স্বামী – পর্ব ২৮

0
470

#স্বামী
পর্ব-২৮
#Nirzana(Tanima_Anam)

-কেন এসছো এখানে?তোমার নতুন বরকে রেখে এখানে আসলে কেন???আমার ভাইয়ের মরা মুখ দেখতে???

নীরার কথাগুলো শুনে অনুর বুকের ভেতরটা ধক করে ওঠে।তাহলে কি সত্যি নির্ঝরের অবস্থা খুব খারাপ??নির্ঝর কি আমাকে রেখে চলে যাবে??

কিছুক্ষন আগে যখন নীরা সিমি আর মা বসে বসে অনুকে ইচ্ছে মতো গাল মন্দ করছিলো হটাৎই বাড়ির ল্যান্ড নম্বরে একটা ফোন আসে

নীরা ফোনটা তুলেই অপর প্রান্ত থেকে নির্ঝরের কোনো বন্ধু বেশ উদ্দ্বীগ্ন কন্ঠে জানায় নির্ঝরের এক্সিডেন্ট হয়েছে।হাইওয়ের রাস্তা ধরে নির্ঝর বেশ জোড়ে গাড়ি চালাচ্ছিলো।অমনষ্ক থাকায় হটাৎই একটা ট্রাক এসে নির্ঝরের গাড়িটাকে ধাক্কা মেরে দেয়।নির্ঝরকে সেখানকার লোকাল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।অবস্থা তেমন ভালো না।
কথাটা শুনেই নীরা স্তবদ্ধ হয়ে যায়।হয়তো
এমন কিছুরই আশংকা করছিলো নীরা

ভাই যে অনু ভাবিকে কতেটা ভালোবাসে তা তো নীরার অজানা নয়।কথাটা শুনেই নীরা মেঝেতে ধপ করে বসে হাউ মাউ করে কেঁদে ওঠে।সবাই উদ্বীগ্ন হয়ে নীরাকে প্রশ্ন করছে কি কি হয়েছে??
নীরা চুপ চাপ কেঁদেই চলেছে!! মুখে কোনো কথা নেই!!

বাড়ি সুদ্ধো সবাই এখন হাসপাতালের বারান্দায় জমা হয়েছে।সবাই নির্ঝরের রুমের সামনে থাকলেও অনু দূরে এক কোণে চুপটি করে দাড়িয়ে আছে।
নির্ঝরের কেবিন থেকে ডাক্তার বের হতেই অনু গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যায় ডাক্তারের কাছে।

অনুকে এতেক্ষন নীরা একদম লক্ষ করে নি।কিন্তু এদিকে এগিয়ে আসাতে নীরা অনুকে দেখতে পায়।অনুকে দেখে নীরা রাগে ফুসতে থাকে।
-অসভ্য মেয়ে আবার কেন এসেছো এখানে??তোমার এক্স বফ কোই ও সরি তোমার নতুন বর সে কোথায়?দুজন মিলে তো আমার ভাইকে মেরেই ফেল্লে লজ্জা করলো না এখানে আসতে?কি নতুন তামাশা করতে এসেছো এখানে??
-নীরা এসব কি বলছো?নির্ঝর আমার স্বামী
-নীরা যা বলেছি ঠিকিই বলেছে তুমি তো দেখছি গাছেরও খাও তলার ও কুড়াও… অসভ্য বাজা মেয়ে মানুষ… আমার ছেলেকে ফুসলিয়ে ফাসকিয়ে আবার এসেছো নাটক করতে(নীরার মা)
-মা আমি তো….
-যাও এখান থেকে বের হউ।তুমি ভালোবাসার দাম দিতে জানো না।তোমার মতো মেয়ে ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য না (নীরা)

নীরা কথাটা বলেই অনুকে ধাক্কা দেয় অনু নিচে পড়ে গিয়ে কান্না করতে থাকে।

ডাক্তার জানিয়েছে নির্ঝরের অবস্থা ভালো না।মাথায় খুব ব্যাথ্যা পেয়েছে।এছাড়া পায়েও খুব লেগেছে।অনেক ব্লিডিং হয়েছে রক্তের প্রয়োজন।

যখন সবাই চারদিক নির্ঝরের জন্য রক্ত খুজছিলো তখন কোথা থেকে সায়ন চলে আসে।সায়ন আর নির্ঝরের ব্লাডগ্রুপ সেম।সায়নই নির্ঝরকে রক্ত দেয়।

সায়ন নির্ঝীকে রক্ত দিয়েই মাথা নিচু করে বেরিয়ে যায়।কোনো কথা বলে নি।সায়ন বেশ কিছুক্ষন অনুর দিকে তাকিয়ে আছে।বেশ খিটিয়ে খুটিয়ে দেখছে অনুকে।কেঁদে কেঁদে চোখ মুখ লাল হয়ে গিয়েছে।চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে।ঠোটটা শুকিয়ে গেছে।
অনুকে দেখে মনে হচ্ছে তার দম যেন গলার কাছে বিঁধে আছে।প্রান পাখিটা ছট পট করছে।একটু ঊনিশ কুড়ি হলেই প্রান পাখিটা খাঁচা ছেড়ে পালাবে।

