#তুমি_বললে_আজ
লেখনীতেঃ #রিধিমা_জান্নাত_রূপা
পর্বঃ ৩৯.
.
অন্ধকার রাতের নিস্তব্ধ নগরীতে হঠাৎ কারোর স্পর্শ পেয়ে ঘুমটা আলগা হয়ে গেল। আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে কেউ একজন কোলে নেবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আধো ভাঙা ঘুমের ঘোরে থাকলেও স্পর্শটা খুব পরিচিত অনুভব হলো। মিটমিট করে চোখ দু’টো মেলে ধরতেই ভেসে উঠলো চিরচেনা কাছের মানুষটার মুখ। লাল আভায় ছড়িয়ে গেছে পুরো মুখে। ঝাপসা চোখে এক পলক ওনাকে দেখতে পেয়ে আবারও চোখ দুটো বন্ধ করে নিলাম। দু’হাতে গলা জড়িয়ে বুকে মুখ লুকানোর চেষ্টা চালিয়ে গেলাম।
.
মধ্য রাতে আবারও কাল রাতের মতো একই স্বপ্ন দেখে ঘুমটা ভেঙে গেল। ‘তাসফি আমার মেয়েকে বাঁচাও’ বলে চিৎকার করে উঠে কান্না করতে লাগলাম। পুরো বিছানা জুড়ে খুঁজেও তাসফি কে পেলাম না। নিজেকে একাকিত্বে অনুভব করে আরও জোরে কেঁদে উঠলাম। ফাঁকা অনুভূতিতে ছেয়ে গেল সব কিছু। এই সময়ে ওনাকে খুব করে প্রয়োজন আমার পাশে। ওনার তো রুমেই থাকার কথা, তাহলে কোথায় গেল? রাতে তো এসেছিলেন উনি, আমার তো স্পষ্ট মনে আছে কোলে করে রুমে নিয়ে এসেছিলেন। তাহলে কি তাসফি চলে গেছেন। এত কিছু ভাবনার মাঝে ‘তাসফি কোথায় তুমি?’ বলে আবারও ডুকরে কেঁদে উঠলাম।
হঠাৎ রুমের লাইট জ্বলে উঠে রুমটা আলোকিত হতেই চোখ তুলে তাকালাম, সামনে দাঁড়িয়ে আছে তাসফি। বিছানায় এসে বসতেই ওনাকে ঝাপটে ধরে ফুপিয়ে কেঁদে উঠলাম।
“আমাদের বাচ্চাটাকে বাঁচিয়ে নাও তাসফি, ওকে হারিয়ে যেতে দিও না। খুব কষ্ট হবে ওর, বাঁচিয়ে নাও ওকে তাসফি, বাঁচিয়ে নাও। ওকে হারিয়ে আমরা কিছুতেই ভালো থাকতে পারবো না, বারবার এই স্বপ্নগুলো আমাকে তাড়া করে বেড়াবে। আমার জন্য ওর কোন ক্ষতি হতে দিও না তাসফি, তুমি ওকে বাঁচিয়ে নাও।”
অস্পষ্ট সুরে কথা গুলো বলতেই দু’হাতে আঁকড়ে নিলেন উনি। আস্তে করে বললেন,
“আমাকে এভাবে পর করে দিও না রুপু, দূরে ঠেলে দিও না আমাকে। থাকতে পারবো না আমি তোমায় ছাড়া, নিঃশেষ হতে সময় লাগবে না আমার।”
“আপনি পাশে থাকলে কিছু হবে না আমার, এই কয়েক মাসের সামান্য কষ্ট গুলো আমি অনায়াসে সহ্য করে নিবো। তারপর একদম সুস্থ হয়ে ফিরে আসবো আপনার কাছে। শুধু আপনার জন্যই ফিরে আসবো আমি, আপনার জন্য সুস্থ হতেই হবে আমাকে।”
