই । লিসেন এখনি ওকে আগের মতো ঠিক করবেন না হলে একটাকেও জীবিত রাখবো না মাইন্ড ইট।।ডাক্তারের কথা না শুনে জোরে হুংকার দিয়ে বললো ইরফান।।। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।
ইরফানের হুংকার শুনে সবাই ভয়ে কেঁপে উঠলো,লেডিস ডাক্তার তো ভয়ে থরথর করে কাঁপছে রুমের প্রতিটা মানুষ ভয়ে কাঁপছে আয়ানা তো ব্ল্যানকেট শক্ত করে জড়িয়ে আরেকটু গুটিসুটি মেরে বিড়াল ছানার মতো গুটিয়ে গেলো।। মনে মনে আল্লাহকে স্মরণ করছে, যদি এই যাত্রায় ইরফানের রাগের হাত থেকে বেঁচে যায় আর কখনো এতো আইসক্রিম খাবে না।।নিজকে নিজে বকছে কেনো যে জিদ করতে গেলো ঠান্ডায় সমস্যা থাকার সত্বেও ঠান্ডার মাঝে এতো গুলো আইসক্রিম খাওয়া তাঁর উপরে জোরে জোরে চিৎকার করার ফলে গলার বারোটা বাজিয়ে ফেলেছে যার দারুন প্রভাব এখন কথা বলতে পারছে না।।আয়ানার ভাবনার মাঝে কপালে ইরফানের হাতের স্পর্শ পেতে তাঁর দিকে ভিতু চোখে তাকালো ইরফান কে বড্ড এলোমেলো দেখাচ্ছে চিন্তা, রাগ দুটোই ফুটে উঠেছে এখন কাউকে মাডার করতে পারলে নিজেকে শান্ত করতে সক্ষম হতো সে এমন মনে হচ্ছে।। ইরফান রিতিমত পাগলামো করা শুরু করেছে,সবাই ভয়ে জড়সড় হয়ে আছে একজন ডাক্তার ভয়ে ঢোক গিলে কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,,,
—-ডোন্ট ওয়ারি স্যার আমরা ম্যাম কে ঔষুধ দিয়ে দিচ্ছি কালকে সকালের মধ্যে গলা ঠিক হয়ে যাবে।। ভয়ে ভয়ে। তাঁর কথা শুনে অন্য ডাক্তারও সায় জানালো।।ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে আছে আয়ানা ভয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে হাত কচলাচ্ছে ইরফান যদি তাঁর পুরাতন হিংস্র রূপে ফিরে আসে তখন কী হবে ভেবে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে তাঁর।। ঔষুধ দেওয়ার পর ধিরে ধিরে রুম থেকে সকলে বের হয়ে যায় ইরফান এখনো শান্তভাবে তাকিয়ে আছে। একজন র্সাভেন্ট এসে গরম স্যুপ দিয়ে গেলে তা ধীরে ধীরে আয়ানাকে খাইয়ে দিলো কোনো কথা ছাড়া।আয়ানা ধীরে ধীরে খাচ্ছে আর ভিতু চোখে তাকিয়ে আছে এই শান্ত রূপ যে ঝড়ের পূর্বাভাস তা আয়ানা বুঝতে পারছে ভয়ে গলা দিয়ে খাবার নামছে না চোখ ভরে আসছে জলে।। ইরফান স্যুপ খাওয়ানোর পর পানি খাইয়ে মুখ মুছে দিলো তারপর ঔষুধ খাইয়ে দিলো। খুব শান্ত আর গভীর ভাবে সব কাজ করছে আয়ানা চট করে মুখের কাছ থেকে ইরফানের হাত ধরে ফেলল। ইরফান শান্তভাবে তাকিয়ে আছে তাঁর দিকে আয়ানা চটজলদি ইরফানের বুকে মাথা রেখে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। ইরফান আগের মতো বসে আছে কোনো ভাবান্তর নেই তা দেখে আয়ানা আরোও ভয় পেয়ে গেলো ইরফানের বুকে মাথা রেখে ফুঁপিয়ে কেঁদে দিলো। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।আয়ানার কান্নার আওয়াজ শুনে ইরফান আয়ানাকে সোজা করে বসিয়ে দুই হাত গালে রেখে শান্ত গলায় বলতে লাগলো,,,
