#স্বামী
পর্ব-৮
#Nirzana(Tanima_Anam)
-আপনার মতো চরিত্রহীন লোককে শুধু ঘেন্না করা যায় ভালোবাসা যায় না….!!
কথাগুলো বলেই অনু ঘর থেকে বেরিয়ে যায়…
নির্ঝর আর সিমি দুজনই বাকরুদ্ধ হয়ে দাড়িয়ে আছে….
কিছুক্ষন আগের ঘটনা….
সিড়ির সামনেই অনু দাড়িয়ে আছে।নির্ঝরের হাতে পায়ে ব্যান্ডেজ দেখের অনুর খুব ইচ্ছে করছে একবার নির্ঝরের কাছে এগিয়ে যেতে কিন্তু নির্ঝকে ঐ মেয়েটা আর নির্ঝরের মা এমন ভাবে ঘিরে রেখেছে যে অনু চাইলেও যেতে পারছে না
কেমন একটা সংকোচ কাজ করছে।
একটু পরই
নির্ঝর মেয়েটির হাতে ভর করে ওঠে দাড়ায় তারপর এগিয়ে আসে সিড়ির দিকে..
অনু ভেবেছিলো নির্ঝর হয়তো তার কাছেই এগিয়ে আসছে
কিন্তু একি কান্ড…..!!!
নির্ঝর সেই নতুন মেয়ের হাত ধরে ঘরে চলে গেলো অনুর দিকে একবার তাকালোও না….।।।
তার ঠিক পাশেই যে একজন প্রানী তার দিকে কৌতুহলী দৃষ্টিতে অপেক্ষা করছে সেদিকে নির্ঝরের খেয়ালই নেই…!!!
নির্ঝর দিব্য ঘরে চলে যায়….
অনুও পেছন পেছন চলে গেলো ঘরে।
কি সর্বনাশ ঘরের দরজাও বন্ধ করে রেখেছে।
রাগে অনুর গা জ্বলছে….
প্রথম দিনই বুঝেছিলাম এ লোকের চরিত্রে সমস্যা রয়েছে….!!!
না হলে কেউ প্রথম দিনই নিজের বউকে জোড় করে….
অনু গায়ের সর্বশক্তি দিয়ে দরজা ধাক্কাতে লাগলো….
-“এই যে মি.চরিত্রবান স্বামী এবার দরজাটা খুলুন আমিও দেখি আপনার ভালোবাসার বাহার…”
ভেতর থেকে কোনো সাড়া নেই।
অনুতো দরজা ধাক্কিয়েই যাচ্ছে।
লাথি ঝাটা কিছু বাকি রাখেনি…
পারলেতো কখন দরজা ভেঙ্গে ফেলতো!!
-কি হলো ভেতরে কি এমন লীলাখেলা চলছে যে দরজা বন্ধ করতে হয়….
অনু বার বার দরজা ধাক্কাচ্ছে একটু পর সিমি দরজা খুলে দেয়।
সিমি হলো সেই মেয়েটি।।।
অনু রাগী দৃষ্টিতে সিমিকে একপলক দেখে নেয়
“নাহ মুখটা খুব চেনা চেনা লাগছে যেন কোথাও দেখেছি কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারছিনা…”
সিমি অনুকে দেখে মুচকি হেসে জানতে চায়
-কেমন আছো মিসেস চৌধুরী
অনু সিমির কথার উওর না দিয়ে সিমিকে এক ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় তারপর ভেতরে চলে যায়….
অনু নির্ঝরকে কথাগুলো বলেই দমদম করে বেরিয়ে আসে
ঘরের বাহিরে এসেই ছুট লাগায়চ ছাদে।
আজকে জোছনা রাত…
অনুর বড্ড ইচ্ছে ছিলো বরের সাথে জোছনা বিলাস করবে….
বর মানে তো সায়ন কিন্তু..
অনু হাউ মাউ করে কেঁদে দেয়।
অনু ইচ্ছে মতো কাঁদছে।
কিন্তু কার জন্য কাঁদছে সে
সায়নের জন্য নাকি সেই দুদিনের স্বামীর জন্য।
উওরটা অনু নিজেও জানে না কিন্তু সে কাঁদছে প্রচুন্ড কাঁদছে…..
একটু পরই কেউ একজন ধীর পায়ে অনুর দিকে এগিয়ে আসে
অনুর কাঁধে হাত রাখতেই অনু বেশ ভয় পেয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়
-বাবা গো!!
-কি হলো ভয় পেলে বুঝি
নির্ঝর অনুর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দেয়।
অনু নির্ঝরের দিকে তাকিয়ে ভেংচি কেটে দেয়।
-তাহলে শেষ হলো আপনার লীলাখেলা
-কি বলছো এসব
-বন্ধ দরজার পেছনে কি হয় তা আর আমাকে বুঝাতে হবে না
-অনু তুমি যেমনটা ভাবছো বষয়টা তেমন নয়….
-চুপ করুন আপনার চরিত্র সম্পর্কে আমাকে বোঝাতে আসবেন না।।
নির্ঝর অনুর দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে…
অনুর চোখে মুখে স্পস্ট রাগ দেখা যাচ্ছে….
-অনু তোমার কি হিংসে হচ্ছে
-একদমই না
-ভালো
-হুম্মমমমমম।আপনি যার সাথে যা খুশি তাই করুন আমার জন্য আমার সায়ন….
নির্ঝর হাতের একটা অঙ্গুল দিয়ে অনুর ঠোট জোড়া বন্ধ করে দেয়…
-সসসসসস্
“জানো অনু আজ পূর্নিমা।যেদিন তোমায় আমি প্রথম দেখেছিলাম সেদিনও পূর্ণিমা ছিলো।সময়টা ছিলো রাতের শেষের দিকে।সবে পূব আকাশে সূর্য উঠছিলো আমি সমুদ্রের পাড়ে খোলা আকাশের নিয়ে দাড়িয়ে ছিলাম।হটাৎই চোখ যায় সমুদ্রর ঢেউয়ের দিকে।
একটা মৎসকন্যা ঢেউয়ের সাথে আমার দিকে ভেষে আসছিলো।কৌতুহল আটকাতে না পেরে আমিও ছুটে গেলাম সেই মৎস্যকন্যার কাছে।তখন সে সমুদ্রর পাড়ে উবু হয়ে পরে ছিলো।আমি কাছে গিয়ে মুখটা ঘুরিয়ে নিতেই দেখতে পেলাম এটা সত্যি সত্যিই একটা মৎস্যকন্যা।তার সারা শরীর ধবধবে সাদা। ঠিক রূপকথার গল্পে যেমনটা হয়”
অনু বেশ মনোযোগ দিয়ে কথাগুলো শুনছিলো….
কৌতুহল চেপে রাখতে না পেরে অনু বলে ওঠে
-ওটা কি সত্যিই মৎস্যকন্যা ছিলো???
নির্ঝর ধীর পায়ে অনুর একদম কাছে চলে আসে একহাতে অনু চেপে ধরে বুকের সাথে।
তারপর কপালে একটা গভীর চুমু এঁকে দেয়
“হুম্ম সত্যিই ওটা একটা জীবন্ত মৎস্যকন্যা ছিলো অনু”
চলবে….
(অনেকদিন পর লিখলাম সময নেই তাই ছোট্ট করে লিখেছি।হুট করেই লিখেছি তাই হয়তো তেমন ভালো হয় নি তবুও ইচ্ছে হলো তাই লিখলাম আর কি….)