“তোমাকে নিয়ে এতটা রিক্স কিভাবে নিবো আমি? নয় মাস অনেক বেশি সময়, এতদিন তোমাকে ছটফট করতে দেখে আমি সহ্য করবো কিভাবে? তুমি পারলেও আমি পারবো না রুপু, আমি পারবো না তোমার সামান্যতম কষ্ট সহ্য করতে।”
“আপনি পাশে থাকলে কোন কষ্টই আমার ধরা ছোঁয়ার কাছে আসতে পারবে না। সামান্য কষ্টের পরেই তো সুখের মুহুর্ত গুলো ধরা দেয় আমাদের কাছে। আতিফার মতো যখন ছোট ছোট হাত পা নি য়ে কেউ আসবে, আপনাকে বাবা আর আমাকে মা বলে ডাকবে, তখন এসব কষ্ট কিছু মনে হবে না আমাদের কাছে।”
সেকেন্ডের মতো সময় নিয়ে ওনার হাতটা আমার পেটে রেখে আবারও বললাম,
“আপনার আর ওর ভালোবাসার জোরে আমার কিছু হবে না, দেখে নিয়েন। আপনাদের জন্যই সুস্থ হয়ে ফিরতেই হবে আমাকে।”
তাসফি আর কিছু বললো না, শুধু জড়িয়ে রাখলো নিজের সাথে।
তাসফির জন্য হলেও কারোর কথা চিন্তা না করে এখনি অপারেশনে মত দিতাম, যদি না স্বপ্নে সেই ছোট্ট মেয়েটাকে না দেখতাম। ‘মাম্মাম বাঁচাও’ কথাটা না শুনতাম। ছোট একটা প্রাণকে বিসর্জন দিয়ে নিজে বেঁচে থাকতে পারবো না আমি। কখনোই ভালো থাকতে পারবো না।
.
পরদিন সকাল থেকে তাসফির পরিবর্তনটা ছিলো চোখে পড়ার মতো। প্রয়োজনে দু’একটা ছাড়া কোন কথাই বলেন নি উনি। কিন্তু আমার কেয়ার করা, যত্ন নেওয়া কোনটার কমতি রাখেন নি। আমাকে ফ্রেশ হওয়া থেকে শুরু করে খাইয়ে দেওয়া পর্যন্ত নিজেই করেছেন। আমি কথা বলতে চাইলেও দু’একটা বলে কাটিয়ে দিয়েছেন। ওনার মাঝে রাগ, অভিমান, ভালোবাসা কোনটাই ধরতে পারি নি আমি। আমাকে নিজের খেয়াল রাখতে বলে বেরিয়ে গেছিলেন বাসা থেকে। আম্মু বড়মা তেমন কথা না বললে, সামনে না আসলেও ফুপি ও রিফাপু সারাদিন কাটিয়ে দিলো আমার সাথে। সন্ধ্যার পর উনি এই বাসায় আসলেও দেখা করলেন না আমার সাথে। রাতে বড় চাচা ও আব্বুর সাথে আমাকে নিয়ে আলোচনায় বসলে দেখা হলো ওনার সাথে। আমাকে কেউ কিছু না বলে নিজেদের মাঝেই আলোচনা চালিয়ে গেল। ডাক্তারের সাথে দেখা করে কি কথা হয়েছে সেগুলোই বলে চলেছেন। এটাও বললেন দুদিনের মাঝেই আমাকে নিয়ে ঢাকায় চলে যেতে চান এবং সেখান থেকেই এই কয়েক মাস নরমাল ট্রিটমেন্ট শুরু করে দিতে চান। ওনার কথা শুনে চোখের চোখ দুটো ভিজে উঠলো আমার, দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না আর সেখানে। এক ছুটে রুমে এসে বিছানায় বসলাম, দু’হাতে পেটে জড়িয়ে নিতেই চোখ বেয়ে পড়তে লাগলো অশ্রুধারা। কিন্তু সেটা কষ্টের নয়, এক টুকরো খুশির, মা হবার আনন্দের। তাসফি আমাদের বাচ্চাটাকে পৃথিবীতে আনতে চান সেই আনন্দের।
.