—-আমি নিষেধ করেছিলাম, না খেতে তোমার সমস্যা হয় তারপরও কেনো খেয়েছো আমাকে কষ্ট দিতে।। ইরফানের কথা শুনে আয়ানা আরোও জোরে ফুঁপিয়ে কেঁদে দিয়ে আবার শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। ইরফান আর কিছু বললো না নিজেও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চুমু খেলো মাথায়,ধীরে ধীরে চুলে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।।। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।অনেক সময় অতিবাহিত হওয়ার পর ইরফান আয়ানাকে সোজা করে বসিয়ে চোখের পানি মুছে দিয়ে কপালে চুমু খেয়ে বললো,,
—- পরবর্তীতে যেনো আমার নিষেধের অমান্য না হয় মেরি জান। তোমার কষ্ট আমাকে ভীষণ কষ্ট দেয়। তোমার চুপ থাকাটা আমাকে কতোটা ক্ষতবিক্ষত করে তুমি বুঝতে পারো!এই মুহূর্তে খুব শুনতে ইচ্ছে করছে তোমার মুখের মি.এরোগেন্ট ম্যান কথাটা। কেনো বাচ্চামো করে এতো আইসক্রিম খেতে গিয়েছিলে এখন থেকে আমার কথার বিরুদ্ধে গেলে পানিসমেন্ট পেতে হবে। তুমি জানো তোমাকে নিয়ে আমি কতোটা চিন্তিত থাকি।এক নিঃশ্বাসে কথা গুলো বলছে ইরফান তাঁর কথার মাঝে গলা কাঁপছিল সাথে রাগ আর ভয় স্পষ্ট।।আয়ানা অপরাধীদের মতো মাথা নিচু করে সব কথা শুনছে আয়ানা মাথা উঁচু করে ঠোঁট উল্টিয়ে কানে হাত দিয়ে ঠোঁট নাড়িয়ে স্যরি বললো কথার আওয়াজ হচ্ছে না কিন্তু ইশারায় স্যরি বললো তা দেখে ইরফান মুচকি হেসে আয়ানাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।আয়ানা চোখ বন্ধ করে মৃদু হেসে আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। হঠাৎ মোবাইলে টুং করার আওয়াজে ইরফান চোখ খুলে মোবাইলের মেসেজ উপেন করলো। মেসেজটা দেখে ইরফানের চোয়ালে শক্ত হয়ে গেল রাগে চোখ দুটো লাল হয়ে গিয়েছে দাঁত চেপে রাগ দমানোর চেষ্টা করছে একবার আয়ানার দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণে আনে।আয়ানা এখনো চোখ বন্ধ করে ইরফানের বুকে মাথা রেখে জড়িয়ে আছে। ইরফান আয়ানাকে সোজা করে কপালে চুমু খেয়ে বললো,,,
—-তুমি একটু বসো মেরি জান আমি একটা ইম্প্রটেনট কল এ্যটেন্ট করে আসছি। গালে হাত রেখে।