সায়ন আর অনুর সাথে কথা বলে নি শুধু একটিবার অনুর মুখের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে চলে গিয়েছে।অনুকে এভাবে দেখতে মোটেও ভালো লাগছে না তার।

সায়ন চলে যেতে নিলে পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে নীরা তাকে ছলছল চোখে দেখছে।
নীরার এরকম দৃষ্টি কেন যেন সায়নের বুকে গিয়ে বিঁধছে।
অনু তখন দূ
একটা চেয়ারে বসে বসে কাঁদছিলো।এইজগতের সাথে তার যেন কোনো সম্পর্কই নেই।অনু একরকম জমে গিয়েছে।

প্রায় দুদিন পর

নির্ঝরকে কেবিনে নেওয়া হয়েছে।বলতে গেলে নির্ঝর এখন আউট অফ ডেঞ্জার

নির্ঝরের ঞ্গান ফিরতেই দেখে
নির্ঝরের মাথার কাছে বসে আছে নীরা। মা একটু দূরে বসে আছে।আর সিমি নির্ঝরের বা পাশে হাতটা ধরে বসে আছে।

নির্ঝর চোখ তুলে তাকাতেই দেখে সিমি হাতটা শক্ত করে ধরে আছে।নির্ঝর গোটা ঘরটায় দিকে একবার চোখ বুলায়।নির্ঝরের তৃষ্ঞার্ত চোখ দুটো কাউকে খুজছে।
অনু!!অনু কোথায়??তাহলে কি সে আসে নি?অনু কি জানে না আমি অসুস্থ??তাহলে কি সত্যি অনু আমাকে আর চায় না??তাহলে কি সত্যি অনুকে ছাড়ায় বাকি জীবনটা কাঁটাতে হবে??অনু কি আর ফিরবে না??

কথাগুলো মনে আসতেই নির্ঝরের বুকটা ধক করে ওঠে।
হয়তো তার ভালোবাসার সমাপ্তি ঘটতে চলেছে।এবার বোধয় সত্যিই সম্পর্কটাতে ইতি টানতে হবে।অনুকে মুক্তি দিতে হবে।

এতো শত ভাবনার মাঝে নির্ঝর বাম হাতে চাপ অনুভব করে।নির্ঝর বা পাশে তাকাতেই দেখে সিমি নির্ঝরের হাত ধরে আছে।নির্ঝর সিমির থেকে হাত সরিয়ে এদিক সেদিক তাকাতেই দেখে দরজার পাশে হালকা গোলাপি রঙের একটুকরো কাপড় দেখা যাচ্ছে।নির্ঝর একটু ভালো করে তাকিয়ে দেখে এটা করো শাড়ির আচল….

নির্ঝরের মুখে রাজ্য জয়ের হাসি….
নির্ঝর বেশ অস্পস্ট স্বরে ডাক দেয়
-অনু…!!!

কোথা থেকে অনু ঝড়ের গতিতে ছুটে এসে সিমিকে ধাক্কা মেরে সড়িয়ে দিয়ে নির্ঝরের বুকে আছরে পড়ে।
ঘটনাটা আকষ্মিক ঘটায় নীরা, নির্ঝরের মা হা হয়ে তাকিয়ে আছে।ততোক্ষনে অনু নির্ঝরের বুক ভাসিয়ে দিচ্ছে নিজের অশ্রু ধারায়

-যদি যেতে চাও আমায় নিয়ে যাও,তুমি হীন আমি আলোহীন আধার…..
তুমি হীন আমি অর্থহীন,অসমাপ্ত আমি জায়গা চায় আমি বাঁচতে চায় আমি আশ্রয় চাই।দিন না আমায় একটু জায়গা!!মি.নির্ঝর আমাকে আপনার বুকের বা পাঁশটায় একটু জায়গা দিবেন???

নির্ঝর মুচকি হেসে উওর দেয়….
-আমি পেরেছি তেমার বুকের বা পাশটায় নিজের নাম লিখতে…..!!!অনু ভালোবাসি!!!

অনু একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নির্ঝরের দিকে আর নির্ঝর অনুর দিকে।বাঁকি সবার দৃষ্টি এই দুজনের দিকে।কি হচ্ছে কি এখানে????

চলবে…..

(গল্পটা লিখতে দেরী হয়।অনেক অপেক্ষা করাই অভিযোগ গুলো সত্য তবে আমার উপায় নেই।একেই তে অ্যাডমিশন তার উপর দুদিন হলো আমার ফোন চুরি গেছে।ঐ ফোনটাতে ২৮ এবং ২৯ পার্ট লিখাছিলো সব হারিয়ে গেলো।ফোনটা আমার অনেক প্রিয়ো ছিলো সাথে মেমোরি কার্ডটা।তবে কিছু করার নেই।অপেক্ষা করারনোর জন্য সত্যিই দুঃখিত)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here