তাসফি আমাকে নিয়ে ঢাকায় আসলেন পাঁচদিন পর। এই কয়েকদিন সবাই আমার সাথে ঠিক ভাবে কথা না বললেও আদর, যত্ন, ভালোবাসায় ঠিকই রেখেছে। আম্মু এবং ফুপি আমাদের সাথে আসতে চাইলে বারণ করে দিলেন তাসফি। আপাতত উনি একাই সামলে নিতে পারবেন, কিছুদিন পরেই তাদের আসতে বললেন।
ঢাকায় আসার পর চলতে লাগলো আমার একগুয়ে জীবন। আগের তাসফি কে যেন বগুড়াতেই হারিয়ে ফেলেছি। ঠিক ভাবে আমার সাথে কথা না বললেও কোন কাজই আমাকে করতে দেন না উনি, প্রয়োজন ছাড়া নিচেও নামতে দেন না। ভার্সিটিতে নিজেই নিয়ে যায়, সারাদিন চোখে চোখে রেখে আবার নিজের সাথেই নিয়ে আসেন। সেটা যত দেরিই হোক না কেন। ড. রিয়াদের হসপিটালে ওনার আন্ডারে টিউমারের নরমাল ট্রিটমেন্ট এবং ওনার ক্লোজ ফ্রেন্ড গাইনোলজিস্টের কাছে নিয়মিত ট্রিটমেন্ট চলতে থাকলো। মা হবার আনন্দটা খুব করে অনুভব হলেও তাসফির দিকে তাকাতেই কেন জানি সেটা হারিয়ে যেত। সময় নিয়ে তাকিয়ে থাকতে পারতাম না ওনার দিকে, অজানা এক অপরাধে দগ্ধ হতাম প্রতিনিয়ত। দিন পেরিয়ে যখন মাস যেতে লাগলো তখন বারবার মনে মনে খোঁচাতে শুরু হলো। মাথা ব্যাথার প্রভাবটা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতেই প্রতিনিয়ত নিজের মনে আপরাধের বাসা বাঁধতে লাগলো, যে মানুষটা আমাকে নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে ভালোবাসে, আগলে রাখে তাকে ঠকাচ্ছি আমি। তার ভালোবাসাকে ইমোশনাল করে তুলেছি। আমার যদি সত্যিই কিছু হয়, তাহলে বাঁচবে কি করে এই মানুষটা? তিন মাস পর থেকে এই ভয়টাই জেঁকে ধরলো আমায়৷ শত ব্যাথাও সহ্য করার চেষ্টা করতাম। আমার মাথা ব্যাথা হওয়াটা যেন তাসফি ধরতে না পারেন তাই দূরে থাকার চেষ্টা করতাম, তবু্ও ওনার একটু সঙ্গ পাবার জন্য মনটা আকুপাকু করতো প্রতিনিয়ত। এর মাঝে আম্মু এসে প্রায় এক মাস থেকে গেলে। আম্মু চলে যাবার সপ্তাহ খানিক পর ফুপি আসলো। আব্বু, বড় চাচা এবং ফুপা মাঝে মাঝেই এসে দেখা করে যেতেন।
তাসফির থেকে মাথা ব্যাথার ব্যাপারটা লুকিয়ে চুকিয়ে থাকলেও বেশি দিন পারলাম না। একদিন সকালে প্রচন্ড চিনচিনে ব্যাথা শুরু হলো মাথায়। দু’হাতে মাথা চেপে চিৎকার করে করে গেলাম শুধু। ফুপি প্রচন্ড উত্তেজিত হয়ে উঠলো, তাসফি কে ফোন দিয়ে আমার কথা জানিয়ে বাসায় আসতে বললো। উনি অল্প সময়েই ছুটে এসে দু’হাতে আমার মাথা চেপে ধরলেন। কয়েক মিনিট ছটফটিয়ে রুমের ফ্লোরেই বমি করে দিলাম। আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে ওনার বুকে পড়ে রইলাম।
.