আয়ানা মৃদু হেসে মাথা নাড়িয়ে হ্যা বললো। ইরফান আয়ানার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে বারান্দায় চলে যায় মোবাইল নিয়ে।।। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম। ইরফান বারান্দায় এসে হিংস্র বাঘের মত ফুসফুস করতে লাগলো রাগে।চোখ মুখে ভয়ংকর হিংস্রতা ফুটে উঠেছে, পকেটে থেকে মোবাইল বের করে গার্ডকে কল লাগলো,,,
—-নিশান উদ্দিনের কুকুর দুটোকে স্পেশাল ডেন্জারেস ওয়াল্ডে নিয়ে গিয়ে খাতিরদারি করো। দাঁতে দাঁত চেপে।।
—-জ্বী বস।লোক দুটো আলি আর মির ম্যামকে কিডন্যাপ করার উদ্দেশ্যে এসেছে কয়েক ঘা পড়তে সব বলে দিয়েছে।(গার্ড)
ইরফানের রাগ এখন শেষ সীমানা পেরিয়ে গিয়েছে রাগে থরথর করে কাঁপছে সে। এদিক সেদিক উন্মাদের মতো হাঁটছে আর মাথার চুল গুলো জোরে জোরে টানছে।। হিংস্রতা বেড়েই চলেছে। কতো বড় সাহস তাঁর জানকে তাঁর কাছ থেকে দূরে সরানোর চিন্তা করেছে কতোটা দুঃসাহস তাদের। নেহেত আয়ানা অসুস্থ না হলে নিজের হাতে পিসপিস করে কাটিং করতো সারা অঙ্গের। ইরফান আঙ্গুল দিয়ে কপাল ঘসে বললো,,,
—-এদের শরীরের একটা অংশ জেনো বাকি না থেকে কাঁটার প্রত্যেকটা অঙ্গ এমন করে কাটবে যাতে চিনতে না পারে কোনটা কোন অঙ্গের পার্ট , এমন করে কাটবে পূর্বের শরীরের সাথে মিল না পাওয়া যায়। কাটা অঙ্গের পার্সেল নিশান উদ্দিনের কাছে পাঠিয়ে দেও। বলে কট করে কল কেটে দিলো।। ইরফানের কথা শুনে গার্ড ভয়ে শুকনো ঢোক গিলে কাজে লেগে পরলো।।।
“নিজেকে শান্ত করে বারান্দা থেকে রুমে প্রবেশ করে সোজা ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হলো ইরফান।।আয়ানা বিছানায় বালিশে হেলান দিয়ে টিভিতে কার্টুন দেখছে। ইরফান টিভিতে একবার তাকিয়ে আরেকবার আয়ানার দিকে তাকালো খুব মনোযোগ দিয়ে কার্টুন দেখছে কোনো কিছুর হুঁশ নেই।ইরফান বিছানা থেকে রিমোট নিয়ে টিভি ওফ করে দিলো হঠাৎ করে টিভি ওফ হয়ে যাওয়ায় আয়ানার হুঁশ ফিরে আসে।।। ইরফানের হাতে রিমোট দেখে আয়ানা মুখ ফুলিয়ে ইরফানের কাছ থেকে রিমোট নিতে আসলে ইরফান হাত সরিয়ে নিলো তা দেখে আয়ানা আরোও ক্ষেপে যায় এক কথা বলতে পারছে না তাঁর উপর ইরফান এমন করছে কথা বলতে না পারা কতটা কষ্ট তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে সে।বেশ কিছুক্ষণ এদিক সেদিক ঘুরে দস্তাদস্তী করে যখন রিমোট পাচ্ছে না তখন গাল ফুলিয়ে হাল ছেড়ে বসে পরলো। ইরফান বাঁকা হেসে টেনে কোমড় জড়িয়ে বললো,,,
—-কী এনার্জি শেষ।।এমন পুটি মাছের শরীর নিয়ে লাগতে এসেছো। আজকে থেকে নতুন করে খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে যাতে পরবর্তীতে লড়তে সুবিধা হয়।