ডেলিভারির মাসটা যতই ঘনিয়ে আসতে লাগলো, ততই যেন মনের ভয়টা দ্বিগুণ থেকে দ্বিগুণ হতে লাগলো। রাতের ঘুমটাও কোথায় যেন হারিয়ে গেল। রাতে জাগা পেলে নিজেকে ওনার বুকে পেতাম, চুপ করে ওনার বুকে ঘাপটি মেরে শুয়ে থেকে বাকি রাতটা কাটিয়ে দিতাম ওনাকে না জানিয়ে। কিন্তু দু’দিন পর সেখানেও ধরা খেয়ে গেলাম। কিছু না বলে আমাকে জড়িয়ে নিয়ে ওনার বুকে মাথাটা রাখতেই কেঁদে উঠলাম। কেন জানি আর কিছুতেই সহ্য হচ্ছে না ওনার করা অবহেলা গুলো। বাসায় যাবার পর ওনার বলা ‘থাকবো না, মরে যাবো, এমন ফালতু এক্সকিউজ বলার আগে আমার করা অবহেলা গুলো মনে করার চেষ্টা করিস। তুই না চাইলেও সারাজীবন এই আমার সাথেই কাটাতে হবে তোর, আমার একান্ত ব্যাক্তিগত সম্পত্তি হয়ে। কথাটা একদম মাথায় সেট করে নে।’ কথাটা মনের কোণে উঁকি দিতে লাগলো। এজন্যই এই কয়েকটা মাস ধরে এতটা অবহেলা করে আসছেন উনি? কথাটা ভাবতেই আরও জোরে কেঁদে উঠলাম। আমার কান্নায় উত্তেজিত হয়ে উঠলেন উনি। বলতে লাগলেন,
“কি হয়েছে রুপুসোনা, কান্না করছো কেন? মাথা ব্যাথা করছে? নাকি পেটে ব্যাথা হচ্ছে? বলো আমাকে, কোথায় কষ্ট হচ্ছে রুপু?”
এতদিন পর ওনার মুখে রুপু ডাকটা শুনে আরও কান্না পেয়ে গেল আমার। কান্না মিশ্রিত গলায় অস্পষ্ট সুরে বললাম,
“ছাড়েন আমাকে, কে হন আপনি আমার? আপনাকে কেন বলবো আমার কোথায় কষ্ট হচ্ছে। আপনি তো আমার সাথে কথা বলারও প্রয়োজন বোধ করেন না। তাইলে কেন বলবো আপনাকে? আপনার করা অবহেলা, আপনার সাথে কথা না বললে আমার ঠিক কতটা কষ্ট হয়, সেটা আপনি কখনোই বুঝবেন না।”
আমার কথায় উনি আলতো করে দু’হাতে মুখটা ধরে কয়েটা চুমু দিলেন। নরম গলায় বলে উঠলেন,
“আ’ম সরি রুপু, অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি আমার জানটাকে। প্লিজ এবারের মতো ক্ষমা করে দাও, আর কখনো তোমাকে অভিযোগ করার সুযোগ দিবো না।”
“আমার খুব ভয় হয় এখন। বারবার মনে হচ্ছে খুব তারাতাড়ি হয়তো আপনাকে হারিয়ে ফেলবো, আমাদের বাচ্চাটার থেকে দূরে চলে যাবো।”
সেকেন্ডের মতো সময় নিয়ে আবারও বলে উঠলাম,
“আপনি আমাকে কথা দিন, আমার কিছু হলে আপনি ওকে অবহেলা করবেন না, আমার অবর্তমানে ওর অনেক বেশি খেয়াল রাখবেন, সবসময় ভালোবাসায় ভরিয়ে রাখবেন, মায়ের অভাব কিছুতেই বুঝতে দিবেন না ওকে। কথা দিন!”
“কিছু হবে না তোমার, আমি কিছু হতে দিবো না তোমাকে।”
বলেই জড়িয়ে ধরলেন। আমি ফুপিয়ে উঠে আবারও বললাম,
“আমার কিছু হলে ওর জন্য আপনার মনের মতো একটা মা নিয়ে আসবেন। যে ওকে আমার মতো করে ভালোবাসতে পারবে, আপনাকে ভালো রাখতে পারবে।”
“বললাম না, কিছু হবে না তোর। তুই আ….”
“আপনি কিন্তু তাকে আমার মতো করে ভালোবাসবেন না, এভাবে জড়িয়ে ধরবেন না, আমার তো করে কখনোই আদর দিবেন না তাকে। কালো শার্ট পরে তার সামনে যাবেন না, আমার মতো করে কোলে নিবেন না তাকে। কথা দিন আমাকে।”
“চুপ…. আর একটাও কথা নয়, চুপ করে আছি বলে এটা নয় যে, যা খুশি তাই বলে যাবি? বললাম না কিছু হবে না তোর, আমি কিছু হতে দিবো না তোকে। আমি শুধু একান্তই তোর পুরুষ, এই পুরুষের কাছে দ্বিতীয় নারীর কোন স্থান নেই। একমাত্র তুই আমার প্রথম এবং শেষ নারী।”
.