ইরফানের কথা শুনে আয়ানা আরো তেতে উঠল।রাগি মুখ করে ইরফানকে কয়েকটি কঠিন কথা শুনানোর জন্য মুখ খুলেও আওয়াজ বের হচ্ছে না। ইরফান ধমক দিয়ে বলল,,,
—একদম কথা বলার চেষ্টা করবে না তাহলে গলায় আরো সমস্যা হবে। চুপ করে বসে থাকো।রাগি গলায়।
ইরফানের ধমক শুনে আয়ানা চুপ করে গেলো গাল ফুলিয়ে চোখ হাত আর ঠোঁট নাড়িয়ে ইশারা করে বললো, রিমোট দিতে সে টিডি দেখবে।।আয়ানা তো আর বোবা নয় তাই বোবাদের মতো ইশারায় কথা বলতে পারছে না ইরফান বুঝতে পারলেও দুষ্টু হেসে বললো,,,
—কী বলছো আয়ু তোমার কী ক্ষুধা লেগেছে! একটু অপেক্ষা করো আমি খাবার নিয়ে আসতে বলছি বলে ঘুরতে নিবে আয়ানা হাত শক্ত করে ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে মাথা নেড়ে না বলে সে খাবে না। ইরফান কিছুক্ষণ ভাবার অভিনয় করে বললো,, তাহলে গলা ব্যথা করছে। ইরফানের এমন উল্টো পাল্টা কথা শুনে আয়ানার ইচ্ছে করছে নিজের চুল নিজে ছিঁড়ে ফেলতে কেনো যে আইসক্রিম খেতে গেলো।।। ইরফান আরো কিছু বলবে আয়ানা চটজলদি গিয়ে ড্রয়ার থেকে পেন পেপার এনে বড় বড় অক্ষরে লিখলো, আমাকে রিমোট দিন আমি টিভি দেখবো সাথে একটা রাগি ইমুজি এঁকে ইরফানের দিকে ধরলো। ইরফান তা দেখে ঠোঁট বাঁকা করে বললো,,,
—- তোমার রিমোট লাগবে।
আয়ানা মাথা নাড়িয়ে হ্যা বললো। ইরফান বাঁকা হেসে বললো,,,
—-এখন ঘুমাবে পরে টিভি।।
আয়ানা মাথা নাড়িয়ে না বললো সে এখন টিভি দেখতে চায় তাঁর প্রিয় টম অ্যান্ড জেরি মুভি চলছে মিস্ করা যাবে না। ইরফান বিছানায় শুয়ে আয়ানাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে শুয়ে ব্ল্যানকেট জড়িয়ে নিলো আয়ানা ছটফট করলে ধমক দিয়ে থামিয়ে দেয়।আয়ানা মুখ ভার করে শুয়ে আছে ইরফানের বুকে। ইরফান মুচকি হেসে টিভি অন করে দিলো।।আয়ানা হাল্কা হেসে টিভি দেখায় মনোযোগ দিল। সত্যি কথা বলতে না পারা খুব কষ্টকর কী করে যে বোবা মানুষ না কথা বলে থাকে ভেবে আয়ানা দীর্ঘ শ্বাস ফেললো। একদিন কথা বন্ধ বলে কতোটা খারাপ লাগছে কিন্তু পৃথিবীতে এমন অনেক আছে যারা জম্ম থেকে কথা বলতে পারে না, চোখে দেখে না আরো কতো সমস্যা ।একটা মানুষের সৌন্দর্য তাঁর রূপে নয় তাঁর প্রতিটা পরিপূর্ণ অঙ্গ তাঁর সৌন্দর্য একটা অঙ্গ বিহীন তুমি তোমাকে নিজের কাছে এবং পৃথিবীর কাছে অসুন্দর কাঙ্গাল মনে করবে।।প্রকৃত সৌন্দর্য হচ্ছে আসল সৌন্দর্য বাহ্যিক সৌন্দর্য কিছু সময়ের যা সময়ের সাথে ফুরিয়ে যাবে।। অনেকক্ষণ যাবত টিভি দেখতে দেখতে আয়ানা ইরফানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে যায় ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে আয়ানার কপালে চুমু খেয়ে রিমোট দিয়ে টিভি ওফ করে আয়ানাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আয়ানার দিকে তাকিয়ে রইল।। হঠাৎ টুং টুং কয়েকটি আওয়াজ হতে ইরফান মোবাইল হাতে তুলে নিলো মোবাইলের মেসেজ বক্স উপেন করতে চোখ চকচক করে ওঠে খুশিতে, মুখে ফুটে উঠলো পৈশাচিক হাঁসি।। তাঁর কথা মতো গার্ডরা নিশান উদ্দিনের লোক দুটোকে কেটে পিস পিস করে বাক্সে ভরেছে তাঁর ছবি পাঠিয়েছে ইরফানের কাছে।ছবি গুলো দেখে বুঝা যাচ্ছে না কোনটা কোন অঙ্গ শুধু চোখ বাদে।। ইরফান ছবি গুলো দেখে তৃপ্তির হাসি হাসছে আয়ানার দিকে তাকিয়ে দেখলো বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে। ইরফান আয়ানার ঠোঁটে হালকা ঠোঁট ছুঁইয়ে মনে মনে বলতে লাগলো,,,
—-তোমার কাছে পৌঁছানোর আগে সব বাড়ন্ত হাত আমি এমন করে উপড়ে ফেলবো তোমার অজানায়। কোনো আগাছা রাখবো না যা আমার জানকে স্পর্শ করতে পারে।এই তোমার মাঝে বসবাস করে আমার প্রান ভোমরা তোমাকে ছাড়া নিঃস্ব আমি।।
লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।।
🌸🌸
“আজকে চারদিন আয়ানা একদম সুস্থ।ডাক্তারের কথা মতো পরের দিন দুপুরের আগে গলা ঠিক হয়ে যায়।গলা ঠিক হওয়ার পর প্রান খুলে ইচ্ছে মতে কথা বলেছে সবার সাথে।। বিকেলের দিকে ইরফান বাহিরে গিয়েছে কাজে, যাওয়ার আগে এতো এতো উপদেশ দিয়ে গিয়েছে যাতে ঠিক মতো থাকে, লাফালাফি না করে, প্রয়োজন হলে কল করে কিছুক্ষণ বাদে ফিরে আসবে আরো অনেক কিছু।।।আয়ানাও ভদ্র মেয়ের মতো সব কথায় সায় জানালো।।
“হল রুমের সোফার উপরে গালে হাত দিয়ে বসে আছে আয়ানা তাঁর পাশে সাফিয়া বসে আছে ইসহাক ঔষুধ খাওয়ার ফলে লম্বা ঘুম দিয়েছে আর আসফিয়া খান রান্না ঘরে নাস্তার ডিস বলে দিচ্ছে রাঁধুনি কে।আয়ানা বিরক্ত হচ্ছে এইভাবে বসে থাকতে কোনো কথা পাচ্ছে না বলার জন্য।সাফিয়ারও এইভাবে শুয়ে বসে থাকতে বিরক্ত লাগে কিন্তু ইসহাকে নিয়ে তাঁর সময় দারুন ভাবে কাটে একমিনিট না দেখলে কথা না শুনলে ভালো লাগে না বড্ড বেশি ভালোবাসে নিজের স্বামীকে।। দুজন মেয়ে পরিচালিকা দাঁড়িয়ে আছে তাদের সাথে কথা বলছে সাফিয়া আয়ানা বিরক্তির সাথে এদিক সেদিক তাকাচ্ছে সাফিয়া আয়ানাকে নানা কথা বলছে কিন্তু আয়ানা ওসবে কান দিচ্ছেনা।।
“শিড়ি বেয়ে ইমরান খান নিচে নেমে আসে মাথায় টুপি পরে আছে হাত গড়ির দিকে বারবার তাকাচ্ছে মনে হচ্ছে খুব তাড়া আছে। আশফিয়া খান এগিয়ে এসে উনার ব্যাগটা এগিয়ে দিল।আয়ানা কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে কিছু একটা ভেবে এগিয়ে গেল তাঁর কাছে হাঁসি হাঁসি মুখ করে বললো,,,,
— আসসালামুয়ালাইকুম আব্বিজান!