সেদিন রাতে তাসফির সাথে এতটুকুই কথা হয়েছিলো আমার। তারপর থেকে প্রতিনিয়ত আমাকে হাসি খুশি রাখার চেষ্টা করতেন উনি। সবসময় কথা বলে মন ভালো রাখতেন। প্রয়োজনের চেয়েও অধিক সময় দিতে শুরু করলেন।
মাথা ব্যাথার নরমাল ওষুধগুলো নিয়মিত খেলেও একদিন হঠাৎ মাথা ব্যাথাটা নাড়া দিয়ে উঠলো। ফুপি ও তাসফি কে চিৎকার করে ডেকে উঠে মাথা চেপে ধরে রুম জুড়ে ছটফট করতে লাগলাম। খাটের সাথে ধাক্কা লাগবে বুঝতে পেরেই মাথা থেকে হাত নামিয়ে দু’হাতে পেট আঁকড়ে নিলাম। পেটে ধাক্কা খাওয়ার থেকে রক্ষা করতে পারলেও তাল হারিয়ে পড়ে গেলাম ফ্লোরে। হঠাৎ পড়ে যাওয়ায় প্রচন্ড ঝাঁকুনি দিয়ে উঠলো পুরো শরীর। ফ্লোরে পড়ে ছটফট করতে লাগলাম। এর মাঝে ফুপি ও তাসফি রুমে ঢুকে আমাকে এই অবস্থায় দেখে চিৎকার করে উঠলো। ‘আমাদের বাচ্চাটাকে বাঁচিয়ে নাও’ বলতে চাইলেও মুখে বলতে পারলাম না কথাটা। চোখের সামনে সবকিছু ঝাপসা হতে লাগলো। শুধু তাসফির ‘চোখ খুলে রাখো’ কথাটাই কানে ভেসে আসতে লাগলো। ওনাকে দেখার লোভটা সামলাতে না পেরে অতি কষ্টে চোখ দুটো খোলা রাখার চেষ্টা করলাম, ঝাপসা চোখে দেখতে লাগলাম ওনাকে।
.
মিটমিটিয়ে চোখ দুটো খুলে বুঝতে পারলাম হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছি। আমি জীবিত আছি, আমার তাসফি কে আবারও দেখতে পাবো, ভেবেই প্রশান্তিতে ছেয়ে গেল মন। কিন্তু পরক্ষণেই পেটে হালকা অনুভব হতেই চমকে উঠলাম যেন। আমার বাচ্চা…. আমার বাচ্চা কোথায়? তাহলে ওর কি কিছু হয়েছে। চিৎকার করে কিছু বলতে চাইলেও গলা দিয়ে কোন কথা বেরুলো না আমার। কথা বলতে না পারায় আরও উত্তেজনায় হয়ে উঠলাম, ছটফট করতে লাগলাম সেখানেই। হঠাৎ একটা নার্স এসে আমাকে শান্ত করার প্রয়াস চালাতে লাগলো। আমি ইশারায় বুঝালাম আমার বাচ্চা কোথায়? নার্সটা হয়তো বুঝতে পারলো আমার কথাটা। বাচ্চাটা ভালো আছে বলে বোঝাতে লাগলো আমাকে। তবু্ও কেন জানি শান্ত হতে পারলাম না আমি। বারবার মনে হতে লাগলো ভালো নেই আমার বাচ্চাটা, নিজ চোখে না দেখা পর্যন্ত স্বস্তি পাবো না আমি।
.
.
চলবে……
ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। নেক্সট কমেন্ট না করে একটু পাঠন মূলক কমেন্ট করার চেষ্টা করবেন, যেন লেখার আগ্রহটা হারিয়ে না যায়🙁 ভালোবাসা সবাইকে, হ্যাপি রিডিং।🖤