ইমরান খান হেসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো,,,
—- ওয়ালাইকুমুস সালাম মামনি। কিছু বলবে।
—-আহ্ আব্বিজান কোথাও যাচ্ছেন।কিছুটা থেমে থেমে বললো। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।
(এই কিছুদিনে সবার সাথে বেশ ফ্রি হয়ে গিয়েছে আয়ানা সবাই তাকে যথেষ্ট ভালোবাসে স্নেহ করে বিশেষ করে ইমরান খানের খুব পছন্দের সে কিন্তু ইরফানের ভয়ে কেউ তেমন ভাবে কথা বলতে পারে না আর ইমরান খান খুব কম সময় বাড়িতে থাকেন।।আয়ানাকে সবসময় আদর করে মামনি বলে সম্বোধন করে তিনি।)
আয়ানার কথা শুনে ইমরান খান গড়ির দিকে তাকিয়ে বললো,,,
—জ্বী মামনি গ্ৰামে যাবো সকল বাড়িতে সবার সুবিধা অসুবিধার দিক দেখার জন্য গ্ৰাম পরিদর্শন যাকে বলে।।।তোমার কী কিছু লাগবে মামনি। মাথায় হাত বুলিয়ে।।
আয়ানা কিছুক্ষণ ভেবে বলল,,,
—–আব্বিজান আজকে যেতে হবে না আগামীকাল গ্ৰাম পরিদর্শন করবেন! মাথা নিচু করে।।
ইমরান খান হেসে বললো,,,
—-কী হয়েছে মামনি কিছু লাগবে নির্দ্বিধায় বলতে পারো আমি তো তোমার আরেকটা বাবা তাই না।আমার মেয়ে কিছু চাইবে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করবো দেওয়ার জন্য বলো।
ইমরান খানের কথা শুনে আয়ানা খুশি হয়ে বললো,,,
—–আজকে আপনি বাহিরে যাবেন না আমাদের সকলের সাথে সময় কাটাবেন।প্লিজ। বাচ্চাদের মতো করে।
আয়ানার কথা শুনে ইমরান খান কিছুক্ষণ ভেবে বললো,,
—-আচ্ছা ঠিক আছে মামনি। তুমি এই প্রথম আমার কাছে কিছু চেয়েছো আমি কী না করতে পারি আজকে আমি কোথাও যাবো না।
একজন গার্ড কে যাওয়া ক্যানসেল করতে বললো আগামী কাল যাবে।।আয়ানার দিকে তাকিয়ে বললো, এইবার খুশিতো।
আয়ানা হেসে বললো,,, অনেক!
আয়ানার কথা শুনে তিনি মৃদু হাসলেন।। অন্যদিকে বাড়ির সকলে হা করে তাকিয়ে আছেন বিশেষ করে আসফিয়া খান। বিয়ের পর এই পর্যন্ত কখনো স্বামীকে বলে একদিন বাসায় রাখতে পারেনি শুধু কাজের পেছনে ছুটেছেন ইমরান খান। নিজে ইচ্ছে করে সময় করে যতোটা পরিবারকে সময় দিয়েছে ততোটাই।কাজ ছাড়া তিনি শান্তিতে দু দন্ড থাকেন না ।আয়ানা একবার বলতেই রাজী হয়ে গেল। সত্যি মেয়েটার মাঝে জাদু আছে।এই জাদুতে এই অর্থ প্রাচুর্যে ঘেরা সুখহীন ঘরটা সুখী করে দিবে সে।এর মিষ্টি মিষ্টি কথায় আচারণে সবার নিষ্ঠুর মনে ভালোবাসার জম্ম দিবে যেমন তাঁর ছেলেকে হ্নদয়হীন থেকে একজন হ্নদয়বান মানুষে পরিপূর্ণ করেছে ঠিক সেইভাবে।।।আশফিয়া খানের ভাবনার মাঝে আয়ানা বলে উঠলো,,,
—-শুধু সময় কাটালে চলবে না আব্বিজান আমাদের সাথে খেলতে হবে। আজকে সবাই মিলে সময় কাটাবো মজা করবো আর গেইমস খেলবো। খুশিতে আটখানা হয়ে।।
আয়ানার কথা শুনে উপস্থিত সবার মুখ হা হয়ে গিয়েছে। সবাই বিষ্ময় চোখে একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে।ইমরান খান ভ্রু কুঁচকে বলে উঠলো,,
—-গেইমসস !!
আয়ানা মাথা নাড়িয়ে বললো, হুম গেইমস খেলবো।আমার এইভাবে বসে, শুয়ে,টিভি দেখে প্রতিদিনকার এক কাজ করতে ভালো লাগছে না তাই ভাবছি সবাই মিলে গেইমস খেললে সবার ভালো লাগবে।।। এক্সাইটেড হয়ে।।।
—-তাই বলে বৃদ্ধ বয়সে গেইমস।আমি খেলবো না তোমরা খেলো আমি না হয় দর্শক হয়ে দেখবো। ইমরান খান বললো।
—-না না আব্বিজান সবাই খেলি না। আর কে বলছে আপনি বৃদ্ধা হয়ে গিয়েছেন আপনাকে এখনো হিরোদের মতো লাগে একদম অমিতাভ বচ্চনের মতো দেখতে লাগে।ফিক করে হেসে দিয়ে।।
আয়ানার কথা শুনে আসফিয়া খান হেসে দিয়ে বললো,,,
—-এই বয়সে অমিতাভ বচ্চন।জানো তোমাদের আব্বিজানের প্রিয় হিরো অমিতাভ বচ্চন।। কিন্তু অমিতাভ বচ্চন এর মতো লম্বা হলে অমিতাভ বচ্চন হওয়া যায় না ঠাট্টা করে।।
ইমরান খান কিছুটা থমথমে গলায় বললো,,
—-দুই ছেলের মা হয়ে নিজেকে মাধুরী দীক্ষিত এর মতো সাজালে মাধুরী দীক্ষিত হওয়া যায় না। ঠোঁট বাঁকা করে।।।
উনাদের দুজনের কথা শুনে আয়ানা শব্দ করে হেসে দিলো সাফিয়া মুখ টিপে হাসছে ।। দুজন বেশ ভালো ক্ষেপাতে পারে।।আয়ানা দুজনকে থামিয়ে দিয়ে সবাইকে নিয়ে ক্যারাম খেলতে বসে পরলো।।সবাই আলাদা আলাদা কারোর পার্টনার নেই।।আয়ানা খুব এক্সাইটেড হয়ে খেলতে বসেছে মুখে তাঁর তৃপ্তির হাসি। ইমরান খান মুখটাকে ফাটা বেলুনের মতো করে রেখেছে এই বয়সে এসব খেলতে হবে তাকে। রাজনীতিবাদ সে কেউ তাকে ছেলের বউয়ের সাথে খেলতে দেখলে বলবে এখনো বাচ্চাদের খেলা খেলে আমাদের পলিটিশিয়ান নেতা ইমরান খান । মান ইজ্জত কিছুই থাকবেনা তাঁর।। দীর্ঘদিন না খেললেও বেশ পটু তিনি এসব খেলায় তাই খুশি মনে খেলা শুরু করে দিলেন। হারলে চলবে না তাহলে ছেলের বউদের সামনে ইজ্জত থাকবে না তাঁর তাই খেলায় মনোযোগ দিল।।।সবাই মনোযোগ দিয়ে খেলা শুরু করে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই খেলা জমে যায়।।।।।
(গল্পটা কেমন হয়েছে সবাই গঠন মূলক মন্তব্য করবেন ধন্যবাদ সবাইকে ❤️💞)
#To_be_continue……….🌼
#Happy_Reading
লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম✵